hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলামের সমালোচনা ও তার জবাব

লেখকঃ ড. সাঈদ ইসমাঈল চীনী

১৫
রাজনৈতিক সংগঠন সম্পর্কে ইসলাম
যেকোনো ব্যবস্থাই গড়ে ওঠে দু’টি উপাদান সহযোগে: আদর্শ বা মূলনীতি এবং কর্মপন্থা বা কর্মসূচি। ইসলাম সামাজিক সংগঠন (বিশেষ সংস্থা ও ফাউন্ডেশন) এবং রাজনৈতিক সংগঠনের (দল ও সাধারণ সংগঠন) পালনীয় মূলনীতি প্রণয়ের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কোনো আচার বা কর্মসূচি দেয় নি। এটিকে সংশ্লিষ্ট যুগ ও স্থানের ওপর ছেড়ে দিয়েছে। যাতে তারা নিজেদের প্রয়োজন ও বাস্তবতার আলোকে তাদের কর্মসূচি ও লক্ষ্য নির্ধারণ করতে পারে। [আসাদ, পৃ: ৫৩-৫৬; আল-আওয়াস: ৬৬-৬৮।]

এ মূলনীতি প্রত্যেক স্থান ও কালের উপযোগী। কারণ তা মানুষের সহজাত ও মৌলিক সকল উপাদানের প্রতি লক্ষ্য রাখে। আসলে প্রায় ক্ষেত্রে সেটিই উত্তম কর্মপন্থা বিবেচিত হয় যা বিদ্যমান নীতি ও নিত্য পরিবর্তনশীল প্রয়োজনের পারস্পরিক প্রভাবের সমন্বয়ে গঠিত হয়। পারস্পরিক এই প্রভাবের হার জীবনের পর্বের বিভিন্নতা ভেদে বিভিন্ন রকম হয়। আর রাজনৈতিক সংগঠনের বেলায় কথাটি অন্যসব ক্ষেত্রের চেয়ে বেশি প্রযোজ্য।

ইসলাম সংঘবদ্ধতা ও সংগঠনের প্রতি গুরুত্বারোপ করে। তেমনি গুরুত্ব প্রদান করে দলের প্রধান নির্বাচনে। যদিও তা অন্যুন দুই সদস্যের দল হয়। ইসলামের এ গুরুত্ব ফুটে ওঠে জামাতের সঙ্গে নামাজ আদায় এবং দু’জন সফর করলেও তাদের মধ্যে একজনকে নেতা নির্বাচনে উদ্বুদ্ধ করার মধ্য দিয়ে। অনুরূপ মুসলিমদের জামা‘আতে সম্পৃক্ত হতে এবং এক কালেমায় সমবেত হতে উৎসাহিত করার মাধ্যমে। যেমন, আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَٱعۡتَصِمُواْ بِحَبۡلِ ٱللَّهِ جَمِيعٗا وَلَا تَفَرَّقُواْۚ﴾ [ ال عمران : ١٠٣ ]

“আর তোমরা সকলে আল্লাহর রজ্জুকে দৃঢ়ভাবে ধারণ কর এবং বিভক্ত হয়ো না।” [সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ১০৩]

সর্বসাধারণকে কল্যাণ-কাজে পরস্পরের সহযোগী হতে অনুপ্রাণিত করতে গিয়ে আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَتَعَاوَنُواْ عَلَى ٱلۡبِرِّ وَٱلتَّقۡوَىٰۖ وَلَا تَعَاوَنُواْ عَلَى ٱلۡإِثۡمِ وَٱلۡعُدۡوَٰنِۚ وَٱتَّقُواْ ٱللَّهَۖ﴾ [ المائ‍دة : ٢ ]

“সৎকর্ম ও তাকওয়ায় তোমরা পরস্পরের সহযোগিতা কর। মন্দকর্ম ও সীমালঙ্ঘনে পরস্পরের সহযোগিতা করো না। আর আল্লাহকে ভয় কর।” [সূরা আল-মায়েদাহ, আয়াত: ২]

ইসলাম ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গেও পরস্পর কল্যাণকর্মে সহযোগিতার শিক্ষা দেয়। এর সবচে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত মদীনায় ইয়াহূদী ও মুশরিকদের সঙ্গে সম্পাদিত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সন্ধি চুক্তি। [ইবন হিশাম: ২/১০৭-১০৮; হুমাইদুল্লাহ, পৃ. ৩৯-৪৭; আল-আওয়াস: ৫০-৬৪।] অমুসলিমদের সঙ্গে সদাচারের প্রতি তাগিদ দিতে গিয়ে আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿لَّا يَنۡهَىٰكُمُ ٱللَّهُ عَنِ ٱلَّذِينَ لَمۡ يُقَٰتِلُوكُمۡ فِي ٱلدِّينِ وَلَمۡ يُخۡرِجُوكُم مِّن دِيَٰرِكُمۡ أَن تَبَرُّوهُمۡ وَتُقۡسِطُوٓاْ إِلَيۡهِمۡۚ إِنَّ ٱللَّهَ يُحِبُّ ٱلۡمُقۡسِطِينَ ٨﴾ [ الممتحنة : ٨ ]

“দীনের ব্যাপারে যারা তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে নি এবং তোমাদেরকে তোমাদের বাড়ি-ঘর থেকে বের করে দেয়নি, তাদের প্রতি সদয় ব্যবহার করতে এবং তাদের প্রতি ন্যায় বিচার করতে আল্লাহ তোমাদেরকে নিষেধ করছেন না। নিশ্চয় আল্লাহ ন্যায়পরায়ণদের ভালোবাসেন।” [সূরা আল-মুমতাহিনা, আয়াত: ৮]

মূলনীতির দিক থেকে ইসলাম ও অন্য রাজনৈতিক সংগঠনের মধ্যে সাদৃশ্য ও সাযুজ্যপূর্ণ অনেক দিক রয়েছে। তবে ইসলামী ব্যবস্থায় খ্রিস্টধমীর্য় ব্যবস্থার সঙ্গে কিছু দিকের এবং ধর্মনিরপেক্ষ গণতন্ত্রের সঙ্গে অন্য কিছু দিকের পার্থক্য রয়েছে। পার্থক্যের প্রধান দিকগুলো নিম্নরূপ:

মধ্যযুগে খ্রিস্টধর্মের নামে চালু থাকা রাজনৈতিক ব্যবস্থাটি ছিল মূলত মানুষ-সম্বন্ধীয়। তবে তা ঐশী গুণের পূর্ণ ধারকও ছিল। বিচারকই ছিলেন সেখানে বিধান প্রণেতা ও চূড়ান্ত বিধাতা। পক্ষান্তরে ইসলামী ব্যবস্থায় বিচারক ও বিচারপ্রার্থী উভয়ই যথোচিত পন্থায় স্বতন্ত্রভাবে আল্লাহর আইনের প্রতি বিনীত। অর্থাৎ ইসলামে এরা উভয়ে মৌলিকভাবে শরী‘আতে রব্বানী বা আল্লাহর বিধানের কাছে দায়বদ্ধ। হ্যা, মানুষকে সালিশ নিযুক্ত করার অবকাশ দেওয়া হয়েছে সীমিত পর্যায়ে আইনের বিস্তারিত প্রয়োগ অথবা স্রষ্টার সঙ্গে বক্তব্যের সম্পৃক্ততা নিয়ে মতবিরোধ কিংবা বক্তব্যের মর্ম অনুধাবন, ঘটনা নির্ণয় বা ফয়সালা প্রয়োগ নিয়ে মতানৈক্যের ক্ষেত্রে।

নাস্তিক্যবাদী গণতন্ত্র ও সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থায় সংখ্যাগরিষ্ঠের হাতে আইন প্রণয়নের ভার ছেড়ে দেয় হয়েছে। চাই তা সত্য, কৃত্রিম বা প্রবঞ্চনাপূর্ণ হোক না কেন। এতে ধর্মকে শুধু আকীদা-বিশ্বাস ও ইবাদাত-বন্দেগী পর্যন্ত সীমিত রাখা হয়েছে। পক্ষান্তরে ইসলামী ব্যবস্থায় আকীদা-বিশ্বাস, ইবাদাত-বন্দেগী ও বিচার-আইন (যেমনটি পূর্বে বলা হয়েছে) সবগুলোই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে মহাবিশ্বের স্রষ্টার প্রতি বিনীত। প্রতিটিই পবিত্র কুরআন ও হাদীসে এসে সমর্পিত। কুরআন-সুন্নাহে প্রাজ্ঞ এবং মানব-জীবনের প্রতিটি অবস্থা সম্পর্কে অভিজ্ঞ হক্কানী আলিমগণ এসবের বিধি-বিধান প্রণয়ন করেন।

পাশাপাশি এও বলা যায়, বিন্যস্ত গঠনমূলক সমালোচনা (যা আসলে ‘সৎ কাজে আদেশ এবং অসৎ কাজে নিষেধ’-এর অন্তর্ভুক্ত) একটি ধর্মীয় দায়িত্ব। সম্মিলিতভাবে এ কাজ পরিহারের কোনো অবকাশ নেই। অপরদিকে গণতন্ত্রে অবিন্যস্ত সমালোচনা ব্যক্তির এমন অধিকার, যা সে ছেড়ে দিতে পারে।

তেমনি ইসলামী ব্যবস্থায় শূরা (মতামত দিয়ে অংশগ্রহণ) যোগ্যতা তথা শরী‘আত বা বিচার সংক্রান্ত জ্ঞানে গভীর ব্যুৎপত্তিনির্ভর। এ দুই বৈশিষ্ট্যের অধিকারী হলেই কেউ শূরার সদস্য হতে পারেন, চাই তিনি পুরুষ হোন বা নারী আর ছোট হোন বা বড়। এক কথায় এখানে মানদণ্ড হলো নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে পারদর্শিতা। পক্ষান্তরে গণতন্ত্র ও সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থায় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন কর্তৃত্ববানরা [কর্তৃত্ববানরা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে চাই দক্ষ হোন বা না হোন; চাই তারা সে ব্যাপারে অভিজ্ঞদের সঙ্গে পরামর্শ নেন বা না নেন। সুতরাং এখানে কর্তৃত্বের মানদণ্ড হলো সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের ক্ষমতা। আর তা হলো সংখ্যাগরিষ্ট ভোটারের ভোট পাবার যোগ্যতা।]। অতপর তাতে যোগ্য-অযোগ্যের পার্থক্য ছাড়া আপামর সাবালক ব্যক্তি ভোটাধিকার প্রয়োগ করে। এই মুষ্টিমেয় লোক কখনো অধিকাংশ ভোটারের প্রতিনিধিত্ব করেন, কখনো করেন না। এদিকে সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করেন শক্তিশালী ধনিক শ্রেণি। কখনো আড়াল থেকে কখনো প্রকাশ্যে।

তবে ইসলাম গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার অনেক নীতির প্রশংসাও করে। যেমন এর চিন্তা-মতামত-অনুভূতি প্রকাশ তথা বাকস্বাধীনতা; কিন্তু এর শর্ত হলো তা ইসলামের শিষ্টাচার নীতির পরিপন্থি না হতে হবে। এর মাধ্যমে কেউ আহত বা অপমানিত না হতে হবে। ফলে এ স্বাধীনতা সে বাস্তব অবস্থা শনাক্তকরণে কাজে আসবে যা আমরা করি বা যার সঙ্গে আমরা পরিচিত। আর ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত বা সুনির্দিষ্টকরণ ছাড়া তো কোনো সিদ্ধান্ত বা সুষ্ঠু সমাধানেই পৌঁছানো যায় না।

ইসলাম তেমনি গণতন্ত্রের কিছু পদ্ধতিকেও মূল্যায়ন-সমর্থন করে। যেমন গণতন্ত্রের নির্বাচন পদ্ধতি; যদি তা হয় চূড়ান্তভাবে বা পদ্ধতিগত দিক থেকে বৈধ। যাবৎ না তা শরী‘আতের ‘সাওয়াবেত’ তথা অকাট্যভাবে প্রমাণিত বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করে। যেমন সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত শরী‘আতের বক্তব্যের বস্তুনিষ্ঠতা নিয়ে কিংবা ওয়াজিব বা হারাম কোনো বিষয় নিয়ে ভোটাভুটি করা। অনুরূপ সিদ্ধান্ত গ্রহণ বা আইন প্রণয়নের প্রাক্কালে ‘পরামর্শে’র আওতার ব্যাপকায়নে গণতান্ত্রিক ও সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থায় অবলম্বিত বৈধ সকল উপায় কাজে লাগাতেও উৎসাহিত করে ইসলাম।

অন্য দৃষ্টিকোণে, ধর্মনিরপেক্ষ ব্যবস্থা প্রধানত শক্তি ও দরাদরির লড়াই-নীতিনির্ভর। যে বেশি শক্তিমান, দর কষাকষিতে যে অধিক পারদর্শি, সে-ই এতে লাভবান হয়। এ ব্যবস্থার ছত্রছায়ায় তদুপরি বাইরের কোনো পর্যবেক্ষণের অবিদ্যমানতায় রাজনৈতিক সংঘাতের ময়দানে চাতুর্যপূর্ণ অবৈধ পন্থা ব্যবহার করে অনায়াসে ব্যক্তিস্বার্থ হাসিল করা যায়। অবশ্য যেসব মানুষ কপট সিদ্ধান্ত নিতে পারে অথবা তাদের প্রতারিত করতে পারে তাদের কথা ভিন্ন। আর এ স্বার্থের বিজয় কিন্তু জাতির বিশাল জনগোষ্ঠীর স্বার্থের নাম ভাঙ্গিয়েই কামানো সম্ভব। যদিও তা হয় সংখ্যাগরিষ্ঠ নাগরিকের সম্মতির ভিত্তিতে; হোক সে সম্মতি কৃত্রিম বা প্রবঞ্চনাপূর্ণ।

পক্ষান্তরে ইসলামী ব্যবস্থায় বিচার ব্যবস্থাকে দুনিয়া ও আখিরাতের সৌভাগ্য হাসিলের একটি মাধ্যম বলে গণ্য করা হয়। এতে জবাবদিহিতা কেবল জনগণ পর্যন্ত সীমাবদ্ধ থাকে না; বরং আল্লাহ তা‘আলাও থাকেন তাদের সঙ্গে পর্যবেক্ষক হিসেবে। তেমনি এখানে হিসাব শুধু পার্থিব জীবন এবং মানুষ পর্যন্তই সীমাবদ্ধ থাকে না। মানুষের সামনে অপরাধী ব্যক্তি কখনো নির্দোষ সাব্যস্ত হলেও আল্লাহ তা‘আলা তার প্রকৃত অবস্থা সম্পর্কে ওয়াকিফহাল থাকেন। গণতন্ত্র ও সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থায় মানুষের জবাবহিদিতা কখনো ঐশী আইন থেকেও শক্তি সঞ্চয় করে এবং তা দর কষাকষি ও পরিতুষ্ট করতে শুধু মানুষের পর্যবেক্ষণ ও নিরীক্ষণকেও ছাড়িয়ে যায়।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন