hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ঈমানের মৌলিক নীতিমালা সংক্রান্ত মণিমুক্তা

লেখকঃ ড. মুহাম্মাদ ইয়োসরী

৩০
ত্রয়োবিংশ পরিচ্ছেদ: তাকদীর ও ফয়সালার ওপর ঈমান
ঈমানের অন্যতম আরেকটি রুকন হলো: তাকদীর ও ফয়সালার ভালো ও মন্দ এবং মিষ্টতা ও তিক্ততার প্রতি ঈমান আনয়ন করা, আরও মনে প্রাণে বিশ্বাস করা যে, এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে, যিনি সবকিছু সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর তা নির্ধারণ করেছেন যথাযথ অনুপাতে, আর তাঁর ফয়সালা সুনির্ধারিত, অবশ্যম্ভাবী।

তাকদীরের মূলকথা হলো, আল্লাহ তা‘আলার সৃষ্টির মধ্যে এটা তাঁর একটি গোপন বিষয়, তিনি তাঁর বান্দাগণের নিকট থেকে তার (তাকদীরের) ‘ইলম’ বা জ্ঞানকে লুকিয়ে রেখেছেন এবং তাদেরকে তা জানার চেষ্টা করতে নিষেধ করেছেন।

আর তাকদীরের প্রতি ঈমানের চারটি স্তর:

প্রথমত: আল্লাহর জ্ঞানের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা, যিনি অবগত আছেন যা হয়েছে, যা হবে এবং যা হয়নি, যদি হয় তা কিভাবে হবে; যিনি (আগাম) জানেন তাঁর সৃষ্ট মানুষের হৃদয় যা লুকিয়ে রাখে এবং যা প্রকাশ করে, আরও জানেন তাদের অবস্থাদি ও তাদের কর্মযজ্ঞ সম্পর্কে এবং তাদের ভবিষ্যৎ পরিণতি সম্পর্কে, যেখানে তারা পৌঁছাবে; অতঃপর তিনি তাদেরকে বের করে আনেন এ জগতের দিকে, তারপর তাদেরকে আদেশ করেন, নিষেধ করেন এবং দুঃখ-কষ্টে ফেলে তাদেরকে পরীক্ষা করেন, এমনকি শেষ পর্যন্ত তাদের মাঝে সুস্পষ্টভাবে প্রকাশ পায় তাঁর আগে থেকে জানা বিষয়টি এবং সাথে ফুটে উঠে তার পরিপূর্ণ তাৎপর্যটি- আল-কুরআনের ভাষায়:

﴿وَكَانَ ٱللَّهُ بِكُلِّ شَيۡءٍ عَلِيمٗا ٤٠﴾ [ الاحزاب : ٤٠ ]

“আর আল্লাহ সর্বকিছু সম্পর্কে সর্বজ্ঞ।” [সূরা আল-আহযাব, আয়াত: ৪০] যিনি পরিপূর্ণ জ্ঞানের অধিকারী বলে বিশেষিত। সুতরাং তাঁর সাথে সংযুক্ত হয় না কোনো ভুল-ত্রুটি এবং সন্দেহ, সংশয় ও বিভ্রান্তি।

দ্বিতীয়ত: আগাম জ্ঞানের ভিত্তিতে নির্ধারিত, সৃষ্টির তাকদীরের লিখের রাখার প্রতি ঈমান আনয়ন করা। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿أَلَمۡ تَعۡلَمۡ أَنَّ ٱللَّهَ يَعۡلَمُ مَا فِي ٱلسَّمَآءِ وَٱلۡأَرۡضِۚ إِنَّ ذَٰلِكَ فِي كِتَٰبٍ﴾ [ الحج : ٧٠ ]

“আপনি কি জানেন না যে, আসমান ও যমীনে যা কিছু আছে আল্লাহ তা জানেন। এসবই তো আছে এক কিতাবে।” [সূরা আল-হাজ, আয়াত: ৭০] আর তা হলো ‘লাওহে মাহফূয’ বা সংরক্ষিত ফলক, আর তা হচ্ছে মূল কিতাব। সুতরাং এমন কোনো সৃষ্টি নেই যার নাম আল্লাহ আসমান ও যমীন সৃষ্টির পঞ্চাশ হাজার বছর পূর্বে নির্দিষ্ট কিতাবে লিপিবদ্ধ করে রাখেন নি, অতঃপর তারা তাদের মাতৃগর্ভে থাকা অবস্থায় তিনি তাদের সৌভাগ্যবান ও হতভাগ্যদের নাম লিপিবদ্ধ করেছেন এবং লিপিবদ্ধ করেছেন তাদের রিযিক, কর্ম ও জীবনকাল, আর এটা হল পর্থিব জীবনকাল সম্পর্কিত তাকদীর বা পূর্বনির্ধারণ, আর ‘লাইলাতুল ক্বদর’ তথা ভাগ্যরজনীতে লিপিবদ্ধ করেন বার্ষিক তাকদীর, আর বান্দার ওপর সুনির্ধারিত নিয়তির বাস্তব প্রয়োগ হয় তার নির্ধারিত সময়ে- তার নাম হলো দৈনন্দিন তাকদীর, আর প্রত্যেকটি ঘটনার জন্য একটি নির্ধারিত অবস্থান রয়েছে এবং অবশ্যই তোমরা জানতে পারবে।

তৃতীয়ত: আল্লাহ তা‘আলার বাস্তবায়নযোগ্য ইচ্ছা বা অভিপ্রায়ের প্রতি ঈমান আনয়ন করা। কারণ, তিনি যা চান হয়ে যায় এবং তিনি যা চান না তা হয় না; তিনি যাকে চান অনুগ্রহ করে হিদায়েত দান করেন এবং যাকে ইচ্ছা ন্যায়-নীতির ভিত্তিতেই পথভ্রষ্ট করেন। তাঁর সিদ্ধান্ত রদ (বাতিল) করার মতো কেউ নেই, কেউ নেউ তাঁর হুকুমকে পরিবর্তন করার মত এবং তাঁর নির্দেশকে পরাস্ত করার মতোও কেউ নেই, আর বান্দাদেরও ইচ্ছা বা অভিপ্রায় রয়েছে। সুতরাং তাদের মধ্যে যে ব্যক্তি সঠিক ও সতাতার পথ চাইবে, সে তার রবের পথকে গ্রহণ করবে, আর যে ব্যক্তি বিপথে যাওয়ার ইচ্ছা করবে, সে শয়তানকে পরিচালক বা কাণ্ডারী হিসেবে গ্রহণ করবে।

আর যে ব্যক্তি কোনো কিছুর ইচ্ছা করবে, বিশ্বাস করতে হবে- তার ইচ্ছার পূর্বেই আল্লাহর ইচ্ছা এবং তার অভিপ্রায়ের পূর্বেই আল্লাহ তা‘আলার অভিপ্রায়। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَمَا تَشَآءُونَ إِلَّآ أَن يَشَآءَ ٱللَّهُ رَبُّ ٱلۡعَٰلَمِينَ ٢٩﴾ [ التكوير : ٢٩ ]

“আর তোমরা ইচ্ছে করতে পার না, যদি না সৃষ্টিকুলের রব আল্লাহ ইচ্ছে করেন।” [সূরা আত-তাকওয়ীর, আয়াত: ২৯] আর আল্লাহ তা‘আলার ইচ্ছা ও অভিপ্রায়টি তাঁর জ্ঞান ও প্রজ্ঞার ওপর প্রতিষ্ঠিত।

চতুর্থত: আল্লাহ তা‘আলা সকল কিছুর স্রষ্টা- এ কথার ওপর বিশ্বাস স্থাপন করা। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿ٱللَّهُ خَٰلِقُ كُلِّ شَيۡءٖ﴾ [ الرعد : ١٦ ]

“আল্লাহ সকল বস্তুর স্রষ্টা।” [সূরা আর-রা‘দ, আয়াত: ১৬] আর মহান আল্লাহ সকল বান্দা ও তাদের কর্মেরও স্রষ্টা। তিনি বলেন,

﴿وَٱللَّهُ خَلَقَكُمۡ وَمَا تَعۡمَلُونَ ٩٦﴾ [ الصافات : ٩٦ ]

“আর আল্লাহই সৃষ্টি করেছেন তোমাদেরকে এবং তোমরা যা কর তাও।” [সূরা আস-সাফ্ফাত, আয়াত: ৯৬]

আর রবের ওপর হৃদয় মনের ভরসা করাটা উপার্জন ও উপায়-উপকরণ গ্রহণ করাকে নিষেধ করে না, বরং তা (ভরসা করাটা) সর্বশ্রেষ্ঠ উপায় ও অবলম্বন।

আর উপায়-উপকরণের ওপর ভরসা করা মানে ‘তাওহীদ’ তথা একত্ববাদের মধ্যে শির্ক করা, আর তাকে (উপায়-উপকরণকে) নিষ্ফল মনে করাটা হবে বিবেক-বুদ্ধির কমতি বা ঘাটতির কারণ এবং তাকে বিলকুল উপেক্ষা করা মানে শরী‘আতের দলীলের দুর্নাম করা।

আর বান্দাকে যা পাবে তাতে কখনও ভুল করবে না, আর বান্দা যা হারাবে তা সে কখনও পাবে না। আর আল্লাহ তা‘আলা যা ফয়সালা করবেন, তা অবশ্যই হবে, আর নির্বোধ হতভাগা সে ব্যক্তি, যে তার নিজের অবস্থাকে তিরস্কার করে, আর শুধু বিপদ-মুসীবত ও দুঃখ-কষ্টের সময়ই তাকদীরকে যুক্তি হিসেবে পেশ করা হবে, দোষ-ত্রুটি ও পাপের বেলায় নয়।

আল্লাহ তা‘আলার রহমত ও বিচক্ষণতার পরিপূর্ণতার কারণে মন্দকে তাঁর প্রতি সম্পর্কিত করা যাবে না। সুতরাং যদি মন্দকে কোনোভাবে তাঁর ফয়সালাকৃত বস্তুর প্রতি সম্পর্কিত করা হয়, তাহলে তাঁর পক্ষ থেকে তা ন্যায় ও উত্তম বলে গণ্য হবে।

আর তাকদীর ও ফয়সালার ওপর ঈমান স্থাপন করার ফলে সরাসরি উপায়-উপকরণের উপস্থিতির সময়েও হৃদয় মন রবের ওপর নির্ভর করবে, তাকদীরের তিক্ততার প্রতি সন্তুষ্ট থাকবে এবং ধৈর্য বা কৃতজ্ঞতা প্রকাশের মাধ্যমে সাওয়াবের আশা করবে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন