hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

আম্মা পারা

লেখকঃ শাইখ আবদুর রহমান বিন মুবারক আলী

২৫
১০০- সূরা আদিয়াত
সূরার নামকরণ :

সূরাটির প্রথম শব্দ اَلْعَادِيَاتُ (আল আদিয়াত)-কে এর নাম হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। عَدْوٌ অর্থ দৌড়ানো। এখানে ঘোড়াকে বুঝানো হয়েছে।

নাযিলের সময়কাল :

এটি মক্কী যুগের প্রথম দিকে নাযিল হয়।

সূরার বিষয়বস্তু :

মানুষ আখেরাতকে অস্বীকার করে অথবা তা থেকে গাফেল হয়ে কেমন নৈতিক অধঃপতনের দিকে চলে যায়- এ কথা লোকদের বুঝানোই এই সূরাটির উদ্দেশ্য। এ উদ্দেশ্যে আরবে সাধারণভাবে যে বিশৃঙ্খলা ছড়িয়ে ছিল এবং যার ফলে সমগ্র দেশবাসীর জীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল তাকে যুক্তি ও প্রমাণ হিসেবে পেশ করা হয়েছে।

এ পরিস্থিতির দিকে ইঙ্গিত করে বলা হয়েছে, মৃত্যুর পর পুনরুজ্জীবন এবং সেখানে আল্লাহর সামনে জবাবদিহি করার ব্যাপারে অজ্ঞতার কারণে মানুষ তার রবের প্রতি অকৃতজ্ঞ হয়ে পড়েছে। সে আল্লাহর দেয়া ক্ষমতাগুলোকে জুলুম-নিপীড়নের কাজে ব্যবহার করছে। সে ধন-সম্পদের প্রেমে অন্ধ হয়ে তা অর্জন করার জন্য যে কোন অন্যায়, অসৎ ও গর্হিত পন্থা অবলম্বন করতে কুণ্ঠিত হয় না। তার অবস্থা নিজেই সাক্ষ্য দিচ্ছে যে, সে নিজের রবের দেয়া শক্তিগুলোর অপব্যবহার করে তার প্রতি কৃতজ্ঞতাহীনতার প্রকাশ করছে। যদি সে সেই সময়ের কথা জানতো যখন কবর থেকে জীবিত হয়ে আবার উঠতে হবে তাহলে সে এই দৃষ্টিভঙ্গী ও কর্মনীতি কখনই অবলম্বন করতে পারতো না। দুনিয়ায় কে কী করে এসেছে এবং কার সাথে কোন ধরনের ব্যবহার করা উচিত মানুষের রব সে সময় সে কথা খুব ভালোভাবেই জানবেন।

আয়াত : ১-১১



وَالْعَادِيَاتِ ضَبْحًا (১) فَالْمُوْرِيَاتِ قَدْحًا (২) فَالْمُغِيْرَاتِ صُبْحًا (৩) فَاَثَرْنَ بِه نَقْعًا (৪) فَوَسَطْنَ بِه جَمْعًا (৫) اِنَّ الْاِنْسَانَ لِرَبِّه لَكَنُوْدٌ (৬) وَاِنَّهٗ عَلٰى ذٰلِكَ لَشَهِيْدٌ (৭) وَاِنَّهٗ لِحُبِّ الْخَيْرِ لَشَدِيْدٌ (৮) اَفَلَا يَعْلَمُ اِذَا بُعْثِرَ مَا فِي الْقُبُوْرِ (৯) وَحُصِّلَ مَا فِي الصُّدُوْرِ (১০) اِنَّ رَبَّهُمْ بِهِمْ يَوْمَئِذٍ لَّخَبِيْرٌ (১১)

শাব্দিক অনুবাদ :

(১) وَالْعَادِيَاتِ শপথ অশ্বসমূহের ضَبْحًا ঊর্ধ্বশ্বাসে চলমান, (২) فَالْمُوْرِيَاتِ অতঃপর ক্ষুরাঘাতে বিচ্ছুরণকারী قَدْحًا আগুনের ফুলকী। (৩) فَالْمُغِيْرَاتِ অতঃপর আগমনকারী অশ্বসমূহের صُبْحًا প্রভাতকালে (৪) فَاَثَرْنَ আর তারা উৎক্ষিপ্ত করে بِه  তা দ্বারা نَقْعًا ধূলিকণা। (৫) فَوَسَطْنَ অতঃপর যারা ঢুকে পড়ে بِه  যার দ্বারা جَمْعًا কোন জনপদে। (৬) اِنَّ নিশ্চয় اَلْاِنْسَانَ মানুষ لِرَبِّه  তার পালনকর্তার প্রতি لَكَنُوْدٌ অকৃতজ্ঞ। (৭) وَاِنَّهٗ এবং নিশ্চয় সে عَلٰى ذٰلِكَ এ বিষয়ে لَشَهِيْدٌ অকাট্য সাক্ষী। (৮) وَاِنَّهٗ এবং নিশ্চয় সে لِحُبِّ الْخَيْرِ ধন-সম্পদের ভালোবাসায় لَشَدِيْدٌ খুব বেশি মত্ত। (৯) اَفَلَا يَعْلَمُ সে কি জানে না, اِذَا যখন بُعْثِرَ উত্থিত হবে مَا فِي الْقُبُوْرِ কবরে যা আছে তা, (১০) وَحُصِّلَ এবং প্রকাশ করা হবে مَا فِي الصُّدُوْرِ অন্তরে যা আছে? (১১) اِنَّ নিশ্চয় رَبَّهُمْ তাদের প্রতিপালক بِهِمْ তাদের সম্পর্কে يَوْمَئِذٍ সেদিন لَخَبِيْرٌ সবিশেষ জ্ঞাত।

সরল অনুবাদ :

(১) শপথ ঊর্ধ্বশ্বাসে চলমান অশ্বসমূহের।১ (২) অতঃপর ক্ষুরাঘাতে অগ্নিবিচ্ছুরক অশ্বসমূহের।২ (৩) অতঃপর প্রভাতকালে অভিযানকারীর৩ (৪) যার দ্বারা তারা ধূলি উড়ায়।৪ (৫) অতঃপর তারা তার মাধ্যমে কোনো জনপদে ঢুকে পড়ে।৫ (৬) নিশ্চয় মানুষ তার প্রতিপালকের প্রতি অকৃতজ্ঞ।৬ (৭) আর অবশ্যই সে এ বিষয়ে নিজেই অকাট্য সাক্ষী।৭ (৮) এবং নিশ্চয় সে ধন-সম্পদের ভালোবাসায় মত্ত।৮ (৯) সে কি জানে না, যখন কবরে যা আছে তা উত্থিত হবে, (১০) এবং অন্তরে যা আছে, তা প্রকাশ করা হবে?৯ (১১) সেদিন তাদের কী হবে, সে সম্পর্কে তাদের প্রতিপালক সবিশেষ জ্ঞাত।১০

টীকা :

[১] اَلْعَادِيَاتُ অর্থ দৌড়ানো। ضَبْحٌ বলা হয় ঘোড়ার দৌড় দেয়ার সময় তার বক্ষ থেকে নির্গত আওয়াজকে। কোন কোন গবেষকের মতে এখানে দৌড়ানো শব্দের মাধ্যমে ঘোড়া বা উট অথবা উভয়টিও উদ্দেশ্য হতে পারে। তবে ইমাম কুরতুবী ঘোড়াকেই প্রাধান্য দিয়েছেন।

[২] مُوْرِيَاتٌ অর্থ অগ্নি নির্গত করা। قَدْحٌ এর অর্থ আঘাত করা, ঘর্ষণ করা, যার কারণে আগুন তৈরি হয়। লৌহনাল পরিহিত অবস্থায় ঘোড়া যখন প্রস্তরময় মাটিতে ক্ষুরাঘাত করে দৌড় দেয়, তখন অগ্নিস্ফূলিঙ্গ নির্গত হয়।

[৩] مُغِيْرَاتٌ শব্দটি إِغَارَةٌ থেকে উদ্ভূত। অর্থ হামলা করা, হানা দেয়া। صُبْحًا ভোর বেলায় বলে আরবদের অভ্যাস হিসেবে প্রভাতকালের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। কোন কোন মুফাসসির বলেন, আরববাসীদের নিয়ম ছিল, কোন জনপদে অতর্কিত আক্রমণ করতে হলে তারা রাতের আঁধারে বের হয়ে পড়তো। এর ফলে শত্রুপক্ষ পূর্বে সতর্ক হতে পারতো না। এভাবে একেবারে খুব সকালে তাদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়তো।

[৪] أَثَرْنَ শব্দটি إِثَارَةٌ থেকে উৎপন্ন। অর্থ ধূলি উড়ানো। نَقْعٌ বলা হয় ধূলিকে। আর بِه  শব্দের অর্থ, সে সময়ে বা শত্রুদের সে স্থানে। অর্থাৎ অশ্বসমূহ যুদ্ধক্ষেত্রে এত দ্রুত ধাবমান হয় যে, তাদের ক্ষুর থেকে ধূলি উড়ে চতুর্দিক আচ্ছন্ন করে ফেলে।

[৫] وَسَطْنَ শব্দটির অর্থ কোন কিছুর মধ্যভাগে পৌঁছে দেওয়া। جَمْعًا অর্থ দল বা গোষ্ঠী। আর بِه  অর্থ, তা দ্বারা। এখানে তা বলতে আরোহীদের দ্বারা বুঝানো হয়েছে। অর্থাৎ অশ্বসমূহ ধূলিকণা উড়িয়ে তাদের আরোহীদের নিয়ে শত্রুদের মধ্যভাগে পৌঁছে যায়।

[৬] এত বড় শপথ করার পরে এখানে যে উদ্দেশ্যে শপথ করা হয়েছে, তা বর্ণনা করা হয়েছে। শপথের মূলকথা হচ্ছে এটা বর্ণনা করা যে, মানুষ তার প্রভুর অকৃতজ্ঞতাই প্রকাশ করে থাকে। كَنُوْدٌ বলতে বুঝানো হয়েছে যে, মানুষ তার রবের নিয়ামতের প্রতি বড়ই অকৃতজ্ঞ। হাসান বসরী বলেন, كَنُوْدٌ এর অর্থ সে ব্যক্তি, যে বিপদ স্মরণ রাখে এবং নিয়ামত ভুলে যায়।

[৭] এখানে ‘সে’ বলে বুঝানো হচ্ছে, মানুষ নিজেই এ বিষয়ে সাক্ষী। এ সাক্ষ্য নিজ মুখেই প্রকাশ করতে পারে, আবার কাজ-কর্ম ও অবস্থার মাধ্যমেও প্রকাশিত হতে পারে। এর আরেকটি অর্থ হতে পারে যে, আল্লাহ তা‘আলা মানুষের এ অকৃতজ্ঞতার ব্যাপারে সাক্ষী।

[৮] خَيْرٌ এর শাব্দিক অর্থ মঙ্গল। এখানে ব্যাপক অর্থ ত্যাগ করে আরবের বাকপদ্ধতি অনুযায়ী এ আয়াতে ধন-সম্পদকে خَيْرٌ বলে ব্যক্ত করা হয়েছে। এ আয়াতটির অর্থও দু’রকম হতে পারে। (এক) সে সম্পদের আসক্তির কারণে প্রচন্ড কৃপণ; (দুই) সম্পদের প্রতি তার আসক্তি অত্যন্ত প্রবল। দ্বিতীয় অর্থটির মধ্যেই মূলত প্রথমটি চলে আসে; কেননা সম্পদের প্রতি প্রচন্ড আসক্তিই কৃপণতার কারণ।

[৯] অর্থাৎ অন্তরের ভালো-মন্দ পৃথক করে প্রকাশ করে দেওয়া হবে। ফলে গোপনগুলো প্রকাশ হয়ে পড়বে; মানুষের কর্মফল তাদের চেহারায় ফুটে উঠবে।

[১০] অর্থাৎ তাদের রব তাদের ব্যাপারে অবশ্যই যথেষ্ট অবহিত, তাদের কোন কাজই তার নিকট গোপন নয়। তাদের প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য বা গোপন সব কাজ-কর্মই তিনি জানেন। তিনি তাদেরকে এগুলোর উপযুক্ত প্রতিদানও দেবেন।

এ সূরার শিক্ষাসমূহ :

আল্লাহ তা‘আলার নিয়ামতের প্রতি অকৃতজ্ঞতা প্রকাশ করাটাই হচ্ছে মানুষের চিরন্তন স্বভাব।

প্রতিটি মানুষ নিজেই নিজের জন্য সাক্ষী।

অধিকাংশ মানুষ পার্থিব ধন-সম্পদের ভালোবাসায় মুহিত হয়ে থাকে।

কিয়ামতের দিন সমস্ত মানুষকে পুনরুত্থিত করা হবে।

কিয়ামতের দিন মানুষের অন্তরে লুকায়িত সমস্ত বিষয় প্রকাশ পেয়ে যাবে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন