hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

কুরআন ও হাদীসের আলোকে সহজ আকীদা

লেখকঃ ড. আহমাদ ইবন আব্দুর রহমান আল-কাযী

২৪
রাসূলদের প্রতি ঈমান স্থাপন করার অন্তর্ভুক্ত বিষয়সমূহ:
প্রথমত: এ কথা বিশ্বাস স্থাপন করা যে, কাউকে রাসূল বানানো এটি আল্লাহর পক্ষ থেকেই হয়ে থাকে। এ মহৎ কর্মটি শুধুমাত্র তাঁর ইচ্ছা ও প্রজ্ঞা অনুযায়ী হয়। তিনি যাকে ইচ্ছা তা দান করেন। মহান আল্লাহ বলেন:

﴿وَإِذَا جَآءَتۡهُمۡ ءَايَةٞ قَالُواْ لَن نُّؤۡمِنَ حَتَّىٰ نُؤۡتَىٰ مِثۡلَ مَآ أُوتِيَ رُسُلُ ٱللَّهِۘ ٱللَّهُ أَعۡلَمُ حَيۡثُ يَجۡعَلُ رِسَالَتَهُۥۗ ١٢٤﴾ [ الانعام : ١٢٤ ]

“আর যখন তাদের নিকট কোনো নিদর্শন আসে, তারা বলে, আমরা কখনই ঈমান আনব না, যতক্ষণ না আল্লাহর রাসূলদেরকে যা দেওয়া হয়েছে আমাদেরকে তার অনুরূপ দেওয়া হয়। আল্লাহ ভালো জানেন, তিনি কোথায় তাঁর রিসালাত অর্পণ করবেন”। [সূরা আল-আন‘আম, আয়াত: ১২৪]

মহান আল্লাহ বলেন:

﴿وَقَالُواْ لَوۡلَا نُزِّلَ هَٰذَا ٱلۡقُرۡءَانُ عَلَىٰ رَجُلٖ مِّنَ ٱلۡقَرۡيَتَيۡنِ عَظِيمٍ ٣١ أَهُمۡ يَقۡسِمُونَ رَحۡمَتَ رَبِّكَۚ نَحۡنُ قَسَمۡنَا بَيۡنَهُم مَّعِيشَتَهُمۡ فِي ٱلۡحَيَوٰةِ ٱلدُّنۡيَاۚ وَرَفَعۡنَا بَعۡضَهُمۡ فَوۡقَ بَعۡضٖ دَرَجَٰتٖ لِّيَتَّخِذَ بَعۡضُهُم بَعۡضٗا سُخۡرِيّٗاۗ وَرَحۡمَتُ رَبِّكَ خَيۡرٞ مِّمَّا يَجۡمَعُونَ ٣٢﴾ [ الزخرف : ٣١، ٣٢ ]

“আর তারা বলল, ‘এ কুরআন কেন দুই জনপদের মধ্যকার কোনো মহান ব্যক্তির উপর নাযিল করা হলো না’?। তারা কি তোমার রবের রহমত ভাগ-বণ্টন করে? আমরাই দুনিয়ার জীবনে তাদের মধ্যে তাদের জীবিকা বণ্টন করে দেই এবং তাদের একজনকে অপর জনের উপর মর্যাদায় উন্নীত করি যাতে একে অপরকে অধিনস্থ হিসেবে গ্রহণ করতে পারে। আর তারা যা সঞ্চয় করে তোমার রবের রহমত তা অপেক্ষা উৎকৃষ্ট”। [সূরা আয-যুখরুফ, আয়াত: ৩১, ৩২]

সুতরাং রিসালত ও নবুওয়ত চেষ্টা সাধনা ও মুজাহাদা করে পাওয়া যায় না। যেমনটি কতক যিনদীক সূফীরা বিশ্বাস করে থাকে, বরং নবুওয়াত ও রিসালাত শুধুমাত্র আল্লাহর অনুগ্রহ ও নির্বাচন। আল্লাহ তার সম্মানিত মাখলুক থেকে যাকে চান তাকে এ দায়িত্বের জন্য নির্বাচন করেন।

দ্বিতীয়ত: সমস্ত নাবী ও রাসূলদের উপর ঈমান আনতে হবে। যাদের নাম জানা আছে তাদের প্রতি নির্ধারিতভাবে তাদের নাম অনুযায়ী ঈমান আনতে হবে। আর যাদের নাম জানা নেই তাদের প্রতি সামগ্রিকভাবে ঈমান আনতে হবে। নাবীদের থেকে যাদের নাম আমরা জানতের পেরেছি তা ইব্রাহিম আলাইহিস সালামের আলোচনার পর একসাথে মহান আল্লাহ বর্ণনা করেছেন। মহান আল্লাহ বলেন:

﴿وَوَهَبۡنَا لَهُۥٓ إِسۡحَٰقَ وَيَعۡقُوبَۚ كُلًّا هَدَيۡنَاۚ وَنُوحًا هَدَيۡنَا مِن قَبۡلُۖ وَمِن ذُرِّيَّتِهِۦ دَاوُۥدَ وَسُلَيۡمَٰنَ وَأَيُّوبَ وَيُوسُفَ وَمُوسَىٰ وَهَٰرُونَۚ وَكَذَٰلِكَ نَجۡزِي ٱلۡمُحۡسِنِينَ ٨٤ وَزَكَرِيَّا وَيَحۡيَىٰ وَعِيسَىٰ وَإِلۡيَاسَۖ كُلّٞ مِّنَ ٱلصَّٰلِحِينَ ٨٥ وَإِسۡمَٰعِيلَ وَٱلۡيَسَعَ وَيُونُسَ وَلُوطٗاۚ وَكُلّٗا فَضَّلۡنَا عَلَى ٱلۡعَٰلَمِينَ ٨٦﴾ [ الانعام : ٨٤، ٨٦ ]

“আর আমি ইব্রাহিমকে দান করেছি ইসহাক ও ইয়াকূবকে। প্রত্যেককে আমি হিদায়াত দিয়েছি এবং নূহকে পূর্বে হিদায়াত দিয়েছি। আর তার সন্তানদের মধ্য থেকে দাঊদ, সুলাইমান, আইয়ুব, ইউসুফ, মূসা ও হারূনকে হিদায়াত দিয়েছি। আর আমি এভাবেই সৎকর্মশীলদেরকে প্রতিদান প্রদান করি। আর যাকারিয়্যা, ইয়াহইয়া, ঈসা ও ইলয়াসকে। প্রত্যেকেই নেককারদের অন্তর্ভুক্ত। আর ইসমাঈল, আল ইয়াসা‘, ইউনুস ও লূতকে। প্রত্যেককে আমি সৃষ্টিকুলের উপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছি”। [সূরা আল-আন‘আম, আয়াত: ৮৪, ৮৬]

মহান আল্লাহ বলেন:

﴿وَرُسُلٗا قَدۡ قَصَصۡنَٰهُمۡ عَلَيۡكَ مِن قَبۡلُ وَرُسُلٗا لَّمۡ نَقۡصُصۡهُمۡ عَلَيۡكَۚ﴾ [ النساء : ١٦٤ ]

“আর অনেক রাসূল, যাদের বর্ণনা তোমাকে পূর্বে দিয়েছি এবং অনেক রাসূল, যাদের বর্ণনা তোমাকে প্রদান করি নি”। [সূরা আন-নিসা, আয়াত: ১৬৪]

সুতরাং ওয়াজিব হলো, সমস্ত নাবীদের প্রতি ঈমান স্থাপন করা। কারণ, তাদের সবার দাওয়াত এক ও অভিন্ন। আল্লাহ তা‘লা বলেন:

﴿۞شَرَعَ لَكُم مِّنَ ٱلدِّينِ مَا وَصَّىٰ بِهِۦ نُوحٗا وَٱلَّذِيٓ أَوۡحَيۡنَآ إِلَيۡكَ وَمَا وَصَّيۡنَا بِهِۦٓ إِبۡرَٰهِيمَ وَمُوسَىٰ وَعِيسَىٰٓۖ أَنۡ أَقِيمُواْ ٱلدِّينَ وَلَا تَتَفَرَّقُواْ فِيهِۚ كَبُرَ عَلَى ٱلۡمُشۡرِكِينَ مَا تَدۡعُوهُمۡ إِلَيۡهِۚ ٱللَّهُ يَجۡتَبِيٓ إِلَيۡهِ مَن يَشَآءُ وَيَهۡدِيٓ إِلَيۡهِ مَن يُنِيبُ ١٣﴾ [ الشورى : ١٣ ]

“তিনি তোমাদের জন্য দীন বিধিবদ্ধ করে দিয়েছেন; যে বিষয়ে তিনি নূহকে নির্দেশ দিয়েছিলেন, আর আমি তোমার কাছে যে অহী পাঠিয়েছি এবং ইবরাহীম, মূসা ও ঈসাকে যে নির্দেশ দিয়েছিলাম তা হলো, তোমরা দীন কায়েম করবে এবং এতে বিচ্ছিন্ন হবে না। তুমি মুশরিকদেরকে যেদিকে আহ্বান করছ তা তাদের কাছে কঠিন মনে হয়; আল্লাহ যাকে চান তার দিকে নিয়ে আসেন। আর যে তাঁর অভিমুখী হয় তাকে তিনি হিদায়াত দান করেন”। [সূরা আশ-শূরা, আয়াত: ১৩]

কোনো একজন নাবীকে অস্বীকার করার অর্থ সব নাবীকেই অস্বীকাদর করা। মহান আল্লাহ বলেন:

﴿كَذَّبَتۡ قَوۡمُ نُوحٍ ٱلۡمُرۡسَلِينَ ١٠٥﴾ [ الشعراء : ١٠٥ ]

“নূহ-এর কওম রাসূলদেরকে অস্বীকার করেছিল”। [সূরা আশ-শু‘আরা, আয়াত: ১০৫] অথচ তিনিই হলেন সর্বপ্রথম রাসূল। সুতরাং আল্লাহর রাসূলদের মধ্যে পার্থক্য করা এবং কারো প্রতি ঈমান স্থাপন করা আবার কাউকে অস্বীকার করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। যে এমন করবে সে অবশ্যই কাফের হয়ে যাবে। মহান আল্লাহ বলেন:

﴿إِنَّ ٱلَّذِينَ يَكۡفُرُونَ بِٱللَّهِ وَرُسُلِهِۦ وَيُرِيدُونَ أَن يُفَرِّقُواْ بَيۡنَ ٱللَّهِ وَرُسُلِهِۦ وَيَقُولُونَ نُؤۡمِنُ بِبَعۡضٖ وَنَكۡفُرُ بِبَعۡضٖ وَيُرِيدُونَ أَن يَتَّخِذُواْ بَيۡنَ ذَٰلِكَ سَبِيلًا ١٥٠ أُوْلَٰٓئِكَ هُمُ ٱلۡكَٰفِرُونَ حَقّٗاۚ وَأَعۡتَدۡنَا لِلۡكَٰفِرِينَ عَذَابٗا مُّهِينٗا ١٥١ وَٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ بِٱللَّهِ وَرُسُلِهِۦ وَلَمۡ يُفَرِّقُواْ بَيۡنَ أَحَدٖ مِّنۡهُمۡ أُوْلَٰٓئِكَ سَوۡفَ يُؤۡتِيهِمۡ أُجُورَهُمۡۚ وَكَانَ ٱللَّهُ غَفُورٗا رَّحِيمٗا ١٥٢﴾ [ النساء : ١٥٠، ١٥٢ ]

“নিশ্চয় যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলগণের সাথে কুফুরী করে এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসূলগণের মধ্যে পার্থক্য করতে চায় এবং বলে, ‘আমরা কতককে বিশ্বাস করি আর কতকের সাথে কুফুরী করি’ এবং তারা এর মাঝামাঝি একটি পথ গ্রহণ করতে চায়, তারাই প্রকৃত কাফির এবং আমি কাফিরদের জন্য প্রস্তুত করেছি অপমানকর আযাব। আর যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলগণের প্রতি ঈমান এনেছে এবং তাদের কারো মধ্যে পার্থক্য করে নি, তাদেরকে অচিরেই তিনি তাদের প্রতিদান দিবেন এবং আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু”। [সূরা আন-নিসা, আয়াত: ১৫০, ১৫২]

তৃতীয়ত: নাবী ও রাসূলদের বিশ্বাস স্থাপন করা এবং আল্লাহর পক্ষ থেকে তারা উম্মতদের যে সংবাদ দিয়েছেন তা কবুল করা। মহান আল্লাহ বলেন:

﴿يَٰٓأَيُّهَا ٱلنَّاسُ قَدۡ جَآءَكُمُ ٱلرَّسُولُ بِٱلۡحَقِّ مِن رَّبِّكُمۡ فَ‍َٔامِنُواْ خَيۡرٗا لَّكُمۡۚ وَإِن تَكۡفُرُواْ فَإِنَّ لِلَّهِ مَا فِي ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضِۚ وَكَانَ ٱللَّهُ عَلِيمًا حَكِيمٗا ١٧٠﴾ [ النساء : ١٧٠ ]

“হে মানুষ, অবশ্যই তোমাদের নিকট রাসূল এসেছে, তোমাদের রবের পক্ষ থেকে সত্য ধর্ম ইসলাম নিয়ে। সুতরাং তোমরা ঈমান আন, তা তোমাদের জন্য উত্তম হবে। আর যদি কুফুরী কর, তবে নিশ্চয় আসমানসমূহ ও জমিনে যা রয়েছে, তা আল্লাহর জন্যই এবং আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়”। [সূরা আন-নিসা, আয়াত: ১৭০]

মহান আল্লাহ বলেন:

﴿وَٱلَّذِي جَآءَ بِٱلصِّدۡقِ وَصَدَّقَ بِهِۦٓ أُوْلَٰٓئِكَ هُمُ ٱلۡمُتَّقُونَ ٣٣﴾ [ الزمر : ٣٣ ]

“আর যে সত্য নিয়ে এসেছে এবং যে তা সত্য বলে মেনে নিয়েছে, তারাই হলো শির্ত বর্জনকারী”। [সূরা আয-যুমার, আয়াত: ৩৩]

মহান আল্লাহ বলেন:

﴿وَٱلنَّجۡمِ إِذَا هَوَىٰ ١ مَا ضَلَّ صَاحِبُكُمۡ وَمَا غَوَىٰ ٢ وَمَا يَنطِقُ عَنِ ٱلۡهَوَىٰٓ ٣ إِنۡ هُوَ إِلَّا وَحۡيٞ يُوحَىٰ ٤ عَلَّمَهُۥ شَدِيدُ ٱلۡقُوَىٰ ٥﴾ [ النجم : ١، ٥ ]

“কসম নক্ষত্রের, যখন তা অস্ত যায়। তোমাদের সঙ্গী পথভ্রষ্ট হয় নি এবং বিপথগামীও হয় নি। আর সে মনগড়া কথা বলে না। তাতো কেবল অহী, যা তার প্রতি অহীরূপে প্রেরণ করা হয়। তাকে শিক্ষা দিয়েছে প্রবল শক্তিধর”। [সূরা আন-নাজম, আয়াত: ১, ৫]

আগেকার নাবীদের যে সব সংবাদ মহান আল্লাহ তার কিতাবে তুলে ধরেছেন এবং আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে সহীহ সনদে আমরা জানতে পেরেছি, তার প্রতি ঈমান স্থাপন করা ও বিশ্বাস স্থাপন করা আমাদের উপর ওয়াজিব। এ ছাড়া ইসরাঈলী বর্ণনায় তাদের বিষয়ে যে সব কথা-বার্তা, কিচ্ছা-কাহিনী বর্ণিত রয়েছে তার উপর ঐ বিধানই প্রয়োগ হবে যার বিস্তারিত আলোচনা আমি কিতাবসমূহের প্রতি ঈমান অধ্যায়ে করেছি। আর নাবীদের বিষয়ে যে সব কথা আমাদের নাবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত হয়ে থাকে, তার সহীহ হওয়া বা না হওয়ার ক্ষেত্রে হাদীস বিশারদের মূলনীতি বাস্তবায়িত হবে। সহীহ সনদে প্রমাণিত বিষয়গুলো কবুল করা ও তার প্রতি ঈমান স্থাপন করা ওয়াজিব।

চতুর্থত: নাবী ও রাসূলদের আনুগত্য করা, তাদের অনুসরণ করা এবং তাদেরকে বিচারক মানা:

মহান আল্লাহ বলেন:

﴿وَمَآ أَرۡسَلۡنَا مِن رَّسُولٍ إِلَّا لِيُطَاعَ بِإِذۡنِ ٱللَّهِۚ ٦٤﴾ [ النساء : ٦٤ ]

“আর আমি যে কোনো রাসূল প্রেরণ করেছি তা কেবল এ জন্য, যেন আল্লাহর অনুমতিক্রমে তাদের আনুগত্য করা হয়”। [সূরা আন-নিসা, আয়াত: ৬৪]

প্রত্যেক উম্মতের জন্য ওয়াজিব হলো, তাদের নিকট যে নাবীকে প্রেরণ করা হয়েছে, তার আনুগত্য-অনুসরণ-অনুকরণ করা। যেহেতু দুনিয়াতে নাবীদের শেষ নাবী মুহম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, তার আগমনের পর আর কোনো নাবী আসবে না এবং তার শরী‘আত পূর্বের সমস্ত নাবীদের শরী‘আতকে রহিত করে দিয়েছে, তাই যারা তার সংবাদ পাবে তাদের উপর তার প্রতি ঈমান স্থাপন করা ও তার আনুগত্য করা ওয়াজিব হওয়া নির্ধারিত। মহান আল্লাহ বলেন:

﴿ٱلَّذِينَ يَتَّبِعُونَ ٱلرَّسُولَ ٱلنَّبِيَّ ٱلۡأُمِّيَّ ٱلَّذِي يَجِدُونَهُۥ مَكۡتُوبًا عِندَهُمۡ فِي ٱلتَّوۡرَىٰةِ وَٱلۡإِنجِيلِ يَأۡمُرُهُم بِٱلۡمَعۡرُوفِ وَيَنۡهَىٰهُمۡ عَنِ ٱلۡمُنكَرِ وَيُحِلُّ لَهُمُ ٱلطَّيِّبَٰتِ وَيُحَرِّمُ عَلَيۡهِمُ ٱلۡخَبَٰٓئِثَ وَيَضَعُ عَنۡهُمۡ إِصۡرَهُمۡ وَٱلۡأَغۡلَٰلَ ٱلَّتِي كَانَتۡ عَلَيۡهِمۡۚ فَٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ بِهِۦ وَعَزَّرُوهُ وَنَصَرُوهُ وَٱتَّبَعُواْ ٱلنُّورَ ٱلَّذِيٓ أُنزِلَ مَعَهُۥٓ أُوْلَٰٓئِكَ هُمُ ٱلۡمُفۡلِحُونَ ١٥٧ ﴾ [ الاعراف : ١٥٦، ١٥٧ ]

“যারা অনুসরণ করে রাসূলের, যে উম্মী নাবী; যার গুণাবলী তারা নিজদের কাছে তাওরাত ও ইঞ্জিলে লিখিত পায়, যে তাদেরকে সৎ কাজের আদেশ দেয় ও বারণ করে অসৎ কাজ থেকে এবং তাদের জন্য পবিত্র বস্তু হালাল করে আর অপবিত্র বস্তু হারাম করে। আর তাদের থেকে বোঝা ও শৃঙ্খল - যা তাদের উপরে ছিল- অপসারণ করে। সুতরাং যারা তার প্রতি ঈমান আনে, তাকে সম্মান করে, তাকে সাহায্য করে এবং তার সাথে যে পবিত্র কুরআন নাযিল করা হয়েছে তা অনুসরণ করে তারাই সফলকাম”। [সূরা আল-আ‘রাফ, আয়াত: ১৫৬, ১৫৭]

মহান আল্লাহ বলেন:

﴿قُلۡ إِن كُنتُمۡ تُحِبُّونَ ٱللَّهَ فَٱتَّبِعُونِي يُحۡبِبۡكُمُ ٱللَّهُ وَيَغۡفِرۡ لَكُمۡ ذُنُوبَكُمۡۚ وَٱللَّهُ غَفُورٞ رَّحِيمٞ ٣١ قُلۡ أَطِيعُواْ ٱللَّهَ وَٱلرَّسُولَۖ فَإِن تَوَلَّوۡاْ فَإِنَّ ٱللَّهَ لَا يُحِبُّ ٱلۡكَٰفِرِينَ ٣٢﴾ [ ال عمران : ٣١، ٣٢ ]

“বল, ‘যদি তোমরা আল্লাহকে ভালোবাস, তাহলে আমার অনুসরণ কর, আল্লাহ তোমাদেরকে ভালোবাসবেন এবং তোমাদের পাপসমূহ ক্ষমা করে দেবেন। আর আল্লাহ অত্যন্ত ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু’। বল, ‘তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য কর’। তারপর যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়, তাহলে নিশ্চয় আল্লাহ কাফিরদেরকে ভালবাসেন না”। [সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ৩১, ৩২]

মহান আল্লাহ বলেন:

﴿فَلَا وَرَبِّكَ لَا يُؤۡمِنُونَ حَتَّىٰ يُحَكِّمُوكَ فِيمَا شَجَرَ بَيۡنَهُمۡ ثُمَّ لَا يَجِدُواْ فِيٓ أَنفُسِهِمۡ حَرَجٗا مِّمَّا قَضَيۡتَ وَيُسَلِّمُواْ تَسۡلِيمٗا ٦٥﴾ [ النساء : ٦٥ ]

“অতএব, তোমার রবের কসম, তারা মুমিন হবে না যতক্ষণ না তাদের মধ্যে সৃষ্ট বিবাদের ব্যাপারে তোমাকে বিচারক নির্ধারণ করে, তারপর তুমি যে ফয়সালা দেবে সে ব্যাপারে নিজদের অন্তরে কোন দ্বিধা অনুভব না করে এবং পূর্ণ সম্মতিতে মেনে নেয়”। [সূরা আন-নিসা, আয়াত: ৬৫]

পঞ্চমত: নাবী ও রাসূলদের মহব্বত করা, তাদের সম্মান রক্ষা করা, তাদের সাথে বন্ধুত্ব স্থাপন করা। মহান আল্লাহ বলেন:

﴿إِنَّمَا وَلِيُّكُمُ ٱللَّهُ وَرَسُولُهُۥ وَٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ ٱلَّذِينَ يُقِيمُونَ ٱلصَّلَوٰةَ وَيُؤۡتُونَ ٱلزَّكَوٰةَ وَهُمۡ رَٰكِعُونَ ٥٥ وَمَن يَتَوَلَّ ٱللَّهَ وَرَسُولَهُۥ وَٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ فَإِنَّ حِزۡبَ ٱللَّهِ هُمُ ٱلۡغَٰلِبُونَ ٥٦﴾ [ المائ‍دة : ٥٥، ٥٦ ]

“তোমাদের বন্ধু কেবল আল্লাহ, তাঁর রাসূল ও মুমিনগণ, যারা সালাত কায়েম করে এবং যাকাত প্রদান করে বিনীত হয়ে। আর যে আল্লাহ, তাঁর রাসূদল ও মুমিনদের সাথে বন্ধুত্ব করে, তবে নিশ্চয় আল্লাহর দলই বিজয়ী”। [সূরা আল-মায়েদা, আয়াত: ৫৫, ৫৬]

মহান আল্লাহ বলেন:

﴿فَلَمَّآ أَحَسَّ عِيسَىٰ مِنۡهُمُ ٱلۡكُفۡرَ قَالَ مَنۡ أَنصَارِيٓ إِلَى ٱللَّهِۖ قَالَ ٱلۡحَوَارِيُّونَ نَحۡنُ أَنصَارُ ٱللَّهِ ءَامَنَّا بِٱللَّهِ وَٱشۡهَدۡ بِأَنَّا مُسۡلِمُونَ ٥٢﴾ [ ال عمران : ٥٢ ]

“অতঃপর যখন ঈসা তাদের পক্ষ হতে কুফুরী উপলব্ধি করল, তখন বলল, ‘কে আল্লাহর জন্য আমার সাহায্যকারী হবে’? হাওয়ারীগণ বলল, ‘আমরা আল্লাহর সাহায্যকারী। আমরা আল্লাহর উপর ঈমান এনেছি। আর তুমি সাক্ষী থাক যে, নিশ্চয় আমরা মুসলিম’’। [সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ৫২]

মহান আল্লাহ বলেন:

﴿قُلْ إِنْ كَانَ آبَاؤُكُمْ وَأَبْنَاؤُكُمْ وَإِخْوَانُكُمْ وَأَزْوَاجُكُمْ وَعَشِيرَتُكُمْ وَأَمْوَالٌ اقْتَرَفْتُمُوهَا وَتِجَارَةٌ تَخْشَوْنَ كَسَادَهَا وَمَسَاكِنُ تَرْضَوْنَهَا أَحَبَّ إِلَيْكُمْ مِنْ اللَّهِ وَرَسُولِهِ وَجِهَادٍ فِي سَبِيلِهِ فَتَرَبَّصُوا حَتَّى يَأْتِيَ اللَّهُ بِأَمْرِهِ وَاللَّهُ لا يَهْدِي الْقَوْمَ الْفَاسِقِينَ﴾ [ التوبة : ٢٤ ]

“বল, ‘তোমাদের পিতা, তোমাদের সন্তান, তোমাদের স্ত্রী, তোমাদের গোত্র, তোমাদের সে সম্পদ যা তোমরা অর্জন করেছ, আর সে ব্যবসা যার মন্দা হওয়ার আশঙ্কা তোমরা করছ এবং সে বাসস্থান, যা তোমরা পছন্দ করছ, যদি তোমাদের কাছে অধিক প্রিয় হয় আল্লাহ, তাঁর রাসূল ও তাঁর পথে জিহাদ করার চেয়ে, তবে তোমরা অপেক্ষা কর আল্লাহ তাঁর নির্দেশ নিয়ে আসা পর্যন্ত’। আর আল্লাহ ফাসিক সম্প্রদায়কে হিদায়াত করেন না”। [সূরা আত-তাওবা, আয়াত: ২৪]

মহান আল্লাহ বলেন:

﴿وَسَلَٰمٌ عَلَى ٱلۡمُرۡسَلِينَ ١٨١﴾ [ الصافات : ١٨١ ]

“আর রাসূলদের প্রতি সালাম”। [সূরা আস-সাফফাত, আয়াত: ১৮১]

আমাদের নাবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সম্পর্কে মহান আল্লাহ বলেন:

﴿لِّتُؤۡمِنُواْ بِٱللَّهِ وَرَسُولِهِۦ وَتُعَزِّرُوهُ وَتُوَقِّرُوهُۚ وَتُسَبِّحُوهُ بُكۡرَةٗ وَأَصِيلًا ٩﴾ [ الفتح : ٩ ]

“যাতে তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের উপর ঈমান আন, তাকে সাহায্য ও সম্মান কর এবং সকাল-সন্ধ্যায় আল্লাহর তাসবীহ পাঠ কর”। [সূরা আল-ফাতহ, আয়াত: ৯]

মহান আল্লাহ বলেন:

﴿ إِنَّ ٱللَّهَ وَمَلَٰٓئِكَتَهُۥ يُصَلُّونَ عَلَى ٱلنَّبِيِّۚ يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ صَلُّواْ عَلَيۡهِ وَسَلِّمُواْ تَسۡلِيمًا ٥٦﴾ [ الاحزاب : ٥٦ ]

“নিশ্চয় আল্লাহ (ঊর্ধ্ব জগতে ফিরিশতাদের মধ্যে) নাবীর প্রশংসা করেন এবং তাঁর ফিরিশতাগণ নাবীর জন্য দো‘আ করেন [ইমাম বুখারী আবুল ‘আলিয়া থেকে বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ওপর আল্লাহর সালাত’ বলতে বুঝানো হয়েছে ফিরিশতাদের কাছে নাবীর প্রশংসা এবং ফিরিশতাদের সালাত হলো দো‘আ। আর ইমাম তিরমিযী সুফীয়ান সওরী রহ. থেকে বর্ণনা করেন যে, এখানে আল্লাহর সালাত বলতে রহমত এবং ফিরিশতাদের সালাত বলতে ইস্তেগফার বুঝানো হয়েছে। (তাফসীর ইবন কাসীর)।]। হে মুমিনগণ, তোমরাও নাবীর উপর দুরূদ পাঠ কর এবং তাকে যথাযথভাবে সালাম জানাও”। [সূরা আল-আহযাব, আয়াত: ৫৬]

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:

«لا يؤمن أحدكم حتى أكون أحب إليه من والده، وولده، والناس أجمعين» .

“যতক্ষণ পর্যন্ত আমি তোমাদের নিকট তোমাদের সন্তান, মাতা-পিতা ও সমস্ত মানুষ থেকে অধিক প্রিয় না হব, ততক্ষণ পর্যন্ত তোমরা পরিপূর্ণ ঈমানদার হতে পারবে না”। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৩; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৪৪।]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন