মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
প্রথম আয়াতে উল্লেখিত اِنْشَقَّتْ (ইনশাক্কাত) শব্দটি থেকে এ সূরার নামকরণ করা হয়েছে। এর মূলে রয়েছে اِنْشِقَاقٌ (ইনশিকাক) শব্দ। اِنْشِقَاقٌ অর্থ হচ্ছে, ফেটে যাওয়া।
নাযিলের সময়কাল :
এটি ইসলামের প্রাথমিক যুগে মক্কায় অবতীর্ণ সূরাগুলোর অন্তর্ভুক্ত।
সূরার বিষয়বস্তু :
এ সূরাটির বিষয়বস্তু হচ্ছে কিয়ামত ও আখেরাত। এর প্রথম পাঁচটি আয়াতে কিয়ামতের অবস্থা ও কিয়ামত যে সত্যিই অনুষ্ঠিত হবে তার প্রমাণ পেশ করা হয়েছে।
এরপর ৬ থেকে ১৯ পর্যন্ত আয়াতে বলা হয়েছে, মানুষ সচেতন বা অচেতন যে কোনভাবেই হোক না কেন সেই মনযিলের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, যেখানে নিজেকে তার রবের সামনে পেশ করতে হবে। তখন সমস্ত মানুষ দুভাগে ভাগ হয়ে যাবে। (এক) যাদের আমলনামা ডান হাতে দেয়া হবে। তাদেরকে কোন প্রকার কঠিন হিসাব-নিকাশের সম্মুখীন হওয়া ছাড়াই সহজে মাফ করে দেয়া হবে। (দুই) যাদের আমলনামা পিঠের দিকে দেয়া হবে। তারা চাইবে কোনভাবে যদি তাদের মৃত্যু হতো। কিন্তু মৃত্যুর বদলে তাদেরকে জাহান্নামে ফেলে দেয়া হবে।
সবশেষে কাফিরদেরকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির খবর শুনানো হয়েছে। এর সঙ্গে যারা ঈমান এনে নেক আমল করে তাদেরকে অগণিত পুরস্কার ও উত্তম প্রতিদানের সুখবর শুনানো হয়েছে।
(১) اِذَا যখন اَلسَّمَآءُ আকাশ اِنْشَقَّتْ ফেটে যাবে, (২) وَاَذِنَتْ এবং আদেশ পালন করবে لِرَبِّهَا স্বীয় প্রতিপালকের وَحُقَّتْ আর সে এরই উপযুক্ত। (৩) وَاِذَا এবং যখন اَلْاَرْضُ জমিন مُدَّتْ সম্প্রসারিত করা হবে। (৪) وَاَلْقَتْ এবং সে নিক্ষেপ করবে مَا যা আছে فِيْهَا তার অভ্যন্তরে وَتَخَلَّتْ এবং খালি হয়ে যাবে। (৫) وَاَذِنَتْ এবং আদেশ পালন করবে لِرَبِّهَا তার প্রতিপালকের وَحُقَّتْ এবং এটাই তার করণীয়। (৬) يَاۤ اَيُّهَا الْاِنْسَانُ হে মানবজাতি! اِنَّكَ নিশ্চয় তুমি كَادِحٌ কঠোর সাধনাকারী اِلٰى رَبِّكَ তোমার প্রতিপালকের নিকট পৌঁছার জন্য كَدْحًا কঠোর চেষ্টার মতো فَمُلَاقِيْهِ অতঃপর তুমি তাঁর সাক্ষাৎ লাভ করবে। (৭) فَاَمَّا অতএব مَنْ যাকে اُوْتِيَ দেয়া হবে كِتَابَهٗ তার আমলনামা بِيَمِيْنِه তার ডান হাতে, (৮) فَسَوْفَ অচিরেই يُحَاسَبُ হিসাব-নিকাশ নেয়া হবে حِسَابًا يَّسِيْرًا অতি সহজ হিসাব। (৯) وَيَنْقَلِبُ এবং সে ফিরে যাবে اِلٰۤى اَهْلِه তার স্বজনদের নিকট مَسْرُوْرًا আনন্দিত হয়ে; (১০) وَاَمَّا আর مَنْ যাকে اُوْتِيَ দেয়া হবে كِتَابَهٗ তার আমলনামা وَرَآءَ পিছন দিকে ظَهْرِه তাদের পিঠের। (১১) فَسَوْفَ অতঃপর অচিরেই يَدْعُوْ সে ডাকবে ثُبُوْرًا ধ্বংসকে। (১২) وَيَصْلٰى এবং সে প্রবেশ করবে سَعِيْرًا জ্বলন্ত অগ্নিতে। (১৩) اِنَّهٗ অবশ্য সে كَانَ ছিল فِيْۤ اَهْلِه তার স্বজনদের মধ্যে مَسْرُوْرًا সানন্দে, (১৪) اِنَّهٗ নিশ্চয় সে ظَنَّ ভাবতো اَنْ لَّنْ يَّحُوْرَ তাকে কখনই ফিরে যেতে হবে না। (১৫) بَلٰى হ্যাঁ, اِنَّ নিশ্চয় رَبَّهٗ তার প্রতিপালক كَانَ হলেন بِه তার উপর بَصِيْرًا সর্বদ্রষ্টা।
সরল অনুবাদ :
(১) যখন আকাশ ফেটে যাবে,১ (২) এবং স্বীয় প্রতিপালকের আদেশ পালন করবে; আর সে এরই উপযুক্ত।২ (৩) আর যখন জমিনকে সম্প্রসারিত করা হবে।৩ (৪) এবং জমিন তার অভ্যন্তরে যা আছে তা বাইরে নিক্ষেপ করবে এবং খালি হয়ে যাবে।৪ (৫) আর সে তার প্রতিপালকের আদেশ পালন করবে এবং সে এরই উপযুক্ত।৫ (৬) হে মানব! তুমি তোমার প্রতিপালকের নিকট পৌঁছার জন্য কঠোর সাধনা করছ, অতঃপর তুমি তাঁর সাক্ষাৎ লাভ করবেই।৬ (৭) অতএব যাকে তার আমলনামা ডান হাতে দেয়া হবে, (৮) তার হিসাব-নিকাশ অতি সহজভাবে নেয়া হবে।৭ (৯) এবং সে তার স্বজনদের নিকট৮ আনন্দিত হয়ে ফিরে যাবে; (১০) এবং যাকে তার আমলনামা পিঠের পিছন দিকে দেয়া হবে। (১১) অতঃপর অচিরেই সে মৃত্যুকে ডাকবে। (১২) এবং সে জ্বলন্ত অগ্নিতে প্রবেশ করবে। (১৩) অবশ্য সে তো স্বজনদের মধ্যে সানন্দে ছিল, (১৪) যেহেতু সে ভাবতো যে, তাকে কখনই (আল্লাহর নিকট) ফিরে যেতে হবে না।৯ (১৫) হ্যাঁ,১০ নিশ্চয় তার প্রতিপালক তার উপর দৃষ্টি রাখেন।
টীকা :
[১] সেটা হবে কিয়ামতের দিন।
[২] এখানে কিয়ামতের দিন আকাশ ও পৃথিবীর উপর আল্লাহ তা‘আলার কর্তৃত্ব সম্পর্কে বলা হয়েছে, وَاَذِنَتْ لِرَبِّهَا وَحُقَّتْ এর মধ্যে اَذِنَتْ অর্থ শুনেছে তথা আদেশ পালন করেছে। সে হিসেবে وَاَذِنَتْ لِرَبِّهَا এর শাব্দিক অর্থ হয়, সে নিজের রবের হুকুম শুনবে। এর মানে শুধুমাত্র হুকুম শুনা নয়; বরং এর মানে সে হুকুম শুনে একজন অনুগতের ন্যায় নির্দেশ পালন করেছে এবং একটুও অবাধ্যতা প্রকাশ করেনি। আর حُقَّتْ এর অর্থ আদেশ পালন করাই তার কর্তব্য ছিল। কারণ সে একজন মহান বাদশার কর্তৃত্বাধীন ও পরিচালনাধীন। যার নির্দেশ অমান্য করা যায় না, আর তার হুকুমের বিপরীত করা যায় না।
[৩] مُدَّتْ এর অর্থ টেনে লম্বা করা, ছড়িয়ে দেয়া। পৃথিবীকে ছড়িয়ে দেবার মানে হচ্ছে, সাগর নদী ও সমস্ত জলাশয় ভরে দেয়া হবে। পাহাড়গুলো চূর্ণবিচূর্ণ করে চারদিকে ছড়িয়ে দেয়া হবে। পৃথিবীর সমস্ত উঁচু-নীচু জায়গা সমান করে সমগ্র পৃথিবীটাকে একটি সমতল প্রান্তরে পরিণত করা হবে। (সূরা ত্ব-হা : ১০৬- ১০৭)
[৪] অর্থাৎ পৃথিবী তার গর্ভস্থিত সবকিছু বের করে একেবারে শূণ্য হয়ে যাবে। পৃথিবীর গর্ভে গুপ্ত ধনভান্ডার, খনি এবং সৃষ্টির আদি থেকে অন্ত পর্যন্ত মৃত মানুষের দেহকণা ইত্যাদি রয়েছে। জমিন এসব বস্তু আপন গর্ভ থেকে বাইরে নিক্ষেপ করবে। অনুরূপভাবে যত মৃত মানুষ তার মধ্যে রয়েছে সবাইকে ঠেলে বাইরে বের করে দেবে।
[৫] যখন এসব ঘটনাবলি ঘটবে তখন কী হবে, এ কথা পরিষ্কার করে বলা হয়নি। কারণ এর পরবর্তী বক্তব্যগুলো নিজে নিজেই তা প্রকাশ করে দিচ্ছে। এ বক্তব্যগুলোতে বলা হচ্ছে, হে মানুষ! তুমি তোমার রবের দিকে এগিয়ে চলছো। শীঘ্রই তাঁর সামনে হাযির হয়ে যাবে। তখন তোমার আমলনামা তোমার হাতে দেয়া হবে। আর তোমার আমলনামা অনুযায়ী তোমাকে পুরস্কার দেয়া হবে।
[৬] كَدْحٌ এর অর্থ কোন কাজে পূর্ণ চেষ্টা ও শক্তি ব্যয় করা। মানুষের প্রত্যেক চেষ্টা ও অধ্যবসায় আল্লাহর দিকে চূড়ান্ত হবে। অর্থাৎ মানুষ দুনিয়ায় যা কিছু কষ্ট-সাধনা প্রচেষ্টা ও সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে সে সম্পর্কে সে মনে করতে পারে যে তা কেবল দুনিয়ার জীবন পর্যন্তই সীমাবদ্ধ এবং দুনিয়াবী স্বার্থ লাভ করাই এর উদ্দেশ্য। কিন্তু আসলে সে সচেতন বা অচেতনভাবে নিজের রবের দিকেই এগিয়ে যাচ্ছে এবং অবশেষে তাকে তাঁর কাছেই পৌঁছতে হবে। প্রত্যেক মানুষ আখেরাতে তার প্রতিপালকের সাথে সাক্ষাৎ করবে এবং হিসাবের জন্য তাঁর সামনে উপস্থিত হবে।
[৭] এতে মুমিনদের অবস্থা বর্ণনা করা হয়েছে যে, তাদের আমলনামা ডান হাতে আসবে এবং তাদের সহজ হিসাব নিয়ে জান্নাতের সুসংবাদ দান করা হবে। তারা তাদের পরিবার-পরিজনের কাছে হৃষ্টচিত্তে ফিরে যাবে। তার হিসেব নেয়ার ব্যাপারে কড়াকড়ি করা হবে না। রাসূলুল্লাহ ﷺ বললেন, কিয়ামতের দিন যার হিসাব নেয়া হবে, সে আযাব থেকে রক্ষা পাবে না। এ কথা শুনে আয়েশা (রাঃ) প্রশ্ন করলেন, কুরআনে কি فَسَوْفَ يُحَاسَبُ حِسَابًا يَّسِيْرًا বলা হয়নি? রাসূলুল্লাহ ﷺ বললেন, এই আয়াতে যাকে সহজ হিসাব বলা হয়েছে, সেটা প্রকৃতপক্ষে পরিপূর্ণ হিসাব নয়; বরং কেবল আল্লাহ রাববুল আলামীনের সামনে পেশ করা। যে ব্যক্তির কাছ থেকে তার কাজকর্মের পুরোপুরি হিসাব নেয়া হবে, সে আযাব থেকে কিছুতেই রক্ষা পাবে না। (সহীহ বুখারী, হা/৪৯৩৯; সহীহ মুসলিম, হা/২৮৭৬)
[৮] কোন কোন মুফাসসির বলেন, নিজের লোকজন বলতে পরিবার-পরিজন, আত্মীয়-স্বজন ও সাথী-সহযোগীদের কথা বুঝানো হয়েছে। কাতাদাহ বলেন, এখানে পরিবার বলে জান্নাতে তার যে পরিবার থাকবে তাদের বুঝানো হয়েছে।
[৯] অর্থাৎ যার আমলনামা তার পিঠের দিক থেকে বাম হাতে আসবে, সে মরে মাটি হয়ে যাওয়ার আকাঙ্ক্ষা করবে, যাতে আযাব থেকে বেঁচে যায়। কিন্তু সেখানে তা সম্ভবপর হবে না। তাকে জাহান্নামে প্রবেশ করানো হবে। এর এক কারণ এই বলা হয়েছে যে, সে দুনিয়াতে তার পরিবার-পরিজনের মধ্যে আখেরাতের প্রতি উদাসীন হয়ে আনন্দ-উল্লাসে জীবন যাপন করত। সে তার রবের কাছে ফিরে যাওয়ার ব্যাপারে বিশ্বাসী ছিল না। আর যেহেতু পুনরুত্থান ও আখেরাতের প্রতি বিশ্বাসী ছিল না, সুতরাং হিসাব-নিকাশও গ্রহণ করা হবে না।
[১০] অর্থাৎ সে যা মনে করেছে তা ঠিক নয়। সে অবশ্যই তার রবের কাছে ফিরে যাবে। অবশ্যই সে পুনরুত্থিত হবে।
(১৬) فَلَا অতএব না, اُقْسِمُ আমি শপথ করি بِالشَّفَقِ আকাশের লালিমার (১৭) وَاللَّيْلِ এবং শপথ রাত্রির وَمَا وَسَقَ আর তাতে যা কিছুর সমাবেশ ঘটে তার, (১৮) وَالْقَمَرِ এবং শপথ চন্দ্রের, اِذَا যখন اِتَّسَقَ তা পরিপূর্ণ হয়, (১৯) لَتَرْكَبُنَّ নিশ্চয় তোমরা আরোহণ করবে طَبَقًا অন্য স্তরে عَنْ طَبَقٍ এক স্তর হতে। (২০) فَمَا لَهُمْ সুতরাং তাদের কী হলো যে, لَا يُؤْمِنُوْنَ তারা ঈমান আনে না। (২১) وَاِذَا আর যখন قُرِئَ পাঠ করা হয় عَلَيْهِمْ তাদের নিকট اَلْقُرْاٰنُ কুর’আন لَا يَسْجُدُوْنَ তখন তারা সিজদাহ করে না? (২২) بَلْ বরং اَلَّذِيْنَ যারা كَفَرُوْا কুফরি করেছে يُكَذِّبُوْنَ তারাই মিথ্যা প্রতিপন্ন করে। (২৩) وَاللهُ (অথচ) আল্লাহ اَعْلَمُ ভালোভাবে জানেন بِمَا সে সম্পর্কে যা يُوْعُوْنَ তারা জমা করত। (২৪) فَبَشِّرْهُمْ সুতরাং তাদেরকে সুসংবাদ প্রদান কর بِعَذَابٍ اَلِيْمٍ যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির। (২৫) اِلَّا তবে اَلَّذِيْنَ যারা اٰمَنُوْا ঈমান আনে وَعَمِلُوْا الصَّالِحَاتِ ও সৎকর্ম করে لَهُمْ তাদের জন্য রয়েছে اَجْرٌ পুরস্কার غَيْرُ مَمْنُوْنٍ অফুরন্ত।
সরল অনুবাদ :
(১৬) আমি শপথ করি১১ আকাশের লালিমার (১৭) এবং রজনীর, আর তাতে যা কিছুর সমাবেশ ঘটে তার, (১৮) এবং শপথ চন্দ্রের, যখন তা পরিপূর্ণ হয়, (১৯) নিশ্চয় তোমরা এক স্তর হতে অন্য স্তরে আরোহণ করবে।১২ (২০) সুতরাং তাদের কী হলো যে, তারা ঈমান আনে না। (২১) এবং তাদের নিকট কুরআন পাঠ করা হলে তারা সিজদা করে না?১৩ (২২) বরং কাফিররাই মিথ্যা প্রতিপন্ন করে। (২৩) (অথচ) তারা (আমলনামায়) যা জমা করেছে সে সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে বেশি পরিজ্ঞাত। (২৪) সুতরাং তাদেরকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির সুসংবাদ প্রদান কর। (২৫) যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে তাদের জন্যে রয়েছে অফুরন্ত পুরস্কার।
টীকা :
[১১] এখানে আল্লাহ তা‘আলা তিনটি বস্তুর শপথ করে মানুষকে আবার اِنَّكَ كَادِحٌ اِلٰى رَبِّكَ كَدْحًا আয়াতে বর্ণিত বিষয়ের প্রতি মনোযোগী করেছেন। শপথের জবাবে বলা হয়েছে যে, মানুষ এক অবস্থার উপর স্থিতিশীল থাকে না। বরং তার অবস্থা প্রতিনিয়তই পরিবর্তিত হতে থাকে। যৌবন থেকে বার্ধক্য, বার্ধক্য থেকে মৃত্যু, মৃত্যু থেকে বরযখ (মৃত্যু ও কিয়ামতের মাঝখানের জীবন), বরযখ থেকে পুনরুজ্জীবন, পুনরুজ্জীবন থেকে হাশরের ময়দান, তারপর হিসেব-নিকেশ এবং শাস্তি ও পুরস্কারের অসংখ্য মনযিল মানুষকে অতিক্রম করতে হবে। এ বিভিন্ন পর্যায় প্রমাণ করছে যে, একমাত্র আল্লাহই তার মাবুদ, তিনি বান্দাদের কর্মকান্ড নিজস্ব প্রজ্ঞা ও রহমতে নিয়ন্ত্রণ করেন। আর বান্দা মুখাপেক্ষী, অপারগ, মহান প্রবল পরাক্রমশালী দয়ালু আল্লাহর কর্তৃত্বাধীন।
[১২] اِتَّسَقَ শব্দটি وَسَقَ থেকে উদ্ভূত, যার অর্থ একত্রিত করা, পূর্ণ করা। চন্দ্রের একত্রিত করার অর্থ তার আলোকে একত্রিত করা। এটা চৌদ্দ তারিখের রাত্রিতে হয়, যখন চন্দ্র পূর্ণ হয়ে যায়। এখানে চন্দ্রের বিভিন্ন অবস্থার দিকে ইঙ্গিত রয়েছে। চন্দ্র প্রথমে খুবই সরু ধনুকের মতো দেখা যায়। এরপর প্রত্যহ এর আলো বৃদ্ধি পেতে পেতে পূর্ণিমার চাঁদ হয়ে যায়। অবিরাম পরিবর্তনের সাক্ষ্যদাতা উপরোক্ত বস্তুগুলোর শপথ করে আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন, অবশ্যই তোমরা ধাপে ধাপে আরোহণ করবে।
[১৩] অর্থাৎ যখন তাদের সামনে সুস্পষ্ট হেদায়াত পরিপূর্ণ কুরআন পাঠ করা হয়, তখনও তারা আল্লাহর দিকে নত হয় না। سُجُوْدٌ এর আভিধানিক অর্থ নত হওয়া, আনুগত্য করা। বলাবাহুল্য, এখানে পারিভাষিক সাজদার পাশাপাশি আল্লাহর সামনে আনুগত্য সহকারে নত ও বিনীত হওয়াও উদ্দেশ্য। আবু হুরায়রা (রাঃ) এ সূরা পড়ে সাজদাহ করলেন, তারপর লোকদের দিকে ফিরে জানালেন যে, রাসূলুল্লাহ ﷺ স্বয়ং এ সূরা পড়ার পরে সাজদাহ করেছেন। (সহীহ মুসলিম, হা/৫৭৮)
এ সূরার শিক্ষাসমূহ :
মানুষ অবশ্যই তার রবের সাথে সাক্ষাত করবে।
ঈমানদারদের হিসাব সহজ হবে। আর তা হবে কেবল প্রদর্শনী মাত্র।
মহান আল্লাহ সকল প্রকার দলীল পেশ করে ঈমান আনতে আদেশ করেছেন। কাজেই মানুষের নাফরমানী করার কোন যুক্তি নেই।
সিজদার আয়াত তিলাওয়াত করলে সিজদা করতে হবে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/319/9
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।