HADITH.One
HADITH.One
Bangla
System
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
সাপোর্ট করুন
সূরা ফাতিহা
লেখকঃ শাইখ আবদুর রহমান বিন মুবারক আলী
اَلْحَمْدُ لِلّٰهِ رَبِّ الْعَالَمِيْنَ وَالصَّلَاةُ وَالسَّلَامُ عَلٰى رَسُوْلِه مُحَمَّدٍ وَّعَلٰى اٰلِه وَصَحْبِه اَجْمَعِيْنَ
সকল প্রশংসা একমাত্র আলস্নাহ তা‘আলার জন্য, দরূদ ও সালাম বর্ষিত হোক বিশ্বনবী মুহাম্মাদ ﷺ এর উপর এবং তাঁর পরিবার-পরিজন ও সাহাবায়ে কেরাম (রাঃ) এর উপর।
সূরা ফাতিহা কুরআন মাজীদের অতি গুরম্নত্বপূর্ণ একটি সূরা। সম্পূর্ণ কুরআনের সারমর্ম এ সূরার মধ্যে নিহিত রয়েছে। এ সূরাটি মূলত আলস্নাহ তা’আলা ও বান্দার মধ্যে কথোপকথন। এ সূরার প্রতিটি এমনকি প্রতিটি শব্দ এতই গাম্ভির্যপূর্ণ যে, এর অর্থ ও মর্মার্থ জেনে বুঝে পাঠ করলে এর তাvপর্য অনুধাবন করা যাবে। যে ব্যাক্তি এ সূরাটির ব্যাখ্যা বুঝে আমল করবে সে দুনিয়া ও আখিরাতে সফলকাম হতে পারবে।
প্রতিদিন আমরা প্রত্যেক সালাতের শুরম্নতে সূরা ফতিহা পাঠ কওে থাকি। কিন্তু অধিকাংশ মুসলিস্ন বার বার এ সূরাটি পাঠ করলেও তারা এর মর্ম অনুধাবন করতে সক্ষম হন না। ফলে তারা সালাত আদায়ের প্রকৃত স্বাদ অনূধাবন করতে পারেন না। সুতরাং আমাদের উচিত এ সূরাটির মর্ম ও ব্যাখ্যা অনুধাবন করে এর উপর আমল করা।
এ বইটিতে স্বল্পপরিসরে সূরা ফতিহা সর্ম্পকে অত্যমত্ম তাvপর্যপূর্ণ আলোচনা করা হয়েছে। সূরা ফাতিহায় আলোচিত আয়াতগুরোকে ধারাবাহিকভাবে ব্যাখ্যাসহ এ বইটিতে আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি, পাঠক ভাই- বোনেরা এ বইটি পাঠ করার পর সূরা ফাতিহা সর্ম্পকে এমন কিছু জানতে পারবেন, যা হয়তো ইতিপূর্বে জানতে পারেননি।
সুতরাং এ বইটি আমরা সকলে পড়ব এবং অন্যান্য মুসলিম ভাই- বোনকে পড়ার জন্য উvসাহিত করব। আমরা সূরা ফাতিহার মর্মার্থ অনুধাবন করব এবং নিজেদের জীবনে এর বাসত্মবায়ন করব। এর ফলে আমরা দুনিয়াতে উপকৃত হব এবং পরকালে জান্নাতের নিয়ামত লাভ করার সুযোগ পাব-ইনশাআলস্নাহ। আলস্নাহ তা’আলা আমাদেও সবাইকে সেই নিয়ামত লাভ করার তাওফীক দান করম্নন। আ-মীন
বিনীত
শাইখ আবদুর রহমান বিন মুবারক আলী
মোবাইল : ০১৯১২-১৭৫৩৯৬
ঢাকা - ২৫/০৭/২০১৬ ইং
সকল প্রশংসা একমাত্র আলস্নাহ তা‘আলার জন্য, দরূদ ও সালাম বর্ষিত হোক বিশ্বনবী মুহাম্মাদ ﷺ এর উপর এবং তাঁর পরিবার-পরিজন ও সাহাবায়ে কেরাম (রাঃ) এর উপর।
সূরা ফাতিহা কুরআন মাজীদের অতি গুরম্নত্বপূর্ণ একটি সূরা। সম্পূর্ণ কুরআনের সারমর্ম এ সূরার মধ্যে নিহিত রয়েছে। এ সূরাটি মূলত আলস্নাহ তা’আলা ও বান্দার মধ্যে কথোপকথন। এ সূরার প্রতিটি এমনকি প্রতিটি শব্দ এতই গাম্ভির্যপূর্ণ যে, এর অর্থ ও মর্মার্থ জেনে বুঝে পাঠ করলে এর তাvপর্য অনুধাবন করা যাবে। যে ব্যাক্তি এ সূরাটির ব্যাখ্যা বুঝে আমল করবে সে দুনিয়া ও আখিরাতে সফলকাম হতে পারবে।
প্রতিদিন আমরা প্রত্যেক সালাতের শুরম্নতে সূরা ফতিহা পাঠ কওে থাকি। কিন্তু অধিকাংশ মুসলিস্ন বার বার এ সূরাটি পাঠ করলেও তারা এর মর্ম অনুধাবন করতে সক্ষম হন না। ফলে তারা সালাত আদায়ের প্রকৃত স্বাদ অনূধাবন করতে পারেন না। সুতরাং আমাদের উচিত এ সূরাটির মর্ম ও ব্যাখ্যা অনুধাবন করে এর উপর আমল করা।
এ বইটিতে স্বল্পপরিসরে সূরা ফতিহা সর্ম্পকে অত্যমত্ম তাvপর্যপূর্ণ আলোচনা করা হয়েছে। সূরা ফাতিহায় আলোচিত আয়াতগুরোকে ধারাবাহিকভাবে ব্যাখ্যাসহ এ বইটিতে আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি, পাঠক ভাই- বোনেরা এ বইটি পাঠ করার পর সূরা ফাতিহা সর্ম্পকে এমন কিছু জানতে পারবেন, যা হয়তো ইতিপূর্বে জানতে পারেননি।
সুতরাং এ বইটি আমরা সকলে পড়ব এবং অন্যান্য মুসলিম ভাই- বোনকে পড়ার জন্য উvসাহিত করব। আমরা সূরা ফাতিহার মর্মার্থ অনুধাবন করব এবং নিজেদের জীবনে এর বাসত্মবায়ন করব। এর ফলে আমরা দুনিয়াতে উপকৃত হব এবং পরকালে জান্নাতের নিয়ামত লাভ করার সুযোগ পাব-ইনশাআলস্নাহ। আলস্নাহ তা’আলা আমাদেও সবাইকে সেই নিয়ামত লাভ করার তাওফীক দান করম্নন। আ-মীন
বিনীত
শাইখ আবদুর রহমান বিন মুবারক আলী
মোবাইল : ০১৯১২-১৭৫৩৯৬
ঢাকা - ২৫/০৭/২০১৬ ইং
এ সূরাটি মক্কায় নাযিল হয়েছে। রাসূলুলস্নাহ ﷺ যখন নবুওয়াত লাভ করেন, তখন সর্বপ্রথম তাঁর উপর সূরা আলাক্ব এর প্রথম পাঁচটি আয়াত মক্কায় নাযিল হয়। তারপর কয়েক দিন অহি নাযিল হওয়া বন্ধ থাকে। তারপর সূরা মুদ্দাস্সির-এর প্রথম ৫ অথবা ৭টি আয়াত নাযিল হয়। তারপর সর্বপ্রথম পূর্ণাঙ্গ সূরা হিসেবে সূরা ফাতিহা নাযিল হয়।
فَاتِحَةٌ (ফাতিহাতুন) শব্দের অর্থ হলো মুখবন্ধ, ভূমিকা, শুরম্ন করা, আরম্ভ করা ইত্যাদি। সুতরাং সূরা ফাতিহা এর অর্থ হচ্ছে আরম্ভ করার সূরা। এ হিসেবে এ সূরাটিকে ফাতিহা হিসেবে নামকরণের কয়েকটি কারণ রয়েছে। যেমন-
১. যেহেতু এ সূরা কুরআনের ভূমিকাস্বরূপ এবং এর মাধ্যমে কুরআন শুরম্ন হয়েছে তাই এ সূরাকে ফাতিহা হিসেবে নামকরণ করা হয়েছে।
২. যেহেতু সূরাটি সর্বপ্রথম পূর্ণাঙ্গ সূরা হিসেবে নাযিল হয়েছে, তাই এটাকে সূরা ফাতিহা হিসেবে নামকরণ করা হয়েছে।
৩. যেহেতু সূরা ফাতিহার মাধ্যমে সালাত শুরম্ন করা হয়, তাই এটাকে সূরা ফাতিহা বলা হয়।
১. যেহেতু এ সূরা কুরআনের ভূমিকাস্বরূপ এবং এর মাধ্যমে কুরআন শুরম্ন হয়েছে তাই এ সূরাকে ফাতিহা হিসেবে নামকরণ করা হয়েছে।
২. যেহেতু সূরাটি সর্বপ্রথম পূর্ণাঙ্গ সূরা হিসেবে নাযিল হয়েছে, তাই এটাকে সূরা ফাতিহা হিসেবে নামকরণ করা হয়েছে।
৩. যেহেতু সূরা ফাতিহার মাধ্যমে সালাত শুরম্ন করা হয়, তাই এটাকে সূরা ফাতিহা বলা হয়।
সূরা ফাতিহা কুরআন মাজীদের ছোট সূরাসমূহের অমত্মর্ভুক্ত হলেও এর তাৎপর্য অনেক বেশি। সে জন্য কুরআন, হাদীস ও আছার থেকে সূরা ফাতিহার একাধিক নাম পাওয়া যায়। যেমন-
(১) أُمُّ الْقُرْاٰنِ (উম্মুল কুরআন) তথা কুরআনের মা :
সূরা ফাতিহাকে أُمُّ الْقُرْاٰنِ (উম্মুল কুরআন) এজন্য বলা হয়েছে যে, এ সূরাটি হলো কুরআনের মূল। এর মধ্যে কুরআনের সমসত্ম সূরার সার সংক্ষেপ বর্ণিত রয়েছে এবং এর মধ্যে কুরআনের সমসত্ম ইলম অমত্মর্ভুক্ত রয়েছে। হাদীসে এসেছে,
عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ أُمُّ الْقُرْاٰنِ هِيَ السَّبْعُ الْمَثَانِيْ وَالْقُرْاٰنُ الْعَظِيمُ
আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুলস্নাহ ﷺ বলেছেন, উম্মুল কুরআন অর্থাৎ সূরা ফাতিহা হচ্ছে সাবউল মাসানী (বার বার পঠিত সাতটি আয়াত) ও কুরআনুল আযীম (মহিমান্বিত কুরআন)। [সহীহ বুখারী, হা/৪৭০৪; মুসনাদে আহমাদ, হা/৯৭৮৭; তিরমিযী, হা/৩১২৪; আবু দাউদ, হা/১৪৫৯।]
(২) أُمُّ الْكِتَابِ (উম্মুল কিতাব) তথা কিতাবের মূল :
এখানে اَلْكِتَابُ (আল-কিতাব) বলতে কুরআনকেই বুঝানো হয়েছে। সুতরাং সূরা ফাতিহাকে أُمُّ الْكِتَابِ (উম্মুল কিতাব) নামকরণের তাৎপর্য হলো, এ সূরা হচ্ছে কুরআনের কেন্দ্রবিন্দু। কুরআনের সকল বক্তব্য সূরা ফাতিহার দিকে ফিরে আসে।
তাছাড়া কুরআনের যেসব আয়াতের অর্থ একেবারে স্পষ্ট, সেসব আয়াতকে أُمُّ الْكِتَابِ (উম্মুল কিতাব) বলা হয়। যেমন- আলস্নাহ তা‘আলা বলেন,
﴿هُوَ الَّذِيْۤ اَنْزَلَ عَلَيْكَ الْكِتَابَ مِنْهُ اٰيَاتٌ مُّحْكَمَاتٌ هُنَّ اُمُّ الْكِتَابِ وَاُخَرُ مُتَشَابِهَاتٌ﴾
তিনিই আপনার ওপর কিতাব অবতীর্ণ করেছেন। এর মধ্যে কতক আয়াত রয়েছে মুহকামাত (স্পষ্ট), এগুলোই কিতাবের মূল; আর অন্যগুলো মুতাশাবিহাত (অস্পষ্ট)। (সূরা আলে ইমরান- ৭)
(৩) اَلسَّبْعُ الْمَثَانِىْ (আস-সাব‘উল মাছানী) তথা বারবার পঠিত সাতটি আয়াত :
اَلسَّبْعُ (আস-সাব‘উ) এর অর্থ হচ্ছে সাত। যেহেতু সূরা ফাতিহার মধ্যে সাতটি আয়াত রয়েছে, তাই এটাকে اَلسَّبْعُ বলা হয়। আর اَلْمَثَانِىْ (আল-মাছানী) শব্দটির অর্থ হচ্ছে দুই। আরবি ভাষায় এটি تَكْرَار (তাকরার) তথা বার বার অর্থেও ব্যবহার করা হয়। যেহেতু সূরা ফাতিহা সালাতের মধ্যে বার বার পাঠ করা হয়, তাই এটাকে اَلْمَثَانِىْ (আল-মাছানী) বলা হয়।
অন্যদিকে আরবি ভাষায় اَلْمَثَانِىْ (আল-মাছানী) শব্দটি ثَنَاءٌ (ছানাউন) তথা প্রশংসাজ্ঞাপন অর্থেও ব্যবহার করা হয়। যেহেতু সূরা ফাতিহার মাধ্যমে আলস্নাহ তা‘আলার প্রশংসা করা হয় তাই এদিক থেকেও এটাকে مَثَانِىْ (মাছানী) বলা হয়। আলস্নাহ তা‘আলা বলেন,
﴿وَلَقَدْ اٰتَيْنَاكَ سَبْعاً مِّنَ الْمَثَانِيْ وَالْقُرْاٰنَ الْعَظِيْمَ﴾
আর আমি তোমাকে দান করেছি বারবার পঠিত সাতটি আয়াত ও মহান কুরআন। (সূরা হিজর- ৮৭)
অত্র আয়াতে বর্ণিত اَلسَّبْعُ الْمَثَانِىْ (আস-সাব‘উল মাছানী) বলতে সূরা ফাতিহাকেই বুঝানো হয়েছে।
(৪) فَاتِحَةُ الْكِتَابِ (ফাতিহাতুল কিতাব) তথা কুরআনের মুখবন্ধ :
الْفَاتِحَةْ (আল ফাতিহাতু) শব্দের অর্থ হলো মুখবন্ধ, ভূমিকা, শুরম্ন করা, আরম্ভ করা ইত্যাদি। যেহেতু এ সূরাটির মাধ্যমে কুরআনের লিখন শুরম্ন হয়েছে তাই এটাকে فَاتِحَةُ الْكِتَابِ (ফাতিহাতুল কিতাব) হিসেবেও নামকরণ করা হয়েছে। হাদীসে এসেছে,
عَنْ أَبِى هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ عَنِ النَّبِىِّ -صلى الله عليه وسلم - : أَنَّهُ كَانَ يَقُولُ ﴿الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ﴾ سَبْعُ آيَاتٍ ، إِحْدَاهُنَّ ﴿بِسْمِ اللهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ﴾ وَهِىَ السَّبْعُ مِنَ الْمَثَانِى وَالْقُرْآنِ الْعَظِيمِ وَهِىَ أُمُّ الْقُرْآنِ وَهِىَ فَاتِحَةُ الْكِتَابِ
আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী ﷺ বলেন, ﴿ الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ ﴾ এর মধ্যে সাতটি আয়াত রয়েছে। তার মধ্যে একটি হচ্ছে ﴿ بِسْمِ اللهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ ﴾ । এটি বারবার পঠিত সাতটি আয়াত এবং মহা কুরআন। আর এটি হচ্ছে উম্মুল কুরআন এবং এটিই হচ্ছে فَاتِحَةُ الْكِتَابِ (ফাতিহাতুল কিতাব)। [বায়হাকী, হা/২৪৮৫; কানযুল উম্মাল, হা/২৫১৯।]
(৫) سُوْرَةُ الدُّعَاءِ (সূরাতুদ দু‘আ) তথা দু‘আর সূরা :
এক সূরাটির অংশ হচ্ছে দু‘আ। যেমন-
اِهْدِنَا الصِّرَاطَ الْمُسْتَقِيْمَ
আমাদেরকে সরলসঠিক পথ দেখিয়ে দিন।
অত্র আয়াতে সরলসঠিক পথ প্রদর্শনের জন্য মহান আলস্নাহর কাছে দু‘আ করা হয়েছে। আর এ কারণে এ সূরাটিকে سُوْرَةُ الدُّعَاءِ (সূরাতুদ দু‘আ) বলা হয়। রাসূলুলস্নাহ ﷺ ইরশাদ করেন,
أَفْضَلُ الذِّكْرِ لَاۤ إِلٰهَ إِلاَّ الله ُوَأَفْضَلُ الدُّعَاءِ اَلْحَمْدُ لِلّٰهِ
‘‘শ্রেষ্ঠ যিকির হলো লা-ইলাহা ইলস্নালস্নাহ এবং শ্রেষ্ঠ দু‘আ হলো ‘আলহামদুলিলস্নাহ’ বা সূরা ফাতিহা’’। [তিরমিযী, হা/৩৩৮৩; ইবনে মাজাহ, হা/৩৮০০; সুনানুল কুবরা নাসাঈ, হা/১০৫৯৯; মুসাদরাকে হাকেম, হা/১৮৩৪।]
(৬) الشِّفَاءِ سُوْرَةُ (সূরাতুশ শিফা) তথা রোগমুক্তির সূরা।
(৭) أَسَاسُ الْقُرْاٰنِ (আসাসুল কুরআন) তথা কুরআনের ভিত্তি।
(৮) الْحَمْدِ سُوْرَةُ (সূরাতুল হামদ) তথা প্রশংসার সূরা।
(৯) الصَّلٰوةِ سُوْرَةُ (সূরাতুস সালাত) তথা নামাযের সূরা।
(১০) الْكَافِيَةِ سُوْرَةُ (সূরাতুল কাফিয়াহ) তথা যথেষ্ট হওয়ার সূরা।
(১১) سُوْرَةُ الْكَنْزِ (সূরাতুল কানয) তথা খনির সূরা ইত্যাদি।
(১২) الرُّقِيَّةِ سُوْرَةُ (সূরাতুর রম্নক্বিয়্যাহ) তথা ঝাঁড়ফুকের সূরা :
(১) أُمُّ الْقُرْاٰنِ (উম্মুল কুরআন) তথা কুরআনের মা :
সূরা ফাতিহাকে أُمُّ الْقُرْاٰنِ (উম্মুল কুরআন) এজন্য বলা হয়েছে যে, এ সূরাটি হলো কুরআনের মূল। এর মধ্যে কুরআনের সমসত্ম সূরার সার সংক্ষেপ বর্ণিত রয়েছে এবং এর মধ্যে কুরআনের সমসত্ম ইলম অমত্মর্ভুক্ত রয়েছে। হাদীসে এসেছে,
عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ أُمُّ الْقُرْاٰنِ هِيَ السَّبْعُ الْمَثَانِيْ وَالْقُرْاٰنُ الْعَظِيمُ
আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুলস্নাহ ﷺ বলেছেন, উম্মুল কুরআন অর্থাৎ সূরা ফাতিহা হচ্ছে সাবউল মাসানী (বার বার পঠিত সাতটি আয়াত) ও কুরআনুল আযীম (মহিমান্বিত কুরআন)। [সহীহ বুখারী, হা/৪৭০৪; মুসনাদে আহমাদ, হা/৯৭৮৭; তিরমিযী, হা/৩১২৪; আবু দাউদ, হা/১৪৫৯।]
(২) أُمُّ الْكِتَابِ (উম্মুল কিতাব) তথা কিতাবের মূল :
এখানে اَلْكِتَابُ (আল-কিতাব) বলতে কুরআনকেই বুঝানো হয়েছে। সুতরাং সূরা ফাতিহাকে أُمُّ الْكِتَابِ (উম্মুল কিতাব) নামকরণের তাৎপর্য হলো, এ সূরা হচ্ছে কুরআনের কেন্দ্রবিন্দু। কুরআনের সকল বক্তব্য সূরা ফাতিহার দিকে ফিরে আসে।
তাছাড়া কুরআনের যেসব আয়াতের অর্থ একেবারে স্পষ্ট, সেসব আয়াতকে أُمُّ الْكِتَابِ (উম্মুল কিতাব) বলা হয়। যেমন- আলস্নাহ তা‘আলা বলেন,
﴿هُوَ الَّذِيْۤ اَنْزَلَ عَلَيْكَ الْكِتَابَ مِنْهُ اٰيَاتٌ مُّحْكَمَاتٌ هُنَّ اُمُّ الْكِتَابِ وَاُخَرُ مُتَشَابِهَاتٌ﴾
তিনিই আপনার ওপর কিতাব অবতীর্ণ করেছেন। এর মধ্যে কতক আয়াত রয়েছে মুহকামাত (স্পষ্ট), এগুলোই কিতাবের মূল; আর অন্যগুলো মুতাশাবিহাত (অস্পষ্ট)। (সূরা আলে ইমরান- ৭)
(৩) اَلسَّبْعُ الْمَثَانِىْ (আস-সাব‘উল মাছানী) তথা বারবার পঠিত সাতটি আয়াত :
اَلسَّبْعُ (আস-সাব‘উ) এর অর্থ হচ্ছে সাত। যেহেতু সূরা ফাতিহার মধ্যে সাতটি আয়াত রয়েছে, তাই এটাকে اَلسَّبْعُ বলা হয়। আর اَلْمَثَانِىْ (আল-মাছানী) শব্দটির অর্থ হচ্ছে দুই। আরবি ভাষায় এটি تَكْرَار (তাকরার) তথা বার বার অর্থেও ব্যবহার করা হয়। যেহেতু সূরা ফাতিহা সালাতের মধ্যে বার বার পাঠ করা হয়, তাই এটাকে اَلْمَثَانِىْ (আল-মাছানী) বলা হয়।
অন্যদিকে আরবি ভাষায় اَلْمَثَانِىْ (আল-মাছানী) শব্দটি ثَنَاءٌ (ছানাউন) তথা প্রশংসাজ্ঞাপন অর্থেও ব্যবহার করা হয়। যেহেতু সূরা ফাতিহার মাধ্যমে আলস্নাহ তা‘আলার প্রশংসা করা হয় তাই এদিক থেকেও এটাকে مَثَانِىْ (মাছানী) বলা হয়। আলস্নাহ তা‘আলা বলেন,
﴿وَلَقَدْ اٰتَيْنَاكَ سَبْعاً مِّنَ الْمَثَانِيْ وَالْقُرْاٰنَ الْعَظِيْمَ﴾
আর আমি তোমাকে দান করেছি বারবার পঠিত সাতটি আয়াত ও মহান কুরআন। (সূরা হিজর- ৮৭)
অত্র আয়াতে বর্ণিত اَلسَّبْعُ الْمَثَانِىْ (আস-সাব‘উল মাছানী) বলতে সূরা ফাতিহাকেই বুঝানো হয়েছে।
(৪) فَاتِحَةُ الْكِتَابِ (ফাতিহাতুল কিতাব) তথা কুরআনের মুখবন্ধ :
الْفَاتِحَةْ (আল ফাতিহাতু) শব্দের অর্থ হলো মুখবন্ধ, ভূমিকা, শুরম্ন করা, আরম্ভ করা ইত্যাদি। যেহেতু এ সূরাটির মাধ্যমে কুরআনের লিখন শুরম্ন হয়েছে তাই এটাকে فَاتِحَةُ الْكِتَابِ (ফাতিহাতুল কিতাব) হিসেবেও নামকরণ করা হয়েছে। হাদীসে এসেছে,
عَنْ أَبِى هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ عَنِ النَّبِىِّ -صلى الله عليه وسلم - : أَنَّهُ كَانَ يَقُولُ ﴿الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ﴾ سَبْعُ آيَاتٍ ، إِحْدَاهُنَّ ﴿بِسْمِ اللهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ﴾ وَهِىَ السَّبْعُ مِنَ الْمَثَانِى وَالْقُرْآنِ الْعَظِيمِ وَهِىَ أُمُّ الْقُرْآنِ وَهِىَ فَاتِحَةُ الْكِتَابِ
আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী ﷺ বলেন, ﴿ الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ ﴾ এর মধ্যে সাতটি আয়াত রয়েছে। তার মধ্যে একটি হচ্ছে ﴿ بِسْمِ اللهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ ﴾ । এটি বারবার পঠিত সাতটি আয়াত এবং মহা কুরআন। আর এটি হচ্ছে উম্মুল কুরআন এবং এটিই হচ্ছে فَاتِحَةُ الْكِتَابِ (ফাতিহাতুল কিতাব)। [বায়হাকী, হা/২৪৮৫; কানযুল উম্মাল, হা/২৫১৯।]
(৫) سُوْرَةُ الدُّعَاءِ (সূরাতুদ দু‘আ) তথা দু‘আর সূরা :
এক সূরাটির অংশ হচ্ছে দু‘আ। যেমন-
اِهْدِنَا الصِّرَاطَ الْمُسْتَقِيْمَ
আমাদেরকে সরলসঠিক পথ দেখিয়ে দিন।
অত্র আয়াতে সরলসঠিক পথ প্রদর্শনের জন্য মহান আলস্নাহর কাছে দু‘আ করা হয়েছে। আর এ কারণে এ সূরাটিকে سُوْرَةُ الدُّعَاءِ (সূরাতুদ দু‘আ) বলা হয়। রাসূলুলস্নাহ ﷺ ইরশাদ করেন,
أَفْضَلُ الذِّكْرِ لَاۤ إِلٰهَ إِلاَّ الله ُوَأَفْضَلُ الدُّعَاءِ اَلْحَمْدُ لِلّٰهِ
‘‘শ্রেষ্ঠ যিকির হলো লা-ইলাহা ইলস্নালস্নাহ এবং শ্রেষ্ঠ দু‘আ হলো ‘আলহামদুলিলস্নাহ’ বা সূরা ফাতিহা’’। [তিরমিযী, হা/৩৩৮৩; ইবনে মাজাহ, হা/৩৮০০; সুনানুল কুবরা নাসাঈ, হা/১০৫৯৯; মুসাদরাকে হাকেম, হা/১৮৩৪।]
(৬) الشِّفَاءِ سُوْرَةُ (সূরাতুশ শিফা) তথা রোগমুক্তির সূরা।
(৭) أَسَاسُ الْقُرْاٰنِ (আসাসুল কুরআন) তথা কুরআনের ভিত্তি।
(৮) الْحَمْدِ سُوْرَةُ (সূরাতুল হামদ) তথা প্রশংসার সূরা।
(৯) الصَّلٰوةِ سُوْرَةُ (সূরাতুস সালাত) তথা নামাযের সূরা।
(১০) الْكَافِيَةِ سُوْرَةُ (সূরাতুল কাফিয়াহ) তথা যথেষ্ট হওয়ার সূরা।
(১১) سُوْرَةُ الْكَنْزِ (সূরাতুল কানয) তথা খনির সূরা ইত্যাদি।
(১২) الرُّقِيَّةِ سُوْرَةُ (সূরাতুর রম্নক্বিয়্যাহ) তথা ঝাঁড়ফুকের সূরা :
সূরা ফাতিহা দ্বারা ঝাড়ফুঁক করা যায়। যেহেতু এ সূরাটি দ্বারা ঝাঁড়ফুক করা হয় তাই এটিকে الرُّقِيَّةِ سُوْرَةُ (সূরাতুর রম্নক্বিয়্যাহ) তথা ঝাঁড়ফুকের সূরাও বলা হয়। হাদীসে এসেছে,
عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أَنَّ نَاسًا مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَتَوْا عَلَى حَيٍّ مِنْ أَحْيَاءِ الْعَرَبِ فَلَمْ يَقْرُوهُمْ فَبَيْنَمَا هُمْ كَذَلِكَ إِذْ لُدِغَ سَيِّدُ أُولَئِكَ فَقَالُوا هَلْ مَعَكُمْ مِنْ دَوَاءٍ أَوْ رَاقٍ فَقَالُوا إِنَّكُمْ لَمْ تَقْرُونَا وَلَا نَفْعَلُ حَتَّى تَجْعَلُوا لَنَا جُعْلًا فَجَعَلُوا لَهُمْ قَطِيعًا مِنْ الشَّاءِ فَجَعَلَ يَقْرَأُ بِأُمِّ الْقُرْآنِ وَيَجْمَعُ بُزَاقَهُ وَيَتْفِلُ فَبَرَأَ فَأَتَوْا بِالشَّاءِ فَقَالُوا لَا نَأْخُذُهُ حَتَّى نَسْأَلَ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَسَأَلُوهُ فَضَحِكَ وَقَالَ وَمَا أَدْرَاكَ أَنَّهَا رُقْيَةٌ خُذُوهَا وَاضْرِبُوا لِي بِسَهْمٍ
আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী ﷺ এর কয়েকজন সাহাবী আরবের এক গোত্রের নিকট আসে। সে গোত্রের লোকেরা তাদের কোন মেহমানদারী করেনি। তাঁরা ওখানে থাকতে থাকতেই ওদের দলপতিকে সাপে দংশন করে। তখনি গোত্রের লোকেরা তাঁদের নিকট জানতে চাইল, এর কোন ওষুধ কিংবা ঝাড়ফুঁক তাদের জানা আছে কিনা? সাহাবীগণ জবাবে বললেন, হ্যাঁ! তোমরা তো আমাদের কোনরূপ মেহমানদারীই করলে না। তাই যতক্ষণ তোমরা আমাদের জন্য একটা কিছু নির্দিষ্ট না করবে, ততক্ষণ আমরা এর কিছুই করব না। অতঃপর তারা এর বিনিময়ে কয়েকটি বকরী দিতে রাজি হয়। তখন একজন সাহাবী সূরা ফাতিহা পড়া শুরম্ন করেন এবং থুথু জমা করে সে গোত্রপতির গায়ে থুথু দেন। ফলে সে ভালো হয়ে গেল। এবার গোত্রের লোকেরা কয়েকটি বকরী নিয়ে আসে। সাহাবীগণ বললেন, আমরা নবী ﷺ-কে জিজ্ঞেস না করা পর্যমত্ম এগুলো গ্রহণ করতে পারি না। সুতরাং তাঁরা এসে নবী ﷺ-কে জিজ্ঞেস করলে তিনি শুনে হেসে বললেন, তোমরা কি করে জানলে, সূরা ফাতিহা ঝাঁড়ফুকের কাজ করে! যাক, তোমরা বকরীগুলো নিয়ে নাও এবং তাতে আমার জন্যও এক ভাগ রেখে দিও। [সহীহ বুখারী, হা/৫৭৩৬; সহীহ মুসলিম, হা/৫৮৬৩; মুসনাদে আহমাদ, হা/১১৪১৭; আবু দাউদ, হা/৩৯০২; তিরমিযী, হা/২০৬৩।]
অপর একটি হাদিসে এসেছে,
عَنْ خَارِجَةَ بْنِ الصَّلْتِ التَّمِيمِىِّ عَنْ عَمِّهِ أَنَّهُ أَتَى رَسُولَ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- فَأَسْلَمَ ثُمَّ أَقْبَلَ رَاجِعًا مِنْ عِنْدِهِ فَمَرَّ عَلَى قَوْمٍ عِنْدَهُمْ رَجُلٌ مَجْنُونٌ مُوثَقٌ بِالْحَدِيدِ فَقَالَ أَهْلُهُ إِنَّا حُدِّثْنَا أَنَّ صَاحِبَكُمْ هَذَا قَدْ جَاءَ بِخَيْرٍ فَهَلْ عِنْدَكَ شَىْءٌ تُدَاوِيهِ فَرَقَيْتُهُ بِفَاتِحَةِ الْكِتَابِ فَبَرَأَ فَأَعْطُونِى مِائَةَ شَاةٍ فَأَتَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- فَأَخْبَرْتُهُ فَقَالَ « هَلْ إِلاَّ هَذَا » . وَقَالَ مُسَدَّدٌ فِى مَوْضِعٍ آخَرَ « هَلْ قُلْتَ غَيْرَ هَذَا » . قُلْتُ لاَ . قَالَ « خُذْهَا فَلَعَمْرِى لَمَنْ أَكَلَ بِرُقْيَةِ بَاطِلٍ لَقَدْ أَكَلْتَ بِرُقْيَةِ حَقٍّ
খারিজাতা ইবনে সালত আত- তামিমি তার চাচা থেকে বর্ণনা করেন। একদা তিনি রাসূলূলস্নাহ ﷺ এর কাছে এসে ইসলাম গ্রহণ করলেন। অত:পর তিনি ফিরে যাওয়ার সময় এমন একটি জাতির নিকট দিয়ে অতিক্রম করছিলেন, যাদের মধ্যে একজন পাগল লোহার সাথে বাঁধা ছিল। অত:পর সেখানকার অধিবাসিরা বলল , আমাদের নিকট সংবাদ পৌঁছেছে যে, তোমাদের সাথী কল্যাণ (ওহী) নিয়ে আগমন করেছেন। অতএব তোমা নিকট এর চিকি:সার জন্য কিছু আছে কি? বর্ণনাকারী বলেন, অত:পর আমি তার উপর সুরা ফাতিহা দ্বারা ঝাড়ফুক করলাম এবং সে ভালো হয়ে গেল। অত:পর তারা আমাকে একশত বকরী দিল। আমি সেগুলো রাসূলূলস্নাহ ﷺ এর নিকট আসলাম এবং তাঁকে সংবাদ দিলাম। তখন তিনি বললেন, তুমি কি এটা ছাড়া অন্য ঝাড়ফুক করেছ ? মুসাদ্দাদ (রহ.) অন্য জায়গায় বলেন, তুমি কি এটা ছাড়া অন্য কিছু দিয়ে ঝাঁড়ফুক করেছ? বর্ণনাকারী বলেন, আমি বললাম, না। অত:পর রাসূলূলস্নাহ ﷺ ej‡jb Avgvi eq‡mi Kmg Zzwg †mUv MÖnY K‡iv| gvbyl evwZj SvuodzK Øviv Lvq; Avi Zzwg †Zv †L‡j SvuodzK Øviv| [আবু দাউদ, হা/৩৮৯৮; সহীহ ইবনে হিববান, হা/৪৭৫; মুসনাদে আহমাদ, হা/২১৮৩৫; মুসত্মাদরাকে হাকেম/ ৭৫৩৪; শুআবুল ঈমান হা/২৩৬৫; সিলাসলা সহীহাহ, হা/২০২৭ মিশকাত, হা/২৯৮৬।]
D‡jøL¨ †h Dc‡iv³ nvw`m †_‡K cÖgvwYZ nq †h KyiAv‡bi †Kvb m~iv ev †Kvb AvqvZ c‡o ঝাঁড়ফুক করা জায়েজ আছে। তবে এ থেকে একথা প্রমান করা যাবেনা যে, KyiAv‡bi †Kvb m~iv ev †Kvb AvqvZ wj‡L kix‡i ZvexR Szjv‡bv hv‡e| Avjøvni bex ﷺ তাবীজ ব্যবহার করাকে শিরক বলে আখ্যায়িত করেছেন। আরো জানার বিষয় হচ্ছে ঝাড়ফুঁক করার পর কেউ সেচ্ছায় হাদিয়াস্বরূপ কিছু দিলে সেটা গ্রহণ করা জায়েয আছে। তার মানে এ নয় যে ঝাড়ফুক করা বা তাবীজ-কবজ দেয়াকে ব্যবসা হিসেবে গ্রহণ করে কামাই-রোজগারের ব্যবস্থা করা যাবে। সুতরাং এ ব্যাপারে প্রত্যেক মুসলিম নর-নারীকে সচেতন থাকতে হবে।
عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أَنَّ نَاسًا مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَتَوْا عَلَى حَيٍّ مِنْ أَحْيَاءِ الْعَرَبِ فَلَمْ يَقْرُوهُمْ فَبَيْنَمَا هُمْ كَذَلِكَ إِذْ لُدِغَ سَيِّدُ أُولَئِكَ فَقَالُوا هَلْ مَعَكُمْ مِنْ دَوَاءٍ أَوْ رَاقٍ فَقَالُوا إِنَّكُمْ لَمْ تَقْرُونَا وَلَا نَفْعَلُ حَتَّى تَجْعَلُوا لَنَا جُعْلًا فَجَعَلُوا لَهُمْ قَطِيعًا مِنْ الشَّاءِ فَجَعَلَ يَقْرَأُ بِأُمِّ الْقُرْآنِ وَيَجْمَعُ بُزَاقَهُ وَيَتْفِلُ فَبَرَأَ فَأَتَوْا بِالشَّاءِ فَقَالُوا لَا نَأْخُذُهُ حَتَّى نَسْأَلَ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَسَأَلُوهُ فَضَحِكَ وَقَالَ وَمَا أَدْرَاكَ أَنَّهَا رُقْيَةٌ خُذُوهَا وَاضْرِبُوا لِي بِسَهْمٍ
আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী ﷺ এর কয়েকজন সাহাবী আরবের এক গোত্রের নিকট আসে। সে গোত্রের লোকেরা তাদের কোন মেহমানদারী করেনি। তাঁরা ওখানে থাকতে থাকতেই ওদের দলপতিকে সাপে দংশন করে। তখনি গোত্রের লোকেরা তাঁদের নিকট জানতে চাইল, এর কোন ওষুধ কিংবা ঝাড়ফুঁক তাদের জানা আছে কিনা? সাহাবীগণ জবাবে বললেন, হ্যাঁ! তোমরা তো আমাদের কোনরূপ মেহমানদারীই করলে না। তাই যতক্ষণ তোমরা আমাদের জন্য একটা কিছু নির্দিষ্ট না করবে, ততক্ষণ আমরা এর কিছুই করব না। অতঃপর তারা এর বিনিময়ে কয়েকটি বকরী দিতে রাজি হয়। তখন একজন সাহাবী সূরা ফাতিহা পড়া শুরম্ন করেন এবং থুথু জমা করে সে গোত্রপতির গায়ে থুথু দেন। ফলে সে ভালো হয়ে গেল। এবার গোত্রের লোকেরা কয়েকটি বকরী নিয়ে আসে। সাহাবীগণ বললেন, আমরা নবী ﷺ-কে জিজ্ঞেস না করা পর্যমত্ম এগুলো গ্রহণ করতে পারি না। সুতরাং তাঁরা এসে নবী ﷺ-কে জিজ্ঞেস করলে তিনি শুনে হেসে বললেন, তোমরা কি করে জানলে, সূরা ফাতিহা ঝাঁড়ফুকের কাজ করে! যাক, তোমরা বকরীগুলো নিয়ে নাও এবং তাতে আমার জন্যও এক ভাগ রেখে দিও। [সহীহ বুখারী, হা/৫৭৩৬; সহীহ মুসলিম, হা/৫৮৬৩; মুসনাদে আহমাদ, হা/১১৪১৭; আবু দাউদ, হা/৩৯০২; তিরমিযী, হা/২০৬৩।]
অপর একটি হাদিসে এসেছে,
عَنْ خَارِجَةَ بْنِ الصَّلْتِ التَّمِيمِىِّ عَنْ عَمِّهِ أَنَّهُ أَتَى رَسُولَ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- فَأَسْلَمَ ثُمَّ أَقْبَلَ رَاجِعًا مِنْ عِنْدِهِ فَمَرَّ عَلَى قَوْمٍ عِنْدَهُمْ رَجُلٌ مَجْنُونٌ مُوثَقٌ بِالْحَدِيدِ فَقَالَ أَهْلُهُ إِنَّا حُدِّثْنَا أَنَّ صَاحِبَكُمْ هَذَا قَدْ جَاءَ بِخَيْرٍ فَهَلْ عِنْدَكَ شَىْءٌ تُدَاوِيهِ فَرَقَيْتُهُ بِفَاتِحَةِ الْكِتَابِ فَبَرَأَ فَأَعْطُونِى مِائَةَ شَاةٍ فَأَتَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- فَأَخْبَرْتُهُ فَقَالَ « هَلْ إِلاَّ هَذَا » . وَقَالَ مُسَدَّدٌ فِى مَوْضِعٍ آخَرَ « هَلْ قُلْتَ غَيْرَ هَذَا » . قُلْتُ لاَ . قَالَ « خُذْهَا فَلَعَمْرِى لَمَنْ أَكَلَ بِرُقْيَةِ بَاطِلٍ لَقَدْ أَكَلْتَ بِرُقْيَةِ حَقٍّ
খারিজাতা ইবনে সালত আত- তামিমি তার চাচা থেকে বর্ণনা করেন। একদা তিনি রাসূলূলস্নাহ ﷺ এর কাছে এসে ইসলাম গ্রহণ করলেন। অত:পর তিনি ফিরে যাওয়ার সময় এমন একটি জাতির নিকট দিয়ে অতিক্রম করছিলেন, যাদের মধ্যে একজন পাগল লোহার সাথে বাঁধা ছিল। অত:পর সেখানকার অধিবাসিরা বলল , আমাদের নিকট সংবাদ পৌঁছেছে যে, তোমাদের সাথী কল্যাণ (ওহী) নিয়ে আগমন করেছেন। অতএব তোমা নিকট এর চিকি:সার জন্য কিছু আছে কি? বর্ণনাকারী বলেন, অত:পর আমি তার উপর সুরা ফাতিহা দ্বারা ঝাড়ফুক করলাম এবং সে ভালো হয়ে গেল। অত:পর তারা আমাকে একশত বকরী দিল। আমি সেগুলো রাসূলূলস্নাহ ﷺ এর নিকট আসলাম এবং তাঁকে সংবাদ দিলাম। তখন তিনি বললেন, তুমি কি এটা ছাড়া অন্য ঝাড়ফুক করেছ ? মুসাদ্দাদ (রহ.) অন্য জায়গায় বলেন, তুমি কি এটা ছাড়া অন্য কিছু দিয়ে ঝাঁড়ফুক করেছ? বর্ণনাকারী বলেন, আমি বললাম, না। অত:পর রাসূলূলস্নাহ ﷺ ej‡jb Avgvi eq‡mi Kmg Zzwg †mUv MÖnY K‡iv| gvbyl evwZj SvuodzK Øviv Lvq; Avi Zzwg †Zv †L‡j SvuodzK Øviv| [আবু দাউদ, হা/৩৮৯৮; সহীহ ইবনে হিববান, হা/৪৭৫; মুসনাদে আহমাদ, হা/২১৮৩৫; মুসত্মাদরাকে হাকেম/ ৭৫৩৪; শুআবুল ঈমান হা/২৩৬৫; সিলাসলা সহীহাহ, হা/২০২৭ মিশকাত, হা/২৯৮৬।]
D‡jøL¨ †h Dc‡iv³ nvw`m †_‡K cÖgvwYZ nq †h KyiAv‡bi †Kvb m~iv ev †Kvb AvqvZ c‡o ঝাঁড়ফুক করা জায়েজ আছে। তবে এ থেকে একথা প্রমান করা যাবেনা যে, KyiAv‡bi †Kvb m~iv ev †Kvb AvqvZ wj‡L kix‡i ZvexR Szjv‡bv hv‡e| Avjøvni bex ﷺ তাবীজ ব্যবহার করাকে শিরক বলে আখ্যায়িত করেছেন। আরো জানার বিষয় হচ্ছে ঝাড়ফুঁক করার পর কেউ সেচ্ছায় হাদিয়াস্বরূপ কিছু দিলে সেটা গ্রহণ করা জায়েয আছে। তার মানে এ নয় যে ঝাড়ফুক করা বা তাবীজ-কবজ দেয়াকে ব্যবসা হিসেবে গ্রহণ করে কামাই-রোজগারের ব্যবস্থা করা যাবে। সুতরাং এ ব্যাপারে প্রত্যেক মুসলিম নর-নারীকে সচেতন থাকতে হবে।
সূরা ফাতিহা হচ্ছে কুরআন মাজীদের সবচেয়ে গুরম্নত্বপূর্ণ সূরা। এ সূরাটি সর্বপ্রথম পূর্ণাঙ্গ সূরা হিসেবে নবী ﷺ এর উপর নাযিল হয়। এর ফযীলত ও মর্যাদা অনেক বেশি। নিম্নে এ ব্যাপারে আলোচনা করা হলো :
সূরা ফাতিহা হচ্ছে কুরআনের সবচেয়ে মর্যাদপূর্ণ সূরা :
عَنْ أَبِيْ سَعِيْدِ بْنِ الْمُعَلّٰى , أَنَّ النَّبِيَّ - - مَرَّ بِه وَهُوَ يُصَلِّيْ , فَدَعَاهُ , قَالَ : فَصَلَّيْتُ , ثُمَّ أَتَيْتُه , فَقَالَ : مَا مَنَعَكَ أَنْ تُجِيْبَنِيْ؟ قَالَ : كُنْتُ أُصَلِّيْ , قَالَ : أَلَمْ يَقُلِ اللهُ ﴿يَآ أَيُّهَا الَّذِيْنَ آمَنُوْا إِسْتَجِيْبُوْاْ لِلّٰهِ وَلِلرَّسُوْلِ إِذَا دَعَاكُمْ لِمَا يُحْيِيْكُمْ﴾ ألَا أُعَلِّمُكَ أَعْظَمُ سُوْرَةً قَبْلَ أَنْ أَخْرُجَ مِنَ الْمَسْجِدِ . قُلْتُ : بَلٰى يَا رَسُوْلَ اللهِ , فَلَمَّا أَرَادَ أَنْ يَّخْرُجَ مِنَ الْمَسْجِدِ , قُلْتُ : يَا رَسُوْلَ اللهِ ! إِنَّكَ قُلْتَ : لَأعَلِّمَنَّكَ أَعْظَمُ سُوْرَةً فِي ْالْقُرْأنِ؟ قَالَ : ﴿اَلْحَمْدُ لِلّٰهِ رَبِّ الْعَالَمِيْنَ﴾ هِيَ اَلسَّبْعُ الْمَثَانِيَ الْذِّيْ أُوْتِيْتُ وَالْقُرْأنَ الْعَظِيْمِ
আবু সাঈদ ইবনে মা‘আলস্না হতে বর্ণিত। একদা নবী (সাঃ) তার পাশ দিয়ে অতিক্রম করছিলেন, এমতাবস্থায় তিনি নামায পড়তেছিলেন। অতঃপর নবী (সাঃ) তাকে ডাক দিলেন। বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর আমি নামায শেষ করলাম এবং নবী (সাঃ) এর নিকট আসলাম। তখন তিনি বললেন, কিসে তোমাকে আমার ডাকে সাড়া দিতে বাধা দিয়েছিল? তিনি বললেন, আমি নামায পড়তেছিলাম। রাসূলুলস্নাহ (সাঃ) বললেন, আলস্নাহ তা‘আলা কি বলেননি যে, হে ঈমানদারগণ! তোমরা আলস্নাহ ও তাঁর রাসূলের ডাকে সাড়া দাও যখন তিনি তোমাদেরকে ডাকেন- যাতে রয়েছে তোমাদের জীবন। (সুরা আনফাল-২৫)
আমি মসজিদ থেকে বের হওয়ার পূর্বে তোমাকে কি একটি মহা সূরা সম্পর্কে অবগত করব না? বর্ণনাকারী বলেন, আমি বললাম, হ্যাঁ- হে আলস্নাহ রাসূল! অতঃপর যখন তিনি মসজিদ হতে বের হওয়ার ইচ্ছা করলেন তখন আমি বললাম, হে আলস্নাহ রাসূল! আপনি আমাকে মহান সূরা সম্পর্কে জানাতে চেয়েছিলেন। তখন তিনি বললেন,
﴿ اَلْحَمْدُ لِلّٰهِ رَبِّ الْعَالَمِيْنَ﴾
এর মাঝে আছে সাতটি বারবার পঠিত আয়াত, যা আমাকে দান করা হয়েছে এবং আরো দান করা হয়েছে মহান কুরআন। [আবূ দাউদ হা/১৪৫৮, নাসাঈ হা/১৩৯, ইবনে মাজাহ হা/৩৭৮৫।]
অপর হাদীসে এসেছে,
عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ : كَانَ النَّبِيُّ فِيْ مَسِيْرٍ فَنَزَلَ وَ نَزَلَ رَجُلٌ إلٰى جَانِبِه قَالَ : فَالْتَفَتَ النَّبِيُّ فَقَالَ : أَلَا أٌخْبِرُكَ بِأَفْضَلِ الْقُرْاٰنِ قَالَ : فَتَلَا عَلَيْهِ ﴿ اَلْحَمْدُ لِلّٰهِ رَبِّ الْعَالَمِيْنَ﴾
আনাস ইবনে মালিক (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা সফরে থাকাকালে নবী (সাঃ) কোন এক স্থানে অবতরণ করলেন। তখন তার পাশে এক ব্যক্তি অবস্থান করল। বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর নবী (সাঃ) তার দিকে লক্ষ্য করে বললেন, আমি কি তোমাকে কুরআনের সবচেয়ে ফযীলতপূর্ণ সূরার ব্যাপারে সংবাদ দিব না? তিনি বললেন, হ্যাঁ। তখন নবী (সাঃ) পাঠ করলেন, ﴿ اَلْحَمْدُ لِلّٰهِ رَبِّ الْعَالَمِيْنَ﴾ অর্থাৎ সূরা ফাতিহা পাঠ করলেন। [সহীহ ইবনে হিববান, হা/৭৭৪; মুসাদরাকে হাকেম, হা/১/৫৬০; সহীহ তারগীব ও ওয়াত তারহীব, হা/১৪৫৪; সিলসিলা সহীহাহ, হা/১৪৯৯।]
সূরা ফাতিহার মত মর্যাদাপূর্ণ সূরা আর নাযিল হয়নি :
عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ ، قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللهِ : وَقَرَأَ عَلَيْهِ أُبَيْ بْنُ كَعْبٍ أُمَّ الْقُرْاٰنِ ، فَقَالَ : وَالَّذِي نَفْسِيْ بِيَدِه ، مَا أَنْزَلَ اللهُ فِي التَّوْرَاةِ ، وَلَا فِيْ الْإِنْجِيْلِ ، وَلَا فِيْ الزَّبُوْرِ ، وَلَا فِيْ الْفُرْقَانِ مِثْلَهَا ، إِنَّهَا لَهِيَ السَّبْعُ الْمَثَانِيْ وَالْقُرْاٰنُ الْعَظِيْمُ الَّذِيْ أُوْتِيْتُه
আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুলস্নাহ (সাঃ) বলেছেন, একদা উবাই ইবনে কাব (রাঃ) রাসূলুলস্নাহ (সাঃ) এর সামনে উম্মুল কুরআন তথা সূরা ফাতিহা পাঠ করলেন। তখন রাসূলুলস্নাহ (সাঃ) বললেন, যার হাতে আমার প্রাণ তার শপথ! তাওরাত, যাবূর, ইঞ্জীল এবং ফুরকান তথা কুরআনে এই সূরার সমতুল্য কোন সূরা নেই। এটা হচ্ছে বার বার পঠিত সাতটি আয়াতবিশিষ্ট সূরা এবং মহান কুরআন, যা আমাকে দান করা হয়েছে। [বুখারী হা/৪৭০৩; আহমাদ, তিরমিযী, মিশকাত হা/২১৪২।**]
সূরা ফাতিহা হচ্ছে আলস্নাহর পক্ষ থেকে দেয়া বিশেষ নূর :
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ ، قَالَ : بَيْنَمَا جِبْرِيلُ عَلَيْهِ السَّلامُ جَالِسٌ عِنْدَ النَّبِيِّ إِذْ سَمِعَ نَقِيضًا مِنْ فَوْقِه ، فَرَفَعَ رَأْسَه إِلَى السَّمَاءِ ، فَقَالَ : إِنَّ هٰذَا الْبَابَ مِنَ السَّمَاءِ قَدْ فُتِحَ مَا فُتِحَ قَطُّ ، فَنَزَلَ مِنْهُ مَلَكٌ ، قَالَ : فَإِنَّ هٰذَا الْمَلَكَ قَدْ نَزَلَ مَا نَزَلَ إِلَى الْأَرْضِ قَطُّ قَالَ : فَجَاءَ الْمَلَكُ إِلٰى رَسُوْلِ اللهِ فَسَلَّمَ عَلَيْهِ ، وَقَالَ : يَا مُحَمَّدُ أَبْشِرْ بِنُوْرَيْنِ أُُوْتِيتَهُمَا لَمْ يُؤْتَهُمَا نَبِيٌّ فَاتِحَةُ الْكِتَابِ ، وَخَوَاتِيْمُ سُوْرَةَ الْبَقَرَةِ لَمْ يُقْرَأْ حَرْفٌ مِنْهَا إِلَّا أعْطِيْتَه 5
ইবনে আববাস (রা:) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা জিবরাঈল (আঃ) নবী (সাঃ) এর নিকট বসা ছিলেন, তখন রাসূলুলস্নাহ (সাঃ) তার উপর থেকে একটি আওয়াজ শুনতে পেলেন। অতঃপর জিবরাঈল (আঃ) তাঁর মাথা আকাশের দিকে উঠালেন এবং বললেন, নিশ্চয় আকাশের একটি দরজা রয়েছে, যা এইমাত্র খুলা হলো। ইতিপূর্বে এটি আর কখনো খোলা হয়নি। তারপর সেখান থেকে একজন ফেরেশতা অবতীর্ণ হয়েছে। তিনি আরো বলেন, আর এই ফেরেশতা ইতিপূর্বে কখনো জমিনে অবতীর্ণ হননি। বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর ঐ ফেরেশতা রাসূলুলস্নাহ (সাঃ) এর কাছে এসে সালাম প্রদান করলেন এবং বললেন, হে মুহাম্মাদ! দুটি নূরের সুসংবাদ গ্রহণ করম্নন, যা আপনাকে ছাড়া অন্য কোন নবীকে দেওয়া হয়নি। একটি হচ্ছে সূরা ফাতেহা এবং অন্যটি হচ্ছে সূরা বাকারার শেষাংশ (শেষের কয়েকটি আয়াত)। সেখান থেকে যদি কেউ কোন একটি হরফও পাঠ করে তাকে তার প্রতিদান দেয়া হবে। [মুসলিম হা/৮০৬ অধ্যায়-৬, ‘সূরা ফাতিহার ফযীলত’ অনুচ্ছেদ-৪৩, মিশকাত হা/২১২৪।]
সূরা ফাতিহা হচ্ছে কুরআনের সবচেয়ে মর্যাদপূর্ণ সূরা :
عَنْ أَبِيْ سَعِيْدِ بْنِ الْمُعَلّٰى , أَنَّ النَّبِيَّ - - مَرَّ بِه وَهُوَ يُصَلِّيْ , فَدَعَاهُ , قَالَ : فَصَلَّيْتُ , ثُمَّ أَتَيْتُه , فَقَالَ : مَا مَنَعَكَ أَنْ تُجِيْبَنِيْ؟ قَالَ : كُنْتُ أُصَلِّيْ , قَالَ : أَلَمْ يَقُلِ اللهُ ﴿يَآ أَيُّهَا الَّذِيْنَ آمَنُوْا إِسْتَجِيْبُوْاْ لِلّٰهِ وَلِلرَّسُوْلِ إِذَا دَعَاكُمْ لِمَا يُحْيِيْكُمْ﴾ ألَا أُعَلِّمُكَ أَعْظَمُ سُوْرَةً قَبْلَ أَنْ أَخْرُجَ مِنَ الْمَسْجِدِ . قُلْتُ : بَلٰى يَا رَسُوْلَ اللهِ , فَلَمَّا أَرَادَ أَنْ يَّخْرُجَ مِنَ الْمَسْجِدِ , قُلْتُ : يَا رَسُوْلَ اللهِ ! إِنَّكَ قُلْتَ : لَأعَلِّمَنَّكَ أَعْظَمُ سُوْرَةً فِي ْالْقُرْأنِ؟ قَالَ : ﴿اَلْحَمْدُ لِلّٰهِ رَبِّ الْعَالَمِيْنَ﴾ هِيَ اَلسَّبْعُ الْمَثَانِيَ الْذِّيْ أُوْتِيْتُ وَالْقُرْأنَ الْعَظِيْمِ
আবু সাঈদ ইবনে মা‘আলস্না হতে বর্ণিত। একদা নবী (সাঃ) তার পাশ দিয়ে অতিক্রম করছিলেন, এমতাবস্থায় তিনি নামায পড়তেছিলেন। অতঃপর নবী (সাঃ) তাকে ডাক দিলেন। বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর আমি নামায শেষ করলাম এবং নবী (সাঃ) এর নিকট আসলাম। তখন তিনি বললেন, কিসে তোমাকে আমার ডাকে সাড়া দিতে বাধা দিয়েছিল? তিনি বললেন, আমি নামায পড়তেছিলাম। রাসূলুলস্নাহ (সাঃ) বললেন, আলস্নাহ তা‘আলা কি বলেননি যে, হে ঈমানদারগণ! তোমরা আলস্নাহ ও তাঁর রাসূলের ডাকে সাড়া দাও যখন তিনি তোমাদেরকে ডাকেন- যাতে রয়েছে তোমাদের জীবন। (সুরা আনফাল-২৫)
আমি মসজিদ থেকে বের হওয়ার পূর্বে তোমাকে কি একটি মহা সূরা সম্পর্কে অবগত করব না? বর্ণনাকারী বলেন, আমি বললাম, হ্যাঁ- হে আলস্নাহ রাসূল! অতঃপর যখন তিনি মসজিদ হতে বের হওয়ার ইচ্ছা করলেন তখন আমি বললাম, হে আলস্নাহ রাসূল! আপনি আমাকে মহান সূরা সম্পর্কে জানাতে চেয়েছিলেন। তখন তিনি বললেন,
﴿ اَلْحَمْدُ لِلّٰهِ رَبِّ الْعَالَمِيْنَ﴾
এর মাঝে আছে সাতটি বারবার পঠিত আয়াত, যা আমাকে দান করা হয়েছে এবং আরো দান করা হয়েছে মহান কুরআন। [আবূ দাউদ হা/১৪৫৮, নাসাঈ হা/১৩৯, ইবনে মাজাহ হা/৩৭৮৫।]
অপর হাদীসে এসেছে,
عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ : كَانَ النَّبِيُّ فِيْ مَسِيْرٍ فَنَزَلَ وَ نَزَلَ رَجُلٌ إلٰى جَانِبِه قَالَ : فَالْتَفَتَ النَّبِيُّ فَقَالَ : أَلَا أٌخْبِرُكَ بِأَفْضَلِ الْقُرْاٰنِ قَالَ : فَتَلَا عَلَيْهِ ﴿ اَلْحَمْدُ لِلّٰهِ رَبِّ الْعَالَمِيْنَ﴾
আনাস ইবনে মালিক (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা সফরে থাকাকালে নবী (সাঃ) কোন এক স্থানে অবতরণ করলেন। তখন তার পাশে এক ব্যক্তি অবস্থান করল। বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর নবী (সাঃ) তার দিকে লক্ষ্য করে বললেন, আমি কি তোমাকে কুরআনের সবচেয়ে ফযীলতপূর্ণ সূরার ব্যাপারে সংবাদ দিব না? তিনি বললেন, হ্যাঁ। তখন নবী (সাঃ) পাঠ করলেন, ﴿ اَلْحَمْدُ لِلّٰهِ رَبِّ الْعَالَمِيْنَ﴾ অর্থাৎ সূরা ফাতিহা পাঠ করলেন। [সহীহ ইবনে হিববান, হা/৭৭৪; মুসাদরাকে হাকেম, হা/১/৫৬০; সহীহ তারগীব ও ওয়াত তারহীব, হা/১৪৫৪; সিলসিলা সহীহাহ, হা/১৪৯৯।]
সূরা ফাতিহার মত মর্যাদাপূর্ণ সূরা আর নাযিল হয়নি :
عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ ، قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللهِ : وَقَرَأَ عَلَيْهِ أُبَيْ بْنُ كَعْبٍ أُمَّ الْقُرْاٰنِ ، فَقَالَ : وَالَّذِي نَفْسِيْ بِيَدِه ، مَا أَنْزَلَ اللهُ فِي التَّوْرَاةِ ، وَلَا فِيْ الْإِنْجِيْلِ ، وَلَا فِيْ الزَّبُوْرِ ، وَلَا فِيْ الْفُرْقَانِ مِثْلَهَا ، إِنَّهَا لَهِيَ السَّبْعُ الْمَثَانِيْ وَالْقُرْاٰنُ الْعَظِيْمُ الَّذِيْ أُوْتِيْتُه
আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুলস্নাহ (সাঃ) বলেছেন, একদা উবাই ইবনে কাব (রাঃ) রাসূলুলস্নাহ (সাঃ) এর সামনে উম্মুল কুরআন তথা সূরা ফাতিহা পাঠ করলেন। তখন রাসূলুলস্নাহ (সাঃ) বললেন, যার হাতে আমার প্রাণ তার শপথ! তাওরাত, যাবূর, ইঞ্জীল এবং ফুরকান তথা কুরআনে এই সূরার সমতুল্য কোন সূরা নেই। এটা হচ্ছে বার বার পঠিত সাতটি আয়াতবিশিষ্ট সূরা এবং মহান কুরআন, যা আমাকে দান করা হয়েছে। [বুখারী হা/৪৭০৩; আহমাদ, তিরমিযী, মিশকাত হা/২১৪২।**]
সূরা ফাতিহা হচ্ছে আলস্নাহর পক্ষ থেকে দেয়া বিশেষ নূর :
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ ، قَالَ : بَيْنَمَا جِبْرِيلُ عَلَيْهِ السَّلامُ جَالِسٌ عِنْدَ النَّبِيِّ إِذْ سَمِعَ نَقِيضًا مِنْ فَوْقِه ، فَرَفَعَ رَأْسَه إِلَى السَّمَاءِ ، فَقَالَ : إِنَّ هٰذَا الْبَابَ مِنَ السَّمَاءِ قَدْ فُتِحَ مَا فُتِحَ قَطُّ ، فَنَزَلَ مِنْهُ مَلَكٌ ، قَالَ : فَإِنَّ هٰذَا الْمَلَكَ قَدْ نَزَلَ مَا نَزَلَ إِلَى الْأَرْضِ قَطُّ قَالَ : فَجَاءَ الْمَلَكُ إِلٰى رَسُوْلِ اللهِ فَسَلَّمَ عَلَيْهِ ، وَقَالَ : يَا مُحَمَّدُ أَبْشِرْ بِنُوْرَيْنِ أُُوْتِيتَهُمَا لَمْ يُؤْتَهُمَا نَبِيٌّ فَاتِحَةُ الْكِتَابِ ، وَخَوَاتِيْمُ سُوْرَةَ الْبَقَرَةِ لَمْ يُقْرَأْ حَرْفٌ مِنْهَا إِلَّا أعْطِيْتَه 5
ইবনে আববাস (রা:) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা জিবরাঈল (আঃ) নবী (সাঃ) এর নিকট বসা ছিলেন, তখন রাসূলুলস্নাহ (সাঃ) তার উপর থেকে একটি আওয়াজ শুনতে পেলেন। অতঃপর জিবরাঈল (আঃ) তাঁর মাথা আকাশের দিকে উঠালেন এবং বললেন, নিশ্চয় আকাশের একটি দরজা রয়েছে, যা এইমাত্র খুলা হলো। ইতিপূর্বে এটি আর কখনো খোলা হয়নি। তারপর সেখান থেকে একজন ফেরেশতা অবতীর্ণ হয়েছে। তিনি আরো বলেন, আর এই ফেরেশতা ইতিপূর্বে কখনো জমিনে অবতীর্ণ হননি। বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর ঐ ফেরেশতা রাসূলুলস্নাহ (সাঃ) এর কাছে এসে সালাম প্রদান করলেন এবং বললেন, হে মুহাম্মাদ! দুটি নূরের সুসংবাদ গ্রহণ করম্নন, যা আপনাকে ছাড়া অন্য কোন নবীকে দেওয়া হয়নি। একটি হচ্ছে সূরা ফাতেহা এবং অন্যটি হচ্ছে সূরা বাকারার শেষাংশ (শেষের কয়েকটি আয়াত)। সেখান থেকে যদি কেউ কোন একটি হরফও পাঠ করে তাকে তার প্রতিদান দেয়া হবে। [মুসলিম হা/৮০৬ অধ্যায়-৬, ‘সূরা ফাতিহার ফযীলত’ অনুচ্ছেদ-৪৩, মিশকাত হা/২১২৪।]
প্রথমত সূরা ফাতিহার মূল বিষয়বস্ত্ত হচ্ছে, তাওহীদ তথা আলস্নাহর একত্ববাদ জ্ঞাপন করা। এতে সংক্ষিপ্তাকারে তিন প্রকার তাওহীদের কথাই আলোচনা করা হয়েছে। যেমন- প্রথম আয়াত দ্বারা তাওহীদে রম্নবূবিয়াহ, দ্বিতীয় আয়াত দ্বারা তাওহীদে আসমা ওয়াস সিফাত এবং তৃতীয় ও চতুর্থ আয়াত দ্বারা তাওহীদের উলূহিয়্যাতের কথা আলোচনা করা হয়েছে। আর সমসত্মকুরআনের মূল আলোচ্য বিষয়ও এটি। যার কারণে এ সূরাটিকে কুরআনের সারমর্মও বলা হয়।
দ্বিতীয়ত: সূরা ফাতিহার আরো একটি বিষয়বস্ত্ত হচ্ছে, দু‘আ বা প্রার্থনা শিক্ষা দেয়া। এতে সংক্ষিপ্তাকারে এমন বিষয়ের ব্যাপারে প্রার্থনা করা হয়েছে, যা কুরআন নাযিল হওয়ার মূল উদ্দেশ্যের অমত্মর্ভুক্ত। আলস্নাহ তা‘আলা বান্দাদের প্রতি অতি দয়ার বশবর্তী হয়ে এ দুটি শিখিয়ে দিয়েছেন।
তাছাড়া সূরাটি এমন সময় নাযিল হয়েছে, যখন মানুষকে হেদায়াতের পথে আহবান করার জন্য উপরোক্ত দুটি বিষয়বস্ত্তও খুবই প্রয়োজন ছিল। আর এ সময় মানুষকে কেবল এদুটি বিষয়বস্ত্তও দিকেই দাওয়াত দেয়া হচ্ছিল।
দ্বিতীয়ত: সূরা ফাতিহার আরো একটি বিষয়বস্ত্ত হচ্ছে, দু‘আ বা প্রার্থনা শিক্ষা দেয়া। এতে সংক্ষিপ্তাকারে এমন বিষয়ের ব্যাপারে প্রার্থনা করা হয়েছে, যা কুরআন নাযিল হওয়ার মূল উদ্দেশ্যের অমত্মর্ভুক্ত। আলস্নাহ তা‘আলা বান্দাদের প্রতি অতি দয়ার বশবর্তী হয়ে এ দুটি শিখিয়ে দিয়েছেন।
তাছাড়া সূরাটি এমন সময় নাযিল হয়েছে, যখন মানুষকে হেদায়াতের পথে আহবান করার জন্য উপরোক্ত দুটি বিষয়বস্ত্তও খুবই প্রয়োজন ছিল। আর এ সময় মানুষকে কেবল এদুটি বিষয়বস্ত্তও দিকেই দাওয়াত দেয়া হচ্ছিল।
সূরা ফাতিহার অনেকগুলো বৈশিষ্ট্য রয়েছে। নিম্নে এ ব্যাপারে আলোকপাত করা হলো :
১. সূরা ফাতিহাতে রয়েছে সাতটি আয়াত, যার বার বার পাঠ করা হয়।
২. এ সূরাটিই হচেছ রাসূলুলস্নাহ (সাঃ) এর উপর অবতীর্ণ সর্বপ্রথম পূর্ণাঙ্গ সূরা।
৩. এ সূরাটিই হচ্ছে সম্পূর্ণ কুরআনের সারমর্ম।
৪. কুরআনের সূরাসমূহ বিন্যাসের দিক থেকে এটিই হচ্ছে সর্বপ্রথম সূরা।
৫. কুরআনের সরাসমূহের মধ্যে এটিই হচ্ছে সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ সূরা।
৬. এর প্রথমে রয়েছে আলস্নাহর প্রশংসা, মাঝখানে রয়েছে নিষ্ঠা বা আমত্মরিকতা ও শেষে রয়েছে দু‘আ বা প্রার্থনা।
৭. আলস্নাহ তা‘আলা সূরাটিকে রাসূলুলস্নাহ (সাঃ) এর জন্য বড় ধরনের অনুগ্রহ হিসেবে দান করেছেন।
৮. এ সূরাটিতে আলস্নাহ তা‘আলা তাঁর বান্দাদেরকে তাঁর কাছে মুনাজাত করার ও তাঁর সঙ্গে কথা বলার পদ্ধতি শিখিয়ে দিয়েছেন।
৯. এ সূরাকে সালাতের প্রত্যেক রাকআতে পাঠ করা হয়।
১. সূরা ফাতিহাতে রয়েছে সাতটি আয়াত, যার বার বার পাঠ করা হয়।
২. এ সূরাটিই হচেছ রাসূলুলস্নাহ (সাঃ) এর উপর অবতীর্ণ সর্বপ্রথম পূর্ণাঙ্গ সূরা।
৩. এ সূরাটিই হচ্ছে সম্পূর্ণ কুরআনের সারমর্ম।
৪. কুরআনের সূরাসমূহ বিন্যাসের দিক থেকে এটিই হচ্ছে সর্বপ্রথম সূরা।
৫. কুরআনের সরাসমূহের মধ্যে এটিই হচ্ছে সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ সূরা।
৬. এর প্রথমে রয়েছে আলস্নাহর প্রশংসা, মাঝখানে রয়েছে নিষ্ঠা বা আমত্মরিকতা ও শেষে রয়েছে দু‘আ বা প্রার্থনা।
৭. আলস্নাহ তা‘আলা সূরাটিকে রাসূলুলস্নাহ (সাঃ) এর জন্য বড় ধরনের অনুগ্রহ হিসেবে দান করেছেন।
৮. এ সূরাটিতে আলস্নাহ তা‘আলা তাঁর বান্দাদেরকে তাঁর কাছে মুনাজাত করার ও তাঁর সঙ্গে কথা বলার পদ্ধতি শিখিয়ে দিয়েছেন।
৯. এ সূরাকে সালাতের প্রত্যেক রাকআতে পাঠ করা হয়।
কুরআন পাঠ করার শুরম্নতে اَعُوْذُ بِاللهِ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيْمِ (আঊযু বিলস্না-হি মিনাশ্ শাইত্বানির রাজীম) পাঠ করা খুবই জরম্নরি। কোন কোন আলেম এটিকে ওয়াজিবও বলেছেন। কেননা আলস্নাহ তা‘আলা বলেন,
﴿فَإِذَا قَرَأْتَ الْقُرْاٰنَ فَاسْتَعِذْ بِاللهِ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيْمِ﴾
যখন তুমি কুরআন পাঠ করবে, তখন অভিশপ্ত শয়তান হতে আলস্নাহর আশ্রয় প্রার্থনা করবে। (সূরা নাহল- ৯৮)
উলেস্নখ্য যে, এ হুকুমটি যে কোন সময়ের জন্য প্রযোজ্য। অর্থাৎ যখনই কুরআন পাঠ করা শুরম্ন করবে, তখনই শয়তানের কাছ থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করা করতে হবে- চাই তা নামাযের মধ্যে হোক অথবা নামাযের বাহিরে হোক অথবা সূরার শুরম্ন থেকে পাঠ করার সময় হোক অথবা সূরার মধ্যখানে যে কোন আয়াত থেকে পাঠ করার সময় হোক। উপরম্নক্ত আয়াত দ্বারা এমনই নির্দেশনা পাওয়া যায়। তাছাড়া এমনিতেও যে কোন সময় শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে আলস্নাহর কাছে আশ্রয় চাওয়া খুবই উত্তম। কেননা আলস্নাহ বেশ কয়েকটি আয়াতের মাধ্যমে নির্দেশনা প্রদান করেছেন। যেমন-
وَقُلْ رَبِّ أَعُوْذُ بِكَ مِنْ هَمَزَاتِ الشَّيَاطِيْنِ، وَأَعُوْذُ بِكَ رَبِّ أَنْ يَّحْضُرُوْنِ
তুমি বল, হে আমার প্রতিপালক! আমি তোমার আশ্রয় প্রার্থনা করি শয়তানের প্ররোচনা হতে এবং আমি তোমার নিকট আরো আশ্রয় প্রার্থনা করি আমার নিকট ওদের উপস্থিতি হতে। (মুমিনূন- ৯৭-৯৮)
তিনি আরো বলেন,
﴿وَإِمَّا يَنْزَغَنَّكَ مِنَ الشَّيْطَانِ نَزْغٌ فَاسْتَعِذْ بِاللهِ إِنَّهُ هُوَ السَّمِيْعُ الْعَلِيْمُ﴾
যদি শয়তানের কুমন্ত্রণা তোমাকে প্ররোচিত করে, তবে আলস্নাহর আশ্রয় চাও। নিশ্চয়ই তিনি সর্বশ্রোতা ও সর্বজ্ঞ। (সূরা হা-মীম সাজদাহ- ৩৬)
আঊ’যূ বিলস্নাহ’ এর অর্থ ও তাvপর্য:
أَعُوْذُ بِاللهِ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيْمِ (আঊ’যূ বিলস্নাহ’ মিনাশ্ শাইত্বানির রজীম) এর সাধারণ অর্থ হচ্ছে, আমি বিতাড়িত শয়তান হতে আলস্নাহর আশ্রয় প্রার্থনা করছি। আর এর তাvপর্য হচ্ছে, আমরা এমন এক সত্ত্বা হতে আশ্রয় প্রার্থনা করছি, যে সর্বদিক থেকে বিতাড়িত। আর এ কারণেই আলস্নাহ তা’আলা আমাদেরকে শয়তান থেতে সাবধান করে দিয়েছেন। তিনি বলেন,
﴿ يَا بَنِي آدَمَ لا يَفْتِنَنَّكُمُ الشَّيْطَانُ كَمَا أَخْرَجَ أَبَوَيْكُمْ مِنَ الْجَنَّةِ﴾
হে আদম সমত্মান! শয়তান যেন তোমাদেরকে কিছুতেই প্রলুব্ধ না করে, যেভাবে সে তোমাদের পিতা-মাতাকে জান্নাত হতে বহিষ্কৃত করেছিল। (সুরা আরাফ-২৭)
শয়তানের পরিচয়:
সবচেয়ে বড় শয়তান হচ্ছে ইবলিস- যে আদম আ: -কে সিজদা করতে অস্বীকার করেছিল। তবে শয়তান কোন নির্দিষ্ট সত্ত্বার নাম নয়, বরং এটি কতগুলো বৈশিষ্ট্যের সমষ্টি। যার মধ্যে শয়তানের বৈশিষ্ট পাওয়া যাবে, তাকেই শয়তান হিসেবে গণ্য করা হবে। শয়তান জিন জাতির মধ্যে রয়েছে আবার মানুষের মধ্যেও রয়েছে।
শয়তান হচ্ছে মানুষের শত্রম্ন:
শয়তান হচ্ছে মানুষের প্রকাশ্য শত্রম্ন। আলস্নাহ তা’আলা বলেন,
أَلَمْ أَعْهَدْ إِلَيْكُمْ يَا بَنِي آدَمَ أَنْ لا تَعْبُدُوا الشَّيْطَانَ إِنَّهُ لَكُمْ عَدُوٌّ مُبِينٌ
হে আদম সমত্মান! আমি কি তোমাদেরকে সতর্ক করিনি যে, তোমরা শয়তানের উপাসনা করোনা ? নিশ্চয় সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রম্ন।
(সূরা ইয়াসিন-৬২)
অতএব মানুষের উচিত শয়তানকে নিজেদেও শত্রম্ন হিসেবেই জানা এবং তার থেকে বেঁচে থাকার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
শয়তান থেকে বাঁচার উপায়:
শয়তান থেকে বাঁচার জন্য সবচেয়ে বড় উপায় হচ্ছে, একমাত্র আলস্নাহর কাছে আশ্রয় গ্রহণ করা। এ কারণেই আলস্নাহ তা’আলা আমাদেরকে দু’আ শিখিয়ে দিয়েছেন,
رَبِّ أَعُوْذُ بِكَ مِنْ هَمَزَاتِ الشَّيَاطِيْنِ ‐ وَأَعُوْذُ بِكَ رَبِّ أَنْ يَّحْضُرُوْنِ .
হে আমার রব! আমি শয়তানদের কুমন্ত্রণা হতে আপনার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি। আর আমি আপনার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি, যেন তারা আমার কাছে না আসতে পারে। (সূরা মু’মিনূন- ৯৭, ৯৮)
এ ছাড়াও আরো বেশ কয়েকটি উপায় রয়েছে, যেগুলোর মাধ্যমে শয়তান থেকে বেঁচে থাকা খুবই সহজ। আর এগুলো কুরআন ও হাদীসের দ্বারা প্রমাণিত। যেমন-
১. কুরআন তেলাওয়াত করা। [সহীহ মুসলিম, হা/১৭৬০ তিরমিযী, হা/২৮৭৭; সুনানুল কুবরা লিন নাসাঈ, হা/৮০১৫ ।]
২. ইখলাস অবলম্বন করা । [সূরা হিজর ৩৯-৪০।]
৩. আলস্নাহকে স্মরণ করা । [সূরা যুখরম্নফ ৩৬-৩৭।]
৪. ঘরে প্রবেশকালে ও খাবার সময় আলস্নাহকে স্মরণ করা। [সহীহ মুসলিম, হা/৫৩৭১; আবু দাউদ, হা/৩৭৬৭; ইবনে মাজাহ, হা/৩৮৮৭;বায়হাকী, হা/১৫০০৩।]
৫. ডান হাতে আহার করা। [তিরমিযী, হা/১৭৯৯; ইবনে মাজাহ, হা/৩২৬৬; মুয়াত্তা ইমাম মালেক, হা/১৬৪৪।]
৬. আলস্নাহর উপর রভরসা করা। [সূরা নাহল - ৯৯।]
৭. শয়নকালে আয়াতুল কুরসী পাঠ করা। [সহীহ বুখারী, হা/৩২৭৫; শুআবুল ঈমান হা/২৩৮৮; সুনানুল কুবরা লিন নাসাঈ, হা/১০৭৯৫।]
এ সর্ম্পকে বিসত্মারিত জানার জন্য পড়ুন আমাদের বই শয়তান থেকে বাঁচার কৌশল’’।
﴿فَإِذَا قَرَأْتَ الْقُرْاٰنَ فَاسْتَعِذْ بِاللهِ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيْمِ﴾
যখন তুমি কুরআন পাঠ করবে, তখন অভিশপ্ত শয়তান হতে আলস্নাহর আশ্রয় প্রার্থনা করবে। (সূরা নাহল- ৯৮)
﴿فَإِذَا قَرَأْتَ الْقُرْاٰنَ فَاسْتَعِذْ بِاللهِ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيْمِ﴾
যখন তুমি কুরআন পাঠ করবে, তখন অভিশপ্ত শয়তান হতে আলস্নাহর আশ্রয় প্রার্থনা করবে। (সূরা নাহল- ৯৮)
উলেস্নখ্য যে, এ হুকুমটি যে কোন সময়ের জন্য প্রযোজ্য। অর্থাৎ যখনই কুরআন পাঠ করা শুরম্ন করবে, তখনই শয়তানের কাছ থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করা করতে হবে- চাই তা নামাযের মধ্যে হোক অথবা নামাযের বাহিরে হোক অথবা সূরার শুরম্ন থেকে পাঠ করার সময় হোক অথবা সূরার মধ্যখানে যে কোন আয়াত থেকে পাঠ করার সময় হোক। উপরম্নক্ত আয়াত দ্বারা এমনই নির্দেশনা পাওয়া যায়। তাছাড়া এমনিতেও যে কোন সময় শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে আলস্নাহর কাছে আশ্রয় চাওয়া খুবই উত্তম। কেননা আলস্নাহ বেশ কয়েকটি আয়াতের মাধ্যমে নির্দেশনা প্রদান করেছেন। যেমন-
وَقُلْ رَبِّ أَعُوْذُ بِكَ مِنْ هَمَزَاتِ الشَّيَاطِيْنِ، وَأَعُوْذُ بِكَ رَبِّ أَنْ يَّحْضُرُوْنِ
তুমি বল, হে আমার প্রতিপালক! আমি তোমার আশ্রয় প্রার্থনা করি শয়তানের প্ররোচনা হতে এবং আমি তোমার নিকট আরো আশ্রয় প্রার্থনা করি আমার নিকট ওদের উপস্থিতি হতে। (মুমিনূন- ৯৭-৯৮)
তিনি আরো বলেন,
﴿وَإِمَّا يَنْزَغَنَّكَ مِنَ الشَّيْطَانِ نَزْغٌ فَاسْتَعِذْ بِاللهِ إِنَّهُ هُوَ السَّمِيْعُ الْعَلِيْمُ﴾
যদি শয়তানের কুমন্ত্রণা তোমাকে প্ররোচিত করে, তবে আলস্নাহর আশ্রয় চাও। নিশ্চয়ই তিনি সর্বশ্রোতা ও সর্বজ্ঞ। (সূরা হা-মীম সাজদাহ- ৩৬)
আঊ’যূ বিলস্নাহ’ এর অর্থ ও তাvপর্য:
أَعُوْذُ بِاللهِ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيْمِ (আঊ’যূ বিলস্নাহ’ মিনাশ্ শাইত্বানির রজীম) এর সাধারণ অর্থ হচ্ছে, আমি বিতাড়িত শয়তান হতে আলস্নাহর আশ্রয় প্রার্থনা করছি। আর এর তাvপর্য হচ্ছে, আমরা এমন এক সত্ত্বা হতে আশ্রয় প্রার্থনা করছি, যে সর্বদিক থেকে বিতাড়িত। আর এ কারণেই আলস্নাহ তা’আলা আমাদেরকে শয়তান থেতে সাবধান করে দিয়েছেন। তিনি বলেন,
﴿ يَا بَنِي آدَمَ لا يَفْتِنَنَّكُمُ الشَّيْطَانُ كَمَا أَخْرَجَ أَبَوَيْكُمْ مِنَ الْجَنَّةِ﴾
হে আদম সমত্মান! শয়তান যেন তোমাদেরকে কিছুতেই প্রলুব্ধ না করে, যেভাবে সে তোমাদের পিতা-মাতাকে জান্নাত হতে বহিষ্কৃত করেছিল। (সুরা আরাফ-২৭)
শয়তানের পরিচয়:
সবচেয়ে বড় শয়তান হচ্ছে ইবলিস- যে আদম আ: -কে সিজদা করতে অস্বীকার করেছিল। তবে শয়তান কোন নির্দিষ্ট সত্ত্বার নাম নয়, বরং এটি কতগুলো বৈশিষ্ট্যের সমষ্টি। যার মধ্যে শয়তানের বৈশিষ্ট পাওয়া যাবে, তাকেই শয়তান হিসেবে গণ্য করা হবে। শয়তান জিন জাতির মধ্যে রয়েছে আবার মানুষের মধ্যেও রয়েছে।
শয়তান হচ্ছে মানুষের শত্রম্ন:
শয়তান হচ্ছে মানুষের প্রকাশ্য শত্রম্ন। আলস্নাহ তা’আলা বলেন,
أَلَمْ أَعْهَدْ إِلَيْكُمْ يَا بَنِي آدَمَ أَنْ لا تَعْبُدُوا الشَّيْطَانَ إِنَّهُ لَكُمْ عَدُوٌّ مُبِينٌ
হে আদম সমত্মান! আমি কি তোমাদেরকে সতর্ক করিনি যে, তোমরা শয়তানের উপাসনা করোনা ? নিশ্চয় সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রম্ন।
(সূরা ইয়াসিন-৬২)
অতএব মানুষের উচিত শয়তানকে নিজেদেও শত্রম্ন হিসেবেই জানা এবং তার থেকে বেঁচে থাকার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
শয়তান থেকে বাঁচার উপায়:
শয়তান থেকে বাঁচার জন্য সবচেয়ে বড় উপায় হচ্ছে, একমাত্র আলস্নাহর কাছে আশ্রয় গ্রহণ করা। এ কারণেই আলস্নাহ তা’আলা আমাদেরকে দু’আ শিখিয়ে দিয়েছেন,
رَبِّ أَعُوْذُ بِكَ مِنْ هَمَزَاتِ الشَّيَاطِيْنِ ‐ وَأَعُوْذُ بِكَ رَبِّ أَنْ يَّحْضُرُوْنِ .
হে আমার রব! আমি শয়তানদের কুমন্ত্রণা হতে আপনার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি। আর আমি আপনার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি, যেন তারা আমার কাছে না আসতে পারে। (সূরা মু’মিনূন- ৯৭, ৯৮)
এ ছাড়াও আরো বেশ কয়েকটি উপায় রয়েছে, যেগুলোর মাধ্যমে শয়তান থেকে বেঁচে থাকা খুবই সহজ। আর এগুলো কুরআন ও হাদীসের দ্বারা প্রমাণিত। যেমন-
১. কুরআন তেলাওয়াত করা। [সহীহ মুসলিম, হা/১৭৬০ তিরমিযী, হা/২৮৭৭; সুনানুল কুবরা লিন নাসাঈ, হা/৮০১৫ ।]
২. ইখলাস অবলম্বন করা । [সূরা হিজর ৩৯-৪০।]
৩. আলস্নাহকে স্মরণ করা । [সূরা যুখরম্নফ ৩৬-৩৭।]
৪. ঘরে প্রবেশকালে ও খাবার সময় আলস্নাহকে স্মরণ করা। [সহীহ মুসলিম, হা/৫৩৭১; আবু দাউদ, হা/৩৭৬৭; ইবনে মাজাহ, হা/৩৮৮৭;বায়হাকী, হা/১৫০০৩।]
৫. ডান হাতে আহার করা। [তিরমিযী, হা/১৭৯৯; ইবনে মাজাহ, হা/৩২৬৬; মুয়াত্তা ইমাম মালেক, হা/১৬৪৪।]
৬. আলস্নাহর উপর রভরসা করা। [সূরা নাহল - ৯৯।]
৭. শয়নকালে আয়াতুল কুরসী পাঠ করা। [সহীহ বুখারী, হা/৩২৭৫; শুআবুল ঈমান হা/২৩৮৮; সুনানুল কুবরা লিন নাসাঈ, হা/১০৭৯৫।]
এ সর্ম্পকে বিসত্মারিত জানার জন্য পড়ুন আমাদের বই শয়তান থেকে বাঁচার কৌশল’’।
﴿فَإِذَا قَرَأْتَ الْقُرْاٰنَ فَاسْتَعِذْ بِاللهِ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيْمِ﴾
যখন তুমি কুরআন পাঠ করবে, তখন অভিশপ্ত শয়তান হতে আলস্নাহর আশ্রয় প্রার্থনা করবে। (সূরা নাহল- ৯৮)
সূরা তাওবা ব্যতীত কুরআন মাজীদের প্রতিটি সূরার শুরম্নতে পার্থক্যকারী হিসাবে ‘বিসমিলস্নাহ’ লিখিত ও পঠিত হয়। এতে রয়েছে ৪টি শব্দ ও ১৯টি বর্ণ। এমনিভাবে বই ও চিঠি-পত্রের শুরম্নতে বরকত হাসিলের উদ্দেশ্যেও ‘বিসমিলস্নাহ’ লেখা সম্পর্কে উম্মতের ঐক্যমত রয়েছে। তবে মূলত একটি হচ্ছে সূরা নামলের ৩০ নং আয়াতের অংশ বিশেষ, যা সুলায়মান (আঃ) সাবার রাণী বিলকীসের নিকট লিখিত পত্রের শুরম্নতে লিখেছিলেন। আর আয়াতটি হলো,
﴿قَالَتْ يَاۤ اَيُّهَا الْمَلَاُ اِنِّۤيْ اُلْقِيَ اِلَيَّ كِتَابٌ كَرِيْمٌ اِنَّهٗ مِنْ سُلَيْمَانَ وَاِنَّهٗ بِسْمِ اللهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيْمِ﴾
সে (নারী) বলল, হে পরিষদবর্গ! আমাকে এক সম্মানিত পত্র দেয়া হয়েছে। নিশ্চয় এটা সুলায়মানের নিকট হতে আগত এবং এটা পরম করম্নণাময় ও অতি দয়ালু আলস্নাহর নামে শুরম্ন করা হয়েছে। (সূরা নামল ২৭ঃ ৩০)
এমনিভাবে আলস্নাহ তা‘আলা নবী নূহ (আঃ)-কে তার জাহাজে উঠার সময় বলেছিলেন,
﴿اِرْكَبُوْا فِيْهَا بِسْمِ اللهِ﴾
তোমরা এতে আলস্নাহর নামে আরোহণ করো। (সূরা হুদ ১১ঃ ৪১)
আরবের মুশরিকরা সকল কাজের শুরম্নতে তাদের দেব-দেবীর নাম নিত। যেমন ‘বিসমিল-লাতে ওয়াল ওযযা’ (লাত ও ওযযার নামে), তার প্রতিবাদে কুরআনের প্রথম আয়াত নাযিল হয় ‘ইক্বরা বিসমি রবিবকালস্নাযী খালাকা’ বলে। অর্থাৎ ‘তুমি পাঠ করো তোমার প্রভুর নামে, যিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন’। পরবর্তীতে সকল শুভ কাজের শুরম্নতে ‘বিসমিলস্নাহ’ বলার সুন্নাত জারি হয় এবং আলস্নাহর হুকুমে কুরআনের প্রত্যেক সূরার শুরম্নতে ‘বিসমিলস্নাহ’ লেখা হয়।
﴿قَالَتْ يَاۤ اَيُّهَا الْمَلَاُ اِنِّۤيْ اُلْقِيَ اِلَيَّ كِتَابٌ كَرِيْمٌ اِنَّهٗ مِنْ سُلَيْمَانَ وَاِنَّهٗ بِسْمِ اللهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيْمِ﴾
সে (নারী) বলল, হে পরিষদবর্গ! আমাকে এক সম্মানিত পত্র দেয়া হয়েছে। নিশ্চয় এটা সুলায়মানের নিকট হতে আগত এবং এটা পরম করম্নণাময় ও অতি দয়ালু আলস্নাহর নামে শুরম্ন করা হয়েছে। (সূরা নামল ২৭ঃ ৩০)
এমনিভাবে আলস্নাহ তা‘আলা নবী নূহ (আঃ)-কে তার জাহাজে উঠার সময় বলেছিলেন,
﴿اِرْكَبُوْا فِيْهَا بِسْمِ اللهِ﴾
তোমরা এতে আলস্নাহর নামে আরোহণ করো। (সূরা হুদ ১১ঃ ৪১)
আরবের মুশরিকরা সকল কাজের শুরম্নতে তাদের দেব-দেবীর নাম নিত। যেমন ‘বিসমিল-লাতে ওয়াল ওযযা’ (লাত ও ওযযার নামে), তার প্রতিবাদে কুরআনের প্রথম আয়াত নাযিল হয় ‘ইক্বরা বিসমি রবিবকালস্নাযী খালাকা’ বলে। অর্থাৎ ‘তুমি পাঠ করো তোমার প্রভুর নামে, যিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন’। পরবর্তীতে সকল শুভ কাজের শুরম্নতে ‘বিসমিলস্নাহ’ বলার সুন্নাত জারি হয় এবং আলস্নাহর হুকুমে কুরআনের প্রত্যেক সূরার শুরম্নতে ‘বিসমিলস্নাহ’ লেখা হয়।
‘বিসমিলস্নাহ’ সূরা ফাতিহা বা অন্য কোন সূরা অংশ কিনা এ ব্যাপারে কেউ কেউ ‘বিসমিলস্নাহ’-কে সূরা ফাতিহার অংশ মনে করে থাকেন। আবার অনেকে মনে করেন এটি সুরা নামল ব্যাতত অন্য সুরার অংশ নয়; বরং এটিকে প্রতিটি সূরার শুরম্নতে আনা হয়েছে একটি সূরাকে আরেকটি সূরা থেকে পৃথক করার জন্য। হাদীসে রয়েছে,
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ كَانَ النَّبِىُّ - - لاَ يَعْرِفُ فَصْلَ السُّورَةِ حَتَّى تُنَزَّلَ عَلَيْهِ ﴿بِسْمِ اللهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ﴾
আবদুলস্নাহ ইবনে আববাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, যতক্ষণ না ‘বিসমিলস্নাহির রাহমানির রাহীম’ নাযিল হলো, ততক্ষণ পর্যমত্ম নবী ﷺ সূরার পার্থক্যকারী হিসেবে কিছুই জানতেন না। [আবু দাউদ, হা/৭৮৮; বায়হাকী, হা/২৪৭৩; মিশকাত, হা/২২১৮।]
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ كَانَ النَّبِىُّ - - لاَ يَعْرِفُ فَصْلَ السُّورَةِ حَتَّى تُنَزَّلَ عَلَيْهِ ﴿بِسْمِ اللهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ﴾
আবদুলস্নাহ ইবনে আববাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, যতক্ষণ না ‘বিসমিলস্নাহির রাহমানির রাহীম’ নাযিল হলো, ততক্ষণ পর্যমত্ম নবী ﷺ সূরার পার্থক্যকারী হিসেবে কিছুই জানতেন না। [আবু দাউদ, হা/৭৮৮; বায়হাকী, হা/২৪৭৩; মিশকাত, হা/২২১৮।]
সালাতে ‘বিসমিলস্নাহ’ জোরে পড়তে হবে নাকি আসেত্ম এ ব্যাপারে মতভেদ রয়েছে। তবে নির্ভরযোগ্য মত হচ্ছে এটি নীরবেই পাঠ করাই উত্তম। হাদীসে এসেছে,
عَنْ اَنَسٍ قَالَ : صَلَّيْتُ مَعَ النَّبِيِّ وَأَبِيْ بَكْرٍ وَعُمَرَ وَعُثْمَانَ ، فَلَمْ أَسْمَعْ أَحَداً مِنْهُمْ يَقْرَأْ : ( بِسْمِ اللهِ الرَّحْمنِ الرَّحِيْمِ )
আনাস রা: হতে বর্ণিত । তিনি বলেন, আমি রাসূলুলস্নাহ ﷺ ,আবু বকর, উমর, ও উসমান রা: এর পিছনে সালাত আদায় করেছি। কিন্তু তাঁদের কাউকে আমি ‘বিসমিলস্নাহির রহমানির রহীম পাঠ করতে শুনিনি। [সহীহ মুসলিম হা/৩৯৯; ইবনে মাজাহ, হা/৮১৫; বায়হাকী হা/২২৪২; নাসাঈ হা/ ৯০৬ সহীহ ইবনে খুযাইমা/৪৯৪ মুসনাদে আহমাদ/১২৮১০]
অপর হাদীসে এসেছে,
عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ الله عَنْهَا اَنَّ رَسُوْلَ الله ِص - يَفْتَتِحُ الصَّلَاةَ بِالتَّكْبِيْرِ وَالْقِرَاءَةِ بِ اَلْحَمْدِ للهِ رَبِّ الْعَالَمِيْنَ
আয়েশা রা : হতে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুলস্নাহ ﷺ সালাত শুরম্ন করতেন তাকবীর দ্বারা এবং কিরাআত শুরম্ন করতেন اَلْحَمْدِ للهِ رَبِّ الْعَالَمِيْنَ দ্বারা। [মুসনাদে আহমাদ/২৫৪২১; মু’জামুল কাবীল লিত তাবারানী/ ১২৭১৮; বায়হাকী/২৩৫২; মুসনাদুল জামে’/১২১৪৩]
عَنْ اَنَسٍ قَالَ : صَلَّيْتُ مَعَ النَّبِيِّ وَأَبِيْ بَكْرٍ وَعُمَرَ وَعُثْمَانَ ، فَلَمْ أَسْمَعْ أَحَداً مِنْهُمْ يَقْرَأْ : ( بِسْمِ اللهِ الرَّحْمنِ الرَّحِيْمِ )
আনাস রা: হতে বর্ণিত । তিনি বলেন, আমি রাসূলুলস্নাহ ﷺ ,আবু বকর, উমর, ও উসমান রা: এর পিছনে সালাত আদায় করেছি। কিন্তু তাঁদের কাউকে আমি ‘বিসমিলস্নাহির রহমানির রহীম পাঠ করতে শুনিনি। [সহীহ মুসলিম হা/৩৯৯; ইবনে মাজাহ, হা/৮১৫; বায়হাকী হা/২২৪২; নাসাঈ হা/ ৯০৬ সহীহ ইবনে খুযাইমা/৪৯৪ মুসনাদে আহমাদ/১২৮১০]
অপর হাদীসে এসেছে,
عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ الله عَنْهَا اَنَّ رَسُوْلَ الله ِص - يَفْتَتِحُ الصَّلَاةَ بِالتَّكْبِيْرِ وَالْقِرَاءَةِ بِ اَلْحَمْدِ للهِ رَبِّ الْعَالَمِيْنَ
আয়েশা রা : হতে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুলস্নাহ ﷺ সালাত শুরম্ন করতেন তাকবীর দ্বারা এবং কিরাআত শুরম্ন করতেন اَلْحَمْدِ للهِ رَبِّ الْعَالَمِيْنَ দ্বারা। [মুসনাদে আহমাদ/২৫৪২১; মু’জামুল কাবীল লিত তাবারানী/ ১২৭১৮; বায়হাকী/২৩৫২; মুসনাদুল জামে’/১২১৪৩]
بِسْمِ اللهِ (বিসমিলস্নাহ) এর মধ্যে ب (বা) বর্ণটি হরফে যার। আর আরবি ভাষায় এটি বিভিন্ন সময় বিভিন্ন অর্থে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। যেমন- সাথে, দিয়ে, জন্যে, উদ্দেশ্যে, সাহায্যে ইত্যাদি। সুতরাং بِسْمِ اللهِ (বিসমিলস্নাহ) এর অর্থ বিভিন্নরূপ হবে। যেমন-
১. আলস্নাহর নামের উদ্দেশ্যে,
২. আলস্নাহর নামের জন্য,
৩. আলস্নাহর নামের সাথে,
৪. আলস্নাহর নামের সাহায্যে ইত্যাদি।
লক্ষ্যণীয় যে, এখানে بِسْمِ اللهِ (বিসমিলস্নাহ বাক্যটিতে কোন فعل (কাজ) এর কথা উলেস্নখ নেই। এ ক্ষেত্রে আরবি ব্যকরণবিদগণ বলেছেন, এর পূর্বে ابدأ (আবদাউ) فعل উহ্য রয়েছে; যার অর্থ হচ্ছে- আমি শুরম্ন করছি। আবার কেউ কেউ বলেছেন, এর পূর্বে افعل (আফ‘আলু) ক্রিয়া উহ্য রয়েছে; যার অর্থ হচ্ছে- আমি কাজটি করতে যাচ্ছি।
সুতরাং بِسْمِ اللهِ (বিসমিলস্নাহ) এর পরিপূর্ণ অর্থ হবে, আমি আলস্নাহর নামে শুরম্ন করছি অথবা আমি আলস্নাহর নামে কাজটি করতে যাচ্ছি। বিসমিলস্নাহ বলে যে কাজটি শুরম্ন করা হয় মুলত ঐ কাজের ক্রিয়াপদটি তারপূর্বে ব্যবহৃত হয়। যেমন- পড়ার শুরম্নতে بِسْمِ اللهِ (বিসমিলস্নাহ) পাঠ করা হলে অর্থ দাঁড়ায়- আমি আলস্নাহর নামে পাঠ করছি। খাওয়ার শুরম্নতে بِسْمِ اللهِ (বিসমিলস্নাহ) পাঠ করা হলে এর অর্থ দাঁড়ায়- আমি আলস্নাহর নামে খাচ্ছি।
আর আমরা যেকোনো হালাল কাজ শুরম্নর পূর্বে بِسْمِ اللهِ (বিসমিলস্নাহ) বলব। হাদীসে এসেছে,
عَنْ أَبِى هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ - لاَ صَلاَةَ لِمَنْ لاَ وُضُوءَ لَهُ وَلاَ وُضُوءَ لِمَنْ لَمْ يَذْكُرِ اسْمَ اللهِ تَعَالَى عَلَيْهِ
আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুলস্নাহ (সাঃ) বলেছেন, যার অযু হবে না তার নামায হবে না। আর যে ব্যক্তি অযুর সময় আলস্নাহর নাম স্মরণ করে না তথা বিসমিলস্নাহ বলে না তার অযু হবে না। [আবু দাউদ, হা/১০১; ইবনে মাজাহ, হা/৪০০; বায়হাকী, হা/১৮৬; সুনাদে দার কুতনী, হা/২৬৩; মুসাদরাকে হাকেম, হা/৫১৯।]
عَنْ عُمَرَ بْنِ أَبِىْ سَلَمَةَ قَالَ كُنْتُ فِىْ حَجْرِ رَسُوْلِ اللهِ - وَكَانَتْ يَدِىْ تَطِيْشُ فِى الصَّحْفَةِ فَقَالَ لِىْ يَا غُلَامُ سَمِّ اللهَ وَكُلْ بِيَمِيْنِكَ وَكُلْ مِمَّا يَلِيْكَ
অপর হাদীসে এসেছে,
উমর ইবনে আবু সালামা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি একজন বালক হিসেবে রাসূলুলস্নাহ ﷺ এর তত্ত্বাবধানে ছিলাম। আমার হাত খাওয়ার পাত্রের চতুর্দিকে পৌঁছত। তখন রাসূলুলস্নাহ ﷺ আমাকে বললেন, হে বৎস! আলস্নাহর নাম বলো ও ডান হাতে খাও এবং নিজের সম্মুখ হতে খাও। [মুয়াত্তা ইমাম মালিক, হ/১৬৭০; সহীহ বুখারী, হা/৫৩৭৬; সহীহ মুসলিম, হা/৫৩৮৮; আবু দাউদ, হা/৩৭৭৯; তিরমিযী, হা/১৮৫৭; ইবনে মাজাহ, হা/৩২৬৭।]
‘ আর রহমা-নির রহীম’ :
الرحمن (আর-রাহমান) ও الرحيم (আর-রাহীম) উভয়টি الرحمة শব্দ থেকে উৎপত্তি হয়েছে। আর উভয়টি المبالغة (আল-মুবালাগা) তথা আধিক্য বুঝানোর জন্য ব্যবহৃত হয়েছে। তবে الرحيم (আর-রাহীম) এর চেয়ে الرحمن (আর-রাহমান) এর আধিক্য কিছুটা বেশি। আর অধিকাংশ মুহাদ্দীস এ কথার উপরই মতামত ব্যক্ত করেছেন। তারা বলেছেন, الرحمن (আর-রাহমান) অর্থ হচ্ছে- দুনিয়া ও আখেরাত উভয় ক্ষেত্রে দয়াপদর্শনকারী। অপরদিকে الرحيم (আর-রাহীম) অর্থ হচ্ছে- শুধুমাত্র আখেরাতে দয়াপ্রদর্শনকারী। ইবনে জারীর বলেন, الرحمن অর্থ হচ্ছে যিনি সমুদয় সৃষ্ট জীবের প্রতি দয়া প্রদর্শনকারী। অপরদিকে الرحيم অর্থ হচ্ছে, যিনি মুমিনদের উপর দয়া বর্ষণকারী। যেমন- আলস্নাহ তা‘আলা বলেন,
وَكَانَ بِالْمُؤْمِنِينَ رَحِيمًا
আর তিনি মুমিনদের প্রতি পরম দয়ালু। (সূরা আহযাব- ৪৩)
অত্র আয়াতে আলস্নাহ তা‘আলা মুমিনদের প্রতি দয়া প্রদর্শনের ক্ষেত্রে رحيم (রাহীম) শব্দ ব্যবহার করেছেন।
১. আলস্নাহর নামের উদ্দেশ্যে,
২. আলস্নাহর নামের জন্য,
৩. আলস্নাহর নামের সাথে,
৪. আলস্নাহর নামের সাহায্যে ইত্যাদি।
লক্ষ্যণীয় যে, এখানে بِسْمِ اللهِ (বিসমিলস্নাহ বাক্যটিতে কোন فعل (কাজ) এর কথা উলেস্নখ নেই। এ ক্ষেত্রে আরবি ব্যকরণবিদগণ বলেছেন, এর পূর্বে ابدأ (আবদাউ) فعل উহ্য রয়েছে; যার অর্থ হচ্ছে- আমি শুরম্ন করছি। আবার কেউ কেউ বলেছেন, এর পূর্বে افعل (আফ‘আলু) ক্রিয়া উহ্য রয়েছে; যার অর্থ হচ্ছে- আমি কাজটি করতে যাচ্ছি।
সুতরাং بِسْمِ اللهِ (বিসমিলস্নাহ) এর পরিপূর্ণ অর্থ হবে, আমি আলস্নাহর নামে শুরম্ন করছি অথবা আমি আলস্নাহর নামে কাজটি করতে যাচ্ছি। বিসমিলস্নাহ বলে যে কাজটি শুরম্ন করা হয় মুলত ঐ কাজের ক্রিয়াপদটি তারপূর্বে ব্যবহৃত হয়। যেমন- পড়ার শুরম্নতে بِسْمِ اللهِ (বিসমিলস্নাহ) পাঠ করা হলে অর্থ দাঁড়ায়- আমি আলস্নাহর নামে পাঠ করছি। খাওয়ার শুরম্নতে بِسْمِ اللهِ (বিসমিলস্নাহ) পাঠ করা হলে এর অর্থ দাঁড়ায়- আমি আলস্নাহর নামে খাচ্ছি।
আর আমরা যেকোনো হালাল কাজ শুরম্নর পূর্বে بِسْمِ اللهِ (বিসমিলস্নাহ) বলব। হাদীসে এসেছে,
عَنْ أَبِى هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ - لاَ صَلاَةَ لِمَنْ لاَ وُضُوءَ لَهُ وَلاَ وُضُوءَ لِمَنْ لَمْ يَذْكُرِ اسْمَ اللهِ تَعَالَى عَلَيْهِ
আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুলস্নাহ (সাঃ) বলেছেন, যার অযু হবে না তার নামায হবে না। আর যে ব্যক্তি অযুর সময় আলস্নাহর নাম স্মরণ করে না তথা বিসমিলস্নাহ বলে না তার অযু হবে না। [আবু দাউদ, হা/১০১; ইবনে মাজাহ, হা/৪০০; বায়হাকী, হা/১৮৬; সুনাদে দার কুতনী, হা/২৬৩; মুসাদরাকে হাকেম, হা/৫১৯।]
عَنْ عُمَرَ بْنِ أَبِىْ سَلَمَةَ قَالَ كُنْتُ فِىْ حَجْرِ رَسُوْلِ اللهِ - وَكَانَتْ يَدِىْ تَطِيْشُ فِى الصَّحْفَةِ فَقَالَ لِىْ يَا غُلَامُ سَمِّ اللهَ وَكُلْ بِيَمِيْنِكَ وَكُلْ مِمَّا يَلِيْكَ
অপর হাদীসে এসেছে,
উমর ইবনে আবু সালামা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি একজন বালক হিসেবে রাসূলুলস্নাহ ﷺ এর তত্ত্বাবধানে ছিলাম। আমার হাত খাওয়ার পাত্রের চতুর্দিকে পৌঁছত। তখন রাসূলুলস্নাহ ﷺ আমাকে বললেন, হে বৎস! আলস্নাহর নাম বলো ও ডান হাতে খাও এবং নিজের সম্মুখ হতে খাও। [মুয়াত্তা ইমাম মালিক, হ/১৬৭০; সহীহ বুখারী, হা/৫৩৭৬; সহীহ মুসলিম, হা/৫৩৮৮; আবু দাউদ, হা/৩৭৭৯; তিরমিযী, হা/১৮৫৭; ইবনে মাজাহ, হা/৩২৬৭।]
‘ আর রহমা-নির রহীম’ :
الرحمن (আর-রাহমান) ও الرحيم (আর-রাহীম) উভয়টি الرحمة শব্দ থেকে উৎপত্তি হয়েছে। আর উভয়টি المبالغة (আল-মুবালাগা) তথা আধিক্য বুঝানোর জন্য ব্যবহৃত হয়েছে। তবে الرحيم (আর-রাহীম) এর চেয়ে الرحمن (আর-রাহমান) এর আধিক্য কিছুটা বেশি। আর অধিকাংশ মুহাদ্দীস এ কথার উপরই মতামত ব্যক্ত করেছেন। তারা বলেছেন, الرحمن (আর-রাহমান) অর্থ হচ্ছে- দুনিয়া ও আখেরাত উভয় ক্ষেত্রে দয়াপদর্শনকারী। অপরদিকে الرحيم (আর-রাহীম) অর্থ হচ্ছে- শুধুমাত্র আখেরাতে দয়াপ্রদর্শনকারী। ইবনে জারীর বলেন, الرحمن অর্থ হচ্ছে যিনি সমুদয় সৃষ্ট জীবের প্রতি দয়া প্রদর্শনকারী। অপরদিকে الرحيم অর্থ হচ্ছে, যিনি মুমিনদের উপর দয়া বর্ষণকারী। যেমন- আলস্নাহ তা‘আলা বলেন,
وَكَانَ بِالْمُؤْمِنِينَ رَحِيمًا
আর তিনি মুমিনদের প্রতি পরম দয়ালু। (সূরা আহযাব- ৪৩)
অত্র আয়াতে আলস্নাহ তা‘আলা মুমিনদের প্রতি দয়া প্রদর্শনের ক্ষেত্রে رحيم (রাহীম) শব্দ ব্যবহার করেছেন।
(মক্কায় অবতীর্ণ - আয়াত : ৭)
بِسْمِ اللهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيْمِ
(১) اَلْحَمْدُ لِلّٰهِ رَبِّ الْعَالَمِيْنَ
(২) اَلرَّحْمٰنِ الرَّحِيْمِ
(৩) مَالِكِ يَوْمِ الدِّيْنِ
(৪) اِيَّاكَ نَعْبُدُ وَاِيَّاكَ نَسْتَعِيْنُ
(৫) اِهْدِنَا الصِّرَاطَ الْمُسْتَقِيْمَ
(৬) صِرَاطَ الَّذِيْنَ اَنْعَمْتَ عَلَيْهِمْ
(৭) غَيْرِ الْمَغْضُوْبِ عَلَيْهِمْ وَلَا الضَّآلِّيْنَ
بِسْمِ اللهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيْمِ
(১) اَلْحَمْدُ لِلّٰهِ رَبِّ الْعَالَمِيْنَ
(২) اَلرَّحْمٰنِ الرَّحِيْمِ
(৩) مَالِكِ يَوْمِ الدِّيْنِ
(৪) اِيَّاكَ نَعْبُدُ وَاِيَّاكَ نَسْتَعِيْنُ
(৫) اِهْدِنَا الصِّرَاطَ الْمُسْتَقِيْمَ
(৬) صِرَاطَ الَّذِيْنَ اَنْعَمْتَ عَلَيْهِمْ
(৭) غَيْرِ الْمَغْضُوْبِ عَلَيْهِمْ وَلَا الضَّآلِّيْنَ
(১) বিসমিলস্না-হির রাহমানির রাহীম
(২) আল-হামদু লিলস্না-হি রাবিবল ‘আ-লামীন।
(৩) আর রহ্মা-নির রহীম।
(৪) মা-লিকি ইয়াওমিদ্দীন।
(৫) ইয়্যাকা না‘বুদু ওয়া ইয়্যাকা নাস্তা‘ঈন।
(৬) ইহ্দিনাস্ সিরা-ত্বাল্ মুসাক্বীম।
(৭) সিরা-ত্বালস্নাযীনা আন্ ‘আম্তা ‘আলাইহিম, গাইরিল্ মাগ্যূবি ‘আলাইহিম্, ওয়ালায্যো-লস্নীন।
(২) আল-হামদু লিলস্না-হি রাবিবল ‘আ-লামীন।
(৩) আর রহ্মা-নির রহীম।
(৪) মা-লিকি ইয়াওমিদ্দীন।
(৫) ইয়্যাকা না‘বুদু ওয়া ইয়্যাকা নাস্তা‘ঈন।
(৬) ইহ্দিনাস্ সিরা-ত্বাল্ মুসাক্বীম।
(৭) সিরা-ত্বালস্নাযীনা আন্ ‘আম্তা ‘আলাইহিম, গাইরিল্ মাগ্যূবি ‘আলাইহিম্, ওয়ালায্যো-লস্নীন।
(১) بِسْمِ اللهِ (শুরম্ন করছি) আলস্নাহর নামে, اَلرَّحْمٰنِ যিনি পরম করম্নণাময়, اَلرَّحِيْمِ অতি দয়ালু।
(২) اَلْحَمْدُ সকল প্রশংসা لِلّٰهِ আলস্নাহর জন্য (যিনি) رَبِّ প্রতিপালক اَلْعَالَمِيْنَ জগতসমূহের।
(৩) اَلرَّحْمٰنِ পরম করম্নণাময় اَلرَّحِيْمِ অতি দয়ালু।
(৪) مَالِكِ মালিক, يَوْمِ الدِّيْنِ বিচার দিনের।
(৫) اِيَّاكَ কেবল আপনারই, نَعْبُد আমরা ইবাদাত করি, وَاِيَّاكَ আর কেবল আপনারই কাছে نَسْتَعِيْنُ আমরা সাহায্য চাই।
(৬) اِهْدِنَا আমাদেরকে দেখিয়ে দিন, اَلصِّرَاطَ পথ, اَلْمُسْتَقِيْمَ সরল-সঠিক।
(৭) صِرَاطَ الَّذِيْنَ ওদের পথ, اَنْعَمْتَ আপনি অনুগ্রহ করেছেন, عَلَيْهِمْ যাদের প্রতি, غَيْرِ (ওদের পথ) নয়, اَلْمَغْضُوْبِ عَلَيْهِمْ যারা ক্রোধের শিকার হয়েছে وَلَا الضَّاۤلِّيْنَ এবং (ওদের পথও) নয় যারা পথভ্রষ্ট হয়েছে।
(২) اَلْحَمْدُ সকল প্রশংসা لِلّٰهِ আলস্নাহর জন্য (যিনি) رَبِّ প্রতিপালক اَلْعَالَمِيْنَ জগতসমূহের।
(৩) اَلرَّحْمٰنِ পরম করম্নণাময় اَلرَّحِيْمِ অতি দয়ালু।
(৪) مَالِكِ মালিক, يَوْمِ الدِّيْنِ বিচার দিনের।
(৫) اِيَّاكَ কেবল আপনারই, نَعْبُد আমরা ইবাদাত করি, وَاِيَّاكَ আর কেবল আপনারই কাছে نَسْتَعِيْنُ আমরা সাহায্য চাই।
(৬) اِهْدِنَا আমাদেরকে দেখিয়ে দিন, اَلصِّرَاطَ পথ, اَلْمُسْتَقِيْمَ সরল-সঠিক।
(৭) صِرَاطَ الَّذِيْنَ ওদের পথ, اَنْعَمْتَ আপনি অনুগ্রহ করেছেন, عَلَيْهِمْ যাদের প্রতি, غَيْرِ (ওদের পথ) নয়, اَلْمَغْضُوْبِ عَلَيْهِمْ যারা ক্রোধের শিকার হয়েছে وَلَا الضَّاۤلِّيْنَ এবং (ওদের পথও) নয় যারা পথভ্রষ্ট হয়েছে।
১. আলস্নাহর নামে (শুরম্ন করছি), যিনি পরম করম্নণাময় ও অতি দয়ালু ।
২. সমসত্ম প্রশংসা ঐ আলস্নাহর জন্য যিনি জগতসমূহের প্রতিপালক।
৩. যিনি পরম করম্নণাময় ও অতি দয়ালু।
৪. যিনি বিচার দিনের অধিপতি।
৫. আমরা শুধুমাত্র আপনারই ইবাদাত করি এবং আপনারই নিকটই সাহায্য প্রার্থনা করি।
৬. আমাদেরকে সরল-সঠিক পথ দেখিয়ে দিন।
৭. তাদের পথ, যাদের প্রতি আপনি অনুগ্রহ করেছেন। আর তাদের পথ নয় যারা ক্রোধের শিকার হয়েছে এবং যারা পথভ্রষ্ট হয়েছে।
২. সমসত্ম প্রশংসা ঐ আলস্নাহর জন্য যিনি জগতসমূহের প্রতিপালক।
৩. যিনি পরম করম্নণাময় ও অতি দয়ালু।
৪. যিনি বিচার দিনের অধিপতি।
৫. আমরা শুধুমাত্র আপনারই ইবাদাত করি এবং আপনারই নিকটই সাহায্য প্রার্থনা করি।
৬. আমাদেরকে সরল-সঠিক পথ দেখিয়ে দিন।
৭. তাদের পথ, যাদের প্রতি আপনি অনুগ্রহ করেছেন। আর তাদের পথ নয় যারা ক্রোধের শিকার হয়েছে এবং যারা পথভ্রষ্ট হয়েছে।
﴿اَلْحَمْدُ لِلّٰهِ رَبِّ الْعَالَمِيْنَ ﴾
সকল প্রশংসা আলস্নাহর জন্য, যিনি জগতসমূহের পালনকর্তা।
اَلْحَمْدُ (আল হামদু)-এর অর্থ
اَلْحَمْدُ (আল-হামদু) এর অর্থ হলো প্রশংসা করা। এটি একটি شُكْرٌ (শুকর) তথা কৃতজ্ঞতা প্রকাশক শব্দ। আরবিতে সাধারণ প্রশংসাকে مَدْحٌ (মাদ্হ) এবং বিশেষ প্রশংসাকে ثَنَاءٌ (সানা) বলা হয়। اَلْحَمْدُ (আল-হামদু) শব্দটি উভয় অর্থেই ব্যবহৃত হয়ে থাকে। আর আলস্নাহ তা‘আলার ক্ষেত্রে শব্দটি উভয় দিক থেকেই যথার্থ। কেননা আলস্নাহ তা‘আলা সকল সৃষ্টির কাছে ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা পাওয়ার যোগ্য। আর এর তাকিতে যে প্রশংসা করা হয় সেটি হচ্ছে مَدْحٌ (মাদ্হ)।
আবার তিনি তাঁর সৃষ্টিজীবকে অসংখ্য নিয়ামত দ্বারা পরিপূর্ণ করে দিয়েছেন। যেমন- সূর্যের আলো, পানি, বাতাস ও আগুন। তিনি কারো কাছ থেকে এসবের কোন বিনিময় গ্রহণ করেন না; কেবল নিজ দয়া ও অনুগ্রহের গুণেই তিনি এগুলো দান করে যাচ্ছেন। এসব কারণেও তিনি বিশেষ প্রশংসা পাওয়া যোগ্য। আর এটিই হচ্ছে ثَنَاءٌ (সানা)।
আলস্নাহর প্রশংসা করার উপকারিতা
‘‘যাবতীয় প্রশংসা আলস্নাহ তা‘আলার, যিনি সকল সৃষ্টি জগতের পালনকর্তা’’- সূরা ফাতিহার এই আয়াতটির বাক্য গঠন দিয়েই আলস্নাহ তা‘আলা আমাদেরকে তাঁর অবস্থান কত উপরে এবং আমাদের অবস্থান কত নিচে তা বুঝিয়ে দিয়েছেন। তিনি আমাদেরকে বুঝিয়ে দিয়েছেন যে, তিনি ইতিমধ্যেই প্রশংসিত। সুতরাং আমরা তার প্রশংসা করি অথবা না করি- এতে তার কোন লাভ অথবা ক্ষতি নেই। তবে যারা আলস্নাহর প্রশংসা করবে এর মাধ্যমে তারা নিজেই উপকৃত হবে। কেননা আলস্নাহ তা‘আলা শুকরিয়া আদায়কারীদেরকে পছন্দ করেন এবং তাদের প্রতি তাঁর নিয়ামত বৃদ্ধি করে দেন। যেমন- তিনি বলেন,
لَئِنْ شَكَرْتُمْ لَأَزِيدَنَّكُمْ
যদি তোমরা শুকরিয়া আদায় কর, তাহলে তিনি তোমাদেরকে আরো বৃদ্ধি করে দিবেন। (সূরা ইবরাহীম- ৭)
তাছাড়া সামাজের দিকে লক্ষ করলে দেখা যায় যে, যারা অপেক্ষাকৃত বেশি কৃতজ্ঞ, তাদের মধ্যে মানসিক অশামিত্ম, দুশ্চিমত্মা, অমূলক ভয়ভীতি, অতিরিক্ত খাবার অভ্যাস কম থাকে। আর তারা মদ, সিগারেট ও ড্রাগ ও অন্যান্য নেশাজাত দ্রব্যের দিকেও কম আসক্ত হয়। তাছাড়া ভালো কাজের দিকে তাদের আগ্রহ বেশি থাকে, নিজেদেরকে বেশি সুখী অনুভব করে। আর রাসূলুলস্নাহ (সাঃ)-ও সুখে এবং দুঃখে সর্বদা আলস্নাহর প্রশংসা করতেন। তিনি খুশীর সময় বলতেন,
اَلْحَمْدُ لِلّٰهِ الَّذِىْ بِنِعْمَتِه تَتِمُّ الصَّالِحَاتُ
‘সকল প্রশংসা আলস্নাহর জন্য, যার অনুগ্রহে সকল সvকাজ সম্পন্ন হয়ে থাকে’। [ইবনে মাজাহ, হা/৩৮০৩; মুসাদরাকে হাকেম, হা/১৮৪০; মুসতারাক আলাস সহীহাইন, হা/১৮৪০; মুসনাদে বাযযার, হা/৫৩৩; মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা, হা/৩০১৭০।]
আর কষ্টের সময় বলতেন,
الْحَمْدُ ِللهِ عَلَى كُلِّ حَالٍ
‘যে কোন অবস্থাতেই আলস্নাহর জন্যই সকল প্রশংসা’। [ইবনে মাজাহ, হা/৩৮০৩; মুসাদরাকে হাকেম, হা/১৮৪০; মুসতারাক আলাস সহীহাইন, হা/১৮৪০; মুসনাদে বাযযার, হা/৫৩৩; মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা, হা/৩০১৭০।]
অপর দিকে রাসূলুলস্নাহ (সাঃ) আলস্নাহর প্রশংসা করাকে সর্বশ্রেষ্ট দু‘আ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। তিনি বলেন,
أَفْضَلُ الذِّكْرِ لَاۤ إِلٰهَ إِلاَّ الله ُوَأَفْضَلُ الدُّعَاءِ اَلْحَمْدُ لِلّٰهِ
শ্রেষ্ঠ যিকির হলো, ‘‘লা-ইলাহা ইলস্নালস্নাহ’’ এবং শ্রেষ্ঠ দু‘আ হলো ‘আলহামদুলিলস্নাহ’ বা সূরা ফাতিহা। [তিরমিযী, হা/৩৩৮৩; ইবনে মাজাহ, হা/৩৮০০; সুনানুল কুবরা নাসাঈ, হা/১০৫৯৯; মুসাদরাকে হাকেম, হা/১৮৩৪।]
اللهُ (আলস্নাহ) শব্দের বিশেস্নষণ
اَللهُ (আলস্নাহ) শব্দটি দ্বিবচন বা বহুবচন নেই। কোন ভাষাতেই এই নামের কোন প্রতিশব্দও নেই। এটি সারা বিশ্বের একমাত্র প্রতিপালক মহান আলস্নাহর সত্তাগত নাম। এছাড়াও তার আরো অনেক নাম রয়েছে, তবে সবগুলোই তার গুণবাচক নাম। আলস্নাহ তা‘আলার মধ্যে উক্ত গুণগুলো পরিপূর্ণভাবে বিদ্যমান আছে বিধায় তাঁকে সেসব গুণবাচক নামসমূহের মাধ্যমে ডাকা হয়।
অধিকাংশ আরবি ব্যকরণবিদের মতে الله (আলস্নাহ) শব্দটি مشتق (মুশতাক)। আর مشتق (মুশতাক) বলা হয় ঐ শব্দকে, যা অন্য কোন শব্দ থেকে বের হয়ে এসেছে। সেই হিসেবে الله (আলস্নাহ) শব্দটি إِلَاهٌ (ইলাহু) মাদ্দাহ হতে উদগত। প্রথমে এর পূর্বে اَلْ (আলিফ লাম) প্রবেশ করানোর হয়েছে, ফলে এর রূপ হয়েছে اَلْإِلَاهُ (আল-ইলাহ)। তারপর এটাকে হালকা করার জন্য দুই লামের মাঝখানের ‘হামযাহ’ ফেলে দেয়া হয়েছে, ফলে اَللهُ (আলস্নাহ)। আর উক্ত اَلْ (আলিফ লাম) সর্বদা আবশ্যিকভাবেই থাকবে কখনোই পৃথক করা যাবে না।
উলেস্নখ্য যে, الله শব্দটির কোন অর্থ না থাকলেও এর উৎপত্তিগত শব্দ إلٰهٌ এর কয়েকটি অর্থ রয়েছে। তবে সকল অর্থই আলস্নাহর দিকেই নিসবত করে। যেমন-
১. إلٰهٌ শব্দটির একটি অর্থ হচ্ছে, التَّحْيِيْرَ বা ব্যাকুল হওয়া। আলস্নাহকে ‘ইলাহ’ এজন্য বলা হয়েছে যে, সৃষ্টিকুল স্ব স্ব প্রয়োজনে হয়রান ও নিরাশ হয়ে তাঁর কাছেই উপনীত হয়।
২. إلٰهٌ শব্দটির আরেকটি অর্থ হচ্ছে, سَكَنَتْ বা প্রশামিত্ম লাভ করা। বান্দার অমত্মর আলস্নাহর যিকির ছাড়া প্রশামিত্ম লাভ করে না এবং তার পরিচয় ছাড়া স্থির হয় না। আর এজন্যও আলস্নাহকে اِلٰهٌ (ইলাহ) বলা হয়।
৩. إلٰهٌ শব্দটির আরেকটি অর্থ হচ্ছে, আশ্রয় গ্রহণ করা। যেহেতু বিপদের সময় আলস্নাহর কাছেই আশ্রয় গ্রহণ করা হয়, এ কারণেও আলস্নাহকে اِلٰهٌ (ইলাহ) বলা হয়।
৪. إلٰهٌ শব্দটির আরেকটি অর্থ হচ্ছে, উপাসনা করা। যেহেতু উপাসনা পাওয়ার একমাত্র হকদার হচ্ছে আলস্নাহ তা‘আলা, তাই তাকে إلٰهٌ বলা হয়।
اَللهُ (আলস্নাহ) শব্দের ভূল ব্যবহার
বর্তমান সমাজে আলস্নাহ শব্দটিকে বিভিন্নভাবে ভূল ব্যবহার করা হচ্ছে। যেমন-
১. কিছু কিছু লোক রয়েছে, যারা অন্যান্য ধর্মের সাথে সামঞ্জস্য রেখে আলস্নাহকে খোদা, ঈশ্বর, ভগবান, গড, উপরওয়ালা ইত্যাদি নামে সম্ভোধন করে থাকে। অথচ এগুলো আলস্নাহর সত্তাগত নাম তো নয়ই; বরং গুণবাচক নামও নয়। কেননা আলস্নাহ তা‘আলার সত্তাগত নাম একটাই; আর গুণবাচক নাম তো কুরআন ও হাদীসে বলেই দেয়া হয়েছে। তাছাড়া এসব নামের বৈশিষ্টের সাথে আলস্নাহর সাথে মিলে না। যেমন- আলস্নাহ শব্দের স্ত্রীলিঙ্গ নেই, অথচ এসব শব্দের স্ত্রীলিঙ্গ রয়েছে; আলস্নাহ শব্দের দ্বিবচন বা বহুবচন নেই, অথচ এসব শব্দের দ্বিবচন বা বহুবচন রয়েছে ইত্যাদি।
অতএব আলস্নাহকে কেবল আলস্নাহ ও তার গুনবাচক নামসমূহের মাধ্যমেই সম্বোধন করতে হবে- যদি অমুসলিমদের বানানো কিছু কিছু শব্দ তার দিকেই ইশারা করে। এ ক্ষেত্রে কোন ধরনের পরিবর্তন করা উচিত হবে না।
২. বর্তমানে অনেক মসজিদ, বাড়ী, গাড়ী, দোকান, গোইট ইত্যাদি বিভিন্ন জায়গায় الله অথবা محمد অথবা একপাশে الله এবং অন্য পাশে محمد লেখা পেস্নট ঝুলানো থাকে। আর এগুলো বরকত হাসিলের উদ্দেশ্যেই করা হয়ে থাকে। অথচ এগুলো নিঃসন্দেহে চরম বিদআত, এমনকি শিরকের সমতুল্য। কেননা এর মাধ্যমে আলস্নাহ ও মুহাম্মাদ (সাঃ) উভয়কে মর্যাদার দিক থেকে সমান গণ্য করা হয়। অথচ আলস্নাহর সাথে কাউকে সমমর্যাদাবান মনে করাটা স্পষ্ট শিরক।
সকল প্রশংসা আলস্নাহর জন্য, যিনি জগতসমূহের পালনকর্তা।
اَلْحَمْدُ (আল হামদু)-এর অর্থ
اَلْحَمْدُ (আল-হামদু) এর অর্থ হলো প্রশংসা করা। এটি একটি شُكْرٌ (শুকর) তথা কৃতজ্ঞতা প্রকাশক শব্দ। আরবিতে সাধারণ প্রশংসাকে مَدْحٌ (মাদ্হ) এবং বিশেষ প্রশংসাকে ثَنَاءٌ (সানা) বলা হয়। اَلْحَمْدُ (আল-হামদু) শব্দটি উভয় অর্থেই ব্যবহৃত হয়ে থাকে। আর আলস্নাহ তা‘আলার ক্ষেত্রে শব্দটি উভয় দিক থেকেই যথার্থ। কেননা আলস্নাহ তা‘আলা সকল সৃষ্টির কাছে ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা পাওয়ার যোগ্য। আর এর তাকিতে যে প্রশংসা করা হয় সেটি হচ্ছে مَدْحٌ (মাদ্হ)।
আবার তিনি তাঁর সৃষ্টিজীবকে অসংখ্য নিয়ামত দ্বারা পরিপূর্ণ করে দিয়েছেন। যেমন- সূর্যের আলো, পানি, বাতাস ও আগুন। তিনি কারো কাছ থেকে এসবের কোন বিনিময় গ্রহণ করেন না; কেবল নিজ দয়া ও অনুগ্রহের গুণেই তিনি এগুলো দান করে যাচ্ছেন। এসব কারণেও তিনি বিশেষ প্রশংসা পাওয়া যোগ্য। আর এটিই হচ্ছে ثَنَاءٌ (সানা)।
আলস্নাহর প্রশংসা করার উপকারিতা
‘‘যাবতীয় প্রশংসা আলস্নাহ তা‘আলার, যিনি সকল সৃষ্টি জগতের পালনকর্তা’’- সূরা ফাতিহার এই আয়াতটির বাক্য গঠন দিয়েই আলস্নাহ তা‘আলা আমাদেরকে তাঁর অবস্থান কত উপরে এবং আমাদের অবস্থান কত নিচে তা বুঝিয়ে দিয়েছেন। তিনি আমাদেরকে বুঝিয়ে দিয়েছেন যে, তিনি ইতিমধ্যেই প্রশংসিত। সুতরাং আমরা তার প্রশংসা করি অথবা না করি- এতে তার কোন লাভ অথবা ক্ষতি নেই। তবে যারা আলস্নাহর প্রশংসা করবে এর মাধ্যমে তারা নিজেই উপকৃত হবে। কেননা আলস্নাহ তা‘আলা শুকরিয়া আদায়কারীদেরকে পছন্দ করেন এবং তাদের প্রতি তাঁর নিয়ামত বৃদ্ধি করে দেন। যেমন- তিনি বলেন,
لَئِنْ شَكَرْتُمْ لَأَزِيدَنَّكُمْ
যদি তোমরা শুকরিয়া আদায় কর, তাহলে তিনি তোমাদেরকে আরো বৃদ্ধি করে দিবেন। (সূরা ইবরাহীম- ৭)
তাছাড়া সামাজের দিকে লক্ষ করলে দেখা যায় যে, যারা অপেক্ষাকৃত বেশি কৃতজ্ঞ, তাদের মধ্যে মানসিক অশামিত্ম, দুশ্চিমত্মা, অমূলক ভয়ভীতি, অতিরিক্ত খাবার অভ্যাস কম থাকে। আর তারা মদ, সিগারেট ও ড্রাগ ও অন্যান্য নেশাজাত দ্রব্যের দিকেও কম আসক্ত হয়। তাছাড়া ভালো কাজের দিকে তাদের আগ্রহ বেশি থাকে, নিজেদেরকে বেশি সুখী অনুভব করে। আর রাসূলুলস্নাহ (সাঃ)-ও সুখে এবং দুঃখে সর্বদা আলস্নাহর প্রশংসা করতেন। তিনি খুশীর সময় বলতেন,
اَلْحَمْدُ لِلّٰهِ الَّذِىْ بِنِعْمَتِه تَتِمُّ الصَّالِحَاتُ
‘সকল প্রশংসা আলস্নাহর জন্য, যার অনুগ্রহে সকল সvকাজ সম্পন্ন হয়ে থাকে’। [ইবনে মাজাহ, হা/৩৮০৩; মুসাদরাকে হাকেম, হা/১৮৪০; মুসতারাক আলাস সহীহাইন, হা/১৮৪০; মুসনাদে বাযযার, হা/৫৩৩; মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা, হা/৩০১৭০।]
আর কষ্টের সময় বলতেন,
الْحَمْدُ ِللهِ عَلَى كُلِّ حَالٍ
‘যে কোন অবস্থাতেই আলস্নাহর জন্যই সকল প্রশংসা’। [ইবনে মাজাহ, হা/৩৮০৩; মুসাদরাকে হাকেম, হা/১৮৪০; মুসতারাক আলাস সহীহাইন, হা/১৮৪০; মুসনাদে বাযযার, হা/৫৩৩; মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা, হা/৩০১৭০।]
অপর দিকে রাসূলুলস্নাহ (সাঃ) আলস্নাহর প্রশংসা করাকে সর্বশ্রেষ্ট দু‘আ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। তিনি বলেন,
أَفْضَلُ الذِّكْرِ لَاۤ إِلٰهَ إِلاَّ الله ُوَأَفْضَلُ الدُّعَاءِ اَلْحَمْدُ لِلّٰهِ
শ্রেষ্ঠ যিকির হলো, ‘‘লা-ইলাহা ইলস্নালস্নাহ’’ এবং শ্রেষ্ঠ দু‘আ হলো ‘আলহামদুলিলস্নাহ’ বা সূরা ফাতিহা। [তিরমিযী, হা/৩৩৮৩; ইবনে মাজাহ, হা/৩৮০০; সুনানুল কুবরা নাসাঈ, হা/১০৫৯৯; মুসাদরাকে হাকেম, হা/১৮৩৪।]
اللهُ (আলস্নাহ) শব্দের বিশেস্নষণ
اَللهُ (আলস্নাহ) শব্দটি দ্বিবচন বা বহুবচন নেই। কোন ভাষাতেই এই নামের কোন প্রতিশব্দও নেই। এটি সারা বিশ্বের একমাত্র প্রতিপালক মহান আলস্নাহর সত্তাগত নাম। এছাড়াও তার আরো অনেক নাম রয়েছে, তবে সবগুলোই তার গুণবাচক নাম। আলস্নাহ তা‘আলার মধ্যে উক্ত গুণগুলো পরিপূর্ণভাবে বিদ্যমান আছে বিধায় তাঁকে সেসব গুণবাচক নামসমূহের মাধ্যমে ডাকা হয়।
অধিকাংশ আরবি ব্যকরণবিদের মতে الله (আলস্নাহ) শব্দটি مشتق (মুশতাক)। আর مشتق (মুশতাক) বলা হয় ঐ শব্দকে, যা অন্য কোন শব্দ থেকে বের হয়ে এসেছে। সেই হিসেবে الله (আলস্নাহ) শব্দটি إِلَاهٌ (ইলাহু) মাদ্দাহ হতে উদগত। প্রথমে এর পূর্বে اَلْ (আলিফ লাম) প্রবেশ করানোর হয়েছে, ফলে এর রূপ হয়েছে اَلْإِلَاهُ (আল-ইলাহ)। তারপর এটাকে হালকা করার জন্য দুই লামের মাঝখানের ‘হামযাহ’ ফেলে দেয়া হয়েছে, ফলে اَللهُ (আলস্নাহ)। আর উক্ত اَلْ (আলিফ লাম) সর্বদা আবশ্যিকভাবেই থাকবে কখনোই পৃথক করা যাবে না।
উলেস্নখ্য যে, الله শব্দটির কোন অর্থ না থাকলেও এর উৎপত্তিগত শব্দ إلٰهٌ এর কয়েকটি অর্থ রয়েছে। তবে সকল অর্থই আলস্নাহর দিকেই নিসবত করে। যেমন-
১. إلٰهٌ শব্দটির একটি অর্থ হচ্ছে, التَّحْيِيْرَ বা ব্যাকুল হওয়া। আলস্নাহকে ‘ইলাহ’ এজন্য বলা হয়েছে যে, সৃষ্টিকুল স্ব স্ব প্রয়োজনে হয়রান ও নিরাশ হয়ে তাঁর কাছেই উপনীত হয়।
২. إلٰهٌ শব্দটির আরেকটি অর্থ হচ্ছে, سَكَنَتْ বা প্রশামিত্ম লাভ করা। বান্দার অমত্মর আলস্নাহর যিকির ছাড়া প্রশামিত্ম লাভ করে না এবং তার পরিচয় ছাড়া স্থির হয় না। আর এজন্যও আলস্নাহকে اِلٰهٌ (ইলাহ) বলা হয়।
৩. إلٰهٌ শব্দটির আরেকটি অর্থ হচ্ছে, আশ্রয় গ্রহণ করা। যেহেতু বিপদের সময় আলস্নাহর কাছেই আশ্রয় গ্রহণ করা হয়, এ কারণেও আলস্নাহকে اِلٰهٌ (ইলাহ) বলা হয়।
৪. إلٰهٌ শব্দটির আরেকটি অর্থ হচ্ছে, উপাসনা করা। যেহেতু উপাসনা পাওয়ার একমাত্র হকদার হচ্ছে আলস্নাহ তা‘আলা, তাই তাকে إلٰهٌ বলা হয়।
اَللهُ (আলস্নাহ) শব্দের ভূল ব্যবহার
বর্তমান সমাজে আলস্নাহ শব্দটিকে বিভিন্নভাবে ভূল ব্যবহার করা হচ্ছে। যেমন-
১. কিছু কিছু লোক রয়েছে, যারা অন্যান্য ধর্মের সাথে সামঞ্জস্য রেখে আলস্নাহকে খোদা, ঈশ্বর, ভগবান, গড, উপরওয়ালা ইত্যাদি নামে সম্ভোধন করে থাকে। অথচ এগুলো আলস্নাহর সত্তাগত নাম তো নয়ই; বরং গুণবাচক নামও নয়। কেননা আলস্নাহ তা‘আলার সত্তাগত নাম একটাই; আর গুণবাচক নাম তো কুরআন ও হাদীসে বলেই দেয়া হয়েছে। তাছাড়া এসব নামের বৈশিষ্টের সাথে আলস্নাহর সাথে মিলে না। যেমন- আলস্নাহ শব্দের স্ত্রীলিঙ্গ নেই, অথচ এসব শব্দের স্ত্রীলিঙ্গ রয়েছে; আলস্নাহ শব্দের দ্বিবচন বা বহুবচন নেই, অথচ এসব শব্দের দ্বিবচন বা বহুবচন রয়েছে ইত্যাদি।
অতএব আলস্নাহকে কেবল আলস্নাহ ও তার গুনবাচক নামসমূহের মাধ্যমেই সম্বোধন করতে হবে- যদি অমুসলিমদের বানানো কিছু কিছু শব্দ তার দিকেই ইশারা করে। এ ক্ষেত্রে কোন ধরনের পরিবর্তন করা উচিত হবে না।
২. বর্তমানে অনেক মসজিদ, বাড়ী, গাড়ী, দোকান, গোইট ইত্যাদি বিভিন্ন জায়গায় الله অথবা محمد অথবা একপাশে الله এবং অন্য পাশে محمد লেখা পেস্নট ঝুলানো থাকে। আর এগুলো বরকত হাসিলের উদ্দেশ্যেই করা হয়ে থাকে। অথচ এগুলো নিঃসন্দেহে চরম বিদআত, এমনকি শিরকের সমতুল্য। কেননা এর মাধ্যমে আলস্নাহ ও মুহাম্মাদ (সাঃ) উভয়কে মর্যাদার দিক থেকে সমান গণ্য করা হয়। অথচ আলস্নাহর সাথে কাউকে সমমর্যাদাবান মনে করাটা স্পষ্ট শিরক।
رَبٌّ (রবব) শব্দটি صِفَةِ مُشَبَّهَةٌ এর ছিগা। এর অর্থ হচ্ছে- প্রতিপালক, মালিক, প্রভু, মনিব, লালন-পালনকারী ইত্যাদি। আবার এ শব্দটি تَرْبِيِةٌ অর্থেও ব্যবহৃত হয়। এর অর্থ হলো, কোন বস্ত্তকে পর্যায়ক্রমে পরিপূর্ণ করে তোলা। সুতরাং رَبٌّ (রবব) বলতে ঐ সত্তাকে বুঝানো হয়, যিনি কোন জিনিসকে তার মঙ্গলের দিকে দৃষ্টি রেখে পর্যায়ক্রমে উন্নতির চরম শিখরে পৌঁছে দেন।
رَبٌّ (রবব) শব্দটির حَقِيْقِىْ (হাকীকী) তথা মূল অর্থের দিকে লক্ষ্য করলে رَبٌّ (রবব) বলতে কেবল আলস্নাহকেই বুঝানো হয়। কেননা তিনিই হচ্ছে সারা পৃথিবীর একমাত্র রব এবং এটি হচ্ছে তার একটি গুণবাচক নাম। আর رَبٌّ (রবব) শব্দটির مَجَازِ অর্থের দিকে লক্ষ্য করলে বান্দার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হয়। যেমন - رَبُّ الْمَالِ (রাববুল মাল) তথা সম্পদের মালিক।
আলস্নাহর সকল গুণের মধ্যে এ গুণটিই সবচেয়ে গুরম্নত্বপূর্ণ। কেননা ‘সৃষ্টিকর্তা’ হিসেবে তাঁকে প্রায় সকল মানুষ স্বীকার করলেও ‘পালনকর্তা’ হিসাবে অনেকে স্বীকার করতে চায় না। তাই মুমিন হওয়ার আবশ্যিক শর্ত হলো আলস্নাহকে رَبٌّ (রবব) হিসাবে স্বীকার করা।
বর্তমানে رَبٌّ (রবব) শব্দটিকে বিভিন্ন ভাবে অনুবাদ করা হয়। যেমন- পালনকর্তা, সৃষ্টিকর্তা, প্রভু ইত্যাদি। তবে প্রকৃতপক্ষে رَبٌّ (রবব) শব্দটি এত ব্যাপক অর্থবোধক যে, কোন একটি অথবা দুটি শব্দ দ্বারা এর প্রকৃত তাৎপর্য বোঝানো সম্ভব নয়। কারণ এর অর্থ একই সাথে মালিক, সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী, সযত্নে পালনকর্তা, অনুগ্রহদাতা, রক্ষক, পথ প্রদর্শক ইত্যাদিও হয়। সুতরাং رَبٌّ (রবব) এর প্রকৃত অর্থ বুঝতে হলে উপরোক্ত সবকটি অর্থের দিকে নযর দিতে হবে। কেননা আলস্নাহ তা‘আলা উলেস্নখিত সকল অর্থেই তিনি আমাদের রব। তিনি আমাদেরকে কেবল সৃষ্টি করে এবং লালন-পালন করেই ক্ষামত্ম হননি। বরং তিনি আমাদেরকে পথ প্রদর্শনও করেন।
رَبٌّ (রবব) শব্দটির حَقِيْقِىْ (হাকীকী) তথা মূল অর্থের দিকে লক্ষ্য করলে رَبٌّ (রবব) বলতে কেবল আলস্নাহকেই বুঝানো হয়। কেননা তিনিই হচ্ছে সারা পৃথিবীর একমাত্র রব এবং এটি হচ্ছে তার একটি গুণবাচক নাম। আর رَبٌّ (রবব) শব্দটির مَجَازِ অর্থের দিকে লক্ষ্য করলে বান্দার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হয়। যেমন - رَبُّ الْمَالِ (রাববুল মাল) তথা সম্পদের মালিক।
আলস্নাহর সকল গুণের মধ্যে এ গুণটিই সবচেয়ে গুরম্নত্বপূর্ণ। কেননা ‘সৃষ্টিকর্তা’ হিসেবে তাঁকে প্রায় সকল মানুষ স্বীকার করলেও ‘পালনকর্তা’ হিসাবে অনেকে স্বীকার করতে চায় না। তাই মুমিন হওয়ার আবশ্যিক শর্ত হলো আলস্নাহকে رَبٌّ (রবব) হিসাবে স্বীকার করা।
বর্তমানে رَبٌّ (রবব) শব্দটিকে বিভিন্ন ভাবে অনুবাদ করা হয়। যেমন- পালনকর্তা, সৃষ্টিকর্তা, প্রভু ইত্যাদি। তবে প্রকৃতপক্ষে رَبٌّ (রবব) শব্দটি এত ব্যাপক অর্থবোধক যে, কোন একটি অথবা দুটি শব্দ দ্বারা এর প্রকৃত তাৎপর্য বোঝানো সম্ভব নয়। কারণ এর অর্থ একই সাথে মালিক, সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী, সযত্নে পালনকর্তা, অনুগ্রহদাতা, রক্ষক, পথ প্রদর্শক ইত্যাদিও হয়। সুতরাং رَبٌّ (রবব) এর প্রকৃত অর্থ বুঝতে হলে উপরোক্ত সবকটি অর্থের দিকে নযর দিতে হবে। কেননা আলস্নাহ তা‘আলা উলেস্নখিত সকল অর্থেই তিনি আমাদের রব। তিনি আমাদেরকে কেবল সৃষ্টি করে এবং লালন-পালন করেই ক্ষামত্ম হননি। বরং তিনি আমাদেরকে পথ প্রদর্শনও করেন।
الْعَالَمِيْنَ (‘আলামীন) শব্দটি عَالَمٌ (‘আলামুন) শব্দের বহুবচন, যার অর্থ হচ্ছে জগতসমূহ। আর এটি عَلَامَةٌ (‘আলামাতুন) শব্দ থেকে নির্গত হয়, যার অর্থ হচ্ছে- আলামত বা চিহ্ন। যেহতেু পৃথিবীর সকল জিনিস আলস্নাহর অসিত্মত্বের উপর একেকটি নিদর্শন স্বরূপ, তাই এই সারা বিশ্বকে الْعَالَمِيْنَ (‘আলামীন) বলা হয়।
অত্র আয়াতে الْعَالَمِيْنَ (‘আলামীন) শব্দ দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে, তিনি কেবল কোন বিশেষ জিনিস বা প্রাণী বা দেশের মালিক নন। বরং এই পৃথিবীতে প্রকাশ্য অথবা গোপন যা কিছু আছে তিনি সবকিছুর মালিক, প্রতিপালক ও ব্যবস্থাপক।
সূরা ফাতিহার প্রথম আয়াতে আলস্নাহর প্রশংসিত হওয়া ও তাঁর একক পালনকর্তা হওয়ার মধ্য দিয়ে তাঁর একত্ববাদ বা তাওহীদে রম্নবূবিয়্যাত সুন্দরভাবে ফুটে উঠেছে। সাথে সাথে رَبُّ الْعَالَمِيْنَ বলার মাধ্যমে সৃষ্টিজগতের সবকিছুর উপরে আলস্নাহর রম্নবূবিয়্যাতের ব্যাপকতা বর্ণনা করা হয়েছে।
অত্র আয়াতে الْعَالَمِيْنَ (‘আলামীন) শব্দ দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে, তিনি কেবল কোন বিশেষ জিনিস বা প্রাণী বা দেশের মালিক নন। বরং এই পৃথিবীতে প্রকাশ্য অথবা গোপন যা কিছু আছে তিনি সবকিছুর মালিক, প্রতিপালক ও ব্যবস্থাপক।
সূরা ফাতিহার প্রথম আয়াতে আলস্নাহর প্রশংসিত হওয়া ও তাঁর একক পালনকর্তা হওয়ার মধ্য দিয়ে তাঁর একত্ববাদ বা তাওহীদে রম্নবূবিয়্যাত সুন্দরভাবে ফুটে উঠেছে। সাথে সাথে رَبُّ الْعَالَمِيْنَ বলার মাধ্যমে সৃষ্টিজগতের সবকিছুর উপরে আলস্নাহর রম্নবূবিয়্যাতের ব্যাপকতা বর্ণনা করা হয়েছে।
اَلرَّحْمٰنِ (আর-রহমান) ও الرَّحِيْمِ (আর-রাহীম) এগুলো হচ্ছে আলস্নাহর বিশেষ দুটি গুণ। এ দুটি গুণের মাধ্যমে আলস্নাহ তা‘আলা সৃষ্টিজগতের উপর অনুগ্রহ প্রদর্শন করে থাকেন।
اَلرَّحْمٰنِ (আর-রহমান) গুণের মাধ্যমে আলস্নাহ তা‘আলা সাধারণভাবে সকল সৃষ্টির উপর অনুগ্রহ প্রদর্শন করে থাকেন। আর তা দুনিয়াতেও হতে পারে, আবার আখিরাতেও হতে পারে। আলস্নাহ তা’আলা দুনিয়াতে আমাদেরকে কীভাবে অনুগ্রহ করছেন, তা আমরা সহজেই অনুধাবন করতে পারি। হাদীসে এসেছে,
عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ إِنَّ لِلّٰهِ مِائَةَ رَحْمَةً قَسَمَ مِنْهَا رَحْمَةً بَيْنَ جَمِيْعِ الْخَلَائِقِ فَبِهَا يَتَرَاحَمُوْنَ وَبِهَا يَتَعَاطَفُوْنَ وَبِهَا تَعَطَّفُ الْوَحْشِ عَلٰى أَوْلَادِهَا وَأٰخِرُ تِسْعَةِ وَّتِسْعِيْنَ رَحْمَةً يَرْحَمُ بِهَا عِبَادَه يَوْمَ الْقِيَامَةِ
আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী ﷺ বলেন, নিশ্চয় আলস্নাহ তা‘আলা কাছে ১০০টি রহমত রয়েছে। অতঃপর তিনি এর থেকে একটি ভাগ সমসত্মসৃষ্টিজীবের জন্য ভাগ করে দিয়েছেন। এ কারণেই তারা একে অপরকে দয়া, নম্রতা প্রদর্শন করে থাকে। আর এ কারণেই হিংস্র জন্তুও তার বাচ্চাদেরকে দয়া প্রদর্শন করে থাকে। আর অবশিষ্ট ৯৯ ভাগ রহমত তিনি কিয়ামতের দিন তার বান্দাদের সামনে প্রদর্শন করবেন। [ইবনে মাজাহ, হা/৪২৮৩; মুসনাদে আবদুল্লাহ ইবনে মুবারক, হা/৩৫।]
আর এ কারণেই দুনিয়াতে কাফির, মুশরিক সহ সকলেই সমান হারে আলস্নাহর অনুগ্রহ প্রাপ্ত হচ্ছে। অন্যথায় যারা আলস্নাহর অবাধ্য হতো আলস্নাহ তা‘আলা তাদেরকে কোন কিছুই প্রদান করতেন না। আর এটাই স্বাভাবিক বিবেকের দাবি।
অতএব দুনিয়াতে আলস্নাহ তা‘আলার এসব অনুগ্রহ এত ব্যাপক যে, এগুলো গণনা করে শেষ করার মতো নয়। আলস্নাহ তা‘আলা বলেন,
﴿وَإِنْ تَعُدُّوا نِعْمَةَ اللهِ لَا تُحْصُوهَا إِنَّ اللَّهَ لَغَفُورٌ رَحِيمٌ﴾
আর যদি তোমরা আলস্নাহর নিয়ামত গণনা করতে শুরম্ন করো তাহলে তা গুনে শেষ করতে পারবে না। নিশ্চয় আলস্নাহ পরম ক্ষমাশীল, অসীম দয়ালু। (সূরা নাহ্ল- ১৮)
অপর আয়াতে বলেন,
﴿قُلْ لَّوْ كَانَ الْبَحْرُ مِدَادًا لِّكَلِمَاتِ رَبِّيْ لَنَفِدَ الْبَحْرُ قَبْلَ اَنْ تَنْفَدَ كَلِمَاتُ رَبِّيْ وَلَوْ جِئْنَا بِمِثْلِهٖ مَدَدًا﴾
বলো, আমার প্রতিপালকের কথা লিপিবদ্ধ করার জন্য (গোটা) সমুদ্রও যদি কালিতে পরিণত হয়, তবুও আমার প্রতিপালকের কথা শেষ হওয়ার পূর্বেই সমুদ্র নিঃশেষ হয়ে যাবে- যদিও আমরা এর সাহায্যার্থে অনুরূপ আরো সমুদ্র নিয়ে আসি। (সূরা কাহফ- ১০৯)
তাছাড়া হাদীসে এসেছে,
عَنْ أَبِى هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ - - قَالَ : لَوْ يَعْلَمُ الْمُؤْمِنُ مَا عِنْدَ اللهِ مِنَ الْعُقُوبَةِ مَا طَمِعَ بِجَنَّتِهِ أَحَدٌ، وَلَوْ يَعْلَمُ الْكَافِرُ مَا عِنْدَ اللهِ مِنَ الرَّحْمَةِ مَا قَنِطَ مِنْ جَنَّتِهِ أَحَدٌ
যদি মুমিন ব্যক্তি জানতো আলস্নাহর নিকট কত কঠোরতম শাসিত্মরয়েছে, তাহলে কেউই জান্নাতের আকাঙ্খী হতো না। অনুরূপভাবে যদি কোন কাফির জানতো আলস্নাহর নিকট কি অপার অনুগ্রহ রয়েছে, তাহলে কেউই জান্নাত হতে নিরাশ হতো না। [সহীহ মুসলিম, হা/২৭৫৫; তিরমিযী, হা/৩৫৪২; সহীহ ইবনে হিববান, হা/৪৩২; মুসনাদে আহমাদ, হা/৯১৭৪; মিশকাত, হা/২৩৬৭।]
তবে আখিরাতে আলস্নাহ তা‘আলা কেবল কেবল তাদেরকেই অনুগ্রহ করবেন, যারা দুনিয়াতে তাকে রব বলে স্বীকার করত এবং তার হুকুম মেনে চলত। আর এ ক্ষেত্রে তারা সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাত। অতঃপর আলস্নাহ তা‘আলা তাদেরকে জাহান্নামের আযাব থেকে রক্ষা করবেন এবং জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। আর সেদিন আলস্নাহর অনুগ্রগ ছাড়া কেউ জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবেনা। হাদীসে এসেছে,
عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا عَنِ النَّبِيِّ - صَلَّى الله عَلَيْهِ وسَلَّمَ- أَنَّهُ قَالَ : ( سَدِّدُوْا وَقَارِبُوْا وَأَبْشِرُوْا، فَإِنَّهُ لَا يُدْخِلُ أَحَداً الْجَنّة َعَمَلُه، قَالُوْا : وَلَا أَنْتَ يَا رَسُوْلَ اللهِ؟ قَالَ : وَلَا أَنَا إِلَّا أَنْ يَتَغَمَّدَنِيَ اللهُ بِمَغْفِرَةٍ وَرَحْمَةٍ
আয়েশা রা: থেকে বার্ণত, নবী বলেন, মধ্যমপন্থা অবলম্বন করো, আলস্নাহর নৈকট্য লাভের চেষ্টা করো এবং সুসংবাদ গ্রহন করো। কেননা নিশ্চয় কোন বান্দা তার নিজের আমল দিয়ে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবেনা। সাহাবীরা জিজ্ঞেস করলেন, আপনিও না হে আলস্নাহর রাসূল? তিঁনি বললেন না আমিও না । তবে আলস্নাহ তাঁর মাগফিরাত ও রহমত দ্বারা আমাকে বেষ্টন কওে রেখেছেন। [সহীহ বুখারী, হা/৬৪৬৭; মুসনাদে আহমাদ, হা/১০০১১; বায়হাকী হা/৪৯২৮; ইবনে মাজাহ, হা/৪২০১; সুনানে দারেমী, হা/২৭৮৯; শুআবুল ঈমান, হা/৭৬৬ সহীহ মুসলিম, হা/৭২৮৯-৯৫]
اَلرَّحْمٰنِ (আর-রহমান) গুণের মাধ্যমে আলস্নাহ তা‘আলা সাধারণভাবে সকল সৃষ্টির উপর অনুগ্রহ প্রদর্শন করে থাকেন। আর তা দুনিয়াতেও হতে পারে, আবার আখিরাতেও হতে পারে। আলস্নাহ তা’আলা দুনিয়াতে আমাদেরকে কীভাবে অনুগ্রহ করছেন, তা আমরা সহজেই অনুধাবন করতে পারি। হাদীসে এসেছে,
عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ إِنَّ لِلّٰهِ مِائَةَ رَحْمَةً قَسَمَ مِنْهَا رَحْمَةً بَيْنَ جَمِيْعِ الْخَلَائِقِ فَبِهَا يَتَرَاحَمُوْنَ وَبِهَا يَتَعَاطَفُوْنَ وَبِهَا تَعَطَّفُ الْوَحْشِ عَلٰى أَوْلَادِهَا وَأٰخِرُ تِسْعَةِ وَّتِسْعِيْنَ رَحْمَةً يَرْحَمُ بِهَا عِبَادَه يَوْمَ الْقِيَامَةِ
আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী ﷺ বলেন, নিশ্চয় আলস্নাহ তা‘আলা কাছে ১০০টি রহমত রয়েছে। অতঃপর তিনি এর থেকে একটি ভাগ সমসত্মসৃষ্টিজীবের জন্য ভাগ করে দিয়েছেন। এ কারণেই তারা একে অপরকে দয়া, নম্রতা প্রদর্শন করে থাকে। আর এ কারণেই হিংস্র জন্তুও তার বাচ্চাদেরকে দয়া প্রদর্শন করে থাকে। আর অবশিষ্ট ৯৯ ভাগ রহমত তিনি কিয়ামতের দিন তার বান্দাদের সামনে প্রদর্শন করবেন। [ইবনে মাজাহ, হা/৪২৮৩; মুসনাদে আবদুল্লাহ ইবনে মুবারক, হা/৩৫।]
আর এ কারণেই দুনিয়াতে কাফির, মুশরিক সহ সকলেই সমান হারে আলস্নাহর অনুগ্রহ প্রাপ্ত হচ্ছে। অন্যথায় যারা আলস্নাহর অবাধ্য হতো আলস্নাহ তা‘আলা তাদেরকে কোন কিছুই প্রদান করতেন না। আর এটাই স্বাভাবিক বিবেকের দাবি।
অতএব দুনিয়াতে আলস্নাহ তা‘আলার এসব অনুগ্রহ এত ব্যাপক যে, এগুলো গণনা করে শেষ করার মতো নয়। আলস্নাহ তা‘আলা বলেন,
﴿وَإِنْ تَعُدُّوا نِعْمَةَ اللهِ لَا تُحْصُوهَا إِنَّ اللَّهَ لَغَفُورٌ رَحِيمٌ﴾
আর যদি তোমরা আলস্নাহর নিয়ামত গণনা করতে শুরম্ন করো তাহলে তা গুনে শেষ করতে পারবে না। নিশ্চয় আলস্নাহ পরম ক্ষমাশীল, অসীম দয়ালু। (সূরা নাহ্ল- ১৮)
অপর আয়াতে বলেন,
﴿قُلْ لَّوْ كَانَ الْبَحْرُ مِدَادًا لِّكَلِمَاتِ رَبِّيْ لَنَفِدَ الْبَحْرُ قَبْلَ اَنْ تَنْفَدَ كَلِمَاتُ رَبِّيْ وَلَوْ جِئْنَا بِمِثْلِهٖ مَدَدًا﴾
বলো, আমার প্রতিপালকের কথা লিপিবদ্ধ করার জন্য (গোটা) সমুদ্রও যদি কালিতে পরিণত হয়, তবুও আমার প্রতিপালকের কথা শেষ হওয়ার পূর্বেই সমুদ্র নিঃশেষ হয়ে যাবে- যদিও আমরা এর সাহায্যার্থে অনুরূপ আরো সমুদ্র নিয়ে আসি। (সূরা কাহফ- ১০৯)
তাছাড়া হাদীসে এসেছে,
عَنْ أَبِى هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ - - قَالَ : لَوْ يَعْلَمُ الْمُؤْمِنُ مَا عِنْدَ اللهِ مِنَ الْعُقُوبَةِ مَا طَمِعَ بِجَنَّتِهِ أَحَدٌ، وَلَوْ يَعْلَمُ الْكَافِرُ مَا عِنْدَ اللهِ مِنَ الرَّحْمَةِ مَا قَنِطَ مِنْ جَنَّتِهِ أَحَدٌ
যদি মুমিন ব্যক্তি জানতো আলস্নাহর নিকট কত কঠোরতম শাসিত্মরয়েছে, তাহলে কেউই জান্নাতের আকাঙ্খী হতো না। অনুরূপভাবে যদি কোন কাফির জানতো আলস্নাহর নিকট কি অপার অনুগ্রহ রয়েছে, তাহলে কেউই জান্নাত হতে নিরাশ হতো না। [সহীহ মুসলিম, হা/২৭৫৫; তিরমিযী, হা/৩৫৪২; সহীহ ইবনে হিববান, হা/৪৩২; মুসনাদে আহমাদ, হা/৯১৭৪; মিশকাত, হা/২৩৬৭।]
তবে আখিরাতে আলস্নাহ তা‘আলা কেবল কেবল তাদেরকেই অনুগ্রহ করবেন, যারা দুনিয়াতে তাকে রব বলে স্বীকার করত এবং তার হুকুম মেনে চলত। আর এ ক্ষেত্রে তারা সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাত। অতঃপর আলস্নাহ তা‘আলা তাদেরকে জাহান্নামের আযাব থেকে রক্ষা করবেন এবং জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। আর সেদিন আলস্নাহর অনুগ্রগ ছাড়া কেউ জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবেনা। হাদীসে এসেছে,
عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا عَنِ النَّبِيِّ - صَلَّى الله عَلَيْهِ وسَلَّمَ- أَنَّهُ قَالَ : ( سَدِّدُوْا وَقَارِبُوْا وَأَبْشِرُوْا، فَإِنَّهُ لَا يُدْخِلُ أَحَداً الْجَنّة َعَمَلُه، قَالُوْا : وَلَا أَنْتَ يَا رَسُوْلَ اللهِ؟ قَالَ : وَلَا أَنَا إِلَّا أَنْ يَتَغَمَّدَنِيَ اللهُ بِمَغْفِرَةٍ وَرَحْمَةٍ
আয়েশা রা: থেকে বার্ণত, নবী বলেন, মধ্যমপন্থা অবলম্বন করো, আলস্নাহর নৈকট্য লাভের চেষ্টা করো এবং সুসংবাদ গ্রহন করো। কেননা নিশ্চয় কোন বান্দা তার নিজের আমল দিয়ে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবেনা। সাহাবীরা জিজ্ঞেস করলেন, আপনিও না হে আলস্নাহর রাসূল? তিঁনি বললেন না আমিও না । তবে আলস্নাহ তাঁর মাগফিরাত ও রহমত দ্বারা আমাকে বেষ্টন কওে রেখেছেন। [সহীহ বুখারী, হা/৬৪৬৭; মুসনাদে আহমাদ, হা/১০০১১; বায়হাকী হা/৪৯২৮; ইবনে মাজাহ, হা/৪২০১; সুনানে দারেমী, হা/২৭৮৯; শুআবুল ঈমান, হা/৭৬৬ সহীহ মুসলিম, হা/৭২৮৯-৯৫]
مَالِكِ শব্দটি অর্থ হচ্ছে, অধিপতি, কর্তা, শাসনকর্তা ইত্যাদি। অত্র আয়াতে مَالِكِ বলতে কেবল আলস্নাহকে বুঝানো হয়েছে। তবে সূরা নাসে مَلِكِ শব্দও ব্যবহার করা হয়েছে। কিন্তু مَالِكِ শব্দটি مَلِكِ শব্দ থেকে অধিকতর ব্যাপক। কেননা مَلِكِ النَّاسِ বলে কেবল ‘মানুষের অধিপতি’ বলা হয়েছে। কিন্তু مَالِكِ বলে এখানে সৃষ্টিকুলের অধিপতি বুঝানো হয়েছে।
دِيْنٌ (দ্বীন) শব্দটি একবচন; এর বহুবচন হচ্ছে أدْيَانٌ (আদইয়ান)। যার অর্থ হলো- প্রতিদান, জীবন ব্যবস্থা, আনুগত্য ইত্যাদি।
সুতরাং এখানে يَوْمِ الدِّيْنِ এর অর্থ হচ্ছে, প্রতিদানের দিন। যেমন বলা হয়ে থাকে, كَمَا تَدِيْنُ تُدَانُ তথা যেমন কর্ম তেমন ফল। আবার আরবিতে يَوْمٌ (ইয়াওমুন) শব্দটির বেশ কিছু অর্থ হয়। যেমন- দিন, যুগ, পর্যায়, লম্বা সময় ইত্যাদি। তবে বিচার দিন আমাদের একটি দিনের সমান নয়; বরং লম্বা দিন অথবা লম্বা সময়। আর এখানে যে দিনটির কথা বুঝানো হয়েছে সেটি হবে বর্তমানের দিনের তুলনায় ৫০ হাজার বছরের সমান। আলস্নাহ তা‘আলা বলেন,
تَعْرُجُ الْمَلَائِكَةُ وَ الرُّوْحُ اِلَيْهِ فِيْ يَوْمٍ كَانَ مِقْدَارُهٗۤ خَمْسِيْنَ اَلْفَ سَنَةٍ
ফেরেশতা এবং রম্নহ (জিব্রাঈল আ) তাঁর দিকে ঊধ্বগামী হয় এমন একদিন যার পরিমাণ হবে পঞ্চাশ হাজার বছরের সমান। (সূরা মা‘আরিজ- ৪)
এ দুনিয়াতে মানুষ যা কিছু করে তার সঠিক বিচার ও পরিপূর্ণ প্রতিদান পাওয়ার জন্য আমাদের সামনে একটি দিন আসছে। এর নাম হলো বিচারের দিন। সে দিনের একমাত্র বিচারক হবেন আলস্নাহ তা‘আলা। আর তিনি কারো প্রতি যুলুম করবেন না। যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকর্ম করেছে, তাদেরকে তিনি নিয়ামতে ভরা জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। আর যারা পাপকাজ করে অপরাধী হয়েছে, তাদেরকে তিনি জাহান্নামের জ্বলমত্ম অগ্নিতে নিক্ষেপ করবেন। সে দিনের সকল ক্ষমতা একমাত্র তাঁরই হাতে থাকবে। দুনিয়ার কোন রাজা-বাদশার কর্তৃত্ব সেখানে থাকবে না।
এই আয়াতের মাধ্যমে আলস্নাহ স্বীয় বান্দাদেরকে একথা বুঝিয়ে দিয়েছেন যে, সৃষ্টি জগতের আদি হতে অমত্ম পর্যমত্ম সকল কিছুর চিরমত্মন মালিকানা তাঁরই হাতে। শাসক যেমন অধীনসত্মদের নিয়োগ দেন ও তাদেরকে শাসকের নিকট দায়বদ্ধ থাকতে হয়, তেমনিভাবে দুনিয়ার ক্ষণস্থায়ী জীবনে বান্দাকে তিনি বিশ্বপরিচালনার বিভিন্ন পর্যায়ে সাময়িকভাবে দায়িত্ব প্রদান করেছেন। বান্দার কর্মজীবনের ছোট-বড় সবকিছুই আলস্নাহর দৃষ্টির সামনে রয়েছে এবং কিয়ামতের দিন সবকিছুর চূড়ামত্ম হিসাব তিনিই গ্রহণ করবেন ও সে অনুযায়ী প্রতিদান দিবেন। আলস্নাহ তা‘আলা বলেন,
﴿فَمَنْ يَّعْمَلْ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ خَيْرًا يَّرَهٗ – وَمَنْ يَّعْمَلْ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ شَرًّا يَّرَهٗ﴾
যে ব্যক্তি অণু পরিমাণ সৎকর্ম করবে, সে তা দেখতে পাবে এবং কেউ যদি অণু পরিমাণ অসৎকর্ম করে, তাও সে দেখতে পাবে। (সূরা যিলযাল- ৭, ৮)
অপর আয়াতে বলা হয়েছে,
﴿يَوْمَئِذٍ يُّوَفِّيْهِمُ اللهُ دِيْنَهُمُ الْحَقَّ﴾
যেদিন আলস্নাহ তাদেরকে প্রতিদান পরিপূর্ণরূপে দান করবেন। (সূরা নূর- ২৫)
সেদিন সমসত্মকর্তৃত্ব হবে একমাত্র আলস্নাহর। তার অনুমতি ব্যতীত কেউ কারো পক্ষে সুপারিশও করতে পারবে না। কুরআন মাজীদে এসেছে,
مَنْ ذَا الَّذِي يَشْفَعُ عِنْدَهُ إِلَّا بِإِذْنِهِ
তাঁর হুকুম ব্যতীত এমন কে আছে, যে তাঁর নিকট সুপারিশ করতে পারে।
(সূরা বাকারা- ২৫৫)
আলস্নাহ তা‘আলা এখানে খুব অল্প কিছু শব্দ ব্যবহার করে আমাদেরকে বলে দিয়েছেন যে, যদিও তাঁর করম্নণা অসীম; কিন্তু তারপরেও আমাদেরকে আমাদের কাজের হিসাব দিতে হবে এবং হিসাবগ্রহণকারী হবেন স্বয়ং আলস্নাহ তা‘আলা। কেউ আমাদেরকে সেদিন তাঁর বিচার থেকে রক্ষা করতে পারবে না এবং কেউ কোনো কাজে আসবে না। এমনকি পিতা পুত্রের কোন কাজে আসবে না তেমনিভাবে পুত্র পিতার কোন উপকারে আসবে না। আলস্নাহ তা‘আলা বলেন,
﴿يَاۤ اَيُّهَا النَّاسُ اتَّقُوْا رَبَّكُمْ وَاخْشَوْا يَوْمًا لَّا يَجْزِيْ وَالِدٌ عَنْ وَّلَدِهٖؗ وَلَا مَوْلُوْدٌ هُوَ جَازٍ عَنْ وَّالِدِهٖ شَيْئًا اِنَّ وَعْدَ اللهِ حَقٌّ﴾
‘‘হে মানুষ! তোমরা ভয় করো তোমাদের প্রতিপালককে এবং সেদিনকে, যেদিন পিতা সমত্মানের কোন উপকারে আসবে না এবং সমত্মানও পিতার কোন উপকারে আসবে না, নিশ্চয় আলস্নাহর ওয়াদা সত্য’’। (সূরা লুক্বমান- ৩৩)
সেই দিন সকলেই নিজ নিজ আত্মার কি হবে সেই বিষয়ে চিমিত্মত থাকবে। মানুষ নিজের ভাই, পিতা-মাতা, স্ত্রী-সমত্মান থেকে পলায়ন করবে। আলস্নাহ তা‘আলা বলেন,
﴿فَاِذَا جَآءَتِ الصَّآخَّةُ يَوْمَ يَفِرُّ الْمَرْءُ مِنْ اَخِيْهِ – وَاُمِّهٖ وَاَبِيْهِ – وَصَاحِبَتِهٖ وَبَنِيْهِ﴾
যেদিন ঐ বিকট ধ্বনি এসে পড়বে; সেদিন মানুষ নিজের ভাই হতে পলায়ন করবে এবং তার মাতা, পিতা, স্ত্রী ও সমত্মান হতেও (পলায়ন করবে)। (সূরা আবাসা : ৩৩-৩৬)
সুতরাং এখানে يَوْمِ الدِّيْنِ এর অর্থ হচ্ছে, প্রতিদানের দিন। যেমন বলা হয়ে থাকে, كَمَا تَدِيْنُ تُدَانُ তথা যেমন কর্ম তেমন ফল। আবার আরবিতে يَوْمٌ (ইয়াওমুন) শব্দটির বেশ কিছু অর্থ হয়। যেমন- দিন, যুগ, পর্যায়, লম্বা সময় ইত্যাদি। তবে বিচার দিন আমাদের একটি দিনের সমান নয়; বরং লম্বা দিন অথবা লম্বা সময়। আর এখানে যে দিনটির কথা বুঝানো হয়েছে সেটি হবে বর্তমানের দিনের তুলনায় ৫০ হাজার বছরের সমান। আলস্নাহ তা‘আলা বলেন,
تَعْرُجُ الْمَلَائِكَةُ وَ الرُّوْحُ اِلَيْهِ فِيْ يَوْمٍ كَانَ مِقْدَارُهٗۤ خَمْسِيْنَ اَلْفَ سَنَةٍ
ফেরেশতা এবং রম্নহ (জিব্রাঈল আ) তাঁর দিকে ঊধ্বগামী হয় এমন একদিন যার পরিমাণ হবে পঞ্চাশ হাজার বছরের সমান। (সূরা মা‘আরিজ- ৪)
এ দুনিয়াতে মানুষ যা কিছু করে তার সঠিক বিচার ও পরিপূর্ণ প্রতিদান পাওয়ার জন্য আমাদের সামনে একটি দিন আসছে। এর নাম হলো বিচারের দিন। সে দিনের একমাত্র বিচারক হবেন আলস্নাহ তা‘আলা। আর তিনি কারো প্রতি যুলুম করবেন না। যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকর্ম করেছে, তাদেরকে তিনি নিয়ামতে ভরা জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। আর যারা পাপকাজ করে অপরাধী হয়েছে, তাদেরকে তিনি জাহান্নামের জ্বলমত্ম অগ্নিতে নিক্ষেপ করবেন। সে দিনের সকল ক্ষমতা একমাত্র তাঁরই হাতে থাকবে। দুনিয়ার কোন রাজা-বাদশার কর্তৃত্ব সেখানে থাকবে না।
এই আয়াতের মাধ্যমে আলস্নাহ স্বীয় বান্দাদেরকে একথা বুঝিয়ে দিয়েছেন যে, সৃষ্টি জগতের আদি হতে অমত্ম পর্যমত্ম সকল কিছুর চিরমত্মন মালিকানা তাঁরই হাতে। শাসক যেমন অধীনসত্মদের নিয়োগ দেন ও তাদেরকে শাসকের নিকট দায়বদ্ধ থাকতে হয়, তেমনিভাবে দুনিয়ার ক্ষণস্থায়ী জীবনে বান্দাকে তিনি বিশ্বপরিচালনার বিভিন্ন পর্যায়ে সাময়িকভাবে দায়িত্ব প্রদান করেছেন। বান্দার কর্মজীবনের ছোট-বড় সবকিছুই আলস্নাহর দৃষ্টির সামনে রয়েছে এবং কিয়ামতের দিন সবকিছুর চূড়ামত্ম হিসাব তিনিই গ্রহণ করবেন ও সে অনুযায়ী প্রতিদান দিবেন। আলস্নাহ তা‘আলা বলেন,
﴿فَمَنْ يَّعْمَلْ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ خَيْرًا يَّرَهٗ – وَمَنْ يَّعْمَلْ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ شَرًّا يَّرَهٗ﴾
যে ব্যক্তি অণু পরিমাণ সৎকর্ম করবে, সে তা দেখতে পাবে এবং কেউ যদি অণু পরিমাণ অসৎকর্ম করে, তাও সে দেখতে পাবে। (সূরা যিলযাল- ৭, ৮)
অপর আয়াতে বলা হয়েছে,
﴿يَوْمَئِذٍ يُّوَفِّيْهِمُ اللهُ دِيْنَهُمُ الْحَقَّ﴾
যেদিন আলস্নাহ তাদেরকে প্রতিদান পরিপূর্ণরূপে দান করবেন। (সূরা নূর- ২৫)
সেদিন সমসত্মকর্তৃত্ব হবে একমাত্র আলস্নাহর। তার অনুমতি ব্যতীত কেউ কারো পক্ষে সুপারিশও করতে পারবে না। কুরআন মাজীদে এসেছে,
مَنْ ذَا الَّذِي يَشْفَعُ عِنْدَهُ إِلَّا بِإِذْنِهِ
তাঁর হুকুম ব্যতীত এমন কে আছে, যে তাঁর নিকট সুপারিশ করতে পারে।
(সূরা বাকারা- ২৫৫)
আলস্নাহ তা‘আলা এখানে খুব অল্প কিছু শব্দ ব্যবহার করে আমাদেরকে বলে দিয়েছেন যে, যদিও তাঁর করম্নণা অসীম; কিন্তু তারপরেও আমাদেরকে আমাদের কাজের হিসাব দিতে হবে এবং হিসাবগ্রহণকারী হবেন স্বয়ং আলস্নাহ তা‘আলা। কেউ আমাদেরকে সেদিন তাঁর বিচার থেকে রক্ষা করতে পারবে না এবং কেউ কোনো কাজে আসবে না। এমনকি পিতা পুত্রের কোন কাজে আসবে না তেমনিভাবে পুত্র পিতার কোন উপকারে আসবে না। আলস্নাহ তা‘আলা বলেন,
﴿يَاۤ اَيُّهَا النَّاسُ اتَّقُوْا رَبَّكُمْ وَاخْشَوْا يَوْمًا لَّا يَجْزِيْ وَالِدٌ عَنْ وَّلَدِهٖؗ وَلَا مَوْلُوْدٌ هُوَ جَازٍ عَنْ وَّالِدِهٖ شَيْئًا اِنَّ وَعْدَ اللهِ حَقٌّ﴾
‘‘হে মানুষ! তোমরা ভয় করো তোমাদের প্রতিপালককে এবং সেদিনকে, যেদিন পিতা সমত্মানের কোন উপকারে আসবে না এবং সমত্মানও পিতার কোন উপকারে আসবে না, নিশ্চয় আলস্নাহর ওয়াদা সত্য’’। (সূরা লুক্বমান- ৩৩)
সেই দিন সকলেই নিজ নিজ আত্মার কি হবে সেই বিষয়ে চিমিত্মত থাকবে। মানুষ নিজের ভাই, পিতা-মাতা, স্ত্রী-সমত্মান থেকে পলায়ন করবে। আলস্নাহ তা‘আলা বলেন,
﴿فَاِذَا جَآءَتِ الصَّآخَّةُ يَوْمَ يَفِرُّ الْمَرْءُ مِنْ اَخِيْهِ – وَاُمِّهٖ وَاَبِيْهِ – وَصَاحِبَتِهٖ وَبَنِيْهِ﴾
যেদিন ঐ বিকট ধ্বনি এসে পড়বে; সেদিন মানুষ নিজের ভাই হতে পলায়ন করবে এবং তার মাতা, পিতা, স্ত্রী ও সমত্মান হতেও (পলায়ন করবে)। (সূরা আবাসা : ৩৩-৩৬)
إِيَّاكَ نَعْبُدُ وَإِيَّاكَ نَسْتَعِيْنُ
ইয়্যাকা না‘বুদু ওয়া ইয়্যাকা নাস্তা‘ঈন।
‘আমরা কেবলমাত্র তোমারই ইবাদত করি এবং কেবলমাত্র তোমারই সাহায্য প্রার্থনা করি’।
অত্র আয়াতটি হচ্ছে সূরা ফাতিহার মধ্যে অত্যমত্ম গুরম্নত্বপূর্ণ অংশ। মুফাসসিরগণ বলেন, সূরা ফাতিহা হলো সমগ্র কুরআনের মূল এবং إِيَّاكَ نَعْبُدُ وَإِيَّاكَ نَسْتَعِيْنُ এই আয়াত হলো সূরা ফাতিহার মূল। এর প্রথম অংশে শিরক হতে মুক্তির ঘোষণা করা হয়েছে ও দ্বিতীয় অংশে আলস্নাহর সাহায্য প্রার্থনা করে কেবল তাঁর উপরেই ভরসা করতে বলা হয়েছে।
তাছাড়া ১ম তিনটি আয়াতে নাম পুরম্নষ ব্যবহার করা হয়েছে। আর অত্র আয়াতে মধ্যম পুরম্নষ ব্যবহার করে সরাসরি আলস্নাহকে সম্বোধন করার মাধ্যমে তাঁর অধিকতর নিকটে পৌঁছে যাওয়ার ইঙ্গিত প্রদান করা হয়েছে।
আর আলস্নাহর নিকট একনিষ্ঠ বান্দা তার ব্যাকুল হৃদয়ের আকুল বাসনা সরাসরি নিবেদন করবে এটাই কাম্য। অত্র আয়াতের এই অলঙ্কারিক বাক্য বিন্যাস মুমিন হৃদয়ে ভালবাসার ঢেউ তোলে। হাদীসে কুদসীতে এসেছে, আলস্নাহ তা‘আলা বলেন,
একথাটি আমার ও আমার বান্দার মধ্যে বিভক্ত হয়ে আছে। এখন বান্দা যা চাইবে তাই পাবে। [মুয়াত্তা ইমাম মালেক, হা/১৮৮; সহীহ মুসলিম, হা/৯০৪।]
কুরআন মাজীদে আলস্নাহ তা‘আলা বলেন,
﴿فَاعْبُدْهُ وَتَوَكَّلْ عَلَيْهِ وَمَا رَبُّكَ بِغَافِلٍ عَمَّا تَعْمَلُوْنَ﴾
অতএব তুমি তাঁরই ইবাদত করো এবং তাঁর উপরেই নির্ভর করো। (মনে রেখো) তোমরা যা কিছু করো, তোমার প্রতিপালক তা থেকে গাফিল নন। (সূরা হুদ ১১ঃ ১২৩)
এর মধ্যে একটি বিষয়ে আশার সঞ্চার হয় যে, ইবাদত ও তাওয়াক্কুল একনিষ্ঠ হলে আলস্নাহর সাহায্য অবশ্যই আসবে। আর ইবাদত ত্রম্নটিপূর্ণ হলে এবং তাওয়াক্কুলের মধ্যে একনিষ্ঠতার অভাব থাকলে বান্দার কামনা ও বাসনা পূরণ নাও হতে পারে।তাই সাহায্য চাওয়ার পূর্বে ইবাদতের বিষয় উলেস্নখ করার অমত্মর্নিহিত তাৎপর্য এটাই।
বাক্য গঠনের রহস্য :
অত্র আয়াতের বাক্য গঠনটি অনেক তাৎপর্যপূর্ণ। এতে বেশ কয়েকটি রহস্য লুকিয়ে রয়েছে। যেমন-
১. অত্র আয়াতে ‘আমরা কেবল তোমারই ইবাদাত করি’- এ কথাটি বুঝানোর জন্য إِيَّاكَ نَعْبُدُ (ইয়্যা-কা না’বুদু) শব্দগুলো ব্যবহার করা হয়েছে। অথচ এ ক্ষেত্রে نَعْبُدُكَ শব্দটি বলাই যথেষ্ট ছিল। এখানে আলস্নাহ তা‘আলা كَ কর্মপদের সর্বনামকে আরবি ব্যকরণের সাধারণ নিয়ম অনুযায়ী نَعْبُدُ ক্রিয়ার পরে না বসিয়ে পূর্বে ব্যবহার করেছেন। এর মূল রহস্য হচ্ছে, এরা দ্বারা আলস্নাহ তা‘আলা বক্তব্যের মধ্যে তাগিদ বা জোর সৃষ্টি করেছেন। আর গুরম্নত্বপূর্ণ বিষয়টি আগে বলাই আরবদের বাক্যরীতি।
২. অত্র আয়াতে আরেকটি রহস্য হচ্ছে, نَعْبُدُكُ তথা ‘আমরা তোমার ইবাদত করি’ বললে অন্যকেও ইবাদত করার সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু إِيَّاكَ نَعْبُدُ তথা ‘তোমারই ইবাদত করি’ বললে সে সম্ভাবনা দূর হয়ে যায়।
৩. অত্র আয়াতে আরেকটি রহস্য হচ্ছে, إِيَّاكَ সর্বনাম একই বাক্যে দু’বার আগে বসানো হয়েছে। এর উদ্দেশ্য হচ্ছে এ কথার উপর জোর দেয়া যে, আমাদের যাবতীয় ইবাদত ও ইসতি‘আনাত বা সাহায্য প্রার্থনাকে আমরা কেবলমাত্র আলস্নাহর জন্য খাস করছি। অন্য কারো জন্য আমাদের হৃদয়ে কোন স্থান নেই।
এ আয়াতের মর্মার্থ হচ্ছে আমরা কেবল আপনারই একতবাদব ঘোষণা করি, একমাত্র আপনাকেই ভয় করি এবং আপনারই আনুগত্য করি, আপনারই ইবাদাত করি অন্য কারো ইবাদাত করিনা। আমরা কেবল আপনার কাছেই সাহায্য প্রার্থনা করি। অন্য কারো কাছে সাহায্য প্রার্থনা করি না।
ইয়্যাকা না‘বুদু ওয়া ইয়্যাকা নাস্তা‘ঈন।
‘আমরা কেবলমাত্র তোমারই ইবাদত করি এবং কেবলমাত্র তোমারই সাহায্য প্রার্থনা করি’।
অত্র আয়াতটি হচ্ছে সূরা ফাতিহার মধ্যে অত্যমত্ম গুরম্নত্বপূর্ণ অংশ। মুফাসসিরগণ বলেন, সূরা ফাতিহা হলো সমগ্র কুরআনের মূল এবং إِيَّاكَ نَعْبُدُ وَإِيَّاكَ نَسْتَعِيْنُ এই আয়াত হলো সূরা ফাতিহার মূল। এর প্রথম অংশে শিরক হতে মুক্তির ঘোষণা করা হয়েছে ও দ্বিতীয় অংশে আলস্নাহর সাহায্য প্রার্থনা করে কেবল তাঁর উপরেই ভরসা করতে বলা হয়েছে।
তাছাড়া ১ম তিনটি আয়াতে নাম পুরম্নষ ব্যবহার করা হয়েছে। আর অত্র আয়াতে মধ্যম পুরম্নষ ব্যবহার করে সরাসরি আলস্নাহকে সম্বোধন করার মাধ্যমে তাঁর অধিকতর নিকটে পৌঁছে যাওয়ার ইঙ্গিত প্রদান করা হয়েছে।
আর আলস্নাহর নিকট একনিষ্ঠ বান্দা তার ব্যাকুল হৃদয়ের আকুল বাসনা সরাসরি নিবেদন করবে এটাই কাম্য। অত্র আয়াতের এই অলঙ্কারিক বাক্য বিন্যাস মুমিন হৃদয়ে ভালবাসার ঢেউ তোলে। হাদীসে কুদসীতে এসেছে, আলস্নাহ তা‘আলা বলেন,
একথাটি আমার ও আমার বান্দার মধ্যে বিভক্ত হয়ে আছে। এখন বান্দা যা চাইবে তাই পাবে। [মুয়াত্তা ইমাম মালেক, হা/১৮৮; সহীহ মুসলিম, হা/৯০৪।]
কুরআন মাজীদে আলস্নাহ তা‘আলা বলেন,
﴿فَاعْبُدْهُ وَتَوَكَّلْ عَلَيْهِ وَمَا رَبُّكَ بِغَافِلٍ عَمَّا تَعْمَلُوْنَ﴾
অতএব তুমি তাঁরই ইবাদত করো এবং তাঁর উপরেই নির্ভর করো। (মনে রেখো) তোমরা যা কিছু করো, তোমার প্রতিপালক তা থেকে গাফিল নন। (সূরা হুদ ১১ঃ ১২৩)
এর মধ্যে একটি বিষয়ে আশার সঞ্চার হয় যে, ইবাদত ও তাওয়াক্কুল একনিষ্ঠ হলে আলস্নাহর সাহায্য অবশ্যই আসবে। আর ইবাদত ত্রম্নটিপূর্ণ হলে এবং তাওয়াক্কুলের মধ্যে একনিষ্ঠতার অভাব থাকলে বান্দার কামনা ও বাসনা পূরণ নাও হতে পারে।তাই সাহায্য চাওয়ার পূর্বে ইবাদতের বিষয় উলেস্নখ করার অমত্মর্নিহিত তাৎপর্য এটাই।
বাক্য গঠনের রহস্য :
অত্র আয়াতের বাক্য গঠনটি অনেক তাৎপর্যপূর্ণ। এতে বেশ কয়েকটি রহস্য লুকিয়ে রয়েছে। যেমন-
১. অত্র আয়াতে ‘আমরা কেবল তোমারই ইবাদাত করি’- এ কথাটি বুঝানোর জন্য إِيَّاكَ نَعْبُدُ (ইয়্যা-কা না’বুদু) শব্দগুলো ব্যবহার করা হয়েছে। অথচ এ ক্ষেত্রে نَعْبُدُكَ শব্দটি বলাই যথেষ্ট ছিল। এখানে আলস্নাহ তা‘আলা كَ কর্মপদের সর্বনামকে আরবি ব্যকরণের সাধারণ নিয়ম অনুযায়ী نَعْبُدُ ক্রিয়ার পরে না বসিয়ে পূর্বে ব্যবহার করেছেন। এর মূল রহস্য হচ্ছে, এরা দ্বারা আলস্নাহ তা‘আলা বক্তব্যের মধ্যে তাগিদ বা জোর সৃষ্টি করেছেন। আর গুরম্নত্বপূর্ণ বিষয়টি আগে বলাই আরবদের বাক্যরীতি।
২. অত্র আয়াতে আরেকটি রহস্য হচ্ছে, نَعْبُدُكُ তথা ‘আমরা তোমার ইবাদত করি’ বললে অন্যকেও ইবাদত করার সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু إِيَّاكَ نَعْبُدُ তথা ‘তোমারই ইবাদত করি’ বললে সে সম্ভাবনা দূর হয়ে যায়।
৩. অত্র আয়াতে আরেকটি রহস্য হচ্ছে, إِيَّاكَ সর্বনাম একই বাক্যে দু’বার আগে বসানো হয়েছে। এর উদ্দেশ্য হচ্ছে এ কথার উপর জোর দেয়া যে, আমাদের যাবতীয় ইবাদত ও ইসতি‘আনাত বা সাহায্য প্রার্থনাকে আমরা কেবলমাত্র আলস্নাহর জন্য খাস করছি। অন্য কারো জন্য আমাদের হৃদয়ে কোন স্থান নেই।
এ আয়াতের মর্মার্থ হচ্ছে আমরা কেবল আপনারই একতবাদব ঘোষণা করি, একমাত্র আপনাকেই ভয় করি এবং আপনারই আনুগত্য করি, আপনারই ইবাদাত করি অন্য কারো ইবাদাত করিনা। আমরা কেবল আপনার কাছেই সাহায্য প্রার্থনা করি। অন্য কারো কাছে সাহায্য প্রার্থনা করি না।
عِبَادَةٌ (ইবাদাত) শব্দটি বাবে نَصَرَ এর মাছদার। এটি عَبْدٌ (‘আবদুন) শব্দ থেকে উদগত। এর শাব্দিক অর্থ হচ্ছে, আনুগত্য করা, বিনয়ী হওয়া, বিনয় প্রকাশ করা ইত্যাদি। অর্থাৎ চরম আনুগত্য ও বিনয়ী হওয়াকে ইবাদত বলা হয়।
আর ইসলামী পরিভাষায় عِبَادَةٌ (ইবাদাত) এর সংজ্ঞা হচ্ছে,
الْعِبَادَةُ تَتَضَمَّنُ كَمَالُ الذُّلِّ بِكَمَالِ الْحُبِّ وَالْخَوْفِ لِلّٰهِ بِاِمْتِثَالِ أَوَامِرِهِ وَاجْتِنَابِ نَوَاهِيْهِ
আলস্নাহর আদেশ পালন ও নিষেধ বর্জনের মাধ্যমে তাঁর প্রতি একনিষ্ঠ ভালবাসা, ভীতি ও আনুগত্য প্রকাশ করাকে ইবাদত বলা হয়।
উলেস্নখ্য যে, এখানে عِبَادَةٌ (ইবাদাত) শব্দটি ব্যাপক অর্থবোধক। সুতরাএটাকে কোন নির্দিষ্ট কর্ম বা আনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে সীমাবদ্ধ করা যাবে না। যেমন- নামায, রোযা, হজ্জ ইত্যাদি। বরং আমাদের জীবনের প্রত্যেকটি কাজ কেবলমাত্র আলস্নাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে বৈধ নিয়ম অনুযায়ী সম্পন্ন করার নামই হচ্ছে ইবাদাত। এ ক্ষেত্রে আলস্নাহর আদেশ, নিষেধ, একনিষ্ঠতা, ভালোবাসা, ভয়, বিনয়, সৎ কাজের আদেশ, অসৎ কাজ থেকে নিষেধ, সদাচরণ ইত্যাদি বিষয়গুলোও অমত্মর্ভুক্ত।
আর ইসলামী পরিভাষায় عِبَادَةٌ (ইবাদাত) এর সংজ্ঞা হচ্ছে,
الْعِبَادَةُ تَتَضَمَّنُ كَمَالُ الذُّلِّ بِكَمَالِ الْحُبِّ وَالْخَوْفِ لِلّٰهِ بِاِمْتِثَالِ أَوَامِرِهِ وَاجْتِنَابِ نَوَاهِيْهِ
আলস্নাহর আদেশ পালন ও নিষেধ বর্জনের মাধ্যমে তাঁর প্রতি একনিষ্ঠ ভালবাসা, ভীতি ও আনুগত্য প্রকাশ করাকে ইবাদত বলা হয়।
উলেস্নখ্য যে, এখানে عِبَادَةٌ (ইবাদাত) শব্দটি ব্যাপক অর্থবোধক। সুতরাএটাকে কোন নির্দিষ্ট কর্ম বা আনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে সীমাবদ্ধ করা যাবে না। যেমন- নামায, রোযা, হজ্জ ইত্যাদি। বরং আমাদের জীবনের প্রত্যেকটি কাজ কেবলমাত্র আলস্নাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে বৈধ নিয়ম অনুযায়ী সম্পন্ন করার নামই হচ্ছে ইবাদাত। এ ক্ষেত্রে আলস্নাহর আদেশ, নিষেধ, একনিষ্ঠতা, ভালোবাসা, ভয়, বিনয়, সৎ কাজের আদেশ, অসৎ কাজ থেকে নিষেধ, সদাচরণ ইত্যাদি বিষয়গুলোও অমত্মর্ভুক্ত।
বর্তমান সমাজে মানুষ عِبَادَةٌ (ইবাদাত) নিয়ে মারাত্মক বিভ্রামিত্মতে পতিত রয়েছে। অনেক মানুষ শুধু সালাত, সিয়াম, হজ্জ ও যাকাতকে ইবাদাত মনে করে থাকেন। তারা ব্যবসা-বাণিজ্য, লেন-দেন, ইসলামী আইন বাসত্মবায়ন এসব বিষয়কে ইবাদত মনে করেনা। আসলে এ ধারণা মোটেও সঠিক নয়। কেননা একজন মানুষ তার জীবন পরিচালনা করতে আলস্নাহর সন্তুষ্টি ও নবীর সুন্নাহ মোতাবেক যে সকল কাজ করবে, তাই ইবাদতের মধ্যে গণ্য হবে।
ইবাদাতকে কোনভাবেই নির্দিষ্ট কিছু ইবাদাতের সাথে সীমাবদ্ধ করা যায় না। কেননা عِبَادَةٌ (ইবাদাত) শব্দটির মূল উৎপত্তি হচ্ছে عَبْدٌ (‘আবদুন) শব্দ থেকে, যার অর্থ হচ্ছে দাস। সুতরাং দাসত্ব প্রকাশের যাবতীয় কাজের নামই হচ্ছে ইবাদাত। আর এ কথা সত্য যে, কেবল সালাত, সিয়াম, হজ্জ, যাকাত ইত্যাদি কয়েকটি কাজ সম্পন্ন করলেই প্রকৃত দাসত্ব প্রকাশ পায় না। বরং এর সাথে সম্পৃক্ত রয়েছে, তাকওয়া, ইখলাস, সদাচরণ, হালাল উপার্জন ইত্যাদি বিষয়সমূহ। সুতরাং যারা এসব বিষয়কে বাদ দিয়ে কেবলমাত্র সালাত, সিয়ামকে ইবাদাত হিসেবে নির্দিষ্ট করে নিয়েছে, পরকালে তাদের মুক্তির উপায় খুবই ক্ষীণ। নিম্নে এসকল মানুষের কিছু উদাহরণ পেশ করা হলো :
১. একদল মানুষ রয়েছে, যারা পাঁচ ওয়াক্ত সালাত, সিয়াম মসজিদে গিয়ে যথাযথভাবে পালন করে এবং বিভিন্ন খাতে অনেক সম্পদ দান করে। কিন্তু তাদের উপার্জনের মূল উৎস হচ্ছে সূদ, ঘুষ, যুলুম ইত্যাদি। অর্থাৎ তারা এসকল অবৈধ পন্থায় অর্থ উপার্জন করে, আবার নিজেদের এসব কুকীর্তি ঢেকে রেখে সমাজে সাধু সাজার জন্য বিভিন্ন মসজিদ, মাদরাসা, ইয়াতীমখানা, ফকীর ও মিসকীনকে দানও করে। আলস্নাহ তা‘আলার কাছে তাদের এসব ইবাদাত একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়। কেননা ইবাদাত কবুলের পূর্বশর্ত হচ্ছে হালাল উপার্জন করা। অর্থাৎ মানুষ দুনিয়াতে হারাম উপার্জন করে যত ভালো কাজই করম্নক না কেন তা আলস্নাহর কাছে পরিত্যাজ্য। হারাম উপার্জন থেকে তওবা না করে মৃত্যুবরণ করলে পরকালে আলস্নাহর নিকট কঠিন শাসিত্মর সম্মুখীন হতে হবে।
২. আরো একদল মানুষ রয়েছে, যারা সালাত, সিয়াম, হজ্জ, যাকাত ইত্যাদি ইবাদাতসমূহ খুব সুন্দরভাবেই পালন করে। আর তারা সমাজের মধ্যে বিরাট সম্মানের অধিকারীও বটে। অথচ তারা নিজ স্ত্রী, সমত্মান, ভাই, বোন, প্রতিবেশী ইত্যাদি নিকটাত্মীয়ের হক আদায় করে না। আবার অনেকে মানুষের সাথে খুবই খারাপ ব্যবহার করে থাকে। প্রকৃতপক্ষে এরাও পরিপূর্ণ আলস্নাহর ইবাদাতকারী নয়।
৩. আরো একদল মানুষ রয়েছে, যারা সালাত, সিয়াম সঠিকভাবে পালন করার সাথে সাথে অন্যান্য ভালো কাজগুলোও করে থাকে। কিন্তু তারা নিজের পরিবারের ব্যাপারে একেবারেই উদাসীন। যেমন- নিজের সমত্মানকে ইসলামী শিক্ষা দেয় না, পরিবারের কেউ আলস্নাহর হুকুম পালন না করলেও তার ব্যাপারে কোন ব্যবস্থা নেয় না। তাদের স্ত্রী ও মেয়েরা পর্দা করে না, তাদের পোশাক-পরিচ্ছদ ও জীবনাচার থাকে অমুসলিমদের অনুকরণে, তাদের বিয়ের অনুষ্ঠানও হয় অমুসলিম রীতিতে। এসব লোককে দাইয়ুস বলা হয়েছে। আর দাইয়ুস ব্যক্তি কখনো জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না।
৪. কিছু মহিলা রয়েছে, তারা কিছু কিছু ধর্মীয় কাজ করলেও ইসলামের অনেক ফরজ বিধানের তোয়াক্কা করে না। তারা ইসলামিক অনুষ্ঠানে ইসলামী পোশাক পরিধান করেই গমন করে; কিন্তু বন্ধু-বান্ধব, পাড়া-প্রতিবেশী, আত্মীয়-স্বজনের বাসায় অথবা অন্য কোন অনুষ্ঠানে তারা অনৈসলামিক পোশাক পরিধান করে গমন করে; তখন তাদের মধ্যে ইসলামের কোন চিহ্নই খুঁজে পাওয়া যায় না। তারা অনেন ক্ষেত্রে ইসলাম কর্তৃক নিষিদ্ধ কাজে লিপ্ত হয়ে যায়। প্রকৃতপক্ষে এরাও আলস্নাহর ইবাদাতকারী নয়।
৫. সমাজে আরো কিছু লোক রয়েছে, যারা সালাত, সিয়াম, হজ্জ, যাকাত, সদাচরণ ইত্যাদি উত্তম কাজসমূহ যথাযথভাবেই পালন করে। কিন্তু দেখা যায় যে, তারা তাগুতের আইন-কানুনের সাথে তাল মিলিয়ে বেঁচে থাকাকেই পছন্দ করে। ইসলামিক দৃষ্টিকোণ থেকে এরাও আলস্নাহর ইবাদাতকারী নয়। কেননা ইবাদাত কবুলের অন্যতম পূর্বশর্ত হচ্ছে বিশুদ্ধ ঈমান। আর বিশুদ্ধ ঈমানের পূর্বশর্ত হচ্ছে প্রথমে তাগুতকে বর্জন করা।
অতএব আমাদের উচিত, عِبَادَةٌ (ইবাদাত) এর ব্যাপারে কোনরূপ বিভ্রামিত্মতে পতিত না হয়ে নিজেদেরকে পরিপূর্ণভাবে আলস্নাহর দাস হিসেবে গড়ে তোলা এবং জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে আলস্নাহর দাসত্ব করা।
ইবাদাতকে কোনভাবেই নির্দিষ্ট কিছু ইবাদাতের সাথে সীমাবদ্ধ করা যায় না। কেননা عِبَادَةٌ (ইবাদাত) শব্দটির মূল উৎপত্তি হচ্ছে عَبْدٌ (‘আবদুন) শব্দ থেকে, যার অর্থ হচ্ছে দাস। সুতরাং দাসত্ব প্রকাশের যাবতীয় কাজের নামই হচ্ছে ইবাদাত। আর এ কথা সত্য যে, কেবল সালাত, সিয়াম, হজ্জ, যাকাত ইত্যাদি কয়েকটি কাজ সম্পন্ন করলেই প্রকৃত দাসত্ব প্রকাশ পায় না। বরং এর সাথে সম্পৃক্ত রয়েছে, তাকওয়া, ইখলাস, সদাচরণ, হালাল উপার্জন ইত্যাদি বিষয়সমূহ। সুতরাং যারা এসব বিষয়কে বাদ দিয়ে কেবলমাত্র সালাত, সিয়ামকে ইবাদাত হিসেবে নির্দিষ্ট করে নিয়েছে, পরকালে তাদের মুক্তির উপায় খুবই ক্ষীণ। নিম্নে এসকল মানুষের কিছু উদাহরণ পেশ করা হলো :
১. একদল মানুষ রয়েছে, যারা পাঁচ ওয়াক্ত সালাত, সিয়াম মসজিদে গিয়ে যথাযথভাবে পালন করে এবং বিভিন্ন খাতে অনেক সম্পদ দান করে। কিন্তু তাদের উপার্জনের মূল উৎস হচ্ছে সূদ, ঘুষ, যুলুম ইত্যাদি। অর্থাৎ তারা এসকল অবৈধ পন্থায় অর্থ উপার্জন করে, আবার নিজেদের এসব কুকীর্তি ঢেকে রেখে সমাজে সাধু সাজার জন্য বিভিন্ন মসজিদ, মাদরাসা, ইয়াতীমখানা, ফকীর ও মিসকীনকে দানও করে। আলস্নাহ তা‘আলার কাছে তাদের এসব ইবাদাত একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়। কেননা ইবাদাত কবুলের পূর্বশর্ত হচ্ছে হালাল উপার্জন করা। অর্থাৎ মানুষ দুনিয়াতে হারাম উপার্জন করে যত ভালো কাজই করম্নক না কেন তা আলস্নাহর কাছে পরিত্যাজ্য। হারাম উপার্জন থেকে তওবা না করে মৃত্যুবরণ করলে পরকালে আলস্নাহর নিকট কঠিন শাসিত্মর সম্মুখীন হতে হবে।
২. আরো একদল মানুষ রয়েছে, যারা সালাত, সিয়াম, হজ্জ, যাকাত ইত্যাদি ইবাদাতসমূহ খুব সুন্দরভাবেই পালন করে। আর তারা সমাজের মধ্যে বিরাট সম্মানের অধিকারীও বটে। অথচ তারা নিজ স্ত্রী, সমত্মান, ভাই, বোন, প্রতিবেশী ইত্যাদি নিকটাত্মীয়ের হক আদায় করে না। আবার অনেকে মানুষের সাথে খুবই খারাপ ব্যবহার করে থাকে। প্রকৃতপক্ষে এরাও পরিপূর্ণ আলস্নাহর ইবাদাতকারী নয়।
৩. আরো একদল মানুষ রয়েছে, যারা সালাত, সিয়াম সঠিকভাবে পালন করার সাথে সাথে অন্যান্য ভালো কাজগুলোও করে থাকে। কিন্তু তারা নিজের পরিবারের ব্যাপারে একেবারেই উদাসীন। যেমন- নিজের সমত্মানকে ইসলামী শিক্ষা দেয় না, পরিবারের কেউ আলস্নাহর হুকুম পালন না করলেও তার ব্যাপারে কোন ব্যবস্থা নেয় না। তাদের স্ত্রী ও মেয়েরা পর্দা করে না, তাদের পোশাক-পরিচ্ছদ ও জীবনাচার থাকে অমুসলিমদের অনুকরণে, তাদের বিয়ের অনুষ্ঠানও হয় অমুসলিম রীতিতে। এসব লোককে দাইয়ুস বলা হয়েছে। আর দাইয়ুস ব্যক্তি কখনো জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না।
৪. কিছু মহিলা রয়েছে, তারা কিছু কিছু ধর্মীয় কাজ করলেও ইসলামের অনেক ফরজ বিধানের তোয়াক্কা করে না। তারা ইসলামিক অনুষ্ঠানে ইসলামী পোশাক পরিধান করেই গমন করে; কিন্তু বন্ধু-বান্ধব, পাড়া-প্রতিবেশী, আত্মীয়-স্বজনের বাসায় অথবা অন্য কোন অনুষ্ঠানে তারা অনৈসলামিক পোশাক পরিধান করে গমন করে; তখন তাদের মধ্যে ইসলামের কোন চিহ্নই খুঁজে পাওয়া যায় না। তারা অনেন ক্ষেত্রে ইসলাম কর্তৃক নিষিদ্ধ কাজে লিপ্ত হয়ে যায়। প্রকৃতপক্ষে এরাও আলস্নাহর ইবাদাতকারী নয়।
৫. সমাজে আরো কিছু লোক রয়েছে, যারা সালাত, সিয়াম, হজ্জ, যাকাত, সদাচরণ ইত্যাদি উত্তম কাজসমূহ যথাযথভাবেই পালন করে। কিন্তু দেখা যায় যে, তারা তাগুতের আইন-কানুনের সাথে তাল মিলিয়ে বেঁচে থাকাকেই পছন্দ করে। ইসলামিক দৃষ্টিকোণ থেকে এরাও আলস্নাহর ইবাদাতকারী নয়। কেননা ইবাদাত কবুলের অন্যতম পূর্বশর্ত হচ্ছে বিশুদ্ধ ঈমান। আর বিশুদ্ধ ঈমানের পূর্বশর্ত হচ্ছে প্রথমে তাগুতকে বর্জন করা।
অতএব আমাদের উচিত, عِبَادَةٌ (ইবাদাত) এর ব্যাপারে কোনরূপ বিভ্রামিত্মতে পতিত না হয়ে নিজেদেরকে পরিপূর্ণভাবে আলস্নাহর দাস হিসেবে গড়ে তোলা এবং জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে আলস্নাহর দাসত্ব করা।
اَلْإسْتِعَانَةُ (আল-ইসতি‘আনা) এর সংজ্ঞা :
اَلْإسْتِعَانَةُ (আল-ইসতি‘আনা) শব্দটি باب استفعال এর মাসদার। এটি عَوْنٌ (‘আওনুন) শব্দ থেকে উদগত। এর অর্থ হচ্ছে, সাহায্য কামনা করা। ইসলামী পরিভাষায়, সকল কাজে আলস্নাহর নিকট শক্তি, সামর্থ ও ক্ষমতা কামনা করাকেই إسْتِعَانَةْ (ইসতি‘আনা) বলা হয়। আলস্নাহ তা‘আলা বলেন,
﴿وَاسْتَعِيْنُوْا بِالصَّبْرِ وَالصَّلَاةِ﴾
তোমরা ধৈর্য ও নামাযের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা করো। (সূরা বাকারা- ৪৫)
অত্র আয়াতে এটা বুঝাতে গিয়েই আলস্নাহ তা‘আলা نَسْتَعِيْنَ (নাসতা‘ঈন) শব্দ ব্যবহার করেছেন।
عِبَادَةٌ (ইবাদাত)-কে إسْتِعَانَةٌ (ইসতি‘আনা) এর পূর্বে আনার কারণ :
إِيَّاكَ نَعْبُدُ وَإِيَّاكَ نَسْتَعِيْنُ এই আয়াতে عِبَادَةٌ (ইবাদাত)-কে إسْتِعَانَةٌ (ইসতি‘আনা) এর পূর্বে আনা হয়েছে। কেননা عِبَادَةٌ (ইবাদাত) হচ্ছে إسْتِعَانَةٌ (ইসতি‘আনা) তথা সাহায্য পাওয়ার অসীলা। আর অসীলা সর্বদা পূর্বে এসে থাকে। অন্যদিকে عِبَادَةٌ (ইবাদাত) হচ্ছে কাজ এবং إسْتِعَانَةٌ (ইসতি‘আনা) তার পুরস্কার। আর পুরস্কার সর্বদা কাজের পরেই হয়ে থাকে।
عِبَادَةٌ (ইবাদাত)-কে إسْتِعَانَةٌ (ইসতি‘আনা) এর সাথে মিলানোর কারণ :
উক্ত আয়াতে إسْتِعَانَةٌ (ইসতি‘আনা)-কে عِبَادَةٌ (ইবাদাত) এর সাথে মিলানোর কারণ হচ্ছে, ইবাদাত আলস্নাহর নৈকট্য লাভের মাধ্যম। আর ইবাদাত করার জন্য আলস্নাহর সাহায্যের প্রয়োজন।
اَلْإسْتِعَانَةُ (আল-ইসতি‘আনা) শব্দটি باب استفعال এর মাসদার। এটি عَوْنٌ (‘আওনুন) শব্দ থেকে উদগত। এর অর্থ হচ্ছে, সাহায্য কামনা করা। ইসলামী পরিভাষায়, সকল কাজে আলস্নাহর নিকট শক্তি, সামর্থ ও ক্ষমতা কামনা করাকেই إسْتِعَانَةْ (ইসতি‘আনা) বলা হয়। আলস্নাহ তা‘আলা বলেন,
﴿وَاسْتَعِيْنُوْا بِالصَّبْرِ وَالصَّلَاةِ﴾
তোমরা ধৈর্য ও নামাযের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা করো। (সূরা বাকারা- ৪৫)
অত্র আয়াতে এটা বুঝাতে গিয়েই আলস্নাহ তা‘আলা نَسْتَعِيْنَ (নাসতা‘ঈন) শব্দ ব্যবহার করেছেন।
عِبَادَةٌ (ইবাদাত)-কে إسْتِعَانَةٌ (ইসতি‘আনা) এর পূর্বে আনার কারণ :
إِيَّاكَ نَعْبُدُ وَإِيَّاكَ نَسْتَعِيْنُ এই আয়াতে عِبَادَةٌ (ইবাদাত)-কে إسْتِعَانَةٌ (ইসতি‘আনা) এর পূর্বে আনা হয়েছে। কেননা عِبَادَةٌ (ইবাদাত) হচ্ছে إسْتِعَانَةٌ (ইসতি‘আনা) তথা সাহায্য পাওয়ার অসীলা। আর অসীলা সর্বদা পূর্বে এসে থাকে। অন্যদিকে عِبَادَةٌ (ইবাদাত) হচ্ছে কাজ এবং إسْتِعَانَةٌ (ইসতি‘আনা) তার পুরস্কার। আর পুরস্কার সর্বদা কাজের পরেই হয়ে থাকে।
عِبَادَةٌ (ইবাদাত)-কে إسْتِعَانَةٌ (ইসতি‘আনা) এর সাথে মিলানোর কারণ :
উক্ত আয়াতে إسْتِعَانَةٌ (ইসতি‘আনা)-কে عِبَادَةٌ (ইবাদাত) এর সাথে মিলানোর কারণ হচ্ছে, ইবাদাত আলস্নাহর নৈকট্য লাভের মাধ্যম। আর ইবাদাত করার জন্য আলস্নাহর সাহায্যের প্রয়োজন।
সাধারণত إسْتِعَانَةٌ (ইসতি‘আনা) শব্দের অর্থ হচ্ছে, সাহায্য চাওয়া। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এর অর্থ হবে, কোন বিষয়ে একেবারে অপারগ হয়ে সাহায্য চাওয়া। অনুরূপভাবে কোন বিষয়ে আলস্নাহ তা‘আলার কাছে সাহায্য চাওয়া তখনি যথার্থ হবে, যখন উক্ত বিষয়ে প্রথমে নিজে চেষ্টা করবে। সুতরাং কেউ যদি জান্নাত লাভের কোন চেষ্টাই না করে এবং বলে যে, হে আলস্নাহ! আমাকে জান্নাতুল ফেরদাউস দান করম্নন অথবা কেউ যদি আলস্নাহর আদেশ-নিষেধসমূহ মেনে না চলে এবং বলে যে, আমি আলস্নাহকে ভয় করি অথবা কেউ যদি কোন হারাম কাজে লিপ্ত থাকে এবং বলে যে, হে আলস্নাহ! আমাকে সাহায্য করম্নন অথবা কেউ যদি সূদের উপর ভিত্তি করে ব্যবসা করে এবং দু‘আ করে যে, হে আলস্নাহ! আমার ব্যবসায় সাফল্য দান করম্নন অথবা কেউ যদি তাগুতের আনুগত্য করে এবং দু‘আ করে যে, হে আলস্নাহ! আমাকে সাহায্য করম্নন- তাহলে এগুলো আলস্নাহর সাথে উপহাস করা ছাড়া আর কিছুই নয়। আর এগুলো কখনো إسْتِعَانَةٌ (ইসতি‘আনা) হতে পারে না।
অতএব উক্ত আয়াতটিতে আলস্নাহ তা‘আলা আমাদেরকে শুধু তাঁর কাছে সাহায্য চাইতেই বলেননি, বরং এ কথা বুঝিয়ে দিয়েছেন যে, আগে তোমরা নিজেরা যথাসাধ্য চেষ্টা করো, তারপর আলস্নাহর কাছে সাহায্য চাও। তাহলে উক্ত সাহায্য চাওয়াটা যথার্থ হবে এবং আলস্নাহ তা‘আলার কাছে গ্রহণযোগ্যও হবে।
অতএব উক্ত আয়াতটিতে আলস্নাহ তা‘আলা আমাদেরকে শুধু তাঁর কাছে সাহায্য চাইতেই বলেননি, বরং এ কথা বুঝিয়ে দিয়েছেন যে, আগে তোমরা নিজেরা যথাসাধ্য চেষ্টা করো, তারপর আলস্নাহর কাছে সাহায্য চাও। তাহলে উক্ত সাহায্য চাওয়াটা যথার্থ হবে এবং আলস্নাহ তা‘আলার কাছে গ্রহণযোগ্যও হবে।
অত্র আয়াতে যেহেতু عبادة (ইবাদাত) এর পরে إسْتِعَانَةٌ (ইসতি‘আনা) এর কথা বলা হয়েছে, সুতরাং সাধারণভাবেই বোধগম্য যে, এখানে আলস্নাহ তা‘আলা ইবাদাতের ক্ষেত্রে إسْتِعَانَةٌ (ইসতি‘আনা) তথা সাহায্য চাইতে বলেছেন। আর ইবাদাত যেহেতু কোন নির্দিষ্ট আমলের সাথে সম্পৃক্ত নয়, সুতরাং আলস্নাহর কাছে সাহায্য চাওয়ার বিষয়বস্ত্তরও কোন সীমা নেই। সুতরাং যেসব কাজ ইসলামে বৈধ রয়েছে সেগুলোর মধ্য হতে যার যখন যেটা প্রয়োজন সে অনুযায়ী আলস্নাহর কাছে সাহায্য চাইতে হবে। তাহলে আলস্নাহ তা‘আলাও তাকে সেটা দান করবেন। অনুরূপভাবে যেসব কাজ ইসলামে বৈধ নয়, সেসব কাজে আলস্নাহর কাছে সাহায্য চাওয়াটা একেবারেই বৈধ নয়।
إسْتِعَانَةٌ (ইসতি‘আনা) তথা সাহায্য চাওয়াটা সাধারণত দুই প্রকার। যেমন-
১. আলস্নাহর কাছে সাহায্য চাওয়া :
সাহায্য কেবলমাত্র আলস্নাহর কাছেই চাইতে হবে। কেননা সর্বময় ক্ষমতার মালিক একমাত্র আলস্নাহ তা‘আলা। ইহকালীন ও পরকালীন সকল বিষয়ে সাহায্য করার ক্ষমতা একমাত্র আলস্নাহর কাছেই রয়েছে। এজন্যই অত্র আয়াতে বলা হয়েছে,
﴿إِيَّاكَ نَعْبُدُ وَإِيَّاكَ نَسْتَعِيْنُ﴾
আমরা কেবলমাত্র তোমারই ইবাদত করি এবং কেবলমাত্র তোমারই সাহায্যপ্রার্থনা করি।
তবে এখানে ঐসব বিষয়ের ব্যাপারে সাহায্যের কথা বলা হয়েছে, যার মাধ্যমে আলস্নাহর নৈকট্য লাভ করা যায় এবং জান্নাত লাভের পথ সুগম হয়। সুতরাং এসব ক্ষেত্রে আলস্নাহর কাছে সাহায্য চাওয়াটা কেবল বৈধই নয়, বরং আবশ্যকও বটে।
পক্ষামত্মরে যেসব বিষয়ের মাধ্যমে আলস্নাহর অবাধ্যতা করা হয় এবং জান্নাত লাভের পথে বাধা সৃষ্টি হয়, সেসব বিষয়ে সাহায্য চাওয়াটা কেবল অবৈধই নয়, বরং সেসব কাজ থেকে বিরত থাকা অত্যাবশ্যক।
২. মানুষের কাছে সাহায্য চাওয়া :
এ ধরনের সাহায্য চাওয়াটাও আবার দুই ধরনের। যেমন-
ক. এমন বিষয়ে সাহায্য চাওয়া, যার ব্যাপারে মানুষের ক্ষমতা রয়েছে। এরূপ সাহায্য চাওয়া ইসলামে বৈধ রয়েছে। তবে শর্ত হচ্ছে সেটা অবশ্যই গোনাহের কাজ থেকে মুক্ত হতে হবে। যদি এমন হয়, তাহলে এ ক্ষেত্রে সাহায্যপ্রার্থনাকারী ব্যক্তিকে সাহায্য করা আবশ্যক। কেননা আলস্নাহ তা‘আলা বলেন,
﴿تَعَاوَنُوْا عَلَى الْبِرِّ وَالتَّقْوٰى﴾
তোমরা নেকী ও তাকওয়ার কাজে পরস্পরকে সাহায্য করো। (সূরা মায়েদা- ২)
আর হাদীসে এসেছে,
عَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ....... وَاللهُ فِىْ عَوْنِ الْعَبْدِ مَا كَانَ الْعَبْدُ فِىْ عَوْنِ أَخِيْهِ
আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুলস্নাহ (সাঃ) বলেছেন, আলস্নাহ তার বান্দার সাহায্যে ততক্ষণ থাকেন, যতক্ষণ বান্দা তার ভাইয়ের সাহায্যে থাকে। [সহীহ মুসলিম, হা/২৬৯৯; মুসনাদে আহমাদ, হা/৭৪২১; তিরমিযী, হা/১৪২৫; আবু দাউদ, হা/৪৯৪৮; ইবনে মাজাহ, হা/২২৫; মিশকাত, হা/২০৪।]
খ. এমন বিষয়ে সাহায্য চাওয়া, যার ব্যাপারে মানুষের ক্ষমতা নেই। যেমন- কোন মানুষের কাছে সমত্মান কামনা করা, কঠিন বিপদ থেকে মুক্তি চাওয়া। এরূপ সাহায্য কামনা করা সম্পূর্ণ অবৈধ এবং প্রকাশ্য শিরকের অমত্মর্ভুক্ত।
তাছাড়া নবী, অলি প্রভৃতি নেককার মৃত মানুষের নিকট সাহায্য কামনা করা ও তাদের অসীলায় মুক্তি চাওয়াই হলো পৃথিবীর সর্বাধিক প্রাচীন শিরক। যেমন- জাহেলী যুগের মুশরিকরা বলত,
﴿ هٰۤؤُلَآءِ شُفَعَآؤُنَا عِنْدَ اللهِ ﴾
ওরা আমাদের জন্য আলস্নাহর নিকট সুফারিশকারী মাত্র। (সূরা ইউনুস- ১৮)
নূহ (আঃ) থেকে শুরম্ন করে শেষনবী মুহাম্মাদ (সাঃ) পর্যমত্ম সকল নবী ও রাসূল এই শিরকের বিরম্নদ্ধে আমৃত্যু সংগ্রাম করে গেছেন।
এমনিভাবে সূর্য, চন্দ্র, তারকারাজি, গাছ, পাথর, সাগর বা অনুরূপ সৃষ্টবসুর কাছেও সাহায্য প্রার্থনা করা বৈধ নয়। কেননা কাউকে সাহায্য করার মতো ক্ষমতা তাদের নেই। সুতরাং তাদের কাছে সাহায্য প্রার্থনা করাও শিরকের অমত্মর্ভুক্ত। আলস্নাহ তা‘আলা বলেন,
﴿وَإِنْ يَّمْسَسْكَ اللهُ بِضُرٍّ فَلاَ كَاشِفَ لَهُ إِلاَّ هُوَ﴾
যদি আলস্নাহ তোমার কোন অনিষ্ট করতে চান, তবে তিনি ব্যতীত কেউ নেই যে, তা দূর করে দেয়। (সূরা আন‘আম- ১৭)
উলেস্নখ যে, বান্দা আলস্নাহ তা‘আলা কাছে যেকোন সময় সাহায্য চাইতে পারে। আলস্নাহ তা‘আলা বলেন,
﴿اُدْعُوْنِيْ أَسْتَجِبْ لَكُمْ﴾
‘‘তোমরা আমাকে ডাকো। আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দেব’’(সুরা মুমিন ৬০)।
অতএব সমল অবস্থায় সকল বিষয়ে আলস্নাহর নিকট সাহায্য চাওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।
১. আলস্নাহর কাছে সাহায্য চাওয়া :
সাহায্য কেবলমাত্র আলস্নাহর কাছেই চাইতে হবে। কেননা সর্বময় ক্ষমতার মালিক একমাত্র আলস্নাহ তা‘আলা। ইহকালীন ও পরকালীন সকল বিষয়ে সাহায্য করার ক্ষমতা একমাত্র আলস্নাহর কাছেই রয়েছে। এজন্যই অত্র আয়াতে বলা হয়েছে,
﴿إِيَّاكَ نَعْبُدُ وَإِيَّاكَ نَسْتَعِيْنُ﴾
আমরা কেবলমাত্র তোমারই ইবাদত করি এবং কেবলমাত্র তোমারই সাহায্যপ্রার্থনা করি।
তবে এখানে ঐসব বিষয়ের ব্যাপারে সাহায্যের কথা বলা হয়েছে, যার মাধ্যমে আলস্নাহর নৈকট্য লাভ করা যায় এবং জান্নাত লাভের পথ সুগম হয়। সুতরাং এসব ক্ষেত্রে আলস্নাহর কাছে সাহায্য চাওয়াটা কেবল বৈধই নয়, বরং আবশ্যকও বটে।
পক্ষামত্মরে যেসব বিষয়ের মাধ্যমে আলস্নাহর অবাধ্যতা করা হয় এবং জান্নাত লাভের পথে বাধা সৃষ্টি হয়, সেসব বিষয়ে সাহায্য চাওয়াটা কেবল অবৈধই নয়, বরং সেসব কাজ থেকে বিরত থাকা অত্যাবশ্যক।
২. মানুষের কাছে সাহায্য চাওয়া :
এ ধরনের সাহায্য চাওয়াটাও আবার দুই ধরনের। যেমন-
ক. এমন বিষয়ে সাহায্য চাওয়া, যার ব্যাপারে মানুষের ক্ষমতা রয়েছে। এরূপ সাহায্য চাওয়া ইসলামে বৈধ রয়েছে। তবে শর্ত হচ্ছে সেটা অবশ্যই গোনাহের কাজ থেকে মুক্ত হতে হবে। যদি এমন হয়, তাহলে এ ক্ষেত্রে সাহায্যপ্রার্থনাকারী ব্যক্তিকে সাহায্য করা আবশ্যক। কেননা আলস্নাহ তা‘আলা বলেন,
﴿تَعَاوَنُوْا عَلَى الْبِرِّ وَالتَّقْوٰى﴾
তোমরা নেকী ও তাকওয়ার কাজে পরস্পরকে সাহায্য করো। (সূরা মায়েদা- ২)
আর হাদীসে এসেছে,
عَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ....... وَاللهُ فِىْ عَوْنِ الْعَبْدِ مَا كَانَ الْعَبْدُ فِىْ عَوْنِ أَخِيْهِ
আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুলস্নাহ (সাঃ) বলেছেন, আলস্নাহ তার বান্দার সাহায্যে ততক্ষণ থাকেন, যতক্ষণ বান্দা তার ভাইয়ের সাহায্যে থাকে। [সহীহ মুসলিম, হা/২৬৯৯; মুসনাদে আহমাদ, হা/৭৪২১; তিরমিযী, হা/১৪২৫; আবু দাউদ, হা/৪৯৪৮; ইবনে মাজাহ, হা/২২৫; মিশকাত, হা/২০৪।]
খ. এমন বিষয়ে সাহায্য চাওয়া, যার ব্যাপারে মানুষের ক্ষমতা নেই। যেমন- কোন মানুষের কাছে সমত্মান কামনা করা, কঠিন বিপদ থেকে মুক্তি চাওয়া। এরূপ সাহায্য কামনা করা সম্পূর্ণ অবৈধ এবং প্রকাশ্য শিরকের অমত্মর্ভুক্ত।
তাছাড়া নবী, অলি প্রভৃতি নেককার মৃত মানুষের নিকট সাহায্য কামনা করা ও তাদের অসীলায় মুক্তি চাওয়াই হলো পৃথিবীর সর্বাধিক প্রাচীন শিরক। যেমন- জাহেলী যুগের মুশরিকরা বলত,
﴿ هٰۤؤُلَآءِ شُفَعَآؤُنَا عِنْدَ اللهِ ﴾
ওরা আমাদের জন্য আলস্নাহর নিকট সুফারিশকারী মাত্র। (সূরা ইউনুস- ১৮)
নূহ (আঃ) থেকে শুরম্ন করে শেষনবী মুহাম্মাদ (সাঃ) পর্যমত্ম সকল নবী ও রাসূল এই শিরকের বিরম্নদ্ধে আমৃত্যু সংগ্রাম করে গেছেন।
এমনিভাবে সূর্য, চন্দ্র, তারকারাজি, গাছ, পাথর, সাগর বা অনুরূপ সৃষ্টবসুর কাছেও সাহায্য প্রার্থনা করা বৈধ নয়। কেননা কাউকে সাহায্য করার মতো ক্ষমতা তাদের নেই। সুতরাং তাদের কাছে সাহায্য প্রার্থনা করাও শিরকের অমত্মর্ভুক্ত। আলস্নাহ তা‘আলা বলেন,
﴿وَإِنْ يَّمْسَسْكَ اللهُ بِضُرٍّ فَلاَ كَاشِفَ لَهُ إِلاَّ هُوَ﴾
যদি আলস্নাহ তোমার কোন অনিষ্ট করতে চান, তবে তিনি ব্যতীত কেউ নেই যে, তা দূর করে দেয়। (সূরা আন‘আম- ১৭)
উলেস্নখ যে, বান্দা আলস্নাহ তা‘আলা কাছে যেকোন সময় সাহায্য চাইতে পারে। আলস্নাহ তা‘আলা বলেন,
﴿اُدْعُوْنِيْ أَسْتَجِبْ لَكُمْ﴾
‘‘তোমরা আমাকে ডাকো। আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দেব’’(সুরা মুমিন ৬০)।
অতএব সমল অবস্থায় সকল বিষয়ে আলস্নাহর নিকট সাহায্য চাওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।
আলস্নাহর কাছে সাহায্য চাওয়ার পদ্ধতিটি হচ্ছে, প্রথমে দু’রাকাআত সালাত আদায় করবে। তারপর উক্ত সালাতের মধ্যেই যেমন- রম্নকুর সময়, রম্নকুর আগে অথবা পওে, সিজদার সময়, তাশাহুদেও সময় ইত্যাদি আলস্নাহর কাছে সাহায্য চেয়ে দু’আ করবে অথবা সালাত শেষে দু’আ করবে। কেননা এ সময়গুলো আলস্নাহ তা’আলা বান্দার দু’আ অধিক হাওে কবুল কওে থাকেন্ আর এ কারণেই তিনি নির্দেশ দিয়েছেন যে,
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اسْتَعِينُوا بِالصَّبْرِ وَالصَّلاةِ إِنَّ اللَّهَ مَعَ الصَّابِرِينَ
হে ঈমানদারগণ ১ তোমরা ধৈর্য ও সালাতের মাধ্যমে আলস্নাহর কাছে সাহায্য চাও। নিশ্চয় আলস্নাহ ধৈর্যশীলদের সাথে আছেন।(সুরা বাকারা ১৫৩)।
অতও আয়াতে আলস্নাহ তা‘আলা সাহায্য চাওয়ার সাথে সাথে ধৈর্য্যধারণ করারও নির্দেশ দিয়েছেন। কেননা আলস্নাহর সাহায্য সাধারণত তারাই বোশ পায় যারা ধৈর্যদারণ করতে সক্ষম হয়।
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اسْتَعِينُوا بِالصَّبْرِ وَالصَّلاةِ إِنَّ اللَّهَ مَعَ الصَّابِرِينَ
হে ঈমানদারগণ ১ তোমরা ধৈর্য ও সালাতের মাধ্যমে আলস্নাহর কাছে সাহায্য চাও। নিশ্চয় আলস্নাহ ধৈর্যশীলদের সাথে আছেন।(সুরা বাকারা ১৫৩)।
অতও আয়াতে আলস্নাহ তা‘আলা সাহায্য চাওয়ার সাথে সাথে ধৈর্য্যধারণ করারও নির্দেশ দিয়েছেন। কেননা আলস্নাহর সাহায্য সাধারণত তারাই বোশ পায় যারা ধৈর্যদারণ করতে সক্ষম হয়।
اِهْدِنَا الصِّرَاطَ الْمُسْتَقِيْمَ
ইহ্দিনাস্ সিরা-ত্বাল্ মুসত্মাক্বীম
আপনি আমাদেরকে সরল পথ প্রদর্শন করম্নন।
এ আয়াতে হেদায়াত লাভের দু‘আ শিখনো হয়েছে। কেননা এটিই হচ্ছে সবচেয়ে গুরম্নত্বপূর্ণ দু‘আ। মানুষ আলস্নাহর কাছে যে বিষয়েই দু‘আ করে থাকে, তার মূল উদ্দেশ্য থাকে হেদায়াত। আলস্নাহ তা‘আলা যাকে হেদায়াত করেন, তাকেই ঈমান করার এবং এর উপর অটল থাকার তাওফীক দান করেন। অতঃপর বান্দা এর উপর ভিত্তি করেই পরকালীন সফলতা লাভ করতে সক্ষম হয়। এ কারণেই শয়তান সর্বদা হেদায়াত থেকে দূরে রাখার চেষ্টা করে। তাই আমাদেরকে সর্বদা হেদায়ত তথা সরল-সঠিক পথের সন্ধান দেওয়ার জন্য আলস্নাহর কাছে প্রার্থনা করতে হবে।
সুতরাং অত্র আয়াতের মর্মকথা হলো, তুমি আমাদেরকে ইসলামের সরল-সঠিক পথ প্রদর্শন করো, যা আমাদেরকে তোমার নিকট পৌঁছে দেয় এবং জান্নাতের সন্ধান দেয়।
ইহ্দিনাস্ সিরা-ত্বাল্ মুসত্মাক্বীম
আপনি আমাদেরকে সরল পথ প্রদর্শন করম্নন।
এ আয়াতে হেদায়াত লাভের দু‘আ শিখনো হয়েছে। কেননা এটিই হচ্ছে সবচেয়ে গুরম্নত্বপূর্ণ দু‘আ। মানুষ আলস্নাহর কাছে যে বিষয়েই দু‘আ করে থাকে, তার মূল উদ্দেশ্য থাকে হেদায়াত। আলস্নাহ তা‘আলা যাকে হেদায়াত করেন, তাকেই ঈমান করার এবং এর উপর অটল থাকার তাওফীক দান করেন। অতঃপর বান্দা এর উপর ভিত্তি করেই পরকালীন সফলতা লাভ করতে সক্ষম হয়। এ কারণেই শয়তান সর্বদা হেদায়াত থেকে দূরে রাখার চেষ্টা করে। তাই আমাদেরকে সর্বদা হেদায়ত তথা সরল-সঠিক পথের সন্ধান দেওয়ার জন্য আলস্নাহর কাছে প্রার্থনা করতে হবে।
সুতরাং অত্র আয়াতের মর্মকথা হলো, তুমি আমাদেরকে ইসলামের সরল-সঠিক পথ প্রদর্শন করো, যা আমাদেরকে তোমার নিকট পৌঁছে দেয় এবং জান্নাতের সন্ধান দেয়।
অত্র আয়াতে আলস্নাহ তা‘আলা বান্দাকে দু‘আ শিক্ষা দিতে গিয়ে সর্বনামকে বহুবচন হিসেবে ব্যবহার করেছেন। এ দ্বারা তিনি বুঝাতে চাচ্ছেন যে, একা একা ইসলামের পথে টিকে থাকা খুবই কঠিন। সুতরাং ইসলামের যত কাজ রয়েছে, সেগুলো সম্মিলিতভাবে পালন করা খুবই জরম্নরি। তাই যখন কোন মুসলিম দু‘আ করবে তখন কেবলমাত্র নিজের জন্য না করে সমসত্ম মুসলিমের জন্য করবে। হাদীসে এসেছে,
عَنْ أَبِى الدَّرْدَاءِ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ مَا مِنْ عَبْدٍ مُسْلِمٍ يَدْعُو لأَخِيهِ بِظَهْرِ الْغَيْبِ إِلاَّ قَالَ الْمَلَكُ وَلَكَ بِمِثْلٍ
আবু দারদা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুলস্নাহ (সাঃ) বলেছেন, যখন কোন মুসলিম তার কোন ভাইয়ের অনুপস্থিতিতে তার জন্য দু‘আ করে, তখন ফেরেশতাগণ বলেন, হে আলস্নাহ! কবুল করম্নন এবং তোমার জন্যও অনুরূপ হোক। [সহীহ মুসলিম, হা/২৭৩২; আবু দাউদ, হা/১৫৩৬; মুসনাদে আহমাদ, হা/২৭৫৯৮।]
অপর হাদীসে এসেছে,
عَنْ أَنَسٍ أَنَّ النَّبِىَّ - قَالَ : مَنْ نَصَرَ أَخَاهُ بِظَهْرِ الْغَيْبِ نَصَرَهُ اللهُ فِى الدُّنْيَا وَالآخِرَةِ
আনাস ইবনে মালিক (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী ﷺ বলেন, যে ব্যক্তি তার ভাইয়ের অনুপস্থিতিতে তার জন্য সাহায্য কামনা করবে, আলস্নাহ তা‘আলা তাকে দুনিয়া ও আখেরাতে সাহায্য করবেন। [বায়হাকী, হা/১৭১৩০; সহীহ কুনূযুল ইসলাম, হা/১৪০।]
عَنْ أَبِى الدَّرْدَاءِ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ مَا مِنْ عَبْدٍ مُسْلِمٍ يَدْعُو لأَخِيهِ بِظَهْرِ الْغَيْبِ إِلاَّ قَالَ الْمَلَكُ وَلَكَ بِمِثْلٍ
আবু দারদা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুলস্নাহ (সাঃ) বলেছেন, যখন কোন মুসলিম তার কোন ভাইয়ের অনুপস্থিতিতে তার জন্য দু‘আ করে, তখন ফেরেশতাগণ বলেন, হে আলস্নাহ! কবুল করম্নন এবং তোমার জন্যও অনুরূপ হোক। [সহীহ মুসলিম, হা/২৭৩২; আবু দাউদ, হা/১৫৩৬; মুসনাদে আহমাদ, হা/২৭৫৯৮।]
অপর হাদীসে এসেছে,
عَنْ أَنَسٍ أَنَّ النَّبِىَّ - قَالَ : مَنْ نَصَرَ أَخَاهُ بِظَهْرِ الْغَيْبِ نَصَرَهُ اللهُ فِى الدُّنْيَا وَالآخِرَةِ
আনাস ইবনে মালিক (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী ﷺ বলেন, যে ব্যক্তি তার ভাইয়ের অনুপস্থিতিতে তার জন্য সাহায্য কামনা করবে, আলস্নাহ তা‘আলা তাকে দুনিয়া ও আখেরাতে সাহায্য করবেন। [বায়হাকী, হা/১৭১৩০; সহীহ কুনূযুল ইসলাম, হা/১৪০।]
اَلْهِدَايَةُ (আল-হিদায়াতু) শব্দটি هدى মূল অক্ষর থেকে বাবে ضَرَبَ এর মাছদার। এর অর্থ হচ্ছে, পথ প্রদর্শন করা, রাসত্মা দেখিয়ে দেয়া। এর দু’টি পর্যায় রয়েছে। যেমন-
১. إرَائَةُ الطَّرِيْقِ إلٰى الْمَطْلُوْبِ তথা উদ্দেশ্যস্থলে পৌঁছার পথ দেখিয়ে দেওয়া। এ হিসেবে কুরআন-হাদীস, নবী, রাসূলগণ ও তাদের উত্তরসূরীগণ হচ্ছেন, هَادِى তথা পথ প্রদর্শক।
২. اَلْإيْصَالُ إلٰى الْمَطْلُوْبِ তথা একেবারে উদ্দেশ্যস্থলে পৌঁছিয়ে দেয়া। এ ধরনের হেদায়াত কেবল আলস্নাহর জন্য খাস। আলস্নাহ তা‘আলা বলেন,
﴿اِنَّكَ لَا تَهْدِيْ مَنْ اَحْبَبْتَ وَلٰكِنَّ اللهَ يَهْدِيْ مَنْ يَّشَآءُۚ وَهُوَ اَعْلَمُ بِالْمُهْتَدِيْنَ﴾
তুমি যাকে ভালোবাস, ইচ্ছা করলেই তাকে সৎপথে আনতে পারবে না। তবে আলস্নাহ যাকে ইচ্ছা সৎপথে আনয়ন করেন। আর সৎপথ অনুসারীদের সম্পর্কে তিনিই ভালো জানেন’’। (সূরা ক্বাসাস- ৫৬)
وَاللهُ يَهْدِيْ مَنْ يَّشَآءُ إِلَى صِرَاطٍ مُسْتَقِيْمٍ
আলস্নাহর যাকে ইচ্ছা তাকে সঠিক পথ প্রদর্শণ করেন। ( সুরা নুর-৪৬
উলেস্নখ্য যে, শাব্দিক অর্থে দিক থেকে হেদায়াত বলতে ভালো-মন্দ উভয় প্রকার হেদায়াতকেই বুঝানো হয়ে থাকে। যেমন- আলস্নাহ তা‘আলা বলেন,
﴿وَهَدَيْنَاهُ النَّجْدَيْنِ﴾
আর আমরা কি তাকে (ভাল ও মন্দ) দুটি পথই দেখাইনি? (সূরা বালাদ- ১০)
তবে এখানে اَلْهِدَايَةُ (আল-হিদায়াতু) অর্থ সুপথ প্রদর্শন ও তার তাওফীক কামনা করা। আলস্নাহ তা‘আলা তাঁর রাসূলকে বলেন,
﴿وَإِنَّكَ لَتَهْدِيْ إِلَى صِرَاطٍ مُسْتَقِيْمٍ﴾
নিশ্চয়ই তুমি সরল পথ প্রদর্শন করে থাক। (সূরা শূরা- ৫২)
অনুরূপভাবে জান্নাতবাসীরা আলস্নাহর প্রশংসা করে বলবে,
﴿الْحَمْدُ للهِ الَّذِيْ هَدَانَا لِهَذَا وَمَا كُنَّا لِنَهْتَدِيَ لَوْلاَ أَنْ هَدَانَا اللهُ﴾
যাবতীয় প্রশংসা আলস্নাহর জন্য, যিনি আমাদেরকে এর পথ প্রদর্শন করেছেন। আর আলস্নাহ আমাদের হেদায়াত না করলে আমরা হেদায়াতপ্রাপ্ত হতাম না। (সূরা আ‘রাফ- ৪৩)
১. إرَائَةُ الطَّرِيْقِ إلٰى الْمَطْلُوْبِ তথা উদ্দেশ্যস্থলে পৌঁছার পথ দেখিয়ে দেওয়া। এ হিসেবে কুরআন-হাদীস, নবী, রাসূলগণ ও তাদের উত্তরসূরীগণ হচ্ছেন, هَادِى তথা পথ প্রদর্শক।
২. اَلْإيْصَالُ إلٰى الْمَطْلُوْبِ তথা একেবারে উদ্দেশ্যস্থলে পৌঁছিয়ে দেয়া। এ ধরনের হেদায়াত কেবল আলস্নাহর জন্য খাস। আলস্নাহ তা‘আলা বলেন,
﴿اِنَّكَ لَا تَهْدِيْ مَنْ اَحْبَبْتَ وَلٰكِنَّ اللهَ يَهْدِيْ مَنْ يَّشَآءُۚ وَهُوَ اَعْلَمُ بِالْمُهْتَدِيْنَ﴾
তুমি যাকে ভালোবাস, ইচ্ছা করলেই তাকে সৎপথে আনতে পারবে না। তবে আলস্নাহ যাকে ইচ্ছা সৎপথে আনয়ন করেন। আর সৎপথ অনুসারীদের সম্পর্কে তিনিই ভালো জানেন’’। (সূরা ক্বাসাস- ৫৬)
وَاللهُ يَهْدِيْ مَنْ يَّشَآءُ إِلَى صِرَاطٍ مُسْتَقِيْمٍ
আলস্নাহর যাকে ইচ্ছা তাকে সঠিক পথ প্রদর্শণ করেন। ( সুরা নুর-৪৬
উলেস্নখ্য যে, শাব্দিক অর্থে দিক থেকে হেদায়াত বলতে ভালো-মন্দ উভয় প্রকার হেদায়াতকেই বুঝানো হয়ে থাকে। যেমন- আলস্নাহ তা‘আলা বলেন,
﴿وَهَدَيْنَاهُ النَّجْدَيْنِ﴾
আর আমরা কি তাকে (ভাল ও মন্দ) দুটি পথই দেখাইনি? (সূরা বালাদ- ১০)
তবে এখানে اَلْهِدَايَةُ (আল-হিদায়াতু) অর্থ সুপথ প্রদর্শন ও তার তাওফীক কামনা করা। আলস্নাহ তা‘আলা তাঁর রাসূলকে বলেন,
﴿وَإِنَّكَ لَتَهْدِيْ إِلَى صِرَاطٍ مُسْتَقِيْمٍ﴾
নিশ্চয়ই তুমি সরল পথ প্রদর্শন করে থাক। (সূরা শূরা- ৫২)
অনুরূপভাবে জান্নাতবাসীরা আলস্নাহর প্রশংসা করে বলবে,
﴿الْحَمْدُ للهِ الَّذِيْ هَدَانَا لِهَذَا وَمَا كُنَّا لِنَهْتَدِيَ لَوْلاَ أَنْ هَدَانَا اللهُ﴾
যাবতীয় প্রশংসা আলস্নাহর জন্য, যিনি আমাদেরকে এর পথ প্রদর্শন করেছেন। আর আলস্নাহ আমাদের হেদায়াত না করলে আমরা হেদায়াতপ্রাপ্ত হতাম না। (সূরা আ‘রাফ- ৪৩)
আলস্নাহ তা‘আলা স্বীয় বান্দাদেরকে দু’ভাবে হেদায়াত করে থাকেন। সেগুলো হলো :
১. ইলমের হেদায়াত :
প্রথমত আলস্নাহ তা‘আলা বন্দাকে ইলম প্রদান করার মাধ্যমে হেদায়াত প্রদান করেন। আর তা হচ্ছে মহাগ্রন্থ আল কুরআন। যেমন-আলস্নাহ তা‘আলা বলেন,
هُدًى لِلْمُتَّقِينَ
এটি মুত্তাক্বীদের জন্য হেদায়াত স্বরূপ। (সূরা বাক্বারাহ- ২)
অন্য আয়াতে বলেন,
هُدًى لِلنَّاسِ
মানবজাতির জন্য হেদায়াত। (সূরা বাক্বারাহ- ১৮৫)
অপর আয়াতে বলেন,
يَهْدِيْ اِلَى الْحَقِّ وَ اِلَى طَرِيْقٍ مُسْتَقِيْمٍ
এটা মানুষকে সঠিক এবং সোজাপথ দেখায়। ( সুরা আহকাফ-৩০)
অত্র আয়াত দুটিতে আলস্নাহ তা‘আলা কুরআনকে হেদায়াত হিসেবে সাব্যসত্মকরেছেন। আর কুরআনই হচ্ছে সকল জ্ঞানের আধার। তাছাড়া হেদায়াত পাওয়ার জন্য জ্ঞানের প্রয়োজনীয়তাই সবচেয়ে বেশি। অন্যথায় হেদায়াত পাওয়া সম্ভব নয়।
২. ইলম অনুযায়ী আমল করার তাওফীক লাভের হেদায়াত :
কোন ব্যক্তি কেবল ইলমের হেদায়াতের মধ্যেমেই পরিপূর্ণ হেদায়াত লাভ করতে পারে না। তার জন্য প্রয়োজন উক্ত ইলম অনুযায়ী আমল করা। আলস্নাহ তা‘আলা যখন কোন বান্দাকে উক্ত আমল করার তাওফীক দান করেন, তখন সে-ই পরিপূর্ণ হেদায়াতপ্রাপ্ত হয়।
১. ইলমের হেদায়াত :
প্রথমত আলস্নাহ তা‘আলা বন্দাকে ইলম প্রদান করার মাধ্যমে হেদায়াত প্রদান করেন। আর তা হচ্ছে মহাগ্রন্থ আল কুরআন। যেমন-আলস্নাহ তা‘আলা বলেন,
هُدًى لِلْمُتَّقِينَ
এটি মুত্তাক্বীদের জন্য হেদায়াত স্বরূপ। (সূরা বাক্বারাহ- ২)
অন্য আয়াতে বলেন,
هُدًى لِلنَّاسِ
মানবজাতির জন্য হেদায়াত। (সূরা বাক্বারাহ- ১৮৫)
অপর আয়াতে বলেন,
يَهْدِيْ اِلَى الْحَقِّ وَ اِلَى طَرِيْقٍ مُسْتَقِيْمٍ
এটা মানুষকে সঠিক এবং সোজাপথ দেখায়। ( সুরা আহকাফ-৩০)
অত্র আয়াত দুটিতে আলস্নাহ তা‘আলা কুরআনকে হেদায়াত হিসেবে সাব্যসত্মকরেছেন। আর কুরআনই হচ্ছে সকল জ্ঞানের আধার। তাছাড়া হেদায়াত পাওয়ার জন্য জ্ঞানের প্রয়োজনীয়তাই সবচেয়ে বেশি। অন্যথায় হেদায়াত পাওয়া সম্ভব নয়।
২. ইলম অনুযায়ী আমল করার তাওফীক লাভের হেদায়াত :
কোন ব্যক্তি কেবল ইলমের হেদায়াতের মধ্যেমেই পরিপূর্ণ হেদায়াত লাভ করতে পারে না। তার জন্য প্রয়োজন উক্ত ইলম অনুযায়ী আমল করা। আলস্নাহ তা‘আলা যখন কোন বান্দাকে উক্ত আমল করার তাওফীক দান করেন, তখন সে-ই পরিপূর্ণ হেদায়াতপ্রাপ্ত হয়।
এখানে هِدَايَةْ (হেদায়াত) কথাটি নবী, অলী ও সাধারণ উম্মত এমনকি সকল মাখলূকের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। কেননা প্রত্যেকের জন্য সরবিশেষে হেদায়াতের প্রয়োজন রয়েছে। যেমন-
প্রথম সত্মর :
এটি হচ্ছে আলস্নাহ তা‘আলার সাধারণ হেদায়াত। আলস্নাহ এটি সকল সৃষ্টির মাঝে প্রয়োজানুসারে ভাগ করে দিয়েছেন। মানবজাতি, জিন, জড়পদার্থ, উদ্ভিদ, প্রাণীজগত ইত্যাদি সবই এর অমত্মর্ভুক্ত। এরা সকলেই আলস্নাহর হেদায়াত অনুযায়ী চলাফেরা করে এবং স্ব স্ব নিয়মে আলস্নাহর গুণগান করে থাকে। আলস্নাহ তা‘আলা বলেন,
﴿اَلَمْ تَرَ اَنَّ اللهَ يُسَبِّحُ لَهٗ مَنْ فِى السَّمَاوَاتِ وَالْاَرْضِ وَالطَّيْرُ صَآفَّاتٍ ؕ كُلٌّ قَدْ عَلِمَ صَلَاتَهٗ وَتَسْبِيْحَهٗؕ وَاللهُ عَلِيْمٌ ۢبِمَا يَفْعَلُوْنَ﴾
তুমি কি দেখ না যে, আকাশম-লী ও পৃথিবীতে যারা আছে তারা এবং উড্ডীয়মান বিহঙ্গকুল আলস্নাহর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে? প্রত্যেকেই তাঁর ইবাদাত ও পবিত্রতা ঘোষণার পদ্ধতি সম্পর্কে জানে। আর তারা যা করে সে বিষয়ে আলস্নাহ সম্যক অবগত। (সূরা নূর- ৪১)
অন্য আয়াতে আলস্নাহ তা‘আলা বলেন,
﴿الَّذِيْ أَعْطٰى كُلَّ شَيْءٍ خَلْقَهُ ثُمَّ هَدٰى﴾
যিনি প্রত্যেক বসুর বিশেষ আকৃতি দান করেছেন। অতঃপর তার উপযোগী হেদায়াত প্রদান করেছেন। (সূরা ত্বায়া-হা- ৫০)
দ্বিতীয় সত্মর: এ সত্মরে রয়েছে জিন ও ইনসান- এ দুটি জাতি, যারা অন্যান্য সৃষ্টির চেয়ে তীক্ষ্ণ ও উচ্চ জ্ঞানসম্পন্ন। আলস্নাহ তা‘আলা নবীগণের মাধ্যমে এদের নিকট বিশেষ হেদায়াত প্রেরণ করেছেন। সুতরাং তাদের মধ্যে যারাই এই হিদায়াতকে গ্রহণ করবে, তারাই প্রকৃত সফলতা লাভ করতে সক্ষম হবে। আর যারাই তা প্রত্যাখ্যান করবে, তারাই হবে সবচেয়ে বড় হতভাগা।
তৃতীয় সত্মর:
এটি হচ্ছে হেদায়াতের চূড়ামত্ম সত্মর। এটি আলস্নাহ তা‘আলা বিশেষভাবে কেবল মুমিন ও মুত্তাকী বান্দাদেরকেই দান করে থাকেন। যাতে তারা আলস্নাহ তা‘আলার অধিক নৈকট্য লাভ করতে পারে।
হেদায়াতের সত্মরসমূহের মধ্যে এই তৃতীয় সত্মরটিই হচ্ছে মানুষের প্রকৃত উন্নতির ক্ষেত্র। এই সত্মরের লোকেরা অধিকতর হেদায়াত লাভের জন্য সর্বদা আলস্নাহর রহমত ও তাওফীক লাভে সচেষ্ট থাকেন। প্রতিনিয়ত এই প্রচেষ্টাই মানুষকে সর্বোচ্চ মর্যাদায় উন্নীত করেছে।
প্রথম সত্মর :
এটি হচ্ছে আলস্নাহ তা‘আলার সাধারণ হেদায়াত। আলস্নাহ এটি সকল সৃষ্টির মাঝে প্রয়োজানুসারে ভাগ করে দিয়েছেন। মানবজাতি, জিন, জড়পদার্থ, উদ্ভিদ, প্রাণীজগত ইত্যাদি সবই এর অমত্মর্ভুক্ত। এরা সকলেই আলস্নাহর হেদায়াত অনুযায়ী চলাফেরা করে এবং স্ব স্ব নিয়মে আলস্নাহর গুণগান করে থাকে। আলস্নাহ তা‘আলা বলেন,
﴿اَلَمْ تَرَ اَنَّ اللهَ يُسَبِّحُ لَهٗ مَنْ فِى السَّمَاوَاتِ وَالْاَرْضِ وَالطَّيْرُ صَآفَّاتٍ ؕ كُلٌّ قَدْ عَلِمَ صَلَاتَهٗ وَتَسْبِيْحَهٗؕ وَاللهُ عَلِيْمٌ ۢبِمَا يَفْعَلُوْنَ﴾
তুমি কি দেখ না যে, আকাশম-লী ও পৃথিবীতে যারা আছে তারা এবং উড্ডীয়মান বিহঙ্গকুল আলস্নাহর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে? প্রত্যেকেই তাঁর ইবাদাত ও পবিত্রতা ঘোষণার পদ্ধতি সম্পর্কে জানে। আর তারা যা করে সে বিষয়ে আলস্নাহ সম্যক অবগত। (সূরা নূর- ৪১)
অন্য আয়াতে আলস্নাহ তা‘আলা বলেন,
﴿الَّذِيْ أَعْطٰى كُلَّ شَيْءٍ خَلْقَهُ ثُمَّ هَدٰى﴾
যিনি প্রত্যেক বসুর বিশেষ আকৃতি দান করেছেন। অতঃপর তার উপযোগী হেদায়াত প্রদান করেছেন। (সূরা ত্বায়া-হা- ৫০)
দ্বিতীয় সত্মর: এ সত্মরে রয়েছে জিন ও ইনসান- এ দুটি জাতি, যারা অন্যান্য সৃষ্টির চেয়ে তীক্ষ্ণ ও উচ্চ জ্ঞানসম্পন্ন। আলস্নাহ তা‘আলা নবীগণের মাধ্যমে এদের নিকট বিশেষ হেদায়াত প্রেরণ করেছেন। সুতরাং তাদের মধ্যে যারাই এই হিদায়াতকে গ্রহণ করবে, তারাই প্রকৃত সফলতা লাভ করতে সক্ষম হবে। আর যারাই তা প্রত্যাখ্যান করবে, তারাই হবে সবচেয়ে বড় হতভাগা।
তৃতীয় সত্মর:
এটি হচ্ছে হেদায়াতের চূড়ামত্ম সত্মর। এটি আলস্নাহ তা‘আলা বিশেষভাবে কেবল মুমিন ও মুত্তাকী বান্দাদেরকেই দান করে থাকেন। যাতে তারা আলস্নাহ তা‘আলার অধিক নৈকট্য লাভ করতে পারে।
হেদায়াতের সত্মরসমূহের মধ্যে এই তৃতীয় সত্মরটিই হচ্ছে মানুষের প্রকৃত উন্নতির ক্ষেত্র। এই সত্মরের লোকেরা অধিকতর হেদায়াত লাভের জন্য সর্বদা আলস্নাহর রহমত ও তাওফীক লাভে সচেষ্ট থাকেন। প্রতিনিয়ত এই প্রচেষ্টাই মানুষকে সর্বোচ্চ মর্যাদায় উন্নীত করেছে।
আলস্নাহ তা’আলা মানুষ সৃষ্টির পাশাপাশি, তাদেও চিরশত্রম্ন শয়তানকেও সৃষ্টি করেছেন। অত:পর তাকে এমন কিছু ক্ষমতাও প্রদান করেছেন, যার দ্বারা সে মানুষকে অতি সহজেই বিভ্রামত্ম কওে ফেরতে পারে। অপরদিকে আলস্নাহ তা’আলা নিজের কাছে এমন কিছু বিষয় রেখে দিয়েছেন, যার কাছে শয়তানের সকল কৌশল অকার্যকর।
শয়তান আদম আ: থেকে নিয়ে এখন পর্যমত্ম মানুসকে বিভ্রামত্ম করে যাচ্ছে। সে তার প্রত্যেকটি অভিজ্ঞতা মানুষকে হেদায়াত থেকে দূরে রাখার কাজে ব্যবহার করে। এমতাবস্থায় মানুষের জন্য একমাত্র আলস্নাহ ছাড়া অন্য কোন আশ্রয় নেই। সুতরাং শয়তানের ধোঁকা থেকে বাঁচার জন্য আলস্নাহর কাছে প্রার্থনা করা ছাড়া অন্য বিকল্প নেই।
শয়তান আদম আ: থেকে নিয়ে এখন পর্যমত্ম মানুসকে বিভ্রামত্ম করে যাচ্ছে। সে তার প্রত্যেকটি অভিজ্ঞতা মানুষকে হেদায়াত থেকে দূরে রাখার কাজে ব্যবহার করে। এমতাবস্থায় মানুষের জন্য একমাত্র আলস্নাহ ছাড়া অন্য কোন আশ্রয় নেই। সুতরাং শয়তানের ধোঁকা থেকে বাঁচার জন্য আলস্নাহর কাছে প্রার্থনা করা ছাড়া অন্য বিকল্প নেই।
মুমিনদের হেদায়ত প্রার্থনা করার বিষয়টি কুরআন ও সুন্নাহ দ্বারা অকাট্যভাবে প্রমানিত। রাসূলুলস্নাহ নিজেও হেদায়াতপ্রার্থনা করতেন, অথচ আলস্নাহ তা’আলা তার সামনের ও পিছনের সকল গুনাহ মাফ করে দিয়েছিলেন। মুমিনদের হেদায়ত প্রার্থনা করার তাvপর্য হচ্ছে-
হেদায়াতের উপর প্রতিষ্টিত থাকা:
এতে কোন সন্দেহ নেই যে, মুমিনগণ হেদায়াতের উপর রয়েছে। সুতরাং মুমিনদের ক্ষেত্রে হেদায়াত প্রার্থনার অর্থ হচ্ছে আলস্নাহর তা‘আলার কাছে হেদায়াতের উপর দৃঢ় থাকার জন্য দু’আ করা যাতে তিনি তাদেরকে পথভ্রষ্ট করে না দেন এবং এ অবস্থাতেই মৃত্যুবরণ করার তাওফীক দান করেন। এ কারণেই আলস্নাহ তা’আলা দু’আ শিক্ষা দিয়েছেন যে,
رَبَّنَا لَا تُزِغْ قُلُوْبَنَا بَعْدَ إِذْ هَدَيْتَنَا وَهَبْ لَنَا مِنْ لَّدُنْكَ رَحْمَةً إِنَّكَ أَنْتَ الْوَهَّابُ
র্থ : হে আমাদের প্রতিপালক! হেদায়াত দানের পর আপনি আমাদের অমত্মরগুলোকে বাঁকা করে দেবেন না, আমাদেরকে আপনার নিকট হতে রহমত দান করম্নন, অবশ্যই আপনি মহান দাতা। (সূরা আলে ইমরান- ৮)
পরিপূর্ণ ঈমানদার হওয়া:
সব মুমিনই সমপরিমাণ ঈমানের অধিকারী নয়। তাদেও কারো কারো ঈমান পাহাড়ের মতো দৃঢ়, আবার কারো কারো ঈমান একেবারেই দূর্বল। সুতরাং যাদের ঈমান দুর্বল তাদেও হেদায়াত প্রার্থনা করার মর্মার্থ হলো, আলস্নাহ তা’আলা যেন তাদেরকে পরিপূর্ণ ঈমান দান করেন।
আলস্নাহ তা‘আলা বলেন,
ياأَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ ادْخُلُواْ فِي السِّلْمِ كَآفَّةً وَلاَ تَتَّبِعُواْ خُطُوَاتِ الشَّيْطَانِ إِنَّهُ لَكُمْ عَدُوٌّ مُّبِينٌ
হে ঈমানদারগণ! তোমরা পরিপূর্ণভাবে ইসলামে প্রবেশ করো এবং শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করো না। নিশ্চয় সে তোমাদেও প্রকাশ্য শত্রম্ন। (সূরা বাকারা-২০৮)
হেদায়াত বৃদ্ধি পাওয়া :
আলস্নাহ তা‘আলা মুমিনদের ঈমান ও হেদায়ত বৃদ্ধি করেন। আলস্নাহ তা‘আলা বলেন,
وَلَمَّا رَأى الْمُؤْمِنُونَ الْأَحْزَابَ قَالُوا هَذَا مَا وَعَدَنَا اللَّهُ وَرَسُولُهُ وَصَدَقَ اللَّهُ وَرَسُولُهُ وَمَا زَادَهُمْ إِلَّا إِيمَاناً وَتَسْلِيماً
যখন মুমিনরা সম্মিলিত শত্রম্নবাহিনীকে দেখতে পেল তখন তারা বলে উঠল, আলস্নাহ ও তাঁর রাসূল তো আমাদেরকে এরই প্রতিশ্রম্নতি দিয়েছিলেন এবং তাঁর রাসূল সত্যই বলেছেন। এতে তাদের ঈমান ও আনুগত্য আরো বৃদ্ধি পেল। (সূরা আহযাব-২২)
وَالَّذِينَ اهْتَدَوْا زَادَهُمْ هُدًى وَآتَاهُمْ تَقْواهُمْ
আর যারা হেদায়াত লাভ করেছে, আলস্নাহ তাদেরকে আরো বেশি হেদায়াত দেন এবং তাদের উপযোগী তাকওয়া দান করেন।(সূরা মুহাম্মাদ-১৭)
হেদায়াতের উপর প্রতিষ্টিত থাকা:
এতে কোন সন্দেহ নেই যে, মুমিনগণ হেদায়াতের উপর রয়েছে। সুতরাং মুমিনদের ক্ষেত্রে হেদায়াত প্রার্থনার অর্থ হচ্ছে আলস্নাহর তা‘আলার কাছে হেদায়াতের উপর দৃঢ় থাকার জন্য দু’আ করা যাতে তিনি তাদেরকে পথভ্রষ্ট করে না দেন এবং এ অবস্থাতেই মৃত্যুবরণ করার তাওফীক দান করেন। এ কারণেই আলস্নাহ তা’আলা দু’আ শিক্ষা দিয়েছেন যে,
رَبَّنَا لَا تُزِغْ قُلُوْبَنَا بَعْدَ إِذْ هَدَيْتَنَا وَهَبْ لَنَا مِنْ لَّدُنْكَ رَحْمَةً إِنَّكَ أَنْتَ الْوَهَّابُ
র্থ : হে আমাদের প্রতিপালক! হেদায়াত দানের পর আপনি আমাদের অমত্মরগুলোকে বাঁকা করে দেবেন না, আমাদেরকে আপনার নিকট হতে রহমত দান করম্নন, অবশ্যই আপনি মহান দাতা। (সূরা আলে ইমরান- ৮)
পরিপূর্ণ ঈমানদার হওয়া:
সব মুমিনই সমপরিমাণ ঈমানের অধিকারী নয়। তাদেও কারো কারো ঈমান পাহাড়ের মতো দৃঢ়, আবার কারো কারো ঈমান একেবারেই দূর্বল। সুতরাং যাদের ঈমান দুর্বল তাদেও হেদায়াত প্রার্থনা করার মর্মার্থ হলো, আলস্নাহ তা’আলা যেন তাদেরকে পরিপূর্ণ ঈমান দান করেন।
আলস্নাহ তা‘আলা বলেন,
ياأَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ ادْخُلُواْ فِي السِّلْمِ كَآفَّةً وَلاَ تَتَّبِعُواْ خُطُوَاتِ الشَّيْطَانِ إِنَّهُ لَكُمْ عَدُوٌّ مُّبِينٌ
হে ঈমানদারগণ! তোমরা পরিপূর্ণভাবে ইসলামে প্রবেশ করো এবং শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করো না। নিশ্চয় সে তোমাদেও প্রকাশ্য শত্রম্ন। (সূরা বাকারা-২০৮)
হেদায়াত বৃদ্ধি পাওয়া :
আলস্নাহ তা‘আলা মুমিনদের ঈমান ও হেদায়ত বৃদ্ধি করেন। আলস্নাহ তা‘আলা বলেন,
وَلَمَّا رَأى الْمُؤْمِنُونَ الْأَحْزَابَ قَالُوا هَذَا مَا وَعَدَنَا اللَّهُ وَرَسُولُهُ وَصَدَقَ اللَّهُ وَرَسُولُهُ وَمَا زَادَهُمْ إِلَّا إِيمَاناً وَتَسْلِيماً
যখন মুমিনরা সম্মিলিত শত্রম্নবাহিনীকে দেখতে পেল তখন তারা বলে উঠল, আলস্নাহ ও তাঁর রাসূল তো আমাদেরকে এরই প্রতিশ্রম্নতি দিয়েছিলেন এবং তাঁর রাসূল সত্যই বলেছেন। এতে তাদের ঈমান ও আনুগত্য আরো বৃদ্ধি পেল। (সূরা আহযাব-২২)
وَالَّذِينَ اهْتَدَوْا زَادَهُمْ هُدًى وَآتَاهُمْ تَقْواهُمْ
আর যারা হেদায়াত লাভ করেছে, আলস্নাহ তাদেরকে আরো বেশি হেদায়াত দেন এবং তাদের উপযোগী তাকওয়া দান করেন।(সূরা মুহাম্মাদ-১৭)
নিম্নে হেদায়াত লাভের কয়েকটি উপায় তুলে ধরা হলো :
আলস্নাহকে শক্তভাবে ধারণ করা :
হেদায়াতের মূল উৎসই হচ্ছেন মহান আলস্নাহ তা‘আলা। তিনি যাকে ইচ্ছা হেদায়াত দান করে থাকে। সুতরাং যারা আলস্নাহকে শক্তভাবে ধারণ করবে তথা আলস্নাহর উপর ঈমান আনয়ন করবে, একমাত্র তাঁরই উপর নির্ভরশীল হবে, তার কাছেই সাহায্য প্রার্থনা করবে, তাকে ছাড়া অন্য কাউকে ভয় করবে না, আলস্নাহ তাদেরকেই হেদয়াত প্রদান করবেন। কুরআন মাজীদে তিনি বলেন,
وَمَنْ يَّعْتَصِمْ بِاللهِ فَقَدْ هُدِيَ اِلٰى صِرَاطٍ مُّسْتَقِيْمٍ
আর যে ব্যক্তি শক্তভাবে আলস্নাহকে ধারণ করবে, সে সৎপথে পরিচালিত হবে। (সূরা আলে ইমরান- ১০১)
আলস্নাহর ইবাদাত করা :
হেদায়াত লাভের প্রধান নিদর্শন হচ্ছে, আলস্নাহর ইবাদত করা। কেননা আলস্নাহর ইবাদত করা ছাড়া কোন ব্যক্তি হেদায়ত লাভ করতে পারেনা। আর আলস্নাহ তা’আলা তাকেই সঠিক পথ প্রদর্শন করেন, যে ব্যক্তি একনিষ্ঠভাবে আলস্নাহর প্রতি পরিপূর্ণ ঈমান আনয়ন করে এবং তার ইবাদতে ব্যসত্ম থাকে। হাদীসে কুদসীতে এসেছে.
عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللهِ : يَقُولُ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ : أَنَا عِنْدَ ظَنِّ عَبْدِيْ بِيْ، وَأَنَا مَعَهٗ حِيْنَ يَذْكُرُنِيْ، إِنْ ذَكَرَنِيْ فِيْ نَفْسِه ، ذَكَرْتُهٗ فِيْ نَفْسِيْ، وَإِنْ ذَكَرَنِيْ فِيْ مَلَإٍ، ذَكَرْتُهٗ فِيْ مَلَإٍ هُمْ خَيْرٌ مِنْهُمْ، وَإِنْ تَقَرَّبَ مِنِّيْ شِبْرًا، تَقَرَّبْتُ إِلَيْهِ ذِرَاعًا، وَإِنْ تَقَرَّبَ إِلَيَّ ذِرَاعًا، تَقَرَّبْتُ مِنْهُ بَاعًا، وَإِنْ أَتَانِيْ يَمْشِي أَتَيْتُهٗ هَرْوَلَةً -
আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুলস্নাহ ﷺ বলেছেন, আলস্নাহ তা’আলা বলেন, আমি বান্দার ধারণা অনুযায়ী নিকটে আছি। যখন সে আমার যিক্র (স্মরণ) করে, সে সময় আমি তার সাথে থাকি। বান্দা আমাকে একাকী স্মরণ করলে আমিও তাকে একাকী স্মরণ করি। আর যদি সে আমাকে কোন সভায় আমার কথা স্মরণ করে, তাহলে আমি তাকে তার চেয়ে উত্তম সভায় স্মরণ করি। যদি সে আমার দিকে এক বিঘত অগ্রসর হয়, তাহলে আমি তার দিকে এক হাত এগিয়ে আসি। যদি সে আমার দিকে হেঁটে আসে, তাহলে আমি তার দিকে দৌঁড়ে আসি। [সহীহ বুখারী, হা/৭৪০৫, সহীহ মুসলিম, হা/৬৯৮১,৭০০৮,৭১২৮; তিরমিযী হা/৩৬০৩; ইবনে মাযাহ, হা/৩৮৩২; মুসনাদে আহমাদ, হা/৭৪১৬; সহীহ তারগীব ওয়াত তারহীব, হা/৫১৪; মিশকাত, হা/২২৬৪]
অতএব হেদায়াত লাভ করতে প্রথমে নিজে আলস্নাহর দিকে অগ্রসর হতে হবে, তাহলে আলস্নাহ তা‘আলা তার দিকে অগ্রসর হবেন এবং তাকে সঠিক পথে হেদায়াত প্রদান করবেন।
রাসূলুলস্নাহ ﷺ Gi Av`k© AbymiY Kiv :
হোদয়াত লাভের জন্য একমাত্র অনুসরণীয় আদর্শ হচ্ছে রাসূলুলস্নাহ ﷺ Gi RxebPwiÎ| †Kbbv wZwb wQ‡jb m‡ev©”P †n`vqv‡Zi Dci cÖwZwôZ| আলস্নাহ তা‘আলা বলেন,
مَنْ يُطِعِ الرَّسُولَ فَقَدْ أَطَاعَ اللَّهَ وَمَنْ تَوَلَّى فَمَا أَرْسَلْنَاكَ عَلَيْهِمْ حَفِيظاً
যে ব্যক্তি রাসূলের আনুগত্য করল সে তো আলস্নাহর আনুগত্য করল এবং যে ব্যক্তি মুখ ফিরিয়ে নিল তবে মনে রেখো তোমাকে তাদের উপর তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে প্রেরণ করিনি।(সূরা নিসা- ৮০)
لَقَدْ كَانَ لَكُمْ فِيهِمْ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ لِمَنْ كَانَ يَرْجُو اللَّهَ وَالْيَوْمَ الْآخِرَ .....
তোমাদের মধ্যে যারা আলস্নাহ ও পরকালের দিনকে ভয় করে এবং আলস্নাহকে বেশি বেশি স্মরণ করে, তাদের জন্য আলস্নাহর রাসূলের মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ।(সূরা আহযাব-২১)
অতএব হেদায়ত পেতে হলে অবশ্যই পরিপূর্ণভাবে রাসূলুলস্নাহ ﷺ এর অনুসরণ করতে হবে।
মুত্তাকী হওয়া :
হোদয়াত লাভের প্রধান হকদার হচ্ছেন মুত্তাকীগণ। কেননা তারাই হচ্ছেন আলস্নাহ তা‘আলার প্রকৃত বান্দা। আলস্নাহ তা‘আলা তাদের হেদায়াতের জন্যই কুরআন নাযিল করেছেন। তিনি বলেন,
ذٰلِكَ الْكِتَابُ لَا رَيْبَۚ فِيْهِۚ هُدًى لِّلْمُتَّقِيْنَ
এটা ঐ গ্রন্থ যার মধ্যে কোনরূপ সন্দেহ নেই; আর মুত্তাক্বীদের জন্য এটা হেদায়াতস্বরূপ। (সূরা বাক্বারা- ২)
সুতরাং যে ব্যক্তি যত বেশি মুত্তাকী হতে সক্ষম হবে, সে ব্যক্তি আলস্নাহর পক্ষ থেকে তত বেশি হেদায়াত লাভ করতে সক্ষম হবে।
সৎকর্ম করা :
হেদায়াত লাভ করার অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে ঈমান। যারা যথাযথভাবে ঈমান আনয়ন করে এবং সৎকর্ম করে আলস্নাহ তা‘আলা তাদেরকে হেদায়াত দান করেন। তিনি বলেন,
﴿إِنَّ الَّذِيْنَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ يَهْدِيْهِمْ رَبُّهُمْ بِإِيْمَانِهِمْ﴾
নিশ্চয় যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে, তাদের পালনকর্তা তাদের ঈমানের মাধ্যমে তাদের পথ প্রদর্শন করেন। (সূরা ইউনুস- ৯)
অহির জ্ঞান অর্জন করা :
পৃথিবীতে সবচেয়ে উত্তম জ্ঞান হচ্ছে অহির জ্ঞান। এটি মানুষকে দুনিয়া ও আখিরাত উভয় জগতেই উপকৃত করে থাকে। অপরদিকে অহীই হচ্ছে আলস্নাহর পক্ষ থেকে মানবজাতির জন্য হেদায়াতস্বরূপ। সুতরাং হেদায়াত লাভ করতে হলে অবশ্যই অধিক হারে অহির জ্ঞান অর্জন করতে হবে। আলস্নাহ তা‘আলা বলেন,
قُلْ اِنْ ضَلَلْتُ فَاِنَّمَاۤ اَضِلُّ عَلٰى نَفْسِيْۚ وَاِنِ اهْتَدَيْتُ فَبِمَا يُوْحِيْۤ اِلَيَّ رَبِّيْؕ اِنَّهٗ سَمِيْعٌ قَرِيْبٌ
বলো, যদি আমি পথভ্রষ্ট হই, তবে তো নিজেরই ক্ষতি করব; আর যদি আমি সরল সঠিক পথের ওপর থাকি, তবে তা এজন্য সম্ভব হচ্ছে যে, আমার প্রতিপালক আমার প্রতি ওহী অবতীর্ণ করেন। নিশ্চয় তিনি সবকিছু শুনেন এবং তিনি অতি নিকটবর্তী। (সূরা সাবা- ৫০)
সর্বাত্মক চেষ্টা করা :
যারা হেদায়াত পাওয়ার জন্য সর্বদা আলস্নাহর রাসত্মায় সর্বাত্মক সংগ্রাম চালাবে, আলস্নাহ তা‘আলা তাদেরকে হেদায়াতের রাসত্মাসমূহ খুলে দেবেন। আলস্নাহ তা‘আলা বলেন,
﴿وَالَّذِيْنَ جَاهَدُوْا فِيْنَا لَنَهْدِيَنَّهُمْ سُبُلَنَا﴾
যারা আমার রাসায় সংগ্রাম করে, আমি অবশ্যই তাদেরকে আমার রাসাসমূহ দেখিয়ে থাকি। (সূরা আনকাবূত- ৬৯)
আলস্নাহকে শক্তভাবে ধারণ করা :
হেদায়াতের মূল উৎসই হচ্ছেন মহান আলস্নাহ তা‘আলা। তিনি যাকে ইচ্ছা হেদায়াত দান করে থাকে। সুতরাং যারা আলস্নাহকে শক্তভাবে ধারণ করবে তথা আলস্নাহর উপর ঈমান আনয়ন করবে, একমাত্র তাঁরই উপর নির্ভরশীল হবে, তার কাছেই সাহায্য প্রার্থনা করবে, তাকে ছাড়া অন্য কাউকে ভয় করবে না, আলস্নাহ তাদেরকেই হেদয়াত প্রদান করবেন। কুরআন মাজীদে তিনি বলেন,
وَمَنْ يَّعْتَصِمْ بِاللهِ فَقَدْ هُدِيَ اِلٰى صِرَاطٍ مُّسْتَقِيْمٍ
আর যে ব্যক্তি শক্তভাবে আলস্নাহকে ধারণ করবে, সে সৎপথে পরিচালিত হবে। (সূরা আলে ইমরান- ১০১)
আলস্নাহর ইবাদাত করা :
হেদায়াত লাভের প্রধান নিদর্শন হচ্ছে, আলস্নাহর ইবাদত করা। কেননা আলস্নাহর ইবাদত করা ছাড়া কোন ব্যক্তি হেদায়ত লাভ করতে পারেনা। আর আলস্নাহ তা’আলা তাকেই সঠিক পথ প্রদর্শন করেন, যে ব্যক্তি একনিষ্ঠভাবে আলস্নাহর প্রতি পরিপূর্ণ ঈমান আনয়ন করে এবং তার ইবাদতে ব্যসত্ম থাকে। হাদীসে কুদসীতে এসেছে.
عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللهِ : يَقُولُ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ : أَنَا عِنْدَ ظَنِّ عَبْدِيْ بِيْ، وَأَنَا مَعَهٗ حِيْنَ يَذْكُرُنِيْ، إِنْ ذَكَرَنِيْ فِيْ نَفْسِه ، ذَكَرْتُهٗ فِيْ نَفْسِيْ، وَإِنْ ذَكَرَنِيْ فِيْ مَلَإٍ، ذَكَرْتُهٗ فِيْ مَلَإٍ هُمْ خَيْرٌ مِنْهُمْ، وَإِنْ تَقَرَّبَ مِنِّيْ شِبْرًا، تَقَرَّبْتُ إِلَيْهِ ذِرَاعًا، وَإِنْ تَقَرَّبَ إِلَيَّ ذِرَاعًا، تَقَرَّبْتُ مِنْهُ بَاعًا، وَإِنْ أَتَانِيْ يَمْشِي أَتَيْتُهٗ هَرْوَلَةً -
আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুলস্নাহ ﷺ বলেছেন, আলস্নাহ তা’আলা বলেন, আমি বান্দার ধারণা অনুযায়ী নিকটে আছি। যখন সে আমার যিক্র (স্মরণ) করে, সে সময় আমি তার সাথে থাকি। বান্দা আমাকে একাকী স্মরণ করলে আমিও তাকে একাকী স্মরণ করি। আর যদি সে আমাকে কোন সভায় আমার কথা স্মরণ করে, তাহলে আমি তাকে তার চেয়ে উত্তম সভায় স্মরণ করি। যদি সে আমার দিকে এক বিঘত অগ্রসর হয়, তাহলে আমি তার দিকে এক হাত এগিয়ে আসি। যদি সে আমার দিকে হেঁটে আসে, তাহলে আমি তার দিকে দৌঁড়ে আসি। [সহীহ বুখারী, হা/৭৪০৫, সহীহ মুসলিম, হা/৬৯৮১,৭০০৮,৭১২৮; তিরমিযী হা/৩৬০৩; ইবনে মাযাহ, হা/৩৮৩২; মুসনাদে আহমাদ, হা/৭৪১৬; সহীহ তারগীব ওয়াত তারহীব, হা/৫১৪; মিশকাত, হা/২২৬৪]
অতএব হেদায়াত লাভ করতে প্রথমে নিজে আলস্নাহর দিকে অগ্রসর হতে হবে, তাহলে আলস্নাহ তা‘আলা তার দিকে অগ্রসর হবেন এবং তাকে সঠিক পথে হেদায়াত প্রদান করবেন।
রাসূলুলস্নাহ ﷺ Gi Av`k© AbymiY Kiv :
হোদয়াত লাভের জন্য একমাত্র অনুসরণীয় আদর্শ হচ্ছে রাসূলুলস্নাহ ﷺ Gi RxebPwiÎ| †Kbbv wZwb wQ‡jb m‡ev©”P †n`vqv‡Zi Dci cÖwZwôZ| আলস্নাহ তা‘আলা বলেন,
مَنْ يُطِعِ الرَّسُولَ فَقَدْ أَطَاعَ اللَّهَ وَمَنْ تَوَلَّى فَمَا أَرْسَلْنَاكَ عَلَيْهِمْ حَفِيظاً
যে ব্যক্তি রাসূলের আনুগত্য করল সে তো আলস্নাহর আনুগত্য করল এবং যে ব্যক্তি মুখ ফিরিয়ে নিল তবে মনে রেখো তোমাকে তাদের উপর তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে প্রেরণ করিনি।(সূরা নিসা- ৮০)
لَقَدْ كَانَ لَكُمْ فِيهِمْ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ لِمَنْ كَانَ يَرْجُو اللَّهَ وَالْيَوْمَ الْآخِرَ .....
তোমাদের মধ্যে যারা আলস্নাহ ও পরকালের দিনকে ভয় করে এবং আলস্নাহকে বেশি বেশি স্মরণ করে, তাদের জন্য আলস্নাহর রাসূলের মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ।(সূরা আহযাব-২১)
অতএব হেদায়ত পেতে হলে অবশ্যই পরিপূর্ণভাবে রাসূলুলস্নাহ ﷺ এর অনুসরণ করতে হবে।
মুত্তাকী হওয়া :
হোদয়াত লাভের প্রধান হকদার হচ্ছেন মুত্তাকীগণ। কেননা তারাই হচ্ছেন আলস্নাহ তা‘আলার প্রকৃত বান্দা। আলস্নাহ তা‘আলা তাদের হেদায়াতের জন্যই কুরআন নাযিল করেছেন। তিনি বলেন,
ذٰلِكَ الْكِتَابُ لَا رَيْبَۚ فِيْهِۚ هُدًى لِّلْمُتَّقِيْنَ
এটা ঐ গ্রন্থ যার মধ্যে কোনরূপ সন্দেহ নেই; আর মুত্তাক্বীদের জন্য এটা হেদায়াতস্বরূপ। (সূরা বাক্বারা- ২)
সুতরাং যে ব্যক্তি যত বেশি মুত্তাকী হতে সক্ষম হবে, সে ব্যক্তি আলস্নাহর পক্ষ থেকে তত বেশি হেদায়াত লাভ করতে সক্ষম হবে।
সৎকর্ম করা :
হেদায়াত লাভ করার অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে ঈমান। যারা যথাযথভাবে ঈমান আনয়ন করে এবং সৎকর্ম করে আলস্নাহ তা‘আলা তাদেরকে হেদায়াত দান করেন। তিনি বলেন,
﴿إِنَّ الَّذِيْنَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ يَهْدِيْهِمْ رَبُّهُمْ بِإِيْمَانِهِمْ﴾
নিশ্চয় যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে, তাদের পালনকর্তা তাদের ঈমানের মাধ্যমে তাদের পথ প্রদর্শন করেন। (সূরা ইউনুস- ৯)
অহির জ্ঞান অর্জন করা :
পৃথিবীতে সবচেয়ে উত্তম জ্ঞান হচ্ছে অহির জ্ঞান। এটি মানুষকে দুনিয়া ও আখিরাত উভয় জগতেই উপকৃত করে থাকে। অপরদিকে অহীই হচ্ছে আলস্নাহর পক্ষ থেকে মানবজাতির জন্য হেদায়াতস্বরূপ। সুতরাং হেদায়াত লাভ করতে হলে অবশ্যই অধিক হারে অহির জ্ঞান অর্জন করতে হবে। আলস্নাহ তা‘আলা বলেন,
قُلْ اِنْ ضَلَلْتُ فَاِنَّمَاۤ اَضِلُّ عَلٰى نَفْسِيْۚ وَاِنِ اهْتَدَيْتُ فَبِمَا يُوْحِيْۤ اِلَيَّ رَبِّيْؕ اِنَّهٗ سَمِيْعٌ قَرِيْبٌ
বলো, যদি আমি পথভ্রষ্ট হই, তবে তো নিজেরই ক্ষতি করব; আর যদি আমি সরল সঠিক পথের ওপর থাকি, তবে তা এজন্য সম্ভব হচ্ছে যে, আমার প্রতিপালক আমার প্রতি ওহী অবতীর্ণ করেন। নিশ্চয় তিনি সবকিছু শুনেন এবং তিনি অতি নিকটবর্তী। (সূরা সাবা- ৫০)
সর্বাত্মক চেষ্টা করা :
যারা হেদায়াত পাওয়ার জন্য সর্বদা আলস্নাহর রাসত্মায় সর্বাত্মক সংগ্রাম চালাবে, আলস্নাহ তা‘আলা তাদেরকে হেদায়াতের রাসত্মাসমূহ খুলে দেবেন। আলস্নাহ তা‘আলা বলেন,
﴿وَالَّذِيْنَ جَاهَدُوْا فِيْنَا لَنَهْدِيَنَّهُمْ سُبُلَنَا﴾
যারা আমার রাসায় সংগ্রাম করে, আমি অবশ্যই তাদেরকে আমার রাসাসমূহ দেখিয়ে থাকি। (সূরা আনকাবূত- ৬৯)
اَلصِّرَاطْ (আস সিরাত) এর শাব্দিক অর্থ হচ্ছে, পথ বা রাসত্মা। আরবি ভাষায় এরূপ অর্থ বুঝাতে বেশ কয়েকটি শব্দ রয়েছে। যেমন - اَلطَّرِيْقُ (ত্বারিক), اَلشَّارِعُ (শারি‘), اَلسَّبِيْلُ (সাবীল) ইত্যাদি। এতদ্বসত্তেও আলস্নাহ তা‘আলা اَلصِّرَاطْ (আস সিরাত) শব্দ ব্যবহার করেছেন। তার কারণ হচ্ছে, اَلصِّرَاطْ (আস সিরাত) শব্দটি সর্বদা একবচন এবং এর কোন দ্বিবচন অথবা বহুবচন নেই। পক্ষামত্মরে অন্যান্য শব্দের মধ্যে তা রয়েছে। এর থেকে বুঝা যায় যে, আলস্নাহর পথ হচ্ছে কেবলমাত্র একটিই।
আর الْمُسْتَقِيْمْ (আল মুসাকীম) এর শাব্দিক অর্থ হচ্ছে, সরল, সহজ, সোজা ইত্যাদি। সুতরাং الصِّرَاطَ الْمُسْتَقِيمَ এর সম্মিলিত অর্থ হচ্ছে, সরল পথ। এর দ্বারা কয়েকটি উদ্দেশ্য নেয়া যায়। যেমন-
১. طَرِيْقُ الْحَقِّ তথা সত্যের পথ,
২. طَرِيْقُ الْإسْلَامِ তথা ইসলামের পথ,
৩. طَرِيْقُ الْجَنَّةِ তথা জান্নাতের পথ,
৪. طَرِيْقُ الْمُسْلِمِيْنَ তথা মুসলমানদের পথ।
আর পরিভাষায় الصِّرَاطَ الْمُسْتَقِيمَ (সিরাতুল মুসাকীম) বলতে ঐ পথ বুঝানো হয়, যা নিয়ে শেষ নবী মুহাম্মাদ (সাঃ) আগমন করেছেন। আর তা হলো ইসলাম। হাদীসে এসেছে,
عَنْ عَبْدِ اللهِ ، قَالَ خَطَّ لَنَا رَسُوْلُ اللهِ خَطًّا ، ثُمَّ خَطَّ عَنْ يَمِيْنِه ، وَعَنْ شِمَالِه خُطُوْطًا ، ثُمَّ قَالَ : هٰذَا سَبِيْلُ اللهِ وَهٰذِهِ السُّبُلُ عَلَى كُلِّ سَبِيْلٍ مِنْهَا شَيْطَانٌ يَدْعُوْ إِلَيْهِ ﴿وَأَنَّ هٰذَا صِرَاطِيْ مُسْتَقِيْمًا فَاتَّبِعُوْهُ ، وَلاَ تَتَّبِعُوا السُّبُلَ فَتَفَرَّقَ بِكُمْ عَنْ سَبِيْلِه ﴾
আবদুলস্নাহ ইবনে মাসঊদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুলস্নাহ ﷺ আমাদেরকে (সিরাতে মুসত্মাকীম বুঝানোর জন্য) প্রথমে একটি সোজা দাগ দিলেন। আর বললেন এটা হলো আলস্নাহর রাসত্মা। অতঃপর ডানে-বামে অনেকগুলো দাগ দিলেন এবং বললেন, এগুলো হলো ঐসব রাসত্মা, যার প্রত্যেকটির মুখে একটি করে শয়তান রয়েছে। সে (পথিককে) তার দিকে আহবান করে।। অতঃপর রাসূলুলস্নাহ ﷺ নিজের কথার প্রমাণে এ আয়াতটি পাঠ করলেন- ‘‘এ পথই আমার সরল পথ। সুতরাং তোমরা এরই অনুসরণ করো এবং বিভিন্ন পথ অনুসরণ করো না, নতুবা তোমাদেরকে তাঁর পথ হতে বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হবে। (সূরা আনআম- ১৫৩)।’’ [মুসনাদে আহমাদ, হা/৪১৪২; তিরমিযী, হা/২৪৫৪; নাসাঈ, হা/১১১৭৫; সহীহ ইবনে হিববান, হা/৬, ৭; মুসনাদুল বাযযার, হা/১৬৭৪; মুসনাদুত তায়ালুসী, হা/২৪১; মুসত্মাদরাকে হাকেম, হা/৩২৪১; সুনানে সা‘দ ইবনে মানসূর, হা/৯৩৫; দারেমী, হা/২০২; শারহুস সুন্নাহ, হা/৯৬; মিশকাত, হা/১৬৬।]
অতএব الصِّرَاطَ الْمُسْتَقِيمَ (সিরাতুল মুসাকীম) একটি সরল-সহজ পথ। এর মধ্যে কোন ধরনের বক্রতা নেই। শয়তান এর আশেপাশে ওঁত পেতে বসে রয়েছে, যাতে করে মানুষকে কুমন্ত্রণা দিয়ে বিপথগামী করতে পারে। সুতরাং আমাদেরকে এ পথে চলতে হলে অবশ্যই খুবই সতর্কতার সাথে চলতে হবে। যাতে আমরা কোনভাবেই শয়তানের ফাঁদে পা না রাখি।
সুতরাং এই আয়াতটির মূল তাৎপর্য হলো আমাদেরকে الصِّرَاطَ الْمُسْتَقِيمَ (সিরাতুল মুসত্মাকীম) এর সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়া এবং এ পথে প্রতিষ্ঠিত থাকার জন্য সকল প্রকার প্রস্ত্ততি গ্রহণ করা।
আর الْمُسْتَقِيْمْ (আল মুসাকীম) এর শাব্দিক অর্থ হচ্ছে, সরল, সহজ, সোজা ইত্যাদি। সুতরাং الصِّرَاطَ الْمُسْتَقِيمَ এর সম্মিলিত অর্থ হচ্ছে, সরল পথ। এর দ্বারা কয়েকটি উদ্দেশ্য নেয়া যায়। যেমন-
১. طَرِيْقُ الْحَقِّ তথা সত্যের পথ,
২. طَرِيْقُ الْإسْلَامِ তথা ইসলামের পথ,
৩. طَرِيْقُ الْجَنَّةِ তথা জান্নাতের পথ,
৪. طَرِيْقُ الْمُسْلِمِيْنَ তথা মুসলমানদের পথ।
আর পরিভাষায় الصِّرَاطَ الْمُسْتَقِيمَ (সিরাতুল মুসাকীম) বলতে ঐ পথ বুঝানো হয়, যা নিয়ে শেষ নবী মুহাম্মাদ (সাঃ) আগমন করেছেন। আর তা হলো ইসলাম। হাদীসে এসেছে,
عَنْ عَبْدِ اللهِ ، قَالَ خَطَّ لَنَا رَسُوْلُ اللهِ خَطًّا ، ثُمَّ خَطَّ عَنْ يَمِيْنِه ، وَعَنْ شِمَالِه خُطُوْطًا ، ثُمَّ قَالَ : هٰذَا سَبِيْلُ اللهِ وَهٰذِهِ السُّبُلُ عَلَى كُلِّ سَبِيْلٍ مِنْهَا شَيْطَانٌ يَدْعُوْ إِلَيْهِ ﴿وَأَنَّ هٰذَا صِرَاطِيْ مُسْتَقِيْمًا فَاتَّبِعُوْهُ ، وَلاَ تَتَّبِعُوا السُّبُلَ فَتَفَرَّقَ بِكُمْ عَنْ سَبِيْلِه ﴾
আবদুলস্নাহ ইবনে মাসঊদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুলস্নাহ ﷺ আমাদেরকে (সিরাতে মুসত্মাকীম বুঝানোর জন্য) প্রথমে একটি সোজা দাগ দিলেন। আর বললেন এটা হলো আলস্নাহর রাসত্মা। অতঃপর ডানে-বামে অনেকগুলো দাগ দিলেন এবং বললেন, এগুলো হলো ঐসব রাসত্মা, যার প্রত্যেকটির মুখে একটি করে শয়তান রয়েছে। সে (পথিককে) তার দিকে আহবান করে।। অতঃপর রাসূলুলস্নাহ ﷺ নিজের কথার প্রমাণে এ আয়াতটি পাঠ করলেন- ‘‘এ পথই আমার সরল পথ। সুতরাং তোমরা এরই অনুসরণ করো এবং বিভিন্ন পথ অনুসরণ করো না, নতুবা তোমাদেরকে তাঁর পথ হতে বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হবে। (সূরা আনআম- ১৫৩)।’’ [মুসনাদে আহমাদ, হা/৪১৪২; তিরমিযী, হা/২৪৫৪; নাসাঈ, হা/১১১৭৫; সহীহ ইবনে হিববান, হা/৬, ৭; মুসনাদুল বাযযার, হা/১৬৭৪; মুসনাদুত তায়ালুসী, হা/২৪১; মুসত্মাদরাকে হাকেম, হা/৩২৪১; সুনানে সা‘দ ইবনে মানসূর, হা/৯৩৫; দারেমী, হা/২০২; শারহুস সুন্নাহ, হা/৯৬; মিশকাত, হা/১৬৬।]
অতএব الصِّرَاطَ الْمُسْتَقِيمَ (সিরাতুল মুসাকীম) একটি সরল-সহজ পথ। এর মধ্যে কোন ধরনের বক্রতা নেই। শয়তান এর আশেপাশে ওঁত পেতে বসে রয়েছে, যাতে করে মানুষকে কুমন্ত্রণা দিয়ে বিপথগামী করতে পারে। সুতরাং আমাদেরকে এ পথে চলতে হলে অবশ্যই খুবই সতর্কতার সাথে চলতে হবে। যাতে আমরা কোনভাবেই শয়তানের ফাঁদে পা না রাখি।
সুতরাং এই আয়াতটির মূল তাৎপর্য হলো আমাদেরকে الصِّرَاطَ الْمُسْتَقِيمَ (সিরাতুল মুসত্মাকীম) এর সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়া এবং এ পথে প্রতিষ্ঠিত থাকার জন্য সকল প্রকার প্রস্ত্ততি গ্রহণ করা।
صِرَاطَ الَّذِينَ أَنْعَمْتَ عَلَيْهِمْ
সিরা-ত্বালস্নাযীনা আন্ ‘আম্তা ‘আলাইহিম
তাদের পথ, যাদের প্রতি আপনি অনুগ্রহ করেছেন।
সীরাতুল মুসত্মাকীমের যাত্রীদের পরিচয় :
অত্র আয়াতে আলস্নাহ তা‘আলা الصِّرَاطَ الْمُسْتَقِيمَ (সিরাতুল মুসত্মাকীম) এর অভিযাত্রীদের পরিচয় প্রদান করেছেন এবং এটাও বলে দিয়েছেন যে, এরা আলস্নাহর বিশেষ অনুগ্রহপ্রাপ্ত। আবার অপর আয়াতে আলস্নাহ তা‘আলা বিশেষ অনুগ্রহপ্রাপ্ত বান্দাদের পরিচয় তুলে ধরেছেন। যেমন-
وَمَنْ يُّطِعِ اللهَ وَالرَّسُوْلَ فَاُولٰٓئِكَ مَعَ الَّذِيْنَ اَنْعَمَ اللهُ عَلَيْهِمْ مِّنَ النَّبِيِّيْنَ وَالصِّدِّيْقِيْنَ وَالشُّهَدَآءِ وَالصَّالِحِيْنَۚ وَحَسُنَ اُولٰٓئِكَ رَفِيْقًا
যে ব্যক্তি আলস্নাহ এবং তার রাসূলের আনুগত্য করবে সে নবী, সত্যনিষ্ঠ, শহীদ ও সৎকর্মপরায়ণ লোকদের সঙ্গী হবে, যাদের প্রতি আলস্নাহ অনুগ্রহ করেছেন; আর তারা কতই না উত্তম সঙ্গী! (সূরা নিসা- ৬৯)
অতএব সিরাতুল মুসত্মাকীমের প্রধান যাত্রী হচ্ছে সকল নবী ও রাসূলগণ, তারপর সিদ্দীক তথা সত্যবাদীগণ, তারপর শহীদগণ, তারপর সৎকর্মপরায়ণ ব্যক্তিগণ। এছাড়া যারা আছেন, তাদেরই সকলের অবস্থান সিরাতুল মুসত্মাকীমের বাহিরে।
অতএব যারা الصِّرَاطَ الْمُسْتَقِيمَ (সিরাতুল মুসাকীম) এর অভিযাত্রীদের বৈশিষ্ট্যসমূহ হচ্ছে,
১. আলস্নাহর ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করা।
২. সর্বদা সত্য কথা বলা।
৩. সৎকর্ম করা।
৪. আলস্নাহর পথে জিহাদ করা।
৫. অন্যায়ের প্রতিবাদ করা।
৬. পৃথিবীতে আলস্নাহর আইন প্রতিষ্ঠা করার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করা।
৮. শিরক ও বিদআতের ব্যাপারে সর্বদা কঠোরতা অবলম্বন করা ইত্যাদি।
সিরা-ত্বালস্নাযীনা আন্ ‘আম্তা ‘আলাইহিম
তাদের পথ, যাদের প্রতি আপনি অনুগ্রহ করেছেন।
সীরাতুল মুসত্মাকীমের যাত্রীদের পরিচয় :
অত্র আয়াতে আলস্নাহ তা‘আলা الصِّرَاطَ الْمُسْتَقِيمَ (সিরাতুল মুসত্মাকীম) এর অভিযাত্রীদের পরিচয় প্রদান করেছেন এবং এটাও বলে দিয়েছেন যে, এরা আলস্নাহর বিশেষ অনুগ্রহপ্রাপ্ত। আবার অপর আয়াতে আলস্নাহ তা‘আলা বিশেষ অনুগ্রহপ্রাপ্ত বান্দাদের পরিচয় তুলে ধরেছেন। যেমন-
وَمَنْ يُّطِعِ اللهَ وَالرَّسُوْلَ فَاُولٰٓئِكَ مَعَ الَّذِيْنَ اَنْعَمَ اللهُ عَلَيْهِمْ مِّنَ النَّبِيِّيْنَ وَالصِّدِّيْقِيْنَ وَالشُّهَدَآءِ وَالصَّالِحِيْنَۚ وَحَسُنَ اُولٰٓئِكَ رَفِيْقًا
যে ব্যক্তি আলস্নাহ এবং তার রাসূলের আনুগত্য করবে সে নবী, সত্যনিষ্ঠ, শহীদ ও সৎকর্মপরায়ণ লোকদের সঙ্গী হবে, যাদের প্রতি আলস্নাহ অনুগ্রহ করেছেন; আর তারা কতই না উত্তম সঙ্গী! (সূরা নিসা- ৬৯)
অতএব সিরাতুল মুসত্মাকীমের প্রধান যাত্রী হচ্ছে সকল নবী ও রাসূলগণ, তারপর সিদ্দীক তথা সত্যবাদীগণ, তারপর শহীদগণ, তারপর সৎকর্মপরায়ণ ব্যক্তিগণ। এছাড়া যারা আছেন, তাদেরই সকলের অবস্থান সিরাতুল মুসত্মাকীমের বাহিরে।
অতএব যারা الصِّرَاطَ الْمُسْتَقِيمَ (সিরাতুল মুসাকীম) এর অভিযাত্রীদের বৈশিষ্ট্যসমূহ হচ্ছে,
১. আলস্নাহর ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করা।
২. সর্বদা সত্য কথা বলা।
৩. সৎকর্ম করা।
৪. আলস্নাহর পথে জিহাদ করা।
৫. অন্যায়ের প্রতিবাদ করা।
৬. পৃথিবীতে আলস্নাহর আইন প্রতিষ্ঠা করার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করা।
৮. শিরক ও বিদআতের ব্যাপারে সর্বদা কঠোরতা অবলম্বন করা ইত্যাদি।
غَيْرِ الْمَغْضُوْبِ عَلَيْهِمْ وَلَا الضَّآلِّيْنَ
গাইরিল্ মাগ্যূবি ‘আলাইহিম্, ওয়ালায্যো-লস্নীন।
আর তাদের পথ নয়, যারা ক্রোধের শিকার হয়েছে এবং যারা পথ হারিয়ে ফেলেছে।
الْمَغْضُوْبِ عَلَيْهِمْ (আল-মাগ্যূবি ‘আলাইহিম) এর অর্থ হচ্ছে , ‘ক্রোধের শিকার’। এখানে কার ক্রোধের শিকার- তা উলেস্নখ নেই। তবে আরবি ভাষায় যখন এ ধরনের শব্দ ব্যবহার করা হয়, তখন এর দ্বারা এমন কাউকে নির্দেশ করে, যার উপর সবাই ক্রোধান্বিত হয়ে আছে। সুতরাং ইয়াহুদিরা কেবল আলস্নাহর ক্রোধের শিকার নয়, বরং অন্যান্য সৃষ্টিজীবেরও ক্রোধের শিকার। যেমন- আলস্নাহ তা’আলা বলেন,
الضَّآلِّيْنَ ( আয্য-লিস্নন) শব্দের অর্থ হচ্ছে, পথহারা ব্যাক্তিগণ। এরা সাধারণত এমন লোক, যারা প্রকৃতপক্ষে সঠিক পথের উপর নয়, অথচ তারা নিজেদেরকে সঠিক পথের উপর আছে মনে করে।
গাইরিল্ মাগ্যূবি ‘আলাইহিম্, ওয়ালায্যো-লস্নীন।
আর তাদের পথ নয়, যারা ক্রোধের শিকার হয়েছে এবং যারা পথ হারিয়ে ফেলেছে।
الْمَغْضُوْبِ عَلَيْهِمْ (আল-মাগ্যূবি ‘আলাইহিম) এর অর্থ হচ্ছে , ‘ক্রোধের শিকার’। এখানে কার ক্রোধের শিকার- তা উলেস্নখ নেই। তবে আরবি ভাষায় যখন এ ধরনের শব্দ ব্যবহার করা হয়, তখন এর দ্বারা এমন কাউকে নির্দেশ করে, যার উপর সবাই ক্রোধান্বিত হয়ে আছে। সুতরাং ইয়াহুদিরা কেবল আলস্নাহর ক্রোধের শিকার নয়, বরং অন্যান্য সৃষ্টিজীবেরও ক্রোধের শিকার। যেমন- আলস্নাহ তা’আলা বলেন,
الضَّآلِّيْنَ ( আয্য-লিস্নন) শব্দের অর্থ হচ্ছে, পথহারা ব্যাক্তিগণ। এরা সাধারণত এমন লোক, যারা প্রকৃতপক্ষে সঠিক পথের উপর নয়, অথচ তারা নিজেদেরকে সঠিক পথের উপর আছে মনে করে।
১. কুফরী করা এবং কুফরের জন্য নিজেদের অমত্মরকে উন্মুক্ত রাখা। আলস্নাহ তা‘আলা বলেছেন,
﴿مَنْ كَفَرَ بِاللهِ مِنْ ۢبَعْدِ إِيْمَانِه ۤ إِلَّا مَنْ أُكْرِهَ وَقَلْبُهٗ مُطْمَئِنٌّ ۢبِالْإِيْمَانِ وَلٰكِنْ مَّنْ شَرَحَ بِالْكُفْرِ صَدْرًا فَعَلَيْهِمْ غَضَبٌ مِّنَ اللهِ وَلَهُمْ عَذَابٌ عَظِيْمٌ﴾
ঈমান আনার পরেও যে আল্লাহর সাথে কুফরী করে এবং তাদের হৃদয়কে কুফরীর জন্য উন্মুক্ত করে দেয়, তাদের উপর আল্লাহর গযব নিপতিত হবে এবং তাদের জন্য রয়েছে কঠিন আযাব। তবে সে ছাড়া যাকে বাধ্য করা হবে এবং তার অমত্মর ঈমানের উপর অটল থাকে। (সূরা নাহল ১৬:১০৭)
২. যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পলায়ন করা। আলস্নাহ তা’আলা বলেন,
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إذَا لَقِيتُمْ الَّذِينَ كَفَرُوا زَحْفًا فَلَا تُوَلُّوهُمْ الْأَدْبَارَ وَمَنْ يُوَلِّهِمْ يَوْمَئِذٍ دُبُرَهُ إلَّا مُتَحَرِّفًا لِقِتَالٍ أَوْ مُتَحَيِّزًا إلَى فِئَةٍ فَقَدْ بَاءَ بِغَضَبٍ مِنْ اللَّهِ وَمَأْوَاهُ جَهَنَّمُ وَبِئْسَ الْمَصِيرُ
হে ঈমানদারগণ! যখন তোমরা কাফিরদের মুখোমুখি হও, তখন তোমরা পলায়ন করো না। আর সেদিন যে ব্যাক্তি যুদ্ধ কৌশল বা স্বীয় বাহিনীর কেন্দ্রস্থলে স্থান কওে নেয়া ব্যাতিত (অন্য কোন কারণে) পৃষ্ঠপ্রদর্শন করবে, সে আলস্নাহর ক্রোধে পতিত হবে। তার বাসস্থান হবে জাহান্নাম। আর জাহান্নাম কতইনা নিকৃষ্ট স্থান। ( সূরা আনফাল-১৫-১৬)
৩. শিরক করা। আলস্নাহ তা’আলা বলেন,
قَالَ قَدْ وَقَعَ عَلَيْكُم مِّن رَّبِّكُمْ رِجْسٌ وَغَضَبٌ أَتُجَادِلُونَنِي فِي أَسْمَاء سَمَّيْتُمُوهَا أَنتُمْ وَآبَآؤكُم مَّا نَزَّلَ اللّهُ بِهَا مِن سُلْطَانٍ فَانتَظِرُواْ إِنِّي مَعَكُم مِّنَ الْمُنتَظِرِينَ
সে বলল, তোমাদের প্রতিপালকের শাসিত্ম ও ক্রোধ তো তোমাদের জন্য নির্ধারিত হয়ে আছে। তবে কি তোমরা আমার সাথে এমন কতকগুলো নাম সম্বন্ধে বিতর্কে লিপ্ত হতে চাও, যা তোমরা ও তোমদেও পূর্বপুরম্নষরা বানিয়ে নিয়েছ এবং যে সম্বন্ধে আলস্নাহ কোন প্রমাণই নাযিল করেননি । সুতরাং তোমরা অপেক্ষা করো এবং আমিও তোমাদের সাথে অপেক্ষা করছি।
( সূরা আরাফ-৭১)
৪. আলস্নাহ ব্যতিত অন্য কাউকে উপাস্য হিসেবে গণ্য করা। আলস্নাহ তা’আলা বলেন,
إِنَّ الَّذِينَ اتَّخَذُوا الْعِجْلَ سَيَنَالُهُمْ غَضَبٌ مِنْ رَبِّهِمْ وَذِلَّةٌ فِي الْحَيَاةِ الدُّنْيَا وَكَذَلِكَ نَجْزِي الْمُفْتَرِينَ
যারা গো-বvসকে উপাস্য হিসেবে গ্রহণ করেছে পার্থিব জীবনে তাদেও উপর তাদের প্রতিপালকের ক্রোধ ও লাঞ্ছনা পতিত হবেই। এভাবে আমি মিথ্যা রচনাকারীদেরকে প্রতিফল দিয়ে থাকি। ( সূরা আরাফ-১৫২)
﴿مَنْ كَفَرَ بِاللهِ مِنْ ۢبَعْدِ إِيْمَانِه ۤ إِلَّا مَنْ أُكْرِهَ وَقَلْبُهٗ مُطْمَئِنٌّ ۢبِالْإِيْمَانِ وَلٰكِنْ مَّنْ شَرَحَ بِالْكُفْرِ صَدْرًا فَعَلَيْهِمْ غَضَبٌ مِّنَ اللهِ وَلَهُمْ عَذَابٌ عَظِيْمٌ﴾
ঈমান আনার পরেও যে আল্লাহর সাথে কুফরী করে এবং তাদের হৃদয়কে কুফরীর জন্য উন্মুক্ত করে দেয়, তাদের উপর আল্লাহর গযব নিপতিত হবে এবং তাদের জন্য রয়েছে কঠিন আযাব। তবে সে ছাড়া যাকে বাধ্য করা হবে এবং তার অমত্মর ঈমানের উপর অটল থাকে। (সূরা নাহল ১৬:১০৭)
২. যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পলায়ন করা। আলস্নাহ তা’আলা বলেন,
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إذَا لَقِيتُمْ الَّذِينَ كَفَرُوا زَحْفًا فَلَا تُوَلُّوهُمْ الْأَدْبَارَ وَمَنْ يُوَلِّهِمْ يَوْمَئِذٍ دُبُرَهُ إلَّا مُتَحَرِّفًا لِقِتَالٍ أَوْ مُتَحَيِّزًا إلَى فِئَةٍ فَقَدْ بَاءَ بِغَضَبٍ مِنْ اللَّهِ وَمَأْوَاهُ جَهَنَّمُ وَبِئْسَ الْمَصِيرُ
হে ঈমানদারগণ! যখন তোমরা কাফিরদের মুখোমুখি হও, তখন তোমরা পলায়ন করো না। আর সেদিন যে ব্যাক্তি যুদ্ধ কৌশল বা স্বীয় বাহিনীর কেন্দ্রস্থলে স্থান কওে নেয়া ব্যাতিত (অন্য কোন কারণে) পৃষ্ঠপ্রদর্শন করবে, সে আলস্নাহর ক্রোধে পতিত হবে। তার বাসস্থান হবে জাহান্নাম। আর জাহান্নাম কতইনা নিকৃষ্ট স্থান। ( সূরা আনফাল-১৫-১৬)
৩. শিরক করা। আলস্নাহ তা’আলা বলেন,
قَالَ قَدْ وَقَعَ عَلَيْكُم مِّن رَّبِّكُمْ رِجْسٌ وَغَضَبٌ أَتُجَادِلُونَنِي فِي أَسْمَاء سَمَّيْتُمُوهَا أَنتُمْ وَآبَآؤكُم مَّا نَزَّلَ اللّهُ بِهَا مِن سُلْطَانٍ فَانتَظِرُواْ إِنِّي مَعَكُم مِّنَ الْمُنتَظِرِينَ
সে বলল, তোমাদের প্রতিপালকের শাসিত্ম ও ক্রোধ তো তোমাদের জন্য নির্ধারিত হয়ে আছে। তবে কি তোমরা আমার সাথে এমন কতকগুলো নাম সম্বন্ধে বিতর্কে লিপ্ত হতে চাও, যা তোমরা ও তোমদেও পূর্বপুরম্নষরা বানিয়ে নিয়েছ এবং যে সম্বন্ধে আলস্নাহ কোন প্রমাণই নাযিল করেননি । সুতরাং তোমরা অপেক্ষা করো এবং আমিও তোমাদের সাথে অপেক্ষা করছি।
( সূরা আরাফ-৭১)
৪. আলস্নাহ ব্যতিত অন্য কাউকে উপাস্য হিসেবে গণ্য করা। আলস্নাহ তা’আলা বলেন,
إِنَّ الَّذِينَ اتَّخَذُوا الْعِجْلَ سَيَنَالُهُمْ غَضَبٌ مِنْ رَبِّهِمْ وَذِلَّةٌ فِي الْحَيَاةِ الدُّنْيَا وَكَذَلِكَ نَجْزِي الْمُفْتَرِينَ
যারা গো-বvসকে উপাস্য হিসেবে গ্রহণ করেছে পার্থিব জীবনে তাদেও উপর তাদের প্রতিপালকের ক্রোধ ও লাঞ্ছনা পতিত হবেই। এভাবে আমি মিথ্যা রচনাকারীদেরকে প্রতিফল দিয়ে থাকি। ( সূরা আরাফ-১৫২)
এ আয়াত দ্বারা কাদেরকে উদ্দেশ্য করা হয়েছে সে সর্ম্পকে হাদীসে এসেছে,
قَالَ اَلْمَغْضُوْبِ عَلَيْهِمْ وَالضَّالُّوْنَ اَلنَّصَرى عَنْ عَدِيٍّ بْنِ حَاتِمٍ اَنَّ النّبِيَّ
আদি ইবনে হাতেম রা: হতে বর্ণিত। নবী ﷺ বলেন, ক্রোধের শিকার হওয়া লোক বলতে ইয়াহুদিদেরকে বুঝানো হয়েছে এবং পথহারা লোক বলতে নাসারা তথা খ্রিষ্টানদেরকে বুঝানো হয়েছে। [সহীহ ইবনে হিববান হা/৬২৪৬ হাদীসটি হাসান]
অথ্যাv ইয়াহুদিরা তাদেও নবীদেরকে হত্যা কওে এবং শেষ নবী মুহাম্মাদ ﷺ এর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে অভিশপ্ত হয়েছে। পক্ষামত্মরে নাসারারা তাদেও নবী ঈসা (আ) এর ব্যাপাওে বাড়াবাড়ি কওে আলস্নাহর আসনে বসিয়ে এবং শেষ নবী এর উপর ঈমান না এনে ও তাঁর বিরম্নদ্ধে শত্রম্নতা পোষণ কওে পথভ্রষ্ট হয়েছে।
এমনিভাবে যুগে যুগে যারা এই দুটি জাতির গুণে গুনাণ্বিত হবে তারাও তাদেও দলে অমত্মর্ভুক্ত হয়ে যাবে।
অত্র আয়াত দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে, ইয়াহুদি - নাসারাদেও স্বভাব যেন মুসলিমদেও মধ্যে না প্রবেশ না করে এবং তারা যেন ঐ দই জাতির হীন তvপরতা ও তাদের মন্দ পরিণতি সর্ম্পকে সর্বদা হুশিয়ার থাকে। কেননা তারা ইসলামের চিরশত্রম্ন। । আলস্নাহ তা’আলা বলেন,
يَاۤ اَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا لَا تَتَّخِذُوا الْيَهُوْدَ وَالنَّصَارٰۤى اَوْلِيَآءَۘ بَعْضُهُمْ اَوْلِيَآءُ بَعْضٍؕ وَمَنْ يَّتَوَلَّهُمْ مِّنْكُمْ فَاِنَّهٗ مِنْهُمْؕ اِنَّ اللهَ لَا يَهْدِى الْقَوْمَ الظَّالِمِيْنَ
হে ঈমানদারগণ! তোমরা ইয়াহুদি ও খ্রিস্টানদেরকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করো না। কেননা, তারা নিজেরাই একে অপরের বন্ধু। (এরপরও) তোমাদের মধ্য থেকে যারা তাদেরকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করবে, সে তাদেরই একজন বলে গণ্য হবে। নিশ্চয় আলস্নাহ যালিমদেরকে সৎপথে পরিচালিত করেন না। (সূরা মায়েদা- ৫১)
উলেস্নখ্য যে, উপরোক্ত আয়াতগুলোতে কাদেরিয়া, মু’তাযিলা, ইমামিয়া প্রভৃতি ভ্রামত্ম ফেরকার প্রতিবাদ রয়েছে। কেননা তাদেও বিশ্বাস অনুয়ায়ী মানুষ নিজেই তার ভাল-মন্দ সকল কর্মেও স্রষ্টা। অতএব সরল পথের জন্য আলস্নাহর নিকট হেদায়াত প্রার্থনা করা প্রয়োজন নেই। অথচ এখানে যেমন সরল পথের জন্য হেদায়াত প্রার্থনা করা হয়েছে, তেমনি অভিশপ্ত ও পথভ্রষ্টদের পথে না যাওয়ার জন্যও আলস্নাহর নিকট প্রার্থনা করা হয়েছে।
قَالَ اَلْمَغْضُوْبِ عَلَيْهِمْ وَالضَّالُّوْنَ اَلنَّصَرى عَنْ عَدِيٍّ بْنِ حَاتِمٍ اَنَّ النّبِيَّ
আদি ইবনে হাতেম রা: হতে বর্ণিত। নবী ﷺ বলেন, ক্রোধের শিকার হওয়া লোক বলতে ইয়াহুদিদেরকে বুঝানো হয়েছে এবং পথহারা লোক বলতে নাসারা তথা খ্রিষ্টানদেরকে বুঝানো হয়েছে। [সহীহ ইবনে হিববান হা/৬২৪৬ হাদীসটি হাসান]
অথ্যাv ইয়াহুদিরা তাদেও নবীদেরকে হত্যা কওে এবং শেষ নবী মুহাম্মাদ ﷺ এর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে অভিশপ্ত হয়েছে। পক্ষামত্মরে নাসারারা তাদেও নবী ঈসা (আ) এর ব্যাপাওে বাড়াবাড়ি কওে আলস্নাহর আসনে বসিয়ে এবং শেষ নবী এর উপর ঈমান না এনে ও তাঁর বিরম্নদ্ধে শত্রম্নতা পোষণ কওে পথভ্রষ্ট হয়েছে।
এমনিভাবে যুগে যুগে যারা এই দুটি জাতির গুণে গুনাণ্বিত হবে তারাও তাদেও দলে অমত্মর্ভুক্ত হয়ে যাবে।
অত্র আয়াত দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে, ইয়াহুদি - নাসারাদেও স্বভাব যেন মুসলিমদেও মধ্যে না প্রবেশ না করে এবং তারা যেন ঐ দই জাতির হীন তvপরতা ও তাদের মন্দ পরিণতি সর্ম্পকে সর্বদা হুশিয়ার থাকে। কেননা তারা ইসলামের চিরশত্রম্ন। । আলস্নাহ তা’আলা বলেন,
يَاۤ اَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا لَا تَتَّخِذُوا الْيَهُوْدَ وَالنَّصَارٰۤى اَوْلِيَآءَۘ بَعْضُهُمْ اَوْلِيَآءُ بَعْضٍؕ وَمَنْ يَّتَوَلَّهُمْ مِّنْكُمْ فَاِنَّهٗ مِنْهُمْؕ اِنَّ اللهَ لَا يَهْدِى الْقَوْمَ الظَّالِمِيْنَ
হে ঈমানদারগণ! তোমরা ইয়াহুদি ও খ্রিস্টানদেরকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করো না। কেননা, তারা নিজেরাই একে অপরের বন্ধু। (এরপরও) তোমাদের মধ্য থেকে যারা তাদেরকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করবে, সে তাদেরই একজন বলে গণ্য হবে। নিশ্চয় আলস্নাহ যালিমদেরকে সৎপথে পরিচালিত করেন না। (সূরা মায়েদা- ৫১)
উলেস্নখ্য যে, উপরোক্ত আয়াতগুলোতে কাদেরিয়া, মু’তাযিলা, ইমামিয়া প্রভৃতি ভ্রামত্ম ফেরকার প্রতিবাদ রয়েছে। কেননা তাদেও বিশ্বাস অনুয়ায়ী মানুষ নিজেই তার ভাল-মন্দ সকল কর্মেও স্রষ্টা। অতএব সরল পথের জন্য আলস্নাহর নিকট হেদায়াত প্রার্থনা করা প্রয়োজন নেই। অথচ এখানে যেমন সরল পথের জন্য হেদায়াত প্রার্থনা করা হয়েছে, তেমনি অভিশপ্ত ও পথভ্রষ্টদের পথে না যাওয়ার জন্যও আলস্নাহর নিকট প্রার্থনা করা হয়েছে।
اٰمِيْن (আ-মিন) শব্দের ‘আলিফ’ এর উপর ‘মাদ্দ’ হবে। এর শাব্দিক অর্থ হচ্ছে, اَللّٰهُمَّ اسْتَجِبْ অর্থাৎ হে আলস্নাহ! তুমি কবুল করো। এটি বাহ্যত ইসম (বিশেষ্য) আকারে হলেও তা ফেল অর্থ্যাv ক্রিয়াপদের অর্থ দেয়। সূরা ফাতিহা পাঠ করার পর কিছুক্ষণ বিরতি দিয়ে ‘আ-মিন’ বলা উচিত, যাতে করে এটি সূরার সাথে মিলে না যায়। কেননা এটি আয়াতের অমত্মর্ভুক্ত নয়।
সূরা ফাতিহা পাঠ করার পর ‘আ-মিন’ বলা সুন্নাত :
সূরা ফাতিহা পাঠ করার পর ‘আ-মিন’ বলা সুন্নাত। কেননা নবী ﷺ এরম্নপ করতেন। যেমন- হাদীসে এসেছে,
عَنْ وَائِلِ بْنِ حُجْرٍ قَالَ كَانَ رَسُوْلُ اللهِ - إِذَا قَرَأَ ﴿ وَلاَ الضَّآلِّينَ﴾ قَالَ ﴿ اٰمِينَ ﴾ . وَرَفَعَ بِهَا صَوْتَهٗ
ওয়ায়েল ইবনে হুজর (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুলস্নাহ ﷺ যখন ‘ওয়ালায্যো-লস্নীন’ পাঠ করতেন, তখন উচ্চৈঃস্বরে আমীন বলতেন। [আবু দাউদ, হা/৯৩৩; মুসনাদে আহমাদ, হা/১৮৮৬২; ইবনে মাজাহ, হা/৮৫৫; নাসাঈ, হা/৯৩২; তিরমিযী, হা/২৪৮।]
আমীনের শব্দ শুনে ইয়াহুদিরা হিংসা করে :
عَنْ عَائِشَةَ ، عَنِ النَّبِيِّ ، قَالَ : مَا حَسَدَتْكُمُ الْيَهُودُ عَلَى شَيْءٍ ، مَا حَسَدَتْكُمْ عَلَى السَّلاَمِ وَالتَّأْمِينِ
আয়েশা (রাঃ) নবী ﷺ হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, ইয়াহুদিরা তোমাদের অন্য কোন বিষয়ে এত বেশি হিংসা করে না যতটকু হিংসা করে তোমাদের সালাম ও আমীন বলার কারণে। [ইবনে মাজাহ, হা/৮৫৬; জামেউস সগীর, হা/১০৫৫০; সহীহ তারগীব ওয়াত তারহীব, হা/৫১৫; আদাবুল মুফরাদ, হা/৯৮৮।]
কারণ ইয়াহুদি ও নাসারাদের পথে না গিয়ে সিরাতে মুসত্মাকীমের হেদায়াত চেয়ে সূরা ফাতিহায় যে দু‘আ করা হয় এবং ইমাম ও মুক্তাদী সকলে ‘আ-মিন’ বলে আলস্নাহর নিকটে যে প্রার্থনা জানায় এটা তারা সহ্য করতে পারেনা।
আমীন বললে গোনাহ ক্ষমা করে দেয়া হয় :
عَنْ اَبِيْ هُرَيْرَةَ ، اَنَّ رَسُوْلَ اللهِ قَالَ : اِذَا قَالَ الْاِمَامُ ﴿غَيْرِ الْمَغْضُوْبِ عَلَيْهِمْ وَلَا الضَّآلِّيْنَ﴾ فَقُوْلُوْا اٰمِيْنَ ، فَاِنَّهٗ مَنْ وَافَقَ قَوْلُهٗ قَوْلَ الْمَلَائِكَةِ غُفِرَ لَهٗ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهٖ
আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। রাসূলুলাহ ﷺ বলেছেন, ইমাম যখন ‘গাইরিল্ মাগ্যূবি আলাইহিম্ ওয়ালায্যো-লীন’ বলেন, তখন তোমরা ‘আমীন’ বলবে। (কারণ তখন ফেরেশতারা ‘আমীন’ বলে থাকেন।) আর যার ‘আমীন’ বলা ফেরেশতাদের ‘আমীন’ বলার সাথে মিলে যাবে, তার পেছনের সকল গোনাহ ক্ষমা করে দেয়া হবে। [সহীহ বুখারী, হা/৭৮২, সহীহ মুসলিম, হা/৯৪৭; মুয়াত্তা ইমাম মালেক, হা/১৯৫; আবু দাউদ, হা/৯৩৬; নাসাঈ, হা/৯২৭; মুসনাদে আহমাদ, হা/৭১৮৭; সহীহ ইবনে খুযায়মা, হা/৫৭৫; সহীহ ইবনে হিববান, হা/১৮০৪; দারেমী, হা/১২৪৬; সহীহ তারগীব ওয়াত তারহীব, হা/৫১৪; মিশকাত, হা/৮২৫।]
ইমামকেও আমীন বলতে হবে :
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللهِ : إِذَا قَالَ الْإِِمَامُ ﴿غَيْرِ الْمَغْضُوْبِ عَلَيْهِمْ وَلَا الضَّآلِّينَ﴾ فَقُوْلُوْا : اٰمِيْنَ ؛ فَإِنَّ الْمَلَآئِكَةَ تَقُوْلُ : اٰمِيْنَ ، وَالْإِِمَامُ يَقُوْلُ : اٰمِيْنَ ، فَمَنْ وَافَقَ تَأْمِيْنُهٗ تَأْمِيْنَ الْمَلَآئِكَةِ غُفِرَ لَهٗ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِه
আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। রাসূলুলাহ ﷺ বলেছেন, ইমাম যখন ‘গাইরিল্ মাগ্যূবি আলাইহিম্ ওয়ালায্যো-লীন’ বলেন, তখন তোমরা ‘আমীন’ বলবে। কারণ তখন ফেরেশতারা ‘আমীন’ বলে থাকেন, আর তখন ইমামও ‘আমীন’ বলে থাকেন। আর যার ‘আমীন’ বলা ফেরেশতাদের ‘আমীন’ বলার সাথে মিলে যাবে, তার পেছনের সকল গোনাহ ক্ষমা করে দেয়া হবে। [সহীহ ইবনে খুযায়মা, হা/৫৭৫; সহীহ ইবনে হিববান, হা/১৮০৪।]
সূরা ফাতিহা পাঠ করার পর ‘আ-মিন’ বলা সুন্নাত :
সূরা ফাতিহা পাঠ করার পর ‘আ-মিন’ বলা সুন্নাত। কেননা নবী ﷺ এরম্নপ করতেন। যেমন- হাদীসে এসেছে,
عَنْ وَائِلِ بْنِ حُجْرٍ قَالَ كَانَ رَسُوْلُ اللهِ - إِذَا قَرَأَ ﴿ وَلاَ الضَّآلِّينَ﴾ قَالَ ﴿ اٰمِينَ ﴾ . وَرَفَعَ بِهَا صَوْتَهٗ
ওয়ায়েল ইবনে হুজর (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুলস্নাহ ﷺ যখন ‘ওয়ালায্যো-লস্নীন’ পাঠ করতেন, তখন উচ্চৈঃস্বরে আমীন বলতেন। [আবু দাউদ, হা/৯৩৩; মুসনাদে আহমাদ, হা/১৮৮৬২; ইবনে মাজাহ, হা/৮৫৫; নাসাঈ, হা/৯৩২; তিরমিযী, হা/২৪৮।]
আমীনের শব্দ শুনে ইয়াহুদিরা হিংসা করে :
عَنْ عَائِشَةَ ، عَنِ النَّبِيِّ ، قَالَ : مَا حَسَدَتْكُمُ الْيَهُودُ عَلَى شَيْءٍ ، مَا حَسَدَتْكُمْ عَلَى السَّلاَمِ وَالتَّأْمِينِ
আয়েশা (রাঃ) নবী ﷺ হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, ইয়াহুদিরা তোমাদের অন্য কোন বিষয়ে এত বেশি হিংসা করে না যতটকু হিংসা করে তোমাদের সালাম ও আমীন বলার কারণে। [ইবনে মাজাহ, হা/৮৫৬; জামেউস সগীর, হা/১০৫৫০; সহীহ তারগীব ওয়াত তারহীব, হা/৫১৫; আদাবুল মুফরাদ, হা/৯৮৮।]
কারণ ইয়াহুদি ও নাসারাদের পথে না গিয়ে সিরাতে মুসত্মাকীমের হেদায়াত চেয়ে সূরা ফাতিহায় যে দু‘আ করা হয় এবং ইমাম ও মুক্তাদী সকলে ‘আ-মিন’ বলে আলস্নাহর নিকটে যে প্রার্থনা জানায় এটা তারা সহ্য করতে পারেনা।
আমীন বললে গোনাহ ক্ষমা করে দেয়া হয় :
عَنْ اَبِيْ هُرَيْرَةَ ، اَنَّ رَسُوْلَ اللهِ قَالَ : اِذَا قَالَ الْاِمَامُ ﴿غَيْرِ الْمَغْضُوْبِ عَلَيْهِمْ وَلَا الضَّآلِّيْنَ﴾ فَقُوْلُوْا اٰمِيْنَ ، فَاِنَّهٗ مَنْ وَافَقَ قَوْلُهٗ قَوْلَ الْمَلَائِكَةِ غُفِرَ لَهٗ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهٖ
আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। রাসূলুলাহ ﷺ বলেছেন, ইমাম যখন ‘গাইরিল্ মাগ্যূবি আলাইহিম্ ওয়ালায্যো-লীন’ বলেন, তখন তোমরা ‘আমীন’ বলবে। (কারণ তখন ফেরেশতারা ‘আমীন’ বলে থাকেন।) আর যার ‘আমীন’ বলা ফেরেশতাদের ‘আমীন’ বলার সাথে মিলে যাবে, তার পেছনের সকল গোনাহ ক্ষমা করে দেয়া হবে। [সহীহ বুখারী, হা/৭৮২, সহীহ মুসলিম, হা/৯৪৭; মুয়াত্তা ইমাম মালেক, হা/১৯৫; আবু দাউদ, হা/৯৩৬; নাসাঈ, হা/৯২৭; মুসনাদে আহমাদ, হা/৭১৮৭; সহীহ ইবনে খুযায়মা, হা/৫৭৫; সহীহ ইবনে হিববান, হা/১৮০৪; দারেমী, হা/১২৪৬; সহীহ তারগীব ওয়াত তারহীব, হা/৫১৪; মিশকাত, হা/৮২৫।]
ইমামকেও আমীন বলতে হবে :
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللهِ : إِذَا قَالَ الْإِِمَامُ ﴿غَيْرِ الْمَغْضُوْبِ عَلَيْهِمْ وَلَا الضَّآلِّينَ﴾ فَقُوْلُوْا : اٰمِيْنَ ؛ فَإِنَّ الْمَلَآئِكَةَ تَقُوْلُ : اٰمِيْنَ ، وَالْإِِمَامُ يَقُوْلُ : اٰمِيْنَ ، فَمَنْ وَافَقَ تَأْمِيْنُهٗ تَأْمِيْنَ الْمَلَآئِكَةِ غُفِرَ لَهٗ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِه
আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। রাসূলুলাহ ﷺ বলেছেন, ইমাম যখন ‘গাইরিল্ মাগ্যূবি আলাইহিম্ ওয়ালায্যো-লীন’ বলেন, তখন তোমরা ‘আমীন’ বলবে। কারণ তখন ফেরেশতারা ‘আমীন’ বলে থাকেন, আর তখন ইমামও ‘আমীন’ বলে থাকেন। আর যার ‘আমীন’ বলা ফেরেশতাদের ‘আমীন’ বলার সাথে মিলে যাবে, তার পেছনের সকল গোনাহ ক্ষমা করে দেয়া হবে। [সহীহ ইবনে খুযায়মা, হা/৫৭৫; সহীহ ইবনে হিববান, হা/১৮০৪।]
যেহরী সালাতে ইমামের সূরা ফাতিহা পাঠ শেষে ইমাম-মুক্তাদী সকলে জোরে আমীন বলবে। হাদীসে এসেছে,
عَنْ وَائِلِ بْنِ حُجْرٍ قَالَ كَانَ رَسُوْلُ اللهِ - إِذَا قَرَأَ ﴿ وَلاَ الضَّآلِّينَ﴾ قَالَ ﴿ اٰمِينَ ﴾ . وَرَفَعَ بِهَا صَوْتَهٗ
ওয়ায়েল ইবনে হুজর (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুলস্নাহ ﷺ যখন ‘ওয়ালায্যো-লস্নীন’ পাঠ করতেন, তখন উচ্চৈঃস্বরে আমীন বলতেন। [আবু দাউদ, হা/৯৩৩; মুসনাদে আহমাদ, হা/১৮৮৬২; ইবনে মাজাহ, হা/৮৫৫; নাসাঈ, হা/৯৩২; তিরমিযী, হা/২৪৮।]
এ হাদীস থেকে এটা স্পষ্ট হয় যে, রাসূলুলস্নাহ ﷺ নিজে শব্দ করে আমীন বলেছেন। সুতরাং নবী করীম ﷺ নির্দেশিত পথ অনুসরণ করাই আমাদের জন্য শ্রেয়।
এজন্য ইমাম বুখারী (রহ.) তার ‘‘সহীহ বুখারী’’ কিতাবে এভাবে একটি অনুচ্ছেদ রচনা করেছেন,
بَابُ جَهْرِ الْإِمَامِ بِالتَّأْمِيْنِ . وَقَالَ عَطَاءٌ : اٰمِيْنَ دُعَاءٌ أَمَّنَ ابْنُ الزُّبَيْرِ ، وَمَنْ وَرَاءَهُ حَتّٰى إِنَّ لِلْمَسْجِدِ لَلَجَّةً
ইমাম উচ্চৈঃস্বরে আমীন বলা অনুচ্ছেদ। আত্বা বলেন, আমীন হলো দু‘আ। ইবনে যুবাইর এবং তার পেছনের লোকেরা এমন জোরে আমীন বলতেন যাতে মসজিদ গুঞ্জরিত হয়ে উঠত। [বুখারী তালীক্ব ১/১০৭ পৃঃ, হা/৭৮০; ফাৎহুল বারী, হা/৭৮০-৮১ ‘সশব্দে আমীন বলা’ অনুচ্ছেদ- ১১১।]
তারপর তিনি নিম্নোক্ত অনুচ্ছেদ রচনা করেছেন -
بَابٌ جَهَرَ الْمَأمُوْمِ بِالتَّأمِيْنِ
অর্থাৎ মুক্তাদীর উচ্চৈঃস্বরে আমীন বলা অনুচ্ছেদ।
নীরবে আ-মীন বলার হাদীসসমূহের বিশেস্নষণ:
নীরবে আ-মীন বলার পক্ষে যে বর্ণনা এসেছে তা দলীলের জন্য উপযুক্ত নয়। হাদীস বিশারদগণের নিকট নিম্নস্বরে আমীন বলার হাদীসটি মুযত্বারিব অর্থাৎ যার সনদ ও মতনে নাম ও শব্দগত ভুল রয়েছে। উচ্চৈঃস্বরে আমীন বলার হাদীস এসব ত্রম্নটি থেকে মুক্ত হওয়ার কারণে এর উপর আমল করাই উত্তম। [দার কুতনী, হা/১২৫৬; আর রাওয়াতুন নাদিয়াহ ১/২৭২; আন নাওলুল আওত্বার ৩/৭৫।]
তাছাড়া উপরের আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসে বলা হয়েছে, ইয়াহুদিরা মুসলিমদের আমীন শব্দ শুনতে পায় এবং এ কারণে তারা হিংসা করে। সুতরাং এখন যদি উচ্চৈঃস্বরে আমীন না বলা হয় তবে তারা শুনবে কী করে? আর না শুনতে পেলে হিংসা করবে কী করে? অতএব উচ্চৈঃস্বরে আমীন বলাই সুন্নাত।
অপর হাদীসে বলা হয়েছে যে, ইমাম যখন আমীন বলেন তখন তোমরা আমীন বলো। এতে অতি সহজেই বুঝা যাচ্ছে যে, ইমামকে জোরে আমীন বলতে হবে। তাহলেই মুক্তাদীরা ইমামের আমীন শুনতে পাবে এবং তারা ইমামের সাথে আমীন বলবে। এখন যদি ইমাম আসেত্ম আমীন বলেন, তাহলে মুক্তাদীরা তা শুনতে পাবে না। এতে করে সবার আমীন একসাথে হবে না এবং সওয়াব থেকেও বঞ্চিত হতে হবে। তাই সহীহ হাদীসের উপর আমল করার লক্ষ্যে ইমাম এবং মুক্তাদী সকলেরই জোরে আমীন বলা উচিত।
عَنْ وَائِلِ بْنِ حُجْرٍ قَالَ كَانَ رَسُوْلُ اللهِ - إِذَا قَرَأَ ﴿ وَلاَ الضَّآلِّينَ﴾ قَالَ ﴿ اٰمِينَ ﴾ . وَرَفَعَ بِهَا صَوْتَهٗ
ওয়ায়েল ইবনে হুজর (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুলস্নাহ ﷺ যখন ‘ওয়ালায্যো-লস্নীন’ পাঠ করতেন, তখন উচ্চৈঃস্বরে আমীন বলতেন। [আবু দাউদ, হা/৯৩৩; মুসনাদে আহমাদ, হা/১৮৮৬২; ইবনে মাজাহ, হা/৮৫৫; নাসাঈ, হা/৯৩২; তিরমিযী, হা/২৪৮।]
এ হাদীস থেকে এটা স্পষ্ট হয় যে, রাসূলুলস্নাহ ﷺ নিজে শব্দ করে আমীন বলেছেন। সুতরাং নবী করীম ﷺ নির্দেশিত পথ অনুসরণ করাই আমাদের জন্য শ্রেয়।
এজন্য ইমাম বুখারী (রহ.) তার ‘‘সহীহ বুখারী’’ কিতাবে এভাবে একটি অনুচ্ছেদ রচনা করেছেন,
بَابُ جَهْرِ الْإِمَامِ بِالتَّأْمِيْنِ . وَقَالَ عَطَاءٌ : اٰمِيْنَ دُعَاءٌ أَمَّنَ ابْنُ الزُّبَيْرِ ، وَمَنْ وَرَاءَهُ حَتّٰى إِنَّ لِلْمَسْجِدِ لَلَجَّةً
ইমাম উচ্চৈঃস্বরে আমীন বলা অনুচ্ছেদ। আত্বা বলেন, আমীন হলো দু‘আ। ইবনে যুবাইর এবং তার পেছনের লোকেরা এমন জোরে আমীন বলতেন যাতে মসজিদ গুঞ্জরিত হয়ে উঠত। [বুখারী তালীক্ব ১/১০৭ পৃঃ, হা/৭৮০; ফাৎহুল বারী, হা/৭৮০-৮১ ‘সশব্দে আমীন বলা’ অনুচ্ছেদ- ১১১।]
তারপর তিনি নিম্নোক্ত অনুচ্ছেদ রচনা করেছেন -
بَابٌ جَهَرَ الْمَأمُوْمِ بِالتَّأمِيْنِ
অর্থাৎ মুক্তাদীর উচ্চৈঃস্বরে আমীন বলা অনুচ্ছেদ।
নীরবে আ-মীন বলার হাদীসসমূহের বিশেস্নষণ:
নীরবে আ-মীন বলার পক্ষে যে বর্ণনা এসেছে তা দলীলের জন্য উপযুক্ত নয়। হাদীস বিশারদগণের নিকট নিম্নস্বরে আমীন বলার হাদীসটি মুযত্বারিব অর্থাৎ যার সনদ ও মতনে নাম ও শব্দগত ভুল রয়েছে। উচ্চৈঃস্বরে আমীন বলার হাদীস এসব ত্রম্নটি থেকে মুক্ত হওয়ার কারণে এর উপর আমল করাই উত্তম। [দার কুতনী, হা/১২৫৬; আর রাওয়াতুন নাদিয়াহ ১/২৭২; আন নাওলুল আওত্বার ৩/৭৫।]
তাছাড়া উপরের আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসে বলা হয়েছে, ইয়াহুদিরা মুসলিমদের আমীন শব্দ শুনতে পায় এবং এ কারণে তারা হিংসা করে। সুতরাং এখন যদি উচ্চৈঃস্বরে আমীন না বলা হয় তবে তারা শুনবে কী করে? আর না শুনতে পেলে হিংসা করবে কী করে? অতএব উচ্চৈঃস্বরে আমীন বলাই সুন্নাত।
অপর হাদীসে বলা হয়েছে যে, ইমাম যখন আমীন বলেন তখন তোমরা আমীন বলো। এতে অতি সহজেই বুঝা যাচ্ছে যে, ইমামকে জোরে আমীন বলতে হবে। তাহলেই মুক্তাদীরা ইমামের আমীন শুনতে পাবে এবং তারা ইমামের সাথে আমীন বলবে। এখন যদি ইমাম আসেত্ম আমীন বলেন, তাহলে মুক্তাদীরা তা শুনতে পাবে না। এতে করে সবার আমীন একসাথে হবে না এবং সওয়াব থেকেও বঞ্চিত হতে হবে। তাই সহীহ হাদীসের উপর আমল করার লক্ষ্যে ইমাম এবং মুক্তাদী সকলেরই জোরে আমীন বলা উচিত।
ইমামের পেছনে সূরা ফাতিহা পাঠের ব্যাপারে বিদ্বানদের ৩টি অভিমত রয়েছে।
১. সিররী অথবা যেহরী কোন সালাতেই ইমামের পেছনে সূরা ফাতিহা পাঠ করা যাবে না।
২. যেহরী সালাতে পড়া যাবে না তবে সিররী সালাতে ইমামের পেছনে সূরা ফাতিহা পাঠ করতে হবে।
৩. সিররী অথবা যেহরী যে কোন সালাতই হোক সর্বাবস্থায় ইমাম ও মুক্তাদী সকলের জন্য সকল প্রকার সালাতে প্রতি রাক‘আতে সূরা ফাতিহা পাঠ করা ওয়াজিব। নিম্নে এ সম্পর্কে দলীলসমূহ উলেখ করা হলো :
عَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِىِّ - - قَالَ : مَنْ صَلّٰى صَلَاةً لَمْ يَقْرَأْ فِيْهَا بِأُمِّ الْقُرْاٰنِ فَهِىَ خِدَاجٌ - ثَلَاثًا - غَيْرُ تَمَامٍ . فَقِيْلَ لِأَبِى هُرَيْرَةَ إِنَّا نَكُوْنُ وَرَاءَ الْإِمَامِ . فَقَالَ اِقْرَأْ بِهَا فِى نَفْسِكَ فَإِنِّىْ سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ - يَقُوْلُ : قَالَ اللهُ تَعَالٰى قَسَمْتُ الصَّلَاةَ بَيْنِىْ وَبَيْنَ عَبْدِىْ نِصْفَيْنِ وَلِعَبْدِىْ مَا سَأَلَ
আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুলাহ ﷺ বলেছেন, যে ব্যক্তি সালাত আদায় করল, যার মধ্যে উম্মুল কুরআন অর্থাৎ সূরা ফাতিহা পাঠ করল না তার ঐ সালাত বিকলাঙ্গ, বিকলাঙ্গ, বিকলাঙ্গ ও অপূর্ণাঙ্গ। রাবী আবু হুরায়রা (রাঃ) কে বলা হলো, আমরা যখন ইমামের পেছনে থাকি, তখন কীভাবে পাঠ করব? তখন তিনি বললেন, তুমি তা চুপে চুপে পাঠ করবে। কেননা আমি রাসূলুলাহ ﷺ কে বলতে শুনেছি। আলাহ তা‘আলা বলেছেন, আমি সূরা ফাতিহাকে আমার ও আমার বান্দার মাঝে দু’ভাগ করে নিয়েছি। আর আমার বান্দা যা চাইবে তাই পাবে। [মুয়াত্তা ইমাম মালেক, হা/১৮৮; সহীহ মুসলিম, হা/৯০৪।]
এ হাদীসে বলা হয়েছে, বান্দা যখন আলাহর কাছে চাইবে তখন আলাহ তাকে দেবেন। আর আমরা সবাই জানি যে, সূরা ফাতিহা হচ্ছে দু‘আ। এখন বান্দা যদি দু‘আ না করে তাহলে আলাহ তাকে কীভাবে দেবেন!
খিদাজ ( خِدَاج ) এর অর্থ : সময় আসার পূর্বেই যে সন্তান ভূমিষ্ঠ হয়, যদিও সে পূর্ণাঙ্গ হয় আরবরা ঐ বাচ্চাকে খিদাজ বলে যা রক্তপিন্ড আকারে অসময়ে গর্ভচ্যুত হয় ও যার আকৃতি চেনা যায় না। আবু ওবায়েদ বলেন, খিদাজ হলো গর্ভচ্যুত মৃত সন্তান, যা কাজে আসে না। [তিরমিযী, হা/২৪৭; আবু দাউদ, হা/৮০৬।] অতএব সূরা ফাতিহা বিহীন সালাত প্রাণহীন অপূর্ণাঙ্গ বাচ্চার ন্যায়, যা কোন কাজে লাগে না।
عَنْ عُبَادَةَ بْنِ الصَّامِتِ قَالَ كُنَّا خَلْفَ رَسُوْلِ اللهِ فِى صَلَاةِ الْفَجْرِ فَقَرَأَ رَسُوْلُ اللهِ - فَثَقُلَتْ عَلَيْهِ الْقِرَاءَةُ فَلَمَّا فَرَغَ قَالَ : لَعَلَّكُمْ تَقْرَءُونَ خَلْفَ إِمَامِكُمْ . قُلْنَا نَعَمْ هٰذَا يَا رَسُوْلَ اللهِ . قَالَ : لَا تَفْعَلُوْا إِلَّا بِفَاتِحَةِ الْكِتَابِ فَإِنَّهٗ لَا صَلَاةَ لِمَنْ لَمْ يَقْرَأْ بِهَا
উবাদা ইবনে সামেত (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা আমরা ফজরের জামাআতে রাসূলুলাহ ﷺ এর পেছনে ছিলাম। এমন সময় মুক্তাদীদের কেউ সরবে কিছু পাঠ করলে রাসূলুলাহ ﷺ এর জন্য কিরাআত পাঠ করা কঠিন হয়ে পড়ে। সালাম ফিরানোর পর রাসূলুলাহ ﷺ বললেন, সম্ভবত তোমরা তোমাদের ইমামের পেছনে কিছু পড়ে থাক? আমরা বললাম, হ্যাঁ। জবাবে রাসূলুলাহ ﷺ বললেন, এরূপ করো না। কেবল সূরা ফাতিহা ব্যতীত। কেননা যে ব্যক্তি এটা পাঠ করে না তার সালাত শুদ্ধ হয় না। [আবু দাউদ, হা/৮২৩; তিরমিযী, হা/৩১১; মুসনাদে আহমাদ, হা/২২৭৪৬; সহীহ ইবনে খুযায়মা, হা/১৫৮১; সহীহ ইবনে হিববান, হা/১৭৮৫; মুস্তাদরাকে হাকেম, হা/৮৭১; মিশকাত, হা/৮৫৪।]
عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ ، أَنَّ النَّبِيَّ صَلّٰى بِأَصْحَابِه ، فَلَمَّا قَضٰى صَلَاتَهٗ ، أَقْبَلَ عَلَيْهِمْ بِوَجْهِهِ ، فَقَالَ : أَتَقْرَءُوْنَ فِي صَلَاتِكُمْ خَلْفَ الْإِمَامِ ، وَالْإِمَامُ يَقْرَأُ ؟ فَسَكَتُوْا ، فَقَالَهَا ثَلَاثَ مَرَّاتٍ ، فَقَالَ قَائِلٌ ، أَوْ قَائِلُوْنَ : إِنَّا لَنَفْعَلُ ، قَالَ : فَلَا تَفْعَلُوْا ، وَلْيَقْرَأْ أَحَدُكُمْ بِفَاتِحَةِ الْكِتَابِ فِي نَفْسِهٖ
আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা রাসূলুলাহ ﷺ সাহাবীদের নিয়ে সালাত আদায় করেন। অতঃপর যখন সালাত শেষ করলেন তখন তাদের দিকে মুখ করলেন এবং বললেন, ইমাম কিরাআত পাঠ করা অবস্থায় তোমরা সালাতে ইমামের পেছনে কিরাআত পাঠ করেছ কি? কিমত্মু তারা চুপ থাকলেন। এভাবে তিনি তিনবার জিজ্ঞেস করলেন। তখন তাদের একজন বা সকলে বললেন, হ্যাঁ-আমরা পাঠ করেছি। তখন তিনি বললেন, তোমরা এমনটি করো না। তবে তোমরা নীরবে সূরা ফাতিহা পাঠ করবে। [সহীহ ইবনে হিববান, হা/১৮৪১; মু‘জামুল আওসাত, হা/২৬৮০; দার কুতনী, হা/১২৮৮।]
শাইখ আলবানী বলেন, হাদীসটির সনদ সহীহ লিগায়রিহী। মুহাক্কীক সালীম আসাদ বলেন, এর সনদ জাইয়িদ তথা উত্তম।
عَنْ يَزِيْدَ بْنِ شَرِيْكٍ أَنَّهٗ سَأَلَ عُمَرَ عَنِ الْقِرَاءَةِ خَلْفَ الْإِمَامِ فَقَالَ اِقْرَأْ بِفَاتِحَةِ الْكِتَابِ قُلْتُ وَإِنْ كُنْتَ أَنْتَ قَالَ وَإِنْ كُنْتُ أَنَا قُلْتُ وَإِنْ جَهَرْتَ قَالَ وَإِنْ جَهَرْتُ
ইয়াযীদ ইবনে শারীক (রাঃ) হতে বর্ণিত। একদা তিনি উমর (রাঃ) কে ইমামের পেছনে কিরাআত পাঠ করা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলেন। তখন তিনি বললেন, তুমি শুধু সূরা ফাতিহা পাঠ করো। আমি বললাম, যদি আপনি ইমাম হন? তিনি বললেন, যদিও আমি ইমাম হই। আমি পুনরায় বললাম, যদি আপনি জোরে কিরাআত পাঠ করেন? তিনি বললেন, যদিও আমি জোরে কিরাআত পাঠ করি। [দার কুতনী, হা/১২১০; সুনানুল কুবরা লিল বায়হাকী, হা/৩০৪৭; মুস্তাদরাকে হাকেম, হা/৮৭৩।]
উপরোক্ত দলীলের ভিত্তিতে বলা যায় যে, ইমাম সূরা ফাতিহা স্বশব্দে বা নীরবে যেভাবেই পড়ুক না কেন, মুক্তাদীগণকে অবশ্যই ইমামের পেছনে নীরবে তা পড়তে হবে।
ইমামের পেছনে সূরা ফাতিহা পাঠ করা যাবে না বলে যারা অভিমত পোষণ করেন তাদের দলীল হলো; আলাহ তা‘আলা বলেন,
﴿وَإِذَا قُرِئَ الْقُرْاٰنُ فَاسْتَمِعُوْا لَهٗ وَأَنْصِتُوْا ﴾
যখন কুরআন তিলাওয়াত করা হয় তখন তোমরা চুপ থাকো। (সূরা আরাফ- ২০৪)
অত্র আয়াতে আলাহ তা‘আলা যেহেতু কুরআন তিলাওয়াত করার সময় চুপ থাকতে বলেছেন সেহেতু তারা যে কোন ধরনের কুরআন তিলাওয়াতের সময় চুপ থাকার পক্ষে দলীল পেশ করে থাকেন।
আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। রাসূলুলাহ ﷺ বলেছেন, ইমাম নিযুক্ত করা হয় তাকে অনুসরণ করার জন্য। তিনি যখন তাকবীর বলেন, তখন তোমরা তাকবীর বলো। তিনি যখন কিরাআত পাঠ করেন, তখন তোমরা চুপ থাকো। [নাসাঈ, হা/৯২১; ইবনে মাজাহ, হা/৮৪৬; মিশকাত, হা/ ৮৫৭।]
এ হাদীসে বলা হয়েছে, যখন ইমাম কিরাআত পাঠ করবে তখন তোমরা নীরব থাকো।
জ্ঞাতব্য :
ইমামের পেছনে সূরা ফাতিহা পাঠ না করার পক্ষে যেসব দলীল পেশ করা হয় তা আম বা ব্যাপক হুকুম সম্বলিত। অন্য হাদীসের মাধ্যমে সূরা ফাতিহাকে এ হুকুম থেকে খাস করা হয়েছে। একই রাবী (আবু হুরায়রা রাঃ) এর ইতিপূর্বের বর্ণনায় এবং আনাস (রাঃ) বর্ণিত হাদীসে সূরা ফাতিহাকে খাসভাবে চুপে চুপে পড়তে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। অতএব ইমামের পেছনে চুপে চুপে সূরা ফাতিহা পাঠ করলে উভয় হাদীসের উপর আমল হয়ে যায়।
ইমাম সাহেব সূরা ফাতিহা পাঠ করার সময় আয়াত শেষে যখন বিরতি দেবেন তখন মুক্তাদীরা চুপে চুপে পড়ে নেবে। আর ইমাম যখন আস্তে পড়েন তখন মুক্তাদীরা কিছুই শুনতে পায় না। এমতাবস্থায় সূরা ফাতিহা পাঠ করতে কোন সমস্যা নেই।
মুক্তাদীরা যেন সূরা ফাতিহা পাঠ করার সুযোগ পায়- সেজন্য ইমামগণের খেয়াল রাখা কর্তব্য। তাই সূরা ফাতিহা পাঠের সময় তাড়াহুড়া না করে প্রতি আয়াতে বিরতি দেবেন। যেমন রাসূলুলাহ ﷺ বিরতি দিয়ে সূরা ফাতিহা পাঠ করতেন। আর মুক্তাদীদের উচিত হলো, ইমাম যখন পড়বেন তখন তারা শুনার দিকে মনোযোগ দিবেন। আর ইমাম যখন বিরতি দেবেন তখন চুপি চুপি ঐ আয়াতটি পড়ে নেবেন। তাহলে কুরআন শুনার উপরও আমল হবে, সেই সাথে ঐসব হাদীসের উপরও আমল হয়ে যাবে যেসব হাদীসে রাসূলুলাহ ﷺ ইমামের পেছনে চুপি চুপি সূরা ফাতিহা পড়ার নির্দেশ দিয়েছেন। আলস্নাহ আমাদেরকে সহীহ বুঝ ও আমলের তাওফীক দান করম্নন।
১. সিররী অথবা যেহরী কোন সালাতেই ইমামের পেছনে সূরা ফাতিহা পাঠ করা যাবে না।
২. যেহরী সালাতে পড়া যাবে না তবে সিররী সালাতে ইমামের পেছনে সূরা ফাতিহা পাঠ করতে হবে।
৩. সিররী অথবা যেহরী যে কোন সালাতই হোক সর্বাবস্থায় ইমাম ও মুক্তাদী সকলের জন্য সকল প্রকার সালাতে প্রতি রাক‘আতে সূরা ফাতিহা পাঠ করা ওয়াজিব। নিম্নে এ সম্পর্কে দলীলসমূহ উলেখ করা হলো :
عَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِىِّ - - قَالَ : مَنْ صَلّٰى صَلَاةً لَمْ يَقْرَأْ فِيْهَا بِأُمِّ الْقُرْاٰنِ فَهِىَ خِدَاجٌ - ثَلَاثًا - غَيْرُ تَمَامٍ . فَقِيْلَ لِأَبِى هُرَيْرَةَ إِنَّا نَكُوْنُ وَرَاءَ الْإِمَامِ . فَقَالَ اِقْرَأْ بِهَا فِى نَفْسِكَ فَإِنِّىْ سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ - يَقُوْلُ : قَالَ اللهُ تَعَالٰى قَسَمْتُ الصَّلَاةَ بَيْنِىْ وَبَيْنَ عَبْدِىْ نِصْفَيْنِ وَلِعَبْدِىْ مَا سَأَلَ
আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুলাহ ﷺ বলেছেন, যে ব্যক্তি সালাত আদায় করল, যার মধ্যে উম্মুল কুরআন অর্থাৎ সূরা ফাতিহা পাঠ করল না তার ঐ সালাত বিকলাঙ্গ, বিকলাঙ্গ, বিকলাঙ্গ ও অপূর্ণাঙ্গ। রাবী আবু হুরায়রা (রাঃ) কে বলা হলো, আমরা যখন ইমামের পেছনে থাকি, তখন কীভাবে পাঠ করব? তখন তিনি বললেন, তুমি তা চুপে চুপে পাঠ করবে। কেননা আমি রাসূলুলাহ ﷺ কে বলতে শুনেছি। আলাহ তা‘আলা বলেছেন, আমি সূরা ফাতিহাকে আমার ও আমার বান্দার মাঝে দু’ভাগ করে নিয়েছি। আর আমার বান্দা যা চাইবে তাই পাবে। [মুয়াত্তা ইমাম মালেক, হা/১৮৮; সহীহ মুসলিম, হা/৯০৪।]
এ হাদীসে বলা হয়েছে, বান্দা যখন আলাহর কাছে চাইবে তখন আলাহ তাকে দেবেন। আর আমরা সবাই জানি যে, সূরা ফাতিহা হচ্ছে দু‘আ। এখন বান্দা যদি দু‘আ না করে তাহলে আলাহ তাকে কীভাবে দেবেন!
খিদাজ ( خِدَاج ) এর অর্থ : সময় আসার পূর্বেই যে সন্তান ভূমিষ্ঠ হয়, যদিও সে পূর্ণাঙ্গ হয় আরবরা ঐ বাচ্চাকে খিদাজ বলে যা রক্তপিন্ড আকারে অসময়ে গর্ভচ্যুত হয় ও যার আকৃতি চেনা যায় না। আবু ওবায়েদ বলেন, খিদাজ হলো গর্ভচ্যুত মৃত সন্তান, যা কাজে আসে না। [তিরমিযী, হা/২৪৭; আবু দাউদ, হা/৮০৬।] অতএব সূরা ফাতিহা বিহীন সালাত প্রাণহীন অপূর্ণাঙ্গ বাচ্চার ন্যায়, যা কোন কাজে লাগে না।
عَنْ عُبَادَةَ بْنِ الصَّامِتِ قَالَ كُنَّا خَلْفَ رَسُوْلِ اللهِ فِى صَلَاةِ الْفَجْرِ فَقَرَأَ رَسُوْلُ اللهِ - فَثَقُلَتْ عَلَيْهِ الْقِرَاءَةُ فَلَمَّا فَرَغَ قَالَ : لَعَلَّكُمْ تَقْرَءُونَ خَلْفَ إِمَامِكُمْ . قُلْنَا نَعَمْ هٰذَا يَا رَسُوْلَ اللهِ . قَالَ : لَا تَفْعَلُوْا إِلَّا بِفَاتِحَةِ الْكِتَابِ فَإِنَّهٗ لَا صَلَاةَ لِمَنْ لَمْ يَقْرَأْ بِهَا
উবাদা ইবনে সামেত (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা আমরা ফজরের জামাআতে রাসূলুলাহ ﷺ এর পেছনে ছিলাম। এমন সময় মুক্তাদীদের কেউ সরবে কিছু পাঠ করলে রাসূলুলাহ ﷺ এর জন্য কিরাআত পাঠ করা কঠিন হয়ে পড়ে। সালাম ফিরানোর পর রাসূলুলাহ ﷺ বললেন, সম্ভবত তোমরা তোমাদের ইমামের পেছনে কিছু পড়ে থাক? আমরা বললাম, হ্যাঁ। জবাবে রাসূলুলাহ ﷺ বললেন, এরূপ করো না। কেবল সূরা ফাতিহা ব্যতীত। কেননা যে ব্যক্তি এটা পাঠ করে না তার সালাত শুদ্ধ হয় না। [আবু দাউদ, হা/৮২৩; তিরমিযী, হা/৩১১; মুসনাদে আহমাদ, হা/২২৭৪৬; সহীহ ইবনে খুযায়মা, হা/১৫৮১; সহীহ ইবনে হিববান, হা/১৭৮৫; মুস্তাদরাকে হাকেম, হা/৮৭১; মিশকাত, হা/৮৫৪।]
عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ ، أَنَّ النَّبِيَّ صَلّٰى بِأَصْحَابِه ، فَلَمَّا قَضٰى صَلَاتَهٗ ، أَقْبَلَ عَلَيْهِمْ بِوَجْهِهِ ، فَقَالَ : أَتَقْرَءُوْنَ فِي صَلَاتِكُمْ خَلْفَ الْإِمَامِ ، وَالْإِمَامُ يَقْرَأُ ؟ فَسَكَتُوْا ، فَقَالَهَا ثَلَاثَ مَرَّاتٍ ، فَقَالَ قَائِلٌ ، أَوْ قَائِلُوْنَ : إِنَّا لَنَفْعَلُ ، قَالَ : فَلَا تَفْعَلُوْا ، وَلْيَقْرَأْ أَحَدُكُمْ بِفَاتِحَةِ الْكِتَابِ فِي نَفْسِهٖ
আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা রাসূলুলাহ ﷺ সাহাবীদের নিয়ে সালাত আদায় করেন। অতঃপর যখন সালাত শেষ করলেন তখন তাদের দিকে মুখ করলেন এবং বললেন, ইমাম কিরাআত পাঠ করা অবস্থায় তোমরা সালাতে ইমামের পেছনে কিরাআত পাঠ করেছ কি? কিমত্মু তারা চুপ থাকলেন। এভাবে তিনি তিনবার জিজ্ঞেস করলেন। তখন তাদের একজন বা সকলে বললেন, হ্যাঁ-আমরা পাঠ করেছি। তখন তিনি বললেন, তোমরা এমনটি করো না। তবে তোমরা নীরবে সূরা ফাতিহা পাঠ করবে। [সহীহ ইবনে হিববান, হা/১৮৪১; মু‘জামুল আওসাত, হা/২৬৮০; দার কুতনী, হা/১২৮৮।]
শাইখ আলবানী বলেন, হাদীসটির সনদ সহীহ লিগায়রিহী। মুহাক্কীক সালীম আসাদ বলেন, এর সনদ জাইয়িদ তথা উত্তম।
عَنْ يَزِيْدَ بْنِ شَرِيْكٍ أَنَّهٗ سَأَلَ عُمَرَ عَنِ الْقِرَاءَةِ خَلْفَ الْإِمَامِ فَقَالَ اِقْرَأْ بِفَاتِحَةِ الْكِتَابِ قُلْتُ وَإِنْ كُنْتَ أَنْتَ قَالَ وَإِنْ كُنْتُ أَنَا قُلْتُ وَإِنْ جَهَرْتَ قَالَ وَإِنْ جَهَرْتُ
ইয়াযীদ ইবনে শারীক (রাঃ) হতে বর্ণিত। একদা তিনি উমর (রাঃ) কে ইমামের পেছনে কিরাআত পাঠ করা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলেন। তখন তিনি বললেন, তুমি শুধু সূরা ফাতিহা পাঠ করো। আমি বললাম, যদি আপনি ইমাম হন? তিনি বললেন, যদিও আমি ইমাম হই। আমি পুনরায় বললাম, যদি আপনি জোরে কিরাআত পাঠ করেন? তিনি বললেন, যদিও আমি জোরে কিরাআত পাঠ করি। [দার কুতনী, হা/১২১০; সুনানুল কুবরা লিল বায়হাকী, হা/৩০৪৭; মুস্তাদরাকে হাকেম, হা/৮৭৩।]
উপরোক্ত দলীলের ভিত্তিতে বলা যায় যে, ইমাম সূরা ফাতিহা স্বশব্দে বা নীরবে যেভাবেই পড়ুক না কেন, মুক্তাদীগণকে অবশ্যই ইমামের পেছনে নীরবে তা পড়তে হবে।
ইমামের পেছনে সূরা ফাতিহা পাঠ করা যাবে না বলে যারা অভিমত পোষণ করেন তাদের দলীল হলো; আলাহ তা‘আলা বলেন,
﴿وَإِذَا قُرِئَ الْقُرْاٰنُ فَاسْتَمِعُوْا لَهٗ وَأَنْصِتُوْا ﴾
যখন কুরআন তিলাওয়াত করা হয় তখন তোমরা চুপ থাকো। (সূরা আরাফ- ২০৪)
অত্র আয়াতে আলাহ তা‘আলা যেহেতু কুরআন তিলাওয়াত করার সময় চুপ থাকতে বলেছেন সেহেতু তারা যে কোন ধরনের কুরআন তিলাওয়াতের সময় চুপ থাকার পক্ষে দলীল পেশ করে থাকেন।
আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। রাসূলুলাহ ﷺ বলেছেন, ইমাম নিযুক্ত করা হয় তাকে অনুসরণ করার জন্য। তিনি যখন তাকবীর বলেন, তখন তোমরা তাকবীর বলো। তিনি যখন কিরাআত পাঠ করেন, তখন তোমরা চুপ থাকো। [নাসাঈ, হা/৯২১; ইবনে মাজাহ, হা/৮৪৬; মিশকাত, হা/ ৮৫৭।]
এ হাদীসে বলা হয়েছে, যখন ইমাম কিরাআত পাঠ করবে তখন তোমরা নীরব থাকো।
জ্ঞাতব্য :
ইমামের পেছনে সূরা ফাতিহা পাঠ না করার পক্ষে যেসব দলীল পেশ করা হয় তা আম বা ব্যাপক হুকুম সম্বলিত। অন্য হাদীসের মাধ্যমে সূরা ফাতিহাকে এ হুকুম থেকে খাস করা হয়েছে। একই রাবী (আবু হুরায়রা রাঃ) এর ইতিপূর্বের বর্ণনায় এবং আনাস (রাঃ) বর্ণিত হাদীসে সূরা ফাতিহাকে খাসভাবে চুপে চুপে পড়তে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। অতএব ইমামের পেছনে চুপে চুপে সূরা ফাতিহা পাঠ করলে উভয় হাদীসের উপর আমল হয়ে যায়।
ইমাম সাহেব সূরা ফাতিহা পাঠ করার সময় আয়াত শেষে যখন বিরতি দেবেন তখন মুক্তাদীরা চুপে চুপে পড়ে নেবে। আর ইমাম যখন আস্তে পড়েন তখন মুক্তাদীরা কিছুই শুনতে পায় না। এমতাবস্থায় সূরা ফাতিহা পাঠ করতে কোন সমস্যা নেই।
মুক্তাদীরা যেন সূরা ফাতিহা পাঠ করার সুযোগ পায়- সেজন্য ইমামগণের খেয়াল রাখা কর্তব্য। তাই সূরা ফাতিহা পাঠের সময় তাড়াহুড়া না করে প্রতি আয়াতে বিরতি দেবেন। যেমন রাসূলুলাহ ﷺ বিরতি দিয়ে সূরা ফাতিহা পাঠ করতেন। আর মুক্তাদীদের উচিত হলো, ইমাম যখন পড়বেন তখন তারা শুনার দিকে মনোযোগ দিবেন। আর ইমাম যখন বিরতি দেবেন তখন চুপি চুপি ঐ আয়াতটি পড়ে নেবেন। তাহলে কুরআন শুনার উপরও আমল হবে, সেই সাথে ঐসব হাদীসের উপরও আমল হয়ে যাবে যেসব হাদীসে রাসূলুলাহ ﷺ ইমামের পেছনে চুপি চুপি সূরা ফাতিহা পড়ার নির্দেশ দিয়েছেন। আলস্নাহ আমাদেরকে সহীহ বুঝ ও আমলের তাওফীক দান করম্নন।
আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। রাসূলুলস্নাহ ﷺ বলেছেন, যে ব্যক্তি সালাত আদায় করল কিন্তু তাতে উম্মুল কুরআন তথা সূরা ফাতিহা পাঠ করল না তার ঐ সালাত বিকলাঙ্গ, বিকলাঙ্গ, অপূর্ণাঙ্গ। রাবী আবু হুরায়রা (রাঃ) কে জিজ্ঞেস করা হলো, আমরা যখন ইমামের পেছনে সালাত আদায় করব তখন কী করব? তিনি বললেন, তোমরা চুপে চুপে তা পাঠ করবে। কেননা আমি রাসূলুলস্নাহ ﷺ কে বলতে শুনেছি, মহান আলস্নাহ তা‘আলা বলেছেন, আমি সালাতকে অর্থাৎ সূরা ফাতিহাকে আমার ও আমার বান্দার মধ্যে দু’ভাগ করে নিয়েছি। আমার বান্দা যা চাইবে তাই পাবে।
বান্দা যখন বলে,
اَلْحَمْدُ لِلّٰهِ رَبِّ الْعَالَمِيْنَ
সমসত্ম প্রশংসা ঐ আলাহর জন্য যিনি জগতসমূহের প্রতিপালক।
তখন আলাহ তা‘আলা বলেন,
حَمِدَنِىْ عَبْدِىْ
আমার বান্দা আমার প্রশংসা করেছে।
আবার যখন বলে,
اَلرَّحْمٰنِ الرَّحِيْمِ
যিনি পরম করম্নণাময়, অতিশয় দয়ালু।
তখন আলাহ বলেন,
اَثْنٰى عَلَىَّ عَبْدِىْ
আমার বান্দা আমার গুণগান করেছে।
আবার যখন বলে,
مَالِكِ يَوْمِ الدِّيْنِ
যিনি প্রতিফল দিবসের মালিক।
তখন আলাহ বলেন,
مَجَّدَنِىْ عَبْدِىْ
আমার বান্দা আমার মাহাত্ম্য ও মর্যাদা বর্ণনা করেছে।
আবার বান্দা যখন বলে,
اِيَّاكَ نَعْبُدُ وَاِيَّاكَ نَسْتَعِيْنُ
আমরা শুধুমাত্র আপনারই ইবাদাত করি এবং আপনারই নিকট সাহায্য প্রার্থনা করি।
তখন আলাহ বলেন,
هٰذَا بَيْنِىْ وَبَيْنَ عَبْدِىْ وَلِعَبْدِىْ مَا سَاَلَ
এ কথাটি আমার ও আমার বান্দার মধ্যে বিভক্ত হয়ে আছে। অর্থাৎ ইবাদাত আমার জন্য আর সাহায্য আমার বান্দার জন্য- আমার বান্দা যা চাইবে তা সে পাবে।
আর বান্দা যখন বলে,
اِهْدِنَا الصِّرَاطَ الْمُسْتَقِيْمَ صِرَاطَ الَّذِيْنَ اَنْعَمْتَ عَلَيْهِمْ غَيْرِ الْمَغْضُوْبِ عَلَيْهِمْ وَلَا الضَّآلِّيْنَ আমাদেরকে সরল-সঠিক পথ প্রদর্শন করম্নন। তাদের পথ, যাদের প্রতি আপনি অনুগ্রহ করেছেন; তাদের পথ নয় যাদের প্রতি আপনার গযব পড়েছে এবং তাদের পথও নয় যারা পথভ্রষ্ট হয়েছে।
তখন আলাহ বলেন,
هٰذَا لِعَبْدِىْ وَلِعَبْدِىْ مَا سَاَلَ
এটা আমার বান্দার, আর আমার বান্দা আমার কাছে যা চাইবে আমি তাকে তা দান করব। [সহীহ মুসলিম, হা/ ৯০৪; মুয়াত্তা ইমাম মালেক, হা/১৮৮; আবু দাউদ, হা/৮২১; তিরমিযী, হা/২৯৫৩; নাসাঈ, হা/৯০৯; ইবনে মাজাহ, হা/৩৭৮৪; মুসনাদে আহমাদ, হা/৭২৮৯; সহীহ ইবনে খুযায়মা, হা/৫০২; সহীহ ইবনে হিববান, হা/১৭৮৪; দার কুতনী, হা/১১৮৯; সহীহ তারগীব ওয়াত তারহীব, হা/১৪৫৫; মিশকাত, হা/৮২৩।]
বান্দা যখন বলে,
اَلْحَمْدُ لِلّٰهِ رَبِّ الْعَالَمِيْنَ
সমসত্ম প্রশংসা ঐ আলাহর জন্য যিনি জগতসমূহের প্রতিপালক।
তখন আলাহ তা‘আলা বলেন,
حَمِدَنِىْ عَبْدِىْ
আমার বান্দা আমার প্রশংসা করেছে।
আবার যখন বলে,
اَلرَّحْمٰنِ الرَّحِيْمِ
যিনি পরম করম্নণাময়, অতিশয় দয়ালু।
তখন আলাহ বলেন,
اَثْنٰى عَلَىَّ عَبْدِىْ
আমার বান্দা আমার গুণগান করেছে।
আবার যখন বলে,
مَالِكِ يَوْمِ الدِّيْنِ
যিনি প্রতিফল দিবসের মালিক।
তখন আলাহ বলেন,
مَجَّدَنِىْ عَبْدِىْ
আমার বান্দা আমার মাহাত্ম্য ও মর্যাদা বর্ণনা করেছে।
আবার বান্দা যখন বলে,
اِيَّاكَ نَعْبُدُ وَاِيَّاكَ نَسْتَعِيْنُ
আমরা শুধুমাত্র আপনারই ইবাদাত করি এবং আপনারই নিকট সাহায্য প্রার্থনা করি।
তখন আলাহ বলেন,
هٰذَا بَيْنِىْ وَبَيْنَ عَبْدِىْ وَلِعَبْدِىْ مَا سَاَلَ
এ কথাটি আমার ও আমার বান্দার মধ্যে বিভক্ত হয়ে আছে। অর্থাৎ ইবাদাত আমার জন্য আর সাহায্য আমার বান্দার জন্য- আমার বান্দা যা চাইবে তা সে পাবে।
আর বান্দা যখন বলে,
اِهْدِنَا الصِّرَاطَ الْمُسْتَقِيْمَ صِرَاطَ الَّذِيْنَ اَنْعَمْتَ عَلَيْهِمْ غَيْرِ الْمَغْضُوْبِ عَلَيْهِمْ وَلَا الضَّآلِّيْنَ আমাদেরকে সরল-সঠিক পথ প্রদর্শন করম্নন। তাদের পথ, যাদের প্রতি আপনি অনুগ্রহ করেছেন; তাদের পথ নয় যাদের প্রতি আপনার গযব পড়েছে এবং তাদের পথও নয় যারা পথভ্রষ্ট হয়েছে।
তখন আলাহ বলেন,
هٰذَا لِعَبْدِىْ وَلِعَبْدِىْ مَا سَاَلَ
এটা আমার বান্দার, আর আমার বান্দা আমার কাছে যা চাইবে আমি তাকে তা দান করব। [সহীহ মুসলিম, হা/ ৯০৪; মুয়াত্তা ইমাম মালেক, হা/১৮৮; আবু দাউদ, হা/৮২১; তিরমিযী, হা/২৯৫৩; নাসাঈ, হা/৯০৯; ইবনে মাজাহ, হা/৩৭৮৪; মুসনাদে আহমাদ, হা/৭২৮৯; সহীহ ইবনে খুযায়মা, হা/৫০২; সহীহ ইবনে হিববান, হা/১৭৮৪; দার কুতনী, হা/১১৮৯; সহীহ তারগীব ওয়াত তারহীব, হা/১৪৫৫; মিশকাত, হা/৮২৩।]
সূরা ফাতিহাকে অনেকে কাজে ব্যবহার করে থাকে, যা অবশ্যই পরিত্যাজ্য। য়েমন,
১. কবর যিয়ারতের সময় সূরা ফাতিহা পাঠ করা।
২.বিভিন্ন মিলাদ-মাহফিলে বরকত হাসিলের উদ্দেশ্য সূরা ফাতিহা পাঠ করা।
৩. নির্দিষ্ট সংখ্যক বার সূরা ফাতিহা পাঠ করে দুআ করা।
৪. সম্মিলিত দু’আর জন্য হাত উঠানোর পূর্বে সকলকে ফাতিহা পাঠ করতে বলা।
৫. মৃতের পাশে বসে সূরা ফাতিহা পাঠ করা।
৬. কবওে মাথার দিকে সূরা ফাতিহা ও পায়ের দিকে দাঁড়িয়ে সূরা বাকারা এর শুরম্ন অংশ পাঠ করা।
৭. লাশ দাফনের সময় সূরা ফাতিহা, কদর, কাফিরম্নন, নাসর, ইখলাছ,ফালাক,ও নাস এই সাতটি সূরা বিশেষভাবে পাঠ করা।
৮. কবরের সামনে হাতজোর করে দাঁড়িয়ে সূরা ফাতিহা ১ বার ও ইখরাস ১১ বার অথবা সূরা ইয়াসিন ১ বার পাঠ করা ইত্যাদি।
যারা এই সমসত্ম বিদআত চালু করবে তারা অবশ্যই গুনাহগার হবে। এ সর্ম্পকে হাদীসে এসেছে,
عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ مَنْ أَحْدَثَ فِي أَمْرِنَا هٰذَا مَا لَيْسَ فِيْهِ فَهُوَ رَدٌّ
আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুলvহ ﷺ বলেছেন, যে ব্যক্তি আমাদের দ্বীনে নতুন কিছু সংযোজন করবে, যা মূলত তাতে নেই- সেটি পরিত্যাজ্য। [সহীহ বুখারী হা/২৬৯৭; সহীহ মুসলিম হা/৪৫৭৯; সুনানে আবু দাউদ হা/৪৬০৭।]
অপর হাদীসে এসেছে,
عَنْ عِرْبَاضِ بْنِ سَارِيَةَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ... وَإِيَّاكُمْ وَمُحْدَثَاتِ الْأُمُوْرِ فَإِنَّ كُلَّ مُحْدَثَةٍ بِدْعَةٌ وَإِنَّ كُلَّ بِدْعَةٍ ضَلَالَةٌ
ইরবায ইবনে সারিয়াহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুলvহ ﷺ বলেছেন, তোমাদের উপর আবশ্যক হচ্ছে প্রত্যেক নব উদ্ভাবিত বিষয়সমূহ হতে বেঁচে থাকা। কেননা প্রত্যেক নব উদ্ভাবিত বিষয়সমূহই হচ্ছে বিদআত। আর প্রত্যেক বিদআতই হচ্ছে গোমরাহী। [মুসনাদে আহমদ হা/১৭১৪৪; সুনানে ইবনে মাজাহ হা/৪২।]
১. কবর যিয়ারতের সময় সূরা ফাতিহা পাঠ করা।
২.বিভিন্ন মিলাদ-মাহফিলে বরকত হাসিলের উদ্দেশ্য সূরা ফাতিহা পাঠ করা।
৩. নির্দিষ্ট সংখ্যক বার সূরা ফাতিহা পাঠ করে দুআ করা।
৪. সম্মিলিত দু’আর জন্য হাত উঠানোর পূর্বে সকলকে ফাতিহা পাঠ করতে বলা।
৫. মৃতের পাশে বসে সূরা ফাতিহা পাঠ করা।
৬. কবওে মাথার দিকে সূরা ফাতিহা ও পায়ের দিকে দাঁড়িয়ে সূরা বাকারা এর শুরম্ন অংশ পাঠ করা।
৭. লাশ দাফনের সময় সূরা ফাতিহা, কদর, কাফিরম্নন, নাসর, ইখলাছ,ফালাক,ও নাস এই সাতটি সূরা বিশেষভাবে পাঠ করা।
৮. কবরের সামনে হাতজোর করে দাঁড়িয়ে সূরা ফাতিহা ১ বার ও ইখরাস ১১ বার অথবা সূরা ইয়াসিন ১ বার পাঠ করা ইত্যাদি।
যারা এই সমসত্ম বিদআত চালু করবে তারা অবশ্যই গুনাহগার হবে। এ সর্ম্পকে হাদীসে এসেছে,
عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ مَنْ أَحْدَثَ فِي أَمْرِنَا هٰذَا مَا لَيْسَ فِيْهِ فَهُوَ رَدٌّ
আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুলvহ ﷺ বলেছেন, যে ব্যক্তি আমাদের দ্বীনে নতুন কিছু সংযোজন করবে, যা মূলত তাতে নেই- সেটি পরিত্যাজ্য। [সহীহ বুখারী হা/২৬৯৭; সহীহ মুসলিম হা/৪৫৭৯; সুনানে আবু দাউদ হা/৪৬০৭।]
অপর হাদীসে এসেছে,
عَنْ عِرْبَاضِ بْنِ سَارِيَةَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ... وَإِيَّاكُمْ وَمُحْدَثَاتِ الْأُمُوْرِ فَإِنَّ كُلَّ مُحْدَثَةٍ بِدْعَةٌ وَإِنَّ كُلَّ بِدْعَةٍ ضَلَالَةٌ
ইরবায ইবনে সারিয়াহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুলvহ ﷺ বলেছেন, তোমাদের উপর আবশ্যক হচ্ছে প্রত্যেক নব উদ্ভাবিত বিষয়সমূহ হতে বেঁচে থাকা। কেননা প্রত্যেক নব উদ্ভাবিত বিষয়সমূহই হচ্ছে বিদআত। আর প্রত্যেক বিদআতই হচ্ছে গোমরাহী। [মুসনাদে আহমদ হা/১৭১৪৪; সুনানে ইবনে মাজাহ হা/৪২।]
সূরা ফাতিহা থেকে আমরা যেসব শিক্ষা লাভ করতে পারি তা হলো :
১. যেকোনো ভালো কাজ আলস্নাহর নামে শুরম্ন করতে হবে।
২. সর্বাবস্থায় একমাত্র আলস্নাহর প্রশংসা করতে হবে। কেননা তিনিই হচ্ছেন সকল প্রশংসার মালিক এবং সমসত্ম প্রশংসা পাওয়ার যোগ্য একমাত্র তিনিই।
৩. আলস্নাহর একত্ববাদের উপর বিশ্বাস স্থাপন করতে হবে এবং কাজে-কর্মে তা বাসত্মবায়ন করতে হবে।
৪. আলস্নাহর গুণবাচক নামগুলোর স্বীকৃতি দিতে হবে; কেননা এই প্রত্যেকটি গুণই আলস্নাহর জন্য যথার্থ।
৫. বিচার দিবসের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করতে হবে এবং এও বিশ্বাস করতে হবে যে, ঐ দিনের একচ্ছত্র অধিপতি হচ্ছেন একমাত্র আলস্নাহ তা’ আলা। সেদিন তার হুকুম ছাড়া অন্য কারো হুকুম চলবে না।
৬. আলস্নাহর গুণবাচক নাম দ্বারা প্রার্থনা করতে হবে। কেননা এসব নাম দ্বারা প্রার্থনা করলে আলস্নাহ কবুল করেন।
৭. একমাত্র আলস্নাহর ইবাদত করতে হবে। কেননা তিনিই হচ্ছেন ইবাদত পাওয়ার একমাত্র হকদার।
৮. আলস্নাহর ইবাদতে কাউকে শরীক করা যাবেনা । কেননা এটি হচ্ছে বড় ধরনের গুনাহ।
৯. আলস্নাহ তা’আলা স্বয়ংসম্পূর্ণ এবং মানুষ তার মুখাপেক্ষা। এ কারনে বান্দাকে তাঁর কাছেই সাহায্য চাইতে হবে।
১০. একমাত্র আলস্নাহ তা’আলার কাছেই সাহায্য প্রার্থনা করতে হবে এবং কোনোকিছু চাইতে হলে আলস্নাহর কাছেই চাইতে হবে।
১১. আলস্নাহ তা’আলার কাছেই হেদায়াত প্রার্থনা করতে হবে; কেননা হেদায়াতের মালিক একমাত্র তিনিই।
১২. সরল সঠিক পথে চলার জন্য আলস্নাহর কাছে তাওফীক কামনা করতে হবে। কেননা আলস্নাহকে পাওয়ার জন্য একমাত্র পথ হচ্ছে এটিই। এছাড়া যত পথ আছে সবগুলো শয়তানর পথ- সেগুলো ভ্রষ্টতায় পরিপূর্ণ।
১৩. একথা বিশ্বাস করতে হবে যে, আলস্নাহ তা‘আলা কিছু বিশেষ বান্দাকে নিয়ামত প্রদান করে অনুগ্রহ করে থাকেন। সুতরাং সর্বদা সেসব বান্দাদের অমত্মর্ভূক্ত হওয়ার চেষ্টা করতে হবে।
১৪. সর্বদা সvকর্মশীল বান্দাদের অনুসরণ করতে হবে। তাহলে আলস্নাহর নিয়ামাত পাওয়ার আশা করা যেতে পারে।
১৫. অসvব্যাক্তিদেও অনুসরণ করা যাবেনা। কেননা তারা মানুষকে কেবল অসv পথেই পরিচালিত কওে থাকে, অবশেষে তাকে জাহান্নামে পৌঁছে দেয়।
১৬. সর্বক্ষেত্রে ইয়াহুদি ও খ্রিস্টানদের অনুসরণ করা থেকে বিরত থাকতে হবে। কেননা তারা তাদের ধর্মকে বিকৃত করে ফেলেছে। আর তারা হচ্ছে মুমিনদের অন্যতম শত্রম্ন।
১৭. আলস্নাহর ক্রোধ থেকে আশ্রয় চাইতে হবে। কেননা আলস্নাহ তা’আলা যার উপর ক্রোধান্বিত হন, তার ধ্বংস অনিবার্য।
১৮. আলস্নাহর কাছে পথভ্রষ্ট হওয়া থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করতে হবে। এজন্য সবসময় এ দু’আটি আমাদেরকে পাঠ করতে হবে,
رَبَّنَا لَا تُزِغْ قُلُوْبَنَا بَعْدَ إِذْ هَدَيْتَنَا وَهَبْ لَنَا مِنْ لَّدُنْكَ رَحْمَةً إِنَّكَ أَنْتَ الْوَهَّابُ
উচ্চারণ : রাববানা লা তুযিগ কুলূবানা বা‘দা ইয হাদাইতানা ওয়াহাব্লানা মিলস্নাদুনকা রাহমাহ, ইন্নাকা আনতাল ওয়াহ্হা-ব।
অর্থ : হে আমাদের প্রতিপালক! হেদায়াত দানের পর আপনি আমাদের অমত্মরগুলোকে বাঁকা করে দেবেন না, আমাদেরকে আপনার নিকট হতে রহমত দান করম্নন, অবশ্যই আপনি মহান দাতা। (সূরা আলে ইমরান- ৮)
اَلْحَمْدُ لِلّٰهِ الَّذِي بِنِعْمَتِه تَتِمُّ الصَّالِحَاتُ ‐ وَالصَّلَاةُ وَالسَّلَامُ عَلٰى رَسُوْلِهٖ مُحَمَّدٍ وَّعَلٰى اٰلِهٖ وَصَحْبِهٖ اَجْمَعِيْنَ
১. যেকোনো ভালো কাজ আলস্নাহর নামে শুরম্ন করতে হবে।
২. সর্বাবস্থায় একমাত্র আলস্নাহর প্রশংসা করতে হবে। কেননা তিনিই হচ্ছেন সকল প্রশংসার মালিক এবং সমসত্ম প্রশংসা পাওয়ার যোগ্য একমাত্র তিনিই।
৩. আলস্নাহর একত্ববাদের উপর বিশ্বাস স্থাপন করতে হবে এবং কাজে-কর্মে তা বাসত্মবায়ন করতে হবে।
৪. আলস্নাহর গুণবাচক নামগুলোর স্বীকৃতি দিতে হবে; কেননা এই প্রত্যেকটি গুণই আলস্নাহর জন্য যথার্থ।
৫. বিচার দিবসের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করতে হবে এবং এও বিশ্বাস করতে হবে যে, ঐ দিনের একচ্ছত্র অধিপতি হচ্ছেন একমাত্র আলস্নাহ তা’ আলা। সেদিন তার হুকুম ছাড়া অন্য কারো হুকুম চলবে না।
৬. আলস্নাহর গুণবাচক নাম দ্বারা প্রার্থনা করতে হবে। কেননা এসব নাম দ্বারা প্রার্থনা করলে আলস্নাহ কবুল করেন।
৭. একমাত্র আলস্নাহর ইবাদত করতে হবে। কেননা তিনিই হচ্ছেন ইবাদত পাওয়ার একমাত্র হকদার।
৮. আলস্নাহর ইবাদতে কাউকে শরীক করা যাবেনা । কেননা এটি হচ্ছে বড় ধরনের গুনাহ।
৯. আলস্নাহ তা’আলা স্বয়ংসম্পূর্ণ এবং মানুষ তার মুখাপেক্ষা। এ কারনে বান্দাকে তাঁর কাছেই সাহায্য চাইতে হবে।
১০. একমাত্র আলস্নাহ তা’আলার কাছেই সাহায্য প্রার্থনা করতে হবে এবং কোনোকিছু চাইতে হলে আলস্নাহর কাছেই চাইতে হবে।
১১. আলস্নাহ তা’আলার কাছেই হেদায়াত প্রার্থনা করতে হবে; কেননা হেদায়াতের মালিক একমাত্র তিনিই।
১২. সরল সঠিক পথে চলার জন্য আলস্নাহর কাছে তাওফীক কামনা করতে হবে। কেননা আলস্নাহকে পাওয়ার জন্য একমাত্র পথ হচ্ছে এটিই। এছাড়া যত পথ আছে সবগুলো শয়তানর পথ- সেগুলো ভ্রষ্টতায় পরিপূর্ণ।
১৩. একথা বিশ্বাস করতে হবে যে, আলস্নাহ তা‘আলা কিছু বিশেষ বান্দাকে নিয়ামত প্রদান করে অনুগ্রহ করে থাকেন। সুতরাং সর্বদা সেসব বান্দাদের অমত্মর্ভূক্ত হওয়ার চেষ্টা করতে হবে।
১৪. সর্বদা সvকর্মশীল বান্দাদের অনুসরণ করতে হবে। তাহলে আলস্নাহর নিয়ামাত পাওয়ার আশা করা যেতে পারে।
১৫. অসvব্যাক্তিদেও অনুসরণ করা যাবেনা। কেননা তারা মানুষকে কেবল অসv পথেই পরিচালিত কওে থাকে, অবশেষে তাকে জাহান্নামে পৌঁছে দেয়।
১৬. সর্বক্ষেত্রে ইয়াহুদি ও খ্রিস্টানদের অনুসরণ করা থেকে বিরত থাকতে হবে। কেননা তারা তাদের ধর্মকে বিকৃত করে ফেলেছে। আর তারা হচ্ছে মুমিনদের অন্যতম শত্রম্ন।
১৭. আলস্নাহর ক্রোধ থেকে আশ্রয় চাইতে হবে। কেননা আলস্নাহ তা’আলা যার উপর ক্রোধান্বিত হন, তার ধ্বংস অনিবার্য।
১৮. আলস্নাহর কাছে পথভ্রষ্ট হওয়া থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করতে হবে। এজন্য সবসময় এ দু’আটি আমাদেরকে পাঠ করতে হবে,
رَبَّنَا لَا تُزِغْ قُلُوْبَنَا بَعْدَ إِذْ هَدَيْتَنَا وَهَبْ لَنَا مِنْ لَّدُنْكَ رَحْمَةً إِنَّكَ أَنْتَ الْوَهَّابُ
উচ্চারণ : রাববানা লা তুযিগ কুলূবানা বা‘দা ইয হাদাইতানা ওয়াহাব্লানা মিলস্নাদুনকা রাহমাহ, ইন্নাকা আনতাল ওয়াহ্হা-ব।
অর্থ : হে আমাদের প্রতিপালক! হেদায়াত দানের পর আপনি আমাদের অমত্মরগুলোকে বাঁকা করে দেবেন না, আমাদেরকে আপনার নিকট হতে রহমত দান করম্নন, অবশ্যই আপনি মহান দাতা। (সূরা আলে ইমরান- ৮)
اَلْحَمْدُ لِلّٰهِ الَّذِي بِنِعْمَتِه تَتِمُّ الصَّالِحَاتُ ‐ وَالصَّلَاةُ وَالسَّلَامُ عَلٰى رَسُوْلِهٖ مُحَمَّدٍ وَّعَلٰى اٰلِهٖ وَصَحْبِهٖ اَجْمَعِيْنَ
রিডিং সেটিংস
Bangla
System
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
সাপোর্ট করুন