hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলামের সমালোচনা ও তার জবাব

লেখকঃ ড. সাঈদ ইসমাঈল চীনী

২৩
সৌদি আরবে অন্য ধর্মের প্রকাশ্য চর্চা নিষিদ্ধ কেন?
এ বিষয়ে কথা বলার আগে আমাদেরকে মৌলিক কয়েকটি বিষয়ে একমত হতে হবে:

জাতিসংঘের সদস্য হওয়া কিংবা এর কোনো কমিটির সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অর্থ কি এই যে, একটি জাতি তার নিজস্ব ভূখন্ডের ভেতর সে বা তার সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্য যে মূল্যবোধ বা চেতনা লালন করে, তাকে পরিহার করতে হবে?

অবশ্যই এর উত্তর হবে: না। ধর্মনিরপেক্ষসহ সব দেশই এ অধিকার সংরক্ষণ করে। কেননা জাতিসংঘ সনদ তার উদ্দেশ্য সম্পর্কে বলছে:

‘পারস্পরিক সমানাধিকার ও প্রত্যেকের নিজস্ব চলার পথ পছন্দের অধিকারের ভিত্তিতে জাতিতে জাতিতে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলা।’ [জাতিসংঘ সনদ, প্রথম অধ্যায়, প্রথম বিষয়, ২য় অনুচ্ছেদ।]

এই সনদে এমন কিছু নেই যা জাতিসংঘকে কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলাবার অনুমোদন দেয়। তাতে এমন কিছুও নেই যা তার সদস্য দেশগুলোকে সপ্তম অধ্যায়ে উল্লেখিত নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা কার্যকরে এ নীতি অন্তরায় নয় বলে এ সনদের কার্যকারিতা স্থগিত করার জন্য এ ধরনের সমস্যা উদ্ভাবনের অনুমতি প্রদান করে। [জাতিসংঘ সনদ, প্রথম অধ্যায়, দ্বিতীয় বিষয়, ৭ম অনুচ্ছেদ। কারণ, এটি ওই রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণের কথা বলা হয়েছে, যারা অন্য রাষ্ট্রের ওপর আক্রমণ রচনা করেছে।]

কোনো ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক বা সমাজতান্ত্রিক রাষ্টেও কি সংখ্যালঘু নাগরিকদের তাদের নিজস্ব চিন্তা-চেতনা বা বিশ্বাস-আদর্শ সংখ্যাগরিষ্ঠ নাগরিকদের জন্য বাধ্যতামূলক করার অধিকার রয়েছে? অবশ্যই এর উত্তর হবে: না।

কোনো সাধারণ গণতান্ত্রিক বা সমাজতান্ত্রিক দেশে কি বিদেশিদের ভোট দেওয়ার অধিকার আছে- যারা সেখানে শিক্ষা, চাকরি বা রাজনৈতিক আশ্রয়ের সুবাদে অবস্থান করছে? নিশ্চয় তারা সে দেশের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ যে দেশ তাকে ভিসা প্রদান করেছে। তেমনি চুক্তি সম্পাদিত হওয়ার পর তার মেয়াদ শেষ বা চুক্তি বাতিল না হওয়া পর্যন্ত কি উভয়পক্ষের সম্মতি ছাড়া কোনো শর্ত যুক্ত করার অনুমতি আছে কি?

অবশ্যই এর উত্তর হবে: বিদেশি ব্যক্তি স্বেচ্ছায় চুক্তি সম্পাদনপূর্বক একটি দেশে প্রবেশের পর কেবল সেদেশের আইন-কানূন মেনেই সেখানে অবস্থানের অধিকার রাখে। এ ব্যক্তি ও দেশটি কেবল চুক্তি সম্পাদনের আগ পর্যন্তই প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ শর্তাবলিতে সম্মতি বা অসম্মতি দেওয়ার অধিকার রাখে। আর স্থানীয় সব আইন পরোক্ষ শর্তের অন্তর্ভুক্ত। হ্যা, চুক্তিপত্রে যদি কোনোটাকে ব্যতিক্রম হিসেবে উল্লেখ করা হয় তাহলে ভিন্ন কথা।

সোজা কথায় বললে, একজন বিদেশি নাগরিক চাই তার বিশ্বাস ও মূল্যবোধ অবস্থানরত দেশের মূল্যবোধের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ হোক বা না হোক, স্বেচ্ছায় চুক্তি সম্পাদনের পর তার জন্য জরুরী চুক্তির মেয়াদ শেষ না হওয়া পর্যন্ত সেদেশের বিশ্বাস ও মূল্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকা। এটি একটি স্বাভাবিক বিষয়। গণতান্ত্রিক ও ধর্মনিরপেক্ষসহ সব দেশই এমনটি করে থাকে। এর দৃষ্টান্ত অনেক। যেমন,

কোনো বিদেশি শিশু যখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহণ করে, তার জন্য আমেরিকান পাসপোর্ট ছাড়া সেদেশে প্রবেশের অধিকার থাকে না। যদিও এ পাসপোর্ট বহন করার ফলে মানুষকে তার দেশের নিয়মে শাস্তির সম্মুখীন হতে হয়। তবে বিদেশির জন্য শুরু থেকেই আমেরিকায় প্রবেশ না করার পূর্ণ স্বাধীনতা রয়েছে যাতে তিনি আমেরিকান পাসপোর্ট বহনে বাধ্য না হন।

গণতান্ত্রিক দেশগুলোর মতো সব দেশেরই নানা রকমের ভিসা ব্যবস্থা চালু রয়েছে। সুতরাং যিনি যে ধরনের ভিসা নিয়ে দেশে প্রবেশ করবেন তাকে তার যাবতীয় নিয়ম ও শর্তাদি মেনে চলতে হবে। যেমন, তিনি এ দেশে কেবল লেখাপড়া করবেন, কাজ করবেন না এবং কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করবেন না। একজন ভিনদেশি লোক এসব শর্তে সম্মতি প্রকাশ করার আগ পর্যন্ত পূর্ণ স্বাধীনতার সঙ্গে নিজের ভালো-মন্দ বিবেচনা করেন। তারপর সেসব তিনি মেনে নেওয়া বা না মানার ভিত্তিতে ভিসা গ্রহণ করেন বা তা থেকে বিরত থাকেন। কোনো পর দেশই তাকে ভিসা নিতে বাধ্য করে না।

অনেক মুসলিম ব্যক্তি অমুসলিম রাষ্ট্রে (তাদের ভাষায়) সে দেশের জাতীয়তা নিয়ে বসবাস করেন। তথাপি তারা সেখানে তাদের ধর্মীয় অনেক বিধি-বিধান সেখানে পালন করতে পারেন না। যেমন, স্বপ্রণোদিত হত্যাকারীর ওপর কিসাসদণ্ড প্রয়োগ, ব্যভিচারী ও ব্যভিচারিণীর বেত্রাঘাতদণ্ড প্রয়োগ ইত্যাদি। কেননা এসব বিধান সেসব দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ নাগরিক কর্তৃক গৃহীত আইনের পরিপন্থী। এদিকে ইসলামের দৃষ্টিতে এসব বিধান যদিও মৌলিক ও অবশ্য পালনীয়; কিন্তু একটি উদারনৈতিক ও বাস্তবমুখী ধর্ম হিসেবে ইসলাম এসব মুসলিমের বিধানগুলো বাস্তবায়ন না করাকে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখে। বরং তাদেরকে উদ্বুদ্ধ করে সংশ্লিষ্ট দেশের আদর্শ ও নিষ্ঠাবান নাগরিক হতে। অনুপ্রাণিত করে তাদেরকে অন্যের জন্য অনুকরণীয় হতে। [রাবেতা আলমে ইসলামী, ফিকহ বোর্ড, মক্কা ঘোষণা।]

স্বদেশী হিসেবে অমুসলিম দেশে বসবাসকারী সংখ্যালঘু মুসলিমকে যখন এমন নির্দেশনা হয়েছে, তখন বলাইবাহুল্য যে, বিদেশে অবস্থানকারী ব্যক্তির জন্য সেদেশের নিয়ম-কানূন মেনে চলা আরও বেশি আবশ্যক। নিয়ম মানতে না পারলে তো চুক্তি বাতিলের অবকাশ নিয়ে ঐ দেশে বসবাস ত্যাগ করতে পারে। সে হিসেবে নিয়ম পছন্দ না হলে শুরু থেকেই কেউ সৌদি আরবে প্রবেশ করতে অস্বীকৃতি জানাতে পারে। সৌদি সরকার তো কাউকে এখানে আসতে বা বসবাস করতে কাউকে বাধ্য করে না।

আর কূটনৈতিক মিশনগুলোর ক্ষেত্রে এ নিয়ম এজন্য যে, তারা এখানে স্থায়ী নন। তাদের অবস্থান বারবার পরিবর্তন হয়। তাছাড়া তাদের ধর্ম ও ধর্মের প্রতি নিষ্ঠাও ব্যক্তিবিশেষে বিভিন্ন রকম হয়। সুতরাং তাদের ইবাদতের জন্য সুরম্য স্থাপনা প্রতিষ্ঠার অনুমতি দেওয়া কূটনৈতিক নিয়মেও যুক্তিসঙ্গত নয়। কূটনীতির দাবি হলো, তারা তাদের সংরক্ষিত স্থানে নিজস্ব ধর্মীয় আচার-নিয়ম চর্চা করবেন। কূটনৈতিক শিষ্টাচারের দাবি উভয় রাষ্ট্র পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধা বজায় রাখবে। আর এরই অংশ হিসেবে স্থানীয় নিয়ম-নীতির প্রতিও শ্রদ্ধা রাখতে হবে।

সৌদি আরবের জনগণ ইসলামকে তাদের রাষ্ট্রীয় ধর্ম হিসেবে স্বেচ্ছায় গ্রহণ করেছে। নিজেদের জন্য তারা ইসলামের যাবতীয় আকীদা-বিশ্বাস, ইবাদাত-বন্দেগী, আচার-আখলাক ও বিধি-বিধানকে পছন্দ করেছে। এদিকে সৌদি আরবের ভৌগলিক অবস্থানকে ইসলাম বিশেষ সুরক্ষিত স্থান হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে। [ইমাম মালেক রহ, মুয়াত্তা, কিতাবুল জামে‘।] আরব উপদ্বীপ যেখানে বিশ্বমুসলিমের প্রিয়তম ভূমিদ্বয় তথা মক্কা ও মদীনা অবস্থিত- তাতে দুই ধর্ম একত্রিত হতে পারবে না মর্মে নির্দেশ জারি করেছে। অর্থাৎ সেখানে সরকারি ও প্রকাশ্যভাবে দুই ধর্মের ইবাদাত করা যাবে না। তাই সৌদি সরকার যা সেদেশের মুসলিম জাতির প্রতিনিধিত্ব করছে তারও দায়িত্ব এই নির্দেশ বাস্তবায়ন করা। এ ব্যাপারে সৌদি সরকারের কোনো বিকল্পের এখতিয়ার নেই।

অমুসলিমদের পবিত্র মক্কায় প্রবেশে নিষেধাজ্ঞাও এর অন্তর্ভুক্ত, যাকে সামনে রেখে সারা বিশ্বের মুসলিম নামাজ আদায় করে। এটি আসলে ঠিক এরকম যেমন সব দেশেই এমনকি গণতান্ত্রিক দেশগুলোতে পর্যন্ত সরকারি ও বিশেষায়িত সংস্থাগুলোর সামনে ‘প্রবেশাধিকার সংরক্ষিত’ লেখার রেওয়াজ প্রচলিত। বিভিন্ন কারণে এ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। যেমন, নিরাপত্তা জনিত কারণে, অস্থিরতা থেকে সতর্কতা হিসেবে এবং পবিত্রতা ও সম্মান রক্ষার্থে। যেমনটি প্রযোজ্য ইসলামের ক্ষেত্রে। কেননা অস্বীকারকারীদের পবিত্র মক্কায় প্রবেশ ইসলাম নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। অবিশেষায়িত লোকদের উচিৎ অন্যের ইচ্ছার প্রতি সম্মান দেখানো।

এমনকি এ ব্যাপারে অনুরূপ কিছু করার দাবিও ব্যক্তি স্বাধীনতার পরিপন্থী। কেননা আপনি কারও কাছে তার বাড়িতে প্রবেশাধিকারের দাবি জানাতে পারেন না এর ভিত্তিতে যে আপনি তাকে আপনার বাড়িতে প্রবেশের অনুমতি দিয়েছেন। আর যেহেতু আপনি তাকে আপনার বাড়িতে প্রবেশের আগে এ শর্ত করেন নি। অতএব, এ ব্যাপারে প্রতিটি মানুষ তার প্রয়োজন ও অভিরুচি মতো সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে স্বাধীন।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন