মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
অমুসলিমদের সাথে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আচরণ প্রসঙ্গ
লেখকঃ ড. রাগিব আস-সারজানী
১৮
দিত্বীয় পরিচ্ছেদ: সম্পদের লেনদেনে ন্যায়পরায়ণতা
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/400/18
অমুসলিমদের সাথে সম্পদ লেন-দেনের ক্ষেত্রে ন্যায়নিষ্ঠা প্রদর্শন এবং তাদের সাথে কোনো প্রকার যুলুম না করা বিষয়ক এতো বেশি ঘটনা রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে প্রকাশ পেয়েছে যে, এগুলোর পরিসংখ্যান আনয়ন খুবই কঠিন ব্যাপার। আমি আগত আলোচনায় খুব সহজভাবে অমুসলিমদের সাথে সম্পদের লেন-দেনে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আচরণ পদ্ধতি উপস্থাপন করার প্রচেষ্টা চালাবো।
এ বিষয়ে প্রথমেই আব্দুর রহমান ইবন আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে বর্ণিত একটি হাদীস পেশ করা যেতে পারে। তিনি বলেন,
“(কোনো এক সফরে) রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে আমরা একশত ত্রিশজন লোক ছিলাম। সে সময় রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞাস করলেন, তোমাদের কারো সাথে কি খাবার আছে? দেখা গেল, এক ব্যাক্তির সঙ্গে এক সা’ কিংবা তার কম-বেশি পরিমান খাদ্য (আটা) আছে। সে আটা গোলানো হলো। তারপর দীর্ঘদেহী এলোমেলো চুল বিশিষ্ট এক মুশরিক এক পাল বকরী হাকিয়ে নিয়ে এলো। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞাস করলেন। বিক্রি করবে, নাকি উপহার দিবে? সে বলল, না বরং বিক্রি করব। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার কাছ থেকে একটা বকরী কিনে নিলেন। একশত ত্রিশজনের প্রত্যেককে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সে বকরীর কলিজার কিছু কিছু করে দিলেন। যে উপস্থিত ছিল, তাকে হাতে দিলেন আর যে অনুপস্থিত ছিলো তার জন্য তুলে রাখলেন। তারপর দু’টি পাত্রে তিনি গোশত ভাগ করে রাখলেন। সবাই তৃপ্তির সাথে খেলেন। উভয় পাত্রে আরো কিছু উদ্বৃত্ত থেকে গেল। সেগুলো আমরা উটের পিঠে উঠিয়ে নিলাম।” [. সহীহ বুখারী ( كتاب الهبة و فضلها : باب قبول الهبة من المشركين ) হাদীস নং ২৪৭৫, ( كتاب الاطعمة : باب من أكل حتى شبع ) হাদীস নং ৫০৬৭; সহীহ মুসিলম ( كتاب الاشربة : باب إكرام الضيف ز فضل إيثاره ) হাদীস নং ২০৫৬।]
উক্ত হাদীসে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মহৎ চরিত্রমাধুর্য্যের অনুপম দৃষ্টান্ত ফুটে উঠেছে। তিনি তো সেই মহানুভব নেতা, যিনি একশত ত্রিশজনের শক্তিশালী সৈন্যদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন, সকলেই তীব্রভাবে খাদ্যের প্রয়োজনিয়তা অনুভব করছেন, এমতাবস্থায় যখন তার পাশ দিয়ে এক মুশরিক বকরী পাল নিয়ে যাচ্ছে তখনো তিনি কোনোরূপ বল প্রয়োগ ছাড়া তার থেক উপযুক্ত মূল্য দিয়ে বকরী কিনে সকলের চাহিদা পূরণ করলন। কিন্তু তিনি যথেষ্ট ক্ষমতাবান হওয়া সত্ত্বেও ঐ সময় বকরী তাদের খুব প্রয়োজন হওয়ার পরও বকরীওয়ালা একজন ভ্রান্ত বিশ্বাসী কাফির হওয়ার পরও তিনি একটি বারের জন্য এ কথা কল্পনা করলেন না যে, মূল্য পরিশোধ ব্যতিরেকে জোরপূর্বক অতীব প্রয়োজনীয় বকরী নিয়ে নিবেন। নিশ্চয় এটি সর্বোচ্চ পর্যায়ের ন্যয়পরায়ণতা। এ ঘটনাটির যদি আধুনিক কালের ঐ সব উপনৈবেশিক সৈন্য ও সেনাপতিদের সাথে তুলনামূলক বিশ্লেষণ করা হয়, যারা কোনো উপত্যকায় অবতরণ করলে তার অধিবাসীগণের সম্ভ্রম ও অধিকার রক্ষা করে না; বরং সেখানে বিশৃংখলা সৃষ্টি করে ও ন্যায়-নিষ্ঠাকে টুটি চেপে হত্যা করে, তাহলে খুব সহজেই রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিরপেক্ষতা ও মহানুভবতার বিষয়টি আমাদের হৃদয়ঙ্গম হবে।
আমাদের রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হচ্ছেন এমন এক মহান নেতা, যার সৈনিকদের মধ্যে রাসূলের কাছের কিংবা দূরের কেউই এ কথা কল্পনাও করে না যে, একজন মুশরিকের সম্ভ্রম রক্ষায়ও সীমালঙ্গন করবে। যদিও তারা ক্ষুধা ও তৃষ্ণায় কাতর ছিল।
সম্পদের লেন-দেনে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ন্যায়-নীতির সর্বোত্তম পরাকাষ্ঠার আরো একটি দৃষ্টান্ত হচ্ছে হিজরতের সফর। হিজরতের সফরে তিনি তিনজন ব্যক্তিকে সাথে নিয়ে সফর করছিলেন। তারা হচ্ছেন আবু বকর সিদ্দিক ও আমের ইবন ফাহীরাহ রাযিয়াল্লাহু আনহুমা এবং মুশরিক পথ প্রদর্শক আব্দুল্লাহ ইবন উরাইকাহ। চলার পথে তারা ক্ষুধা ও তৃষ্ণার কারণে যখন একটু দুধের তীব্র প্রয়োজনীয়তা বোধ করছিলেন, তখন একপাল দুগ্ধবতী বকরী নিয়ে পথ চলা এক গোলামের সাক্ষাত পেলেন। কিন্তু তাদের কেহই এ কথা বলেন নি যে, এটি আমাদের জন্য অত্যাবশ্যকীয় মুহুর্ত, কাজেই অনুমতি ছাড়াই কিছু বকরীর ওপর জোরপূর্বক অধিকার প্রতিষ্ঠা করে সেগুলো থেকে দুগ্ধ আহরণ আমাদের জন্য বৈধ হবে; বরং আবু বকর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু গোলামের প্রতি একটু অগ্রসর হয়ে বিনম্রকন্ঠে তাকে জিজ্ঞেস করলেন, তোমার মালিক কে? তখন গোলাম কুরাইশের এমন এক ব্যক্তির নাম বলল, যাকে আবু বকর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু চিনলেন...। [. সহীহ বুখারী ( كتاب فضائل الصحابة : باب مناقب المهاجرين و فضلهم ) হাদীস নং ২৪৭;, সহীহ মুসলিম ( كتاب الزهد والرقائق : باب في حديث الهجرة ) হাদীস নং ২৪৭৫।]
প্রিয় পাঠক! এখানে একটু ভেবে দেখুন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর সাথীবর্গের ন্যায়পরায়ণতা কতো মহৎ ছিল। তারা খুব ভালো করেই জানত যে, এ বকরীগুলো এক মুশরিকের মালিকানাধীন অথচ তখন মুশরিকরা রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে হন্য হয়ে খুঁজছে। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে হত্যা চেষ্টাও আর গোপন বিষয় নয়, তাদের হত্যা মিশন বাস্তবায়নের জন্য তারা প্রাণান্তকর প্রচেষ্টা চালিয়েও ব্যর্থ হচ্ছে, তথাপি তারা অনবরত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এতোসব প্রতিকূল পরিস্থিতি থাকার পরও রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর সাথীবর্গ অন্যায়ভাবে কোনো মালকে নিজেদের জন্য বৈধ করে নেন নি। অতঃপর আবু বকর সিদ্দিক রাযিয়াল্লাহু ‘আনহু গোলামকে জিজ্ঞাস করলেন, তুমি কি আমাদের জন্য কিছু দুধ দোহন করবে? গোলাম বল হ্যাঁ, এবং সেখানে ঐ গোলাম তাঁদের জন্য দুধ দোহন করল আর তাঁরা তা পান করলেন।
পাঠকবৃন্দ! এ ঘটনায় ন্যায়পরায়ণতা প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে মুসলিম ফিকহবিদদের আপত্তি রয়েছে। এ ক্ষেত্রে ফকিহদের অনেক মন্তব্য আপনার দৃষ্টিগোচর হবে, যা তারা নিজেদের কিতাবে আলোচনা করেছেন এ মর্মে যে, আবু বকর রাদিয়াল্লাহ ‘আনহু কর্তৃক এমন এক মেষচালক রাখালের কাছে দুধ চাওয়া যে ঐ মেষগুলোর মালিক নয়, এটা বৈধ হয়েছে কি? [. ইবন হাজার: ফতহুল বারী (৭/১০)।]
আল্লামা ইবন হাজার আসকালানী ফুকাহাদের এসব প্রশ্নের জবাবে বলেন, আবু বকর রাদিয়াল্লাহ ‘আনহু কর্তৃক গোলামকে প্রশ্ন করার অর্থ হলো তোমার প্রতি কি তোমার মালিকের এ সম্মতি রয়েছে যে, মরু-উপত্যকা অতিক্রমকারী তৃষ্ণার্তদেরকে মেহমান হিসেবে দুধ পান করাবে? অথবা আবু বকর রাদিয়াল্লাহ আনহুর প্রশ্নের কারণ এও হতে পারে যে, তিনি যখন ঐ গোলামের মালিকের নাম শুনে তাকে চিনতে পারলেন তখন তিনি পূর্ব সম্পর্কের সূত্রে এমনটি উপলব্ধি করলেন যে, ঐ মালিক তার দুধ পান সাদরে মেনে নেবে, কেবল তখনই তিনি গোলামকে দুধ দোহন বিষয়ক প্রশ্নটি করলেন।
সুধী মহল! লক্ষ্য করে দেখুন, এমন এক পেয়ালা দুধ পানের যৌক্তিকতার বিশ্লেষণেও ফুকহাবৃন্দ কতো উৎসুক ছিলেন যে, দুধ পান করেছে এমন ক’জন পরিশ্রান্ত ব্যক্তি যাদেরকে অন্যায়ভাবে নিজ গৃহ ও মাতৃভূমি থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে এবং তাদের নেতৃত্বে ছিলেন স্বয়ং রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম।
রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং তাঁর সাহাবীদের জীবনে এমন অনুপম দৃষ্টান্ত বরংবার চিত্রিত হয়েছে। তন্মধ্যে কোনো পুরুষ-স্বজনহীন উম্মে মা‘বাদ নামীয়া এক অবলা নারীর ঘটনাটি খুবই চিত্তাকর্ষক। ঘটনার বিবরণ এমন যে, হিজরতের সফরে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দু’সাথীসহ উম্মে মা‘বাদ আল-খাযাইয়্যাহ [. তার পুরো নাম আয়িকাহ বিনতে খালিদ ইবন মুনকিয আল-খাযাইয়্যাহ, আবার কেউ বলেন, আয়িকাহ বিনতে খালিদ ইবন খালীফ। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাথীদ্বয়সহ মদীনায় হিজরতের সময় খাদ্যের সন্ধানে তার তাবুতে গিয়েছিলেন।] এর বাড়িতে প্রবেশ করলেন। সে তখনও মুশরিকা ছিল। সে ছিল একা। তাঁরা ঐ মহিলার নিকট থেকে কিছু খেজুর ও গোশত ক্রয় করতে চাইলেন; কিন্তু ঐ মহিলার কাছে এসবের কিছুই পেলেন না। তখন রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাবুর এক প্রান্তে একটি বকরী দেখতে পেলেন। এমতাবস্থায় ঐ মহিলা এবং রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মধ্যে যে পরিশীলিত কথোপকথনটি হয়েছিল তা নিম্নরূপ:
উম্মে মা‘বাদ: এটি এমন একটি বকরী যেটিকে ক্লান্তির কারণে অন্য বকরীরা পেছনে রেখে চলে গেছে।
রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম: এটি থেকে কি কিছু দুধ আসবে?
উম্মে মা‘বাদ: এটি ক্লান্তির কারণে দুধ দেওয়া থেকেও অপারগ।
রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম:
«أَ تَأْذَنِيْنَ لِيْ أَنْ أَحْلِبَهَا؟»
“তুমি কি আমাকে অনুমতি দেবে যে, আমি এটিকে দোহন করে দেখব?” [. মুসতাদরাকে হাকিম, হাদীস নং ৪২৪৩ এবং তিনি বলেন এ হাদীসের সনদ সহীহ; কিন্তু বুখারী ও মুসলিম হাদীসটি সংকলন করেন নি। ইমাম যাহাবীও স্বীয় তালখীস গ্রন্থে এ মতটিকে সমর্থন করেছেন। আল্লামা ইবন হাজার তার আল-এসাবাহ (২/১৬৯) গ্রন্থে এ হাদীসটিকে ইমাম বগবী, ইবন শাহীন, ইবন সাকান ও ইবন মানদাহ এর সাথে বর্ণনা সম্পৃক্ত করেছেন। ত্ববরানী আল-কাবীর (৩৬০৫) আবু নাঈম আদ-দালাঈল (পৃষ্ঠা নং ২৮২-২৮৭)।]
এখানে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ন্যায়পরায়ণতা ও খোদাভীতিই লক্ষণীয় বিষয় নয়; বরং রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বিনম্র চিত্ত ও দয়াদ্র মানসিকতাও অনুধাবন করার মতো বিষয়। মনোযোগ দিয়ে দেখুন, কত নম্রভাবে তিনি অনুমতি চাইলেন। আর এ বিনম্র অনুমতি চাওয়ার কারণেই ঐ মহিলার জন্য রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের চাওয়াকে ফিরিয়ে দেওয়ার পথ বন্ধ হয়ে গেছে। তখন মহিলা বলল: আপনার ওপর আমার পিতা-মাতা কুরবান হোক। আপনি যদি একে দোহনযোগ্য মনে করেন তাহলে দোহন করুন।
এখানে আরেকটি বিষয় উল্লেখ্য যে, ঐ মহিলা কর্তৃক রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রথম চাওয়ায় বকরী ক্লান্তির বাহানায় দুধ না দেওয়ার ঘটনাটা হলো তার ইসলাম গ্রহণের পূর্ব মুহুর্ত। তারপর যখন রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বিনম্র স্বভাব, সর্বোত্তম চরিত্রমাধুর্য ও ভাষার কোমলতা দেখল তখন ইসলাম গ্রহণ করলো ও পিতা-মাতাকে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্য কুরবান হওযার ঘোষণার দ্বারা তার প্রায়শ্চিত্ত করল।
রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কর্তৃক সম্পদের লেন-দেনে ন্যায়-নীতির পরাকাষ্ঠা প্রদর্শনে আরো বড় দৃষ্টান্ত হলো যা তিনি সাফওয়ান ইবন উমাইয়্যাহ [. সাফওয়ান ইবন উমাইয়্যাহ ইবন খালফ আল-কারশী আল-জামহী। জাহেলী যুগে কুরাইশদের সম্ভ্রান্ত ব্যক্তিদের একজন। মুসলিমরা যাদের মন গলানোর চেষ্ঠা করতেন তাদের একজন। তার পিতাকে বদর যুদ্ধে কাফির অবস্থায় হত্যা করা হয়েছে। আর তার চাচা উবাই ইবন খালফকে উহুদ যুদ্ধে কাফির অবস্থায় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হত্যা করেছেন। মক্কা বিজয়ের দিন প্রথম পালিয়ে গেলেও পরে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে ফিরে এসে সর্বোত্তম পন্থায় ইসলাম গ্রহণ করেছে। আরো অধিক জানতে দেখুন: ইবন আব্দুল বার-এর আল-ইসতি‘আব: (২/২৮৪), ইবনুল আসীর এর উসদুল গাবাহ: (২/৪২০), ইবন হাজার-এর আল-ইসাবাহ: (৪০৭২)।] এর সাথে করলেন। মক্কা বিজয়ের পর রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হুনাইনের দিকে দৃষ্টি ফিরালেন। তখনও সাফওয়ান মুশরিক ছিল। তখন সময় রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হুনাইন যুদ্ধের জন্য কিছু যুদ্ধাস্ত্র প্রয়োজন হলো। আর সাফওয়ান ইবন উমাইয়্যাহ ছিল মক্কারই একজন বড় অস্ত্র ব্যবসায়ী। সে সময় সাফওয়ান বৃহৎ সংখ্যক সমরাস্ত্রের মালিক ছিল। সেই সাথে সে ছিল তখন খুব বিপর্যস্থ ও বশীভূত এবং মক্কায় তার কোনো কাফির সাথীও বিদ্যমান ছিল না। মুসলিমদের সাথে তার অতীত ইতিহাসও ছিল খুব কালিমাযুক্ত। তথাপিও রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার কাছ থেকে যুদ্ধাস্ত্রসমূহ ভাড়ায় নিতে চাইলেন। এমনকি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন বিজয়ী ও ক্ষমতাসীন হওয়ার পরও তার কাছ থেকে ভাড়ায় যুদ্ধাস্ত্র নিতে চাওয়াতে সে হতভম্ব হয়ে গেল এবং বিষয়টি পরিষ্কার করার জন্য সে প্রশ্ন করল: হে মুহাম্মাদ এটি কি আত্মসাৎ? উত্তরে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন,
«لاَ، بَلْ عَارِيَةٌ مَضْمُوْنَةٌ»
“না, বরং যামিনের ভিত্তিতে ভাড়া’’ [. আবু দাঊদ, হাদীস নং ৩৫৬২। আহমাদ, হাদীস নং ১৫৩৩৭। বাইহাকী, হাদীস নং ১১২৫৭। মুতাদরাকে হাকিম,হাদীস নং ২৩০১। হাকিম বলেন, এ হাদীসের সনদ মুসলিমের শর্তানুযায়ী সহীহ; তবে তিনি হাদীসটি সংকলন করেন নি। ইমাম যাহাবীও এ কথাটিকে সমর্থন করেছেন।]
তারপর রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার কাছ থেকে অর্থের বিনিময়ে ভাড়ায় যুদ্ধাস্ত্র গ্রহণ করলেন এবং তিনি নিজে এ কথায় যামিন হলেন যে, যদি কোনো অস্ত্র হারিয়ে যায় বা নষ্ট হয়ে যায় তাহলে তিনি তার ক্ষতিপূরণ দিবেন।
পাঠকবৃন্দ! এবার আপনারাই বলুন, পৃথিবীর বুকে কোনো কালে কোনো সম্প্রদায়ের ইতিহাসে কি এমন দৃষ্টান্ত খুজে পাওয়া যাবে?!
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/400/18
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।