hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলামের সমালোচনা ও তার জবাব

লেখকঃ ড. সাঈদ ইসমাঈল চীনী

২৭
কুরআন শিক্ষার প্রতিষ্ঠান কি সন্ত্রাস ও উগ্রবাদ ডেকে আনে
পূর্বের উদ্ধৃতিগুলো থেকে যেমন আমাদের সামনে স্পষ্ট হলো, পবিত্র কুরআন মূলতঃ আন্তর্জাতিক শান্তি এবং মানুষের পার্থিব ও অপার্থিব জীবনের শান্তির প্রতি একটি আহ্বান। এটি তেমনি ধর্মীয় বিভিন্নতা সত্ত্বেও অন্যের অধিকার প্রদানে একটি আহ্বান।

যে ব্যক্তি উপযুক্ত জ্ঞান নিয়ে এ কুরআন অধ্যয়ন করবে, তিনি দেখবেন তাতে সকল মানুষের সঙ্গে সুকুমারবৃত্তি ও নান্দনিক আচরণে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে। বরং তাদের প্রতি অনুগ্রহ-ভালোবাসা এবং দুনিয়া-আখিরাতের তাদের কল্যাণ বাস্তবায়নে সচেষ্ট হতে অনুপ্রাণিত করা হয়েছে। আল্লাহ তা‘আলা পবিত্র কুরআনে বলেন,

﴿لَّا يَنۡهَىٰكُمُ ٱللَّهُ عَنِ ٱلَّذِينَ لَمۡ يُقَٰتِلُوكُمۡ فِي ٱلدِّينِ وَلَمۡ يُخۡرِجُوكُم مِّن دِيَٰرِكُمۡ أَن تَبَرُّوهُمۡ وَتُقۡسِطُوٓاْ إِلَيۡهِمۡۚ إِنَّ ٱللَّهَ يُحِبُّ ٱلۡمُقۡسِطِينَ ٨ إِنَّمَا يَنۡهَىٰكُمُ ٱللَّهُ عَنِ ٱلَّذِينَ قَٰتَلُوكُمۡ فِي ٱلدِّينِ وَأَخۡرَجُوكُم مِّن دِيَٰرِكُمۡ وَظَٰهَرُواْ عَلَىٰٓ إِخۡرَاجِكُمۡ أَن تَوَلَّوۡهُمۡۚ وَمَن يَتَوَلَّهُمۡ فَأُوْلَٰٓئِكَ هُمُ ٱلظَّٰلِمُونَ ٩﴾ [ الممتحنة : ٨، ٩ ]

“দীনের ব্যাপারে যারা তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেনি এবং তোমাদেরকে তোমাদের বাড়ি-ঘর থেকে বের করে দেয়নি, তাদের প্রতি সদয় ব্যবহার করতে এবং তাদের প্রতি ন্যায়বিচার করতে আল্লাহ তোমাদেরকে নিষেধ করছেন না। নিশ্চয় আল্লাহ ন্যায় পরায়ণদের ভালোবাসেন। আল্লাহ কেবল তাদের সাথেই বন্ধুত্ব করতে নিষেধ করেছেন, যারা দীনের ব্যাপারে তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে আর তোমাদেরকে তোমাদের বাড়ী-ঘর থেকে বের করে দিয়েছে এবং তোমাদেরকে বের করে দেওয়ার ব্যাপারে সহায়তা করেছে। আর যারা তাদের সাথে বন্ধুত্ব করে, তারাই তো যালিম”। [সূরা আল-মুমতাহিনা, আয়াত: ৮-৯]

আল-কুরআনে অমুসলিম আত্মীয়-স্বজন এবং পিতামাতার হক আদায়ে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَوَصَّيۡنَا ٱلۡإِنسَٰنَ بِوَٰلِدَيۡهِ حُسۡنٗاۖ وَإِن جَٰهَدَٰكَ لِتُشۡرِكَ بِي مَا لَيۡسَ لَكَ بِهِۦ عِلۡمٞ فَلَا تُطِعۡهُمَآۚ إِلَيَّ مَرۡجِعُكُمۡ فَأُنَبِّئُكُم بِمَا كُنتُمۡ تَعۡمَلُونَ ٨﴾ [ العنكبوت : ٨ ]

“আর আমরা মানুষকে নির্দেশ দিয়েছি তার পিতা-মাতার সাথে সদাচরণ করতে। তবে যদি তারা তোমার উপর প্রচেষ্টা চালায় আমার সাথে এমন কিছুকে শরীক করতে যার সম্পর্কে তোমার কোনো জ্ঞান নেই, তাহলে তুমি তাদের আনুগত্য করবে না। আমার দিকেই তোমাদের প্রত্যাবর্তন। অতঃপর তোমরা যা করতে আমি তা তোমাদেরকে জানিয়ে দেব”। [সূরা আল-আনকাবুত, আয়াত: ৮]

আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেন,

﴿وَوَصَّيۡنَا ٱلۡإِنسَٰنَ بِوَٰلِدَيۡهِ حَمَلَتۡهُ أُمُّهُۥ وَهۡنًا عَلَىٰ وَهۡنٖ وَفِصَٰلُهُۥ فِي عَامَيۡنِ أَنِ ٱشۡكُرۡ لِي وَلِوَٰلِدَيۡكَ إِلَيَّ ٱلۡمَصِيرُ ١٤ وَإِن جَٰهَدَاكَ عَلَىٰٓ أَن تُشۡرِكَ بِي مَا لَيۡسَ لَكَ بِهِۦ عِلۡمٞ فَلَا تُطِعۡهُمَاۖ وَصَاحِبۡهُمَا فِي ٱلدُّنۡيَا مَعۡرُوفٗاۖ وَٱتَّبِعۡ سَبِيلَ مَنۡ أَنَابَ إِلَيَّۚ ثُمَّ إِلَيَّ مَرۡجِعُكُمۡ فَأُنَبِّئُكُم بِمَا كُنتُمۡ تَعۡمَلُونَ ١٥﴾ [ لقمان : ١٤، ١٥ ]

“আর আমরা মানুষকে তার মাতাপিতার ব্যাপারে (সদাচরণের) নির্দেশ দিয়েছি। তার মা কষ্টের পর কষ্ট ভোগ করে তাকে গর্ভে ধারণ করে। আর তার দুধ ছাড়ানো হয় দু’বছরে; সুতরাং আমার ও তোমার পিতা-মাতার শুকরিয়া আদায় কর। প্রত্যাবর্তন তো আমার কাছেই। আর যদি তারা তোমাকে আমার সাথে শির্ক করতে জোর চেষ্টা করে, যে বিষয়ে তোমার কোনো জ্ঞান নেই, তখন তাদের আনুগত্য করবে না এবং দুনিয়ায় তাদের সাথে বসবাস করবে সদ্ভাবে। আর অনুসরণ কর তার পথ, যে আমার অভিমুখী হয়। তারপর আমার কাছেই তোমাদের প্রত্যাবর্তন। তখন আমি তোমাদেরকে জানিয়ে দেব, যা তোমরা করতে”। [সূরা লুকমান, আয়াত: ১৪-১৫]

পবিত্র কুরআনে এমন অনেক আয়াত রয়েছে যা মানুষের মর্যাদা রক্ষায় ইসলামের আগ্রহ তুলে ধরে। আয়াতগুলো মানুষের প্রতি মানুষকে অকৃত্রিম ভক্তি-সম্মান প্রদর্শন করতেও উদ্বুদ্ধ করে। সর্বোপরি তা এমন শক্তিপুঞ্জের প্রশংসা করে যারা অন্যের ওপর যুলুম বা অসদাচরণ করে না।

পবিত্র কুরআনে আরও আছে নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের লড়াই-সংগ্রামের ইতিহাস। আছে যারা তাঁকে দাওয়াতের কারণে শত্রুতা দেখিয়েছে তাদের এবং তিনি ও তাঁর অনুসারীদের ওপর চলা তেরো বছরব্যাপী নির্যাতন-অত্যাচারের ওপর কীভাবে ধৈর্য্য ধরেছেন তার বিবরণ। এরপরই কেবল আল্লাহ তা‘আলা তাঁকে আত্মরক্ষার্থে অত্যাচারীদের ওপর যেমন কর্ম তেমন ফল হিসেবে প্রতিরোধ করার অনুমতি দিয়েছেন।

পৃথিবীতে নানা বর্ণ-ধর্ম ও রাজনৈতিক গোষ্ঠী কর্তৃক অনেক যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছে। এসব পক্ষ-বিপক্ষ যোদ্ধা বহু রকমের কঠোর পন্থা অবলম্বন করেছে। যেমন, সহিংসতা, রক্তপাত, মানসিক, আত্মিক ও চৈন্তিক দমন-পীড়ন। এরা সবাই কি সন্ত্রাসী কিংবা সবাই কি আত্মরক্ষাকারী? এদের সন্ত্রাস কি আত্মরক্ষার্থে ছিল না আগ্রাসন?

প্রত্যেক জাতির মধ্যেই ফৌজি ও সামরিক স্কুল ও একাডেমি এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থাকে। প্রতিটি জাতিই তার সৈন্যদের ব্যাপক বিধ্বংসী অস্ত্রশস্ত্রের দক্ষ ব্যবহারে প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে। সামগ্রিকভাবে প্রযুক্তি ও অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ দেশগুলোই বেশি ধ্বংসাত্মক অস্ত্রের অবকাঠামো উন্নয়নে অগিয়ে। এরাই পৃথিবীর নানা দেশ ও জাতির কাছে অস্ত্র বিক্রি করে। তাদের কাছে পৃথিবীর সবচে বেশি প্রশিক্ষিত সেনাবাহিনী রয়েছে। আরও বেশি উন্নত প্রযুক্তির ধ্বংসাত্মক অস্ত্র আবিষ্কারে তাদের সমৃদ্ধ গবেষণাগার রয়েছে- এ কথা বলতে তারা গর্ব ও সম্মান বোধ করে। আমরা কি তাহলে সব ধরনের সামরিক সংস্থা ও প্রতিষ্ঠান বন্ধ করা প্রয়োজন বলে দাবি করবো? আর সব রাষ্ট্রই কি সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ লালন করছে? যেসব দেশ তাদের সামরিক শক্তি বৃদ্ধি করছে তারা সবাই কি সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের প্রতি তীব্রভাবে আগ্রহী?

অবশ্যই না। কেননা বুদ্ধিমান ব্যক্তিমাত্রেই যুলুম বা অত্যাচার থেকে আত্মরক্ষার্থে প্রতিরোধের পূর্ব প্রস্তুতি গ্রহণ করাকে জরুরি মনে করেন। বিশ্বের প্রতিটি ঐশী ও মানবরচিত আইনও নিজের জীবন, সম্পদ, ভূমি ও ধর্ম রক্ষায় প্রতিরোধের অধিকার সংরক্ষণ করে।

সুতরাং যদি পবিত্র কুরআনে ইসলামের প্রাথমিক যুগের মুসলিম ও তাদের শত্রুদের লড়াই-ইতিহাস আছে বলে তার শিক্ষা সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের জন্ম দেয় বলে অভিযোগ করা হয়, তাহলে তো অন্য সব জাতির ইতিহাস পঠন-পাঠনও একই অভিযোগে অভিযুক্ত হবে। আমরা সেসব ইতিহাসে দেখতে পাই সে জাতির তীব্র গৃহযুদ্ধ ও অন্য জাতির সঙ্গে সংঘটিত রক্তাক্ত লড়াইয়ের হাজারো গল্প-উপাখ্যান। তাই বলে কি আমরা এসব ঘটনা উগ্রবাদ ও চরমপন্থার বীজ বোপন করার অভিযোগে প্রত্যেক জাতিকে তার ইতিহাস শিক্ষাদান থেকে বিরত থাকতে বলবো? শুধু তাই নয়, বিশ্বযুদ্ধের ঘটনাবলি এবং বিভিন্ন জাতির খেয়ালী যুদ্ধ ও কোনো দেশের নাগরিক বিভিন্ন দলের অনাকাঙ্ক্ষিত লড়াইয়ের ওপর নির্মিত অনেক চলচ্চিত্র এবং ডকুমেন্টারি ভিডিওও পাওয়া যায়। এসব ডকুমেন্টারি ফিল্ম তো বিভিন্ন ঘটনার নানা অপ্রকাশিত তথ্য ও অনেক বাস্তব সত্যও তুলে ধরে। তদুপরি তাতে যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী নানা জাতি-গোষ্ঠীর মধ্যে বিদ্বেষ ও উগ্রতার বিষবাষ্প লুকিয়ে থাকে। তাই বলে কি এসব ডকুমেন্টারি চলচ্চিত্র নিষিদ্ধ করা উচিৎ? নাকি বাস্তবতাকে কলুষিত করা এবং কল্পনা ও দিবাস্বপ্নের ঘোরে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক নির্মাণ করা শ্রেয়?

এছাড়া অন্যান্য ধর্মের পবিত্র গ্রন্থগুলোতেও এত বেশি এ ধরনের বাণী রয়েছে, যদি সেগুলোকে তার পূর্বাপর আলোচনা বাদ দিয়ে সংকলিত করা হয়, তাহলে নিশ্চিত তাকে সন্ত্রাস ও চরমপন্থায় প্ররোচিতকারী গ্রন্থ হিসেবে গণ্য করা যাবে। এর উদাহরণ আমরা দেখতে পাই বাইবেলের Old Testament বা পুরাতন সমাচারে: ‘যখন তোমাকে তোমার প্রভু সেই ভূমিতে নিয়ে যাবেন যেখানে তুমি প্রবেশ করতে যাচ্ছো, তার মালিক হবার জন্য এবং তোমার সামনে আগত জাতিগুলোকে বিতাড়ন করার জন্য। তারা সাতটি জাতি, যারা তোমার চেয়ে বেশি ও বড়। এবং যখন তোমার প্রভু তোমার সামনে তাদের দমন করবেন এবং তুমি তাদের আঘাত করবে, তখন তুমি তাদের সম্পূর্ণ অবৈধ ঘোষণা করবে। তাদের সাথে কোনো চুক্তি করবে না, তাদের ওপর কোনো দয়া দেখাবে না এবং তাদের কারো সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্কেও জড়াবে না।’ [পবিত্র গ্রন্থ, পুরাতন সমাচার: ৭/১-২; দ্বিতীয় ভ্রমণ: ২০/১০-১৮।]

আরও যেমন রয়েছে, ‘এখন তোমরা প্রতিটি ছেলে শিশুকে হত্যা করো। যেসব নারী সম্পর্কে জানা যায় কোনো পুরুষের শয্যাসঙ্গী হয়েছে, তাদেরও হত্যা করো। তবে যেসব মেয়ে শিশু সম্পর্কে জানা যায় কোনো পুরুষ কর্তৃক ব্যবহৃত হয় নি, তাদের তোমরা নিজেদের জন্য জীবিত রাখো।’ [পবিত্র গ্রন্থ, পুরাতন সমাচার, আ‘দাদ: ১৩/১৭-১৮।]

অনুরূপ New Testament বা বাইবেলের নতুন সমাচারেও এমন বাণী রয়েছে। যেমন, ‘তবে আমার যেসব শত্রু চায় না আমি তাদের ওপর কর্তৃত্ব দেখাই, তাদের তোমরা এখানে নিয়ে আসো এবং আমার সামনে তাদের জবাই করো।’ [পবিত্র গ্রন্থ, নতুন সমাচার, লুক: ১৯/২৬-২৭।]

তাহলে এসবের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা কি বলবো গ্রন্থগুলো সন্ত্রাস ও চরমপন্থাকে উৎসাহিত করে? কিংবা গ্রন্থগুলো থেকে এসব বাণী মুছে ফেলা উচিৎ। অবশ্যই না। বাণীগুলো বিশেষভাবে পবিত্র। বরং এগুলোকে তার পূর্বাপর প্রেক্ষাপটসহ অধ্যয়ন করতে হবে। তাহলে এর মূল বাণী ও প্রকৃত মর্ম অনুধাবন করা সম্ভব হবে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন