hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ফিতনাতুত-তাকফীর

লেখকঃ শায়খ নাসিরুদ্দীন আলবানী (রহ), শায়খ আব্দুল্লাহ বিন বায (রহ), শায়খ সফিউর রহমান মুবারকপুরী (রহ), বিভিন্ন মুফাসসির ও মুহাদ্দিসদের (রহ) উদ্ধৃতি

২৪
কুফর দূনা কুফর
এটাই সুস্পষ্ট হয় যে, এই তাফসীর সম্পর্কে ইবনু আব্বাস (রা) সে সময় এমন কোন কথা শুনেছিলেন- যা আজকাল আমরা শুনছি। অর্থাৎ তখন এমন কিছু লোক ছিল যারা আয়াতটির যাহেরী (প্রকাশ্য) অর্থ গ্রহণ করত। আর যে ব্যাখ্যার প্রতি আমি এখন ইঙ্গিত করছি তা তারা অস্বীকার করত। অর্থাৎ কখনোই এটা যাহেরী অর্থ (কাফির অর্থ- মুরতাদ হওয়া) হবে না, বরং কখনো কখনো এর থেকে কম স্তরের কুফরও উদ্দেশ্য হয়ে থাকে। এ জন্যে ইবনু আব্বাস (রা) বলেছেন :

ليس الكفر الذي تذهبون إليه وإنه ليس كفرا ينقل عن الْملة وهو كفر دون كفر

‘‘এটা ঐ কুফর নয়, যার দিকে এরা (খারেজীরা) গিয়েছে। এটা ঐ কুফর নয়, যা মিল্লাতে ইসলামিয়া থেকে খারিজ করে দেয়। বরং كفر دون كفر ‘‘(চূড়ান্ত) কুফরের থেকে কম কুফর’’। [.সহীহ : এটা ইমাম হাকিম (রহ) বর্ণনা করেছেন (২/৩১৩) এবং বলেছেন : ‘সহীহুল ইসনাদ’। আর ইমাম যাহাবী (রহ) চুপ থেকেছেন। আর তাদের দু’জনের সমন্বয়ে হক্ব প্রতিষ্ঠিত হয়। অর্থাৎ তাদের উক্তি : على شرط الشيخين ‘‘সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমের শর্তানুযায়ী’’ দ্বারা হাদীসটি উক্ত মর্যাদাই উন্নীত হয়। অতঃপর আমি এটাও দেখলাম যে, হাফিয ইবনু কাসির (রহ) তাঁর তাফসীরে (৬/১৬৩) হাকিম থেকে বর্ণনা করার পর বলেছেন : على شرط الشيخين ‘‘সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমের শর্তানুযায়ী’’। [সিলসিলাতুল আহাদীসুস সাহীহাহ ৬/২৭০৪ নং হাদীস]বর্ণনাটির উপর আপত্তি হল, এর সনদে হিশাম বিন হুজায়র মাক্কী আছেন। যাকে ইয়াহইয়া বিন ক্বত্তান (রহ), ইবনু মাঈন (রহ) ও ইমাম আহমাদ (রহ) যঈফ বলেছেন।এর জবাব হল, হিশাম বিন হুজায়রকে যারা সিক্বাহ ও গ্রহণযোগ্য বলেছেন মুহাদ্দিসদের মধ্যে তারাই সংখ্যাধিক্য। ফলে সনদটি হাসান স্তরের। তাদের কয়েকজনের মন্তব্য : ইমাম বুখারী (রহ) তাঁর সহীহ বুখারীতে (হা/৬৭২০) হিশামের বর্ণনা ‘শপথের কাফফারা অধ্যায়ে’ এনেছেন। আর সহীহ বুখারী ‘সহীহ’র উপর অধিকাংশ মুহাদ্দিসগণের ইজমা‘ রয়েছে। সুতরাং বিচ্ছিন্ন ব্যক্তি বিশেষ মুহাদ্দিসের তার প্রতি আপত্তি এক্ষেত্রে বাতিল হয়। সহীহ মুসলিমে হিশাম বিন হুজায়র (রহ)-এর একাধিক বর্ণনা রয়েছে। দ্র :মুক্বাদ্দামা : باب النَّهْىِ عَنِ الرِّوَايَةِ، عَنِ الضُّعَفَاءِ، وَالاِحْتِيَاطِ، فِي تَحَمُّلِهَا (পরিচ্ছেদ-৪ : যঈফ রাবীর হাদীস বর্ণনা করা নিষিদ্ধ এবং হাদীস সংগ্রহের ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন করা)- এখানে হিশাম থেকে দুটি বর্ণনা রয়েছে।] তা ছাড়া আরও দুটি বর্ণনা রয়েছে : হা/২৯১১ (২০৯/১২৪৬)- হজ্জ অধ্যায়, হা/৪১৭৮ (২৩/১৬৫৪) - শপথ অধ্যায়] ইবনু শিবরামা (রহ) বলেন : ليس بمكة مثله (হিশামের সাথে তুলনীয় কেউ মক্কাতে ছিল না) [আহমাদ বিন হাম্বল, আল-জামিউ লিউলূমির রিজাল পৃ. ৩৪৩] ইবনু মাঈন (রহ) থেকে বর্ণিত হয়েছে : তিনি সালিহ (নেককার) ছিলেন। ...ইমাম আবূ হাতিম (রহ) বলেন : তার হাদীস লেখা হয়। [আবূ হাতিম রাযী, আল-জারাহ ও তা‘দিল] যাহাবী (রহ) বলেন : ইমাম আহমাদ তাকে যঈফ বলেছেন আর অন্যরা তাকে সিক্বাহ বলেছেন। [মুহাম্মাদ বিন আহমাদ বিন উসমান যাহাবী, যাকারু আসমাউ মান তাকাল্লামা ফীহি ওয়া হুয়া মাওসুকুন ১/১৮৭ পৃ. ৩৫৫ নং] আজলী (রহ) তাকে সিক্বাহ বলেছেন। [উক্বদুস সামিন ফী তারিখিল বালাদিল আমীন ৬/১৭৯-১৮০, ২৬৩৭ নং]অর্থাৎ অল্প কয়েকজন হিশাম বিন হুজায়রের প্রতি আপত্তি করলেও অধিকাংশ মুহাদ্দিস তাকে গ্রহণ করেছেন। ফালিল্লাহিল হামদ। তা ছাড়া অন্য সনদে হিশাম ছাড়াও অন্য রাবী রয়েছে। ফলে হিশাম বর্ণনা এক্ষেত্রে একক নয়। [বাংলা অনুবাদক]]

এই আয়াতটির তাফসীর প্রসঙ্গে এটাই সংক্ষিপ্ত ও বিস্তারিত জবাব। এছাড়া অন্যান্য দলিল যেখানে কুফর শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে সেগুলোও এই মর্মটি ছাড়া অনুধাবন করা সম্ভব নয়- যে ব্যাপারে আমি আমার আলোচনার শুরুতেই উল্লেখ করেছি। [.উর্দু অনুবাদকের টীকা : শায়েখ মুহাম্মাদ বিন সালেহ আল-উসায়মীন (রহ) ইমাম আলবানী (রহ)-এর আলোচ্য উদ্ধৃতির ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে বলেন : শায়েখ আলবানী (রহ) ইবনু আব্বাস (রা)-এর এই আসারটি দ্বারা দলিল গ্রহণ করেছেন। এমনকি তিনি ছাড়াও অনেক আলেমে দ্বীনও এর প্রতি গুরুত্বারোপ করে এর মর্যাদা সমুন্নত করেছেন। যদিও হাদীসের সনদটির ব্যাপারে কিছু অভিযোগ আছে, কিন্তু সমস্ত আলেম দলিলটির ব্যাপকতার ভিত্তিতে প্রকৃত মর্মের আলোকে এটির গ্রতি গুরুত্বারোপ করে গ্রহণ করেছেন। কেননা নবী (স) এর বাণী : سِبَابُ الْمُسْلِمِ فُسُوْقٌ وَ قِتَالُه كُفْرٌ ‘‘মুসলিমকে গালি দেয়া ফাসেক্বী, আর তাকে হত্যা করা কুফরী।’’ [সহীহ বুখারী ৪৮, সহীহ মুসলিম ১২৪ (১১৬/৬৪), তাহক্বীক্ব মিশকাত ৪৮১৪] এতদ্বসত্ত্বেও মুসলিমদের সাথে ক্বিতাল করা দ্বীন থেকে খারিজ করে না। কেননা আল্লাহ তাআলা বলেন : وَإِنْ طَائِفَتَانِ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ اقْتَتَلُوا فَأَصْلِحُوا بَيْنَهُمَا ‘‘মু’মিনদের দুই দল ক্বিতালে লিপ্ত হলে তাদের মধ্যে মিমাংসা করে দেবে’’ (সূরা হুজুরাত : ৯ আয়াত)। এবং إِنَّمَا الْمُؤْمِنُونَ إِخْوَةٌ فَأَصْلِحُوا بَيْنَ أَخَوَيْكُمْ ‘‘মু‘মিনগণ পরস্পর ভাই ভাই। সুতরাং তাদের ভ্রাতৃগণের মধ্যে শান্তি স্থাপন করো ’’ (সূরা হুজুরাত : ১০ আযাত)। এরপরেও তাকফীরের ফিতনায় নিমজ্জিত ব্যক্তিগণ এই বিষয়টির বিরোধিতা করেন। তারা বলেন : এই আসারটি গায়ের মাক্ববুল এবং ইবনু আব্বাস (রা) থেকে সহীহ সূত্রে প্রমাণিত নয়। আমি তাদের জবাবে বলছি : এটা কিভাবে সহীহ নয়? যখন উক্ত বড় বড় আলেম, যারা তোমাদের থেকে অনেক বড়, বেশি সম্মানিত ও হাদীসের ব্যাপারে অনেক বেশি বিজ্ঞ! তারা হাদীসটিকে গ্রহণ করেছেন, অথচ তোমরা বলছ হাদীসটি গ্রহণযোগ্য নয়!!আমাদের জন্যে এটাই যথেষ্ট যে, শীর্ষস্থানীয় আলেম যেমন ইমাম ইবনু তাইমিয়া ও ইবনু ক্বাইয়েম (রহ) প্রমুখ। এদের প্রত্যেকেই এটাকে স্বতঃস্ফুর্তভাবে ক্ববুল করেছেন, এর উপর আলোচনা করেছেন ও এর উদ্ধৃতি দিয়েছেন। সুতরাং প্রমাণিত হল, আসারটি সহীহ। তর্কের খাতিরে যদি ধরে নিই, ইবনু আব্বাসের আসারটি সহীহ নয় তবুও আমাদের কাছে এমন অনেক সহীহ দলিল রয়েছে যা এর সমর্থন করে যে, কুফর কখনো এমনও হয় যা দ্বীন থেকে খারিজ করে না। যেভাবে পূর্বোক্ত আয়াতে উল্লিখিত হয়েছে। কিংবা রসূলুল্লাহ (স) -এর বাণী : اثْنَتَان في النَّاسِ هُمَا بهم كُفْرٌ : الطَّعْنُ فِي النَّسَبِ ، وَالنِّيَاحَةُ عَلَى الْمَيِّتِ ‘‘দু’টি বিষয় মানুষের মধ্যে রয়েছে, যা তাদের জন্য কুফর :১.বংশ নিয়ে খোঁটা দেওয়া,২.মৃত ব্যক্তির জন্য বিলাপ করা। [সহীহ মুসলিম, আত-তারগীব ওয়াত-তারহীব (ইফা)৪/৩৫৬ পৃ.]নিঃসন্দেহে এই আমল মুসলিমকে ইসলাম থেকে খারিজ করে না। কিন্তু অজ্ঞতার কারণে এবং সম্মানিত আলেমদের অনুসরণের বদলে অন্য পথের অনুসরণের মধ্যে দিয়ে তা ঘটে থাকে- যেভাবে আলবানী (রহ) শুরুতে উল্লেখ করেছেন।এখন আমি অপর একটি বিষয় সুস্পষ্ট করতে চাই। খারাপ নিয়্যাত খারাপ উপলব্ধির প্রতিক্রিয়া। কেননা যখন মানুষ কোন কিছুর নিয়্যাত করে তখন তার উপলব্ধি তার নিয়্যাতের দিকেই বাধ্যতামূলকভাবে ঝুঁকে পড়ে। আর এ কারণে তারা দলিল বিকৃতি করতেও কুন্ঠাবোধ করে না।কেননা আলেমদের প্রসিদ্ধ নীতিগুলোর মধ্যে অন্যতম হল, তারা বলেছেন : استدل ثُم اعتقد ‘‘দলিল খোঁজ, অতঃপর সে মোতাবেক আক্বীদা বানাও।’’ অথচ তাদের মধ্যে এটা নেই। বরং তারা যেন এমন : ‘‘প্রথমে একটি আক্বীদা পোষণ কর অতঃপর দলিলকে সে দিকে লক্ষ্য করে উপস্থাপন কর। যার ফলাফল হল গোমরাহ হয়ে যাও।’’ এর কারণ তিনটি : (ক) ইলমের দৈন্যতা, (খ) শরীয়াতের ব্যাপক নিয়ম-কানুন সম্পর্কে দুর্বল উপলব্ধি, ও (গ) খারাপ উপলব্ধি- যার ফলে খারাপ নিয়্যাত ও উদ্দেশ্যের রচনা হয়।]

‘কুফর’ শব্দটি অনেক দলিলেই উল্লিখিত হয়েছে। কিন্তু সেগুলো কুফরে আকবার অর্থে আসেনি। কেননা যে সব আমলের ক্ষেত্রে ‘কুফর’ শব্দটি ঐ সব দলিলে ব্যবহৃত হয়েছে সেগুলো দ্বীন ইসলাম থেকে খারিজ করে দেয় না। [.উর্দূ অনুবাদকের টিকা : শায়েখ উসামীন (রহ) একজন প্রশ্নকারীর উত্তরে বলেছিলেন : ‘‘খারাপ মর্ম উদ্ধারকারীদের মধ্যে এই কথারও প্রচার রয়েছে যে, তারা শায়খুল ইসলাম ইবনু তাইমিয়া (রহ) এর কথা সম্পৃক্ত করে যে : اذا أطلق الكفر فإنّما يراد به كفر أكبر ‘‘যদি কুফর সম্পর্কে বর্ণনা করা হয় তবে তা দ্বারা কুফরে আকবারই উদ্দেশ্য হবে।’’ ফলে তারা এই উক্তির আলোকে বর্ণিত أُولَئِكَ هُمُ الْكَافِرُونَ আয়াত দ্বারা তাকফীরের দলিল নিয়ে থাকে। কিন্তু এই আয়াতটির পক্ষে এমন কোন দলিল দ্বারা এটা প্রমাণ করা সম্ভব নয় যে, এর দাবি الكفر (প্রকৃত / বড় কুফর)।অথচ তাঁর থেকে সহীহ সূত্রে প্রমাণিত যে, তিনি الكفر শব্দে যে ال -ইসমে মা‘রিফাসহ এসেছে তাকে, كفر শব্দ যা ইসমে নাকিরাহ দ্বারা এসেছে তা থেকে পৃথক করেছেন।অথচ বৈশিষ্ট্যের দিকে থেকে আমাদের কাছে هؤلاء الكافرون এবং هؤلاء كافرون (তারা কাফির) উভয়ই সমান। যার দাবি হল, এ কুফরও হতে পারে যা দ্বারা দ্বীন ইসলাম থেকে খারিজ হয় না। আসল বিষয় হল, ফে‘ল (কর্মের) বৈশিষ্ট্যের সাথে, ফা‘য়েল (কর্তার) বৈশিষ্ট্যের পার্থক্য। এর আলোকে আলোচ্য আয়াতটির যে ব্যাখ্যা বর্ণিত হয়েছে - حكم بغير ما انزل الله ‘‘আল্লাহ’র নাযিলকৃত বিধান ছাড়া হুকুম/শাসন করা’’ এমন কুফর নয় যা দ্বীন ইসলাম থেকে খারিজ করে দেয়। কিন্তু এই কুফরটি আমলী কুফর- যা দ্বারা এ ধরনের হুকুমদানকারী সহীহ পথ থেকে খারিজ হয়ে যায়।আর এই দু’টি বিষয়ের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই যে, ঐ সমস্ত মানবরচিত আইন কারো কাছ থেকে গ্রহণ করে তা দ্বারা নিজের দেশে ফায়সালা করা, কিংবা স্বয়ং নিজেই তা আবিষ্কার করে ঐ মানবরচিত (মনগড়া) আইন প্রতিষ্ঠিত করা (উভয়টিই একই)। প্রকৃতপক্ষে যে বিষয়টির দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে তা হল, সেটা কি আল্লাহ তাআলা’র নাযিলকৃত আসমানী বিধানের বিরোধী হয় কি না?] ঐ সমস্ত দলিলের মধ্যে উদাহরণ স্বরূপ সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমের একটি প্রসিদ্ধ হাদীস উপস্থাপন করা যায়, আব্দুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রা) বর্ণনা করেন, নবী (স) বলেছেন :

سِبَابُ الْمُسْلِمِ فُسُوْقٌ وَ قِتَالُه كُفْرٌ

‘‘মুসলিমকে গালি দেয়া ফাসেক্বী, আর তাকে হত্যা করা কুফরী।’’ [. সহীহ : সহীহ বুখারী ৪৮, সহীহ মুসলিম ১২৪ (১১৬/৬৪), তাহক্বীক্ব মিশকাত ৪৮১৪।]

আমার কাছে قِتَالُه كُفْرٌ বাক্যটি আরবি ভাষার একটি সূক্ষ্ম তত্ত্বগত ব্যাপার। কেননা যদি কেউ বলে : سِبَابُ الْمُسْلِمِ وَ قِتَالُه فُسُوْقٌ ‘‘মুসলিমকে গালি দেওয়া ও হত্যা করা ফাসেক্বী’’ -এটিও একটি সঠিক বাক্য। কেননা ফিস্কও আল্লাহ তাআলা’র নাফরমানী তথা তাঁর ইতাআত থেকে খারিজ হওয়া। কিন্তু যেহেতু রসূলুল্লাহ (স) আরবি ব্যাকরণের ফাসাহাত ও বালাগাতে সর্বোন্নত ছিলেন। তাই তিনি (স) বলেছেন:

سِبَابُ الْمُسْلِمِ فُسُوْقٌ وَ قِتَالُه كُفْرٌ

‘‘মুসলিমকে গালি দেয়া ফাসেক্বী, আর তাকে হত্যা করা কুফরী।’’ [. সহীহ : সহীহ বুখারী ৪৮, সহীহ মুসলিম ১২৪ (১১৬/৬৪), তাহক্বীক্ব মিশকাত ৪৮১৪।]

লক্ষ করুন, আমরা হাদীসে বর্ণিত ‘ فسق ’ শব্দটিকে পূর্ববর্তী দ্বিতীয় ও তৃতীয় আয়াতের তাফসীর হিসাবে ‘ فسق ’ শব্দটি ব্যবহার করতে পারি। অর্থাৎ وَمَنْ لَمْ يَحْكُمْ بِمَا أَنْزَلَ اللَّهُ فَأُولَئِكَ هُمُ الْفَاسِقُونَ ‘‘যারা আল্লাহ’র নাযিলকৃত আইন দ্বারা বিচার করে না, তারাই ফাসিক্ব।’’ [.সূরা মায়িদাহ : ৪৭ আয়াত।] তাহলে এ পর্যায়ে কুরআনের আয়াত وَمَنْ لَمْ يَحْكُمْ بِمَا أَنْزَلَ اللَّهُ فَأُولَئِكَ هُمُ الْفَاسِقُونَ এবং হাদীস سِبَابُ الْمُسْلِمِ فُسُوْقٌ ‘‘মুসলিমকে গালি দেওয়া ফাসেক্বী’’ -এ ব্যবহৃত ‘ فسق ’ শব্দটির দাবি কি একই হবে?

প্রকৃতপক্ষে ‘ فسق ’ শব্দটি ‘ كفر ’ শব্দটির পরিপূরক। যার দাবি হল ‘ كفر ’ শব্দটি কখনো ইসলাম থেকে খারিজ করে দেয়, আবার কখনো ‘ كفر ’ শব্দটির দাবি হল যা ইসলাম থেকে খারিজ করে না। অর্থাৎ এর দাবি হল, যা পূর্বে তাফসীর প্রসঙ্গে উল্লেখ করা হয়েছে كفر دون كفر (মূল কুফরের থেকে কম কুফর)। আর হাদীসটিও সেই দাবি করছে যে, এর অর্থ কখনো কুফরও হয়ে থাকে।

কেননা আল্লাহ তাআলা কুরআনুল কারীমে বলেছেন :

وَإِنْ طَائِفَتَانِ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ اقْتَتَلُوا فَأَصْلِحُوا بَيْنَهُمَا فَإِنْ بَغَتْ إِحْدَاهُمَا عَلَى الْأُخْرَى فَقَاتِلُوا الَّتِي تَبْغِي حَتَّى تَفِيءَ إِلَى أَمْرِ اللَّهِ

‘‘মু’মিনদের দুই দল ক্বিতালে লিপ্ত হলে তাদের মধ্যে মিমাংসা করে দেবে। আর তাদের একদল অপর দলের বিরুদ্ধে বাড়াবাড়ি করলে যারা বাড়াবাড়ি করে তাদের বিরুদ্ধে তোমরা ক্বিতাল করবে যতক্ষণ না তারা আল্লাহর নির্দেশের দিকে ফিরে আসে।’’ [.সূরা হুজুরাত : ৯ আয়াত।]

এই আয়াতটিতে আমাদের রব বিদ্রোহী ফিরক্বার বর্ণনা দিয়েছেন যারা ফিরক্বায়ে নাজিয়াহ তথা প্রকৃত মু’মিন দলের সাথে ক্বিতাল করে। কিন্তু তাদের প্রতি কুফরের হুকুম দেননি। অথচ হাদীসে বলা হয়েছে ‘‘মুসলিমকে হত্যা করা কুফর।’’ সুতরাং প্রমাণিত হল, ক্বিতাল কুফর কিন্তু এটি دون كفر (ছোট কুফর) যা ইবনু আব্বাস (রা) -এর পূর্ববর্তী আয়াতের তাফসীরে বর্ণিত হয়েছে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন