hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

আম্মা পারা

লেখকঃ শাইখ আবদুর রহমান বিন মুবারক আলী

২৮
১০৩- সূরা আসর
সূরার নামকরণ :

প্রথম আয়াতে উল্লেখিত اَلْعَصْرُ (আল-আসর) শব্দের আলোকে এ সূরার নামকরণ করা হয় আল-আসর। এর অর্থ সময়।

নাযিলের সময়কাল :

এই সূরার বিষয়বস্তু সাক্ষ্য দেয় যে, এটি মক্কী যুগের প্রাথমিক পর্যায়ে নাযিল হয়। সে সময় ইসলামের শিক্ষাকে সংক্ষিপ্ত ও অত্যন্ত হৃদয়গ্রাহী বাক্যের সাহায্যে বর্ণনা করা হতো।

সূরার বিষয়বস্তু :

এ সূরাটি ব্যাপক অর্থবোধক সংক্ষিপ্ত বাক্য সমন্বিত বাণীর একটি অতুলনীয় নমুনা। কয়েকটা মাপজোকা শব্দের মধ্যে গভীর অর্থের এমন এক ভান্ডার রেখে দেয়া হয়েছে, যা বর্ণনা করার জন্য একটি বিরাট গ্রন্থও যথেষ্ট নয়। এর মধ্যে সম্পূর্ণ দ্ব্যর্থহীন ভাষায় মানুষের সাফল্য ও কল্যাণের এবং তার ধ্বংস ও সর্বনাশের পথ বর্ণনা করা হয়েছে। সাহাবায়ে কেরামের দৃষ্টিতে এটি ছিল একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সূরা। তারা দুজন যখন পরস্পর মিলিত হতেন, তখন তারা একজন অপরজনকে সূরা আসর না শুনানো এবং সালাম বিনিময় না করা পর্যন্ত পরস্পর থেকে বিদায় নিতেন না। (তাবারানী, মু‘জামুল আওসাত : ৫১২০)

আয়াত : ১-৩



وَالْعَصْرِ (১) اِنَّ الْاِنْسَانَ لَفِيْ خُسْرٍ (২) اِلَّا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ وَتَوَاصَوْا بِالْحَقِّ وَتَوَاصَوْا بِالصَّبْرِ (৩)

শাব্দিক অনুবাদ :

(১) وَالْعَصْرِ কসম যুগের, (২) اِنَّ নিশ্চয় اَلْاِنْسَانَ মানুষ لَفِيْ خُسْرٍ ক্ষতিগ্রস্তের মধ্যে রয়েছে। (৩) اِلَّا তবে (তারা নয়) اَلَّذِيْنَ যারা اٰمَنُوْا বিশ্বাস স্থাপন করেছে وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ ও সৎকাজ করেছে وَتَوَاصَوْا এবং পরস্পরকে উপদেশ দিয়েছে بِالْحَقِّ সত্যের وَتَوَاصَوْا এবং পরস্পরকে উপদেশ দিয়েছে بِالصَّبْرِ ধৈর্যধারণের।

সরল অনুবাদ :

(১) কসম যুগের,১ (২) নিশ্চয় মানুষ২ ক্ষতিগ্রস্ত;৩ (৩) কিন্তু তারা নয়,৪ যারা বিশ্বাস স্থাপন করে৫ এবং সৎকাজ করে;৬ আর যারা পরস্পরকে উপদেশ দেয় সত্যের৭ এবং উপদেশ দেয় সবরের।৮

টীকা :

এ সূরায় এ কথার উপর সময়ের শপথ করা হয়েছে যে, মানুষ বড়ই ক্ষতির মধ্যে রয়েছে এবং এই ক্ষতি থেকে একমাত্র তারাই রক্ষা পেয়েছে, যারা চারটি গুণাবলির অধিকারী : (১) ঈমান (২) সৎকাজ (৩) পরস্পরকে হকের উপদেশ দেয়া এবং (৪) একে অন্যকে সবর করার উপেদেশ দেয়া।

[১] আয়াতের প্রথমেই সময় বা যুগের শপথ করা হয়েছে। এখানে লক্ষণীয় বিষয় এই যে, বিষয়বস্তুর সাথে সময় বা যুগের কী সম্পর্ক, যার কসম করা হয়েছে? কসম ও কসমের জবাবের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক থাকা বাঞ্ছনীয়। অধিকাংশ তাফসীরবিদ বলেন, মানুষের সব কর্ম, গতিবিধি, উঠাবসা ইত্যাদি সব যুগের মধ্যে সংঘটিত হয়। এ সূরায় যেসব কর্মের নির্দেশ দেয়া হয়েছে সেগুলোও এই যুগ-কালেরই দিবা-রাত্রিতে সংঘটিত হবে। এরই প্রেক্ষিতে যুগের শপথ করা হয়েছে।

[২] এখানে মানুষ বলে সমস্ত মানুষই উদ্দেশ্য। কারণ, পরের বাক্যে চারটি গুণ সম্পন্ন লোকদেরকে তার থেকে আলাদা করে নেয়া হয়েছে। তাই এটা অবশ্যই মানতে হবে যে, এখানে মানুষ শব্দটিতে দুনিয়ার সমস্ত মানুষ সমানভাবে শামিল। কাজেই উপরোল্লেখিত চারটি গুণ কোন ব্যক্তি, জাতি বা সারা দুনিয়ার সমস্ত মানুষ যার মধ্যে থাকবে না সেই ক্ষতিগ্রস্ত হবে, এই বিধানটি সর্বাবস্থায় সত্য প্রমাণিত হবে।

[৩] আভিধানিক অর্থে ক্ষতি হচ্ছে লাভের বিপরীত শব্দ। ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে এ শব্দটির ব্যবহার এমন সময় হয় যখন কোন ব্যবসায় লোকসান হতে থাকে। আবার সমস্ত পুঁজি লোকসান দিয়ে যখন কোন ব্যবসায়ী দেউলিয়া হয়ে যায় তখনো এই শব্দটি ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

[৪] এখানে পূর্ববর্তী আয়াতে বর্ণিত মানবজাতি যে অত্যন্ত ক্ষতিগ্রস্তের মধ্যে আছে তার থেকে উত্তরণের পথ বলে দেয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, এই ক্ষতির কবল থেকে কেবল তারাই মুক্ত, যারা চারটি বিষয় নিষ্ঠার সাথে লালন করে। এ ব্যবস্থাপত্রের প্রথম দুটি বিষয় আত্মসংশোধন সম্পর্কিত এবং দ্বিতীয় দুটি বিষয় অপর মুসলিমদের হেদায়াত ও সংশোধন সম্পর্কিত।

[৫] এই সূরার দৃষ্টিতে যে চারটি গুণের উপস্থিতিতে মানুষ ক্ষতিমুক্ত অবস্থায় থাকতে পারে তন্মধ্যে প্রথম গুণটি হচ্ছে ঈমান। ঈমান শব্দের আভিধানিক অর্থ হচ্ছে স্বীকৃতি দেয়া। আর শরীয়তের পরিভাষায় এর অর্থ অন্তরে বিশ্বাস, মুখে স্বীকার এবং কাজ-কর্মে ইসলামের বিধান বাস্তবায়ন।

[৬] ঈমানের পরে মানুষকে ক্ষতি থেকে বাঁচাবার জন্য দ্বিতীয় যে গুণটি অপরিহার্য সেটি হচ্ছে সৎকাজ। কুরআনের পরিভাষায় একে বলা হয় আমলে সালেহ। সমস্ত সৎকাজ এর অন্তর্ভুক্ত। কোন ধরনের সৎকাজ ও সৎবৃত্তি এর বাইরে থাকে না। কিন্তু কুরআনের দৃষ্টিতে যে কাজের মূলে ঈমান নেই এবং যা আল্লাহ ও তাঁর রাসূল প্রদত্ত হেদায়াতের ভিত্তিতে সম্পাদিত হয়নি তা কখনো সৎকাজের অন্তর্ভুক্ত হতে পারে না।

[৭] এখানে হক শব্দের কয়েকটি অর্থ বর্ণিত হয়েছে। কেউ বলেন, ঈমান ও তাওহীদ। কেউ বলেন, কুরআন। কেউ বলেন, এখানে হক বলে আল্লাহকেই উদ্দেশ্য নেয়া হয়েছে। কেউ বলেন, এখানে হক বলে শরীয়তে নির্দেশিত কাজগুলো করা এবং শরীয়ত নিষিদ্ধ কাজগুলো পরিত্যাগ করা বুঝানো হয়েছে। কারো কারো মতে, হক বলে বুঝানো হয়েছে যাবতীয় কল্যাণমূলক কাজ। সেটা তাওহীদ, শরীয়তের আনুগত্য, আল্লাহর কিতাব ও তাঁর রাসূলের অনুসরণ, দুনিয়াবিমুখ ও আখেরাতমুখী হওয়া সবই বুঝায়।

[৮] সবর শব্দের আক্ষরিক অর্থ নিজেকে বাধা দেয়া। এখানে কয়েকটি অর্থ হতে পারে। (এক) যাবতীয় গোনাহের কাজ থেকে বেঁচে থাকা। (দুই) সৎকাজ করা এবং এর উপর প্রতিষ্ঠিত থাকা। (তিন) বিপদাপদে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করা। সুতরাং সৎকর্ম সম্পাদন, গোনাহ থেকে আত্মরক্ষা এবং এতদসংক্রান্ত বিপদাপদ মোকাবেলা করা সবই সবর এর মধ্যে শামিল। সুতরাং আয়াতের অর্থ হচ্ছে, হকের নসিহত করার সাথে সাথে দ্বিতীয় যে জিনিসটি ঈমানদারগণকে ও তাদের সমাজকে ক্ষতি থেকে বাঁচাবে তা হচ্ছে এই যে, এই সমাজের ব্যক্তিবর্গ পরস্পরকে সবর করার উপদেশ দিতে থাকবে। হককে সমর্থন করতে ও তার অনুসারী হতে গিয়ে যেসব সমস্যা ও বাধা-বিপত্তির সম্মুখীন হতে হয় এবং এ পথে যেসব কষ্ট পরিশ্রম, বিপদ-আপদ, ক্ষতি ও বঞ্চনা মানুষকে পীড়িত করে তার মোকাবেলায়, তারা পরস্পর অবিচল ও দৃঢ়পদ থাকার উপদেশ দিতে থাকবে।

এ সূরার শিক্ষাসমূহ :

সূরা আসরে বর্ণিত চারটি বৈশিষ্ট্যই মুমিনদের আসল চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য।

সূরা আসরে বর্ণিত চারটি বৈশিষ্ট্যের বাহিরে অন্য বৈশিষ্ট্য সম্বলিত সমস্ত মানুষই ক্ষতিগ্রস্ত।

ঈমান ও সৎ আমল একটি অপরটির সাথে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত তথা একটি অপরটির সম্পূরক।

মানুষকে সৎকাজের আদেশ দেয়া এবং অসৎ কাজ থেকে নিষেধ করা ঈমানের অন্যতম দাবী।

মুসলিমদেরকে হকের ও সবরের দাওয়াত দেয়া জরুরি।

হকের পথে অটল থেকে সবর অবলম্বন করাটা হচ্ছে সফলতার চাবিকাঠি।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন