মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
প্রথম আয়াতে উল্লেখিত اَلطَّارِقُ (আত-ত্বারিক) শব্দের আলোকে এ সূরাটির নাম সূরা ত্বারিক রাখা হয়েছে। এর অর্থ উজ্জ্বল নক্ষত্র।
সূরার বিষয়বস্তু :
সর্বপ্রথম আকাশের তারকাগুলোকে এ মর্মে সাক্ষী হিসেবে পেশ করা হয়েছে যে, এ বিশ্বে কোন একটি জিনিসও নেই, যা কোন এক সত্তার রক্ষণাবেক্ষণ ছাড়া নিজের জায়গায় প্রতিষ্ঠিত থাকতে পারে। তারপর মানুষের নিজের সত্তার প্রতি আকৃষ্ট করে বলা হয়েছে, দেখো কীভাবে এক বিন্দু শুক্র থেকে অস্তিত্ব দান করে তাকে একটি জীবন্তত গতিশীল মানুষে পরিণত করা হয়েছে। এরপর বলা হয়েছে, যে আল্লাহ এভাবে তাকে অস্তিত্ব দান করেছেন তিনি নিশ্চিতভাবেই তাকে দ্বিতীয়বার সৃষ্টি করার ক্ষমতা রাখেন।
সবশেষে বলা হয়েছে, আকাশ থেকে বৃষ্টি বর্ষণ এবং মাটি থেকে গাছপালা ও ফসল উৎপাদন যেমন কোন খেল-তামাশার ব্যাপার নয়, বরং একটি দায়িত্বপূর্ণ কাজ, ঠিক তেমনি কুরআনে যেসব প্রকৃত সত্য ও নিগূঢ় তত্ত্ব বর্ণনা করা হয়েছে সেগুলোও কোন হাসি-তামাশার ব্যাপার নয়। বরং সেগুলো একেবারে পাকাপোক্ত ও অপরিবর্তনীয় কথা। কাফিররা এ ভুল ধারণা নিয়ে বসে আছে যে, তাদের চালবাজী ও কৌশল কুরআনের এই দাওয়াতকে ক্ষতিগ্রস্ত ও প্রতিহত করতে সক্ষম হবে। কিন্তু তারা জানে না যে, আল্লাহও কৌশল অবলম্বন করেছেন এবং তাঁর কৌশলের মোকাবিলায় কাফিরদের যাবতীয় চালবাজী ও কৌশল ব্যর্থ হয়ে যাবে। তারপর রাসূলুল্লাহ ﷺ কে সান্ত্বনা এবং কাফিরদেরকে ধমক দিয়ে কথা এভাবে শেষ করা হয়েছে যে, তুমি একটু সবর করো এবং কিছু দিন কাফিরদেরকে ইচ্ছেমতো চলার সুযোগ দাও। কিছুদিন যেতে না যেতেই তারা টের পেয়ে যাবে যে, তাদের চালবাজী ও প্রতারণা কুরআনকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে না।
(১) وَالسَّمَآءِ শপথ আকাশের وَالطَّارِقِ এবং রাত্রিতে আগমনকারীর; (২) وَمَاۤ اَدْرَاكَ তুমি কি জান مَا الطَّارِقُ রাত্রিতে আগমনকারী কী? (৩) اَلنَّجْمُ ওটা নক্ষত্র اَلثَّاقِبُ উজ্জ্বল! (৪) اِنْ নেই كُلُّ এমন কোন نَفْسٍ জীব لَمَّا নেই عَلَيْهَا যার উপর حَافِظٌ কোন সংরক্ষক। (৫) فَلْيَنْظُرْ সুতরাং লক্ষ্য করা উচিত اَلْاِنْسَانُ মানুষের مِمَّ خُلِقَ তাকে কিসের থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে। (৬) خُلِقَ তাকে সৃষ্টি করা হয়েছে مِنْ مَّآءٍ পানি হতে دَافِقٍ প্রবল বেগে নির্গত, (৭) يَخْرُجُ যা বের হয় مِنْ ۢبَيْنِ মধ্য হতে اَلصُّلْبِ পিঠ وَالتَّرَآئِبِ ও বুকের হাড়ের। (৮) اِنَّهٗ নিশ্চয় তিনি عَلٰى رَجْعِه তাকে পুনরায় ফিরিয়ে আনতে لَقَادِرٌ সক্ষম। (৯) يَوْمَ যেদিন تُبْلٰى যাচাই-বাছাই হবে اَلسَّرَآئِرُ গোপন বিষয় সমূহের, (১০) فَمَا সেদিন থাকবে না لَهٗ তার জন্য مِنْ قُوَّةٍ কোন শক্তি وَلَا نَاصِرٍ এবং সাহায্যকারীও না। (১১) وَالسَّمَآءِ শপথ আকাশের ذَاتِ الرَّجْعِ বৃষ্টিধারণকারী, (১২) وَالْاَرْضِ এবং শপথ জমিনের ذَاتِ الصَّدْعِ ফেটে যাওয়া, (১৩) اِنَّهٗ নিশ্চয় এটা لَقَوْلٌ কথা فَصْلٌ মীমাংসাকারী। (১৪) وَمَا এবং নয় هُوَ এটা بِالْهَزْلِ বেহুদা কথাবার্তা। (১৫) اِنَّهُمْ নিশ্চয় তারা يَكِيْدُوْنَ ষড়যন্ত্র করেছে كَيْدًا ভীষণ ষড়যন্ত্র (১৬) وَاَكِيْدُ আর আমিও একটি কৌশল অবলম্বন করি كَيْدًا ভীষণ কৌশল। (১৭) فَمَهِّلِ অতএব অবকাশ দাও اَلْكَافِرِيْنَ কাফিরদেরকে, اَمْهِلْهُمْ তাদেরকে অবকাশ দাও رُوَيْدًا কিছু কালের জন্যে।
সরল অনুবাদ :
(১) শপথ আকাশের এবং রাত্রিতে আগমনকারীর; (২) তুমি কি জান রাত্রিতে আগমনকারী কী? (৩) ওটা উজ্জ্বল নক্ষত্র!১ (৪) নিশ্চয় প্রত্যেক জীবের উপরই এক সংরক্ষক রয়েছে।২ (৫) সুতরাং মানুষের লক্ষ্য করা উচিত যে, তাকে কিসের দ্বারা সৃষ্টি করা হয়েছে।৩ (৬) তাকে সৃষ্টি করা হয়েছে প্রবল বেগে নির্গত পানি হতে,৪ (৭) যা বের হয় পিঠ ও বুকের হাড়ের মধ্য হতে।৫ (৮) নিশ্চয় তিনি তাকে পুনরায় ফিরিয়ে আনতে সক্ষম।৬ (৯) যেদিন গোপন বিষয়সমূহের যাচাই-বাছাই হবে,৭ (১০) সেদিন তার কোন শক্তি থাকবে না এবং সাহায্যকারীও থাকবে না। (১১) শপথ বেশি বেশি বৃষ্টি বর্ষণকারী আকাশের,৮ (১২) এবং শপথ জমিনের- যা ফেটে যায়,৯ (১৩) নিশ্চয় এটি (কুর’আন) মীমাংসাকারী কথা। (১৪) এবং এটা বেহুদা কথাবার্তা নয়।১০ (১৫) নিশ্চয় তারা (কাফিররা) ভীষণভাবে ষড়যন্ত্র করে।১১ (১৬) আর আমিও একটি কৌশল করি।১২ (১৭) অতএব কাফিরদেরকে অবকাশ দাও; আর তাদেরকে অবকাশ দাও কিছু কালের জন্যে।১৩
টীকা :
[১] প্রথম শপথে আকাশের সাথে وَالطَّارِقُ শব্দ যোগ করা হয়েছে। এর অর্থ রাত্রিতে আগমনকারী। নক্ষত্র দিনের বেলায় লুক্কায়িত থাকে এবং রাতে প্রকাশ পায়, এজন্য নক্ষত্রকে اَلطَّارِقُ বলা হয়েছে। আয়াতে কোন নক্ষত্রকে নির্দিষ্ট করা হয়নি। তাই যে কোন উজ্জল নক্ষত্রকে বুঝানো যায়।
[২] এটা শপথের জবাব। حَافِظٌ শব্দের অর্থ তত্ত্বাবধায়ক। অর্থাৎ আল্লাহ তা‘আলা আকাশ ও নক্ষত্রের শপথ করে বলেছেন, প্রত্যেক মানুষের উপর তত্ত্বাবধায়ক বা আমলনামা লিপিবদ্ধকারী ফেরেশতা নিযুক্ত রয়েছে। সে তার সমস্ত কাজকর্ম ও নড়াচড়া দেখে ও জানে। অন্য আয়াতে আছে, নিশ্চয় তোমাদের উপর নিয়োজিত রয়েছে তত্ত্বাবধায়করা, সম্মানিত লেখকরা। (সূরা ইনফিতার : ১০ -১১)
তাছাড়া حَافِظٌ এর অপর অর্থ বিপদাপদ থেকে হেফাযতকারীও হয়ে থাকে। আল্লাহ তা‘আলা প্রত্যেক মানুষের হেফাযতের জন্য ফেরেশতা নিযুক্ত করেছেন। তারা দিন-রাত মানুষের হেফাযতে নিয়োজিত থাকে। এক আয়াতে এ কথা পরিষ্কারভাবে বর্ণিত হয়েছে- ‘‘মানুষের জন্য পালাক্রমে আগমনকারী পাহারাদার ফেরেশতা নিযুক্ত রয়েছে। তারা আল্লাহর আদেশে সামনে ও পেছনে থেকে তার হেফাযত করে।’’ (সূরা রাদ : ১১) তবে আল্লাহ তা‘আলা যার জন্য যে বিপদ অবধারিত করে দিয়েছেন, তারা সে বিপদ থেকে হেফাযত করে না।
[৩] এখানে আল্লাহ তা‘আলা যে মানুষকে পুনরায় সৃষ্টি করতে সক্ষম তার উপর মানুষেরই নিজের সত্তা থেকে প্রমাণাদি উপস্থাপন করছেন। মানুষ তার নিজের সম্পর্কে একটু চিন্তা করে দেখুক। তাকে কীভাবে কোথা থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে। তাকে অত্যন্ত দুর্বল বস্তু হতে সৃষ্টি করা হয়েছে। যিনি প্রথমবার তাকে সৃষ্টি করতে পারেন, তিনি অবশ্যই দ্বিতীয়বার সৃষ্টি করতে সক্ষম।
[৪] অর্থাৎ বীর্য থেকে, যা পুরুষ ও নারী থেকে সবেগে বের হয়। এ থেকেই সন্তান জন্মলাভ করে।
[৫] এখানে মূল আয়াতে সুলব ( صُلْبٌ ) ও তারায়েব ( تَرَائِبٌ ) শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। সুলব মেরুদন্ডকে ও তারায়েব বুকের পাঁজরকে বলা হয়। যেহেতু যে উপাদান থেকে পুরুষ ও নারীর জন্ম হয় তা মেরুদন্ড ও বুকের মধ্যস্থিত ধড় থেকে বের হয়, তাই বলা হয়েছে পিঠ ও বুকের মধ্যস্থল থেকে নির্গত পানি থেকে মানুষকে সৃষ্টি করা হয়েছে। মানুষের হাত-পা কর্তিত অবস্থায়ও এ উপাদান জন্ম নেয়। তাই এ কথা বলা ঠিক নয় যে, সারা শরীর থেকে এ উপাদান বের হয়। আসলে শরীরের প্রধান অঙ্গগুলোই হচ্ছে এর উৎস।
[৬] উদ্দেশ্য এই যে, যিনি প্রথমবার বীর্য থেকে একজন জীবিত শ্রোতা ও দ্রষ্টা মানব সৃষ্টি করেছেন, তিনি তাকে পুনরায় ফিরিয়ে দিতে অর্থাৎ, মৃত্যুর পর জীবিত করতে আরো ভালরূপে সক্ষম। যদি তিনি প্রথমটির ক্ষমতা রেখে থাকেন এবং তারই বদৌলতে মানুষ দুনিয়ায় জীবন ধারণ করছে, তাহলে তিনি দ্বিতীয়টির ক্ষমতা রাখেন না, এ ধারণা পোষণ করার পেছনে এমন কী শক্তিশালী যুক্তি পেশ করা যেতে পারে?
[৭] গোপন রহস্য বলতে মানুষের যেসব বিশ্বাস ও সংকল্প অন্তরে লুকায়িত ছিল, দুনিয়াতে কেউ জানত না এবং যেসব কাজকর্ম সে গোপনে করেছিল, কিয়ামতের দিন সে সবগুলোও প্রকাশ করে দেয়া হবে। অর্থাৎ তাদের আমলনামা পেশ করা হবে, আর তখন ভাল-মন্দ, উত্তম-অনুত্তম সবই স্পষ্ট হয়ে যাবে।
[৮] আকাশের জন্য (বৃষ্টি বর্ষণকারী) বিশেষণটি ব্যবহার করা হয়েছে। ‘রাজআ’ শব্দটির আভিধানিক অর্থ হচ্ছে, ফিরে আসা। তবে পরোক্ষভাবে আরবী ভাষায় এ শব্দটি বৃষ্টির জন্য ব্যবহার করা হয়। কারণ বৃষ্টি মাত্র একবার বর্ষিত হয়েই খতম হয়ে যায় না; বরং একই মওসূমে বারবার এবং কখনো মওসূম ছাড়াই একাধিকবার ফিরে আসে এবং যখন তখন বর্ষিত হয়।
[৯] জমিন বিদীর্ণ হওয়ার অর্থ উদ্ভিদ উৎপন্ন হওয়া।
[১০] আসমান ও জমিনের শপথ করে যে কথাটি বলা হয়েছে সেটা হচ্ছে, কুরআনের সত্যতা প্রমাণ করা। বলা হয়েছে, এ কুরআন হক ও সত্য বাণী।
[১১] অর্থাৎ কাফিররা কুরআনের দাওয়াতকে ব্যর্থ করার জন্য নানা ধরনের অপকৌশলের আশ্রয় নিচ্ছে। কুরআনের পথ থেকে মানুষদেরকে দূরে রাখতে চাচ্ছে।
[১২] অর্থাৎ এদের কোন অপকৌশল কামিয়াব হবে না। অবশেষে এরা যেন ব্যর্থ হয়ে যায় সে জন্য আমি কৌশল করছি। আমি তাদেরকে এমনভাবে ছাড় দিচ্ছি যে তারা বুঝতেই পারছে না।
[১৩] অর্থাৎ এদেরকে ছেড়ে দিন, তাদের ধ্বংসের ব্যাপারে তাড়াতাড়ি করবেন না। তাদেরকে অল্প কিছু দিন অবকাশ দিন। দেখুন, তাদের শাস্তি, আযাব ও ধ্বংস কিভাবে তাদের উপর আপতিত হয়।
এ সূরার শিক্ষাসমূহ :
মানুষের যাবতীয় আমল সংরক্ষণ করা হচ্ছে। প্রত্যেককে তার আমল অনুযায়ী প্রতিদান দেয়া হবে।
মানুষের অন্তর তার বিশুদ্ধ আক্বীদার মূল কেন্দ্রবিন্দু। কিয়ামত দিবসে তার হৃদয়ে লালিত সকল গোপন বিশ্বাসের প্রকাশ ঘটবে এবং সে আলোকেই তার বিচার হবে।
কুরআন মানুষের জীবনবিধান- এর মধ্যেই রয়েছে মানব জাতির যাবতীয় বিষয়ের সমাধান।
দুনিয়ায় কাফির-মুশরিকদের জৌলুশ দেখে বিভ্রান্ত হওয়ার কিছু নেই; বরং আল্লাহ তাদের ষড়যন্ত্রের যথোচিত জবাব দেবেন।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/319/11
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।