মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
প্রথম শব্দ عَبَسَ (আবাসা)- কে এর নাম হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে। কেউ কেউ এটিকে সাফারাহ ও সাখখাহ বলেও আখ্যায়িত করেছেন। আবাসা শব্দের অর্থ বিরক্তি প্রকাশ করা।
নাযিলের সময়কাল ও প্রেক্ষাপট :
একবার নবী ﷺ এর মজলিসে মক্কা মুয়াযযামার কয়েকজন বড় বড় সরদার বসেছিলেন। তাদেরকে ইসলাম গ্রহণের ব্যাপারে উদ্যোগী করার জন্য তিনি তাদের সামনে ইসলামের দাওয়াত পেশ করছিলেন। এমন সময় ইবনে উম্মে মাকতুম (রাঃ) নামক একজন অন্ধ সাহাবী তাঁর খেদমতে হাজির হলেন এবং তাঁর কাছে ইসলাম সম্পর্কে কিছু প্রশ্ন করতে চাইলেন। তার এই প্রশ্নে সরদারদের সাথে আলাপে বাধা সৃষ্টি হওয়ায় নবী ﷺ বিরক্ত হলেন। তিনি তার কথায় কান দিলেন না। এই ঘটনার প্রেক্ষাপটে আল্লাহর পক্ষ থেকে এই সূরাটি নাযিল হয়।
ইবনে উম্মে মাকতুম (রাঃ) ইসলাম প্রচারের একেবারে প্রথম দিকে মক্কায় ইসলাম গ্রহণ করেন।
সূরার বিষয়বস্তু :
ভাষণের সূচনায় যে বর্ণনা পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়েছে তা দেখে মনে হয়, এ সূরায় নবী ﷺ এর প্রতি তিরস্কার ও ক্রোধ প্রকাশ করা হয়েছে। কিন্তু পুরো সূরাটির সমস্ত বিষয়বস্তুকে নিয়ে চিন্তা করলে দেখা যাবে, আসলে এখানে ক্রোধ প্রকাশ করা হয়েছে কুরাইশদের কাফির সরদারদের বিরুদ্ধে। কারণ এই সরদাররা তাদের অহঙ্কার ও বিমুখতার কারণে রাসূলুল্লাহ ﷺ এর সত্যের দাওয়াতকে প্রত্যাখ্যান করেছিল।
কুরাইশ সরদারদের প্রতি মনোযোগী হওয়ার কারণ এ ছিল না যে, তিনি বড় লোকদের বেশি সম্মানিত মনে করতেন এবং একজন অন্ধকে তুচ্ছ জ্ঞান করতেন। বরং আসল ব্যাপার ছিল, একজন সত্য দীনের দাওয়াত দানকারী চান, প্রভাবশালী লোকেরা তাঁর দাওয়াত গ্রহণ করুক। এভাবে তাঁর কাজ সহজ হয়ে যাবে। প্রথম দিকে রাসূলুল্লাহ ﷺও একই ধরনের কর্মপদ্ধতি অবলম্বন করেছিলেন। কিন্তু আল্লাহ তাঁকে বুঝালেন, এটা ইসলামী দাওয়াতের সঠিক পদ্ধতি নয়। এখানে এমন প্রত্যেক ব্যক্তিই গুরুত্বের অধিকারী, যে সত্যের সন্ধানে ফিরছে, সে যতই দুর্বল, প্রভাবহীন ও অক্ষম হোক না কেন। আবার ইলামের দৃষ্টিতে এমন প্রত্যেক ব্যক্তিই গুরুত্বহীন, যে নিজেই সত্যবিমুখ, সে সমাজে যত বড় মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠিত হোক না কেন। তাই ইসলামের দাওয়াত আপনি সবাইকে দিয়ে যান, কিন্তু যাদের মধ্যে সত্যের দাওয়াত গ্রহণ করার আগ্রহ পাওয়া যায় তারাই হবে আপনার আগ্রহের আসল কেন্দ্রবিন্দু।
তারপর ১৭ আয়াত থেকে রাসূলুল্লাহ ﷺ এর দাওয়াত প্রত্যাখ্যানকারী কাফিরদের প্রতি ক্রোধ প্রকাশ করা হয়েছে। তারা নিজেদের স্রষ্টা ও রিযিকদাতা আল্লাহর মোকাবিলায় যে দৃষ্টিভঙ্গি ও কর্মনীতি অবলম্বন করেছিল, প্রথমে সেজন্য তাদের নিন্দা ও তিরস্কার করা হয়েছে। সবশেষে তাদেরকে এই মর্মে সতর্ক করে দেয়া হয়েছে যে, কিয়ামতের দিন তারা নিজেদের এই কর্মনীতির অত্যন্ত ভয়াবহ পরিণাম দেখতে পাবে।
(১) عَبَسَ ভ্রু কুঞ্চিত করল وَتَوَلّٰى এবং মুখ ফিরিয়ে নিলো, (২) اَنْ جَآءَهُ কারণ তার নিকট এসেছিল اَلْاَعْمٰى অন্ধ লোকটি। (৩) وَمَا يُدْرِيْكَ তোমাকে কিসে জানাবে لَعَلَّهٗ হয়ত সে يَزَّكّٰى পরিশুদ্ধ হতো। (৪) اَوْ يَذَّكَّرُ অথবা উপদেশ গ্রহণ করতো, فَتَنْفَعَهُ ফলে তার উপকারে আসতো اَلذِّكْرٰى উপদেশ (৫) اَمَّا পক্ষান্তরে مَنِ اسْتَغْنٰى যে পরওয়া করে না, (৬) فَاَنْتَ لَهٗ তুমি তার প্রতি تَصَدّٰى মনোযোগ দিচ্ছো। (৭) وَمَا عَلَيْكَ অথচ তোমার দায়িত্ব নেই اَلَّا يَزَّكّٰى সে নিজে পরিশুদ্ধ না হলে, (৮) وَاَمَّا পক্ষান্তরে مَنْ جَآءَكَ যে তোমার নিকট আসলো, يَسْعٰى দৌড়ে। (৯) وَهُوَ আর সে يَخْشٰى ভয় করে (১০) عَنْهُ فَاَنْتَ অতঃপর তুমি তার প্রতি تَلَهّٰى অবজ্ঞা প্রদর্শন করলে।
সরল অনুবাদ :
(১) সে ভ্রু কুঞ্চিত করল এবং মুখ ফিরিয়ে নিল,১ (২) কারণ তার নিকট অন্ধ লোকটি২ এসেছিল। (৩) তুমি কি জান সে হয় তো পরিশুদ্ধ হতো, (৪) অথবা উপদেশ গ্রহণ করতো, ফলে উপদেশ তার উপকারে আসতো।৩ (৫) পক্ষান্তরে যে পরওয়া করে না, (৬) তুমি তার প্রতি মনোযোগ দিচ্ছো। (৭) অথচ সে নিজে পরিশুদ্ধ না হলে তোমার কোন দায়িত্ব নেই, (৮) পক্ষান্তরে যে তোমার নিকট ছুটে আসলো, (৯) আর সে (আল্লাহকে) ভয় করতো। (১০) তুমি তার প্রতি অবজ্ঞা করলে।
টীকা :
[১] عَبَسَ শব্দের অর্থ রুষ্টতা অবলম্বন করা এবং চোখে-মুখে বিরক্তি প্রকাশ করা। تَوَلّٰى শব্দের অর্থ মুখ ফিরিয়ে নেয়া।
[২] এখানে সাহাবী আবদুল্লাহ ইবনে উম্মে মাকতুম (রাঃ) এর কথা বলা হয়েছে। তাঁর মা উম্মে মাকতুম ছিলেন খাদীজা (রাঃ) এর পিতা খুয়াইলিদের সহোদর বোন। তিনি ছিলেন নবী ﷺ এর শ্যালক। তিনি বংশ মর্যাদার দিক দিয়ে সমাজের সাধারণ শ্রেণীভুক্ত নন; বরং অভিজাত বংশীয় ছিলেন।
[৩] অর্থাৎ আপনি কি জানেন এই সাহাবী যা জিজ্ঞেস করেছিল তা তাকে শিক্ষা দিলে সে তা দ্বারা পরিশুদ্ধ হতে পারত কিংবা কমপক্ষে আল্লাহ তা‘আলাকে স্মরণ করে উপকার লাভ করতে পারত।
(১১) كَلَّا কখনো নয়, اِنَّهَا এটা তো تَذْكِرَةٌ উপদেশবাণী; (১২) فَمَنْ সুতরাং যে ব্যক্তি شَآءَ ইচ্ছা করবে ذَكَرَهٗ সে এটা স্মরণ রাখবে, (১৩) فِيْ صُحُفٍ লিপিবদ্ধ কিতাবে مُكَرَّمَةٍ সম্মানিত। (১৪) مَرْفُوْعَةٍ যেটা উচ্চ মর্যাদা সম্পন্ন مُطَهَّرَةٍ পবিত্র। (৫) بِاَيْدِيْ سَفَرَةٍ লেখকদের হাতে থাকে। (৬) كِرَامٍ যারা সম্মানিত بَرَرَةٍ সৎ। (৭) قُتِلَ ধ্বংস হোক اَلْاِنْسَانُ মানুষ! مَاۤ اَكْفَرَهٗ সে কতই না অকৃতজ্ঞ! (১৮) مِنْ اَيِّ شَيْءٍ কোন বস্তু হতে خَلَقَهٗ তিনি তাকে সৃষ্টি করেছেন? (১৯) مِنْ نُّطْفَةٍ শুক্রবিন্দু হতে خَلَقَهٗ তিনি তাকে সৃষ্টি করেছেন فَقَدَّرَهٗ অতঃপর তার তাকদীর নির্ধারণ করেছেন (২০) ثُمَّ অতঃপর اَلسَّبِيْلَ চলার পথ يَسَّرَهٗ তার জন্য সহজ করেছেন; (২১) ثُمَّ اَمَاتَهٗ অতঃপর তার মৃত্যু ঘটান فَاَقْبَرَهٗ পরে তাকে কবরস্থ করেন। (২২) ثُمَّ اِذَا অতঃপর যখন شَآءَ তিনি ইচ্ছা করবেন اَنْشَرَهٗ তাকে পুনরুজ্জীবিত করবেন।
সরল অনুবাদ :
(১১) কখনও নয়, এটা তো উপদেশবাণী;৪ (১২) যে ইচ্ছা করবে সে এটা স্মরণ রাখবে, (১৩) ওটা সম্মানিত কিতাবে (লাওহে মাহফুজে) লিপিবদ্ধ (১৪) যেটা উচ্চ মর্যাদাসম্পন্ন ও পবিত্র।৫ (১৫) এমন লেখকদের হাতে থাকে।৬ (১৬) যারা সম্মানিত ও সৎ। (১৭) মানুষ ধ্বংস হোক! সে কত অকৃতজ্ঞ!৭ (১৮) তাকে তিনি কোন্ বস্তু হতে সৃষ্টি করেছেন? (১৯) তিনি তাকে সৃষ্টি করেন শুক্রবিন্দু হতে, তারপর তার তাকদীর নির্ধারণ করেন,৮ (২০) তারপর তার জন্যে পথ সহজ করে দেন;৯ (২১) অতঃপর তার মৃত্যু ঘটান এবং তাকে কবরস্থ করেন। (২২) এরপর যখন ইচ্ছা তিনি তাকে পুনরুজ্জীবিত করবেন।১০
টীকা :
[৪] অর্থাৎ এমনটি কখনো করবেন না। যেসব লোক আল্লাহকে ভুলে আছে এবং যারা নিজেদের দুনিয়াবী সহায়-সম্পদ ও প্রভাব-প্রতিপত্তির অহঙ্কারে মত্ত হয়ে আছে, তাদেরকে অযথা গুরুত্ব দিবেন না। ইসলাম এমন কিছু নয় যে, যে ব্যক্তি তার থেকে মুখ ফিরিয়ে থাকে তার সামনে নতজানু হয়ে তা পেশ করতে হবে। যে সত্যের মুখাপেক্ষী নয় সত্যও তার মুখাপেক্ষী নয়।
[৫] مُكَرَّمَةٌ অর্থ সম্মানিত, মর্যাদাসম্পন্ন। مَرْفُوْعَةٌ বলে বুঝানো হয়েছে এর মর্যাদা অনেক উচ্চ । আর مُطَهَّرَةٌ বলে হাসান বসরীর মতে বুঝানো হয়েছে যাবতীয় নাপাক থেকে পবিত্র। ইবনে কাসীর বলেন, এর অর্থ এটি বাড়তি-কমতি ও অপবিত্রতা থেকে পবিত্র ও মুক্ত।
[৬] سَفَرَةٌ শব্দটি سَافِرٌ এর বহুবচন হতে পারে। তখন অর্থ হবে লিপিকার বা লেখক। আর যদি سَفَرَةٌ শব্দটি سَفَارَةٌ থেকে আসে, তখন এর অর্থ দূতগণ। এখানে ফেরেশতা উদ্দেশ্য।
[৭] এর অর্থ, সে কত বড় সত্য-অস্বীকারকারী। তাছাড়া এ আয়াতের আরো একটি অর্থ হলো ‘‘কোন জিনিসটি তাকে সত্য অস্বীকার করতে উদ্বুদ্ধ করেছে?’’
[৮] قَدَّرَهُ অর্থাৎ সুপরিমিত করেছেন, তার গঠন-প্রকৃতি, আকার-আকৃতি সুপরিমিতভাবে সৃষ্টি করেছেন। قَدَّرَهُ শব্দের এরূপ অর্থও হতে পারে যে, মানুষ যখন মাতৃগর্ভে সৃষ্টি হতে থাকে তখন আল্লাহ তা‘আলা তার কাজ, বয়স, রিযিক, ভাগ্য ইত্যাদি তাকদীর নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন।
[৯] আল্লাহ তা‘আলা স্বীয় ক্ষমতাবলে মাতৃগর্ভে মানুষকে সৃষ্টি করেন। তারপর তিনিই তাকে মাতৃগর্ভ থেকে জীবিত ও পূর্ণাঙ্গরূপে বাইরে আসার পথ সহজ করে দেন। এছাড়া আয়াতের আরেকটি অর্থ হচ্ছে, দুনিয়াতে যে ব্যক্তি নিজের জন্য ভালো বা মন্দ, কৃতজ্ঞতা বা অকৃতজ্ঞতা, আনুগত্য বা অবাধ্যতার মধ্যে সে কোন্ পথ চায় তিনি তা তার সামনে খুলে রেখে দিয়েছেন অথবা সহজ করে দিয়েছেন। ফলে সে শুকরিয়া আদায় করে সৎপথ গ্রহণ করতে পারে, আবার কুফরী করে বিপথেও যেতে পারে।
[১০] মৃত্যুর পর আল্লাহ তা‘আলাই মানুষকে পুনরুজ্জীবিত করবেন। একমাত্র তিনিই এগুলো করার ক্ষমতা রাখেন। তারপরও মানুষ তাঁকে অস্বীকার করে, তাঁর হক আদায় করে না।
(২৩) كَلَّا কখনো নয়, لَمَّا يَقْضِ সে বাস্তবায়িত করেনি مَاۤ اَمَرَهٗ তিনি তাকে যে আদেশ করেছেন। (২৪) فَلْيَنْظُرِ الْاِنْسَانُ মানুষ লক্ষ্য করুক اِلٰى طَعَامِه তার খাদ্যের প্রতি। (২৫) اَنَّا صَبَبْنَا নিশ্চয় আমি বর্ষণ করি اَلْمَآءَ পানি صَبًّا প্রচুর পরিমাণে, (২৬) ثُمَّ شَقَقْنَا অতঃপর আমি বিদীর্ণ করি اَلْاَرْضَ ভূমিকে شَقًّا বিদীর্ণ করার মতো, (২৭) فَاَنْۢبَتْنَا এবং আমি উৎপন্ন করি فِيْهَا তাতে حَبًّا শস্য; (২৮) وَعِنَبًا আঙ্গুর, وَقَضْبًا শাক-সবজি, (২৯) وَزَيْتُوْنًا যায়তুন, وَنَخْلًا খেজুর, (৩০) وَحَدَآئِقَ বহু বাগান غُلْبًا নিবিড়-ঘন, (৩১) وَفَاكِهَةً ফল وَاَبًّا এবং ঘাস, (৩২) مَتَاعًا ভোগের সামগ্রী হিসেবে لَكُمْ তোমাদের জন্য وَلِاَنْعَامِكُمْ ও তোমাদের পশুগুলোর জন্য।
সরল অনুবাদ :
(২৩) কখনও নয়, তিনি তাকে যা আদেশ করেছেন, সে তা এখনো বাস্তবায়িত করেনি। (২৪) মানুষ তার খাদ্যের প্রতি লক্ষ্য করুক।১১ (২৫) আমিই প্রচুর পানি বর্ষণ করি, (২৬) অতঃপর আমি ভূমিকে বিদীর্ণ করি বিদীর্ণ করার মতো, (২৭) এবং তাতে উৎপন্ন করি শস্য; (২৮) আঙ্গুর, শাক-সবজি, (২৯) যায়তুন, খেজুর, (৩০) বহু নিবিড়-ঘন বাগান, (৩১) আর ফল এবং (গবাদি পশুর খাদ্য) ঘাস (৩২) তোমাদের ও তোমাদের পশুগুলোর ভোগের সামগ্রী হিসেবে।১২
টীকা :
[১১] মানবসৃষ্টির সূচনা উল্লেখ করার পর মানুষ যে খাদ্যের নিয়ামত ভোগ করে, এখানে সেগুলো সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। এসব নিয়ামত তিনি মানুষকে দিয়েছেন, যাতে মানুষ কিয়ামতের প্রস্তুতির জন্য এর সাহায্যে আল্লাহর ইবাদাত করে।
[১২] কেবল তোমাদের জন্যই নয়, বরং তোমাদের যেসব পশু রয়েছে, তাদের জন্যও। এসব নিয়ামতের দিকে দৃষ্টিপাত করলে মহান আল্লাহর ইবাদাত, তার প্রতি শুকরিয়া আদায় করা ও তার নির্দেশাবলি মেনে চলার প্রয়োজনীয়তা ফুটে ওঠে।
(৩৩) فَاِذَا অতঃপর যখন جَآءَتْ এসে পড়বে اَلصَّآخَّةُ বিকট ধ্বনি; (৩৪) يَوْمَ সেদিন يَفِرُّ পলায়ন করবে اَلْمَرْءُ মানুষ مِنْ اَخِيْهِ তার ভাই হতে, (৩৫) وَاُمِّه তার মা হতে, وَاَبِيْهِ তার পিতা হতে, (৩৬) وَصَاحِبَتِه তার স্ত্রী হতে وَبَنِيْهِ ও তার সন্তান হতে, (৭) لِكُلِّ امْرِئٍ مِّنْهُمْ তাদের প্রত্যেকের হবে يَوْمَئِذٍ সেদিন شَأْنٌ ব্যস্ততা يُغْنِيْهِ যা তাকে ব্যস্ত রাখবে। (৩৮) وُجُوْهٌ অনেক মুখমন্ডল يَوْمَئِذٍ সেদিন مُسْفِرَةٌ উজ্জ্বল হবে; (৩৯) ضَاحِكَةٌ হাসি মুখ مُسْتَبْشِرَةٌ প্রফুল্ল। (৪০) وَوُجُوْهٌ এবং অনেক মুখমন্ডল হবে يَوْمَئِذٍ সেদিন عَلَيْهَا غَبَرَةٌ ধূলি মিশ্রিত। (৪১) تَرْهَقُهَا সেগুলোকে আচ্ছন্ন করবে قَتَرَةٌ কালো বর্ণ। (৪২) اُولٰٓئِكَ هُمْ তারাই اَلْكَفَرَةُ কাফির اَلْفَجَرَةُ পাপাচারী।
সরল অনুবাদ :
(৩৩) যখন ঐ বিকট ধ্বনি এসে পড়বে;১৩ (৩৪) সেদিন মানুষ পলায়ন করবে তার নিজের ভাই হতে, (৩৫) এবং তার মাতা, তার পিতা, (৩৬) তার স্ত্রী ও তার সন্তান হতে,১৪ (৩৭) সেদিন তাদের প্রত্যেকের এমন গুরুতর অবস্থা হবে, যা তাকে সম্পূর্ণরূপে ব্যস্ত রাখবে। (৩৮) সেদিন অনেক মুখমন্ডল উজ্জ্বল হবে; (৩৯) হাসি মুখ ও প্রফুল্ল। (৪০) আর সেদিন অনেক মুখমন্ডল হবে ধূলি মিশ্রিত। (৪১) সেগুলোকে আচ্ছন্ন করবে কালো বর্ণ। (৪২) তারাই কাফির ও পাপাচারী।
টীকা :
[১৩] আয়াতে বর্ণিত اَلصَّاخَّةُ শব্দটির মূল অর্থ হলো, ‘এমন কঠোর ডাক, যার ফলে মানুষ শ্রবণশক্তি হারিয়ে ফেলে। এখানে কিয়ামতের দ্বিতীয় শিঙ্গাধ্বনির কথা বলা হয়েছে। এই বিকট আওয়াজ বুলন্দ হবার সাথে সাথেই মরা মানুষ জীবিত হয়ে উঠবে এবং কিয়ামতের মাঠে উপস্থিত হবে।
[১৪] এখানে হাশরের ময়দানে সকলের সমাবেশের দিন বুঝানো হয়েছে, সেদিন প্রত্যেক মানুষ আপন চিন্তায় বিভোর হবে। সেদিন মানুষ তার অতি-নিকটাত্মীয়কে দেখলেও মুখ লুকাবে এবং পালিয়ে বেড়াবে। এই একই ধরনের বিষয়বস্তু বর্ণিত হয়েছে সূরা মা‘আরিজের ১০ থেকে ১৪ পর্যন্ত আয়াতেও।
এ সূরার শিক্ষাসমূহ :
ইসলামের দাওয়াত প্রদানের ক্ষেত্রে ধনী-গরীব, উঁচু-নীচু ও সাদা-কালো ইত্যাদি কোন প্রকার পার্থক্য করা যাবে না।
দাওয়াতের ক্ষেত্রে উপদেশ গ্রহণ করতে ইচ্ছুক ব্যক্তিদেরকে বেশি অগ্রাধিকার দেয়া উচিত।
আল্লাহ তা‘আলার সৃষ্টি নিয়ে চিন্তা-গবেষণা করা উচিত; তাহলে আল্লাহর কৃতজ্ঞ হওয়া যাবে।
কিয়ামতের দিন মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়বে এবং প্রত্যেকেই শুধুমাত্র নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত থাকবে।
জান্নাতবাসীদের চেহারা উজ্জ্বল হবে এবং তারা হাসিমুখি থাকবে। পক্ষান্তরে জাহান্নামী কাফির এবং গোনাহগার বান্দাদের চেহারা হবে মলিন এবং তাদের চেহারায় ধূলোবালির ছাপ হবে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/319/5
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।