hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

কুরআন ও হাদীসের আলোকে সহজ আকীদা

লেখকঃ ড. আহমাদ ইবন আব্দুর রহমান আল-কাযী

২৬
আখিরাত দিবসের প্রতি ঈমান যা অন্তর্ভুক্ত করে তার আলোচনা
আখিরাত দিবসের প্রতি ঈমান নিম্নে বর্ণিত বিষয়গুলোকে অন্তর্ভুক্ত করে:

প্রথমত: মৃত্যুর পর যা সংঘটিত হবে তার প্রতি ঈমান স্থাপন করা: মৃত্যুর সময় ফিরিশতাদের দেখা, কবরের পরীক্ষা যা দুই জন ফিরিশতা একজন বান্দাকে কবরে রাখার পর তার রব, দীন ও রাসূল সম্পর্কে জিজ্ঞাসার সম্মূখীন হবে, কবরের শাস্তি ও নি‘আমত যা আলমে বারযখে সংঘটিত হবে ইত্যাদি বিষয়সমূহের প্রতি ঈমান স্থাপন করা। মহান আল্লাহ বলেন:

﴿وَلَوۡ تَرَىٰٓ إِذۡ يَتَوَفَّى ٱلَّذِينَ كَفَرُواْ ٱلۡمَلَٰٓئِكَةُ يَضۡرِبُونَ وُجُوهَهُمۡ وَأَدۡبَٰرَهُمۡ وَذُوقُواْ عَذَابَ ٱلۡحَرِيقِ ٥٠﴾ [ الانفال : ٥٠ ]

“আর যদি তুমি দেখতে, যখন ফিরিশতারা কাফিরদের প্রাণ হরণ করছিল, তাদের চেহারায় ও পশ্চাতে আঘাত করে, আর (বলছিল) ‘তোমরা জ্বলন্ত আগুনের আযাব আস্বাদন কর’’। [সূরা আল-আনফাল, আয়াত: ৫০]

﴿إِنَّ ٱلَّذِينَ قَالُواْ رَبُّنَا ٱللَّهُ ثُمَّ ٱسۡتَقَٰمُواْ تَتَنَزَّلُ عَلَيۡهِمُ ٱلۡمَلَٰٓئِكَةُ أَلَّا تَخَافُواْ وَلَا تَحۡزَنُواْ وَأَبۡشِرُواْ بِٱلۡجَنَّةِ ٱلَّتِي كُنتُمۡ تُوعَدُونَ ٣٠﴾ [ فصلت : ٣٠ ]

“নিশ্চয় যারা বলে, ‘আল্লাহই আমাদের রব’ অতঃপর অবিচল তারা তাতে থাকে, ফিরিশতারা তাদের কাছে নাযিল হয় (এবং বলে,) ‘তোমরা ভয় পেয়ো না, দুশ্চিন্তা করো না এবং সেই জান্নাতের সুসংবাদ গ্রহণ কর তোমাদেরকে যার ওয়াদা দেওয়া হয়েছিল’’। [সূরা আল-ফুসসিলাত, আয়াত: ৩০]

﴿وَحَاقَ بِ‍َٔالِ فِرۡعَوۡنَ سُوٓءُ ٱلۡعَذَابِ ٤٥ ٱلنَّارُ يُعۡرَضُونَ عَلَيۡهَا غُدُوّٗا وَعَشِيّٗاۚ وَيَوۡمَ تَقُومُ ٱلسَّاعَةُ أَدۡخِلُوٓاْ ءَالَ فِرۡعَوۡنَ أَشَدَّ ٱلۡعَذَابِ ٤٦ ﴾ [ غافر : ٤٥، ٤٦ ]

“আর ফির‘আউনের অনুসারীদেরকে ঘিরে ফেলল কঠিন আযাব। আগুন, তাদেরকে সকাল-সন্ধ্যায় তার সামনে উপস্থিত করা হয়, আর যেদিন কিয়ামত সংঘটিত হবে (সেদিন ঘোষণা করা হবে), ‘ফির‘আউনের অনুসারীদেরকে কঠোরতম আযাবে প্রবেশ করাও”। [সূরা গাফির, আয়াত: ৪৫, ৪৬]

দ্বিতীয়ত: কিয়ামত ও তার আলামতসমূহের প্রতি ঈমান স্থাপন করা: মহান আল্লাহ বলেন:

﴿وَمَا يُدۡرِيكَ لَعَلَّ ٱلسَّاعَةَ قَرِيبٞ ١٧ يَسۡتَعۡجِلُ بِهَا ٱلَّذِينَ لَا يُؤۡمِنُونَ بِهَاۖ وَٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ مُشۡفِقُونَ مِنۡهَا وَيَعۡلَمُونَ أَنَّهَا ٱلۡحَقُّۗ أَلَآ إِنَّ ٱلَّذِينَ يُمَارُونَ فِي ٱلسَّاعَةِ لَفِي ضَلَٰلِۢ بَعِيدٍ ١٨﴾ [ الشورى : ١٧، ١٨ ]

“আল্লাহ, যিনি সত্যসহ কিতাব ও মীযান [সনদ, ন্যায় বিচার, ইনসাফ, ইত্যাদি।] নাযিল করেছেন। আর কিসে তোমাকে জানাবে, হয়ত কিয়ামত খুবই নিকটবর্তী? যারা এতে ঈমান আনে না, তারাই তা ত্বরান্বিত করতে চায়। আর যারা ঈমান এনেছে, তারা একে ভয় করে এবং তারা জানে যে, এটা অবশ্যই সত্য। জেনে রেখ, নিশ্চয় যারা কিয়ামত সম্পর্কে বাক-বিতন্ডা করে তারা সুদূর পথভ্রষ্টতায় নিপতিত”। [সূরা আশ-শূরা, আয়াত: ১৭, ১৮] মহান আল্লাহ বলেন:

﴿فَهَلۡ يَنظُرُونَ إِلَّا ٱلسَّاعَةَ أَن تَأۡتِيَهُم بَغۡتَةٗۖ فَقَدۡ جَآءَ أَشۡرَاطُهَاۚ ١٨﴾ [ محمد : ١٨ ]

“সুতরাং তারা কি কেবল এই অপেক্ষা করছে যে, কিয়ামত তাদের উপর আকস্মিকভাবে এসে পড়ুক? অথচ কিয়ামতের আলামতসমূহ তো এসেই পড়েছে”। [সূরা মুহাম্মাদ, আয়াত: ১৮]

কিয়ামতের বড় আলামতসমূহের উপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বাণী দ্বারা প্রমাণ, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:

«إنها لن تقوم حتى ترون قبلها عشر آيات، فذكر : الدخان، والدجال، والدابة، وطلوع الشمس من مغربها، ونزول عيسى بن مريم، ويأجوج ومأجوج، وثلاثة خسوف : خسف بالمشرق، وخسف بالمغرب، وخسف بجزيرة العرب، وآخر ذلك نار تخرج من اليمن تطرد الناس إلى محشرهم»

“কিয়ামতের পূর্বে দশটি নিদর্শন সংঘটিত হওয়া ছাড়া কিয়ামত সংঘটিত হবে না। আর তা হলো, (দুখান) ধোঁয়া, দাজ্জাল, (দাব্বাতুল আরদ) জমিনে বিচরণকারী বিশেষ জন্তু, সূর্য পশ্চিম দিকে উদয় হওয়া, ঈসা আলাইহিস সালামের আবতরণ, ইয়াজুজ ও মাজুজের বের হওয়া, তিনটি ভূমি ধস -একটি পৃথিবীর পূর্ব প্রান্তে, একটি পশ্চিম প্রান্তে এবং একটি আরব উপত্তাকায়, আর সর্বশেষ নিদর্শন হলো, আগুন যা ইয়ামন থেকে বের হবে, মানুষকে তাদের হাশরের দিকে নিয়ে যাবে”। [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৯০১]

হঠাৎ ও দ্রুত কিয়ামত এসে যাওয়া: মহান আল্লাহ বলেন:

﴿يَسۡ‍َٔلُونَكَ عَنِ ٱلسَّاعَةِ أَيَّانَ مُرۡسَىٰهَاۖ قُلۡ إِنَّمَا عِلۡمُهَا عِندَ رَبِّيۖ لَا يُجَلِّيهَا لِوَقۡتِهَآ إِلَّا هُوَۚ ثَقُلَتۡ فِي ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضِۚ لَا تَأۡتِيكُمۡ إِلَّا بَغۡتَةٗۗ يَسۡ‍َٔلُونَكَ كَأَنَّكَ حَفِيٌّ عَنۡهَاۖ قُلۡ إِنَّمَا عِلۡمُهَا عِندَ ٱللَّهِ وَلَٰكِنَّ أَكۡثَرَ ٱلنَّاسِ لَا يَعۡلَمُونَ ١٨٧﴾ [ الاعراف : ١٨٦ ]

“তারা তোমাকে কিয়ামত সম্পর্কে প্রশ্ন করে, ‘তা কখন ঘটবে’? তুমি বল, ‘এর জ্ঞান তো রয়েছে আমার রবের নিকট। তিনিই এর নির্ধারিত সময়ে তা প্রকাশ করবেন। আসমানসমূহ ও জমিনের উপর তা (কিয়ামত) কঠিন হবে। তা তোমাদের নিকট হঠাৎ এসে পড়বে। তারা তোমাকে প্রশ্ন করছে যেন তুমি এ সম্পর্কে বিশেষভাবে অবহিত। বল, ‘এ বিষয়ের জ্ঞান কেবল আল্লাহর নিকট আছে। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ জানে না’’। [সূরা আল-আ‘রাফ, আয়াত: ১৮৬]

মহান আল্লাহ বলেন:

﴿وَمَآ أَمۡرُ ٱلسَّاعَةِ إِلَّا كَلَمۡحِ ٱلۡبَصَرِ أَوۡ هُوَ أَقۡرَبُۚ إِنَّ ٱللَّهَ عَلَىٰ كُلِّ شَيۡءٖ قَدِيرٞ ٧٧﴾ [ النحل : ٧٧ ]

“আর কিয়ামতের ব্যাপারটি শুধু চোখের পলকের ন্যায়। কিংবা তা আরো নিকটবর্তী। নিশ্চয় আল্লাহ সব কিছুর উপর ক্ষমতাবান”। [সূরা আন-নাহাল, আয়াত: ৭৭]

মহান আল্লাহ বলেন:

﴿وَنُفِخَ فِي ٱلصُّورِ فَصَعِقَ مَن فِي ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَمَن فِي ٱلۡأَرۡضِ إِلَّا مَن شَآءَ ٱللَّهُۖ ٦٨﴾ [ الزمر : ٦٧ ]

“আর শিঙ্গায় ফুঁক দেওয়া হবে। ফলে আল্লাহ যাদেরকে ইচ্ছা করেন তারা ছাড়া আসমানসমূহে যারা আছে এবং পৃথিবীতে যারা আছে সকলেই মৃত্যুবরণ করবে”। [সূরা আয-যুমার, আয়াত: ৬৮]

তৃতীয়ত: পূণরুত্থানের প্রতি ঈমান স্থাপন করা: অর্থাৎ দ্বিতীয়বার শিঙ্গায় ফুঁক দেওয়ার পর মহান আল্লাহ তার বান্দাদের কবরসমূহে থেকে জীবিত, বস্ত্রহীন, খালি পা ও কপালে দাগবিশিষ্ট অবস্থায় বের করবেন। এ বিষয়ে মহান আল্লাহ আরও বলেন:

﴿ثُمَّ نُفِخَ فِيهِ أُخۡرَىٰ فَإِذَا هُمۡ قِيَامٞ يَنظُرُونَ ٦٨﴾ [ الزمر : ٦٧ ]

“তারপর আবার শিঙ্গায় ফুঁক দেওয়া হবে, তখন তারা দাঁড়িয়ে তাকাতে থাকবে”। [সূরা আয-যুমার, আয়াত: ৬৮]

মহান আল্লাহ বলেন:

﴿وَنُفِخَ فِي ٱلصُّورِ فَإِذَا هُم مِّنَ ٱلۡأَجۡدَاثِ إِلَىٰ رَبِّهِمۡ يَنسِلُونَ ٥١﴾ [ يس : ٥١ ]

“আর শিঙ্গায় ফুঁক দেওয়া হবে, তৎক্ষণাৎ তারা কবর থেকে তাদের রবের দিকে ছুটে আসবে”। [সূরা ইয়াসীন, আয়াত: ৫১]

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:

«يُحْشَرُ النَّاسُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ حُفَاةً عُرَاةً غُرْلًا» .

“কিয়ামতের দিন মানুষকে খালি পায়ে, বস্ত্রহীন ও খতনা বিহীন করে উঠানো হবে”। [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৮৫৯]

চতুর্থত: কিয়ামতে কুবরা বা বড় দণ্ডায়মানের উপর ঈমান স্থাপন করা: কিয়ামতের মাঠে সমস্ত মানুষ রাব্বুল আলামীনের সামনে দীর্ঘ সময় দন্ডায়মান থাকা। আহ্বানকারীর আহ্বান শুনতে পাওয়া, চোখ দিয়ে সব দেখতে সমর্থ হওয়া। সেদিন কঠিন সময় ও ভয়াল অবস্থানে সূর্য্য তাদের নিকটে নিয়ে আসা হবে। ঘাম তাদের মূখ পর্যন্ত পৌঁছবে, হাউজে কাউছারে পানি পান করতে সবাই একত্র হবে, তাদের আমলের দপ্তরগুলো খোলা হবে, আমল মাপার জন্য দাড়ি পাল্লা স্থাপন করা হবে, পুলসিরাত দাঁড় করানো হবে।

পঞ্চমত: হিসাব নিকাশের উপর ঈমান স্থাপন করা: মহান আল্লাহ বলেন:

﴿إِنَّ إِلَيۡنَآ إِيَابَهُمۡ ٢٥ ثُمَّ إِنَّ عَلَيۡنَا حِسَابَهُم ٢٦﴾ [ الغاشية : ٢٥، ٢٦ ]

“নিশ্চয় আমারই নিকট তাদের প্রত্যাবর্তন। তারপর নিশ্চয় তাদের হিসাব-নিকাশ আমারই দায়িত্বে”। [সূরা আল-গাশিয়াহ, আয়াত: ২৫, ২৬] মহান আল্লাহ বলেন:

﴿فَأَمَّا مَنۡ أُوتِيَ كِتَٰبَهُۥ بِيَمِينِهِۦ ٧ فَسَوۡفَ يُحَاسَبُ حِسَابٗا يَسِيرٗا ٨﴾ [ الانشقاق : ٧، ٨ ]

“অতঃপর যাকে তার আমলনামা তার ডান হাতে দেওয়া হবে; অত্যন্ত সহজভাবেই তার হিসাব-নিকাশ করা হবে”। [সূরা আল-ইনশিকাক, আয়াত: ৭, ৮]

মহান আল্লাহ বলেন:

﴿فَمَن يَعۡمَلۡ مِثۡقَالَ ذَرَّةٍ خَيۡرٗا يَرَهُۥ ٧ وَمَن يَعۡمَلۡ مِثۡقَالَ ذَرَّةٖ شَرّٗا يَرَهُۥ ٨﴾ [ الزلزلة : ٧، ٨ ]

“অতএব, কেউ অণু পরিমাণ ভালো কাজ করলে তা সে দেখবে, আর কেউ অণু পরিমাণ খারাপ কাজ করলে তাও সে দেখবে”। [সূরা আয-যিলযাল, আয়াত: ৭, ৮]

মহান আল্লাহ বলেন:

﴿وَنَضَعُ ٱلۡمَوَٰزِينَ ٱلۡقِسۡطَ لِيَوۡمِ ٱلۡقِيَٰمَةِ فَلَا تُظۡلَمُ نَفۡسٞ شَيۡ‍ٔٗاۖ وَإِن كَانَ مِثۡقَالَ حَبَّةٖ مِّنۡ خَرۡدَلٍ أَتَيۡنَا بِهَاۗ وَكَفَىٰ بِنَا حَٰسِبِينَ ٤٧﴾ [ الانبياء : ٤٧ ]

“আর কিয়ামতের দিন আমি ন্যায়বিচারের পাল্লাসমূহ স্থাপন করব। সুতরাং কারো প্রতি কোনো অবিচার করা হবে না। কারো কর্ম যদি সরিষার দানা পরিমাণও হয়, আমি তা হাযির করব। আর হিসাব গ্রহণকারীরূপে আমিই যথেষ্ট”। [সূরা আল-আম্বিয়া, আয়াত: ৪৭]

বস্তুত মাখলুকের হিসাব দু’ প্রকার:

এক. মুমিনদের হিসাব। মুমিনদের হিসাব কেবল পেশ করা বা তাদেরকে জিজ্ঞাসা করা। যার জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে সৌভাগ্য লিপিবদ্ধ হয়েছে, সে সব সৌভাগ্যবান ব্যক্তিদের জন্য হলো, হিসাব পেশ করা। আব্দুল্লাহ ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু আনহুমার হাদীস এ বিষয়ের প্রমাণস্বরূপ। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

«إن الله يدني المؤمن، فيضع عليه كنفه، ويستره، فيقول : أتعرف ذنب كذا؟ أتعرف ذنب كذا؟ فيقول : نعم، أي رب ! حتى إذا قرره بذنوبه، ورأى أنه قد هلك، قال : قد سترتها عليك في الدنيا ، وأنا أغفرها لك اليوم . فيعطى كتاب حسناته»

“মহান আল্লাহ মুমিনের খুব কাছাকাছি আসবেন। তারপর তিনি তাদের কাঁধের উপর হাত রেখে গোপনে বলবেন, তুমি কি তোমার অমুক গুনাহ সম্পর্কে জান? তুমি কি তোমার অমুক গুনাহ সম্পর্কে জান? তখন সে বলবে হ্যাঁ, হে আমার রব, এমনকি যখন সে তার গুনাহ সম্পর্কে স্বীকারোক্তি প্রদান করবে এবং বুঝতে পারবে যে সে ধ্বংস হতে চলেছে। তখন মহান আল্লাহ বলবেন, দুনিয়াতে আমি তোমার গুনাহগুলো গোপন করেছি। আজ আমি তোমার গুনাহগুলো ক্ষমা করে দেব। তারপর মহান আল্লাহ তার সামনে তার নেক আমলের দপ্তর পেশ করবেন”। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২৪৪১]

আর জিজ্ঞাসাবাদের হিসাব তাঅহীদপন্থীদের মধ্যে যারা কবীরা গুনাহকারী, তারা এ ধরণের হিসাবের মুখোমুখি হবে। তাদের গুনাহের কারণে আল্লাহ যদি চান তাদেরকে জাহান্নামের শাস্তি দেবেন। তবে পরিণতিতে তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে। এর উপর প্রমাণ আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহার হাদীস, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

«ليس أحد يحاسب يوم القيامة إلا هلك» فقلت : يا رسول الله ، أليس قد قال الله : فَأَمَّا مَنْ أُوتِيَ كِتَابَهُ بِيَمِينِهِ . فَسَوْفَ يُحَاسَبُ حِسَاباً يَسِيراً ؟ فقال : «إنما ذلك العرض، وليس أحد يناقش الحساب يوم القيامة إلا عذب» .

“কিয়ামতের দিন যার কাছ থেকে হিসাব নেওয়া হবে সেই ধ্বংসা হবে। আমি বললাম হে আল্লাহর রাসূল! মহান আল্লাহ কি এ কথা فَأَمَّا مَنْ أُوتِيَ كِتَابَهُ بِيَمِينِهِ . فَسَوْفَ يُحَاسَبُ حِسَاباً يَسِيراً “যার আমল নামা ডান হাতে দেওয়া হবে, অচিরেই তার হিসাব সহজ করা হবে” বলেন নি? তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এ হলো, কেবল পেশ করা, কিয়ামতের দিন যার হিসাব নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে, তাকেই শাস্তি দেওয়া হবে”। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৬৫৩৭]

দুই. কাফিরদের হিসাব, কাফিরদের হিসাব তাদের নেক আমল ও বদ আমলকে ওজন দেওয়ার মাধ্যমে হবে না। কারণ, তাদের কোনো নেক আমল নেই। বরং তাদেরকে তাদের আমল বিষয়ে অবগত করা হবে এবং তারা তা স্বীকার করবে। পূর্বে উল্লিখিত ইবন উমারের হাদীসে বর্ণিত:

«وأما الكفار والمنافقون، فينادى بهم على رؤوس الخلائق : هؤلاء الذين كذبوا على ربهم، ألا لعنة الله على الظالمين» .

“আর কাফির ও মুনাফিকদেরকে সমগ্র মাখলুকের সামনে উপস্থিত করা হবে, আর বলা হবে, এরা ঐ সব লোক যারা তাদের রবের উপর মিথ্যা আরোপ করেছিল, মনে রাখবে আল্লাহর অভিশাপ জালিমদের জন্য অবধারিত”। [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৭৬৮।]

ষষ্টত: প্রতিদানের প্রতি ঈমান: আর এর অর্থ হলো, এ কথার প্রতি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস স্থাপন করা যে, জান্নাত ও জাহান্নাম সত্য। জান্নাত আল্লাহর মুত্তাকী বান্দাদের জন্য তাদের আমলের বিনিময় হিসেবে তৈরি করা হয়েছে। তাতে রয়েছে অসংখ্য নি‘আমত যা কখনো কোনো চক্ষু প্রত্যক্ষ করে নি, কোনো কর্ণ শুনে নি এবং কোনো মানুষ তা চিন্তাও করে নি। আর জাহান্নাম মহান আল্লাহ তার কাফির বান্দাদের জন্য তৈরি করে রেখেছেন। যাতে রয়েছে আত্মিক ও দৈহিক উভয়ের জন্য বিভিন্ন ধরণেরশাস্তি ও আযাব। মহান আল্লাহ বলেন:

﴿ثُمَّ أَوۡرَثۡنَا ٱلۡكِتَٰبَ ٱلَّذِينَ ٱصۡطَفَيۡنَا مِنۡ عِبَادِنَاۖ فَمِنۡهُمۡ ظَالِمٞ لِّنَفۡسِهِۦ وَمِنۡهُم مُّقۡتَصِدٞ وَمِنۡهُمۡ سَابِقُۢ بِٱلۡخَيۡرَٰتِ بِإِذۡنِ ٱللَّهِۚ ذَٰلِكَ هُوَ ٱلۡفَضۡلُ ٱلۡكَبِيرُ ٣٢ جَنَّٰتُ عَدۡنٖ يَدۡخُلُونَهَا يُحَلَّوۡنَ فِيهَا مِنۡ أَسَاوِرَ مِن ذَهَبٖ وَلُؤۡلُؤٗاۖ وَلِبَاسُهُمۡ فِيهَا حَرِيرٞ ٣٣ وَقَالُواْ ٱلۡحَمۡدُ لِلَّهِ ٱلَّذِيٓ أَذۡهَبَ عَنَّا ٱلۡحَزَنَۖ إِنَّ رَبَّنَا لَغَفُورٞ شَكُورٌ ٣٤ ٱلَّذِيٓ أَحَلَّنَا دَارَ ٱلۡمُقَامَةِ مِن فَضۡلِهِۦ لَا يَمَسُّنَا فِيهَا نَصَبٞ وَلَا يَمَسُّنَا فِيهَا لُغُوبٞ ٣٥ وَٱلَّذِينَ كَفَرُواْ لَهُمۡ نَارُ جَهَنَّمَ لَا يُقۡضَىٰ عَلَيۡهِمۡ فَيَمُوتُواْ وَلَا يُخَفَّفُ عَنۡهُم مِّنۡ عَذَابِهَاۚ كَذَٰلِكَ نَجۡزِي كُلَّ كَفُورٖ ٣٦ وَهُمۡ يَصۡطَرِخُونَ فِيهَا رَبَّنَآ أَخۡرِجۡنَا نَعۡمَلۡ صَٰلِحًا غَيۡرَ ٱلَّذِي كُنَّا نَعۡمَلُۚ أَوَ لَمۡ نُعَمِّرۡكُم مَّا يَتَذَكَّرُ فِيهِ مَن تَذَكَّرَ وَجَآءَكُمُ ٱلنَّذِيرُۖ فَذُوقُواْ فَمَا لِلظَّٰلِمِينَ مِن نَّصِيرٍ ٣٧﴾ [ فاطر : ٣٢، ٣٧ ]

“অতঃপর আমি এ কিতাবটির উত্তরাধিকারী করেছি আমার বান্দাদের মধ্যে তাদেরকে, যাদেরকে আমি মনোনীত করেছি। তারপর তাদের কেউ কেউ নিজের প্রতি যুলুমকারী এবং কেউ কেউ মধ্যপন্থা অবলম্বনকারী। আবার তাদের কেউ কেউ আল্লাহর অনুমতিসাপেক্ষে কল্যাণকর কাজে অগ্রগামী। এটাই হলো মহাঅনুগ্রহ। চিরস্থায়ী জান্নাত, এতে তারা প্রবেশ করবে। যেখানে তাদেরকে স্বর্ণের চুড়ি ও মুক্তা দ্বারা অলঙ্কৃত করা হবে এবং সেখানে তাদের পোশাক হবে রেশমের। আর তারা বলবে, ‘সকল প্রশংসা আল্লাহর, যিনি আমাদের দুঃখ-কষ্ট দূর করে দিয়েছেন। নিশ্চয় আমাদের রব পরম ক্ষমাশীল, মহাগুণগ্রাহী’। ‘যিনি নিজ অনুগ্রহে আমাদেরকে স্থায়ী নিবাসে স্থান দিয়েছেন, যেখানে কোন কষ্ট আমাদেরকে স্পর্শ করবে না এবং যেখানে কোন ক্লান্তিও আমাদেরকে স্পর্শ করবে না’। আর যারা প্রকৃত ইসলাম ধর্মবলম্বী হবে না, তাদের জন্য রয়েছে জাহান্নামের আগুন। তাদের প্রতি এমন কোন ফয়সালা দেওয়া হবে না যে, তারা মারা যাবে, এবং তাদের কাছ থেকে জাহান্নামের আযাবও লাঘব করা হবে না। এভাবেই আমি প্রত্যেক অকৃতজ্ঞকে প্রতিফল দিয়ে থাকি। আর সেখানে তারা আর্তনাদ করে বলবে, ‘হে আমাদের রব, আমাদেরকে বের করে দিন, আমরা পূর্বে যে আমল করতাম, তার পরিবর্তে আমরা নেক আমল করব’। (আল্লাহ বলবেন) ‘আমি কি তোমাদেরকে এতটা বয়স প্রদান করি নি যে, তখন কেউ শিক্ষা গ্রহণ করতে চাইলে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারত? আর তোমাদের কাছে তো সতর্ককারী এসেছিল। কাজেই তোমরা আযাব আস্বাদন কর, আর যালিমদের কোন সাহায্যকারী নেই”। [সূরা ফাতির, আয়াত: ৩২, ৩৭]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন