hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ফিতনাতুত-তাকফীর

লেখকঃ শায়খ নাসিরুদ্দীন আলবানী (রহ), শায়খ আব্দুল্লাহ বিন বায (রহ), শায়খ সফিউর রহমান মুবারকপুরী (রহ), বিভিন্ন মুফাসসির ও মুহাদ্দিসদের (রহ) উদ্ধৃতি

৩২
পরিশিষ্ট- ১ : ইবাদত ও ইতাআত
-সফিউর রহমান মুবারকপুরী (রহ)

[সফিউর রহমান মুবারকপুরী বিখ্যাত ‘আর-রাহীকুল মাখতুম’-নামক সিরাতুন্নবী (স)-এর লেখক। তাছাড়া তাঁর অধীনে সম্পাদিত বোর্ডকর্তৃক তাফসীর ইবনু কাসিরের সংশোধিত সংস্করণটিও খুবই জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। তিনি বর্তমান যামানার অন্যতম সালাফী আক্বীদার মুহাদ্দিস ও মুফাসসির হিসাবে খ্যাত। এই প্রবন্ধটি www.AsliAhleSunnet.com থেকে যা উর্দু ভাষায় অনূদিত ও সঙ্কলিত ‘ফিতনাতুত তাকফীর আওর হুকুম বিগয়রি মা আনযালাল্লাহ’-এর ৮৪-৮৭ পৃষ্ঠা থেকে সংগৃহীত। তাছাড়া মূল প্রবন্ধটির স্বতন্ত্র উর্দু শিরোনামেও مولانا مودودی کی نظرئہ حاکمیت کا رد (মওদুদী সাহেবের দৃষ্টিভঙ্গির ‘তাওহীদে হাকিমিয়্যাত’ খণ্ডন) প্রকাশিত হয়েছে। -অনুবাদক : কামাল আহমাদ]

মওদুদী সাহেবের চিন্তা হল, যার প্রতি নিঃশর্ত ইতাআত করা হয় সেটাই প্রকারান্তরে তার ইবাদত করা। মুসলিমরা আল্লাহ তাআলা’র নিঃশর্ত ইতাআত করে। আর নবী (স)-এর ইতাআত এ জন্য করে যে, সেটা আল্লাহ তাআলা হুকুম দিয়েছেন। অর্থাৎ নবী (স)-এর ইতাআত হল, আল্লাহ তাআলা’র ইতাআতের অধীন। সুতরাং যখন তাঁর (স) ইতাআত করা হয়, তখন আল্লাহ তাআলা’রই ইতাআত করা হয়। যা ফলশ্রুতিতে আল্লাহ’র ইবাদতে পরিণত হয়। এর দ্বারা তিনি অপর একটি মাসআলা উদ্ভাবন করেছেন। আর তা হল, যদি কোন হুকুমাত আল্লাহ তাআলা’র কানুনের অধীনতা ছাড়াই হুকুমাত পরিচালনা করে, তবে সেই হুকুমাতের ইতাআত করাই- তার ইবাদত করা, যা প্রকারান্তরে শিরক। আর এভাবেই তিনি শিরক ফিল হাকিমিয়্যাহ’র দৃষ্টিভঙ্গি রাখেন। এটা অত্যন্ত জোরালোভাবে তিনি উপস্থাপন করেছেন, যার মধ্যে অসংখ্য ব্যক্তি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। আপনাদের সামনে আমি এর স্বরূপ উপস্থাপন করব। অনেক সময় একশ’, দু’শ, চার’শ এমনকি আট’শ পৃষ্ঠার কিতাবে এ ধরনের মাসআলা লেখা হয়। মাসআলা অত্যন্ত জটিল আকার ধারণ করে, এবং অনেক লম্বা লম্বা আলোচনা বুঝার ক্ষেত্রে সমস্যার সৃষ্টি করে। এ কারণে আমি আপনাদের সামনে কয়েকটি শব্দের ব্যাপারে দুই একটি আলোচনা উপস্থাপন করছি।

ইতাআত কি ইবাদত? নাকি ইবাদত এবং ইতাআত ভিন্ন ভিন্ন জিনিস? আমি এটা আপনাদের বুঝাব। এটা বুঝানোর জন্য আমি আপনাদের সামনে একটি বা দু’টি উদাহরণ পেশ করছি।

একবার আমার কাছে জামায়াতে ইসলামী’র একজন যুবক আসল। সে আমার সাথে কথা বলতে লাগল, আমিও তার সাথে কথা বলতে থাকলাম। একপর্যায়ে সে তার দা‘ওয়াত দিল যে, আমাদের দা‘ওয়াত হল এটা....। আমি বললাম আমি জানি। সে এটাই আশা করছিল যে, আমি যেন তার দা‘ওয়াত কবুল করি।

আমি বললাম : দেখ, তোমাদের দা‘ওয়াত সহীহ নয়।

যুবক : কেন সহীহ নয়?

আমি : যদি এটাই তোমাদের সত্যিকার দা‘ওয়াত হয় যে, যদি কোন ব্যক্তি কোন হুকুমাতের ইতাআত করে যা আল্লাহ তাআলা’র কানুনের অধীনস্থ নয়, তাহলে এই ইতাআত ইবাদতে পরিণত হবে। যদি এটাই তোমাদের দা‘ওয়াত হয়, তবে মেহেরবানি করে বাইরে যাও এবং যদি কোন মুসলিমকে বাম পাশে দেখ (ভারতের ট্রাফিক আইনে বাম পাশ থেকেই চলতে হয়), তখন যদি সে রাস্তায় বাম পাশ থেকে সাইকেল চালায় তবে তাকে বল, ভাই তুমি বাম পাশ থেকে চলো না, এই পাশ থেকে সাইকেল চালানো শিরক।

যুবক : (উচ্চৈঃস্বরে বলল) শায়খ এটা কি বলেন?

আমি : আমি তো তা-ই বলছি, যা তোমরা বলে থাক। তোমাদের বক্তব্যের মূল বিষয়ই আমি জানাচ্ছি।

যুবক : কিভাবে?

আমি : ভারতের হুকুমাত আল্লাহ তাআলা’র হুকুমাতের বিপরীত, নাকি আল্লাহ’র হুকুমাতের অধীন।

যুবক : না, আল্লাহ’র হুকুমাত গ্রহণ না করে এর বিপরীত পন্থায় চলে।

আমি : এখানে যে আইন আছে এর ইতাআত করাটি কি শিরক হবে, নাকি শিরক হবে না?

যুবক : কোনটা হবে?

আমি : এই আইনের অন্যতম একটি হল, সাইকেল রাস্তার বাম দিক দিয়ে চলবে। যে ব্যক্তি বাম দিক দিয়ে সাইকেল চালাবে, সে এই হুকুমাতের ইতাআত করবে। আর এই ইতাআতকেই ‘জামায়াতে ইসলামী’ ইবাদত বলছে। আর গায়রুল্লাহ’র ইবাদতকে শিরক গণ্য করা হয়। সুতরাং এটা শিরক।

যুবক : (পেরেশানীর সাথে বলল) শায়খ আপনিই বলুন, কোনটা সহীহ আর কোনটা ভুল?

আমি : দেখ, ইতাআত ও ইবাদত ভিন্ন ভিন্ন জিনিস। তবে কখনো কখনো একই আমল ইবাদত ও ইতাআত দু’টিই হতে পারে। তেমনই এমনটিও হতে পারে যে, কোন আমল ইতাআত হলেও তা ইবাদত নয়। আবার এটাও হতে পারে যে, কোন আমল ইবাদত কিন্তু ইতাআত নয়। এর সবগুলোই সম্ভব।

যুবক : কিভাবে?

আমি : বলছি, শোন। ইবরাহীম (আ) নিজের ক্বওমকে জিজ্ঞাসা করলেন :

إِذْ قَالَ لِأَبِيهِ وَقَوْمِهِ مَا تَعْبُدُونَ ( ٧٠ ) قَالُوا نَعْبُدُ أَصْنَامًا فَنَظَلُّ لَهَا عَاكِفِينَ ( ٧١ ) قَالَ هَلْ يَسْمَعُونَكُمْ إِذْ تَدْعُونَ ( ٧٢ ) أَوْ يَنْفَعُونَكُمْ أَوْ يَضُرُّونَ ( ٧٣ )

‘‘(ইবরাহীম আ.) যখন তার পিতা ও ক্বওমকে বললেন : তোমরা কিসের ইবাদত কর? তারা বলল : আমরা প্রতিমার ইবাদত করি এবং এদেরকেই নিষ্ঠার সাথে আঁকড়ে থাকি। ইবরাহীম (আ) বললেন : তোমরা যখন আহবান কর, তখন কি তারা শোনে? অথবা তারা কি তোমাদের কোন উপকার বা ক্ষতি করতে পারে?’’(সূরা শূআরা : ৭০-৭৩ আয়াত)

বলতো, ইবরাহীম (আ)-এর ক্বওম যে মূর্তির ইবাদত করত, তারা কি তার ইতাআতও করত? মূর্তিতো কখনোই কোন হুকুম দেয়ার বা কোন কিছু বাধা দেয়ার ক্ষমতা রাখে না। সুতরাং ঐ ক্বওমের কাজটি ইবাদত হলেও ইতাআত নয়।

যুবক : (তখন সে স্বীকার করল) হাঁ এটা ঠিক যে, ঐ ক্বওম ইতাআত নয় বরং মূর্তিদের ইবাদত করত।

আমি : তাহলে এবার আমরা আরেকটু সামনে যাব। ঈসায়ীদের সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা কুরআন মাজীদের কয়েকটি স্থানে বর্ণনা করেছেন। ক্বিয়ামতের দিন আল্লাহ তাআলা ঈসা (আ)-কে জিজ্ঞাসা করবেন :

وَإِذْ قَالَ اللَّهُ يَا عِيسَى ابْنَ مَرْيَمَ أَأَنْتَ قُلْتَ لِلنَّاسِ اتَّخِذُونِي وَأُمِّيَ إِلَهَيْنِ مِنْ دُونِ اللَّهِ .

‘‘যখন আল্লাহ বলবেন : হে ঈসা ইবনু মারইয়াম! তুমি কি লোকদের বলে দিয়েছিলে যে, আল্লাহকে ছেড়ে আমাকে ও আমার মাতাকে ইলাহ সাব্যস্ত কর?’’.... (সূরা মায়িদা : ১১৬ আয়াত)।

তখন ঈসা (আ) এটা সুস্পষ্টভাবে অস্বীকার করবেন। বলবেন :

مَا قُلْتُ لَهُمْ إِلَّا مَا أَمَرْتَنِي بِهِ أَنِ اعْبُدُوا اللَّهَ رَبِّي وَرَبَّكُمْ وَكُنْتُ عَلَيْهِمْ شَهِيدًا مَا دُمْتُ فِيهِمْ

‘‘আমি তো তাদের কিছুই বলিনি, তবে কেবল সে কথাই বলেছি যা আপনি নির্দেশ দিয়েছিলেন। তাহল, আল্লাহ’র ইবাদত কর, যিনি আমার ও তোমাদের রব। আমি তাদের ব্যাপারে সাক্ষ্যদাতা যতদিন তাদের মাঝে ছিলাম।’’ (সূরা মায়িদা : ১১৭ আয়াত)

এভাবে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করবেন। কুরআনের উল্লিখিত আয়াতের সম্পর্ক ঈসায়ীদের সাথে এবং ঈসা (আ) -এর ইবাদত করা সম্পর্কিত। কিন্তু ঐ লোকেরা যার ইবাদত করে সে না তাদের উপকার করতে পারে, আর না পারে তাদের ক্ষতি করতে। সুতরাং সুস্পষ্ট হল, তারা ঈসা (আ) -এর ইবাদত করত। আর ঈসা (আ) তাদের কোন উপকার বা ক্ষতি করতে পারতেন না। এখন মাসআলা হল, তারা ঈসা (আ)-এর যে ইবাদত করত, সেটা কি তাঁর ইতাআতও ছিল?

(পুনরায় বললাম) ইবাদত করাতো প্রমাণিত হল, কেননা কুরআন এ কাজটিকে ঈসা (আ)-এর ইবাদত বলে উল্লেখ করেছে। সুতরাং ঈসায়ীদের মধ্যে যারা তাঁর ইবাদত করেছে ও করছে, তারা কি তাঁর ইতাআতও করছে? তারা কখনোই ইতাআত করছে না। ঈসা (আ) কখনই তাঁর ইবাদত করার হুকুম দেন নাই যে, আমার ইবাদত কর। বরং তিনি নিষেধ করেছেন। সুতরাং তারা তাঁর বিরুদ্ধাচরণ করেছে। ইতাআতের বদলে নাফরমানী করেছে, আর সেটা ইবাদতই ছিল। সুতরাং ইবাদত করার জন্য এটা জরুরি নয় যে, যার ইবাদত করা হবে তাঁর ইতাআতও করতে হবে। ইতাআত ছাড়াও ইবাদত হয়, আর নাফরমানির মাধ্যমেও ইবাদত করা হয়। একে তাঁর পক্ষ থেকে অনুমোদিত ইবাদত বলা হবে না।

সুতরাং মাসআলাটি সুস্পষ্ট হল। এখন তুমি কী জানতে চাও? কারো কোন হুকুম মানা ও আনুগত্য করা তার ইতাআত। পক্ষান্তরে, কারো নৈকট্য অর্জনের জন্য তথা সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য কোন মাধ্যম ছাড়াই তার সন্তুষ্টি অর্জনের পদ্ধতিমূলক কাজই ইবাদত। ঐ লোকেরা ঈসা (আ)-এর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য ঐ আমল করত, এ কারণে তারা তাঁর ইবাদত করত। তারা তাঁর নির্দেশের আনুগত্য করেনি, সুতরাং তারা তাঁর ইতাআত করত না। আমরা সালাত আদায় করি- এর দ্বারা আল্লাহ তাআলা’র সন্তুষ্টি ও নৈকট্য কামনা করি। অর্থাৎ সালাত একটি ইবাদত। আর আল্লাহ যে হুকুম দিয়েছেন তা পালনও করি, এটাই হল তাঁর ইতাআত। ইতাআত ও ইবাদতের অর্থ ভিন্ন ভিন্ন। সালাত একটি আমল যার মধ্যে দু’টি বিষয়ই রয়েছে অর্থাৎ ইবাদত ও ইতাআত।

অথচ মওদুদী সাহেব যেহেতু এই দৃষ্টিভঙ্গি রাখেন যে, কারো নিঃশর্ত ইতাআত করাটাই তার ইবাদত করা। এ কারণে তিনি বলেছেন, বান্দা যদি আল্লাহ তাআলা’র ইতাআতে জীবন অতিবাহিত করে, তবে তার সমস্ত জীবনই ইবাদতে পরিণত হবে। সুতরাং তার দৃষ্টিভঙ্গির আলোকে এগুলো (জীবন-যাপনের সব কিছুই) ইবাদত। কিন্তু কুরআনের দৃষ্টিভঙ্গির আলোকে জীবনের সবকিছুই ইবাদত নয়। বরং এর মধ্যে ইতাআতও রয়েছে। যদি সমস্ত যিন্দেগী আল্লাহ’র হুকুমে পালিত হয়, তবে সেই যিন্দেগীর পুরোটাই তাঁর ইতাআত। আর এটা সওয়াবের কাজ এবং এর মাধ্যমে সওয়াব অর্জিত হয়। কিন্তু এটা ইবাদত নয়। এটাই সহীহ অর্থ।

[সংযোজন : পূর্বেই আমরা দেখেছি স্বয়ং নবী (স) শাসককে ততক্ষণ পর্যন্ত ছাড় দিতে বলেছেন যতক্ষণ তার থেকে স্পষ্ট কুফর প্রকাশ না পায়, কিংবা সালাত আদায় করে। পক্ষান্তরে যুলুম-অত্যাচার, স্বজনপ্রীতি, হক্ব থেকে বঞ্চিত হওয়ার ক্ষেত্রে জনগণকে শাসককে মেনে নিতে বলেছেন। কিন্তু দু’টিই আল্লাহর নির্দেশ। এর প্রথমোক্তটি আক্বীদা ও ইবাদত সংক্রান্ত। আর দ্বিতীয়টি ইতাআত বা মুআমালাত সম্পর্কিত। অথচ উভয়টির ব্যাপারেই সুস্পষ্ট নির্দেশাবলি আছে। -অনুবাদক]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন