hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

হাফেয ইবন কাসীরের তাফসীর থেকে সংক্ষেপিত সূরা আল-আনফালের তাফসীর

লেখকঃ শাইখ আহমদ মুহাম্মাদ শাকের

১৭
কাফেরদের হত্যা এবং তাদের প্রতি ধুলি নিক্ষেপ:
আল্লাহ তা‘আলা বর্ণনা করেন যে, তিনি মানুষের কর্মসমূহ সৃষ্টি করেছেন আর তাদের থেকে যত ভালো কার্য সংঘটিত হয় সেগুলোর জন্য তিনিই প্রশংসার যোগ্য। কেননা, তিনিই তাদেরকে এ সব কাজ করার তাওফীক দিয়েছেন এবং তাদেরকে সহযোগিতা করেছেন। এ কারণে আল্লাহ তা‘আলা বলেন, فَلَمْ تَقْتُلُوهُمْ وَلَكِنَّ اللَّهَ قَتَلَهُمْ “(আসল ব্যাপার হলো) তোমরা তাদেরকে হত্যা করো নি; বরং আল্লাহই তাদেরকে হত্যা করেছেন” [সূরা আল-আনফাল, আয়াত: ১৭] অর্থাৎ তোমরা তোমাদের শক্তি ও ক্ষমতায় তোমাদের শত্রুদের হত্যা করো নি যখন তাদের সংখ্যা ছিল বেশি আর তোমাদের সংখ্যা ছিল কম। অর্থাৎ বরং তিনিই তোমাদেরকে তাদের ওপর বিজয় দান করেছেন। যেমন, তিনি বলেন, ﴿وَلَقَدۡ نَصَرَكُمُ ٱللَّهُ بِبَدۡرٖ وَأَنتُمۡ أَذِلَّةٞۖ ١٢٣﴾ [ ال عمران : ١٢٣ ] “এবং আল্লাহ তোমাদের হীন অবস্থায় বদর যুদ্ধক্ষেত্রে তোমাদের সাহায্য করেছেন”। [সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ১২৩] আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ﴿لَقَدْ نَصَرَكُمُ اللَّهُ فِي مَوَاطِنَ كَثِيرَةٍ وَيَوْمَ حُنَيْنٍ إِذْ أَعْجَبَتْكُمْ كَثْرَتُكُمْ فَلَمْ تُغْنِ عَنْكُمْ شَيْئًا وَضَاقَتْ عَلَيْكُمُ الأرْضُ بِمَا رَحُبَتْ ثُمَّ وَلَّيْتُمْ مُدْبِرِينَ٢٥﴾ [ التوبة : ٢٥ ] “বস্তুতঃ আল্লাহ তোমাদেরকে বহু যুদ্ধ ক্ষেত্রে সাহায্য করেছেন আর হুনায়নের যুদ্ধের দিন, তোমাদের সংখ্যার আধিক্য তোমাদেরকে গর্বে মাতোয়ারা করে দিয়েছিল, কিন্তু তা তোমাদের কোনো কাজে আসে নি, জমিন তার বিশালতা নিয়ে তোমাদের কাছে সংকীর্ণই হয়ে গিয়েছিল, আর তোমরা পিছন ফিরে পালিয়ে গিয়েছিলে”। [সূরা আত-তাওবাহ, আয়াত: ২৫] আল্লাহ তা‘আলা অবহিত করেন যে, বিজয় কখনও সংখ্যাধিক্য অথবা বেশি অস্ত্র-শস্ত্র সংগ্রহ করার ওপর নির্ভর করে না; বরং বিজয় আসে আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে। যেমন, আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ﴿كَم مِّن فِئَةٖ قَلِيلَةٍ غَلَبَتۡ فِئَةٗ كَثِيرَةَۢ بِإِذۡنِ ٱللَّهِۗ وَٱللَّهُ مَعَ ٱلصَّٰبِرِينَ ٢٤٩﴾ [ البقرة : ٢٤٩ ] “আল্লাহর হুকুমে বহু ক্ষেত্রে ক্ষুদ্র দল বৃহৎ দলের ওপর জয়যুক্ত হয়েছে, আর আল্লাহ তা‘আলা ধৈর্য্যশীলদের সাথে আছেন” [সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ২৪৯]

এরপর আল্লাহ তা‘আলা এক মুষ্টি বালুর কথা উল্লেখ করেন যা তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বদরের ময়দানে কাফেরদের প্রতি নিক্ষেপ করেন, যখন তিনি তাঁবু থেকে বের হয়ে আসেন যার পূর্বে তিনি আল্লাহ তা‘আলার নিকট দো‘আ করেন, অনুনয়-বিনয় করেন, তাঁর বশ্যতা স্বীকার করেন, এরপর তিনি সেই মুষ্টি বালু তাদের প্রতি নিক্ষেপ করেন আর বলেন, شاهت الوجوه ‘তাদের চেহারাগুলো অপমানিত হোক’ এরপর তিনি তাঁর সাহাবীগণকে সাবধানতার সাথে যুদ্ধ শুরু করার নির্দেশ দেন, ফলে তারা তাই করে। আল্লাহ তা‘আলা তাঁর এক মুষ্টি বালু কাফেরদের চোখে প্রবেশ করান, তাদের প্রত্যেকে এর দ্বারা আক্রান্ত হয় যাতে যা তাদেরকে এতে ব্যস্ত করে তুলে। এ কারণে আল্লাহ তা‘আলা বলেন, وَمَا رَمَيْتَ إِذْ رَمَيْتَ وَلَكِنَّ اللَّهَ رَمَى “তুমি যখন নিক্ষেপ করছিলে তাতো তুমি নিক্ষেপ করনি, বরং আল্লাহই নিক্ষেপ করেছিলেন” অর্থাৎ তিনিই তাদের নিকট তা পৌঁছে দিয়েছিলেন, আর তাদেরকে এতে ব্যস্ত করেছিলেন। তুমি নও।

আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, বদরের দিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহ তা‘আলার নিকট দো‘আ করেন, অনুনয়-বিনয় করেন এবং বলেন, «يَا رَبِّ إِنْ تُهْلِكْ هَذِهِ الْعِصَابَةَ فَلَنْ تُعْبَدَ فِي الْأَرْضِ أَبَدًا» “হে আল্লাহ যদি এ ক্ষদ্র জামা‘আতটি ধ্বংস করা হয় তবে জমিনে তোমার গোলামী করার কেউ রইল না”। তখন জিবরীল আলাইহিস সালাম তাকে বললেন, এক মুষ্টি মাটি তাদের চেহারার দিক নিক্ষেপ করুন। তারপর তিনি এক মুষ্টি মাঠি নিয়ে তাদের চেহারার দিকে নিক্ষেপ করলেন। তখন একজন মুশরিকও বাকী থাকলো না যাদের চেহারা ও মুখে বালু পৌঁছে নি। তারপর তারা পিছু হটল।

মুহাম্মাদ ইবন কাইস ও মুহাম্মদ ইবন কা‘ব আল-কুরাযী বলেন, যখন উভয় দল একে অপরের মুখোমুখী হলো, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক মুষ্টি মাটি হাতে নিলেন, তারপর তিনি তা প্রতিপক্ষের দিকে নিক্ষেপ করলেন এবং বললেন, شاهت الوجوه ‘তাদের চেহারাগুলো অপমানিত হোক’ ফলে বালি প্রত্যেক মুশরিকের চোখে গিয়ে প্রবেশ করে। আর এ সুযোগে রাসূলে সাহাবীগণ সামনে অগ্রসর হয়ে তাদের হত্যা ও বন্দী করতে শুরু করেন। কাফেরদের পরাজয় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বালি নিক্ষেপের কারণেই ছিল। তারপর আল্লাহ তা‘আলা এ আয়াত وَمَا رَمَيْتَ إِذْ رَمَيْتَ وَلَكِنَّ اللَّهَ رَمَى “তুমি যখন নিক্ষেপ করছিলে তাতো তুমি নিক্ষেপ কর নি; বরং আল্লাহই নিক্ষেপ করেছিলেন” নাযিল করেন। মুহাম্মাদ ইবন ইসহাক বর্ণনা করেন: আমার নিকট মুহাম্মাদ ইবন জা‘ফার ইবনুয যুবাইর হাদীস বর্ণনা করেছেন উরওয়া ইবন যুবাইর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি এ আয়াত: وَلِيُبْلِيَ الْمُؤْمِنِينَ مِنْهُ بَلاءً حَسَنًا “যাতে তিনি মুমিনদেরকে এক সুন্দরতম পরীক্ষায় সফলতার সঙ্গে উত্তীর্ণ করতে পারেন” সম্পর্কে বলেন, অর্থাৎ যাতে করে মুমিনগণ তাদের ওপরে আল্লাহর নি‘আমতকে বুঝতে পারে যে, তিনি তাদেরকে তাদের শত্রুদের ওপর বিজয় দান করেছেন অথচ শত্রুদের সংখ্যা ছিল বেশি আর তাদের সংখ্যা ছিল কম; যাতে করে এর মাধ্যমে তারা তাঁর অধিকার চিনতে পারে আর এর মাধ্যমে তাঁর নি‘আমতের শুকরিয়া আদায় করে। ইবন জারীর রহ.ও এ ধরণের ব্যাখ্যা করেছেন। হাদীসে এসেছে: (আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে) সব ধরণের পরীক্ষা আমাদের জন্য নি‘আমতস্বরূপ)।

إِنَّ اللَّهَ سَمِيعٌ عَلِيمٌ “আল্লাহ্ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ” অর্থাৎ তিনি সকল দো‘আ শ্রবণ করেন, আর কারা তাঁর সাহায্য ও বিজয়ের উপযুক্ত তাদের সম্পর্কেও অবগত আছেন। আল্লাহ তা‘আলার বাণী: ذَلِكُمْ وَأَنَّ اللَّهَ مُوهِنُ كَيْدِ الْكَافِرِينَ “আমার এ ব্যবস্থা তোমাদের জন্য, (আর কাফেরদের সম্পর্কে কথা এটাই যে) আল্লাহ কাফেরদের ষড়যন্ত্রকে অকেজো করে দেন” [সূরা আল-আনফাল, আয়াত: ১৮] এটি মুসলিমদের অর্জিত বিজয়ের পাশাপাশি আরেকটি সুসংবাদ, আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে অবহিত করেন যে, ভবিষ্যতে তিনি কাফেরদের চক্রান্ত নস্যাত করে দিবেন, তাদেরকে অপদস্থ করবেন, আর তাদের সকল বিষয়কে ধ্বংস করে দিবেন। আল্লাহ তা‘আলার জন্য সকল প্রশংসা এবং তাঁরই অনুগ্রহ।

﴿إِن تَسۡتَفۡتِحُواْ فَقَدۡ جَآءَكُمُ ٱلۡفَتۡحُۖ وَإِن تَنتَهُواْ فَهُوَ خَيۡرٞ لَّكُمۡۖ وَإِن تَعُودُواْ نَعُدۡ وَلَن تُغۡنِيَ عَنكُمۡ فِئَتُكُمۡ شَيۡ‍ٔٗا وَلَوۡ كَثُرَتۡ وَأَنَّ ٱللَّهَ مَعَ ٱلۡمُؤۡمِنِينَ ١٩﴾ [ الانفال : ١٩ ]

অর্থানুবাদ:

(ওহে কাফেরগণ!) “তোমরা মীমাংসা চাচ্ছিলে, মীমাংসা তো তোমাদের কাছে এসে গেছে; আর যদি তোমরা (অন্যায় থেকে) বিরত হও, তবে তা তোমাদের জন্যই কল্যাণকর, তোমরা যদি আবার (অন্যায়) কর, আমিও আবার শাস্তি দিব, তোমাদের দল-বাহিনী সংখ্যায় অধিক হলেও তোমাদের কোনো উপকারে আসবে না এবং আল্লাহ তো মুমিনদের সঙ্গে আছেন”। [সূরা আল-আনফাল, আয়াত: ১৯]

তাফসীর:

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন