hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

সংক্ষিপ্ত ইসলাম ও জাহেলিয়াতের দ্বন্দ্ব

লেখকঃ সাইয়্যেদ মাহমূদ শুকরী আলূসী

৩৭
৩৫। তাক্বদীরকে অস্বীকার করা
তারা তাক্বদীরকেই কেবল অস্বীকার করতো না, বরং তাক্বদীরের দোহাই দিয়ে আল্লাহর বিপক্ষে যুক্তি দাঁড় করাতো এবং তাঁর শরীয়তকে তাকদীরের বিরোধী সাব্যস্ত করতো ও খোঁড়া যুক্তিসমূহ পেশ করতো। এটি শরীয়তের সুক্ষ্ম বিষয়সমূহের অন্যতম এবং এর তাৎপর্য কেবল তারাই অনুধাবন করতে পারে যাদেরকে আল্লাহ বিশেষভাবে বুঝবার ক্ষমতা দান করেছেন। [এ বিষয়ে ইমাম ইবনুল কাইয়েমের লিখিত ‘শিফাউল আলীল ফিল কাদা ওয়াল কাদরি ওয়াল হিকমাতি ওয়াত তা‘লীল’ বইটি সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ।]

জাহেলী যুগের উপরোক্ত ধারণা আল্লাহ বাতিল ঘোষণা করেন এমনিভাবে-

سَيَقُولُ الَّذِينَ أَشْرَكُوا لَوْ شَاءَ اللَّهُ مَا أَشْرَكْنَا وَلَا آَبَاؤُنَا وَلَا حَرَّمْنَا مِنْ شَيْءٍ كَذَلِكَ كَذَّبَ الَّذِينَ مِنْ قَبْلِهِمْ حَتَّى ذَاقُوا بَأْسَنَا قُلْ هَلْ عِنْدَكُمْ مِنْ عِلْمٍ فَتُخْرِجُوهُ لَنَا إِنْ تَتَّبِعُونَ إِلَّا الظَّنَّ وَإِنْ أَنْتُمْ إِلَّا تَخْرُصُونَ ﴿148﴾ قُلْ فَلِلَّهِ الْحُجَّةُ الْبَالِغَةُ فَلَوْ شَاءَ لَهَدَاكُمْ أَجْمَعِينَ ﴿149﴾ ( سورة الأنعام : 148-149)

‘মুশরিকরা বলবে, যদি আল্লাহ চাইতেন তাহলে আমরা বা আমাদের বাপ-দাদারা মুশরিক হতাম না এবং কোনো কিছুকে হারাম করতাম না। তাদের পূর্ববর্তী মুশরিকগণ ঐ একই অজুহাতে সত্যকে প্রত্যাখ্যান করেছিল। অবশেষে তারা আমাদের আযাবের স্বাদ গ্রহণ করেছিল। আপনি বলে দিন, তোমাদের নিকট কোনো সঠিক যুক্তি (ইলম) আছে কি ? থাকলে তা আমাদের কাছে পেশ করো। আসলে তোমরা কেবল কল্পনারই অনুসরণ করে থাকো এবং আন্দাজে কথা বলো। আপনি বলে দিন চুড়ান্ত প্রমাণতো কেবল আল্লাহরই, তিনি যদি ইচ্ছা করতেন, তাহলে তোমাদের সকলকে হিদায়েত করতেন’। (সূরা আল-আনআম ৬: আয়াত ১৪৮-১৪৯)

ব্যাখ্যাঃ “যদি আল্লাহ চাইতেন তাহলে আমরা বা আমাদের বাপ-দাদারা মুশরিক হতাম না এবং কোনো কিছুকে হারাম করতাম না।” মুশরিকরা উক্ত কথাগুলোকে তাদের অপকর্মে লিপ্ত হবার যুক্তি হিসাবে পেশ করতো না। কেননা তারা তো এগুলোকে অপকর্ম ভাবতো না, বরং কুরআনের সাক্ষ্য অনুযায়ী তারা এগুলোকে পূণ্য কাজ বলেই ধারণা করতো। আর তারা যে মূর্তিপূজা করতো এটাকে তারা আল্লাহর নৈকট্য হাসিলের উপায় মনে করত। অথচ তা আল্লাহর পক্ষ হতে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। বুঝা গেল যে, উপরোক্ত যুক্তি দ্বারা তারা এ কথাই প্রমাণ করতে চায় যে, তারা যা কিছু করছে সবই আল্লাহ কর্তৃক নির্দেশিত এবং তিনি এর উপর সন্তুষ্ট। মুতাযিলাদের ধারণা অনুযায়ী আল্লাহর ইচ্ছা তাঁর হুকুমের শামিল এবং এতে তার সন্তুষ্টি অবশ্যই থাকে।

এদের উক্ত দাবীর অসারতায় আল্লাহর পক্ষ হতে বলা হয়েছে যে, কথাগুলি সঠিক কিন্তু তার দ্বারা বাতিল অর্থ গ্রহণ করা হয়েছে। আল্লাহ তাদের মিথ্যাচারকে নিন্দা করেছেন এজন্য যে, আল্লাহর ইচ্ছা কার্যকর হওয়ার সঙ্গে নবুওত ও শরীয়ত মান্য করার প্রতি নবীদের দাওয়াত সাংঘর্ষিক নয়। কারণ, এ দু’টি বস্তু তো মধ্যম পন্থা প্রকাশ করে দেওয়া ও দলীল পৌঁছে দেওয়ার জন্যই।

অনেকের মতে আয়াতে মূলতঃ প্রতিবাদ করা হয়েছে মুশরিকদের এই আক্বীদা বিশ্বাসের যে, তাদের যাবতীয় এখতিয়ার ও ক্ষমতা হরণ করা হয়েছে এবং তাদের আচরণে যে শির্ক প্রকাশ পাচ্ছে তা তাদের বাধ্যতার কারণেই। তারা একথাও ধারণা করে যে, এর দ্বারা আল্লাহ ও রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বিরুদ্ধে তারা যুক্তি দাঁড় করাবে।

মানুষের নিজস্ব কোনো কিছুর এখতিয়ার নেই আল্লাহ তাদের এই ধারণার প্রতিবাদ করেন এবং পূর্ববর্তীদের সংগে তাদের তুলনা করেন, যারা ঐ খোঁড়া যুক্তির দোহাই দিয়ে রাসূলদেরকে অবিশ্বাস করে এবং আল্লাহর সংগে শির্কে লিপ্ত হয় এই বিশ্বাস নিয়ে যে, তারা আল্লাহর ইচ্ছাতেই শির্ক করছে। এমনকি উক্ত সন্দেহের বশবর্তী হয়ে তারা রাসূলদেরকে বিভিন্ন ফালতু যুক্তির মাধ্যমে চুপ করিয়ে দেওয়ার ধারণাও পোষণ করতো।

অতঃপর আল্লাহ একথা পরিষ্কার করে দেন যে, প্রতিটি কাজ তাঁর ইচ্ছাতেই সম্পন্ন হয়। তবে তিনি ইচ্ছা প্রয়োগ করেন না। যতক্ষণ না তাদের থেকে কোনো কাজ সম্পাদিত হয় (অর্থাৎ তাঁর ইচ্ছার অর্থ সম্মতি, বাধ্য করা নয়) অবশ্য যদি তিনি চাইতেন, সকলকেই হিদায়েত দান করতে পারতেন।

(হে পাঠক) যদি আপনি আয়াতটির প্রতি গভীরভাবে দৃষ্টি নিক্ষেপ করেন তাহলে দেখবেন যে, আয়াতের প্রথমাংশে জাবারিয়াদের [যারা বিশ্বাস করে যে, তাদের ইচ্ছা বলে কিছু নেই। বরং যা কিছু হয় কেবল আল্লাহ হতেই হয়। তারা নিজেদেরকে অদৃষ্টের পুতুল মনে করে।] এবং শেষাংশে মুতাযিলাদের [অতি যুক্তিবাদী এ দল কুর‘আন ও হাদীসের ঊর্ধ্বে যুক্তিকে প্রাধান্য দেয়।] যুক্তি খন্ডন করা হয়েছে।

প্রথমাংশে প্রমাণ করা হয়েছে যে, বান্দার নিজস্ব ক্ষমতা ও এখতিয়ার রয়েছে। সে কারণে তার নাফরমানীর দায়িত্ব তাকেই বহন করতে হবে।

শেষাংশে প্রমাণ করা হয়েছে যে বান্দার মধ্যে আল্লাহর ইচ্ছার প্রয়োগ ঘটে এবং বান্দার সকল কাজই আল্লাহর ইচ্ছার অনুকুলেই হয়ে থাকে (তাঁর ইচ্ছার বাইরে কিছুই করার ক্ষমতা কারো নেই) এখানে মুতাযিলাদের বিরুদ্ধে আহলে সুন্নাতগণের [সুন্নী মুসলিমদেরকে আহলে সুন্নাত বলা হয়। যারা পবিত্র কুর‘আন ও সুন্নাহর নীতি-নির্দেশকে সকল কিছুর উর্ধ্বে স্থান দেয়। (অনুবাদক)] যুক্তি প্রমাণিত হলো। আলহামদুল্লিাহ।

অন্যভাবেও ব্যাখ্যা করা যায়। যেমন, অবিশ্বাসীগণ নবীদের দাওয়াতকে রদ করতে চেয়েছিল এই যুক্তিতে যে, আল্লাহ আমাদের থেকে শির্ক আশা করেছিলেন বলেই আমরা মুশরিক হয়েছি। অথচ তোমরা আল্লাহর সেই ইচ্ছার বিরোধিতা করে আমাদেরকে ঈমানের দাওয়াত দিচ্ছ।

আল্লাহ তাদের এই অপযুক্তিকে ধিক্কার দিয়েছেন কয়েকটি উপায়ে। যেমন- (১) তোমাদের উপরোক্ত যুক্তিই যদি সত্যিকারের প্রমাণ বলে তোমরা ভেবে থাকো, তবে জেনে রাখো কেবলমাত্র আল্লাহর জন্যই রয়েছে চূড়ান্ত প্রমাণ। (২) তিনি ইচ্ছা করলে তোমাদেরকে ও তোমাদের বিরোধী সকলকে হিদায়েত দান করতে পারতেন। কিন্তু ইচ্ছার প্রকৃত তাৎপর্য তোমরা যা বুঝেছ, যদি তাই সঠিক হয়, তাহলে যারা ইসলাম গ্রহণ করেছে তাদেরকে তোমরা খামাখা নিষেধ করো কেন? ওরাতো তোমাদের ধারণাতে আল্লাহর ইচ্ছাকেই কার্যকর করেছে মাত্র। অতএব, তোমাদের ও মুসলিমদের মধ্যে কোনোরূপ শত্রুতা থাকা উচিত নয়। বরং বন্ধুত্ব ও সহানুভূতি থাকা প্রয়োজন। কেননা তোমাদের ধারণা মতে উভয়েই আল্লাহর ইচ্ছা পূরণ করছে। এমনিভাবে অন্য আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, যেমন-

وَقَالَ الَّذِينَ أَشْرَكُوا لَوْ شَاءَ اللَّهُ مَا عَبَدْنَا مِنْ دُونِهِ مِنْ شَيْءٍ نَحْنُ وَلَا آَبَاؤُنَا وَلَا حَرَّمْنَا مِنْ دُونِهِ مِنْ شَيْءٍ كَذَلِكَ فَعَلَ الَّذِينَ مِنْ قَبْلِهِمْ فَهَلْ عَلَى الرُّسُلِ إِلَّا الْبَلَاغُ الْمُبِينُ ﴿35﴾ ( سورة النحل : 35)

‘মুশরিকগণ বলে থাকে যে, যদি আল্লাহ চাইতেন, তাহলে আমরা বা আমাদের বাপ-দাদারা তাঁকে ছেড়ে অন্যের ইবাদত করতাম না, তাঁর নিষেধ ব্যতীত কোনো কিছুকে হারাম করতাম না। আসলে তাদের পূর্ববর্তীরা এই একই কাজ করতো। কিন্তু স্পষ্টভাবে পৌঁছে দেওয়া ব্যতীত রাসূলদের আর কিছুই করণীয় আছে কি’? (সূরা আন-নাহল, ১৬: আয়াত ৩৫)

অত্র আয়াতের মর্ম পূর্বের আয়াতটির মতই। অর্থাৎ তাদের যাবতীয় কাজ-কর্মের দায়-দায়িত্ব আল্লাহর উপরে ছেড়ে দিয়ে তারা নিশ্চিন্তে নিজেদের অন্যায় অপকর্ম চালিয়ে যেতে চায়। অথচ একথা তারা বুঝতে নারাজ যে, আল্লাহর ইচ্ছায় সবকিছু সম্পন্ন হলেও বান্দার প্রত্যেক কাজ-কর্মের প্রতিফল হিসাবে শাস্তি বা পুরস্কারের ব্যবস্থা যেহেতু আছে, সেহেতু সব কাজেই তার আংশিক ও সীমিত এখতিয়ার অবশ্যই আছে। নইলে শাস্তি ও পুরস্কার বাধ্যতামূলক হয়ে যাবে। (যা প্রকৃত অবস্থার সম্পূর্ণ বিপরীত)।

মোটকথা, কোনো বাধ্যতা বা স্বেচ্ছাচারিতা নয়, বরং প্রকৃত অর্থ দু’য়ের মাঝখানে। অতএব উক্ত রাজত্ব হতে যে ব্যক্তির পদস্খলন ঘটবে, সে ব্যক্তি জাহেলী যুগের লোকদের তরীকার অনুসারী হবে। আল্লাহ যা থেকে নিষেধ করেছেন। এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা আছে তাফসীরে রুহুল মাআনীসহ প্রভৃতি তাফসীরে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন