hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

হাফেয ইবন কাসীরের তাফসীর থেকে সংক্ষেপিত সূরা আল-আনফালের তাফসীর

লেখকঃ শাইখ আহমদ মুহাম্মাদ শাকের

৩০
গনীমত এবং ফাইয়ের মালের বিধান:
আল্লাহ তা‘আলা পূর্বের সমস্ত জাতির মধ্য থেকে এ সম্মানিত জাতির জন্য গনীমত হালাল সম্পর্কিত যে শরী‘আত নির্ধারণ করেছেন তার ব্যাখ্যা প্রদান করছেন। গনীমত হচ্ছে, কাফেরদের কাছ থেকে গৃহিত সম্পদ, যার জন্য তাদেরকে সৈন্য সামন্তের ব্যবহার এবং ঘোড়া দৌড়াতে হয়েছে, আর ফাই হচ্ছে যে সম্পদ অর্জনের জন্য তাদেরকে এ সব কোনো কিছুই করতে হয় নি। যেমন এমন সম্পদ যা প্রদানের শর্তে সন্ধি হয়েছে, অথবা যে সম্পদ ছেড়ে মারা গেছে আর তাদের কোনো উত্তরাধিকারী নেই। জিযইয়া (প্রশাসন কর্তৃক আরোপকৃত জান রক্ষা কর), খারাজ (সম্পদের খাজনা) ইত্যাদি। এটি ইমাম শাফে‘ঈর মাযহাব। কতক আলেম গনীমতকে ফাঈ বলেন এবং ফাঈকে গনীমত বলে আখ্যায়িত করেন। আবার এর উল্টোও বলেছেন।

আল্লাহ তা‘আলার বাণী: وَٱعۡلَمُوٓاْ أَنَّمَا غَنِمۡتُم مِّن شَيۡءٖ فَأَنَّ لِلَّهِ خُمُسَهُۥ “তোমরা জেনে রেখ যে, যুদ্ধে যা তোমরা লাভ কর তার এক-পঞ্চমাংশ হচ্ছে আল্লাহর” এ বিষয়টির প্রতি জোর প্রদান করা হচ্ছে যে, কম-বেশি সকল সম্পদ থেকে এক-পঞ্চমাংশ বের করতে হচ্ছে এমনকি সুঁচ-সুতা থেকেও। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ﴿وَمَن يَغۡلُلۡ يَأۡتِ بِمَا غَلَّ يَوۡمَ ٱلۡقِيَٰمَةِۚ ثُمَّ تُوَفَّىٰ كُلُّ نَفۡسٖ مَّا كَسَبَتۡ وَهُمۡ لَا يُظۡلَمُونَ ١٦١﴾ [ ال عمران : ١٦١ ] “আর যে খিয়ানত করবে, কিয়ামতের দিনে উপস্থিত হবে তা নিয়ে যা সে খিয়ানত করেছে। অতঃপর প্রত্যেক ব্যক্তিকে পুরোপুরি দেওয়া হবে যা সে উপার্জন করেছে এবং তাদেরকে যুলম করা হবে না”। [সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ১৬১]

আল্লাহ তা‘আলার বাণী: فَأَنَّ لِلَّهِ خُمُسَهُۥ وَلِلرَّسُولِ “এক-পঞ্চমাংশ হচ্ছে আল্লাহ, তাঁর রসূলের, এখানে “রাসূলের” শব্দের ব্যাখ্যায় মুফাসসিরগণ বিভিন্ন মতামত পোষণ করেছেন, কতক বলেন, এক-পঞ্চমাংশ হতে আল্লাহর জন্য এক অংশ রয়েছে যা কা‘বা ঘরে রাখা হবে। আর কতক বলেন, আল্লাহর নাম উল্লেখ করা এখানে কেবল বরকতের জন্য। আর অংশ হলো, তা রাসূলের জন্য।

দাহ্হাক রহ. বর্ণনা করেন, আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন কোনো অভিযান প্রেরণ করতেন তখন তাদের সংগৃহিত যুদ্ধলব্ধ সম্পদকে পাঁচ ভাগে ভাগ করতেন, এরপর এর একভাগ নিয়ে একে আবার পাঁচভাগে ভাগ করতেন। এরপর তিনি পাঠ করেন: وَٱعۡلَمُوٓاْ أَنَّمَا غَنِمۡتُم مِّن شَيۡءٖ فَأَنَّ لِلَّهِ خُمُسَهُ وَلِلرَّسُولِ “তোমরা জেনে রেখ যে, যুদ্ধে যা তোমরা লাভ কর তার এক-পঞ্চমাংশ হচ্ছে আল্লাহ, তাঁর রাসূলের” তিনি বলেন, আল্লাহ তা‘আলার বাণী: فَأَنَّ لِلَّهِ خُمُسَهُۥ “এক-পঞ্চমাংশ হচ্ছে আল্লাহ” কথার শুরু لِلَّهِ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَمَا فِي الْأَرْضِ “আসমান এবং জমিনসমূহে যা কিছু আছে সবই আল্লাহর”। আয়াতে আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলের অংশকে একই অংশ ধরা হয়েছে। [অনুরূপ মত ব্যক্ত করেছেন ইবরাহীম আন-নাখঈ, হাসান ইবন মু‏হাম্মদ ইবনুল হানাফিয়্যাহ, হাসান আল-বাসরী, শা‘বী, ‘আতা’ ইবন আবু রাবাহ, আব্দুল্লাহ ইবন বুরাইদাহ, কাতাদা, মুগীরাহ রহ. এবং অন্যান্যরা।] সুতরাং আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলের অংশ একই। এ বিষয়টিকে শক্তিশালী করে (এ হাদীস যা) ইমাম হাফেয আবু বকর আল-বায়হাক্বী বিশুদ্ধ সনদে বর্ণনা করেছেন, আব্দুল্লাহ ইবন শাক্বীক্ব বলেন যে, বিলক্বীন গোত্রের এক ব্যক্তি বলেছেন: আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট আসি এমতাবস্থায় যে তিনি ওয়াদী আল-ক্বুরায় ছিলেন, তিনি ঘোড়া পরীক্ষা করছিলেন, আমি তাঁকে বলি, ইয়া রাসূলাল্লাহ, গনীমত সম্পর্কে আপনার অভিমত কী? তিনি বলেন, «لله خمسها وأربعة أخماسها لِلْجَيْشِ» “এক-পঞ্চমাংশ হচ্ছে আল্লাহ তা‘আলার এবং পাঁচ ভাগের চার ভাগ হচ্ছে সৈন্যদের”। আমি বলি এতে কি কেউ কারও চেয়ে বেশি হকদার নয়? তিনি বলেন, «لَا وَلَا السَّهْمُ تَسْتَخْرِجُهُ مِنْ جيبك لَيْسَ أَنْتَ أَحَقَّ بِهِ مِنْ أَخِيكَ الْمُسْلِمِ» “না, এমনকি তুমি যেই তীরটি তোমার পার্শ্ব থেকে বের কর সেটার ক্ষেত্রেও তুমি তোমার মুসলিম ভাইয়ের চেয়ে বেশি হকদার নও”। [আস-সুনানুল কুবরা: ৬/৩২৪] ইবন জারির রহ. হাসান রহ. থেকে বর্ণনা করেন, আবূ বকর রা. তার মালের এক-পঞ্চমাংশ বিষয়ে ওসিয়ত করেন এবং বলেন, আমি কি রাজি হব না আমার সম্পদ থেকে যে বিষয়ে আল্লাহ তা‘আলা তার নিজের জন্য রাজি। আতা বলেন, আল্লাহ ও রাসূলের এক-পঞ্চমাংশ এক। তা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গ্রহণ করবেন এবং তাতে তিনি যা ইচ্ছা করবেন। এ কথা ব্যাপক ও সব মতামতকে সামিল করে। আর তা হলো, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক-পঞ্চমাংশ যা আল্লাহ তা‘আলা তার জন্য নির্ধারণ করেছেন, তিনি তাতে যা ইচ্ছা করতে পারবেন। তিনি তার উম্মাতের মধ্যে যেভাবে চান বন্টন করবেন। এর সাক্ষ্য ঐ হাদীস, যেটি ইমাম আহমাদ রহ. বর্ণনা করেন মিকদাম ইবন মা‘দীকারিব আল কিনদী থেকে, তিনি বলেন, তিনি উবাদাহ ইবনুস সামিত, আবুদ দারদা’, আল-হারিস ইবন মু‘আবিয়া আল-কিনদী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুম আজমা‘ঈন সাথে বসা ছিলেন: তারা পরস্পর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাদীস নিয়ে আলোচনা করছিলেন, আবূ দারদা’ উবাদাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমাকে বলেন, হে উবাদহা, উমুক উমুক যুদ্ধে গনীমতের এক-পঞ্চমাংশ সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অভিমত কী? উবাদাহ বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি যুদ্ধে গনীমতের উটকে সুতরা বানিয়ে তাদেরকে নিয়ে সালাত আদায় করেন, এরপর যখন তিনি সালাম ফিরান তখন উঠে দাঁড়িয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর দুই আঙ্গুল দ্বারা এর পশম নিয়ে বলেন, «إِنَّ هَذِهِ مِنْ غَنَائِمِكُمْ، وَإِنَّهُ لَيْسَ لِي فِيهَا إلا نصيبي معكم الْخُمُسُ، وَالْخُمُسُ مَرْدُودٌ عَلَيْكُمْ، فَأَدُّوا الْخَيْطَ وَالْمَخِيطَ، وَأَكْبَرَ مِنْ ذَلِكَ وَأَصْغَرَ، وَلَا تَغُلُّوا، فَإِنَّ الغلول عار ونار عَلَى أَصْحَابِهِ فِي الدُّنْيَا وَالْآخِرَةِ، وَجَاهِدُوا النَّاسَ فِي اللَّهِ الْقَرِيبَ وَالْبَعِيدَ، وَلَا تُبَالُوا فِي اللَّهِ لَوْمَةَ لَائِمٍ، وَأَقِيمُوا حُدُودَ اللَّهِ فِي السفر والحضر، وَجَاهِدُوا فِي اللَّهِ، فَإِنَّ الْجِهَادَ بَابٌ مِنْ أَبْوَابِ الْجَنَّةِ عظيم ينجي الله به من الهم والغم» “এগুলো হচ্ছে তোমাদের গনীমতের সম্পদ, এতে তোমাদের সাথে আমার নির্ধারিত এক-পঞ্চমাংশ অংশ ছাড়া আর কোনো অধিকার নেই, আর এক-পঞ্চমাংশও তোমাদের দেওয়া হবে, কাজেই তোমরা সুঁচ-সুতা, এর চেয়ে বড় বা এর চেয়ে ছোট (যা কিছু আছে) প্রদান কর, আর প্রতারণা করো না, কেননা প্রতারণা দুনিয়া ও আখিরাতে এর কর্তার জন্য আগুন (শাস্তি) এবং লজ্জাস্বরূপ হবে, আল্লাহ তা‘আলার সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে লোকেদের বিরুদ্ধে জিহাদ কর। চাই তারা নিকটে হোক বা দুরে, আল্লাহ তা‘আলার সন্তুষ্টির পথে কোনো নিন্দুকের নিন্দাকে তোয়াক্কা করোনা, গৃহে আবস্থানকালে হোক বা সফরে আল্লাহ তা‘আলার বিধান প্রতিষ্ঠা কর, আল্লাহ তা‘আলার পথে জিহাদ কর, কেননা জিহাদ হচ্ছে জান্নাতের দরজাসমূহের মধ্য হতে বড় একটি দরজা, এর মাধ্যমে আল্লাহ তা‘আলা বিষণ্ণতা এবং দুঃখ-কষ্ট থেকে হিফাযত করেন”। [মুসনাদ: ৫/৩১৬, ইবন কাসীর রহ. বলেন, এটি একটি অসাধারণ হাদীস, তবে এ সূত্রে আমি ছয়টি হাদীস গ্রন্থে এর কিছুই খুঁজে পাই নি। অপর একটি হাদীস আমর ইবন আনবাসাহ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের নিয়ে গণীমতের একটি উটের দিক ফিরে সালাত আদায় করেন, সালাম ফিরানোর পর ঐ উটের কিছু পশম তিনি হাতে নিলেন তারপর বললেন, «وَلاَ يَحِلُّ لِي مِنْ غَنَائِمِكُمْ مِثْلَ هَذِهِ إِلَّا الْخُمُسُ وَالْخُمُسُ مَرْدُودٌ عليكم» “গণিমতের মাল থেকে তোমাদের জন্য এক-পঞ্চমাংশ ছাড়া আর কোনো কিছুই হালাল হবে না। আর এক-পঞ্চমাংশ তোমাদের মধ্যেই বন্টিত হবে”। আবু দাউদ, হাদীস নং ২৭৫৫]

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্য গনীমতের কিছু অংশ ছিল যা তিনি নিজের জন্য বেছে রাখতেন, দাস বা দাসি, অথবা ঘোড়া বা তরবারী অথবা এ জাতীয় অন্যান্য কিছু। মুহাম্মাদ ইবন সীরীন রহ. এবং ‘আমির আশ-শা‘বীর এ ব্যাপারে ভাষ্য রয়েছে এবং অধিকাংশ আলেম তাদের অনুসরণ করেছেন। ইমাম আহমাদ এবং তিরমিযী রহ. বর্ণনা করেন, আর তিরমিযী রহ. একে হাসান বলেছেন, আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা বলেন, বদরের যুদ্ধে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যুলফিক্বার নামক তরবারী পছন্দ করেন, উহুদ যুদ্ধে একে তিনি স্বপ্নে দেখেন। [মুসনাদে আহমদ, ৩১৬/১] আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, সাফিয়্যাহ ছিল যুদ্ধবন্দিনী, এরপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে নিজের জন্য নির্বাচন করে বিবাহ করেন। এ হাদীস আবু দাউদ তার সুনানে বর্ণনা করেছেন। [আবু দাউদ, হাদীস নং ২৯৯৪]

ইয়াযিদ ইবন আব্দুল্লাহ থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আমরা মিরবাদে ছিলাম, এক ব্যক্তি আমাদের নিকট প্রবেশ করল, তার সাথে চামড়ার একটি টুকরা ছিল তা পড়ে দেখলাম তাতে লিখা ছিল, «مِنْ مُحَمَّدٍ رَسُولِ اللَّهِ إِلَى بَنِي زُهَيْرِ بْنِ أُقَيْشٍ، إِنَّكُمْ إِنْ شَهِدْتُمْ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللَّهِ، وَأَقَمْتُمُ الصَّلَاةَ، وَآتَيْتُمُ الزَّكَاةَ، وَأَدَّيْتُمُ الخمس من المغنم، وسهم النبي صلى الله عليه وسلم، وَسَهْمَ الصَّفِيِّ، أَنْتُمْ آمِنُونَ بِأَمَانِ اللَّهِ وَرَسُولِهِ» “মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বনী যুহাইর ইবন উকাইস-এর নিকট, যদি তোমরা এ কথার সাক্ষ্য দাও, আল্লাহ ছাড়া প্রকৃত কোনো ইলাহ নেই, মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর রাসূল, সালাত কায়েম কর, যাকাত আদায় কর, গনীমতের এক-পঞ্চমাংশ আদায় কর, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অংশ ও বিশেষভাবে নির্বাচিত অংশ আদায় কর, তাহলে তোমরা আল্লাহর ও তার রাসূলের নিরাপত্তায় নিরাপদ। আমরা তাকে বললাম এ কে লিখেছে? সে বলল, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। [আবু দাউদ, হাদীস নং ২৯৯৯, নাসাঈ, হাদীস নং ৪১৪৬] হাদীসগুলো গ্রহণযোগ্য। এর প্রমাণিত হওয়া ও স্বীকৃত হওয়া এ বিষয়ে প্রমাণস্বরূপ। এ কারণে অধিকাংশরা একে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বৈশিষ্ট্য বলে আখ্যায়িত করেছেন।

আবার কেউ কেউ বলেন, এক-পঞ্চমাংশকে শাসক মুসলিমদের কল্যাণে তার ইচ্ছা অনুযায়ী ব্যয় করবে, যেমনটি ফাঈ-এর সম্পদকে বন্টন করা হয়ে থাকে। আমার শাইখ ইমাম ইবন তাইমিয়্যাহ বলেন, এটি ইমাম মালেক ও অধিকাংশ সালাফের মত এবং এটিই সর্বাধিক বিশুদ্ধ মত।

এ কথা প্রমাণ হওয়া ও জানার পর এ বিষয়েও মত পার্থক্য রয়েছে যে, এক-পঞ্চমাংশ থেকে প্রাপ্ত সম্পদ লাভ করার পর তা কি করবে। কেউ কেউ বলেন, তারপর যে ক্ষমতাশীল হবে, তা তার জন্য হবে। কেউ কেউ বলেন, মুসলিমদের কল্যাণে ব্যয় করা হবে। আবার কেউ কেউ বলেন, তা বাকী যেসব খাত রয়েছে যেমন আত্মীয়, ইয়াতীম, মিসকীন ও মুসাফির তাদের জন্য ব্যয় করা হবে। ইবন জারির রহ. এ মতকে গ্রহণ করেছেন। কেউ কেউ বলেন, বরং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অংশ ও আত্মীয়ের অংশ ইয়াতীম, মিসকীন ও মুসাফিরের খ্যাতে ব্যয় করা হবে। ইবন জারির রহ. বলেন, এটি কতক ইরাকীদের মত।

কেউ বলেন, এক-পঞ্চমাংশ পুরোটাই আত্মীয়ের জন্য। রাসূলের মৃত্যুর পর এক-পঞ্চমাংশ বিষয়ে কি করা হবে তা নিয়েও মতবিরোধ রয়েছে। কেউ কেউ বলেন, রাসূলের অংশ তার মৃত্যুর পর যিনি খলীফা হবেন তার জন্য। কেউ কেউ বলেন, রাসূলের আত্মীয়দের জন্য। কেউ কেউ বলেন, রাসূলের আত্মীয়ের অংশ খলীফার আত্মীয়ের জন্য। তবে তারা সবাই এ দু’টি অংশকে যুদ্ধের বাহন -ঘোড়া ও যুদ্ধের প্রস্তুতির কাজে ব্যয় করা বিষয়ে একমত। আবু বকর ও উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমার আমলে এ প্রদ্ধতিই চলছিল।

আবু বকর ও উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা রাসূলের অংশকে অস্ত্র ও যুদ্ধের সামগ্রী ক্রয়ে ব্যয় করতেন। এরপর আত্মীয়স্বজনের অংশ তিনি একে বনী হাশিম এবং বনী মুত্তালিবে বন্টন করতেন। কেননা, বানু মুত্তালিব জাহেলী যুগে এবং ইসলামের প্রাথমিক যুগে বানু হাশিমকে সহযোগিতা করে, তারাও তাদের সাথে শি‘আবে আবু তালিবে প্রবেশ করে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের স্বার্থে রাগান্বিত হয়ে এবং তাঁর নিরাপত্তার জন্য, (বানু আব্দুল মুত্তালিবের) যারা মুসলিম ছিল তারা এ সব কিছু করেছিল আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলের আনুগত্য রক্ষার্থে, আর যারা কাফের ছিল তারা আত্মীয়-স্বজনের সমর্থন এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের চাচা আবু তালিবের অনুসরণে এমনটি করে। আর বনু আব্‌দ শামছ্‌ ও বনু নাওফল যদিও তারা তাদের চাচাদের গোত্র ছিল, তারা তাদের সাথে সহযোগিতা করে নি; বরং তারা তাদের সাথে যুদ্ধ করে, তাদের প্রত্যাখ্যান করে এবং রাসূলের বিরুদ্ধে কুরাইশদের শক্তির যোগান দেয়।

জুবাইর ইবন মুত‘য়িম বলেন, আমি ও উসমান ইবন আফ্ফান রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট গিয়ে বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! খাইবারের গনীমতের এক-পঞ্চমাংশ থেকে বনী আব্দুল মুত্তালিবকে অংশ দিলেন আর আমাদের দিলেন না? তারা এবং আমরা উভয় সম্প্রদায় আপনার আত্মীয় হিসেবে একই স্তরের। তিনি বললেন, «إِنَّمَا بَنُو هَاشِمٍ وبنو المطلب شيء واحد» “বনু হাসিম ও বনু মুত্তালিব এক”। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৩১৪০] অপর বর্ণনায় বর্ণিত তিনি বলেন, «إِنَّهُمْ لَمْ يُفَارِقُونَا فِي جَاهِلِيَّةٍ وَلَا إِسْلَامٍ» “তারা ইসলাম ও ইসলামের পূর্বে আমাদের সহযোগিতা করা ছাড়েন নি”। [সুনান নাসাঈ: ৭/১৩০] অধিকাংশ আলেমের মত হলো, তারা হলেন বনু হাশিম ও বনু মুত্তালিব। ইবন জারির রহ. বলেন, কেউ কেউ বলেন, তারা বনু হাশিম। তারপর মুজাহিদ রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহ তা‘আলা জানতেন যে, বনী হাশিমদের মধ্যে দরিদ্র রয়েছে তাই তাদের জন্য তিনি সদকার পরিবর্তে এক-পঞ্চমাংশ নির্ধারণ করে দেন। তার থেকে অপর একটি বর্ণনায় বর্ণিত, তিনি বলেন, তারা হলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ঐ সব আত্মীয় যাদের জন্য সাদকা খাওয়া হালাল নয়। [আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, «رَغِبْتُ لَكُمْ عَنْ غُسَالَةِ الْأَيْدِي،لِأَنَّ لَكُمْ مِنْ خُمُس الخمس ما يغنيكم أو يكفيكم» “আমি তোমাদের মানুষের হাতের ময়লা অপছন্দ করেছি। কারণ, তোমাদের জন্য রয়েছে এক পঞ্চমাংশ-পাঁচ ভাগের একভাগ যা যথেষ্ট হবে এবং তোমাদের প্রয়োজন মেটাবে”।]

আল্লাহ তা‘আলার বাণী: وَالْيَتَامَى (ইয়াতীম) অর্থাৎ মুসলিমবৃন্দের ইয়াতীমরা, আলেমদের মধ্যে এ বিষয়ে দু’টি মত রয়েছে যে এখানে ইয়াতীম দ্বারা গরীবের সন্তান নাকি গরীব ধনী উভয়ের সন্তান। الْمَسَاكِينِ (মিসকীন) সকল প্রকার অভাবী; যারা তাদের ক্ষুধা নিবারণ ও বাসস্থানের চাহিদা পূরণের কোনো কিছু পায় না। وَابْنِ السَّبِيلِ (ও মুসাফিরদের জন্য) সে হচ্ছে মুসাফির অথবা এতটা পথ অতিক্রমের ইচ্ছা পোষণকারী ব্যক্তি যাতে তাকে সালাত কসর করা শরী‘আতসম্মত। আর সেই সফরের ব্যয়ভার বহন করার তার সামর্থ নেই। সূরা বারা‘আতে সদাকা সংক্রান্ত আয়াতে এ সংক্রান্ত তাফসীর শীঘ্রই আসছে ইনশাআল্লাহ। তাঁর ওপর আমাদের আস্থা ও ভরসা।

আল্লাহ তা‘আলার বাণী: إِنْ كُنْتُمْ آمَنْتُمْ بِاللَّهِ وَمَا أَنزلْنَا عَلَى عَبْدِنَا “যদি তোমরা আল্লাহর ওপর বিশ্বাস করে থাক আর আমি যা আমার বান্দা ওপর অবতীর্ণ করেছিলাম তার ওপর” অর্থাৎ এক-পঞ্চমাংশ গনীমতের যে বিধান আমরা তোমাদের জন্য দিয়েছি তোমরা সেটা পালন কর, যদি তোমরা আল্লাহ, পরকাল এবং তাঁর রাসূলের ওপর যা অবতীর্ণ হয়েছে তাতে ঈমান আন। এ কারণে সহীহ বুখারী ও মুসলিমে এসেছে: আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা আব্দুল কাইসের কাফেলার হাদীসে বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদেরকে বলেছেন, «وَآمُرُكُمْ بِأَرْبَعٍ وَأَنْهَاكُمْ عَنْ أَرْبَعٍ : آمُرُكُمْ بِالْإِيمَانِ بِاللَّهِ، ثُمَّ قَالَ : هَلْ تَدْرُونَ مَا الْإِيمَانُ بِاللَّهِ؟ شَهَادَةُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللَّهِ، وَإِقَامُ الصَّلَاةِ وَإِيتَاءُ الزَّكَاةِ، وَأَنْ تؤدوا الخمس من المغنم» “আমি তোমাদেরকে চারটি বিষয়ে নির্দেশ দিচ্ছি আর চারটি বিষয় থেকে নিষেধ করছি, আমি তোমাদেরকে নির্দেশ দিচ্ছি আল্লাহর প্রতি ঈমান আনতে, এরপর তিনি বলেন, তোমরা কি জান আল্লাহ তা‘আলার প্রতি ঈমান আনয়ন কী? এ সাক্ষ্য দেওয়া যে আল্লাহ ছাড়া প্রকৃত কোনো উপাস্য নেই, আর মুহাম্মাদ আল্লাহর রাসূল, সালাত প্রতিষ্ঠা করা, যাকাত প্রদান করা, এবং এক-পঞ্চমাংশ গনীমাত আদায় করা”। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৫৩; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১৭] এ হাদীসটি দীর্ঘ হাদীসের অংশ বিশেষ, তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এক-পঞ্চমাংশ গনীমত আদায় করাকে সার্বিক ঈমানের মধ্যে গণ্য করেছেন। [ইমাম বুখারী এ ব্যাপারে তার ‘সহীহ’ কিতাবের ঈমান অধ্যায়ে একটি পরিচ্ছেদ এনে বলেছেন: ‘এক-পঞ্চমাংশ গণীমত আদায় করা ঈমানের অংশ’ এরপর তিনি আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমার এ হাদীস উল্লেখ করেন। (অনুবাদক)]

আল্লাহ তা‘আলার বাণী: وَمَآ أَنزَلۡنَا عَلَىٰ عَبۡدِنَا يَوۡمَ ٱلۡفُرۡقَانِ يَوۡمَ ٱلۡتَقَى ٱلۡجَمۡعَانِۗ “অর্থাৎ দু’পক্ষের মিলিত হওয়ার দিন আর আল্লাহ সকল বিষয়ের ওপর ক্ষমতাবান” আল্লাহ তা‘আলা বান্দাদের প্রতি তাঁর নি‘আমত ও দয়ার কথা অবহিত করছেন। কেননা তিনি বদরের দিন সত্য ও মিথ্যার মাঝে পার্থক্য করে দিয়েছেন আর এর নামকরণ করেছেন فرقان অর্থাৎ সত্য ও মিথ্যার মাঝে পার্থক্যের দিন। কেননা আল্লাহ তা‘আলা এতে মিথ্যার বাণীর ওপর সত্যের বাণীকে সুউচ্চ করে তুলে ধরেছেন, তাঁর দীনকে প্রকাশ করেছেন তাঁর নবীকে এবং তাঁর দলকে সাহায্য করেছেন। [আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা বলেন, يوم الفرقان হচ্ছে, বদরের দিন, এ দিন আল্লাহ তা‘আলা সত্য ও মিথ্যার মাঝে পার্থক্য করেছেন। হাকিম এ হাদীস বর্ণনা করেছেন। অনুরূপ মত ব্যক্ত করেছেন মুজাহিদ, মিকসাম, উবাইদুল্লাহ ইবন আব্দুল্লাহ, দহ্হাক, কাতাদা, মুকাতিল ইবন হাইইয়ান এবং আরও অন্যান্যরা। (অনুবাদক)]

উরওয়া ইবন যুবাইর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, يوم الفرقان ঐ যেদিন আল্লাহ তা‘আলা হক ও বাতিলের মাঝে পার্থক্য নির্ধারণ করেন। আর তা হলো, বদরের যুদ্ধের দিন। এটি সর্বপ্রথম যুদ্ধ, যাতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজে স্বশরীরে অংশগ্রহণ করেন। এ যুদ্ধে মুশরিকদের নেতা ছিল উতবা ইবন রাবী‘আহ। উভয় বাহিনী রমযানের তের বা সতের তারিখে একে অপরের মুখোমুখী হয়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথী ছিল সেদিন মাত্র তিনশত তের জন আর মুশরিকদের সংখ্যা ছিল নয় শত থেকে এক হাজার। আল্লাহ তা‘আলা মুশরিকদের পরাজিত করেন। তাদের সত্তরের অধিক নিহত হয় এবং একই পরিমাণ লোক বন্দী হয়।

আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, পার্থক্যের রাত ছিল উভয় জামা‘আত মুখোমুখি হওয়ার দিন। রমযান মাসের সতের তারিখ জুমু‘আর দিন সকাল বেলা। মাগাযী ও সীরাতবিদদের নিকট এটিই বিশুদ্ধ মতামত।

﴿إِذۡ أَنتُم بِٱلۡعُدۡوَةِ ٱلدُّنۡيَا وَهُم بِٱلۡعُدۡوَةِ ٱلۡقُصۡوَىٰ وَٱلرَّكۡبُ أَسۡفَلَ مِنكُمۡۚ وَلَوۡ تَوَاعَدتُّمۡ لَٱخۡتَلَفۡتُمۡ فِي ٱلۡمِيعَٰدِ وَلَٰكِن لِّيَقۡضِيَ ٱللَّهُ أَمۡرٗا كَانَ مَفۡعُولٗا لِّيَهۡلِكَ مَنۡ هَلَكَ عَنۢ بَيِّنَةٖ وَيَحۡيَىٰ مَنۡ حَيَّ عَنۢ بَيِّنَةٖۗ وَإِنَّ ٱللَّهَ لَسَمِيعٌ عَلِيمٌ ٤٢﴾ [ الانفال : ٤٢ ]

অর্থানুবাদ:

“স্মরণ কর, যখন তোমরা উপত্যকার নিকট প্রান্তে ছিলে আর তারা ছিল দূরের প্রান্তে আর উটের আরোহী কাফেলা (আবু সুফইয়ানের নেতৃত্বে কুরাইশের সম্পদসহ কাফেলা) ছিল তোমাদের অপেক্ষা নিম্নভূমিতে। যদি তোমরা যুদ্ধ করার ব্যাপারে পরস্পরের মধ্যে পূর্বেই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে, তবুও যুদ্ধ করার এ সিদ্ধান্ত তোমরা অবশ্যই রক্ষা করতে পারতে না (তোমাদের দুর্বল অবস্থার কারণে), যাতে আল্লাহ সে কাজ সম্পন্ন করতে পারেন যা ছিল পূর্বেই স্থিরীকৃত, যেন যাকে ধ্বংস হতে হবে সে যেন সুস্পষ্ট দলীলের ভিত্তিতে ধ্বংস হয় আর যাকে জীবিত থাকতে হবে সেও যেন সুস্পষ্ট দলীলের ভিত্তিতে জীবিত থাকে। আল্লাহ নিশ্চয় সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ”। [সূরা আল-আনফাল, আয়াত: ৪২]

তাফসীর:

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন