hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

কুরআন ও হাদীসের আলোকে সহজ আকীদা

লেখকঃ ড. আহমাদ ইবন আব্দুর রহমান আল-কাযী

১০
রবুবিয়্যাতের ভিত্তি:
তাহলে বুঝা গেলো যে, রবুবিয়্যাতের ভিত্তি তিনটি বিষয়ের উপর:

এক. সৃষ্টি: মহান আল্লাহ প্রতিটি বস্তুর স্রষ্টা। আল্লাহ ছাড়া বাকী সবকিছু মাখলুক বা সৃষ্ট। মহান আল্লাহ বলেন:

﴿ٱللَّهُ خَٰلِقُ كُلِّ شَيۡءٖۖ وَهُوَ عَلَىٰ كُلِّ شَيۡءٖ وَكِيلٞ ٦٢﴾ [ الزمر : ٦١ ]

“আল্লাহ সব কিছুর স্রষ্টা এবং তিনি সব কিছুর তত্ত্বাবধায়ক”। [সূরা আয-যুমার, আয়াত: ৬১]

মহান আল্লাহ আরও বলেন:

﴿وَخَلَقَ كُلَّ شَيۡءٖ فَقَدَّرَهُۥ تَقۡدِيرٗا ٢﴾ [ الفرقان : ٢ ]

“তিনি সব কিছু সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর তা নিপুণভাবে নিরূপণ করেছেন”। [সূরা আল-ফুরকান, আয়াত: ২]

আল্লাহ ছাড়া অন্য মাখলুকের প্রতি সৃষ্টি করার সম্পর্ক করা আপেক্ষিক। অর্থাৎ মাখলুকগণ কোনো কিছু বানায়, জোড়া লাগায় এবং পরিমিত আকার প্রদান করে। অস্তিত্বহীন থেকে অস্তিত্বে আনতে পারে না। যেমন, মহান আল্লাহ বলেন:

﴿فَتَبَارَكَ ٱللَّهُ أَحۡسَنُ ٱلۡخَٰلِقِينَ ١٤﴾ [ المؤمنون : ١٤ ]

“অতএব সর্বোত্তম স্রষ্টা আল্লাহ কেই তিনি মঙ্গলময়!”। [সূরা আল-মুমিনূন, আয়াত: ১৪]

দুই. মালিক। মহান আল্লাহ সবকিছুর মালিক। আল্লাহ ছাড়া সবকিছুই আল্লাহর মালিকানায়। মহান আল্লাহ বলেন:

﴿أَلَمۡ تَعۡلَمۡ أَنَّ ٱللَّهَ لَهُۥ مُلۡكُ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضِۗ ١٠٧﴾ [ البقرة : ١٠٧ ]

“তুমি কি জান না যে, নিশ্চয় আসমানসমূহ ও জমিনের রাজত্ব আল্লাহর”? [সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ১০৭]

﴿وَلِلَّهِ مُلۡكُ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضِۗ وَٱللَّهُ عَلَىٰ كُلِّ شَيۡءٖ قَدِيرٌ ١٨٩﴾ [ ال عمران : ١٨٩ ]

“আর আল্লাহর জন্যই আসমান ও জমিনের রাজত্ব। আর আল্লাহ সব কিছুর উপর ক্ষমতাবান”। [সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ১৮৯]

আরও বলেন:

﴿قُلِ ٱللَّهُمَّ مَٰلِكَ ٱلۡمُلۡكِ تُؤۡتِي ٱلۡمُلۡكَ مَن تَشَآءُ وَتَنزِعُ ٱلۡمُلۡكَ مِمَّن تَشَآءُ وَتُعِزُّ مَن تَشَآءُ وَتُذِلُّ مَن تَشَآءُۖ بِيَدِكَ ٱلۡخَيۡرُۖ إِنَّكَ عَلَىٰ كُلِّ شَيۡءٖ قَدِيرٞ ٢٦﴾ [ ال عمران : ٢٦ ]

“বল, ‘হে আল্লাহ, রাজত্বের মালিক, আপনি যাকে চান রাজত্ব দান করেন, আর যার থেকে চান রাজত্ব কেড়ে নেন এবং আপনি যাকে চান সম্মান দান করেন। আর যাকে চান অপমানিত করেন, আপনার হাতেই কল্যাণ। নিশ্চয় আপনি সব কিছুর উপর ক্ষমতাবান’’। [সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ২৬]

﴿وَلَمۡ يَكُن لَّهُۥ شَرِيكٞ فِي ٱلۡمُلۡكِ ١١١﴾ [ الاسراء : ١١١ ]

“মালিকানায় (রাজত্বে) তাঁর কোনো শরীক নেই”। [সূরা আল-ইসরা, আয়াত: ১১১]

﴿ذَٰلِكُمُ ٱللَّهُ رَبُّكُمۡ لَهُ ٱلۡمُلۡكُۚ وَٱلَّذِينَ تَدۡعُونَ مِن دُونِهِۦ مَا يَمۡلِكُونَ مِن قِطۡمِيرٍ ١٣﴾ [ فاطر : ١٣ ]

“তিনি আল্লাহ, তোমাদের রব; সমস্ত মালিকানা তাঁরই, আর আল্লাহকে ছাড়া যাদেরকে তোমরা ডাকো তারা খেজুরের আঁটির আবরণেরও মালিক নয়”। [সূরা ফাতির, আয়াত: ১১৩]

মহান আল্লাহ ছাড়া অন্য যে সব সৃষ্টির প্রতি মালিকানার সম্পর্ক স্থাপন করা হয় তা সাময়িক, আপেক্ষিক, ও বিচ্ছিন্ন বিষয়। যেমন, আল্লাহ তা‘আলার কথা (ফির‘আউন গোত্রের মুমিন লোকটি বলেছিল)

﴿يَٰقَوۡمِ لَكُمُ ٱلۡمُلۡكُ ٱلۡيَوۡمَ ظَٰهِرِينَ فِي ٱلۡأَرۡضِ ٢٩﴾ [ غافر : ٢٩ ]

“হে আমার কওম, আজকের দিনে জমিনের বুকে তোমাদের মালিকানা স্বীকৃত; প্রকাশ্যভাবে তোমরাই তাতে কর্তৃত্বশীল”। [সূরা গাফির, আয়াত: ২৯]

﴿أَوۡ مَا مَلَكَتۡ أَيۡمَٰنُكُمۡۚ﴾ [ النساء : ٣ ]

“অথবা তোমাদের ডান হাত যার মালিক হয়েছে।”। [সূরা আন-নিসা, আয়াত: ৩]

﴿إِنَّا نَحۡنُ نَرِثُ ٱلۡأَرۡضَ وَمَنۡ عَلَيۡهَا وَإِلَيۡنَا يُرۡجَعُونَ ٤٠﴾ [ مريم : ٤٠ ]

“নিশ্চয় আমি জমিন ও এর উপরে যা রয়েছে তার চূড়ান্ত মালিক হব [চূড়ান্ত ওয়ারিস বলতে বুঝানো হয়েছে চূড়ান্ত মালিক অর্থাৎ সব কিছু ধ্বংস হয়ে যাওয়ার পর একমাত্র আল্লাহই থাকবেন এবং সবকিছু থাকবে তাঁর মালিকানাধীন।] এবং আমারই নিকট তাদেরকে ফিরিয়ে আনা হবে”। [সূরা মারইয়াম, আয়াত: ৪০]

তিন. হুকুম/ বিধান: যাবতীয় বিধান প্রদানের মালিক কেবল আল্লাহ। মহান আল্লাহ বিধানদাতা; তিনি ছাড়া সবাই তার হুকুমের গোলাম বা আদিষ্ট। মহান আল্লাহ বলেন:

﴿قُلۡ إِنَّ ٱلۡأَمۡرَ كُلَّهُۥ لِلَّهِۗ ١٥٤﴾ [ ال عمران : ١٥٤ ]

“বল, নিশ্চয় সকল নির্দেশ কেবল আল্লাহরই”। [সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ১৫৪]

মহান আল্লাহ বলেন:

﴿أَلَا لَهُ ٱلۡخَلۡقُ وَٱلۡأَمۡرُۗ تَبَارَكَ ٱللَّهُ رَبُّ ٱلۡعَٰلَمِينَ ٥٤﴾ [ الاعراف : ٥٣ ]

“জেনে রাখ, সৃষ্টি ও নির্দেশ তাঁরই। আল্লাহ মহান, যিনি সকল সৃষ্টির রব”। [সূরা আল আ‘রাফ, আয়াত: ৫৩]

মহান আল্লাহ বলেন:

﴿وَقُضِيَ ٱلۡأَمۡرُۚ وَإِلَى ٱللَّهِ تُرۡجَعُ ٱلۡأُمُورُ ٢١٠﴾ [ البقرة : ٢١٠ ]

“এবং সব বিষয়ের ফয়সালা করে দেওয়া হয়েছে। আর আল্লাহরই নিকট সব বিষয় প্রত্যাবর্তিত হবে”। [সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ২১০]

মহান আল্লাহ স্বীয় নাবীকে সম্বোধন করে বলেন:

﴿لَيۡسَ لَكَ مِنَ ٱلۡأَمۡرِ شَيۡءٌ ١٢٨﴾ [ ال عمران : ١٢٨ ]

দ“হুকুম/বিধান/ফয়সালা/পরিচালনাগত বিষয়ে তোমার কোনো অধিকার নেই”। [সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ১২৮] রাসূলের কাছে যদি সেটা না থাকে তবে অন্যদের কাছে সেটার ক্ষমতা কীভাবে থাকতে পারে?

মহান আল্লাহ আরও বলেন:

﴿لِلَّهِ ٱلۡأَمۡرُ مِن قَبۡلُ وَمِنۢ بَعۡدُۚ ٤﴾ [ الروم : ٤ ]

“পূর্বের ও পরের সব পরিচালনা/ফয়সালা আল্লাহরই মালিকানাধীন”। [সূরা আর-রূম, আয়াত: ৪] সুতরাং কেবল তিনি আল্লাহই তার সৃষ্টির ব্যাপারে নির্দেশদাতা, তিনিই সৃষ্টির ব্যাপারে ফয়সালা প্রদানকারী। আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো দিকে হুকুম বা বিধান বা ফয়সালা বা নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা সম্পর্কিত করার বিষয়টি আপেক্ষিক। কারণ আল্লাহ ব্যতীত অন্যদের দ্বারা কোনো নির্দেশ/ফয়সালা/নিয়ন্ত্রণ বাস্তবায়ণ সম্পূর্ণরূপে আল্লাহর ইচ্ছার অধীন। তিনি যদি চান তবে সেটা তিনি বাস্তবায়িত হতে দেন, যদি তিনি চান তবে সেটা রুদ্ধ করে দেন। যেমন, আল্লাহ তা‘আলার বাণী

﴿فَٱتَّبَعُوٓاْ أَمۡرَ فِرۡعَوۡنَۖ وَمَآ أَمۡرُ فِرۡعَوۡنَ بِرَشِيدٖ ٩٧﴾ [ هود : ٩٧ ]

“অতঃপর তারা ফির‘আউনের নির্দেশের অনুসরণ করল। আর ফির‘আউনের নির্দেশ সঠিক ছিল না”। [সূরা হূদ, আয়াত: ৯৭]

স্মরণ রাখা দরকার যে, আল্লাহর নির্দেশ বলে আল্লাহর দু’ প্রকার নির্দেশ অর্থাৎ আল্লাহর কাওনী (প্রকৃতিগত/সৃষ্টিগত) নির্দেশ এবং আল্লাহর শারী‘আতগত নির্দেশ উভয়টি বুঝানো হয়েছে। কাওনী নির্দেশ তা অবশ্যই সংঘটিত হবে। এটি আল্লাহর সর্বময় ইচ্ছা’র সমার্থবোধক। সে হিসেবে মহান আল্লাহ বলেন:

﴿ إِنَّمَآ أَمۡرُهُۥٓ إِذَآ أَرَادَ شَيۡ‍ًٔا أَن يَقُولَ لَهُۥ كُن فَيَكُونُ ٨٢ ﴾ [ يس : ٨٢ ]

“তাঁর নির্দেশ তো এমন যে যখন তিনি কোনো কিছুর ইচ্ছা করেন তখন শুধু বলেন: হও, আর তাতেই তা হয়ে যায়”। [সূরা ইয়াসিন: ৮২]

অপরদিকে শর‘য়ী নির্দেশ পরীক্ষার স্থান। আর এটি মহব্বতের সমার্থবোধক। এ নির্দেশ কখনো সংঘটিত হয় আবার কখনো সংঘটিত হয় না। তবে এসবই আল্লাহর ব্যাপক ইচ্ছার অন্তর্ভুক্ত। যেমন, মহান আল্লাহ বলেন:

﴿لِمَن شَآءَ مِنكُمۡ أَن يَسۡتَقِيمَ ٢٨ وَمَا تَشَآءُونَ إِلَّآ أَن يَشَآءَ ٱللَّهُ رَبُّ ٱلۡعَٰلَمِينَ ٢٩﴾ [ التكوير : ٢٨، ٣٠ ]

“যে তোমাদের মধ্যে সরল পথে চলতে চায়, তার জন্য এই পবিত্র কুরআন সৎ পথের প্রদর্শক। আর তোমরা ইচ্ছা করলেই তা সংঘটিত হয় না, যদি না সৃষ্টিকুলের রব আল্লাহ ইচ্ছা করেন”। [সূরা আত-তাকওয়ীর, আয়াত: ২৮, ২৯]

আল্লাহর রবুবিয়্যাতের অন্যান্য সিফাত বা গুণগুলো যেমন, রিযিক পৌঁছানো, জীবন দান, মৃত্যু দান, আসমান থেকে বৃষ্টি বর্ষণ, জমিন থেকে ফসল উৎপাদন, বাতাসকে নিয়ন্ত্রণ করা, সমূদ্রের জাহাজ নিয়ন্ত্রণ করা, রাত ও দিনের পরিবর্তন করা, সুস্থতা দান করা, অসুস্থতা প্রদান, ইজ্জত দেওয়া, বেইজ্জত করা ইত্যাদি সবই উল্লিখিত তিনটি অর্থাৎ সৃষ্টি, মালিকানা ও নির্দেশের প্রতি প্রত্যাবর্তন করে।

আল্লাহর রুবুবিয়্যাতের প্রতি ঈমান মানব স্বভাবের সাথে গেঁথে দেওয়া আছে। নূন্যতম জ্ঞান যার রয়েছে সেও তা প্রত্যক্ষ্য করে, এ জগতের মধ্যে তা অবশ্যই অনুভুত এবং কুরআন ও হাদীসে এর প্রমাণ অসংখ্য।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন