hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

কুরআন ও হাদীসের আলোকে সহজ আকীদা

লেখকঃ ড. আহমাদ ইবন আব্দুর রহমান আল-কাযী

১৪
ইবাদতের প্রকার
এক- অন্তরের ইবাদাত: যেমন,

মহব্বত করা। মহান আল্লাহ বলেন:

﴿وَمِنَ ٱلنَّاسِ مَن يَتَّخِذُ مِن دُونِ ٱللَّهِ أَندَادٗا يُحِبُّونَهُمۡ كَحُبِّ ٱللَّهِۖ وَٱلَّذِينَ ءَامَنُوٓاْ أَشَدُّ حُبّٗا لِّلَّهِۗ ١٦٥﴾ [ البقرة : ١٦٥ ]

“আর মানুষের মধ্যে এমনও আছে, যারা আল্লাহ ছাড়া অন্যকে আল্লাহর সমকক্ষরূপে গ্রহণ করে, তাদেরকে আল্লাহকে ভালোবাসার মত ভালবাসে। আর যারা ঈমান এনেছে, তারা আল্লাহর জন্য ভালোবাসায় দৃঢ়তর”। [সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ১৬৫]

ভয় করা। মহান আল্লাহ বলেন:

﴿فَلَا تَخَافُوهُمۡ وَخَافُونِ إِن كُنتُم مُّؤۡمِنِينَ ١٧٥﴾ [ ال عمران : ١٧٥ ]

“তোমরা তাদেরকে ভয় করো না, বরং আমাকে ভয় কর, যদি তোমরা মুমিন হও”। [সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ১৭৫]

আশা করা, মহান আল্লাহ বলেন:

﴿فَمَن كَانَ يَرۡجُواْ لِقَآءَ رَبِّهِۦ فَلۡيَعۡمَلۡ عَمَلٗا صَٰلِحٗا وَلَا يُشۡرِكۡ بِعِبَادَةِ رَبِّهِۦٓ أَحَدَۢا ١١٠﴾ [ الكهف : ١١٠ ]

“সুতরাং যে তার রবের সাক্ষাৎ কামনা করে, সে যেন সৎকর্ম করে এবং তার রবের ইবাদাতে কাউকে শরীক না করে’’। [সূরা আল-কাহ্ফ, আয়াত: ১১০]

আল্লাহর উপর ভরসা করা। মহান আল্লাহ বলেন:

﴿وَعَلَى ٱللَّهِ فَتَوَكَّلُوٓاْ إِن كُنتُم مُّؤۡمِنِينَ ٢٣﴾ [ المائ‍دة : ٢٣ ]

“আর আল্লাহর উপর ভরসা কর যদি তোমরা প্রকৃত মুমিন হও’। [সূরা আল- মায়িদা, আয়াত: 23]

দেহের সংশোধনের মূল হলো আত্মার সংশোধন। যেমনটি হাদীসে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

«ألا وإن في الجسد مضغة؛ إذا صلحت صلح الجسد كله،وإذا فسدت فسد الجسد كله،ألا وهي القلب»

“মনে রাখ, নিশ্চয় মানব দেহে একটি গোস্তের টুকরা রয়েছে, যখন তা সঠিক হয়, তখন পূর্ণ দেহ সঠিক হয়, আর যখন তা নষ্ট হয়, তখন পূর্ণ দেহই নষ্ট হয়। আর তা হলো অন্তর”। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৫২৫; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১৫৯৯]

দুই- মৌখিক ইবাদত: যেমন,

দো‘আ। মহান আল্লাহ বলেন:

﴿وَأَنَّ ٱلۡمَسَٰجِدَ لِلَّهِ فَلَا تَدۡعُواْ مَعَ ٱللَّهِ أَحَدٗا ١٨﴾ [ الجن : ١٨ ]

“আর নিশ্চয় মাসজিদগুলো আল্লাহরই জন্য। কাজেই তোমরা আল্লাহর সাথে অন্য কাউকে ডেকো না”। [সূরা আল-জিন্ন, আয়াত: ১৮]

আশ্রয় চাওয়া। মহান আল্লাহ বলেন:

﴿قُلۡ أَعُوذُ بِرَبِّ ٱلۡفَلَقِ ١﴾ [ الفلق : ١ ]

“বল, ‘আমি আশ্রয় প্রার্থনা করছি ঊষার রবের কাছে”। [সূরা আল-ফালাক, আয়াত: ১]

মহান আল্লাহ আরও বলেন:

﴿قُلۡ أَعُوذُ بِرَبِّ ٱلنَّاسِ ١﴾ [ الناس : ١ ]

“বল, ‘আমি আশ্রয় চাই মানুষের রবের নিকট”। [সূরা আন-নাস, আয়াত: ১]

উদ্ধার চাওয়া। মহান আল্লাহ বলেন:

﴿إِذۡ تَسۡتَغِيثُونَ رَبَّكُمۡ فَٱسۡتَجَابَ لَكُمۡ أَنِّي مُمِدُّكُم بِأَلۡفٖ مِّنَ ٱلۡمَلَٰٓئِكَةِ مُرۡدِفِينَ ٩﴾ [ الانفال : ٩ ]

“আর স্মরণ কর, যখন তোমরা তোমাদের রবের নিকট উদ্ধার কামনা করে ফরিয়াদ করছিলে, তখন তিনি তোমাদের ডাকে সাড়া দিয়েছিলেন যে, ‘নিশ্চয় আমি তোমাদেরকে পর পর আগমনকারী এক হাজার ফিরিশতা দ্বারা সাহায্য করছি’’। [সূরা আল-জিন্ন, আয়াত: ১৮]

তিন- দৈহিক ইবাদত। যেমন,

সালাত আদায় ও জবেহ করা। মহান আল্লাহ বলেন:

﴿قُلۡ إِنَّ صَلَاتِي وَنُسُكِي وَمَحۡيَايَ وَمَمَاتِي لِلَّهِ رَبِّ ٱلۡعَٰلَمِينَ ١٦٢﴾ [ الانعام : ١٦٢ ]

“বল, ‘নিশ্চয় আমার নামাজ, আমার কুরবানী, আমার জীবন ও আমার মৃত্যু আল্লাহর জন্য, যিনি সকল সৃষ্টির রব’। [সূরা আল-আন‘আম, আয়াত: ১৬২]

মহান আল্লাহ আরও বলেন:

﴿فَصَلِّ لِرَبِّكَ وَٱنۡحَرۡ ٢﴾ [ الكوثر : ٢ ]

“অতএব, তোমার রবের উদ্দেশ্যেই নামাজ পড় এবং কুরবানী কর”। [সূরা আল-কাওসার, আয়াত: ২]

চার- আর্থিক ইবাদত। যেমন,

বাধ্যতামূলক খরচ-পাতি, যাকাত, সদকা, ওয়াসিয়ত, ওয়াকফ ও হিবা। মহান আল্লাহ বলেন:

﴿وَمِنَ الأَعْرَابِ مَن يُؤْمِنُ بِاللّهِ وَالْيَوْمِ الآخِرِ وَيَتَّخِذُ مَا يُنفِقُ قُرُبَاتٍ عِندَ اللّهِ وَصَلَوَاتِ الرَّسُولِ أَلا إِنَّهَا قُرْبَةٌ لَّهُمْ سَيُدْخِلُهُمُ اللّهُ فِي رَحْمَتِهِ إِنَّ اللّهَ غَفُورٌ رَّحِيمٌ﴾ [ التوبة : ٩٩ ]

“আর বেদুইনদের কেউ কেউ আল্লাহ ও শেষ দিনের প্রতি ঈমান রাখে এবং যা ব্যয় করে তাকে আল্লাহর নিকট নৈকট্য ও রাসূলের দো‘আর উপায় হিসেবে গণ্য করে। জেনে রাখ, নিশ্চয় তা তাদের জন্য নৈকট্যের মাধ্যম। অচিরেই আল্লাহ তাদেরকে তাঁর রহমতে প্রবেশ করাবেন। নিশ্চয় আল্লাহ অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু”। [সূরা আত-তাওবাহ, আয়াত: ৯৯]

অনুরূপভাবে খাবার খাওয়ানো: মহান আল্লাহ আরও বলেন:

﴿وَيُطۡعِمُونَ ٱلطَّعَامَ عَلَىٰ حُبِّهِۦ مِسۡكِينٗا وَيَتِيمٗا وَأَسِيرًا ٨ إِنَّمَا نُطۡعِمُكُمۡ لِوَجۡهِ ٱللَّهِ لَا نُرِيدُ مِنكُمۡ جَزَآءٗ وَلَا شُكُورًا ٩﴾ [ الانسان : ٨ - ١٠ ]

“তারা খাদ্যের প্রতি আসক্তি থাকা সত্ত্বেও মিসকীন, ইয়াতীম ও বন্দীকে খাদ্য দান করে। তারা বলে, ‘আমরা তো আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে তোমাদেরকে খাদ্য দান করি। আমরা তোমাদের থেকে কোন প্রতিদান চাই না এবং কোনো শোকরও না”। [সূরা আল-ইনসান, আয়াত: ৮ - ১০]

স্মর্তব্য যে, আল্লাহর রুবুবিয়্যাতের উপর ঈমান স্থাপন করার বাধ্যবাধকতা ও দাবি হলো, আল্লাহর উলুহিয়্যাতের উপর ঈমান স্থাপন করা। যে ব্যক্তি এ কথা স্বীকার করে যে, আল্লাহ তা‘আলাই স্রষ্টা, তিনিই মালিক এবং পরিচালক, তার জন্য করণীয় হলো, যিনি তার স্রষ্টা, মালিক বা তত্বাবধায়ক ও পরিচালক সে তার দাসত্ব ও গোলামীকে স্বীকার করবে এবং ইবাদতের ক্ষেত্রে তাকে একক বলে জানবে। মহান আল্লাহ মুশরিকদের বিপক্ষে এ স্বীকারোক্তির মাধ্যমে স্বীয় কিতাব কুরআনের একাধিক স্থানে দলীল উপস্থাপন করেন। যেমন, মহান আল্লাহ বলেন:

﴿يَٰٓأَيُّهَا ٱلنَّاسُ ٱعۡبُدُواْ رَبَّكُمُ ٱلَّذِي خَلَقَكُمۡ وَٱلَّذِينَ مِن قَبۡلِكُمۡ لَعَلَّكُمۡ تَتَّقُونَ ٢١ ٱلَّذِي جَعَلَ لَكُمُ ٱلۡأَرۡضَ فِرَٰشٗا وَٱلسَّمَآءَ بِنَآءٗ وَأَنزَلَ مِنَ ٱلسَّمَآءِ مَآءٗ فَأَخۡرَجَ بِهِۦ مِنَ ٱلثَّمَرَٰتِ رِزۡقٗا لَّكُمۡۖ فَلَا تَجۡعَلُواْ لِلَّهِ أَندَادٗا وَأَنتُمۡ تَعۡلَمُونَ ٢٢﴾ [ البقرة : ٢١ - ٢٢ ]

“হে মানুষ, তোমরা তোমাদের রবের ইবাদাত কর, যিনি সৃষ্টি করেছেন তোমাদেরকে এবং তোমাদের পূর্বে যারা ছিল তাদেরকে, যাতে তোমরা জাহান্নামের শাস্তি হতে মুক্তি লাভ করতে সক্ষম হও। যিনি তোমাদের জন্য জমিনকে করেছেন বিছানা এবং আসমানকে করেছেন ছাদ আর আসমান থেকে নাযিল করেছেন বৃষ্টি। অতঃপর তাঁর মাধ্যমে উৎপন্ন করেছেন ফল-ফলাদি, তোমাদের জন্য রিযিকস্বরূপ। সুতরাং তোমরা আল্লাহর জন্য সমকক্ষ নির্ধারণ করো না আর তোমরা তো জানো যে, তিনি একাই এই সমস্ত জিনিস সৃষ্টি করেছেন”। [সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ২১ - ২২]

﴿ قُلۡ مَن يَرۡزُقُكُم مِّنَ ٱلسَّمَآءِ وَٱلۡأَرۡضِ أَمَّن يَمۡلِكُ ٱلسَّمۡعَ وَٱلۡأَبۡصَٰرَ وَمَن يُخۡرِجُ ٱلۡحَيَّ مِنَ ٱلۡمَيِّتِ وَيُخۡرِجُ ٱلۡمَيِّتَ مِنَ ٱلۡحَيِّ وَمَن يُدَبِّرُ ٱلۡأَمۡرَۚ فَسَيَقُولُونَ ٱللَّهُۚ فَقُلۡ أَفَلَا تَتَّقُونَ ٣١ فَذَٰلِكُمُ ٱللَّهُ رَبُّكُمُ ٱلۡحَقُّۖ فَمَاذَا بَعۡدَ ٱلۡحَقِّ إِلَّا ٱلضَّلَٰلُۖ فَأَنَّىٰ تُصۡرَفُونَ ٣٢﴾ [ يونس : ٣١ - ٣٢ ]

“বল, ‘আসমান ও জমিন থেকে কে তোমাদের রিযিক দেন? অথবা কে (তোমাদের) শ্রবণ ও দৃষ্টি শক্তির মালিক? আর কে মৃত থেকে জীবিতকে বের করেন আর জীবিত থেকে মৃতকে বের করেন? কে সব বিষয় পরিচালনা করেন’? তখন তারা অবশ্যই বলবে, ‘আল্লাহ’। সুতরাং, তুমি বল, ‘তারপরও কি তোমরা আল্লাহর সাথে অংশিদার স্থাপন হতে সতর্ক হবে না’? অতএব, তিনিই আল্লাহ, তোমাদের প্রকৃত রব। অতঃপর সত্যের পর ভ্রষ্টতা ছাড়া কী থাকে? অতএব কোথায় তোমাদেরকে ঘুরানো হচ্ছে”?। [সূরা ইউনুস, আয়াত: ৩১ - ৩২]

﴿قُلِ الْحَمْدُ لِلَّهِ وَسَلَامٌ عَلَى عِبَادِهِ الَّذِينَ اصْطَفَى آللَّهُ خَيْرٌ أَمَّا يُشْرِكُونَ . أَمَّنْ خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ وَأَنزَلَ لَكُم مِّنَ السَّمَاءِ مَاء فَأَنبَتْنَا بِهِ حَدَائِقَ ذَاتَ بَهْجَةٍ مَّا كَانَ لَكُمْ أَن تُنبِتُوا شَجَرَهَا أَإِلَهٌ مَّعَ اللَّهِ بَلْ هُمْ قَوْمٌ يَعْدِلُونَ . أَمَّن جَعَلَ الْأَرْضَ قَرَاراً وَجَعَلَ خِلَالَهَا أَنْهَاراً وَجَعَلَ لَهَا رَوَاسِيَ وَجَعَلَ بَيْنَ الْبَحْرَيْنِ حَاجِزاً أَإِلَهٌ مَّعَ اللَّهِ بَلْ أَكْثَرُهُمْ لَا يَعْلَمُونَ . أَمَّن يُجِيبُ الْمُضْطَرَّ إِذَا دَعَاهُ وَيَكْشِفُ السُّوءَ وَيَجْعَلُكُمْ خُلَفَاء الْأَرْضِ أَإِلَهٌ مَّعَ اللَّهِ قَلِيلاً مَّا تَذَكَّرُونَ . أَمَّن يَهْدِيكُمْ فِي ظُلُمَاتِ الْبَرِّ وَالْبَحْرِ وَمَن يُرْسِلُ الرِّيَاحَ بُشْراً بَيْنَ يَدَيْ رَحْمَتِهِ أَإِلَهٌ مَّعَ اللَّهِ تَعَالَى اللَّهُ عَمَّا يُشْرِكُونَ . ‏ أَمَّن يَبْدَأُ الْخَلْقَ ثُمَّ يُعِيدُهُ وَمَن يَرْزُقُكُم مِّنَ السَّمَاءِ وَالْأَرْضِ أَإِلَهٌ مَّعَ اللَّهِ قُلْ هَاتُوا بُرْهَانَكُمْ إِن كُنتُمْ صَادِقِينَ﴾ النمل : ٥٩ -٦٤

“বল, ‘সকল প্রশংসাই আল্লাহর নিমিত্তে। আর শান্তি তাঁর বান্দাদের প্রতি যাদের তিনি মনোনীত করেছেন। আল্লাহ শ্রেষ্ঠ, না কি যাদেরকে এরা শরীক করে তারা’? বরং তিনি (শ্রেষ্ঠ), যিনি আসমানসমূহ ও জমিনকে সৃষ্টি করেছেন এবং তোমাদের জন্য তিনি আসমান থেকে পানি বর্ষণ করেন। অতঃপর তা দ্বারা আমি মনোরম উদ্যান সৃষ্টি করি। তার বৃক্ষাদি উৎপন্ন করার ক্ষমতা তোমাদের নেই। আল্লাহর সাথে কি অন্য কোন ইলাহ আছে? বরং তারা এমন এক কওম যারা শির্ক করে। বরং তিনি, যিনি জমিনকে আবাসযোগ্য করেছেন এবং তার মধ্যে প্রবাহিত করেছেন নদী-নালা। আর তাতে স্থাপন করেছেন সুদৃঢ় পর্বতমালা এবং দুই সমুদ্রের মধ্যখানে অন্তরায় সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহর সাথে কি অন্য কোনো ইলাহ আছে? বরং তাদের অধিকাংশই সত্য বিষয়টি জানে না; বরং তিনি, যিনি নিরুপায়ের আহ্বানে সাড়া দেন এবং বিপদ দূরীভূত করেন এবং তোমাদেরকে জমিনের প্রতিনিধি বানান। আল্লাহর সাথে কি অন্য কোন ইলাহ আছে? তোমরা কমই উপদেশ গ্রহণ করে থাক। বরং তিনি, যিনি তোমাদেরকে স্থলে ও সমুদ্রের অন্ধকারে পথ দেখান এবং যিনি স্বীয় রহমতের প্রাক্কালে সুসংবাদবাহী বাতাস প্রেরণ করেন। আল্লাহর সাথে কি অন্য কোনো ইলাহ আছে? তারা যা কিছু শরীক করে আল্লাহ তা থেকে ঊর্ধ্বে; বরং তিনি, যিনি সৃষ্টির সূচনা করেন, তারপর তার পুনরাবৃত্তি করবেন এবং যিনি তোমাদেরকে আসমান ও জমিন থেকে রিযিক দান করেন, আল্লাহর সাথে কি কোনো ইলাহ আছে? বল, ‘তোমাদের প্রমাণ নিয়ে এসো যদি তোমরা সত্যবাদী হও”। [সূরা আন-নামল, আয়াত: ৫৯ - ৬৪]

এভাবেই মহান আল্লাহ উল্লিখিত আয়াতসমূহে তাঅহীদে রুবুবিয়্যাকে স্বীকার করার দ্বারা তাঅহীদে উলুহিয়্যার উপর প্রমাণ উপস্থাপন করেছেন।

অনুরূপ মুশরিকদের ইলাহসমূহ যেগুলোর মধ্যে রবুবিয়্যাতের কোনো বৈশিষ্ট্য নেই সেগুলোর ইলাহ হওয়াকে বাতিল করেছেন। মহান আল্লাহ বলেন:

﴿أَيُشۡرِكُونَ مَا لَا يَخۡلُقُ شَيۡ‍ٔٗا وَهُمۡ يُخۡلَقُونَ ١٩١ وَلَا يَسۡتَطِيعُونَ لَهُمۡ نَصۡرٗا وَلَآ أَنفُسَهُمۡ يَنصُرُونَ ١٩٢ وَإِن تَدۡعُوهُمۡ إِلَى ٱلۡهُدَىٰ لَا يَتَّبِعُوكُمۡۚ سَوَآءٌ عَلَيۡكُمۡ أَدَعَوۡتُمُوهُمۡ أَمۡ أَنتُمۡ صَٰمِتُونَ ١٩٣ إِنَّ ٱلَّذِينَ تَدۡعُونَ مِن دُونِ ٱللَّهِ عِبَادٌ أَمۡثَالُكُمۡۖ فَٱدۡعُوهُمۡ فَلۡيَسۡتَجِيبُواْ لَكُمۡ إِن كُنتُمۡ صَٰدِقِينَ ١٩٤ أَلَهُمۡ أَرۡجُلٞ يَمۡشُونَ بِهَآۖ أَمۡ لَهُمۡ أَيۡدٖ يَبۡطِشُونَ بِهَآۖ أَمۡ لَهُمۡ أَعۡيُنٞ يُبۡصِرُونَ بِهَآۖ أَمۡ لَهُمۡ ءَاذَانٞ يَسۡمَعُونَ بِهَاۗ قُلِ ٱدۡعُواْ شُرَكَآءَكُمۡ ثُمَّ كِيدُونِ فَلَا تُنظِرُونِ ١٩٥ إِنَّ وَلِـِّۧيَ ٱللَّهُ ٱلَّذِي نَزَّلَ ٱلۡكِتَٰبَۖ وَهُوَ يَتَوَلَّى ٱلصَّٰلِحِينَ ١٩٦ وَٱلَّذِينَ تَدۡعُونَ مِن دُونِهِۦ لَا يَسۡتَطِيعُونَ نَصۡرَكُمۡ وَلَآ أَنفُسَهُمۡ يَنصُرُونَ ١٩٧ وَإِن تَدۡعُوهُمۡ إِلَى ٱلۡهُدَىٰ لَا يَسۡمَعُواْۖ وَتَرَىٰهُمۡ يَنظُرُونَ إِلَيۡكَ وَهُمۡ لَا يُبۡصِرُونَ ١٩٨﴾ [ الاعراف : ١٩٠ - ١٩٨ ]

“তারা কি এমন কিছুকে শরীক করে, যারা কোন কিছু সৃষ্টি করতে পারে না। বরং তাদেরকেই সৃষ্টি করা হয়? আর তারা তাদেরকে কোন সাহায্য করতে পারে না এবং তারা নিজদেরকেও সাহায্য করতে পারে না। আর তোমরা যদি তাদেরকে হিদায়াতের দিকে আহ্বান কর, তারা তোমাদের অনুসরণ করবে না। তোমরা তাদেরকে ডাক অথবা তোমরা চুপ থাক, তা তোমাদের নিকট সমান। আল্লাহ ছাড়া যাদেরকে তোমরা ডাক তারা তোমাদের মতো বান্দা। সুতরাং তোমরা তাদেরকে ডাক। অতঃপর তারা যেন তোমাদের ডাকে সাড়া দেয়, যদি তোমরা সত্যবাদী হও। তাদের কি পা আছে যার সাহায্যে তারা চলে? বা তাদের কি হাত আছে যা দ্বারা তারা ধরে? বা তাদের কি চক্ষু আছে যার মাধ্যমে তারা দেখে? অথবা তাদের কি কান আছে যা দ্বারা তারা শুনে? বল, ‘তোমরা তোমাদের শরীকদের ডাক। তারপর আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র কর এবং আমাকে অবকাশ দিয়ো না’। ‘নিশ্চয় আমার অভিভাবক আল্লাহ, যিনি কিতাব নাযিল করেছেন। আর তিনি নেককারদের দেখাশোনা করেন’। আর তাঁকে ছাড়া তোমরা যাদেরকে ডাক তারা তোমাদেরকে সাহায্য করতে পারে না এবং তারা নিজদেরকেও সাহায্য করতে পারে না। তুমি যদি তাদেরকে হিদায়াতের দিকে আহ্বান কর, তারা শুনবে না। আর তুমি তাদেরকে দেখবে যে, তারা তোমার দিকে তাকিয়ে আছে, অথচ তারা দেখছে না।” [সূরা আল-আ‘রাফ, আয়াত: ১৯০ - ১৯৮]

আরও বলেন:

﴿وَٱتَّخَذُواْ مِن دُونِهِۦٓ ءَالِهَةٗ لَّا يَخۡلُقُونَ شَيۡ‍ٔٗا وَهُمۡ يُخۡلَقُونَ وَلَا يَمۡلِكُونَ لِأَنفُسِهِمۡ ضَرّٗا وَلَا نَفۡعٗا وَلَا يَمۡلِكُونَ مَوۡتٗا وَلَا حَيَوٰةٗ وَلَا نُشُورٗا ٣﴾ [ الفرقان : ٣ ]

“আর তারা আল্লাহ ছাড়া অনেক ইলাহ গ্রহণ করেছে, যারা কিছুই সৃষ্টি করতে পারে না, বরং তাদেরকেই সৃষ্টি করা হয়েছে। তারা নিজদের কোনো কল্যাণ ও অকল্যাণ করার ক্ষমতা রাখে না এবং মৃত্যু, জীবন ও পুনরুত্থান করতেও সক্ষম হয় না”। [সূরা আল-ফুরকান, আয়াত: ৩]

আরও বলেন:

﴿قُلِ ٱدۡعُواْ ٱلَّذِينَ زَعَمۡتُم مِّن دُونِ ٱللَّهِ لَا يَمۡلِكُونَ مِثۡقَالَ ذَرَّةٖ فِي ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَلَا فِي ٱلۡأَرۡضِ وَمَا لَهُمۡ فِيهِمَا مِن شِرۡكٖ وَمَا لَهُۥ مِنۡهُم مِّن ظَهِيرٖ ٢٢ وَلَا تَنفَعُ ٱلشَّفَٰعَةُ عِندَهُۥٓ إِلَّا لِمَنۡ أَذِنَ لَهُۥۚ﴾ [ سبا : ٢٢ - ٢٣ ]

“বল, ‘তোমরা আল্লাহ ছাড়া যাদেরকে ইলাহ মনে করতে তাদেরকে আহ্বান কর। তারা আসমানসমূহ ও জমিনে অণু পরিমাণ কোনো কিছুর মালিক নয়। আর এ দু’য়ের মধ্যে তাদের কোন অংশীদারিত্ব নেই এবং তাদের মধ্যে কেউ তাঁর সাহায্যকারীও নেই। আর আল্লাহ যাকে অনুমতি দেবেন সে ছাড়া তাঁর কাছে কোন সুপারিশ কারো উপকার করবে না”। [সূরা আস-সাবা, আয়াত: ২২ - ২৩]

এ কারণেই সবচেয়ে বড় ও ভয়াবহ কবীরা গুনাহ এবং মহা অন্যায় হলো আল্লাহর ইবাদতে কাউকে শরীক করা। মহান আল্লাহ বলেন:

﴿إِنَّ ٱلشِّرۡكَ لَظُلۡمٌ عَظِيمٞ ١٣﴾ [ لقمان : ١٣ ]

“নিশ্চয় শির্ক করা মহা অন্যায়”। [সূরা লুকমান, আয়াত: ১৩]

সহীহ বুখারী ও মুসলিমের হাদীস বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:

«ألا أنبئكم بأكبر الكبائر ؟ قلنا : بلى ، يا رسول الله . قال : الإشراك بالله» .

“আমি কি তোমাদের বড় কবীরা গুনাহ সম্পর্কে সংবাদ দেবো? আমরা বললাম হ্যাঁ আল্লাহর রাসূল! তিনি বললেন, আল্লাহর সাথে শির্ক করা”। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২৬৫৩; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১৪৩]

অপর একটি হাদীসে বর্ণিত,

«وسئل صلى الله عليه وسلم أي الذنب أعظم ؟ قال : أن تجعل لله نداً، وهو خلقك» .

“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করা হলো, সবচেয়ে বড় গুনাহ কী? তিনি বললেন, “আল্লাহর জন্য শরীক সাব্যস্ত করা অথচ তিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন”। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৪৪৭৭; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৮৬]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন