hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

কুরআন ও হাদীসের আলোকে সহজ আকীদা

লেখকঃ ড. আহমাদ ইবন আব্দুর রহমান আল-কাযী

২০
সিফাতের বিষয়ে গোমরাহ দলগুলোর আলোচনা:
একই কিবলার অধিবাসী অনেক মুসলিম জামা‘আত আল্লাহর নাম ও সিফাতসমূহের অধ্যায়ে পথভ্রষ্ট হয়েছেন। তারা হলো:

এক- আহলুত-তামসীল (মুমাসসিলা সম্প্রদায়) বা সাদৃশ্যবাদী: যারা সিফাত সাব্যস্ত করার ক্ষেত্রে বেশি বাড়াবাড়ি করার ফলে সাদৃশ্যবাদে পতিত হয়েছে। তাদের সংশয় হচ্ছে এই যে, তারা বলেন: “আমরা যা বলি এগুলোই হলো কুরআন ও হাদীসের বাণীর মর্মার্থ। কারণ, মহান আল্লাহ মানুষকে এমন কথা দ্বারা সম্বোধন করেন যেগুলো তার সৃষ্টি জগতের বা মাখলুকাতের মধ্যে সচরাচর বিদ্যমান।” (অর্থাৎ তারা বলেন, আমরা আল্লাহর গুণাগুণ সৃষ্টিকুলের গুণাগুণের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ মনে করি)

এদের যুক্তি ও দাবির উত্তর একাধিক:

প্রথমত: মহান আল্লাহ নিজেই অকাট্য ও সু-স্পষ্ট আয়াত দ্বারা তার নিজেকে কোনো প্রকার দৃষ্টান্ত, সমকক্ষ ও শরীক হওয়া থেকে বিমুক্ত ঘোষণা করেছেন। মহান আল্লাহ বলেন:

﴿لَيۡسَ كَمِثۡلِهِۦ شَيۡءٞۖ وَهُوَ ٱلسَّمِيعُ ٱلۡبَصِيرُ ١١﴾ [ الشورى : ١١ ]

“তাঁর মতো কিছু নেই আর তিনি সর্বশ্রোতা ও সর্বদ্রষ্টা”। [সূরা আশ-শূরা, আয়াত: ১১]

﴿فَلَا تَجۡعَلُواْ لِلَّهِ أَندَادٗا وَأَنتُمۡ تَعۡلَمُونَ ٢٢﴾ [ البقرة : ٢٢ ]

“সুতরাং তোমরা জেনে-বুঝে আল্লাহর জন্য সমকক্ষ নির্ধারণ করো না”। [সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ২২]

﴿وَلَمۡ يَكُن لَّهُۥ كُفُوًا أَحَدُۢ ٤﴾ [ الاخلاص : ٤ ]

“আর তাঁর কোন সমকক্ষও নেই”। [সূরা আল-ইখলাস, আয়াত: ৪]

আর আল্লাহর কথার মধ্যে পরস্পর বিরোধিতা কখনোই সম্ভব নয়। (সুতরাং আল্লাহর জন্য সাদৃশ্য সাব্যস্ত করা যাবে না)।

দ্বিতীয়ত: একজন স্বয়ং-সম্পন্ন সত্তা, ক্ষমতাধর স্রষ্টা ও উপাস্য অপর জন দুর্বল অসম্পন্ন, অক্ষম সৃষ্টি ও উপাসনাকারী এবং সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য উভয়ে এক রকম হওয়া কোনো সুস্থ জ্ঞান ও বিবেক কখনোই মেনে নিতে পারে না। যেমনি-ভাবে তার সত্তা অন্য সত্তাসমূহের অনুরূপ হয় না তেমনিভাবে তার সিফাতসমূহ অন্যান্য সিফাতের মত হয় না।

তৃতীয়ত: মূল অর্থের দিক থেকে মহান আল্লাহ বান্দাগণকে তারা যা বুঝতে সক্ষম তা দ্বারাই সম্বোধন করেছেন। মাখলুক ও খালেকের গুণাগুণের মাঝে সামগ্রিক অর্থে মিল হলেও উভয়ের হাকীকত ও পদ্ধতি এক হওয়াকে বাধ্য করে না। একাধিক মাখলুকের নাম এক হওয়া একজন অপরজনের মতো হওয়াকে সাব্যস্ত করে না। যেমন, কান, চোখ ও কুদরত শব্দগুলো। সুতরাং খালেক ও মাখলুকের ক্ষেত্রে তা আরও বেশি যুক্তিযুক্ত। [ফলে খালেক যিনি স্রষ্টা তার শোনা বা দেখা একজন মাখলুকের শোনা বা দেখা কখনোই এক হবে না। উভয়ের দেখা বা শোনার মধ্যে অবশ্যই পার্থক্য রয়েছে। -অনুবাদক]

দুই- আহলুত তা‘তীল (মু‘আত্তিলাহ সম্প্রদায়) বা নিষ্ক্রিয়বাদী: যারা আল্লাহর গুণাগুণ অস্বীকার করার বিষয়ে অতিরিক্ত বাড়াবাড়ি করার ফলে শূণ্যবাদে বা নিষ্ক্রিয়বাদে নিপতিত হয়েছে। তাদের প্রশ্ন হলো, কোনো সিফাতকে প্রমাণ করা দ্বারা সাদৃশ্য হওয়া বাধ্যতামূলক। কারণ, এ ধরণের সিফাত বা গুণাগুণ এমন, যেগুলো দ্বারা একজন মাখলুকও গুণান্বিত হয়। তাই খালেকের মধ্যে এসব গুণ থাকতে পারে না। এগুলো থেকে খালেককে বিমুক্ত ঘোষণা করা সুনির্দিষ্ট। তারা কোনো গুণে গুণান্বিত হওয়া ছাড়াই আল্লাহর অস্তিত্ব থাকাকে সাব্যস্ত করার চেষ্টা করে। কারামিতা বাতেনী সম্প্রদায়ের লোকেরা তাদের এ মতবাদের কট্টরপন্থী দল। যারা আল্লাহর জন্য দু’ বিপরীতমুখী সিফাত বা গুণাগুণ সাব্যস্ত করতেও নারাজ। (তারা আল্লাহর অস্তিত্ব আছে বা অস্তিত্ব নাই এর কোনোটিই মেনে নিতে চায় না।) তারপরের স্থান হলো, জাহমিয়্যাহ সম্প্রদায়ের, যারা আল্লাহর নাম ও সিফাত উভয়কে অস্বীকার করে। তারপর রয়েছে মু‘তাযিলা সম্প্রদায়; যারা আল্লাহর নামসমূহকে স্বীকার করে, কিন্তু তারা সেসব নামের অন্তর্গত সিফাত বা গুণকে অস্বীকার করে।

এদের যুক্তি ও দাবির উত্তর একাধিক:

প্রথমত: প্রকাশ্য, সু-স্পষ্ট ও অকাট্য আয়াতসমূহে মহান আল্লাহ তার নিজের জন্য সিফাত সাব্যস্ত করেছেন এবং তিনি তা সাদৃশ্যতাকে অস্বীকার করার সাথে একত্র করে সিফাতের আলোচনা করেছেন। যেমন, মহান আল্লাহ বলেন:

﴿لَيۡسَ كَمِثۡلِهِۦ شَيۡءٞۖ وَهُوَ ٱلسَّمِيعُ ٱلۡبَصِيرُ ١١﴾ [ الشورى : ١١ ]

“তাঁর মতো কিছু নেই, আর তিনি সর্বশ্রোতা ও সর্বদ্রষ্টা”। [সূরা আশ-শূরা, আয়াত: ১১]

আর আল্লাহ তা‘আলার কথা একটি অপরটির বিপরীত বা পরস্পরবিরোধী হওয়া অসম্ভব। (অর্থাৎ একই আয়াতে তিনি তাঁর সাদৃশ্য অস্বীকার করার সাথে সাথে তাঁর নিজের জন্য গুণাগুণ সাব্যস্ত করেছেন। সুতরাং সাদৃশ্য নিষেধ করা হবে কিন্তু গুণ সাব্যস্ত করা হবে। যদি তা না করা হয় তাহলে আল্লাহর আয়াতের অর্থ করা কঠিন।)

দ্বিতীয়ত: কোনো বস্তু কোনো না কোনো গুণে গুণান্বিত হওয়া ছাড়া শুধু তার অস্তিত্ব প্রমাণ করা কখনো সম্ভব নয়। বাস্তবে এ ধরণের কোনো কিছু পাওয়া যায় না, শুধুমাত্র মনে মনে ভাবা যায়। ফলে তাদের কথার পরিণতি হলো, স্রষ্টাকে অস্বীকার করা।

তৃতীয়ত: সামগ্রিক ও ব্যাপক শব্দসমূহ দ্বারা বর্ণিত গুণ কোনো একটি নির্দিষ্ট বস্তুর মধ্যে পাওয়া এ কথাকে বাধ্য করে না যে ঐ গুণটি হুবহু অপর একটি নির্ধারিত বস্তুর মধ্যে একই রকম হবে, বরং এ দুটি বস্তুর প্রতিটি ঐ ব্যাপক গুণটির একক গুণ হিসেবে বিবেচিত হবে। কারণ, গুণকে যখন কোনো বস্তুর সাথে সম্পৃক্ত করা হয় বা কোনো বস্তুর প্রতি সম্পর্কযুক্ত করা হয়, তখন বাস্তবে তা ব্যাপকতা হারিয়ে ফেলে এবং অন্যের সাথে সম্পৃক্ত হওয়ার বৈশিষ্ট্য থেকে দূরে সরে যায়।

তিন- আহলুত তা‘ওয়ীল (তাবীলপন্থী) বা অপব্যাখ্যাকারী: যারা এ বিশ্বাস করে যে, কুরআন ও হাদীসের প্রমাণ বা ভাষ্যসমূহ আল্লাহর জন্য সত্যিকার অর্থে বা বাস্তবে কোনো গুণ রয়েছে এমন কোনো প্রমাণ বহন করে না। ফলে তারা কুরআন ও হাদীসের প্রমাণ সমূহের ভিন্ন কোনো অর্থ তালাশ করতে থাকে যার উপর প্রমাণসমূহকে প্রয়োগ করা যায়। তখন তারা কোনো প্রকার বিশুদ্ধ দলীল (যদ্ধারা বাহ্যিক অর্থ থেকে অন্য অর্থের দিক ফিরিয়ে নেওয়ার সুযোগ থাকে) ছাড়াই প্রমাণসমূহকে ভিন্ন অর্থের উপর প্রয়োগ করে। তারা তাদের এ ধরণের বিকৃতিকে প্রমাণসমূহের ব্যাখ্যা বলে আখ্যায়িত করে থাকে।

এদের যুক্তি ও দাবির উত্তরও একাধিক:

প্রথমত: মহান আল্লাহ তার মাখলুক থেকে তার নিজের সম্পর্কে অধিক জ্ঞাত, অধিক সত্যবাদী এবং সুন্দর বাণীর অধিকারী। আর আল্লাহর রাসূল তার রব সম্পর্কে সর্বাধিক জ্ঞাত, সু-স্পষ্টভাষী, সর্বোচ্চ সত্যবাদী এবং উম্মতের জন্য সবচেয়ে বেশি কল্যাণকামী। সুতরাং, আল্লাহ ও তার রাসূলের উপর অপর ব্যক্তি কিভাবে বেশি বুঝতে সক্ষম হয় এবং তাদের বাণীকে গোমরাহ ও পথভ্রষ্ট হওয়ার অবলম্বন হিসেবে গ্রহণ করে।

দ্বিতীয়ত: যে কোনো কথার ক্ষেত্রে মূলনীতি হলো, কথাকে তার বাস্তব অর্থের উপর প্রয়োগ করা। বাহ্যিক অর্থ থেকে রূপক অর্থ গ্রহণ করতে বাধ্য করে, এমন কোনো বিশুদ্ধ কোনো দলীল না পাওয়া পর্যন্ত কোনো কথাকে তার বাহ্যিক অর্থ থেকে রূপক অর্থের দিকে নিয়ে যাওয়া বিকৃত করারই নামান্তর; যা কোনোক্রমেই বৈধ নয়। আর আল্লাহর গুণবাচক এসব প্রমাণকে তার বাহ্যিক অর্থ থেকে অন্য অর্থে নিতে বাধ্য করার মত কোনো দলীল নেই। সুতরাং তা করা যাবে না।

তৃতীয়ত: আল্লাহর রাসূল আল্লাহর পক্ষ থেকে তার উপর যা কিছু নাযিল হয়েছে তা তিনি মানুষের জন্য বর্ণনা করেছেন এবং তাদের কাছে তিনি পুরোপুরি পৌঁছে দিয়েছেন। এ মহান অধ্যায়ের কোনো মনগড়া ও বানানো অর্থ যা এ সব বিকৃতকারীরা দাবী করছে, তা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বর্ণনা না করে ছেড়ে যাবেন তা কখনোই সম্ভব নয়।

চার- আহলুত তাজহীল (জাহেল পন্থী) বা মূর্খতা অবলম্বনকারী: যারা বিশ্বাস করে যে, মহান আল্লাহ তার নিজের সম্পর্কে এবং তার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার সম্পর্কে যে সংবাদ দিয়েছেন সেসব কিছুর অর্থ অজ্ঞাত। একমাত্র আল্লাহ ছাড়া কেউ জানে না এবং কারো জন্য তা জানার কোনো উপায় নেই। তারা তাদের নিজেদের মুফাওয়াযাহ( مفوضة ) বলে দাবী করে এবং তাদের পথ হলো, তাফবীয( التفويض ) সমর্পণ করা।

এদের যুক্তি ও দাবির উত্তর একাধিক:

প্রথমত: আল্লাহ সম্পর্কে জানার অধ্যায় যা দীনের অধ্যায়সমূহের সবচেয়ে মহান ও গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়, তা আবদ্ধ করে রাখা বা তা জানার পথকে রুদ্ধ করে রাখা কোনো জ্ঞান বা প্রমাণ দ্বারা তা জানা যাবে না তা কখনোই সম্ভব নয়।

দ্বিতীয়ত: মহান আল্লাহ সু-স্পষ্ট আরবী ভাষায় কুরআন নাযিল করেছেন এবং স্বীয় বান্দাদের তা বুঝতে এবং গবেষণা করতে নির্দেশ দিয়েছেন। কুরআনের কোন অংশ বাদ দেন নি। এর দ্বারা বুঝা যায় যে, কুরআনের অর্থ বুঝা সম্ভব। কেবল ধরণ ও প্রকৃতির জ্ঞান হলো অদৃশ্য ও গাইবী বিষয়সমূহের অন্তর্ভুক্ত, যার জ্ঞান শুধু আল্লাহর কাছে সংরক্ষিত।

তৃতীয়ত: এ মতবাদ গ্রহণ করার অর্থ হচ্ছে, এ উম্মতের পূর্বসূরী যারা প্রথম যুগে অতিবাহিত হয়েছেন তাদেরকে নিরক্ষর, অজ্ঞ ও মূর্খ বলার চেষ্টা করা এবং তাদের সম্পর্কে এ কথা বলা যে, তারা কেবল পড়া ছাড়া আল্লাহর কিতাব সম্পর্কে কিছুই জানতো না। আর এটা বলা যে, সিফাত সম্পর্কীয় আয়াতসমূহ কেবল চিত্র ও অক্ষরের মতো, যার কোনো গ্রহণ যোগ্য অর্থ নেই। (নাউযুবিল্লাহ)

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন