মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
প্রথম আয়াতে উল্লেখিত اَلْكَافِرُوْنَ (আল-কাফিরূন) শব্দের আলোকে এ সূরার নামকরণ করা হয় আল-কাফিরূন। এর অর্থ কাফির সম্প্রদায়।
নাযিলের সময়কাল :
অধিকাংশ মুফাসসিরের মতে এটি মক্কী সূরা। তাছাড়া এর বিষয়বস্তুই এর মক্কী হওয়ার কথা প্রমাণ করে।
ঐতিহাসিক পটভূমি :
মক্কায় এমন এক যুগ ছিল যখন নবী ﷺ এর দাওয়াতের বিরুদ্ধে মুশরিক সমাজে প্রচন্ড বিরোধিতা শুরু হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু রাসূলুল্লাহ ﷺ-কে কোন না কোন প্রকারে আপোষ করতে উদ্বুদ্ধ করা যাবে বলে কুরাইশ সরদাররা মনে করতো। এ ব্যাপারে তারা তখনো নিরাশ হয়নি। এজন্য তারা মাঝে মধ্যে তাঁর কাছে আপোষের ফরমূলা নিয়ে হাযির হতো। তিনি তার মধ্য থেকে কোন একটি প্রস্তাব মেনে নিলেই তাঁর ও তাদের মধ্যকার ঝগড়া মিটে যাবে বলে তারা মনে করতো। হাদীসে এ সম্পর্কে বিভিন্ন ঘটনা বর্ণিত হয়েছে।
আবদুল্লাহ ইবনে আববাস (রাঃ) বর্ণনা করেছেন, কুরাইশরা রাসূলুল্লাহ ﷺ কে বললো, আমরা আপনাকে এত বেশি পরিমাণ ধন-সম্পদ দেবো, যার ফলে আপনি মক্কার সবচেয়ে ধনাঢ্য ব্যক্তি হয়ে যাবেন। যে মেয়েটিকে আপনি পছন্দ করবেন তার সাথে আপনার বিয়ে দিয়ে দেবো। আমরা আপনার পিছনে চলতে প্রস্তুত। আপনি শুধু আমাদের একটি কথা মেনে নেবেন- আমাদের উপাস্যদের নিন্দা করা থেকে বিরত থাকবেন। এ প্রস্তাবটি আপনার পছন্দ না হলে আমরা আরেকটি প্রস্তাব পেশ করছি। এ প্রস্তাবে আপনার লাভ এবং আমাদেরও লাভ। রাসূলুল্লাহ ﷺ জিজ্ঞেস করলেন, সেটি কী? তারা বলল, এক বছর আপনি আমাদের উপাস্যের ইবাদাত করবেন এবং আমরাও এক বছর আপনার উপাস্যদের ইবাদাত করবো। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন, থামো! আমি দেখি আমার রবের পক্ষ থেকে কী হুকুম আসে। তখনই সূরা কাফিরূন এবং এই আয়াত নাযিল হয় : قُلْ اَفَغَيْرَ اللهِ تَأْمُرُوْنِّىْ اَعْبُدُ اَيُّهَا الْجَاهِلُوْنَ অর্থাৎ ওদের বলে দাও, হে মূর্খের দল! তোমরা কি আমাকে বলছো, আল্লাহ ছাড়া আমি আর কারো ইবাদাত করবো? (সূরা যুমার- ৬৪)
সূরার বিষয়বস্তু :
উপরোক্ত প্রেক্ষাপট বিশ্লেষণ করলে জানা যাবে যে, আসলে ধর্মীয় উদারতার উপদেশ দেবার জন্য সূরাটি নাযিল হয়নি। বরং এ কথাগুলোকে কুরআনের অন্তর্ভুক্ত করে সমগ্র মুসলিম উম্মাহকে কিয়ামত পর্যন্ত এ শিক্ষা দেয়া হয়েছে যে, কুফরী ধর্ম দুনিয়ার যেখানেই যে আকৃতিতে আছে তার সাথে সম্পর্কহীনতা ও দায়িত্ব মুক্তির ঘোষণা তাদের কথা ও কাজের মাধ্যমে প্রকাশ করা উচিত। কোন প্রকার দ্বিধা-দ্বন্দ্ব ছাড়াই তাদের এ কথা জানিয়ে দেয়া উচিত যে, দ্বীনের ব্যাপারে তারা কাফিরদের সাথে কোন প্রকার আপোষ বা উদারনীতির আশ্রয় গ্রহণ করতে প্রস্তুত নয়। কারণ কুফরী ও কাফেরের কার্যকলাপ থেকে সম্পর্কহীনতা ঈমানের চিরন্তন দাবী।
ফযীলত :
এটা কুরআনের এক চতুর্থাংশ : রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, সূরা কাফিরূন কুরআনের এক চতুর্থাংশের মর্যাদা রাখে। (তিরমিযী, হা/২৮৯৪; মুসনাদে আহমাদ, হা/১২৫১০)
ঘুমানোর সময় এটা পড়লে শিরক থেকে মুক্ত থাকা যায় : ফরওয়া ইবনে নওফেল (রাঃ) বলেন, আমি নবী ﷺ এর কাছে এসে বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমাকে এমন কিছু শিক্ষা দিন, যা আমি শোয়ার সময় পড়ব। তখন তিনি বললেন, সূরা কাফিরূন পাঠ করো; কেননা এটা শিরক থেকে মুক্তকারী।
(তিরমিযী, হা/৩৪০৩; আবু দাউদ, হা/৫০৫৭)
সালাতে এটা পড়ার গুরুত্ব :
১. রাসূলুল্লাহ ﷺ ফজরের দু’রাকআত সুন্নাতে এবং মাগরিবের দু’রাকআত সুন্নাতে সূরা কাফিরূন এবং সূরা ইখলাস পড়তেন। (সহীহ মুসলিম, হা/১৭২৩)
২. জাবের (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ তাওয়াফের দু’রাকআত সালাতে সূরা কাফিরূন এবং সূরা ইখলাস পড়তেন। (সহীহ মুসলিম, হা/১২১৮।)
(১) قُلْ তুমি বলে দাও, يَاۤ اَيُّهَا হে اَلْكَافِرُوْنَ কাফিররা! (২) لَاۤ اَعْبُدُ আমি (তাদের) ইবাদত করি না, مَا تَعْبُدُوْنَ যাদের ইবাদত তোমরা করো, (৩) وَلَاۤ اَنْتُمْ আর তোমরা নও عَابِدُوْنَ (তার) ইবাদতকারী مَاۤ اَعْبُدُ যার ইবাদত আমি করি। (৪) وَلَاۤ اَنَا এবং আমি নই عَابِدٌ (তাদের) ইবাদতকারী مَا عَبَدْتُّمْ যাদের ইবাদত তোমরা করো। (৫) وَلَاۤ اَنْتُمْ আর তোমরা নও عَابِدُوْنَ (তার) ইবাদতকারী مَاۤ اَعْبُدُ যার ইবাদত আমি করি। (৬) لَكُمْ তোমাদের জন্যে دِيْنُكُمْ তোমাদের দ্বীন وَلِيَ আর আমার জন্যে دِيْنِ আমার দ্বীন।
সরল অনুবাদ :
(১) (হে নবী!) তুমি বলে দাও, হে কাফিররা! (২) আমি (তাদের) ইবাদত করি না, যাদের ইবাদত তোমরা কর,১ (৩) আর তোমরা (তার) ইবাদতকারী নও, যার ইবাদত আমি করি।২ (৪) এবং আমি (কখনই তাদের) ইবাদতকারী নই, যাদের ইবাদত তোমরা করো। (৫) আর তোমরা (তার) ইবাদতকারী নও, যার ইবাদত আমি করি। (৬) (এ দীনের মধ্যে কোন মিশ্রণ সম্ভব নয়, অতএব) তোমাদের পথ তোমাদের জন্য; আর আমার পথ আমার জন্য।৩
টীকা :
[১] সারা দুনিয়ার কাফির মুশরিকরা যেসব বাতিল উপাস্যের উপাসনা, আরাধনা ও পূজা করত বা করে- সবই এর অন্তর্ভুক্ত।
[২] এ সূরায় কয়েকটি বাক্য বার বার উল্লেখিত হয়েছে। অনেক তাফসীরবিদ বলেছেন যে, একই বাক্য একবার বর্তমানকালের জন্য এবং একবার ভবিষ্যৎকালের জন্য উল্লেখ করা হয়েছে। অর্থাৎ আমি এখন তোমাদের উপাস্যদের ইবাদাত করি না এবং তোমরাও আমার উপাস্যের ইবাদাত কর না এবং ভবিষ্যতেও এরূপ হতে পারে না। আয়াতের অর্থ এটাও হতে পারে যে, আমার ও তোমাদের ইবাদাতের পদ্ধতি ভিন্ন ভিন্ন। আমি তোমাদের মতো ইবাদাত করতে পারি না। এভাবে প্রথম জায়গায় উপাস্যদের বিভিন্নতা এবং দ্বিতীয় জায়গায় ইবাদাত পদ্ধতির বিভিন্নতা বর্ণিত হয়েছে।
অর্থাৎ আর তারা যদি আপনার প্রতি মিথ্যারোপ করে তবে আপনি বলবেন, আমার কাজের দায়িত্ব আমার এবং তোমাদের কাজের দায়িত্ব তোমাদের। (সূরা ইউনুস : ৪১) অন্য আয়াতে এসেছে, لَنَا أَعْمَالُنَا وَلَكُمْ أَعْمَالُكُمْ অর্থাৎ আমাদের কাজের ফল আমাদের জন্য এবং তোমাদের কাজের ফল তোমাদের জন্য। (সূরা কাসাস : ৫৫; সূরা শুরা : ১৫)
এর সারমর্ম এই যে, প্রত্যেককে নিজ নিজ কর্মের প্রতিদান ও শাস্তি ভোগ করতে হবে। আমার দ্বীন আলাদা এবং তোমাদের দ্বীন আলাদা। আমি তোমাদের মাবুদদের পূজা-উপাসনা করি না এবং তোমরাও আমার মাবুদের ইবাদাত করো না। তাই আমার ও তোমাদের পথ কখনো এক হতে পারে না।
এ সূরায় কাফিরদের দ্বীনের কোন প্রকার স্বীকৃতিও দেয়া হয়নি। মূলত আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি যারা ঈমান এনেছে তারা দ্বীনের ব্যাপারে কখনো তাদের সাথে সমঝোতা করবে না- এ ব্যাপারে তাদেরকে সর্বশেষ ও চূড়ান্তভাবে নিরাশ করে দেয়া এবং তাদের সাথে সম্পর্কহীনতার ঘোষণাই এ সূরার উদ্দেশ্য।
বর্তমান কালের কোন কোন জাহিল মনে করে থাকে যে, এখানে কাফিরদেরকে তাদের দ্বীনের উপর থাকার স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। তারা এটা ইসলামের উদারনীতির প্রমাণ হিসেবে পেশ করে থাকে। নিঃসন্দেহে ইসলাম উদার। ইসলাম কাউকে অযথা হত্যা বা ক্ষতিগ্রস্ত করতে অনুমতি দেয় না। কিন্তু তাই বলে তাদেরকে কুফরী থেকে মুক্তি দিতে তাদের মধ্যে দাওয়াত ও দ্বীনের প্রচার-প্রসার ঘটানো থেকে বিরত থাকতে বলেনি। ইসলাম চায় প্রত্যেকটি কাফির ও মুশরিক ইসলামের ছায়াতলে এসে শান্তির বার্তা গ্রহণ করুক। আর এজন্য ইসলাম প্রজ্ঞা, উত্তম উপদেশবাণী, উত্তম পদ্ধতিতে তর্ক-বিতর্ক ইত্যাদির মাধ্যমে আল্লাহর পথে আহবান করাকে প্রত্যেক মুসলিমের জন্য অবশ্য করণীয় বিষয় হিসেবে ঘোষণা করেছে। এ সমস্ত জাহিলরা বিষয়টিকে বুঝতে চায় না। তারা এ আয়াত দ্বারা ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ নামক কুফরী মতবাদকে জায়েয প্রমাণ করতে চায়। এটা নিঃসন্দেহে ঈমান আনার পরে কুফরী করার শামিল।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন, তোমাদের জন্য ইবরাহীম ও তার সাথীদের মধ্যে রয়েছে একটি উত্তম আদর্শ। (সেটি হচ্ছে) তারা নিজেদের জাতিকে পরিষ্কার বলে দিয়েছে, আমরা তোমাদের থেকে ও আল্লাহকে বাদ দিয়ে যেসব মাবুদদের পূজা তোমরা কর তাদের থেকে পুরোপুরি সম্পর্কহীন। আমরা তোমাদের কুফরী করি ও অস্বীকৃতি জানাই এবং যতক্ষণ তোমরা এক আল্লাহর প্রতি ঈমান না আন, ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের ও তোমাদের মধ্যে চিরকালীন শত্রুতা সৃষ্টি হয়ে গেছে।
(সূরা মুমতাহিনাহ : ৪)
আয়াতের মূল ভাষ্য হচ্ছে, এখানে কাফিরদের সাথে সম্পর্কচ্যূতির ঘোষণা করা হয়েছে। তবে এটাও লক্ষণীয় যে, পবিত্র কুরআনে এ কথাও আছে, কাফিররা সন্ধি করতে চাইলে তোমরাও সন্ধি কর। (সূরা আনফাল : ৬১) তাছাড়া মদীনায় হিজরত করার পর রাসূলুল্লাহ ﷺ তাঁর ও ইয়াহুদীদের মধ্যে শান্তিচুক্তি সম্পাদন করেছিলেন। মূলত সন্ধির বৈধতা ও অবৈধতার আসল কারণ হচ্ছে স্থান-কাল-পাত্র এবং সন্ধির শর্তাবলি। রাসূলুল্লাহ ﷺ এক ফায়সালা দিতে গিয়ে বলেছেন, সে সন্ধি অবৈধ, যা কোন হারামকে হালাল কিংবা হালালকে হারাম করে।
ইসলাম ও কুফর এবং শির্ক ও তাওহীদ কখনো মিলিত হতে পারে না।
বাতিলের সাথে কখনো আপোষ করা যাবে না।
শিরকের নিন্দা করাই হচ্ছে তাওহীদের অন্যতম দাবী।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/319/34
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।