মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
এবার ‘ছাত্র-ছাত্রী’-এর ইংরেজি প্রতিশব্দ Student (স্টুডেন্ট) এর মধ্যে লুকায়িত কিছু গুণাবলী নিয়ে আলোচনা করব। Student শব্দের মধ্যে সাতটি বর্ণ আছে। যথা- S, T, U, D, E, N, T এই এক একটি বর্ণ যেন এক একটি অপরিহার্য গুণ। যেমন-
প্রথম বর্ণ, S = Study (স্টাডি) অধ্যয়ন
অধ্যয়নই ছাত্র-ছাত্রীদের একমাত্র পেশা ও নেশা হওয়া চাই। তারা নিজেদের ইচ্ছায় বারবার অধ্যয়ন করবে। সংস্কৃত ভাষায় একটি কথা বহুল প্রচলিত রয়েছে, ‘‘ছাত্রনং অধ্যয়নং তপঃ’’ অর্থাৎ অধ্যয়নই ছাত্রদের একমাত্র তপস্যা বা সাধনা। সাধু ও দরবেশরা যেমন একাগ্রচিত্তে ধ্যানে বা সাধনায় মগ্ন থাকেন ঠিক তেমনিভাবে ছাত্রদেরকেও পড়ালেখার ধ্যানে একাগ্রচিত্তে মগ্ন থাকতে হবে। যতক্ষণ পর্যন্ত কোনো একটি বিষয় ভালোভাবে বুঝে না আসবে ততক্ষণ পর্যন্ত ধৈর্যসহকারে তা বারবার বুঝার চেষ্টা করতে হবে। কোনো বিষয়কে ভালোভাবে আয়ত্ত করার উদ্দেশে ধৈর্যসহকারে বারবার প্রচেষ্টার নামই অধ্যবসায়। ছাত্রদেরকে এ গুণটি অর্জন করতে হবে। তাহলে তারা প্রতিটি বিষয় আয়ত্ত করতে পারবে। কবি বলেন,
‘‘পারিব না এ কথাটি বলিও না আর
কেন পারিবে না তাহা ভাব একবার
দশ জনে পারে যাহা, তুমিও পারিবে তাহা
পারিবে না এ কথাটি বলিও না আর।’’
দ্বিতীয় বর্ণ T = Tendency (টেন্ডেন্সি) ঝোঁক
অধ্যয়নের প্রতি ছাত্র-ছাত্রীদের ঝোঁক-প্রবণতা থাকতে হবে। অধ্যয়ন প্রবণতাই হবে তাদের প্রধান বৈশিষ্ট্য। তাদের কাজকর্ম, খেলাধুলা, ভ্রমণ ইত্যাদি সবকিছুই যেন অধ্যয়নকেন্দ্রিক এবং শিক্ষামূলক হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। অধ্যয়নের ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করবে এবং মনোযোগের ক্ষতি সাধিত হবে এমনসব কাজকর্ম থেকে ছাত্ররা অবশ্যই দূরে থাকবে।
ডঃ মুহাম্মদ শহীদুল্লার মত অধ্যয়নের প্রতি ঝোঁক থাকতে হবে। এরকম অন্যান্য মনীষীদের জীবনী থেকে শিক্ষা নিয়ে নিজেদের জীবনে অধ্যয়নের প্রেরণা ও আগ্রহ সৃষ্টি করতে হবে।
তৃতীয় বর্ণ U= Unity (ইউনিটি) একতা
ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে একতা থাকা আবশ্যক। কেননা ‘‘Unity is the Best Strength.’’ ‘‘একতাই সবচেয়ে বড় শক্তি’’। ছাত্রসমাজের মধ্যে যদি একতার গুণটি বিদ্যমান থাকে তবে তারা একে অপরের সাথে ভালো সম্পর্ক বজায় রাখতে সক্ষম হবে, একে অন্যের সুখ-দুঃখের সাথী হতে পারবে। তাদের মধ্যে একজন কোনো পড়া না বুঝলে অন্যরা তাকে ঐ বিষয়টি বুঝিয়ে দিতে সাহায্য করবে। সকলেই ভালো ছাত্র হবে বলে দৃঢ় সিদ্ধান্ত নিলে এবং এ ব্যাপারে একে অপরকে সাহায্য-সহযোগিতা করলে তারা সবাই তাদের অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছতে পারবে। কোনো অপশক্তি তাদেরকে ঐ লক্ষ্যস্থল থেকে দূরে সরিয়ে আনার দুঃসাহস পাবে না।
চতুর্থ বর্ণ D = Discipline (ডিসিপ্লিন) নিয়ম-শৃংখলা
অস্কার ওয়াইন্ড বলেন, ‘‘নিয়মানুবর্তিতা আরো দশটি কাজ বেশি করার পথ দেখিয়ে দেয়’’। ছাত্র-ছাত্রীদেরকে নিয়মতান্ত্রিক ও পরিকল্পিত জীবন যাপনে অভ্যস্ত হতে হবে। এজন্য একটি দৈনন্দিন রুটিন তৈরি করে নিতে হবে। কারণ ‘‘A good plan is half of done’’. ‘‘একটা ভালো পরিকল্পনা কোনো কাজের অর্ধেক’’। তাদেরকে পড়ার সময় পড়া, লেখার সময় লেখা, খেলাধুলার সময় খেলাধুলা এবং ভ্রমণের সময় ভ্রমণ করতে হবে। প্রতিদিন সকালে মহা পরাক্রমশালী আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা করে শুরু করবে দিনের প্রাথমিক কাজ তথা নিজেদের ক্লাসের পড়াশোনা। তারপর একটা নির্দিষ্ট সময়ে গোসল করে খাবার গ্রহণ করবে, এরপর ক্লাস থাকলে ক্লাসে যাবে। ক্লাস থেকে ফেরার পর একটু বিশ্রাম নিয়ে রুটিন অনুযায়ী অবশিষ্ট কাজগুলো সম্পন্ন করবে।
রাত্রে বেশি সময় না জেগে ১০/১১ টার মধ্যে ঘুমিয়ে পড়বে এবং সকাল সকাল উঠবে। ভোরে উঠলে কাজের জন্য যথেষ্ট সময় পাওয়া যায়। কথায় আছে- ‘‘Early to bed and early to rise, makes a man healthy, wealthy and wise’’. অর্থাৎ সকাল সকাল ঘুমানো এবং সকাল সকাল জেগে উঠা একজন মানুষকে স্বাস্থ্যবান, সম্পদশালী এবং জ্ঞানী করে তুলে। ভোরের মুক্ত বাতাস স্বাস্থ্যের জন্য নিয়ামত। প্রবাদ আছে, ‘‘সুবেহ কি হাওয়া হাজার বিমারো কা দাওয়া’’। অর্থাৎ ভোরের বাতাস হাজার রোগের ঔষধ। স্বাস্থ্যবিজ্ঞানীদের মতে তিনটি ব্যায়াম উত্তম- ভোরের মুক্ত বাতাসে হাঁটা, সাঁতার কাটা এবং ঘোড়ায় চড়ে বেড়ানো। অনেকে বেশি রাত্রি জেগে সকালে ঘুমায়, এটা ঠিক নয়।
কবির ভাষায়, ‘‘সূয্যি মামা জাগার আগে উঠব আমি জেগে’’।
এল. উইল ক∙ বলেন, ‘‘দিনের সবচেয়ে মধুরতম সময় হচ্ছে ভোরবেলা’’।
তাই ছাত্রদের উচিত হবে সূর্য উঠার পূর্বে ঘুম থেকে জাগ্রত হওয়া এবং সকালে না ঘুমিয়ে পূর্ণভাবে অধ্যয়ন করা। কেননা দিনের কাজ সকালে ভালোভাবে উদ্বোধন করতে পারলে সারাদিনই ভালোভাবে কেটে যাবে এবং শরীর ও মন ভালো থাকবে, অলসতা দূর হবে। কথায় বলে,
‘‘Well starting is the half of the finishing work’’.
অর্থাৎ ‘‘সুন্দর আরম্ভই কোনো কাজ শেষ করার অর্ধেক’’।
তাছাড়া সকালে তাড়াতাড়ি কাজে হাত দিলে আমাদের প্রিয় নবীর দু‘আ পাওয়া যায়। তিনি বলতেন, ‘‘হে আল্লাহ! আমার উম্মতের সকালের সময়ের মধ্যে বরকত দান করো।’’ তিরমিযী) সারা দিনের কাজকর্মকে সুন্দর করার উদ্দেশে ভোরেই নিম্নোক্ত বিষয়াবলী নিয়ে ভাবতে হবে।
(i) সূর্য উঠার পূর্বে ঘুম থেকে উঠতে পেরেছি কি?
(ii) আজকের পড়া তৈরি করেছি কি? না হয়ে থাকলে খুব দ্রুত তা তৈরি করে নিতে হবে।
(iii) আজকের দিনটি কিভাবে সুন্দর করা যায়?
অনুরূপভাবে রাত্রিতে ঘুমানোর পূর্বেও ভাবতে হবে।
(i) আজ সকল কাজ ঠিকমত করতে পেরেছি কি?
(ii) রুটিন মত চলতে পেরেছি কি?
(iii) কোথাও ভুল হয়েছে কি? কোনো ভুল বা অন্যায় হয়ে থাকলে তা যেন ভবিষ্যতে আর না হয়, সে ব্যাপারে দৃঢ় সংকল্প গ্রহণ করতে হবে।
(iv) ভালো কাজ করার জন্য আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করবে এবং কোনো অন্যায় করে থাকলে ক্ষমা চাইবে।
(v) দৈনিক পড়াশোনা কম পক্ষে ৫ ঘণ্টার কম হলে আগামীতে তা বাড়ানোর জন্য জোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবে।
এভাবে ছাত্র-ছাত্রীদেরকে সকল প্রকার নিয়ম-শৃংখলা মেনে চলতে হবে। অনিয়মিত চললে কোনো কাজই ভালোভাবে সম্পাদিত হবে না। সর্বোপরি তখন জীবনে দেখা দেবে বিশৃংখলা ও অনিয়মতান্ত্রিকতা। দিনের পড়া দিনেই না শিখলে বকেয়া পড়ার একটা স্তুপ তৈরি হয়ে যাবে। তখন পরীক্ষার সময় আসলে তাদেরকে মনমরা দেখাবে, পরীক্ষাটা একটা বাড়তি ঝামেলা মনে হবে, পরীক্ষার সময় ভীতির সঞ্চার হবে। এভাবে তারা আস্তে আস্তে ছাত্রত্বের গুণাবলী হারিয়ে ফেলবে। পরবর্তীতে বেকার জীবনের অভিশাপ নিয়েই কর্মজীবনের ফিতা কাটতে হবে।
সুতরাং طِفْلُ الْيَوْمِ رَجَلُ الْغَدِ অর্থাৎ ‘‘আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যৎ’’। এ সূত্র ধরেই ছাত্রদেরকে নিয়মতান্ত্রিকভাবে চলতে হবে। দিনের পড়াটা দিনেই শিখে নিয়ে তার সারমর্মটা মনের মণিকোঠায় গেঁথে রেখে সামনে অগ্রসর হতে থাকলে পরবর্তীতে এই ছাত্রজীবনই তাকে জাতির অভিভাবকে পরিণত করতে ভিত্তিপ্রস্তর হিসেবে কাজ করবে।
পঞ্চম বর্ণ E = Energy (এনার্জি) শক্তি
ছাত্র-ছাত্রীদেরকে শক্তি ও সাহসের অধিকারী হতে হবে। দুর্বলমনা ব্যক্তি পদে পদে অবহেলার শিকার হয়ে থাকে। ছাত্র-ছাত্রীদের মনের মধ্যে কোনো প্রকার দুর্বলতা, হীনমন্যতা থাকবে না, তারা নীচু মনের অধিকারী হতে পারবে না। তারা সর্বদা সাহসী, বুদ্ধিমান, চালাক-চতুর, দৃঢ়চেতা ও অন্যায়ের প্রতিবাদে কঠোর হবে। শিষ্টের লালন ও দুষ্টের দমনের জন্য হবে অনড় মনোবলের অধিকারী। তাদের সিদ্ধান্ত হবে, অধ্যবসায়ের মাধ্যমে অধ্যয়নকৃত বিষয়টি নিজে গভীরভাবে বুঝা এবং অন্যকে বুঝানোর ক্ষমতা অর্জন করা। একবার না পারলে বিষয়টিকে বারবার পড়তে হবে, প্রয়োজনে অন্যের সহযোগিতা নিতে হবে। ভালোভাবে না বুঝা পর্যন্ত ঐ বিষয়টিকে ছেড়ে দেয়া যাবে না।
ছাত্রদেরকে শক্তি ও সাহস নিয়ে সামনের পড়ার দিকে অগ্রসর হতে হবে। সামনের পড়াগুলো অবশ্যই বুঝতে এবং বুঝাতে পারবে এরকম মনোবলের অধিকারী হতে হবে।
ষষ্ঠ বর্ণ N = Neat and clean (নীট এন্ড ক্লীন) পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা
সবাইকে সর্বদা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। কেননা মহাগ্রন্থ আল- কুরআনে আল্লাহ তা‘আলা বলেন-
وَثِيَابَكَ فَطَهِّرْ অর্থাৎ ‘‘তোমার পোশাক পবিত্র রাখো।’’ (সূরা মুদ্দাস্সির- ৪)
হাদীসে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন-
اَلطُّهُوْرُ شَطْرُ الْاِيْمَانِ অর্থাৎ ‘‘পবিত্রতা ঈমানের অংশ’’ (সহীহ মুসলিম হা/ ৫৫৬)
এখানে আমাদের সকলকে পবিত্রতা অর্জন করার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে। পবিত্রতা তথা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা মানুষকে করে সজীব, সতেজ এবং হৃদয়ে এনে দেয় আনন্দ। তাই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা জীবনের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময় যেহেতু ছাত্রজীবন, তাই ছাত্র-ছাত্রীদেরকে জীবনের এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে পরিচ্ছন্ন থাকা আবশ্যক। নিজের পড়ার কক্ষ, খাবার কক্ষ, থাকার জায়গা, নিজের পোশাক, শরীর এবং বাড়ির আঙ্গিনাকে নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। নিজের পড়ার টেবিলকে রাখতে হবে সুসজ্জিত, বইগুলো গুছিয়ে রাখতে হবে। এবং চোখের সামনে রাখবে দৈনন্দিন কাজকর্মের রুটিন। প্রতিদিন একটা নির্দিষ্ট সময়ে গোসল করবে। তবে সকালের দিকে গোসল করাটা উত্তম, এতে মনটা স্বচ্ছ থাকে, ভালো লাগে এবং সারা দিনের কাজকর্মের মধ্যে বরকতও পাওয়া যায়।
জেনে রাখা দরকার যে, পবিত্রতা দু’ধরনের। যেমন :
(১) বাহ্যিক পবিত্রতা- যা এতক্ষণ আলোচনা করা হল।
(২) আভ্যন্তরীণ পবিত্রতা বা মনের পরিচ্ছন্নতা।
আর তা হল- মনকে সর্বদা কুচিন্তা হতে মুক্ত রাখা। সবধরনের বাজে চিন্তা থেকে, বাজে কল্পনা থেকে, কুপরামর্শ থেকে এবং অবৈধ মেয়েলি চিন্তাভাবনা থেকে মনকে পবিত্র রাখতে হবে।
ছাত্রজীবনে যারা অবৈধ প্রেমে জড়িয়ে পড়ে তাদের মনে রাখা উচিত যে, ছাত্রজীবনের প্রেম অধিকাংশ ক্ষেত্রেই টিকে না; বরং এ প্রেমই ভবিষ্যৎ জীবনের জন্য অভিশাপে পরিণত হয়। ছাত্রজীবন মূল্যবান সময়। এই সময়কে যারা প্রেম করে ব্যয় করেছেন বা করছেন তাদের জন্য জনৈক প্রেমিক বন্ধুর কয়েকটি উপদেশ-
‘‘প্রেম হচ্ছে আগুন, যে আগুনে একবার পা দিলে জ্বলেপুড়ে ছাই হয়ে যায় জীবনের মূল্যবান সময়। প্রেম হচ্ছে জ্বালা-যন্ত্রণা বা দহনের অপর নাম। প্রেম হচ্ছে জ্বলন্ত সিগারেট- যার শুরুতে আগুন শেষে ছাই। অন্তরের মধ্যে সর্বদা প্রেমিক বা প্রেমিকার কল্পনাই জীবনকে জ্বালিয়ে দেয়। এর মধ্যে সামান্য একটু হাসি, আনন্দ থাকলেও দুঃখ-যন্ত্রনাই অনেক বেশি।’’
সবশেষে ঐ প্রেমিক ব্যক্তি ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে বলেন, তারা যেন মূল্যবান সময়কে প্রেমের আত্মঘাতি ফাঁদে ফেলে নষ্ট না করে।
একদা যুগ বিখ্যাত ও সনামধন্য এক ব্যক্তিকে জিজ্ঞেস করা হল, আপনার এত সফলতার কারণ কি? তিনি উত্তরে বললেন, বোধ হয় প্রেমকে প্রত্যাখ্যান করার ফলেই। আরেকটু বিশ্লেষণ করে বললেন, আমার ছাত্রজীবনে কয়েকজন মেয়ে প্রেমে সাড়া দিতে আহবান করেছিল; কিন্তু আমি তখন اِتَّقِ اللهَ ‘‘আল্লাহকে ভয় করো’’ বলে তাদের প্রেমকে প্রত্যাখ্যান করেছিলাম। যদি তাদের কারো প্রেমে মোহিত হয়ে সাড়া দিতাম তাহলে আমার জীবনে এত সফলতার স্বপ্নও আমি কল্পনা করতে পারতাম না।
অনেক প্রতিভাবান ছাত্র-ছাত্রী কেবলমাত্র অবৈধ প্রেমের ফাঁদে পড়ে তাদের মূল্যবান সময়কে নষ্ট করার কারণে সারা জীবন এর মাশুল দিতে বাধ্য হয়েছে। আমাদের সামাজিক জীবনের দিকে তাকালে বুঝা যায় এর পরিণতি কত ভয়াবহ।
দেহ-মনকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হলে প্রত্যককেই তাদের স্ব-স্ব ধর্মীয় বিধানকে মেনে চলতে হবে। ধর্মই কর্ম, ধর্মই কল্যাণ। ধর্ম মানুষকে সৎ বানায় এবং সৎ পথে চলতে সহায়তা করে। ধর্ম মানুষকে পাপকাজ থেকে বিরত রাখে। আর পাপকাজ থেকে বিরত থাকতে পারলে শরীর ও মন ভালো থাকবে এবং স্মরণশক্তি বৃদ্ধি পাবে। ফলে অল্প সময় পড়ে অনেক বেশি সময় মনে রাখা যাবে।
সপ্তম বর্ণ T = Truthfulness (ট্রুথফুলনেস) সত্যবাদিতা
সত্যবাদিতা একটি মহৎ গুণ। প্রত্যেককেই এ গুণটির অধিকারী হতে হবে। ছাত্র-ছাত্রীদেরকে সত্য কথা বলতে হবে। সত্যের ধ্বংস নেই, সত্যের ক্ষয় নেই। সত্যবাদী ব্যক্তিরাই সম্মানের পাত্র। সত্যবাদী ছাত্র-ছাত্রী সর্বদা সত্য কথা বলার কারণে তারা সকলের স্নেহ ও ভালোবাসা পেয়ে থাকে। তারাই জীবনে সুখী হয় এবং অন্যকেও সুখী করতে পারে।
হাদীসে এসেছে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘সত্য বলা নেকী, আর নেকী জান্নাতের দিকে পথ দেখায়। অপর দিকে মিথ্যা বলা পাপ, আর পাপ জাহান্নামের দিকে পথ দেখায়।’’ (সহীহ মুসলিম হা/৬৮০৪)
আরো বলা হয় - يُنْجِىْ وَ الْكِذْبَ يُهْلِكُ اِنَّ الصِّدْقَ
‘‘সত্য মুক্তি দেয় এবং মিথ্যা ধ্বংস করে’’।
এখানে যেসকল গুণাবলী নিয়ে আলোচনা করা হল এসব গুণাবলী অর্জন করেই ছাত্র-ছাত্রীদেরকে সামনের দিকে অগ্রসর হতে হবে। তাহলে সাধারণ লোক, পিতা-মাতা, ভাই-বোন এবং শিক্ষক সকলেই তাদেরকে অন্তর থেকে ভালোবাসবে। ছাত্র-ছাত্রীরা লোকদেরকে সম্মান করবে, শ্রদ্ধা করবে, বিপদের সময় লোকদের পাশে দাঁড়াবে, পিতা-মাতার কথা মেনে চলবে, গুরুজনকে ভক্তি করবে এবং শ্রদ্ধেয় শিক্ষকমন্ডলীর সাথে নম্রভাবে কথা বলবে, তাদের সাথে ভালো ব্যবহার করবে, পার্শ্ববর্তী লোকদের সাথে সদ্ব্যবহার করবে এবং ছোটদের প্রতি স্নেহমমতা প্রদর্শন করবে। এভাবে তারা সকলের নিকট গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করে আদর্শ ছাত্র-ছাত্রী হিসেবে গড়ে উঠার চেষ্টা করবে। কারণ তারাই জাতির ভবিষ্যৎ কর্ণধার। দেশ ও জাতি তাদেরই নেতৃত্ব কামনা করে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/670/8
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।