hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

কুরআন ও হাদীসের আলোকে সহজ আকীদা

লেখকঃ ড. আহমাদ ইবন আব্দুর রহমান আল-কাযী

২২
কিতাবসমূহের উপর ঈমান
এ কথার দৃঢ় বিশ্বাস স্থাপন করা যে, মহান আল্লাহ মানুষের হিদায়েতের জন্য তার নাবীদের উপর সত্যের পয়গাম সম্বলিত কিতাবসমূহ নাযিল করেছেন, যা তাদের প্রতি অনুগ্রহ, তাদের জন্য উপদেশ, তাদের উপর দলীল স্বরূপ এবং তাতে তাদের জন্য রয়েছে প্রতিটি বস্তুর বর্ণনা। কিতাবসমূহের উপর ঈমান স্থাপন করা কয়েকটি বিষয়কে অন্তর্ভুক্ত করে:

প্রথমত: যে সব কিতাবসমূহের নাম আমরা জানতে পেরেছি তার প্রতি সু-নির্দিষ্টভাবে ঈমান স্থাপন করা। আর যে সব কিতাবসমূহের নাম আমরা জানতে পারি নি, সে সব কিতাবসমূহের প্রতি সামগ্রিকভাবে ঈমান স্থাপন করা।

মহান কিতাব তিনটি:

এক. তাওরাত: মহান আল্লাহ মূসা আলাহিস সালামের উপর তাওরাত নাযিল করেন। মহান আল্লাহ বলেন:

﴿قَالَ يَٰمُوسَىٰٓ إِنِّي ٱصۡطَفَيۡتُكَ عَلَى ٱلنَّاسِ بِرِسَٰلَٰتِي وَبِكَلَٰمِي فَخُذۡ مَآ ءَاتَيۡتُكَ وَكُن مِّنَ ٱلشَّٰكِرِينَ ١٤٤ وَكَتَبۡنَا لَهُۥ فِي ٱلۡأَلۡوَاحِ مِن كُلِّ شَيۡءٖ مَّوۡعِظَةٗ وَتَفۡصِيلٗا لِّكُلِّ شَيۡءٖ فَخُذۡهَا بِقُوَّةٖ وَأۡمُرۡ قَوۡمَكَ يَأۡخُذُواْ بِأَحۡسَنِهَاۚ سَأُوْرِيكُمۡ دَارَ ٱلۡفَٰسِقِينَ ١٤٥﴾ [ الاعراف : ١٤٣، ١٤٤ ]

“তিনি বললেন, ‘হে মূসা, আমি আমার রিসালাত ও বাক্যালাপ দ্বারা তোমাকে মানুষের উপর বেছে নিয়েছি। সুতরাং যা কিছু আমি তোমাকে প্রদান করলাম তা গ্রহণ কর এবং শোকর আদায়কারীদের অন্তর্ভুক্ত হও।’ আর আমি তার জন্য ফলকসমূহে লিখে দিয়েছি প্রত্যেক বিষয়ের উপদেশ এবং প্রত্যেক বিষয়ের বিস্তারিত ব্যাখ্যা। সুতরাং তা শক্ত করে ধর এবং তোমার কওমকে নির্দেশ দাও, যেন তারা গ্রহণ করে এর উত্তম বিষয়গুলো। আমি অচিরেই তোমাদেরকে দেখাব ফাসিকদের আবাস”। [সূরা আল-আ‘রাফ, আয়াত: ১৪৩, ১৪৪]

﴿إِنَّآ أَنزَلۡنَا ٱلتَّوۡرَىٰةَ فِيهَا هُدٗى وَنُورٞۚ يَحۡكُمُ بِهَا ٱلنَّبِيُّونَ ٱلَّذِينَ أَسۡلَمُواْ لِلَّذِينَ هَادُواْ وَٱلرَّبَّٰنِيُّونَ وَٱلۡأَحۡبَارُ بِمَا ٱسۡتُحۡفِظُواْ مِن كِتَٰبِ ٱللَّهِ وَكَانُواْ عَلَيۡهِ شُهَدَآءَۚ ٤٤﴾ [ المائ‍دة : ٤٤ ]

“নিশ্চয় আমি তাওরাত নাযিল করেছি, তাতে ছিল হিদায়াত ও আলো, এর মাধ্যমে ইয়াহূদীদের জন্য ফয়সালা প্রদান করত অনুগত নাবীগণ এবং সৎকর্মপরায়ণ ও ধর্মবিদগণ। কারণ তাদেরকে আল্লাহর কিতাবের রক্ষক করা হয়েছিল এবং তারা ছিল এর উপর সাক্ষী”। [সূরা আল-মায়েদাহ, আয়াত: ৪৪]

দুই. ইঞ্জিল: মহান আল্লাহ ঈসা আলাইহিস সালামের উপর নাযিল করেছেন। মহান আল্লাহ বলেন:

﴿ثُمَّ قَفَّيۡنَا عَلَىٰٓ ءَاثَٰرِهِم بِرُسُلِنَا وَقَفَّيۡنَا بِعِيسَى ٱبۡنِ مَرۡيَمَ وَءَاتَيۡنَٰهُ ٱلۡإِنجِيلَۖ ٢٧﴾ [ الحديد : ٢٧ ]

“আর আমি তাদের পেছনে মারইয়াম পুত্র ঈসাকে পাঠিয়েছিলাম তার সম্মুখে বিদ্যমান তাওরাতের সত্যায়নকারীরূপে এবং তাকে দিয়েছিলাম ইঞ্জিল”। [সূরা আল-হাদীদ, আয়াত: ২৭]

﴿وَءَاتَيۡنَٰهُ ٱلۡإِنجِيلَ فِيهِ هُدٗى وَنُورٞ وَمُصَدِّقٗا لِّمَا بَيۡنَ يَدَيۡهِ مِنَ ٱلتَّوۡرَىٰةِ وَهُدٗى وَمَوۡعِظَةٗ لِّلۡمُتَّقِينَ ٤٦﴾ [ المائ‍دة : ٤٦ ]

“এবং আমি তাকে দিয়েছিলাম ইঞ্জিল, এতে ছিল হিদায়াত ও আলো এবং (তা ছিল) তার সম্মুখে অবশিষ্ট তাওরাতের সত্যায়নকারী, হিদায়াত ও মুত্তাকীদের জন্য উপদেশস্বরূপ”। [সূরা আল-মায়েদাহ, আয়াত: ৪৬]

তিন. কুরআন: মহান আল্লাহ মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর নাযিল করেছেন। মহান আল্লাহ বলেন:

﴿وَأَنزَلۡنَآ إِلَيۡكَ ٱلۡكِتَٰبَ بِٱلۡحَقِّ مُصَدِّقٗا لِّمَا بَيۡنَ يَدَيۡهِ مِنَ ٱلۡكِتَٰبِ وَمُهَيۡمِنًا عَلَيۡهِۖ ٤٨﴾ [ المائ‍دة : ٤٨ ]

“আর আমি তোমার প্রতি কিতাব নাযিল করেছি যথাযথভাবে, এর পূর্বের কিতাবের সত্যায়নকারী ও এর উপর তদারককারীরূপে”। সূরা আল-মায়েদাহ, আয়াত: ৪৮

আল্লাহর কিতাবসমূহের একটি কিতাব হচ্ছে:

যবূর: যে কিতাবটি দাউদ আলাইহিস সালামকে দেওয়া হয়েছে। মহান আল্লাহ বলেন:

﴿وَءَاتَيۡنَا دَاوُۥدَ زَبُورٗا ٥٥﴾ [ الاسراء : ٥٥ ]

“আর আমি দাউদকে যবুর দিয়েছি”। [সূরা আল-ইসরা, আয়াত: ৫৫]

অনুরূপ আরও দেওয়া হয়েছে ইবরাহীম আলাইহিস সালাম সালামকে সহীফা। মহান আল্লাহ বলেন:

﴿إِنَّ هَٰذَا لَفِي ٱلصُّحُفِ ٱلۡأُولَىٰ ١٨ صُحُفِ إِبۡرَٰهِيمَ وَمُوسَىٰ ١٩﴾ [ الاعلى : ١٨، ١٩ ]

“নিশ্চয় এটা আছে পূর্ববর্তী সহীফাসমূহে। ইবরাহীম ও মূসার সহীফাসমূহে”। [সূরা আল-আ‘লা, আয়াত: ১৮, ১৯]

দ্বিতীয়ত: কিতাবসমূহের যে সব বিধান বিকৃত হয়নি তা বিশ্বাস স্থাপন করা: মহান আল্লাহ সংবাদ দেন যে, বানী ইসরাঈলদের উপর নাযিলকৃত কিতাবসমূহে শাব্দিক ও অর্থগত উভয় প্রকার বিকৃতি প্রবেশ কা হয়েছে। মহান আল্লাহ বলেন:

﴿مِّنَ ٱلَّذِينَ هَادُواْ يُحَرِّفُونَ ٱلۡكَلِمَ عَن مَّوَاضِعِهِۦ٤٦﴾ [ النساء : ٤٦ ]

“ইয়াহূদীদের মধ্যে কিছু এমন লোক আছে যারা কালামসমূহকে তার স্থান থেকে পরিবর্তন করে ফেলে”। [সূরা আন-নিসা, আয়াত: ৪৬]

﴿يُحَرِّفُونَ ٱلۡكَلِمَ عَن مَّوَاضِعِهِۦ ١٣﴾ [ المائ‍دة : ١٣ ]

“তারা শব্দগুলোকে আপন স্থান থেকে বিকৃত করে”। [সূরা আল-মায়েদাহ, আয়াত: ১৩]

﴿يُحَرِّفُونَ ٱلۡكَلِمَ مِنۢ بَعۡدِ مَوَاضِعِهِ ٤١﴾ [ المائ‍دة : ٤١ ]

“তারা শব্দগুলোকে যথাযথ সুবিন্যস্ত থাকার পরও আপন স্থান থেকে বিকৃত করে”। [সূরা আল-মায়েদা, আয়াত: ৪১]

﴿وَإِنَّ مِنۡهُمۡ لَفَرِيقٗا يَلۡوُۥنَ أَلۡسِنَتَهُم بِٱلۡكِتَٰبِ لِتَحۡسَبُوهُ مِنَ ٱلۡكِتَٰبِ وَمَا هُوَ مِنَ ٱلۡكِتَٰبِ وَيَقُولُونَ هُوَ مِنۡ عِندِ ٱللَّهِ وَمَا هُوَ مِنۡ عِندِ ٱللَّهِ وَيَقُولُونَ عَلَى ٱللَّهِ ٱلۡكَذِبَ وَهُمۡ يَعۡلَمُونَ ٧٨﴾ [ ال عمران : ٧٨ ]

“তাদের মধ্যে একদল রয়েছে, যারা নিজদের জিহ্বা দ্বারা বিকৃত করে কিতাব পাঠ করে, যাতে তোমরা সেটা কিতাবের অংশ মনে কর, অথচ সেটি কিতাবের অংশ নয়। তারা বলে, ‘এটি আল্লাহর পক্ষ থেকে’, অথচ তা আল্লাহর পক্ষ থেকে নয়। আর তারা আল্লাহর উপর মিথ্যা বলে, অথচ তারা জানে”। [সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ৭৮]

পক্ষান্তরে মহান আল্লাহ নিজেই মহা গ্রন্থ আল-কুরআনকে হিফাযত করার দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। মহান আল্লাহ বলেন:

﴿إِنَّا نَحۡنُ نَزَّلۡنَا ٱلذِّكۡرَ وَإِنَّا لَهُۥ لَحَٰفِظُونَ ٩﴾ [ الحجر : ٩ ]

“নিশ্চয় আমি কুরআন [ الذكر দ্বারা উদ্দেশ্য কুরআন।] নাযিল করেছি, আর আমিই তার হিফাযতকারী”। [সূরা আল-হিজর, আয়াত: ৯]

এবং তিনি তার হিফাযত করেছেন। মহান আল্লাহ বলেন:

﴿وَإِنَّهُۥ لَكِتَٰبٌ عَزِيزٞ ٤١ لَّا يَأۡتِيهِ ٱلۡبَٰطِلُ مِنۢ بَيۡنِ يَدَيۡهِ وَلَا مِنۡ خَلۡفِهِۦۖ تَنزِيلٞ مِّنۡ حَكِيمٍ حَمِيدٖ ٤٢﴾ [ فصلت : ٤١، ٤٢ ]

“আর এটি নিশ্চয় এক সম্মানিত গ্রন্থ। বাতিল এতে অনুপ্রবেশ করতে পারে না, না সামনে থেকে, না পিছন থেকে। এটি প্রজ্ঞাময়, সপ্রশংসিতের পক্ষ থেকে নাযিলকৃত”। [সূরা আল-ফুসসিলাত, আয়াত: ৪১, ৪২]

এ কথার ভিত্তিতে মনে রাখতে হবে, আহলে কিতাবদের কিতাবসমূহে উল্লিখিত কিচ্ছা ও সংবাদসমূহ যেগুলোকে পরিভাষায় ঈসরাইলী বর্ণনা বলা হয়, সেগুলো তিন অবস্থা থেকে মুক্ত নয়:

এক: কুরআনে যা রয়েছে তার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হবে: তখন আমরা আমাদের কিতাব কুরআনে তার সাক্ষ্য ও সমর্থন পাওয়ার কারণে এগুলোকে শুদ্ধ বলে বিশ্বাস করব। যেমন, কিয়ামতের আলোচনা, ফির‘আউন সম্প্রদায়ের লোকদের ডুবে যাওয়া এবং ঈসা আলাইহিস সালামের নিদর্শনসমূহ।

দুই: কুরআনে যা রয়েছে তার বিরোধী হবে। তখন আমরা এগুলোকে বাতিল বলে বিশ্বাস করব। এ গুলো তারা আবিষ্কার ও নিজ হাতে লিপিবদ্ধ করেছে এবং তারা মুখ দ্বারা প্রচার করেছে মাত্র। যেমন, তারা বলে লূত আলাইহিস সালাম মদ পান করেছেন এবং তার নিজ কন্যাদ্বয়ের সাথে ব্যভিচার করেছেন। (না‘উযুবিল্লাহ) আল্লাহ তাকে সম্মানিত করুন। অনুরূপ ঈসা আলাইহিস সালাম সম্পর্কে তাদের দাবি হলো, তিনি হয় আল্লাহ অথবা আল্লাহর বেটা অথবা তিনজনের একজন। তাদের কথা থেকে মহান আল্লাহ অনেক ঊর্ধ্বে।

তিন: কুরআনের বিরোধীও নয় আবার সামঞ্জস্যপূর্ণও নয় এমন বর্ণনাসমূহ। এ বিষয়গুলোকে আমরা বিশ্বাসও করবো না আবার বাতিলও বলবো না। কারণ, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:

«إذا حدثكم أهل الكتاب فلا تصدقوهم، ولا تكذبوهم، وقولوا : آمنا بالله، وكتبه، ورسله . فإن كان حقاً لم تكذبوهم وإن كان باطلاً لم تصدقوهم»

“যখন তোমাদের নিকট আহলে কিতাবগণ হাদীস বর্ণনা করবে, তখন তোমরা তা বিশ্বাস করবে না এবং মিথ্যাও বলবে না। আর তোমরা বলবে, আমরা আল্লাহ, তার কিতাবসমূহ এবং তার রাসূলদের প্রতি ঈমান স্থাপন করেছি। যদি (তাদের বর্ণনা করা বিষয়সমূহ) সত্য হয় তাহলে তোমরা তাকে মিথ্যা সাব্যস্ত করবে না। আর যদি বাতিল হয়, তাহলে তোমরা তা বিশ্বাস করবে না”। [আহমদ, হাদীস নং ১৭২২৫; আবু দাউদ, হাদীস নং ৩৬৪৪]

তবে তাদের থেকে কোনো কিছু বর্ণনা করা বৈধ। কারণ, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:

«وحدثوا عن بني إسرائيل، ولا حرج» .

“তোমরা বানী ইসরাঈলদের থেকে বর্ণনা কর তাতে কোনো অসুবিধা নেই”। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৩৪৬১]

কিতাবের উপর ঈমানের জন্য আরও জরুরী হচ্ছে:

তৃতীয়ত: কুরআনের শরী‘আত অনুযায়ী ফায়সালা প্রদান: কারণ, মহান আল্লাহ প্রবিত্র ও মহা গ্রন্থ আল-কুরআনকে পূর্বের কিতাবসমূহের উপর কর্তৃত্বদানকারী, ফায়সালাকারী, আমানতদার, তত্বাবধায়ক ও সাক্ষ্যদানকারী হিসেবে নাযিল করেছেন। যাবতীয় কল্যাণ কুরআনেই নিহিত। আর পূর্বের কিতাবসমূহের কতক বিধানকে রহিত করেছেন। ফলে কুরআনের বিধান ছাড়া অন্য কোনো বিধানের অনুসরণ করা বৈধ নয়। মহান আল্লাহ তাওরাত ও ইঞ্জীলের আলোচনা করার পর বলেন:

﴿وَأَنزَلۡنَآ إِلَيۡكَ ٱلۡكِتَٰبَ بِٱلۡحَقِّ مُصَدِّقٗا لِّمَا بَيۡنَ يَدَيۡهِ مِنَ ٱلۡكِتَٰبِ وَمُهَيۡمِنًا عَلَيۡهِۖ فَٱحۡكُم بَيۡنَهُم بِمَآ أَنزَلَ ٱللَّهُۖ وَلَا تَتَّبِعۡ أَهۡوَآءَهُمۡ عَمَّا جَآءَكَ مِنَ ٱلۡحَقِّۚ لِكُلّٖ جَعَلۡنَا مِنكُمۡ شِرۡعَةٗ وَمِنۡهَاجٗاۚ وَلَوۡ شَآءَ ٱللَّهُ لَجَعَلَكُمۡ أُمَّةٗ وَٰحِدَةٗ وَلَٰكِن لِّيَبۡلُوَكُمۡ فِي مَآ ءَاتَىٰكُمۡۖ فَٱسۡتَبِقُواْ ٱلۡخَيۡرَٰتِۚ إِلَى ٱللَّهِ مَرۡجِعُكُمۡ جَمِيعٗا فَيُنَبِّئُكُم بِمَا كُنتُمۡ فِيهِ تَخۡتَلِفُونَ ٤٨﴾ [ المائ‍دة : ٤٨ ]

“আর আমি তোমার প্রতি কিতাব নাযিল করেছি যথাযথভাবে, এর পূর্বের কিতাবের সত্যায়নকারী ও এর উপর তদারককারীরূপে। সুতরাং আল্লাহ যা নাযিল করেছেন, তুমি তার মাধ্যমে ফয়সালা কর এবং তোমার নিকট যে সত্য এসেছে, তা ত্যাগ করে তাদের কুপ্রবৃত্তির অনুসরণ করো না। তোমাদের প্রত্যেকের জন্য আমরা নির্ধারণ করেছি শরী‘আত ও স্পষ্ট পন্থা এবং আল্লাহ যদি চাইতেন, তবে তোমাদেরকে এক উম্মত বানাতেন; কিন্তু তিনি তোমাদেরকে যা দিয়েছেন, তাতে তোমাদেরকে পরীক্ষা করতে চান। সুতরাং তোমরা ভাল কাজে প্রতিযোগিতা কর। আল্লাহরই দিকে তোমাদের সবার প্রত্যাবর্তনস্থল। অতঃপর তিনি তোমাদেরকে অবহিত করবেন, যা নিয়ে তোমরা মতবিরোধ করতে”। [সূরা আল-মায়েদাহ, আয়াত: ৪৮]

﴿إِنَّآ أَنزَلۡنَآ إِلَيۡكَ ٱلۡكِتَٰبَ بِٱلۡحَقِّ لِتَحۡكُمَ بَيۡنَ ٱلنَّاسِ بِمَآ أَرَىٰكَ ٱللَّهُۚ وَلَا تَكُن لِّلۡخَآئِنِينَ خَصِيمٗا ١٠٥﴾ [ النساء : ١٠٥ ]

“নিশ্চয় আমি তোমার প্রতি যথাযথভাবে কিতাব নাযিল করেছি, যাতে তুমি মানুষের মধ্যে ফয়সালা কর সে অনুযায়ী যা আল্লাহ তোমাকে দেখিয়েছেন। আর তুমি খিয়ানতকারীদের পক্ষে বিতর্ককারী হয়ো না”। [সূরা আন-নিসা, আয়াত: ১০৫ ]

চতুর্থত: পরিপূর্ণ কিতাবের উপর ঈমান স্থাপন করা এবং কিতাবের কোনো অংশকে বাদ না দেওয়া: মহান আল্লাহ বলেন:

﴿أَفَتُؤۡمِنُونَ بِبَعۡضِ ٱلۡكِتَٰبِ وَتَكۡفُرُونَ بِبَعۡضٖۚ فَمَا جَزَآءُ مَن يَفۡعَلُ ذَٰلِكَ مِنكُمۡ إِلَّا خِزۡيٞ فِي ٱلۡحَيَوٰةِ ٱلدُّنۡيَاۖ وَيَوۡمَ ٱلۡقِيَٰمَةِ يُرَدُّونَ إِلَىٰٓ أَشَدِّ ٱلۡعَذَابِۗ وَمَا ٱللَّهُ بِغَٰفِلٍ عَمَّا تَعۡمَلُونَ ٨٥﴾ [ البقرة : ٨٥ ]

“তোমরা কি কিতাবের কিছু অংশে ঈমান রাখ আর কিছু অংশ অস্বীকার কর? সুতরাং তোমাদের মধ্যে যারা তা করে দুনিয়ার জীবনে লাঞ্ছনা ছাড়া তাদের কী প্রতিদান হতে পারে? আর কিয়ামতের দিনে তাদেরকে কঠিনতম আযাবে নিক্ষেপ করা হবে। আর তোমরা যা কর, আল্লাহ সে সম্পর্কে গাফিল নন”। [সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ৮৫]

﴿هَٰٓأَنتُمۡ أُوْلَآءِ تُحِبُّونَهُمۡ وَلَا يُحِبُّونَكُمۡ وَتُؤۡمِنُونَ بِٱلۡكِتَٰبِ كُلِّهِۦ ١١٩﴾ [ ال عمران : ١١٩ ]

“শোন, তোমরাই তো তাদেরকে ভালোবাস এবং তারা তোমাদেরকে ভালোবাসে না। অথচ তোমরা সব কিতাবের প্রতি ঈমান রাখ”। [সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ১১৯]

পঞ্চমত: কুরআনের কোনো অংশকে গোপন করা, তাতে কোনো প্রকার বিকৃতি করা, কুরআন বিষয়ে বিবাদ করা এবং আল্লাহর কিতাবের একটি অংশ দ্বারা অপর অংশকে অকার্যকর সাব্যস্ত করাকে হারাম বলে বিশ্বাস স্থাপন করা:

মহান আল্লাহ বলেন:

﴿وَإِذۡ أَخَذَ ٱللَّهُ مِيثَٰقَ ٱلَّذِينَ أُوتُواْ ٱلۡكِتَٰبَ لَتُبَيِّنُنَّهُۥ لِلنَّاسِ وَلَا تَكۡتُمُونَهُۥ فَنَبَذُوهُ وَرَآءَ ظُهُورِهِمۡ وَٱشۡتَرَوۡاْ بِهِۦ ثَمَنٗا قَلِيلٗاۖ فَبِئۡسَ مَا يَشۡتَرُونَ ١٨٧﴾ [ ال عمران : ١٨٧ ]

“আর স্মরণ কর, যখন আল্লাহ কিতাবপ্রাপ্তদের অঙ্গীকার নিয়েছিলেন যে, ‘অবশ্যই তোমরা তা মানুষের নিকট স্পষ্টভাবে বর্ণনা করবে এবং তা গোপন করবে না’। কিন্তু তারা তা তাদের পেছনে ফেলে দেয় এবং তা বিক্রি করে তুচ্ছ মূল্যে। অতএব তারা যা ক্রয় করে, তা কতইনা মন্দ!”। [সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ১৮৭]

আরও বলেন:

﴿إِنَّ ٱلَّذِينَ يَكۡتُمُونَ مَآ أَنزَلَ ٱللَّهُ مِنَ ٱلۡكِتَٰبِ وَيَشۡتَرُونَ بِهِۦ ثَمَنٗا قَلِيلًا أُوْلَٰٓئِكَ مَا يَأۡكُلُونَ فِي بُطُونِهِمۡ إِلَّا ٱلنَّارَ وَلَا يُكَلِّمُهُمُ ٱللَّهُ يَوۡمَ ٱلۡقِيَٰمَةِ وَلَا يُزَكِّيهِمۡ وَلَهُمۡ عَذَابٌ أَلِيمٌ ١٧٤ أُوْلَٰٓئِكَ ٱلَّذِينَ ٱشۡتَرَوُاْ ٱلضَّلَٰلَةَ بِٱلۡهُدَىٰ وَٱلۡعَذَابَ بِٱلۡمَغۡفِرَةِۚ فَمَآ أَصۡبَرَهُمۡ عَلَى ٱلنَّارِ ١٧٥ ذَٰلِكَ بِأَنَّ ٱللَّهَ نَزَّلَ ٱلۡكِتَٰبَ بِٱلۡحَقِّۗ وَإِنَّ ٱلَّذِينَ ٱخۡتَلَفُواْ فِي ٱلۡكِتَٰبِ لَفِي شِقَاقِۢ بَعِيدٖ ١٧٦﴾ [ البقرة : ١٧٤، ١٧٦ ]

“নিশ্চয় যারা গোপন করে যে কিতাব আল্লাহ নাযিল করেছেন এবং এর বিনিময়ে সামান্য মূল্য গ্রহণ করে, তারা শুধু আগুনই তাদের উদরে পুরে। আর আল্লাহ কিয়ামতের দিনে তাদের সাথে কথা বলবেন না, তাদেরকে পরিশুদ্ধ করবেন না। আর তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক আযাব। তারাই হিদায়াতের পরিবর্তে পথভ্রষ্টতা এবং মাগফিরাতের পরিবর্তে আযাব ক্রয় করেছে। জাহান্নামের আগুনের সামনে তারা কত বড় দুঃসাহসিক! তা এ কারণে যে, আল্লাহ যথার্থরূপে কিতাব নাযিল করেছেন। আর নিশ্চয় যারা কিতাবে মতবিরোধ করেছে, তারা অবশ্যই সুদূর মতানৈক্যে রয়েছে”। [সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ১৭৪, ১৭৬]

আরও বলেন:

﴿فَوَيۡلٞ لِّلَّذِينَ يَكۡتُبُونَ ٱلۡكِتَٰبَ بِأَيۡدِيهِمۡ ثُمَّ يَقُولُونَ هَٰذَا مِنۡ عِندِ ٱللَّهِ لِيَشۡتَرُواْ بِهِۦ ثَمَنٗا قَلِيلٗاۖ فَوَيۡلٞ لَّهُم مِّمَّا كَتَبَتۡ أَيۡدِيهِمۡ وَوَيۡلٞ لَّهُم مِّمَّا يَكۡسِبُونَ ٧٩﴾ [ البقرة : ٧٩ ]

“সুতরাং ধ্বংস তাদের জন্য যারা নিজ হাতে কিতাব লিখে। তারপর বলে, ‘এটি আল্লাহর পক্ষ থেকে’, যাতে তা তুচ্ছ মূল্যে বিক্রি করতে পারে। সুতরাং তাদের হাত যা লিখেছে তার পরিণামে তাদের জন্য ধ্বংস, আর তারা যা উপার্জন করেছে তার কারণেও তাদের জন্য ধ্বংস”। [সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ৭৯]

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:

«لا تضربوا كتاب الله بعضه ببعض، فإنه ما ضل قوم قط إلا أوتوا الجدل» .

“তোমরা আল্লাহর কিতাবের কিছু অংশকে কিছু অংশ দ্বারা আঘাত করবে না। যখনই কোনো জাতি বিবাদে লিপ্ত হয়েছে তখনই তারা পথভ্রষ্ট হয়েছে”। [তাফসীরে তাবারী]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন