hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

কুরআন ও হাদীসের আলোকে সহজ আকীদা

লেখকঃ ড. আহমাদ ইবন আব্দুর রহমান আল-কাযী

৩২
ঈমানের হাকীকত
এক- ঈমান হলো, কথা ও কাজ; অন্তরের কথা, মুখের কথা এবং অন্তরের আমল এবং অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ও মুখের আমলের নাম ঈমান। অন্তরের কথার অর্থ, বিশ্বাস স্থাপন করা, সত্যায়ন করা ও গ্রহণ করা।

আর মুখের কথার অর্থ: ইসলামের কালেমা উচ্চারণ করা এবং উভয় কালেমায়ে শাহাদাতের ঘোষণা দেওয়া।

অন্তরের আমল: মানুষের নিয়্যত ও ইচ্ছা যার দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হওয়া যায়, তাকে অন্তরের আমল বলা হয়। যেমন, ভয়, আশা ও আল্লাহর উপর ভরসা করা ইত্যাদি।

মুখের আমল: যিকির, তিলাওয়াত ও দো‘আ যার দ্বারা উচ্চারিত হয়।

অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ও মুখের আমল: দৈহিক বিভিন্ন ইবাদাতের কারণে দেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গসমূহের নড়াচড়া করা।

মহান আল্লাহ বলেন:

﴿إِنَّمَا ٱلۡمُؤۡمِنُونَ ٱلَّذِينَ إِذَا ذُكِرَ ٱللَّهُ وَجِلَتۡ قُلُوبُهُمۡ وَإِذَا تُلِيَتۡ عَلَيۡهِمۡ ءَايَٰتُهُۥ زَادَتۡهُمۡ إِيمَٰنٗا وَعَلَىٰ رَبِّهِمۡ يَتَوَكَّلُونَ ٢ ٱلَّذِينَ يُقِيمُونَ ٱلصَّلَوٰةَ وَمِمَّا رَزَقۡنَٰهُمۡ يُنفِقُونَ ٣ أُوْلَٰٓئِكَ هُمُ ٱلۡمُؤۡمِنُونَ حَقّٗاۚ لَّهُمۡ دَرَجَٰتٌ عِندَ رَبِّهِمۡ وَمَغۡفِرَةٞ وَرِزۡقٞ كَرِيمٞ ٤﴾ [ الانفال : ٢، ٤ ]

“মুমিন তো তারা, যাদের অন্তরসমূহ কেঁপে উঠে যখন আল্লাহকে স্মরণ করা হয়। আর যখন তাদের উপর তাঁর আয়াতসমূহ পাঠ করা হয় তখন তা তাদের ঈমান বৃদ্ধি করে এবং তারা তাদের রবের উপরই ভরসা করে। যারা নামাজ কায়েম করে এবং আমি তাদেরকে যে রিযিক দিয়েছি, তা হতে ব্যয় করে। তারাই প্রকৃত মুমিন। তাদের জন্য রয়েছে তাদের রবের নিকট উচ্চ মর্যাদাসমূহ এবং ক্ষমা ও সম্মানজনক রিযিক”। [সূরা আল-আনফাল, আয়াত: ২, ৪]

আরও বলেন:

﴿إِنَّمَا ٱلۡمُؤۡمِنُونَ ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ بِٱللَّهِ وَرَسُولِهِۦ ثُمَّ لَمۡ يَرۡتَابُواْ وَجَٰهَدُواْ بِأَمۡوَٰلِهِمۡ وَأَنفُسِهِمۡ فِي سَبِيلِ ٱللَّهِۚ أُوْلَٰٓئِكَ هُمُ ٱلصَّٰدِقُونَ ١٥﴾ [ الحجرات : ١٥ ]

“মুমিন কেবল তারাই যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি ঈমান এনেছে, তারপর সন্দেহ পোষণ করে নি। আর নিজদের সম্পদ ও নিজদের জীবন দিয়ে আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করেছে। এরাই সত্যনিষ্ঠ”। [সূরা আল-হুজুরাত, আয়াত: ১৫]

অনুরূপভাবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:

«الإيمان بضع وسبعون، أو بضع وستون ، شعبة ؛ فأفضلها قول لا إله إلا الله، وأدناها إماطة الأذى عن الطريق ، والحياء شعبة من الإيمان» .

“ঈমানের শাখা-প্রশাখা সত্তুরের অধিক অথবা ষাটের অধিক। সর্ব উত্তম শাখা হলো, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু বলা। আর সর্ব নিম্ন হলো, কষ্টদায়ক বস্তু রাস্তা থেকে দূর করে দেওয়া। আর লজ্জাও ঈমানের একটি গুরুত্বপূর্ণ শাখা”। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৯; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৩৫]

সুতরাং ঈমান মূলত কথা ও কর্মের সমষ্টি। আর তা এমন বিশ্বাস যা কথা ও কর্মকে বাধ্য করে। ফলে কথা ও কর্ম না থাকা বিশ্বাস না থাকাকে বাধ্য করে।

দুই- ঈমান শব্দটি যখন একা উল্লেখ করা হয় তখন তার অর্থে ইসলামও অন্তর্ভুক্ত হয়। অনুরূপ যখন ইসলামকে একা উল্লেখ করা হয়। কারণ, ঈমান ও ইসলাম উভয়টিই হলো, পূর্ণাঙ্গ দীন। আর যখন ঈমান ও ইসলাম উভয়টি একত্রে উল্লেখ করা হয়, তখন ঈমান অর্থ অন্তরের বিশ্বাস আর ইসলাম অর্থ বাহ্যিক আমল। প্রত্যেক মুমিন মুসলিম। তবে প্রত্যেক মুসলিম মুমিন নয়। মহান আল্লাহ বলেন:

﴿قَالَتِ ٱلۡأَعۡرَابُ ءَامَنَّاۖ قُل لَّمۡ تُؤۡمِنُواْ وَلَٰكِن قُولُوٓاْ أَسۡلَمۡنَا وَلَمَّا يَدۡخُلِ ٱلۡإِيمَٰنُ فِي قُلُوبِكُمۡۖ ١٤﴾ [ الحجرات : ١٤ ]

“বেদুঈনরা বলল, ‘আমরা ঈমান আনলাম’। বল, ‘তোমরা ঈমান আননি’। বরং তোমরা বল, ‘আমরা আত্মসমর্পণ করলাম’। আর এখন পর্যন্ত তোমাদের অন্তরে ঈমান প্রবেশ করেনি”। [সূরা আল-হুজরাত, আয়াত: ১৪]

তিন- ঈমান বৃদ্ধি পায় এবং কমে যায়; আল্লাহর সম্পর্কে জানা, আল্লাহর নিদর্শনসমূহে চিন্তা-ফিকির করা, ইবাদত-বন্দেগী করা এবং গুণাহের কর্মসমূহ ছেড়ে দেওয়ার দ্বারা ঈমান বৃদ্ধি পায়। প্রক্ষান্তরে আল্লাহ সম্পর্কে অজ্ঞতা, আল্লাহর নিদর্শনসমূহ সম্পর্কে অমনোযোগী হওয়া, গুনাহ করা, ইবাদত-বন্দেগী থেকে বিরত থাকা ইত্যাদি ঈমানকে দুর্বল করে দেয়। মহান আল্লাহ বলেন:

﴿وَإِذَا تُلِيَتۡ عَلَيۡهِمۡ ءَايَٰتُهُۥ زَادَتۡهُمۡ إِيمَٰنٗا ٢ ﴾ [ الانفال : ٢ ]

“আর যখন তাদের উপর তাঁর আয়াতসমূহ পাঠ করা হয় তখন তা তাদের ঈমান বৃদ্ধি করে”। [সূরা আল-আনফাল, আয়াত: ২]

মহান আল্লাহ বলেন:

﴿فَأَمَّا الَّذِينَ آمَنُوا فَزَادَتْهُمْ إِيمَاناً وَهُمْ يَسْتَبْشِرُونَ﴾ التوبة : 124

“অতএব, যারা মুমিন, নিশ্চয় তা তাদের ঈমান বৃদ্ধি করেছে এবং তারা আনন্দিত হয়”। [সূরা আত-তাওবাহ, আয়াত: ১২৪]

মহান আল্লাহ বলেন:

﴿هُوَ ٱلَّذِيٓ أَنزَلَ ٱلسَّكِينَةَ فِي قُلُوبِ ٱلۡمُؤۡمِنِينَ لِيَزۡدَادُوٓاْ إِيمَٰنٗا مَّعَ إِيمَٰنِهِمۡۗ ٤﴾ [ الفتح : ٤ ]

“তিনিই মুমিনদের অন্তরে প্রশান্তি নাযিল করেছিলেন যেন তাদের ঈমানের সাথে ঈমান বৃদ্ধি পায়”। [সূরা আল-ফাতাহ, আয়াত: ৪]

চার- ঈমান বিভিন্ন স্তরের হয়ে থাকে। ঈমানের কিছু অংশ তার অন্য অংশের চেয়ে উন্নত ও উত্তম হয়। যেমনটি উল্লিখিত হাদীস:

«الإيمان بضع وسبعون، أو بضع وستون، شعبة ؛ فأفضلها قول لا إله إلا الله، وأدناها إماطة الأذى عن الطريق، والحياء شعبة من الإيمان» .

“ঈমানের শাখা-প্রশাখা সত্তুরের অধিক অথবা ষাটের অধিক। সর্ব উত্তম শাখা হলো, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু বলা। আর সর্ব নিম্ন হলো, কষ্টদায়ক বস্তু রাস্তা থেকে দূর করে দেওয়া। আর লজ্জাও ঈমানের একটি গুরুত্বপূর্ণ শাখা”। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৯; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৩৫]

পাঁচ- ঈমাদারগণের স্তর একাধিক: কতক ঈমানদার কতকের তুলনায় অধিক পরিপূর্ণ ঈমানদার। যেমন, মহান আল্লাহ বলেন:

﴿ ثُمَّ أَوۡرَثۡنَا ٱلۡكِتَٰبَ ٱلَّذِينَ ٱصۡطَفَيۡنَا مِنۡ عِبَادِنَاۖ فَمِنۡهُمۡ ظَالِمٞ لِّنَفۡسِهِۦ وَمِنۡهُم مُّقۡتَصِدٞ وَمِنۡهُمۡ سَابِقُۢ بِٱلۡخَيۡرَٰتِ بِإِذۡنِ ٱللَّهِۚ ذَٰلِكَ هُوَ ٱلۡفَضۡلُ ٱلۡكَبِيرُ ٣٢ ﴾ [ فاطر : ٣٢ ]

“অতঃপর আমি এ কিতাবটির উত্তরাধিকারী করেছি আমার বান্দাদের মধ্যে তাদেরকে, যাদেরকে আমি মনোনীত করেছি। তারপর তাদের কেউ কেউ নিজের প্রতি যুলুমকারী এবং কেউ কেউ মধ্যপন্থা অবলম্বনকারী। আবার তাদের কেউ কেউ আল্লাহর অনুমতিসাপেক্ষে কল্যাণকর কাজে অগ্রগামী। এটাই হলো মহাঅনুগ্রহ”। [সূরা ফাতির, আয়াত: ৩২]

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:

«أكمل المؤمنين إيماناً، أحسنهم خلقاً» .

“ঈমানের বিষয়ে পরিপূর্ণ ব্যক্তি তাকেই বলা যাবে যে তার চরিত্রের দিক দিয়ে অধিক সুন্দর”। [আহমদ, হাদীস নং ৭৪০২ আবূ দাউদ, হাদীস নং ৪৬৮২ তিরমিযি, হাদীস নং ১১৬২]

যে ব্যক্তি কালিমায়ে শাহাদাতের উভয় অংশের অর্থের উপর বিশ্বাস স্থাপন করল এবং শাহাদতদ্বয়ের দাবিকে অনুসরণ করল, সেই প্রকৃতপক্ষে মূল ঈমান রক্ষা ও পালন করল। আর যে ব্যক্তি ওয়াজিবগুলো পালন করল এবং নিষিদ্ধ বিষয়গুলো ছেড়ে দিল, সে ওয়াজিব ঈমানকে রক্ষা করল। আর যে ব্যক্তি ওয়াজিব ও মুস্তাহাবসমূহ পালন করল এবং হারাম ও মাকরুহসমূহ ছেড়ে দিল, সে পরিপূর্ণ ঈমানকে রক্ষা করল।

ছয়- ঈমানের মধ্যে (ইস্তেসনা তথা) ইনশাআল্লাহ বলা; অর্থাৎ কোনো ব্যক্তি এ কথা বলে যে, ইনশাআল্লাহ আমি একজন মুমিন। এর অর্থ হলো, আল্লাহ যদি চান তবে আমি মুমিন। এ ধরণেরকথার তিন অবস্থা:

১- যদি ঈমানের মূলে সন্দেহ পোষণ করে এ কথা বলে থাকে, তাহলে এ ধরণেরকথা বলা হারাম এমনকি কুফরি হিসেবে বিবেচিত হবে। কারণ, ঈমান সন্দেহ গ্রহণ করে না। ঈমান হলো, দৃঢ় বিশ্বাস ও প্রত্যয়।

২- পরিপূর্ণ ঈমানদার ও ওয়াজিব ঈমান বাস্তবায়নের দাবিদার হওয়ার মাধ্যমে নিজেকে পবিত্র বলে মনে করার ভয় থেকে এ ধরণেরকথা বলে তাহলে তা বলা ওয়াজিব।

৩- আর যদি আল্লাহর নামের উচ্চারণ বরকতের জন্য করে থাকে তবে এ ধরণেরকথা বলা বৈধ।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন