মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
প্রথম আয়াতে উল্লেখিত كُوِّرَتْ (কুওভিরাত) শব্দটি থেকে এ সূরার নাম تَكْوِيْرٌ (তাকভীর) বলে নামকরণ করা হয়েছে। তাকভীর ( تَكْوِيْرٌ ) হচ্ছে মূল শব্দ। এর মানে হচ্ছে, গুটিয়ে ফেলা।
নাযিলের সময়কাল :
বিষয়বস্তু ও বর্ণনাভঙ্গী থেকে পরিষ্কারভাবে জানা যায়, এটি মক্কায় প্রথম যুগে নাযিল হওয়া সূরাগুলোর অন্তর্ভুক্ত।
সূরার বিষয়বস্তু :
এর বিষয়বস্তু হচ্ছে দুটি : আখেরাত ও রিসালাত। প্রথম ছয়টি আয়াতে কিয়ামতের প্রথম পর্বের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। পরবর্তী সাতটি আয়াতে কিয়ামতের দ্বিতীয় পর্বের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এরপর রিসালাত সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। বলা হয়েছে, মুহাম্মাদ ﷺ তোমাদের সামনে যা কিছু পেশ করেছেন সেগুলো কোন পাগলের প্রলাপ নয়। কোন শয়তানের ওয়াসওয়াসা ও বিভ্রান্তিও নয়। বরং সেগুলো আল্লাহর প্রেরিত একজন উন্নত মর্যাদা সম্পন্ন বিশ্বস্ত বাণীবাহকের বিবৃতি। এই শিক্ষা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে তোমরা কোন দিকে চলে যাচ্ছো।
(১) اِذَا যখন اَلشَّمْسُ সূর্য كُوِّرَتْ গুটিয়ে নেয়া হবে, (২) وَاِذَا আর যখন اَلنُّجُوْمُ নক্ষত্ররাজি اِنْكَدَرَتْ খসে পড়বে, (৩) وَاِذَا আর যখন اَلْجِبَالُ পর্বতসমূহকে سُيِّرَتْ চলমান করা হবে, (৪) وَاِذَا আর যখন اَلْعِشَارُ দশ মাসের গর্ভবতী উষ্ট্রী عُطِّلَتْ উপেক্ষিত হবে, (৫) وَاِذَا আর যখন اَلْوُحُوْشُ বন্য পশুগুলিকে حُشِرَتْ একত্রিত করা হবে, (৬) وَاِذَا আর যখন اَلْبِحَارُ সমুদ্রগুলিকে سُجِّرَتْ উদ্বেলিত করা হবে; (৭) وَاِذَا আর যখন اَلنُّفُوْسُ প্রাণগুলিকে زُوِّجَتْ মিলিত করা হবে; (৮) وَاِذَا আর যখন اَلْمَوْءُوْدَةُ জীবন্ত কবর দেয়া কন্যাকে سُئِلَتْ জিজ্ঞেস করা হবে; (৯) بِاَيِّ কোন ذَنْۢبٍ অপরাধে قُتِلَتْ তাকে হত্যা করা হয়েছিল? (১০) وَاِذَا আর যখন اَلصُّحُفُ আমলনামাসমূহ نُشِرَتْ প্রকাশ করা হবে, (১১) وَاِذَا আর যখন اَلسَّمَآءُ আকাশ كُشِطَتْ আবরণ অপসারিত করা হবে, (১২) وَاِذَا আর যখন اَلْجَحِيْمُ জাহান্নামকে سُعِّرَتْ প্রজ্বলিত করা হবে, (১৩) وَاِذَا আর যখন اَلْجَنَّةُ জান্নাতকে اُزْلِفَتْ নিকটবর্তী করা হবে, (১৪) عَلِمَتْ তখন জানবে نَفْسٌ প্রত্যেক ব্যক্তিই مَاۤ اَحْضَرَتْ সে কি নিয়ে এসেছে।
সরল অনুবাদ :
(১) যখন সূর্যকে গুটিয়ে নেয়া হবে,১ (২) যখন নক্ষত্ররাজি খসে পড়বে,২ (৩) যখন পর্বতসমূহকে চলমান করা হবে,৩ (৪) যখন (দশ মাসের গর্ভবতী) উষ্ট্রী উপেক্ষিত হবে,৪ (৫) যখন বন্য পশুগুলিকে একত্রিত করা হবে, (৬) যখন সমুদ্রগুলিকে উদ্বেলিত করা হবে;৫ (৭) যখন প্রাণগুলিকে (দেহে) মিলিত করা হবে;৬ (৮) যখন জীবন্ত কবর দেয়া কন্যাকে৭ জিজ্ঞেস করা হবে, (৯) কী অপরাধে তাকে হত্যা করা হয়েছিল?৮ (১০) যখন আমলনামাসমূহ প্রকাশ করা হবে, (১১) যখন আকাশের আবরণ অপসারিত করা হবে,৯ (১২) যখন জাহান্নামের অগ্নি প্রজ্জলিত করা হবে, (১৩) এবং যখন জান্নাতকে নিকটবর্তী করা হবে, (১৪) তখন প্রত্যেক ব্যক্তিই জানবে যে, সে কী নিয়ে এসেছে।১০
টীকা :
[১] আরবী ভাষায় تَكْوِيْرٌ (তাকভীর) মানে হচ্ছে গুটিয়ে দেয়া। অর্থাৎ তার আলোকবিচ্ছুরণ বন্ধ হয়ে যাবে। তাছাড়া كُوِّرَتْ এর অপর অর্থ নিক্ষেপ করাও হয়ে থাকে। হাদীসে এসেছে, ‘‘চাঁদ ও সূর্যকে কিয়ামতের দিন পেঁচিয়ে রাখা হবে।’’-
(সহীহ বুখারী, হা/৩২০০)
[২] যে বাঁধনের কারণে তারা নিজেদের কক্ষপথে ও নিজেদের জায়গায় বাঁধা আছে তা খুলে যাবে এবং সমস্ত গ্রহ-তারকা বিশ্ব-জাহানের চারদিকে ছড়িয়ে পড়বে। এ ছাড়াও তারা শুধু ছড়িয়েই পড়বে না; বরং এই সঙ্গে আলোহীন হয়ে অন্ধকারও হয়ে যাবে।
[৩] পাহাড়সমূহকে কয়েকটি পর্যায়ে চলমান করা হবে। প্রথমে তা বিক্ষিপ্ত বালুরাশির মতো হবে, তারপর তা ধুনিত পশমের মতো হবে, সবশেষে তা উৎক্ষিপ্ত ধুলিকণা হয়ে যাবে এবং তার জায়গায় আর অবস্থিত থাকবে না।
[৪] আরবদের কাছে গর্ভবতী মাদী উট, যার প্রসবের সময় অতি নিকটে, তার চেয়ে বেশি মূল্যবান আর কোন সম্পদই ছিল না। এ সময় তার হেফাজত ও দেখাশুনার জন্য সবচেয়ে বেশি যত্ন নেয়া হতো। কিয়ামতের বিপদ যখন তাদের উপর এসে পড়বে, তখন এই সবচেয়ে প্রিয় সম্পদ সংরক্ষণের কথা তাদের খেয়ালই থাকবে না। আরবদেরকে কিয়ামতের ভয়াবহ অবস্থা বুঝাবার জন্য এটি ছিল একটি চমৎকার বর্ণনা পদ্ধতি।
[৫] এর কয়েকটি অর্থ রয়েছে। একটি অর্থ হল অগ্নিসংযোগ করা ও প্রজ্বলিত করা। কেউ কেউ বলেন, সমুদ্রগুলোকে স্ফীত করা হবে। কেউ কেউ এর অর্থ নিয়েছেন, পানি পূর্ণ করা হবে। অন্য কেউ অর্থ নিয়েছেন, মিশ্রিত করা অর্থাৎ সমুদ্র এক করে দেয়া হবে। সাধারণ চুল্লীতে আগুন জ্বালাবার জন্য তাসজীর শব্দ ব্যবহার করা হয়। কিয়ামতের দিন সমুদ্রে আগুন লেগে যাবে, এ কথাটা বিস্ময়কর মনে হয়। কিন্তু পানির মূল তত্ত্ব ও উপাদান সম্পর্কে ধারণা থাকলে এর মধ্যে কোন কিছুই বিস্ময়কর মনে হবে না। আল্লাহ তাঁর ক্ষমতার সাহায্যে অক্সিজেন ও হাইড্রোজেনের মতো এমন দুটি গ্যাসকে একসাথে মিশ্রত করে রেখেছেন, যাদের একটি আগুন জ্বালায় এবং অন্যটি নিজে জ্বলে। এই দুটি গ্যাসের সংমিশ্রণে পানির মতো এমন একটি বস্তু সৃষ্টি করেছেন, যা আগুন নিভিয়ে দেয়। আল্লাহর অসীম ক্ষমতার একটি ইঙ্গিতই পানির এই মিশ্রণ পরিবর্তন করে দেবার জন্য যথেষ্ট। তখন তারা পরস্পর থেকে আলাদা হয়ে তাদের মূল প্রকৃতি অনুযায়ী আগুন জ্বালাবার ও জ্বলার কাজ করবে।
[৬] এর অর্থ হচ্ছে, যখন আত্মাকে দেহের সাথে পুনঃমিলিত করা হবে। কিয়ামতের সময়ে সকলকে জীবিত করার জন্য প্রথমে দেহকে পুনরায় সৃষ্টি করা হবে। অতঃপর আত্মাকে দেহের সাথে সংযোজন করা হবে। এর আরেকটি অর্থ হল, যখন মানুষকে জোড়া জোড়া করা হবে। অর্থাৎ মানুষের আমল অনুসারে তাদের শ্রেণীবিভাগ করা হবে। যখন হাশরে সমবত লোকদেরকে বিভিন্ন দলে দলবদ্ধ করে দেয়া হবে। এই দলবদ্ধকরণ ঈমান ও কর্মের দিক দিয়ে করা হবে। ইহুদীরা ইহুদীদের সাথে, নাসারারা নাসারাদের সাথে, মুনাফিকরা মুনাফিকদের সাথে এক জায়গায় সমবেত হবে। মূলত হাশরে লোকদের তিনটি প্রধান দল হবে- (এক) পূর্ববর্তী সৎকর্মী লোকদের (দুই) আসহাবুল ইয়ামীনের এবং (তিন) আসহাবুশ শিমালের দল। প্রথমোক্ত দুই দল মুক্তি পাবে এবং তৃতীয় দলটি হবে কাফির পাপাচারীদের- তারা মুক্তি পাবে না।
[৭] اَلْمَوْءُوْدَةُ শব্দের অর্থ জীবন্ত প্রোথিত কন্যা। জাহেলিয়াত যুগের কোন কোন আরব গোত্র কন্যা সন্তান জন্ম হওয়াকে লজ্জাকর মনে করত। ফলে তারা তাকে জীবিত অবস্থাতেই মাটিতে প্রোথিত করে দিত। কোথাও সন্তান প্রসবকালেই মায়ের সামনে একটি গর্ত খনন করে রাখা হতো। মেয়ে সন্তান ভূমিষ্ঠ হলে তখনই তাকে গর্তে ফেলে দিয়ে মাটি চাপা দেয়া হতো। আবার কোথাও যদি মা এতে রাজী না হতো বা তার পরিবারের কেউ এতে বাধা দিত তাহলে অনিচ্ছাসত্ত্বেও বাপ কিছুদিন তাকে লালন পালন করতো। তারপর একদিন মরুভূমি, পাহাড় বা জঙ্গলের মধ্যে নিয়ে গিয়ে কোথাও তাকে জীবিত কবর দিয়ে দিতো। এই ধরনের রেওয়াজ আরবের বিভিন্ন এলাকায় প্রচলিত ছিল। পরবর্তীতে ইসলাম এই কুপ্রথার মূলোৎপাটন করে।
[৮] অপরাধ করেছে পিতা বা মাতা, কিন্তু তাদেরকে কিছুই জিজ্ঞেস করা হচ্ছে না। এ আয়াতের বর্ণনাভঙ্গীতে মারাত্মক ধরনের ক্রোধের প্রকাশ দেখা যাচ্ছে। আর তা হলো, যেসব পিতা বা মাতা তাদের মেয়েকে জীবিত পুঁতে ফেলেছে তারা আল্লাহর কাছে এত বেশি ঘৃণিত হবে যে, যখন আল্লাহ তা‘আলা কিয়ামতের মাঠে সমস্ত মানুষের বিচার-ফায়সালা করবেন তখন তাদেরকে সম্বোধন করে এ কথা জিজ্ঞেস করা হবে না যে, তোমরা এই নিষ্পাপ শিশুটিকে কোন্ অপরাধে হত্যা করেছিলে? বরং সেদিন তাদের দিক থেকে দৃষ্টি ফিরিয়ে নিয়ে ছোট্ট নিরপরাধ মেয়েকে জিজ্ঞেস করা হবে, তোমাকে কোন্ অপরাধে হত্যা করা হয়েছিল?
[৯] كُشِطَتْ এর আভিধানিক অর্থ জন্তুর চামড়া খসানো। এর অপর অর্থ অপসারণ করা, সরিয়ে নেয়া। এ হিসেবে আয়াতের অর্থ এই যে, যখন মাথার উপর ছাদের ন্যায় বিস্তৃত এই আকাশকে অপসারিত করা হবে।
[১০] অর্থাৎ কিয়ামতের পরিস্থিতিতে প্রত্যেকেই জেনে নিবে যে, সে সৎকর্ম কিংবা অসৎকর্ম কী নিয়ে এসেছে।
(১৫) فَلَاۤ اُقْسِمُ কিন্তু না, আমি শপথ করছি بِالْخُنَّسِ প্রত্যাবর্তনকারী তারকারাজির; (১৬) اَلْجَوَارِ যা গতিশীল اَلْكُنَّسِ ও স্থিতিমান; (১৭) وَاللَّيْلِ শপথ রাতের اِذَا عَسْعَسَ যখন সে চলে যেতে থাকে। (১৮) وَالصُّبْحِ শপথ প্রভাতের اِذَا تَنَفَّسَ যখন এর আবির্ভাব হয়, (১৯) اِنَّهٗ নিশ্চয় এটা لَقَوْلُ বাণী رَسُوْلٍ كَرِيْمٍ সম্মানিত বার্তাবাহকের, (২০) ذِيْ قُوَّةٍ সে শক্তিশালী عِنْدَ ذِي الْعَرْشِ আরশের মালিকের নিকট مَكِيْنٍ মর্যাদা সম্পন্ন, (২১) مُطَاعٍ ثَمَّ সেখানে সে আস্থাভাজন ও اَمِيْنٍ বিশ্বাস ভাজন। (২২) وَمَا صَاحِبُكُمْ আর তোমাদের সাথী (মুহাম্মাদ) নন بِمَجْنُوْنٍ পাগল (২৩) وَلَقَدْ رَاٰهُ তিনি তো তাঁকে দেখেছিলেন بِالْاُفُقِ الْمُبِيْنِ স্পষ্ট দিগন্তে। (২৪) وَمَا هُوَ আর তিনি নন عَلَى الْغَيْبِ অদৃশ্য বিষয় সম্পর্কে বর্ণনা করতে بِضَنِيْنٍ কৃপণ। (২৫) وَمَا هُوَ আর এটা (কুরআন) নয় بِقَوْلِ شَيْطَانٍ কোন শয়তানের বাক্য رَجِيْمٍ যে অভিশপ্ত । (২৬) فَاَيْنَ সুতরাং তোমরা কোথায় تَذْهَبُوْنَ চলেছো? (২৭) اِنْ هُوَ নিশ্চয় এটা তো اِلَّا ذِكْرٌ কেবল উপদেশ لِلْعَالَمِيْنَ বিশ্ববাসীর জন্যে, (২৮) لِمَنْ যে شَآءَ চায় مِنْكُمْ তোমাদের মধ্য হতে اَنْ يَّسْتَقِيْمَ সরল পথে চলতে। (২৯) وَمَا تَشَآءُوْنَ আর তোমরা কিছুই চাইবে না, اِلَّاۤ اَنْ يَّشَآءَ اللهُ তবে যদি আল্লাহ চান, رَبُّ الْعَالَمِيْنَ যিনি জগতসমূহের প্রতিপালক।
সরল অনুবাদ :
(১৫) কিন্তু না, আমি শপথ করছি প্রত্যাবর্তনকারী তারকারাজির; (১৬) যা গতিশীল ও স্থিতিমান; (১৭) শপথ রাতের, যখন সে চলে যেতে থাকে।১১ (১৮) আর (শপথ) প্রভাতের, যখন এর আবির্ভাব হয়, (১৯) নিশ্চয় এই কুরআন সম্মানিত বার্তাবাহকের আনীত বাণী,১২ (২০) সে শক্তিশালী আরশের মালিকের নিকট মর্যাদা সম্পন্ন, (২১) সেখানে তাকে মান্য করা হয় এবং সে বিশ্বাস ভাজন।১৩ (২২) এবং তোমাদের সাথী (মুহাম্মাদ) পাগল নন,১৪ (২৩) তিনি তো তাঁকে (জিবরাঈলকে) দিগন্তে দেখেছিলেন।১৫ (২৪) তিনি অদৃশ্য বিষয় সম্পর্কে বর্ণনা করতে কৃপণ নন।১৬ (২৫) এবং এটা (কুরআন) কোন অভিশপ্ত শয়তানের বাক্য নয়। (২৬) সুতরাং তোমরা কোথায় চলেছো? (২৭) এটা তো কেবল বিশ্ববাসীর জন্যে উপদেশ, (২৮) তোমাদের মধ্যে যে সরল পথে চলতে চায়, তার জন্যে।১৭ (২৯) তোমরা কিছুই চাইবে না, যদি জগতসমূহের প্রতিপালক আল্লাহ তা না চান।১৮
টীকা :
[১১] عَسْعَسَ শব্দটির দুটি অর্থ হতে পারে। একটি হচ্ছে বিদায় নেয়া, শেষ হওয়া। অপর অর্থ হল আগমন করা, প্রবেশ করা। তখন আয়াতটির অর্থ হয়, শপথ রাতের, যখন তা আগমন করে।
[১২] এখানে সম্মানিত বাণীবাহক رَسُوْلٌ كَرِيْمٌ বলতে অহী আনার কাজে লিপ্ত ফেরেশতা জিবরাঈল (আঃ) কে বুঝানো হয়েছে। পরবর্তী আয়াতে একথাটি আরো সুস্পষ্ট করে বলা হয়েছে। নবী-রাসূলগণের মতো ফেরেশতাগণের বেলায়ও রাসূল শব্দ ব্যবহৃত হয়। উল্লেখিত সবগুলো বিশ্লেষণ জিবরাঈল (আঃ) এর জন্য প্রযোজ্য। কুরআনকে ‘‘বাণীবাহকের বাণী’’ বলার অর্থ এই নয় যে, এটি ঐ সংশ্লিষ্ট ফেরেশতার নিজের কথা। বরং এটি সেই সত্তার বাণী যিনি তাকে বাণীবাহক করে পাঠিয়েছেন।
[১৩] অর্থাৎ এই কুরআন একজন সম্মানিত দূতের আনীত কালাম। তিনি শক্তিশালী, আরশের অধিপতির কাছে মর্যাদাশীল। তিনি ফেরেশতাদের নিকট মান্য। সমস্ত ফেরেশতা তাকে মান্য করে। তিনি আল্লাহর বিশ্বাসভাজন; পয়গাম আনা নেয়ার কাজে তার তরফ থেকে বিশ্বাসভঙ্গ ও কম বেশি করার সম্ভাবনা নেই। বরং তিনি এমন পর্যায়ের আমানতদার যে, আল্লাহর পক্ষ থেকে যা কিছু বলা হয় সেগুলো তিনি হুবহু পৌঁছিয়ে দেন।
[১৪] এখানে সাথী বলতে মুহাম্মাদ ﷺ কে বুঝানো হয়েছে। যারা রাসূলুল্লাহ ﷺ কে উম্মাদ বলত এতে তাদেরকে জবাব দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ তোমাদের এ ধারণা ঠিক নয় যে, কুরআনে যা কিছু বর্ণনা করা হচ্ছে এগুলো কোন পাগলের প্রলাপ বা শয়তানের বক্তব্য।
[১৫] অর্থাৎ মুহাম্মাদ ﷺ কে প্রকাশ্য দিগন্তে, মূল আকৃতিতে দেখেছেন। এই দেখার কথা বলার উদ্দেশ্য এই যে, তিনি ওহী নিয়ে আগমনকারী জিবরাঈল (আঃ) এর সাথে পরিচিত ছিলেন। তাকে আসল আকার আকৃতিতেও দেখেছিলেন। তাই এই ওহীতে কোনরূপ সন্দেহ সংশয়ের অবকাশ নেই।
[১৬] রাসূলুল্লাহ ﷺ তোমাদের কাছ থেকে কোন কথা গোপন রাখেন না। গায়েব থেকে তার কাছে যেসব তথ্য বা অহী আসে তা সবই তিনি একটুও কমবেশি না করে তোমাদের কাছে বর্ণনা করেন।
[১৭] অন্য কথায় বলা যায়, এ বাণীটি তো সারা দুনিয়ার মানুষের জন্য উপদেশ এ কথা ঠিক, কিন্তু এর থেকে ফায়দা একমাত্র সেই ব্যক্তি হাসিল করতে পারে যে নিজে সত্য-সরল পথে চলতে চায়। এ উপদেশ থেকে উপকৃত হবার জন্য মানুষের সত্য-সন্ধানী ও সত্য প্রিয় হওয়া প্রথম শর্ত।
[১৮] অর্থাৎ তোমরা সরল পথে চলতে চাইলে এবং আল্লাহর দ্বীনের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকতে চাইলেই থাকতে পারবে না- যতক্ষণ পর্যন্ত আল্লাহ ইচ্ছা না করবেন। সুতরাং তাঁর কাছেই তাওফীক কামনা করো। তবে এটা সত্য যে, কেউ যদি আল্লাহর পথে চলতে ইচ্ছে করে তবে আল্লাহও তাকে সেদিকে চলতে সহযোগিতা করেন। মূলত আল্লাহর ইচ্ছা হওয়ার পরই বান্দার সে পথে চলার তাওফীক হয়। বান্দার ইচ্ছা আল্লাহর ইচ্ছা অনুসারেই হয়। তবে যদি ভাল কাজ হয়, তাতে আল্লাহর সন্তুষ্টি থাকে, এটাকে বলা হয় আল্লাহর শরীয়তগত ইচ্ছা। পক্ষান্তরে খারাপ কাজ হলে আল্লাহর ইচ্ছায় সংঘটিত হলেও তাতে তাঁর সন্তুষ্টি থাকে না। এটাকে বলা হয় আল্লাহর প্রাকৃতিক ইচ্ছা। এ দু‘ধরনের ইচ্ছার মধ্যে পার্থক্য না করার কারণে অতীতে ও বর্তমানে অনেক দল ও ফের্কার উদ্ভব ঘটেছে।
এ সূরার শিক্ষাসমূহ :
অনেক ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে কিয়ামত সংঘটিত হবে।
কন্যা সন্তানকে হত্যা করা মারাত্মক অপরাধ।
কিয়ামতের দিন ভালো-মন্দ সমস্ত আমলনামা প্রকাশ করা হবে।
কিয়ামতের দিন জান্নাত ও জাহান্নামকে উপস্থিত করা হবে।
কুরআন আল্লাহ তা‘আলার বাণী; কোন শয়তান, গণক বা জ্যোতিষীর কথা নয়।
মুহাম্মাদ ﷺ সরাসরি জিবরাঈল (আঃ)-কে দেখতে সক্ষম হয়েছিলেন।
সত্য পথে চলতে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের জন্য কুরআন হচ্ছে একটি আদর্শ গ্রন্থ।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/319/6
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।