hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

অমুসলিমদের সাথে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আচরণ প্রসঙ্গ

লেখকঃ ড. রাগিব আস-সারজানী

৩৩
চার. সুহাইল ইবন আমরের সাথে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সদাচরণ।
শুধু কুরাইশই নয় গোটা মক্কা নগরীর প্রতিনিধিত্বশীল ব্যক্তিদের একজন ছিল এ সুহাইল। সে ঐ সব শত্রুনেতাদের অন্তর্ভুক্ত ছিল রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে যাদের দীর্ঘ কালো ইতিহাস রয়েছে। অধিক বয়সী ও বহু সন্তানের অধিকারী ছিল। যাদের অধিকাংশই মক্কা বিজয়ী মুসলিম সৈন্যদের মধ্যে ছিলেন। মক্কা বিজয়ের পর এতদিন তার সাথে যে সব নেতারা ছিল তাদের কারো নিকট থেকেই কোনো সাহায্য পাওয়া গেল না। সকলেই মুসলিম সৈন্যদের সামনে দিয়েই দৌড়ে পালাল। তাই সেও পালিয়ে নিজ ঘরে গিয়ে উঠল। যেমনটি সে নিজেই বর্ণনা করছে,

‘সে দিন আমি দৌড়ে এসে আমার ঘরে উঠেই দরজা বন্ধ করে দিলাম!’

সে আরো বর্ণনা করছে, ‘অতঃপর আমি বিজয়ী সৈন্যদের মাঝে থাকা আমার ছেলে আব্দুল্লাহ ইবন সুহাইলের [. আব্দুল্লাহ ইবন সুহাইল ইবন আমর আল-ক্বারশী আল-আমেরী। উপনাম আবু সুহাইল। দ্বিতীয়বার আবিসিনিয়ায় হিজরত করেন। মক্কায় ফিরে আসার পরে তার পিতা তাকে ধরে বেঁধে রাখে এবং ইসলাম গ্রহণের কারণে অনেক নির্যাতন করে। বদর যুদ্ধের দিন তিনি ইসলামের কথা গোপন রেখে তার পিতার সাথে বেরিয়েছেন। যুদ্ধমাঠে এসে মুশরিকদের পক্ষ ত্যাগ করে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে মিলিত হয়ে যান। ১২ হিজরীতে ইয়ামামার ঘটনার দিন শহীদ হন। অধিকতর জানতে- ইবন আবদিল বার: আল-ইসতি‘আব (৩/৫৭), ইবন হাজার: আল-ইসাবাহ (৪৭৩৪)।] নিকট খবর পাঠালাম যেন সে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট আমার জন্য নিরাপত্তা চেয়ে নেয়। কেননা আমি আশংকা করছিলাম যে, আমাকে হত্যা করে ফেলা হবে। কারণ, আমি ছিলাম সবচেয়ে দাগী অপরাধী। হুদায়বিয়ার দিন আমি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে যা করেছি অন্য কেউ তা করে নি। আমিই সন্ধি-চুক্তি লিপিবদ্ধ করেছি। আবার উহুদ এবং বদরেও মুসলিমদের বিরুদ্ধে আমি লড়েছি।’ [. ইবনুল আসীর: উসদুল গাবাহ (৩/২১৯)।]

আল্লাহর পথ থেকে লোকদেরকে বিরত রাখার ব্যাপারে তার ইতিহাস ছিল অনেক দীর্ঘ। হুদাইবিয়ার দিন সে ছিল অনেক কঠোর ও একগুঁয়ে। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বার বার সুফারিশের পরও তার ছেলেকে মুসলিমদের সাথে যুক্ত হতে সে বাধা দিয়েছিল। কিন্তু এখন সে এমন এক মহা আশংকাজনক অবস্থানে এসে উপনীত হয়েছে যা তার প্রাণকেও হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে। মৃত্যুভয় তাকে এমন ভাবে গ্রাস করে নিয়েছে যে, সে তার ছোট ছেলেকে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দরবারে পৌঁছার অসীলাহ হিসেবে গ্রহণ করতেও দ্বিধাবোধ করে নি।

সুহাইল ইবন আমরেরই বর্ণনা: “(আমার ছেলে) আব্দুল্লাহ ইবন সুহাইল রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট গিয়ে আরয করল, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি তাকে (আমার বাবাকে) নিরাপত্তা দান করুন। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোনো দ্বিধা-দন্ধ না করেই বললেন, ‘সে আল্লাহর নিরাপত্তা দ্বারা নিরাপদ, সে বাইরে আসতে পারে’।” [. ইবন আবদিল বার: আল-ইসতি‘আব (৩/৫৭), ইবন হাজার: আল-ইসাবাহ (৩/২১৯)।]

বর্তমান পৃথিবীতে কোনো রাষ্ট্র অন্য রাষ্ট্রের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে পারলে তখন সেখানে তারা যেরূপ আচরণ করে থাকে তার সাথে মক্কা বিজয়ের পর মুহাম্মদুর রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতিপক্ষ নেতাদের সাথে আচরণের তুলনামূলক বিশ্লেষণ করা যেতে পারে। আমরা দেখতে পাই যে, পরাজিত রাষ্ট্রের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গের ভাগ্যে হত্যা, দেশান্তর কিংবা দীর্ঘ মেয়াদী জেল-যুলুম ছাড়া আর কিছুই জোটে না। আর লাঞ্চনা ও অপদস্থতার কথা তো বলারই অপেক্ষা রাখে না। কিন্তু রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শত্রুনেতাদেরকে শুধু নিরাপত্তাই দেন নি; বরং যথাযথ সম্মান প্রদর্শন এবং যাবতীয় নিন্দাবাদ এমনকি কটাক্ষ দৃষ্টির অবসান কল্পেও ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন। চূড়ান্ত সভ্যতা ও অসাধারণ মানবতা প্রদর্শনপূর্বক সাহাবীদেরকে তিনি বলছেন,

«فمن لقي سهيل بن عمرو فلا يشد النظر إليه»

“সুহাইল ইবন আমরের সাথে সাক্ষাৎ হলে তোমাদের কেউ যেন তার দিকে কটাক্ষ দৃষ্টিতে না তাকায়।” [. ইবনুল আসীর: উসদুল গাবাহ (২/৩৪৬)।]

দেখুন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অন্যের বিপদে আনন্দ প্রকাশের ভিত্তিতে হোক কিংবা শত্রুকে কাছে পেয়ে মনোতুষ্টি লাভের ভিত্তিতে কোনোভাবেই সুহাইলের প্রতি কটু দৃষ্টিপাত করতে সাহাবীদেরকে নিষেধ করেছেন। বরং আরো আগে বেড়ে তিনি তার প্রশংসা ও গুণাগুণ বর্ণনা করছেন। তিনি সাহাবীদেরকে বললেন, ‘‘সুহাইল একজন জ্ঞানী ও সম্মানী মানুষ। সুহাইলের মতো ব্যক্তির ইসলামকে অনুধাবন না করে থাকার কথা না। সে বুঝতে পেরেছে যে, এতোদিন সে যার ওপর প্রতিস্থাপিত ছিল তা তার জন্য উপকারী নয়।’’

সুবহানাল্লাহ! এ জাতীয় বক্তব্যের ওপর মন্তব্য করার ভাষা আমাদের নেই। আব্দুল্লাহ ইবন সুহাইল পিতাকে নিরাপত্তা প্রাপ্তির সংবাদ দিতে গিয়ে যখন রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এসব বক্তব্যের কথা বললেন, তখন সুহাইল বলে উঠল, ‘আল্লাহর শপথ! তিনি ছোট-বড় সকলের সাথেই সদাচারী’। [. ইবনু আবদিল বার: আল-ইসতি‘আব (৩/৫৭) ।]

সুহাইল ইবন আমর রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট আসলেন এবং ইসলামের পরশে ধন্য হলেন। পরবর্তী জীবনকে তিনি পরিপূর্ণাভাবে পাল্টে ফেললেন। যেমনটি বিভিন্ন রেওয়ায়াতে পাওয়া যায় যে, তিনি খুব বেশি বেশি সালাত আদায়, সাওম পালন ও দান-সদকা করতেন এবং আল্লাহর রাস্তায় জিহাদে অংশগ্রহণ করতেন। ইয়ারমুকের যুদ্ধে তিনি মুসলিমদের একটি গ্রুপের প্রধান ছিলেন।

প্রিয় পাঠক! রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সৃষ্টিকর্ম দেখুন, কীভাবে তিনি মানুষের জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিলেন। যা কেউ কল্পনাও করতে পারে নি। এটা একমাত্র সদাচরণ, অন্তরের প্রসস্ততা ও উদারতা এবং হিংসা-বিদ্বেষ, ঘৃণা ও শত্রুতা ভুলে যাওয়ার কারণেই হয়েছ।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন