hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

আম্মা পারা

লেখকঃ শাইখ আবদুর রহমান বিন মুবারক আলী

১৭
৯২- সূরা আল-লাইল
সূরার নামকরণ :

সূরার প্রথমে উল্লেখিত اَللَّيْلُ (আল-লাইল) শব্দের আলোকে এ সূরার নাম রাখা হয় সূরা আল-লাইল। এর অর্থ রাত্রি।

নাযিলের সময়কাল :

পূর্ববর্তী সূরা আশ-শামসের সাথে এই সূরাটির বিষয়বস্তুর গভীর মিল দেখা যায়। এ থেকে বুঝা যায় যে, এ দুটি সূরা প্রায় একই সময়ে মক্কায় নাযিল হয়।

সূরার বিষয়বস্তু :

জীবনের দুটি ভিন্ন পথের পার্থক্য এবং তাদের পরিণাম ও ফলাফলের প্রভেদ বর্ণনা করাই হচ্ছে এর মূল বিষয়বস্তু। প্রথম অংশে বলা হয়েছে, মানুষ ব্যক্তিগত, জাতিগত ও দলগতভাবে দুনিয়ায় যা কিছু প্রচেষ্টা ও কর্ম তৎপরতা চালায় তা অনিবার্যভাবে নৈতিক দিক দিয়ে ঠিক তেমনি ভিন্ন, যেমন দিন ও রাত এবং পুরুষ ও নারীর মধ্যে ভিন্নতা রয়েছে।

এই উভয় প্রকার নমুনা বর্ণনা করা হয়েছে ছোট ছোট সুগঠিত বাক্যের সাহায্যে। প্রথম ধরনের বৈশিষ্টগুলো হচ্ছে, অর্থ-সম্পদ দান করা, আল্লাহভীতি ও তাকওয়া অবলম্বন করা এবং সত্যকে সত্য বলে মেনে নেয়া। দ্বিতীয় ধরনের বৈশিষ্টগুলো হচ্ছে কৃপণতা করা, আল্লাহর সন্তুষ্টি ও অসন্তুষ্টির পরোয়া না করা এবং ভালো কথাকে মিথ্যা বলে গণ্য করা। তারপর বলা হয়েছে, এই উভয় ধরনের পরস্পর বিরোধী কর্ম নিজের পরিণাম ও ফলাফলের দিক থেকে মোটেই এক নয়।

দ্বিতীয় অংশেও এই একই রকম সংক্ষিপ্তভাবে তিনটি মৌলিক তত্ত পেশ করা হয়েছে। (এক) দুনিয়ার এই পরীক্ষাগারে আল্লাহ মানুষকে কিছু না জানিয়ে একেবারে অজ্ঞ করে পাঠিয়ে দেননি। বরং জীবনের বিভিন্ন পথের মধ্যে সোজা পথ কোনটি এটি তাকে জানিয়ে দেয়ার দায়িত্ব তিনি নিজের জিম্মায় নিয়েছেন। এখন মানুষ এর মধ্যে থেকে কোনটি চাইবে- সে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা মানুষের নিজের দায়িত্ব।

রাসূলুল্লাহ ﷺ ও কিতাবের মাধ্যমে যে হিদায়াত পেশ করা হচ্ছে, যে ব্যক্তি তাকে মিথ্যা গণ্য করবে এবং তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে, তার জন্য প্রস্তুত রয়েছে জ্বলন্ত আগুন। আর যে আল্লাহভীরু ব্যক্তি সম্পূর্ণ নিঃস্বার্থভাবে নিছক নিজের রবের সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য নিজের ধন-মাল সৎপথে ব্যয় করবে তার রব তার প্রতি সন্তুষ্ট হবেন এবং তাকে এত বেশি দান করবেন, যার ফলে সে খুশী হয়ে যাবে।

আয়াত : ১-১১



وَاللَّيْلِ اِذَا يَغْشٰى (১) وَالنَّهَارِ اِذَا تَجَلّٰى (২) وَمَا خَلَقَ الذَّكَرَ وَالْاُنْثٰى (৩) اِنَّ سَعْيَكُمْ لَشَتّٰى (৪) فَاَمَّا مَنْ اَعْطٰى وَاتَّقٰى (৫) وَصَدَّقَ بِالْحُسْنٰى (৬) فَسَنُيَسِّرُهٗ لِلْيُسْرٰى (৭) وَاَمَّا مَنْ ۢبَخِلَ وَاسْتَغْنٰى (৮) وَكَذَّبَ بِالْحُسْنٰى (৯) فَسَنُيَسِّرُهٗ لِلْعُسْرٰى (১০) وَمَا يُغْنِيْ عَنْهُ مَالُهٗۤ اِذَا تَرَدّٰى (১১)

শাব্দিক অনুবাদ :

(১) وَاللَّيْلِ শপথ রাত্রির, اِذَا যখন يَغْشٰى সে আচ্ছন্ন করে, (২) وَالنَّهَارِ শপথ দিনের, اِذَا যখন تَجَلّٰى সে আলোকিত হয় (৩) وَمَا এবং যিনি, خَلَقَ সৃষ্টি করেছেন اَلذَّكَرَ নর وَالْاُنْثٰى ও নারী, (৪) اِنَّ নিশ্চয় سَعْيَكُمْ তোমাদের কর্ম প্রচেষ্টা لَشَتّٰى বিভিন্ন ধরনের। (৫) فَاَمَّا অতএব مَنْ যে ব্যক্তি اَعْطٰى দান করে وَاتَّقٰى এবং খোদাভীরু হয়, (৬) وَصَدَّقَ এবং সত্য মনে করে بِالْحُسْنٰى উত্তম বিষয়কে, (৭) فَسَنُيَسِّرُهٗ অতঃপর আমি তার জন্য সহজ করে দেব لِلْيُسْرٰى সহজ পথে চলাকে। (৮) مَنْ وَاَمَّا আর যে ব্যক্তি بَخِلَ কৃপণতা করে وَاسْتَغْنٰى ও বেপরোয়া হয় (৯) وَكَذَّبَ এবং মিথ্যা মনে করে بِالْحُسْنٰى উত্তম বিষয়কে, (১০) فَسَنُيَسِّرُهٗ আমি তার জন্য সহজ করে দেব لِلْعُسْرٰى কঠিন পরিণামের পথে চলাকে। (১১) وَمَا يُغْنِيْ আর কোনই কাজে আসবে না عَنْهُ তার জন্য مَالُهٗ তার ধন-সম্পদ اِذَا যখন تَرَدّٰى সে অধঃপতিত হবে।

সরল অনুবাদ :

(১) শপথ রাত্রির- যখন সে আচ্ছন্ন করে, (২) শপথ দিনের- যখন সে আলোকিত হয় (৩) এবং তাঁর, যিনি নর ও নারী সৃষ্টি করেছেন, (৪) নিশ্চয় তোমাদের কর্মপ্রচেষ্টা বিভিন্ন ধরনের।১ (৫) অতএব২ যে দান করে এবং খোদাভীরু হয়, (৬) এবং উত্তম বিষয়কে সত্য মনে করে, (৭) আমি তাকে সহজ পথে চলাকে সুগম করে দেব।৩ (৮) আর৪ যে কৃপণতা করে ও বেপরোয়া হয় (৯) এবং উত্তম বিষয়কে মিথ্যা মনে করে, (১০) আমি তাকে কঠিন পরিণামের পথে চলাকে সুগম করে দেব।৫ (১১) যখন সে (জাহান্নামে) অধঃপতিত হবে, তখন তার ধন-সম্পদ তার কোনই কাজে আসবে না।৬

টীকা :

[১] এ কথার জন্যই রাত ও দিন এবং নারী ও পুরুষের জন্মের কসম খাওয়া হয়েছে। এর তাৎপর্য এই যে, যেভাবে রাত ও দিন এবং পুরুষ ও নারী পরস্পর থেকে ভিন্ন ও বিপরীত ঠিক তেমনই তোমরা যেসব কর্মপ্রচেষ্টা চালাচ্ছো সেগুলোও বিভিন্ন ধরনের এবং বিপরীত। কেউ ভালো কাজ করে, আবার কেউ খারাপ কাজ করে। হাদীসে আছে, প্রত্যেক মানুষ সকাল বেলায় উঠে নিজেকে ব্যবসায়ে নিয়োজিত করে। অতঃপর কেউ এই ব্যবসায়ে সফলতা অর্জন করে এবং নিজেকে আখেরাতের আযাব থেকে মুক্ত করে; আবার কেউ নিজেকে ধ্বংস করে।

(সহীহ মুসলিম, হা/২২৩)

[২] আল্লাহ তা‘আলা পবিত্র কুরআনের কর্মপ্রচেষ্টার ভিত্তিতে মানুষকে দু’ভাগে বিভক্ত করেছেন এবং প্রত্যেকের কয়েকটি বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করেছেন।

[৩] এটি হচ্ছে উপরোক্ত প্রচেষ্টার ফল। যে ব্যক্তি উক্ত বিষয়গুলো সঠিকভাবে করে, আল্লাহ তা‘আলা তার জন্য উত্তম কাজ করা আর খারাপ কাজ থেকে বিরত থাকা সহজ করে দেন।

[৪] এটি দ্বিতীয় ধরনের মানসিক প্রচেষ্টা। মহান আল্লাহ এখানে তাদের তিনটি কর্ম উল্লেখ করে বলেছেন। আল্লাহ যা নির্দেশ দিয়েছেন তা তাঁর পথে ব্যয় করার ব্যাপারে কৃপণতা করে তথা ফরয-ওয়াজিব-মুস্তাহাব কোন প্রকার সাদাকা দেয় না, তাঁর ইবাদাত হতে বিমুখ হয়ে নিজেকে অমুখাপেক্ষী মনে করে এবং উত্তম কালেমা তথা ঈমানের যাবতীয় বিষয়কে মিথ্যা মনে করে; তার জন্য কঠিন পথে চলা সহজ হয়। এখানে কঠিন পথ অর্থ খারাপ কাজকে সহজ করে দেয়ার কথা বলা হয়েছে।

[৫] এ আয়াতগুলোতে তাকদীরের সু্স্পষ্ট ব্যাখ্যা দেয়া আছে। হাদীসে এসেছে, আলী (রাঃ) বলেন, আমরা বাকী আল-গারকাদে এক জানাযায় এসেছিলাম। রাসূলুল্লাহ ﷺ-ও সেখানে আসলেন, তিনি বসলে আমরাও বসে গেলাম। তার হাতে ছিল একটি ছড়ি। তিনি সেটি দিয়ে মাটিতে খোঁচা দিচ্ছিলেন। তারপর বললেন, তোমাদের প্রত্যেকের এমনকি প্রতিটি আত্মারই স্থান জান্নাত কিংবা জাহান্নাম নির্ধারিত হয়ে গেছে। প্রত্যেকের জন্যই সৌভাগ্য কিংবা দুর্ভাগ্য লিখে দেয়া হয়েছে। তখন একজন বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আমরা কি আমাদের লিখার উপর নির্ভর করে কাজ-কর্ম ছেড়ে দেব না? কারণ যারা সৌভাগ্যশালী তারা তো অচিরেই সৌভাগ্যের দিকে ধাবিত হবে। আর যারা দুর্ভাগা তারা দুর্ভাগ্যের দিকে ধাবিত হবে। তখন রাসূলুল্লাহ ﷺ বললেন, যারা সৌভাগ্যশালী তাদের জন্য সৌভাগ্যপূর্ণ কাজ করা সহজ করে দেয়া হবে, পক্ষান্তরে যারা দুর্ভাগা তাদের জন্য দুর্ভাগাপূর্ণ কাজ করা সহজ করে দেয়া হবে। তারপর তিনি এ আয়াত পাঠ করলেন। (সহীহ বুখারী, হা/৪৯৪৮; সহীহ মুসলিম, হা/২৬৪৭)

[৬] تَرَدّٰى এর শাব্দিক অর্থ অধঃপতিত হওয়া ও ধ্বংস হওয়া। অর্থাৎ একদিন তাকে অবশ্যই মরতে হবে। তখন দুনিয়াতে যেসব ধন-সম্পদে কৃপণতা করেছিল তা তার কোন কাজে আসবে না। (মুয়াসসার)

আয়াত : ১২-২১

اِنَّ عَلَيْنَا لَلْهُدٰى (১২) وَاِنَّ لَنَا لَلْاٰخِرَةَ وَالْاُوْلٰى (১৩) فَاَنْذَرْتُكُمْ نَارًا تَلَظّٰى (১৪) لَا يَصْلَاهَاۤ اِلَّا الْاَشْقٰى (১৫) اَلَّذِيْ كَذَّبَ وَتَوَلّٰى (১৬) وَسَيُجَنَّبُهَا الْاَتْقٰى (১৭) اَلَّذِيْ يُؤْتِيْ مَالَهٗ يَتَزَكّٰى (১৮) وَمَا لِاَحَدٍ عِنْدَهٗ مِنْ نِّعْمَةٍ تُجْزٰى (১৯) اِلَّا ابْتِغَآءَ وَجْهِ رَبِّهِ الْاَعْلٰى (২০) وَلَسَوْفَ يَرْضٰى (২১)

শাব্দিক অনুবাদ :

(১২) اِنَّ নিশ্চয় عَلَيْنَا আমার দায়িত্ব لَلْهُدٰى পথপ্রদর্শন করা। (১৩) وَاِنَّ আর অবশ্যই لَنَا আমাদের অধিকারে لَلْاٰخِرَةَ পরকাল وَالْاُوْلٰى ইহকাল। (১৪) فَاَنْذَرْتُكُمْ অতএব আমি তোমাদেরকে সতর্ক করে দিয়েছি نَارًا অগ্নি সম্পর্কে تَلَظّٰى প্রজ্বলিত। (১৫) لَا يَصْلَاهَا এতে প্রবেশ করবে না اِلَّا ব্যতীত اَلْاَشْقٰى হতভাগা, (১৬) اَلَّذِيْ যে كَذَّبَ মিথ্যারোপ করে وَتَوَلّٰى ও মুখ ফিরিয়ে নেয়। (১৭) وَسَيُجَنَّبُهَا অচিরেই তা থেকে দূরে রাখা হবে اَلْاَتْقٰى খোদাভীরু ব্যক্তিকে, (১৮) اَلَّذِيْ যে يُؤْتِيْ দান করে مَالَهٗ তার ধন-সম্পদ يَتَزَكّٰى আত্মশুদ্ধির জন্যে। (১৯) وَمَا এবং নেই لِاَحَدٍ কারো জন্য عِنْدَهٗ তার নিকট مِنْ نِّعْمَةٍ কোন অনুগ্রহ تُجْزٰى যার প্রতিদান তাকে দিতে হবে। (২০) اِلَّا তবে اِبْتِغَآءَ আশায় وَجْهِ সন্তুষ্টি رَبِّه  তার প্রতিপালকের اَلْاَعْلٰى মহান। (২১) وَلَسَوْفَ অচিরেই يَرْضٰى সে সন্তুষ্টি লাভ করবে।

সরল অনুবাদ :

(১২) নিশ্চয় আমার দায়িত্ব হলো পথপ্রদর্শন করা।৭ (১৩) আর আমি ইহকালের ও পরকালের মালিক।৮ (১৪) অতএব আমি তোমাদেরকে প্রজ্বলিত অগ্নি৯ সম্পর্কে সতর্ক করে দিয়েছি। (১৫) এতে প্রবেশ করবে না সেই হতভাগা ছাড়া, (১৬) যে মিথ্যারোপ করে ও মুখ ফিরিয়ে নেয়।১০ (১৭) আর এ থেকে দূরে রাখা হবে খোদাভীরু ব্যক্তিকে, (১৮) যে আত্মশুদ্ধির জন্যে তার ধন-সম্পদ দান করে।১১ (১৯) এবং তার উপর কারো কোন প্রতিদানযোগ্য অনুগ্রহ থাকে না।১২ (২০) তার মহান প্রতিপালকের সন্তুষ্টি অন্বেষণ ব্যতীত। (২১) সে সত্বরই সন্তুষ্টি লাভ করবে।১৩

টীকা :

[৭] অর্থাৎ হেদায়াত ও প্রদর্শিত সরল পথ প্রদর্শনের দায়িত্ব আল্লাহ তা‘আলার। এ আয়াতের আরেকটি অর্থ হতে পারে। আর তা হলো, হেদায়াতপূর্ণ সরল পথ আল্লাহ তা‘আলার সান্নিধ্যে পৌঁছে দেয়, যেমনিভাবে ভ্রষ্টপথ জাহান্নামে পৌঁছে দেয়। নর

[৮] এ বক্তব্যটির অর্থ, দুনিয়া ও আখেরাত উভয় জাহানের মালিক আল্লাহ তা‘আলাই। উভয় জাহানেই আল্লাহ তা‘আলার পূর্ণ মালিকানা ও ক্ষমতা প্রতিষ্ঠিত। তাই একমাত্র তাঁরই নিকটে চাওয়া উচিত, অন্য কোন সৃষ্টির নিকট নয়।

[৯] এ লেলিহান আগুনের ভয়াবহতা সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন, কিয়ামতের দিন যে জাহান্নামীর সবচেয়ে হালকা আযাব হবে তার অবস্থা হচ্ছে এই যে, তার পায়ের নীচে আগুনের কয়লা রাখা হবে। আর এতেই তার মগজ উৎলাতে থাকবে। (সহীহ বুখারী, হা/৬৫৬১; সহীহ মুসলিম, হা/২১৩)

[১০] অর্থাৎ এই জাহান্নামে নিতান্ত হতভাগা ব্যক্তিই দাখিল হবে, যে আল্লাহর আয়াতসমূহের প্রতি মিথ্যারোপ করে এবং আনুগত্য থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন, প্রত্যেক উম্মতই জান্নাতে যাবে তবে যে অস্বীকার করবে (সে জান্নাতে যেতে পারবে না)। সাহাবায়ে কিরাম বললেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ! কে অস্বীকার করবে? তিনি বললেন, যে আমার অনুসরণ করবে সে জান্নাতে যাবে, আর যে আমার অবাধ্য হবে সেই আমাকে অস্বীকার করবে।

(সহীহ বুখারী, হা/৭২৮০)

[১১] এতে সৌভাগ্যশালী মুত্তাকীদের প্রতিদান বর্ণিত হয়েছে। অর্থাৎ যে ব্যক্তি আল্লাহর তাক্বওয়া শক্তভাবে অবলম্বন করে এবং নিজের গোনাহ থেকে বিশুদ্ধ হওয়ার উদ্দেশ্যে একমাত্র আল্লাহর পথে ব্যয় করে, তাকে জাহান্নামের আগুন থেকে দূরে রাখা হবে।

[১২] সে নিজের অর্থ যাদের জন্য ব্যয় করে, তাদের কোন অনুগ্রহ তার উপর ছিল না, যার প্রতিদান বা পুরস্কার দিচ্ছে অথবা ভবিষ্যতে তাদের থেকে কোন স্বার্থ উদ্ধারের অপেক্ষায় তাদেরকে উপহার-উপঢৌকন ইত্যাদি ব্যয় করছে; বরং সে নিজের মহান সর্বশক্তিমান রবের সন্তুষ্টি লাভের জন্যই এসব লোককে সাহায্য করছে। বিভিন্ন বর্ণনায় এসেছে, এ আয়াতটি আবু বকর (রাঃ) এর শানে নাযিল হয়েছে। মক্কার যেসব অসহায় গোলাম ও বাঁদীরা ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন এবং এই অপরাধে তাদের মালিকরা তাদের উপর চরম নির্যাতন চালাচ্ছিল, সেসব দাসকে আবু বকর সিদ্দীক (রাঃ) প্রচুর অর্থ দিয়ে ক্রয় করে মুক্ত করে দেন। এ ধরনের মুসলিমরা সাধারণত দুর্বল ও শক্তিহীন হত। একদিন তার পিতা আবু কোহাফা বললেন, তুমি যখন গোলামদেরকে মুক্তই করে দাও, তখন শক্তিশালী ও সাহসী গোলাম দেখেই মুক্ত করো, যাতে ভবিষ্যতে সে শত্রুর হাত থেকে তোমাকে রক্ষা করতে পারে। আবু বকর (রাঃ) বললেন, কোন মুক্ত করা মুসলিম থেকে উপকার লাভ করা আমার লক্ষ্য নয়। আমি তো কেবল আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্যই তাদেরকে মুক্ত করি। (মুস্তাদরাকে হাকিম : ২/৫৭২, নং ৩৯৪২)

[১৩] বলা হয়েছে, শীঘ্রই আল্লাহ এ ব্যক্তিকে এত কিছু দেবেন, যার ফলে সে খুশী হয়ে যাবে। অর্থাৎ যে ব্যক্তি কেবলমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যেই দুনিয়াতে তার ধনসম্পদ ব্যয় করেছে এবং কষ্ট করেছে, আল্লাহ তা‘আলাও আখেরাতে তাকে সন্তুষ্ট করবেন এবং জান্নাতের মহা নিয়ামত দান করবেন।

এ সূরার শিক্ষাসমূহ :

মহান আল্লাহ অসীম ক্ষমতার মালিক।

বান্দার আগ্রহের উপর ভিত্তি করে মহান আল্লাহ তাকে ভালো কাজের তাওফীক্ব দিয়ে থাকেন।

মহান আল্লাহ বান্দাহকে নবী-রাসূল পাঠিয়ে এবং কিতাব নাযিল করে হেদায়াতের পথ বাতলে দিয়েছেন।

দুনিয়া ও আখেরাতের একচ্ছত্র মালিকানা মহান আল্লাহর। তাই কেবল তাঁর কাছেই চাইতে হবে।

আবু বকর (রাঃ) জান্নাতের সুসংবাদ পেয়েছেন।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন