hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

হাফেয ইবন কাসীরের তাফসীর থেকে সংক্ষেপিত সূরা আল-আনফালের তাফসীর

লেখকঃ শাইখ আহমদ মুহাম্মাদ শাকের

১৫
ফিরিশতাদের প্রতি আল্লাহ তা‘আলার নির্দেশ:
ফিরিশতাদের প্রতি আল্লাহ তা‘আলার নির্দেশ তারা যেন, মুমিনগণের অন্তরগুলোকে দৃঢ় করে এবং তাদের সাথে থেকে যুদ্ধ করে। আল্লাহ তা‘আলার বাণী: إِذْ يُوحِي رَبُّكَ إِلَى الْمَلائِكَةِ أَنِّي مَعَكُمْ فَثَبِّتُوا الَّذِينَ آمَنُوا “স্মরণ কর যখন তোমার রব ফিরিশতাদের প্রতি অহী পাঠিয়েছিলেন, ‘আমি তোমাদের সঙ্গেই আছি। অতএব, মুমিনদেরকে তোমরা দৃঢ়পদ রেখ”। [সূরা আল-আনফাল, আয়াত: ১২] এটি হচ্ছে গোপন নি‘আমত যা আল্লাহ তা‘আলা তাদের জন্য প্রকাশ করেছেন; যাতে করে তারা এ জন্য তাঁর শুকরিয়া আদায় করে- আল্লাহ মহান, পবিত্র, বরকতময় এবং মর্যাদাবান- তিনি তাঁর প্রেরিত ফিরিশতামণ্ডলীর প্রতি প্রত্যাদেশ করেন তাঁর নবী, তাঁর দীন এবং তাঁর বাহিনী মুসলিমগণকে সাহায্য করতে। ইবন জারির রহ. এর ব্যাখ্যায় বলেন, ‘তিনি তাদের প্রতি প্রত্যাদেশ করেন যা তাঁর এবং তাদের মাঝে রয়েছে সে ব্যাপারে তারা যেন মুমিনগণকে দৃঢ়পদ রাখে, তাদেরকে শত্রুদের বিরুদ্ধে শক্তির জোগান দেয়। আর আমি অবশ্যই যারা আমার দীন ও রাসূলকে অস্বীকার করে তাদের অন্তরে ভীতি সৃষ্টি করে দেব, তাদের অপমান ও লাঞ্চিত করব’।

আল্লাহ তা‘আলার বাণী, سَأُلْقِي فِي قُلُوبِ الَّذِينَ كَفَرُوا الرُّعْبَ “অচিরেই আমি কাফেরদের অন্তরে ভীতি সঞ্চার করব” অর্থাৎ তোমরা (হে ফিরিশতাগণ) মুমিনগণকে দৃঢ়পদে রাখ, আর তাদেরকে তাদের শত্রুদের বিরুদ্ধে শক্তিশালী কর আর এভাবে তোমাদের প্রতি আমার নির্দেশ কার্যে পরিণত কর, এর দ্বারা অচিরেই আমি আমার নির্দেশ অমান্যকারী এবং আমার রাসূলগণকে অস্বীকারকারীর ওপর আতঙ্ক, অপমান-অপদস্থতা চাপিয়ে দিব। فَاضْرِبُوا فَوْقَ الأعْنَاقِ وَاضْرِبُوا مِنْهُمْ كُلَّ بَنَانٍ “কাজেই তাদের স্কন্ধে আঘাত হান, আঘাত হান প্রত্যেকটি আঙ্গুলের গিঁটে গিঁটে” অর্থাৎ তাদেরকে ছিন্নভিন্ন করে দিতে তাদের কপালে আঘাত কর, আর তাদেরকে কেটে ফেলতে তাদের গর্দানে মার, তাদের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কেটে ফেল, তা হলো, হাত-পা।

আল্লাহ তা‘আলার বাণী: فَوْقَ الأعْنَاقِ “স্কন্ধে” এর ব্যাখ্যা একাধিক। মুফাসসিরগণ فَوْقَ الأعْنَاقِ এর অর্থ সম্পর্কে বিভিন্ন ব্যাখ্যা দিয়েছেন। কেউ কেউ এর ব্যাখ্যায় বলেন, তাদের মাথায় মার, এ মত দিয়েছেন ইকরামা। কেউ কেউ বলেন, فَوْقَ الأعْنَاقِ এর অর্থ হচ্ছে তাদের গর্দানে মার অর্থাৎ তাদের কাঁধে আঘাত কর। দাহ্হাক এবং আতিইইয়াহ আল-আউফী রহ. এ মত ব্যক্ত করেছেন। এ অর্থের সাক্ষ্য দেয় আল্লাহ তা‘আলা মুমিনগণকে যেটার দিক-নির্দেশনা দিয়েছেন সে আয়াত। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ﴿فَإِذَا لَقِيتُمُ ٱلَّذِينَ كَفَرُواْ فَضَرۡبَ ٱلرِّقَابِ حَتَّىٰٓ إِذَآ أَثۡخَنتُمُوهُمۡ فَشُدُّواْ ٱلۡوَثَاقَ ٤﴾ [ محمد : ٤ ] “অতঃপর যখন তোমরা কাফেরদের সঙ্গে যুদ্ধে অবতীর্ণ হও, তখন তাদের ঘাড়ে আঘাত হানো, অবশেষে যখন তাদেরকে পূর্ণরূপে পরাস্ত কর, তখন তাদেরকে শক্তভাবে বেঁধে ফেল”। [সূরা মুহাম্মদ, আয়াত: ৪] ইবন জারির পছন্দ করেন যে, এ আয়াত স্কন্দে আঘাত হানাকে প্রমাণ করে। [কাসেম রহ. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, «إِنِّي لَمْ أُبْعَثْ لأعذب بعذاب الله، إنما بعثت لضرب الرقاب وشد الوثاق» “আমাকে এ জন্য প্রেরণ করা হয় নি যে, আমি আল্লাহর শাস্তি দ্বারা কাউকে শাস্তি দিব। আমাকে প্রেরণ করা হয়েছে স্কন্দে আঘাত হানা ও বেঁধে বন্দী করার জন্য”। বর্ণনাকারী ইবন আনাস রহ. বলেন, বদরের দিন সাহাবীগণ তাদের হাতে এবং ফিরিশতাদের হাতে নিহত হওয়া কাফেরদের কাঁধের ওপরের জখম, হাতের আঙ্গুল ও পায়ের আঙ্গুলের জখম দেখে চিনতে সক্ষম হয়েছিল। কেননা এ সব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলোতে এমন চি‎হ্ন ছিল যেন সেগুলো আগুনে পুড়ে গেছে। (অনুবাদক)]

আল্লাহ তা‘আলার বাণী: وَاضْرِبُوا مِنْهُمْ كُلَّ بَنَانٍ “আঘাত হান প্রত্যেকটি আঙ্গুলের গিঁটে গিঁটে”। ইবন জারীর রহ. বলেন, এর অর্থ হচ্ছে: হে মুমিনগণ তোমরা তোমাদের শত্রুদের সব জায়গায় এবং হাত-পার গ্রন্থিতে গ্রন্থিকে আঘাত কর بنان শব্দটি بنانة এর বহুবচন (অর্থাৎ আঙ্গুল)।

আউফী আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে বর্ণনা করেন: তিনি বদরের ঘটনা উল্লেখ করেন এমনকি তিনি বলেন, [তাদেরকে একেবারে হত্যা করো না; বরং তাদেরকে পাকড়াও কর যাতে করে তারা তোমাদের দীনের প্রতি আঘাত এনে আর লাত-ওজ্জা থেকে বিরাগ হয়ে কী করেছিল এ ব্যাপারটি তাদেরকে বুঝিয়ে দিতে পার।] ফলে আল্লাহ তা‘আলা ফিরিশতাদের প্রতি এ বলে অহী প্রেরণ করেন: أَنِّي مَعَكُمْ فَثَبِّتُوا الَّذِينَ آمَنُوا سَأُلْقِي فِي قُلُوبِ الَّذِينَ كَفَرُوا الرُّعْبَ فَاضْرِبُوا فَوْقَ الأعْنَاقِ وَاضْرِبُوا مِنْهُمْ كُلَّ بَنَانٍ “আমি তোমাদের সঙ্গেই আছি। অতএব, মুমিনদেরকে তোমরা দৃঢ়পদ রেখ’। অচিরেই আমি কাফেরদের অন্তরে ভীতি সঞ্চার করব, কাজেই তাদের স্কন্ধে আঘাত হান, আঘাত হান প্রত্যেকটি আঙ্গুলের গিঁটে গিঁটে”। এরপর আবু জাহল (তার ওপর আল্লাহ তা‘আলার লা‘নাত) সত্তর জনের মধ্যে (সেও) নিহত হয়, উক্ববা ইবন আবু মুঈত্ব বন্দী হয় আর এ অবস্থায় সে নিহত হয় আর এভাবে সত্তরজন পূর্ণ হয় অর্থাৎ নিহতের সংখ্যা ছিল সত্তরজন। এ কারণে আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ذَلِكَ بِأَنَّهُمْ شَاقُّوا اللَّهَ وَرَسُولَهُ “এর কারণ হলো, তারা আল্লাহ ও রাসূলের বিরোধিতা করে” অর্থাৎ তারা তাদের বিরোধিতা করেছিল ফলে বিরুদ্ধাচরণের প্রতি তারা ধাবিত হয়েছিল এবং তারা শরী‘আত মান্য করা, তার প্রতি ঈমান আনয়ন এবং আনুগত্য পরিত্যাগ করেছিল। আর ( يشاقق ) শব্দটি এমন হতে পারে যে شق العصا থেকে নেওয়া হয়েছে অর্থাৎ, তাকে দ্বিখণ্ডিত করা। وَمَنْ يُشَاقِقِ اللَّهَ وَرَسُولَهُ فَإِنَّ اللَّهَ شَدِيدُ الْعِقَابِ “আর যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের বিরোধিতা করবে (তাদের জেনে রাখা দরকার) আল্লাহ শাস্তিদানে বড়ই কঠোর” অর্থাৎ যে তাঁর অবাধ্য হয় এবং তাঁর বিরুদ্ধাচরণ করে, তিনি তার অনুসন্ধানী ও পরাজিতকারী। না কোনো কিছু তাঁর থেকে পালাতে পারে আর না কোনো কিছুকে তাঁর ক্রোধের সম্মুখে তারা দাঁড় করাতে পারে। তিনি বরকতমণ্ডিত সুউচ্চ, তিনি ছাড়া প্রকৃত কোনো উপাস্য নেই, তিনি ছাড়া নেই কোনো প্রতিপালক। ذَلِكُمْ فَذُوقُوهُ وَأَنَّ لِلْكَافِرِينَ عَذَابَ النَّارِ “এটাই তোমাদের শাস্তি। অতএব, তার স্বাদ গ্রহণ কর, কাফেরদের জন্য আছে আগুনের (জাহান্নামের) শাস্তি)”। এখানে কাফেরদের প্রতি সম্বোধন করা হয়েছে অর্থাৎ তোমরা দুনিয়াতে এ আযাব-গজব আস্বাদন কর এবং আরও জেনে রাখ যে, পরকালে কাফেরদের জন্য রয়েছে জাহান্নামের শাস্তি।

﴿يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوٓاْ إِذَا لَقِيتُمُ ٱلَّذِينَ كَفَرُواْ زَحۡفٗا فَلَا تُوَلُّوهُمُ ٱلۡأَدۡبَارَ ١٥ وَمَن يُوَلِّهِمۡ يَوۡمَئِذٖ دُبُرَهُۥٓ إِلَّا مُتَحَرِّفٗا لِّقِتَالٍ أَوۡ مُتَحَيِّزًا إِلَىٰ فِئَةٖ فَقَدۡ بَآءَ بِغَضَبٖ مِّنَ ٱللَّهِ وَمَأۡوَىٰهُ جَهَنَّمُۖ وَبِئۡسَ ٱلۡمَصِيرُ ١٦﴾ [ الانفال : ١٥، ١٦ ]

অর্থানুবাদ:

“হে মুমিনগণ! তোমরা যখন যোদ্ধা-বাহিনীরূপে কাফেরদের সম্মুখীন হও, তখন তাদেরকে পৃষ্ঠপ্রদর্শন করবে না। এমন দিনে যুদ্ধে কৌশল অবলম্বন বা নিজ দলের সঙ্গে মিলিত হওয়ার উদ্দেশ্য ছাড়া কেউ তাদেরকে পৃষ্ঠপ্রদর্শন করলে সে তো আল্লাহর গজবে পরিবেষ্টিত হয়ে পড়ল, জাহান্নামই তার ঠিকানা আর তা কতই না নিকৃষ্ট প্রত্যাবর্তনস্থল।” [সূরা আল-আনফাল, আয়াত: ১৫-১৬]

তাফসীর:

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন