hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলামের সমালোচনা ও তার জবাব

লেখকঃ ড. সাঈদ ইসমাঈল চীনী

১৭
ইসলামে মানবিক সম্পর্ক
ইসলাম দায়িত্বপ্রাপ্ত (মানব ও দানব) সবাইকে দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণের প্রতি আহ্বান করে। এমনকি ইসলামকে যে আখিরাতের মুক্তির পথ হিসেবে স্বীকার করে না তাকেও। যাবৎ না সে ইসলামের অনিষ্ট সাধনায় লিপ্ত হয় কিংবা মুসলিমদের ওপর যুলুম করে বা যুলুমকারীকে সাহায্য করে। কারণ, ইসলাম তার সঙ্গেও সদাচারের মূলনীতিতে অটল থাকে। ইসলাম পৃথিবীর নশ্বর জীবনে সম্মিলিত কল্যাণ বাস্তবায়নে অমুসলিমদের প্রতিও সহযোগিতার হাত প্রসারিত করতে উৎসাহিত করে। যাবৎ না এ সহযোগিতা মুসলিমের চিরস্থায়ী জীবনের জন্য নেতিবাচক কিছু বয়ে আনে। আল্লাহ তা‘আলা জন্মগতভাবেই মানুষের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতার মনোভাব প্রোথিত করেছেন। তিনি বলেন,

﴿يَٰٓأَيُّهَا ٱلنَّاسُ إِنَّا خَلَقۡنَٰكُم مِّن ذَكَرٖ وَأُنثَىٰ وَجَعَلۡنَٰكُمۡ شُعُوبٗا وَقَبَآئِلَ لِتَعَارَفُوٓاْۚ إِنَّ أَكۡرَمَكُمۡ عِندَ ٱللَّهِ أَتۡقَىٰكُمۡۚ إِنَّ ٱللَّهَ عَلِيمٌ خَبِيرٞ ١٣﴾ [ الحجرات : ١٣ ]

“হে মানুষ, আমরা তোমাদেরকে এক নারী ও এক পুরুষ থেকে সৃষ্টি করেছি আর তোমাদেরকে বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে বিভক্ত করেছি। যাতে তোমরা পরস্পর পরিচিত হতে পার। তোমাদের মধ্যে আল্লাহর কাছে সেই অধিক মর্যাদাসম্পন্ন যে তোমাদের মধ্যে অধিক তাকওয়া সম্পন্ন। নিশ্চয় আল্লাহ তো সর্বজ্ঞ, সম্যক অবহিত।” [সূরা আল-হুজরাত, আয়াত: ১৩]

আর মুসলিম-অমুসলিমের সাধারণ সম্পর্কের সীমা নির্ধারণ করে আল্লাহ তা‘আলার নিম্নোক্ত বাণী,

﴿لَّا يَنۡهَىٰكُمُ ٱللَّهُ عَنِ ٱلَّذِينَ لَمۡ يُقَٰتِلُوكُمۡ فِي ٱلدِّينِ وَلَمۡ يُخۡرِجُوكُم مِّن دِيَٰرِكُمۡ أَن تَبَرُّوهُمۡ وَتُقۡسِطُوٓاْ إِلَيۡهِمۡۚ إِنَّ ٱللَّهَ يُحِبُّ ٱلۡمُقۡسِطِينَ ٨ إِنَّمَا يَنۡهَىٰكُمُ ٱللَّهُ عَنِ ٱلَّذِينَ قَٰتَلُوكُمۡ فِي ٱلدِّينِ وَأَخۡرَجُوكُم مِّن دِيَٰرِكُمۡ وَظَٰهَرُواْ عَلَىٰٓ إِخۡرَاجِكُمۡ أَن تَوَلَّوۡهُمۡۚ وَمَن يَتَوَلَّهُمۡ فَأُوْلَٰٓئِكَ هُمُ ٱلظَّٰلِمُونَ ٩﴾ [ الممتحنة : ٨، ٩ ]

“দীনের ব্যাপারে যারা তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে নি এবং তোমাদেরকে তোমাদের বাড়ি-ঘর থেকে বের করে দেয়নি, তাদের প্রতি সদয় ব্যবহার করতে এবং তাদের প্রতি ন্যায়বিচার করতে আল্লাহ তোমাদেরকে নিষেধ করছেন না। নিশ্চয় আল্লাহ ন্যায় পরায়ণদের ভালোবাসেন। আল্লাহ কেবল তাদের সাথেই বন্ধুত্ব করতে নিষেধ করেছেন, যারা দীনের ব্যাপারে তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে এবং তোমাদেরকে তোমাদের বাড়ী-ঘর থেকে বের করে দিয়েছে ও তোমাদেরকে বের করে দেওয়ার ব্যাপারে সহায়তা করেছে। আর যারা তাদের সাথে বন্ধুত্ব করে, তারাই তো যালিম।” [সূরা আল-মুমতাহিনা, আয়াত: ৮-৯]

অন্যভাষায়, ইসলাম (জিন্ন ও ইনসান তথা মানব ও দানব) সকল দায়িত্বপ্রাপ্ত মাখলুককে দুনিয়া-আখিরাতের শান্তি অর্জনে একে অপরের সহযোগি হতে উদ্বুদ্ধ করে। [চীনী, হাকীকাতুল আলাকা, পৃ. ১১১-১১৪।] আমরা যেমন জানি শান্তি মানে প্রতিটি জ্ঞানসম্পন্ন মানুষকে অন্যের জবরদস্তি ছাড়া নিজেকে সুখী বানাতে কাজ করার সুযোগ দেওয়া। হ্যাঁ, কেউ তার কাঙ্ক্ষিত শান্তি বা তার চেয়েও উত্তম শান্তি অর্জনে সহযোগিতা করলে সেটা ভিন্ন কথা। কারণ, তা জবরদস্তির অন্তর্ভুক্ত নয়।

এ থেকে আমরা দু’টি গুরুত্বপূর্ণ বাস্তবতা বুঝতে পারি:

প্রাকৃতিকভাবেই মানুষের মধ্যে এক ধরনের পার্থক্য বিদ্যমান। এমনটি করা হয়েছে যাতে একে অপরকে চিনতে পারে এবং পরস্পর সহযোগিতা-প্রতিযোগিতা করতে পারে। তবে ‘প্রকৃত অর্জনে’র মানদণ্ড তাকওয়া, অর্থাৎ আল্লাহ তা‘আলার সন্তুষ্টি অর্জন এবং তাঁর অসন্তুষ্টি থেকে বাঁচার প্রচেষ্টা করা। আর তা করতে হবে তাঁর নির্দেশিত কাজ সম্পাদন এবং নিষেধকৃত কাজ বর্জন করার মাধ্যমে।

যৌথ ক্ষেত্রগুলোর অধিকাংশতেই মানুষের মধ্যে কিছু ভিন্নতার উপস্থিতি পারস্পরিক সহযোগিতার পরিপন্থি নয়। বরং যৌথ ক্ষেত্রগুলোতে তারা পরস্পরে সহযোগিতা করবে। এভাবে তারা ক্ষণস্থায়ী দুনিয়া ও চিরস্থায়ী আখিরাত জীবনের সৌভাগ্য বাস্তবায়নে যথাসম্ভব একজনের চেষ্টায় অন্যজন পরিপূরকের ভূমিকা রাখবে।

ইনসাফের জায়গা থেকেই ইসলাম নিরপেক্ষ বা সমর্থক অমুসলিম এবং শত্রু ও বিদ্বেষী অমুসলিমের মধ্যে পার্থক্য করে। প্রথম দল নিজেদের দেশকে শান্তিরাষ্ট্র আর অপরদল নিজেদের দেশকে শত্রুরাষ্ট্র হিসেবে অভিহিত করে। তবে জাতিসংঘের মতো একটি অভিভাবক সংস্থা থাকতে উচিৎ ছিল তার সদস্য রাষ্ট্রের সবগুলিই শান্তিরাষ্ট্র হওয়া। যদিও কিছু ব্যতিক্রম থাকাও অসম্ভব নয়, কখনো বাস্তবতা যাকে আংশিক বা সাময়িকভাবে হলেও অস্বীকার করে।

সাধারণত এই নির্ধারণের প্রশ্নটি পারিপার্শ্বিকতা ও আন্তর্জাতিক প্রয়োজনের সঙ্গে সম্পৃক্ত। এদিকে ইসলামে এই শ্রেণীকরণের যোগ্যতা রাখেন ব্যক্তি বা বিচ্ছিন্ন দল নয়; বরং (ওলিয়ে আমর বা) কর্তৃপক্ষ তথা সমগ্ররাষ্ট্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত অভিভাবকপক্ষ। কারণ ব্যক্তি ও দলের দৃষ্টিভঙ্গিতে হয়তো আন্তরিকতার অভাব থাকে না; কিন্তু তাতে ব্যাপকতার অভাব থাকে ঠিকই। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তা হয় আবেগাশ্রিত এবং সমস্যার প্রতি আংশিক নজরনির্ভর। তাই প্রায়শই তা ইসলামের বিশুদ্ধ মতামত থেকে হয় বিচ্যুত। তা কখনো সমগ্র উম্মাহ বা এর কোনো বিশাল অংশকে ইসলাম ও মুসলিমের অকল্যাণের দিকে টেনে নিয়ে যায়। বরং তাদের ব্যাপক ক্ষতি সাধন করে। পরবর্তীতে এই আবেগাশ্রয়ীদের অনেকেই অনুশোচনায় দগ্ধ হন। আর এমনটাই স্বাভাবিক। কেননা প্রায়োগিক ফিকহী সিদ্ধান্ত সঠিক হওয়ার জন্য শুধু শরী‘আতের বাণীসমগ্রের ওপর পর্যাপ্ত জ্ঞান থাকাই যথেষ্ট নয়; এর জন্য আরও প্রয়োজন বাস্তবতা অনুধাবনের মতো যথেষ্ট প্রজ্ঞা।

বিষয়টি পরিষ্কারের জন্য গাযওয়ায়ে উহুদ হতে পারে আদর্শ উপমা। এ যুদ্ধে যুবক শ্রেণি তাদের ধর্মীয় আবেগ আর ইসলামের জন্য প্রাণদানের প্রেরণায় উজ্জীবিত হয়ে শত্রুদের অবস্থান অভিমুখে বেরিয়ে আসাকেই মুসলিমদের জন্য শ্রেয় মনে করেছিলেন। পক্ষান্তরে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দৃষ্টি ছিল আরও ব্যাপক ও দূরদৃষ্টিসম্পন্ন। দীর্ঘমেয়াদে কাজের প্রতি লক্ষ্য রেখে এবং মুসলিম ও শত্রু সৈন্যের কথা বিবেচনা সেটিই ছিল বাস্তব ও যথার্থ সিদ্ধান্ত। লক্ষণীয়, যুবশ্রেণীর সিদ্ধান্ত ছিল কেবল দীনের আত্মনিবেদনের আবেগ ও প্রেরণা থেকে উদ্ভুত। পক্ষান্তরে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সিদ্ধান্ত ছিল ইসলামের প্রতি তাঁর দায়িত্ব এবং ইসলাম ও মুসলিমের ভবিষ্যৎ ও তাদের নিরাপত্তার চেতনায় পুষ্ট। আর বলাবাহুল্য যে এ দুই সিদ্ধান্তের মাঝে বিদ্যমান বিশাল পার্থক্য।

তবে এর অর্থ কিন্তু এ নয় যে রাষ্ট্রের কিছু কিছু সিদ্ধান্ত কেবল ক্ষমতাবানদের ব্যক্তি স্বার্থের পদলেহনই করে, হোক না তা ইসলাম ও মুসলিমের হিসেবে। বরং এসব সিদ্ধান্তের সিংহভাগই অধিক দূরদর্শিতা, অধিক সতর্কতা ও অশুভ পরিণামের প্রতি লক্ষ্য রেখে গৃহীত হয়।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন