মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
অত্র সূরার প্রথম আয়াতে উল্লেখিত اَلْقَدْرُ শব্দের আলোকেই এই সূরার নামকরণ করা হয়েছে। কদর শব্দের অর্থ হচ্ছে মর্যাদা, মহিমান্বিত ইত্যাদি। যেহেতু আল্লাহ তা‘আলার কাছে এ রাতের কদর বা মর্যাদা অনেক বেশি এবং এ রাতে মহান আল্লাহ তাঁর ইচ্ছা অনুযায়ী আগামী বছরের জন্য জীবন-মৃত্যু ও রিযিক ইত্যাদি যাবতীয় বিষয় নির্ধারিত করেন- এ কারণে এ রাতটিকে লাইলাতুল কদর বলা হয়।
নাযিলের সময়কাল :
এর সূরাটি মক্কী অথবা মাদানী হওয়ার ব্যাপারে মতানৈক্য রয়েছে। তবে বিষয়বস্তুর আলোকে এটি মক্কী হওয়াই অধিক যুক্তিযুক্ত।
সূরার বিষয়বস্তু :
লোকদেরকে কুরআন মাজীদের মূল্য, মর্যাদা ও গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতন করাই এই সূরাটির বিষয়বস্তু। কুরআন মাজীদের বিন্যাসের ক্ষেত্রে একে সূরা আলাকের পরে রাখাই এ কথা প্রকাশ করে যে, সূরা আলাকের প্রথম পাঁচটি আয়াতের মাধ্যমে যে পবিত্র কিতাবটির নাযিল শুরু হয়েছিল তা কেমন ভাগ্য নির্ণয়কারী রাতে নাযিল হয়, কেমন মহান মর্যাদা সম্পন্ন কিতাব।
প্রথমেই আল্লাহ বলেছেন, আমি এটি নাযিল করেছি। অর্থাৎ এটি মুহাম্মাদ ﷺ এর নিজের রচনা নয়; বরং আমিই এটি নাযিল করেছি। এরপর বলেছেন, কদরের রাতে আমার পক্ষ থেকে এটি নাযিল হয়েছে। এটি হাজার মাসের চাইতেও উত্তম। এর সাহায্যে মক্কায় কাফিরদেরকে পরোক্ষভাবে জানিয়ে দেয়া হয়েছে যে, তোমরা নিজেদের অজ্ঞতার কারণে মুহাম্মাদ ﷺ এর পেশকৃত এই কিতাবকে নিজেদের জন্য একটি বিপদ মনে করেছো। অথচ যে রাতে এর নাযিল হবার ফায়সালা জারী করা হয় সেটি ছিল পরম কল্যাণ ও বরকতের রাত। এই একটি রাতে মানুষের কল্যাণের জন্য এত বেশি কাজ করা হয়েছে, যা মানুষের ইতিহাসে হাজার মাসেও করা হয়নি।
সবশেষে বলা হয়েছে, এই রাতে ফেরেশতারা এবং জিব্রাঈল নিজেদের রবের অনুমতি নিয়ে সব রকমের আদেশ-নিষেশ সহকারে নাযিল হন। সন্ধ্যা থেকে সকাল পর্যন্ত এটি হয় পুরোপুরি শান্তি ও নিরাপত্তার রাত। অর্থাৎ কোন প্রকার অনিষ্ট এ রাতে প্রভাব ফেলতে পারে না। কারণ আল্লাহর সমস্ত ফায়সালার মূল লক্ষ্য হয় কল্যাণ। মানুষের জন্য তার মধ্যে কোন অকল্যাণ থাকে না। এমনকি তিনি কোন জাতিকে ধ্বংস করার ফায়সালা করলেও তা করেন মানুষের কল্যাণের জন্য।
(১) اِنَّا নিশ্চয় আমি اَنْزَلْنَاهُ একে নাযিল করেছি فِيْ لَيْلَةِ الْقَدْرِ কদরের রাত্রে। (২) وَمَاۤ اَدْرَاكَ তুমি কি জানো مَا لَيْلَةُ اَلْقَدْرِ কদরের রাত কী? (৩) لَيْلَةُ الْقَدْرِ কদরের রাত হল خَيْرٌ উত্তম مِنْ اَلْفِ شَهْرٍ এক হাজার মাসের চেয়েও। (৪) تَنَزَّلُ অবতীর্ণ হয় اَلْمَلَآئِكَةُ ফেরেশতাগণ وَالرُّوْحُ এবং রূহসমূহ فِيْهَا এতে بِاِذْنِ নির্দেশক্রমে رَبِّهِمْ তাদের পালনকর্তার مِنْ كُلِّ اَمْرٍ প্রত্যেক কাজের জন্যে। (৫) سَلَامٌ শান্তিময় هِيَ সেটা (সেই রাত) حَتّٰى যতক্ষণ না مَطْلَعِ উদয় হয় اَلْفَجْرِ ফজর।
সরল অনুবাদ :
(১) আমি একে নাযিল করেছি১ কদরের রাতে২। (২) তুমি কি জানো কদরের রাত কী? (৩) কদরের রাত হল এক হাজার মাসের চেয়েও শ্রেষ্ঠ।৩ (৪) তাতে ফেরেশতা ও রূহ (জিবরাঈল) অবতীর্ণ হয়৪- তাদের প্রতিপালকের অনুমতিক্রমে প্রত্যেকটি বিষয়ের নির্দেশ৫ নিয়ে। (৫) শান্তিময়৬ সেই রাত ফজরের উদয় পর্যন্ত অব্যাহত থাকে৭।
টীকা :
[১] এখানে বলা হয়েছে, আমি কদরের রাতে কুরআন নাযিল করেছি। আবার অন্যত্র বলা হয়েছে, রামাযান মাসে কুরআন নাযিল করা হয়েছে। (সূরা বাকারা- ১৮৫) এ থেকে জানা যায় যে, নবী ﷺ এর কছে হেরা গুহায় যে রাতে আল্লাহর ফেরেশতা অহী নিয়ে এসেছিলেন সেটি ছিল রামাযান মাসের একটি রাত। এই রাতকে এখানে কদরের রাত বলা হয়েছে। সূরা দুখানে এটাকে মুবারক রাত বলা হয়েছে। বলা হয়েছে, অবশ্যই আমরা একে একটি বরকতপূর্ণ রাতে নাযিল করেছি। (সূরা দুখান : ৩) এ আয়াত থেকে পরিষ্কার জানা যায় যে, কুরআন লাইলাতুল কদরে অবতীর্ণ হয়েছে। এর এক অর্থ এই যে, সমস্ত কুরআন লওহে মাহফুয থেকে লাইলাতুল কদরে অবতীর্ণ করা হয়েছে, অতঃপর জিবরাঈল একে ধীরে ধীরে তেইশ বছর ধরে রাসূলুল্লাহ ﷺ এর কাছে পৌঁছাতে থাকেন। দ্বিতীয় অর্থ এই যে, এ রাতে কয়েকটি আয়াত অবতরণের মাধ্যমে কুরআন অবতরণের ধারাবাহিকতা সূচনা হয়ে যায়। এরপর অবশিষ্ট কুরআন পরবর্তী সময়ে ধাপে ধাপে পূর্ণ তেইশ বছরে নাযিল করা হয়।
[২] কদরের এক অর্থ মাহাত্ম্য ও সম্মান। এর মাহাত্ম্য ও সম্মানের কারণে একে লাইলাতুল কদর তথা মহিমান্বিত রাত বলা হয়। কদরের আরেক অর্থ তাকদীর এবং আদেশও হয়ে থাকে। এ রাত্রিতে পরবর্তী এক বছরের অবধারিত ও বিধিলিপি ব্যবস্থাপক ও প্রয়োগকারী ফেরেশতাগণের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এতে প্রত্যেক মানুষের বয়স, মৃত্যু, রিযিক, বৃষ্টি ইত্যাদির পরিমাণ নির্দিষ্ট ফেরেশতাগণকে লিখে দেয়া হয়। পবিত্র কুরআনের অন্যত্র বলা হয়েছে, فِيْهَا يُفْرَقُ كَلُّ اَمْرٍ حَكِيْمٍ (সূরা দুখান : ৪) এ আয়াতে পরিষ্কার বলা হয়েছে যে, পবিত্র রাত্রে তাকদীর সংক্রান্ত সব ফায়সালা লিপিবদ্ধ করা হয়। এই রাত্রিতে তাকদীর সংক্রান্ত বিষয়াদি নিষ্পন্ন হওয়ার অর্থ এ বছর যেসব বিষয় প্রয়োগ করা হবে, সেগুলো লওহে মাহফুয থেকে নকল করে ফেরেশতাগণের কাছে সোপর্দ করা। নতুবা আসল বিধি-লিপি আদিকালেই লিপিবদ্ধ হয়ে গেছে।
[৩] মুফাসসিরগণ এর অর্থ করেছেন, এ রাতের সৎকাজ অন্য রাতের হাজার মাসের সৎকাজের চেয়ে ভালো। হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, ‘‘যে কেউ ঈমান ও সওয়াবের আশায় লাইলাতুল কদর রাত্রিতে সালাত আদায় করতে দাঁড়াবে তার পূর্ববর্তী সমস্ত গোনাহ ক্ষমা করে দেয়া হবে।
(সহীহ বুখারী, হা/১০৯১; সহীহ মুসলিম, হা/৭৬০)
[৪] اَلرُّوْحُ বলে কী বুঝানো হয়েছে- এ ব্যাপারে মতপার্থক্য থাকলেও প্রাধান্যপ্রাপ্ত মত হলো, এর দ্বারা জিবরাঈল (আঃ)-কে বুঝানো হয়েছে। জিবরাঈল (আঃ) এর শ্রেষ্ঠত্ব ও মর্যাদার কারণে সমস্ত ফেরেশতা থেকে আলাদা করে তাঁর নাম উল্লেখ করা হয়েছে। জিবরাঈল (আঃ) এর সাথে ফেরেশতারাও সে রাত্রিতে অবতরণ করে। হাদীসে আছে, লাইলাতুল কদরের রাত্রিতে পৃথিবীতে ফেরেশতারা এত বেশি অবতরণ করেন যে, তাদের সংখ্যা পাথরকুচির চেয়েও বেশি।
(মুসনাদে আহমাদ : ২/৫১৯, মুসনাদে তায়ালুসী : ২৫৪৫)
[৪] সকল সিদ্ধান্ত বা প্রত্যেক হুকুম বলতে অন্যত্র বর্ণিত ‘‘আমরে হাকীম’’ (বিজ্ঞতাপূর্ণ কাজ) [সূরা রুখান : ৪] অর্থাৎ ফেরেশতাগণ শবে কদরে সারা বছরের অবধারিত ঘটনাবলি নিয়ে পৃথিবীতে অবতরণ করেন।
[৫] অর্থাৎ সন্ধ্যা থেকে সকাল পর্যন্ত সারাটা রাত শুধু শান্তিই শান্তি, মঙ্গলই মঙ্গল তথা কল্যাণে পরিপূর্ণ। সে রাত্র সর্বপ্রকার অনিষ্ট থেকে মুক্ত।
[৬] অর্থাৎ লাইলাতুল কদরের এই বরকতময় রাত্রির শুরু অর্থাৎ সূর্যাস্তের পর হতে ফজরের উদয় পর্যন্ত বিস্তৃত।
এ সূরার শিক্ষাসমূহ :
কদরের রাত এক হাজার মাসের চেয়েও শ্রেষ্ঠ।
কদরের রাতেই কুরআন নাযিল হওয়া শুরু হয়েছিল।
কদরের রাতে আল্লাহর পক্ষ থেকে অনেক রহমত নাযিল হয়।
রমযানের শেষ দশকের বেজোড় রাতগুলোতে কদরের রাত বিদ্যমান রয়েছে।
কদরের রাতের সম্পূর্ণ অংশই প্রশান্তিময় থাকে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/319/22
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।