hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

কুরআন ও হাদীসের আলোকে সহজ আকীদা

লেখকঃ ড. আহমাদ ইবন আব্দুর রহমান আল-কাযী

৩৩
কবীরা গুনাহের আলোচনা
সাত- সাধারণ গুনাহ ও কবীরাহ গুনাহের কারণে একজন মানুষের ঈমানের গুণ কখনো দূর হয় না, তবে এ সব কারণে মূল ঈমান অবশিষ্ট থাকার সাথে সাথে ঈমান দুর্বল হয়। কবীরা গুনাহকারীকে বলা হবে, মু’মিন দুর্বল ঈমানদার। ঈমান স্থাপন করার কারণে তাকে মুমিন বলা হবে আর কবীরাহ গুনাহের কারণ তাকে ফাসিক বলা হবে। এ ব্যক্তি দুনিয়াতে ইসলাম থেকে বের হবে না এবং আখিরাতে সে চির জাহান্নামী হবে না; বরং সে আল্লাহর ইচ্ছার আওতায় থাকবে। আল্লাহ যদি চান, তাকে ক্ষমা করে দেবেন এবং জান্নাতের প্রবেশ করাবে। আর যদি চান তিনি তাকে তার সব গুনাহ বা আংশিক গুনাহের কারণে শাস্তি দেবেন। অতঃপর সে সুপারিশকারীর সুপারিশের কারণে অথবা পরম দয়ালু আল্লাহর রহমতের কারণে তাকে জাহান্নাম থেকে বের করা হবে এবং তার শেষ পরিণতি হবে জান্নাত। মহান আল্লাহ বলেন:

﴿إِنَّ ٱللَّهَ لَا يَغۡفِرُ أَن يُشۡرَكَ بِهِۦ وَيَغۡفِرُ مَا دُونَ ذَٰلِكَ لِمَن يَشَآءُۚ وَمَن يُشۡرِكۡ بِٱللَّهِ فَقَدِ ٱفۡتَرَىٰٓ إِثۡمًا عَظِيمًا ٤٨﴾ [ النساء : ٤٨ ]

“নিশ্চয় আল্লাহ তাঁর সাথে শরীক করাকে ক্ষমা করেন না। তিনি ক্ষমা করেন এ ছাড়া অন্যান্য পাপ, যার জন্য তিনি চান। আর যে আল্লাহর সাথে শরীক করে সে অবশ্যই মহাপাপ রচনা করে”। [সূরা আন-নিসা, আয়াত: ৪৮]

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:

«يدخل أهل الجنة الجنة، وأهل النار النار، ثم يقول الله تعالى : أخرجوا من كان في قلبه مثقال حبة من خردل من إيمان . فيخرجون منها، قد اسودوا، فيلقون في نهر الحياة»

“জান্নাতীরা জান্নাতে এবং জাহান্নামীরা জাহান্নামে প্রবেশ করার পর মহান আল্লাহ বলবেন, যার অন্তরে এক দানা পরিমাণ ঈমান রয়েছে তাকে তোমরা জাহান্নাম থেকে বের করে নিয়ে এসো। তখন তারা জাহান্নাম থেকে জাহান্নামীকে বের করবে এমন অবস্থায় যে সে কালো হয়ে গেছে। তারপর তাকে হায়াতের নহরে নিক্ষেপ করা হবে”। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৬৫৬০] এবং তিনি বলেন:

«يَخرج من النار من قال : لا إله إلا الله ، وفي قلبه وزن شعيرة من خير، و يَخرج من النار من قال : لا إله إلا الله ، وفي قلبه وزن برة من خير، ويَخرج من النار من قال : لا إله إلا الله ، وفي قلبه وزن ذرة من خير» .

“যে লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলেছে এবং তার অন্তরে একটি যব পরিমাণ ঈমান রয়েছে তাকে জাহান্নাম থেকে বের করা হবে। যে লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলেছে এবং তার অন্তরে একটি গম পরিমাণ ঈমান রয়েছে তাকে জাহান্নাম থেকে বের করা হবে। যে লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলেছে এবং তার অন্তরে একটি অণু-কণা পরিমাণ ঈমান রয়েছে তাকে জাহান্নাম থেকে বের করা হবে”। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৪৪]

অপর এক বর্ণনায় ঈমানের স্থানে কল্যাণের কথা এসেছে।

(কবিরা গুনাহের ব্যাপারে ভ্রষ্ট মতসমূহ)

দুই শ্রেণির লোক এ মাসাআলায় পথভ্রষ্ট হয়েছে:

প্রথম শ্রেণি: আল-ওয়া‘য়িদিয়্যাহ: যারা হুমকি বাস্তবায়িত হওয়ার কথা বলে এবং তাওহীদপন্থীদের যারা অপরাধী ও কবীরাহ গুনাহকারী তাদের বিষয়ে সুপারিশকে অস্বীকার করে। তাদের শ্রেণি দুটি:

এক- খারেজী: তারা বলে, কবীরাহ গুনাহকারী ঈমান থেকে বের হয়ে যায় এবং কুফরে প্রবেশ করে। দুনিয়াতে সে কাফির এবং আখিরাতে চির জাহান্নামী।

দুই- মু‘তাযিলা: তারা বলে, কবীরাহ গুনাহকারী ঈমান থেকে বের হয়ে যায় তবে সে কুফরে প্রবেশ করে না। সে দুনিয়াতের মুমিন ও কাফির উভয়ের মাঝামাঝি কোনো একটি দস্থানে অবস্থান করে। ফলে সে দুনিয়াতে কাফিরও নয় মুমিনও নয়। আর আখিরাতে সে চির জাহান্নামী।

ও‘য়িদিয়্যাদের কথার উত্তর একাধিক। যেমন,

প্রথমত: মহান আল্লাহ যারা দুনিয়াতে কবীরাহ গুনাহ করে তাদের জন্য ঈমান সাব্যস্ত করেছেন এবং ঈমানী ভ্রাতৃত্বের গুণকে অবশিষ্ট রেখেছেন। যেমন, মহান আল্লাহ বলেন:

﴿يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ كُتِبَ عَلَيۡكُمُ ٱلۡقِصَاصُ فِي ٱلۡقَتۡلَىۖ ٱلۡحُرُّ بِٱلۡحُرِّ وَٱلۡعَبۡدُ بِٱلۡعَبۡدِ وَٱلۡأُنثَىٰ بِٱلۡأُنثَىٰۚ فَمَنۡ عُفِيَ لَهُۥ مِنۡ أَخِيهِ شَيۡءٞ فَٱتِّبَاعُۢ بِٱلۡمَعۡرُوفِ وَأَدَآءٌ إِلَيۡهِ بِإِحۡسَٰنٖۗ ١٧٨﴾ [ البقرة : ١٧٨ ]

“হে মুমিনগণ, নিহতদের ব্যাপারে তোমাদের উপর ‘কিসাস’ ফরয করা হয়েছে। স্বাধীনের বদলে স্বাধীন, দাসের বদলে দাস, নারীর বদলে নারী। তবে যাকে কিছুটা ক্ষমা করা হবে তার ভাইয়ের পক্ষ থেকে, তাহলে সততার অনুসরণ করবে এবং সুন্দরভাবে তাকে আদায় করে দেবে”। [সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ১৭৮]

আয়াতে হত্যাকারীকে নিহতের ভাই বলে নামকরণ করা হয়েছে। যেমনিভাবে আল্লাহর অপর একটি বাণী এ বিষয়ে বিদ্যমান মহান আল্লাহ বলেন:

﴿وَإِن طَآئِفَتَانِ مِنَ ٱلۡمُؤۡمِنِينَ ٱقۡتَتَلُواْ فَأَصۡلِحُواْ بَيۡنَهُمَاۖ فَإِنۢ بَغَتۡ إِحۡدَىٰهُمَا عَلَى ٱلۡأُخۡرَىٰ فَقَٰتِلُواْ ٱلَّتِي تَبۡغِي حَتَّىٰ تَفِيٓءَ إِلَىٰٓ أَمۡرِ ٱللَّهِۚ فَإِن فَآءَتۡ فَأَصۡلِحُواْ بَيۡنَهُمَا بِٱلۡعَدۡلِ وَأَقۡسِطُوٓاْۖ إِنَّ ٱللَّهَ يُحِبُّ ٱلۡمُقۡسِطِينَ ٩ إِنَّمَا ٱلۡمُؤۡمِنُونَ إِخۡوَةٞ فَأَصۡلِحُواْ بَيۡنَ أَخَوَيۡكُمۡۚ وَٱتَّقُواْ ٱللَّهَ لَعَلَّكُمۡ تُرۡحَمُونَ ١٠﴾ [ الحجرات : ٩، ١٠ ]

“আর যদি মুমিনদের দু’দল যুদ্ধে লিপ্ত হয়, তাহলে তোমরা তাদের মধ্যে মীমাংসা করে দাও। অতঃপর যদি তাদের একদল অপর দলের উপর বাড়াবাড়ি করে, তাহলে যে দলটি বাড়াবাড়ি করবে, তার বিরুদ্ধে তোমরা যুদ্ধ কর, যতক্ষণ না সে দলটি আল্লাহর নির্দেশের দিকে ফিরে আসে। তারপর যদি দলটি ফিরে আসে তাহলে তাদের মধ্যে ইনসাফের সাথে মীমাংসা কর এবং ন্যায়বিচার কর। নিশ্চয় আল্লাহ ন্যায়বিচারকারীদের ভালোবাসেন। নিশ্চয় মুমিনরা পরস্পর ভাই ভাই। কাজেই তোমরা তোমাদের ভাইদের মধ্যে আপোষ- মীমাংসা করে দাও। আর তোমরা আল্লাহকে ভয় কর, যাতে তোমরা অনুগ্রহপ্রাপ্ত হবে”। [সূরা আল-হুজুরাত, আয়াত: ৯, ১০]

উল্লিখিত আয়াতে মারামারিতে লিপ্ত উভয় দলের প্রতি ঈমানের সম্বোধন করা হয়েছে এবং উভয় দলের জন্য ঈমান সাব্যস্ত করা হয়েছে।

দ্বিতীয়ত: মহান আল্লাহ শির্ক ছাড়া অন্য গুনাহ যাকে চান তাকে ক্ষমা করে দেন এবং যার অন্তরে শস্য দানার চেয়েও ছোট পরিমাণ ঈমান অবশিষ্ট থাকে, তাকে জাহান্নাম থেকে বের করা হবে। এ বিষয়ে সুপারিশের হাদীসগুলোর বর্ণনা মুতাওয়াতির পর্যায়ের।

দ্বিতীয় শ্রেণি: আল-মুরজিয়া: যারা আমলসমূহকে ঈমান থেকে অকার্যকর বলে দাবি করে। ফলে গুনাহের কারণে ঈমান কোনো রকম ক্ষতিগ্রস্ত হয় না যেমনিভাবে কুফরের সাথে ইবাদত বা ভালো কর্ম কোনো উপকারে আসে না। তারা ঈমানের সংজ্ঞার ক্ষেত্রে একাধিক শ্রেণিতে বিভক্ত।

এক- জাহমিয়্যাহ: তার বলে ঈমান হলো, শুধুমাত্র অন্তরে বিশ্বাস বা অন্তরে মা‘রেফাত।

দুই- আল-কাররামিয়্যাহ: যার বলে ঈমান হলো, শুধু মুখে উচ্চারণ করা।

তিন- মুরজিয়াতুল ফুকাহা: তারা বলে, ঈমান শুধুমাত্র অন্তরে বিশ্বাস, মুখের উচ্চারণ। আর আমলসমূহ ঈমানের হাকীকত ও সংজ্ঞার অন্তর্ভুক্ত নয় বরং তা হলো ঈমানের ফলাফল।

মুরজিয়াদের কথার উত্তর একাধিকভাবে দেওয়া যায়:

প্রথমত: মহান আল্লাহ আমলসমূহকেও ঈমান বলে আখ্যায়িত করেছেন। যারা বাইতুল মুকাদ্দাসের দিক মুখ করে নামাজ আদায় করেছেন এবং কিবলা পরিবর্তনের পূর্বে মারা গেছেন তাদের বিষয়ে মহান আল্লাহ বলেন:

﴿وَمَا كَانَ ٱللَّهُ لِيُضِيعَ إِيمَٰنَكُمۡۚ ١٤٣﴾ [ البقرة : ١٤٣ ]

“এবং আল্লাহ এমন নন যে, তিনি তোমাদের নামাজকে বিনষ্ট করবেন”। [সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ১৪৩] অর্থাৎ তোমাদের সালাতকে বিনষ্ট করবেন”। অর্থাৎ এখানে ঈমান অর্থ নামাজ।

দ্বিতীয়ত: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমলের ক্ষেত্রে কবীরাহ গুনাহে লিপ্ত ব্যক্তি থেকে সাধারণ ঈমানকে অবশিষ্ট থাকবে না বলেছেন। তিনি বলেন:

«لا يزني الزاني، حين يزني، وهو مؤمن . ولا يسرق السارق، حين يسرق، وهو مؤمن . ولا يشرب الخمر، حين يشربها، وهو مؤمن . ولا ينتهب نهبة ذات شرف، يرفع الناس إليه فيها أبصارهم، حين ينتهبها، وهو مؤمن» .

“একজন ব্যভিচারী যখন সে ব্যভিচার করে তখন সে মুমিন থাকা অবস্থায় ব্যভিচার করতে পারে না। একজন চোর যখন সে চুরি করে তখন সে মুমিন থাকা অবস্থায় চুরি করতে পারে না। একজন মদ্যপানকারী যখন সে মদপান করে তখন সে মুমিন থাকা অবস্থায় মদপান করতে পারে না। একজন সম্মানের অধিকারী ব্যক্তি যার দিক মানুষ মাথা উঁচু করে দেখে সে কখনো মুমিন থাকা অবস্থায় ছিনতাই করতে পারে না”। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২৪৭৫; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৫৭]

মুরাজিয়াহ ও ও‘য়িদিয়্যাহ উভয় দলের কথা অমুলক হওয়ার উৎস:

তারা উভয় দল এ কথা বিশ্বাস করে যে, ঈমান হলো, এক বস্তু। হয় তা পুরোপুরি পাওয়া যাবে অথবা পুরোপুরি না হয়ে যাবে। মুরাজিয়ারা শুধুমাত্র অন্তরে বা মুখে বা অন্তর ও মুখ উভয় দ্বারা স্বীকার করাকে ঈমান সাব্যস্ত করার চেষ্টা করে দথাকে, যদিও এ ব্যক্তি কখনোই কোনো আমল করে নি। আর এরা হলো, আহলে তাফরীত (বা ছাড়গোষ্ঠী)। আর ও‘য়িদিয়্যাহ যারা সামান্য গুনাহের কারণে ঈমানকে না করে দেয়, তারা হলো, আহলে ইফরাত (কট্টর গোষ্ঠী)। উভয় দলের শুরু এক ও অভিন্ন কিন্তু তাদের ফলাফল সম্পূর্ণ বিপরীত।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন