hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

আম্মা পারা

লেখকঃ শাইখ আবদুর রহমান বিন মুবারক আলী

২৭
১০২- সূরা তাকাসুর
সূরার নামকরণ :

সূরাটির প্রথম আয়াতে উল্লেখিত اَلتَّكَاثُرُ (আত-তাকাসুর) শব্দের আলোকে এর নাম রাখা হয় সূরা আত-তাকাসুর। এর অর্থ আধিক্য, প্রাচুর্য লাভের জন্য পরস্পরের অগ্রবর্তী হওয়ার চেষ্টা করা।

নাযিলের সময়কাল :

এটি মক্কী জীবনের প্রথম দিকে অবতীর্ণ সূরাগুলোর অন্যতম।

সূরার বিষয়বস্তু :

এই সূরায় মানুষকে দুনিয়ার প্রতি ভালোবাসা ও বৈষয়িক স্বার্থ পূজার অশুভ পরিণাম সম্পর্কে সতর্ক করে দেয়া হয়েছে। এই ভালোবাসা ও স্বার্থ পূজার কারণে মানুষ মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত বেশি বেশি ধন-সম্পদ আহরণ, পার্থিব লাভ, স্বার্থ, উদ্ধার, ভোগ, প্রতিপত্তি ক্ষমতা ও কর্তৃত্ব লাভ এবং তার মধ্যে প্রতিযোগিতামূলকভাবে একজন আরেকজনকে টপকে যাওয়ার প্রচেষ্টা চালিয়ে যায়। আর এসব অর্জন করার ব্যাপারে অহঙ্কারে মেতে থাকে। এই একটি মাত্র চিন্তা তাদেরকে এমনভাবে ব্যস্ত করে রেখেছে, যার ফলে এর চেয়ে উন্নততর কোন জিনিসের প্রতি নজর দেবার মানসিকতাই তাদের নেই। এর অশুভ পরিণতি সম্পর্কে সতর্ক করে দেওয়ার পর লোকদেরকে বলা হয়েছে, যেসব নিয়ামত তোমরা নিশ্চিন্তে সংগ্রহ করতে ব্যস্ত, এগুলো শুধুমাত্র নিয়ামত নয়; বরং এগুলো তোমাদের জন্য পরীক্ষার বস্তুও। এগুলোর মধ্য থেকে প্রত্যেকটি নিয়ামত সম্পর্কে তোমাদেরকে আখেরাতে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

আয়াত : ১-৮



اَلْهَاكُمُ التَّكَاثُرُ (১) حَتّٰى زُرْتُمُ الْمَقَابِرَ (২) كَلَّا سَوْفَ تَعْلَمُوْنَ (৩) ثُمَّ كَلَّا سَوْفَ تَعْلَمُوْنَ (৪) كَلَّا لَوْ تَعْلَمُوْنَ عِلْمَ الْيَقِيْنِ (৫) لَتَرَوُنَّ الْجَحِيْمَ (৬) ثُمَّ لَتَرَوُنَّهَا عَيْنَ الْيَقِيْنِ (৭) ثُمَّ لَتُسْاَلُنَّ يَوْمَئِذٍ عَنِ النَّعِيْمِ (৮)

শাব্দিক অনুবাদ :

(১) اَلْهَاكُمُ তোমাদেরকে গাফেল রাখে اَلتَّكَاثُرُ প্রাচুর্যের লালসা, (২) حَتّٰى যতক্ষণ না زُرْتُمْ তোমরা পৌঁছ اَلْمَقَابِرَ কবরস্থানে। (৩) كَلَّا কখনও (এটা সঙ্গত) নয়, سَوْفَ অচিরেই تَعْلَمُوْنَ তোমরা জানতে পারবে। (৪) ثُمَّ অতঃপর (আবার শুনে নাও) كَلَّا কখনও (এটা সঙ্গত) নয়, سَوْفَ অচিরেই تَعْلَمُوْنَ তোমরা জানতে পারবে। (৫) كَلَّا কখনই নয়; لَوْ যদি تَعْلَمُوْنَ তোমরা জানতে عِلْمَ الْيَقِيْنِ নিশ্চিত জ্ঞানের মাধ্যমে। (৬) لَتَرَوُنَّ তোমরা অবশ্যই দেখবে اَلْجَحِيْمَ জাহান্নাম। (৭) ثُمَّ অতঃপর (আবার শুনে নাও) لَتَرَوُنَّهَا তোমরা তা অবশ্যই দেখবে عَيْنَ الْيَقِيْنِ দিব্য-প্রত্যয়ে, (৮) ثُمَّ অতঃপর لَتُسْاَلُنَّ অবশ্যই তোমরা জিজ্ঞাসিত হবে يَوْمَئِذٍ সেদিন عَنِ النَّعِيْمِ নিয়ামত সম্পর্কে ।

সরল অনুবাদ :

(১) প্রাচুর্যের লালসা১ তোমাদেরকে গাফেল করে রেখেছে,১ (২) যতক্ষণ না তোমরা কবর পর্যন্ত গিয়ে পৌঁছ।৩ (৩) কখনো (সঙ্গত) নয়, অচিরেই তোমরা তা জানতে পারবে।৪ (৪) আবারও (শুনে নাও) কখনো (সঙ্গত) নয়, অচিরেই তোমরা তা জানতে পারবে। (৫) কখনো নয়, যদি তোমরা নিশ্চিত জানতে-৫ (তবে প্রাচুর্যের লালসা করতে না)। (৬) তোমরা অবশ্যই জাহান্নাম দেখতে পাবে। (৭) আবারও (শুনে নাও) তোমরা অবশ্যই জাহান্নাম দেখতে পাবে।৬ (৮) এরপর সেদিন তোমরা সেই নেয়ামত সম্পর্কে অবশ্যই জিজ্ঞেসিত হবে।৭

টীকা:

[১] বেশি বেশি বৈষয়িক স্বার্থ অর্জন করা, তার মধ্যে একে অন্যের অগ্রবর্তী হওয়া এবং অন্যের মোকাবেলায় তা নিয়ে গর্ব করার মোহ যেমন ব্যক্তিকে আচ্ছন্ন করে তেমনি আচ্ছন্ন করে গোত্র ও জাতিকেও। এখানে প্রাচুর্য বলতে যা কিছুর প্রাচুর্যের জন্য মানুষ সাধারণত চেষ্টা করে থাকে এবং অহঙ্কার করে থাকে সবই বুঝানো হয়েছে। হতে পারে সেটা ধন-সম্পদ, সন্তান-সন্ততি, সাহায্য-সহযোগিতাকারী, সৈন্য-সামন্ত, দাস-দাসী, মান-মর্যাদা ইত্যাদি যাই মানুষ বেশি পেতে চায় এবং অপরের উপর প্রাধান্য নেয়ার চেষ্টা করে। আর যা দ্বারা আল্লাহর সন্তুষ্টি উদ্দেশ্য থাকে না। এভাবে মানুষ আল্লাহ থেকে, তাঁর মাগফিরাত থেকে, তার দিকে প্রত্যাবর্তন থেকে, তাঁর ভালোবাসাকে সবকিছুর ভালোবাসার উপর স্থান দেয়া থেকে, যে ইবাদাতের জন্য তাকে সৃষ্টি করা হয়েছে সেটা থেকে গাফেল হয়ে গেছে। অনুরূপভাবে তারা আখেরাত থেকেও গাফেল হয়ে গেছে।

[২] تَكَاثُرٌ শব্দটি كَثْرَةٌ থেকে উদ্ভূত। এর অর্থ পরস্পর প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হওয়া। এখানে উদ্দেশ্য, প্রাচুর্য লাভ করার জন্য মানুষের পরস্পরের অগ্রবর্তী হওয়ার চেষ্টা করা ও প্রতিযোগিতা করা; লোকদের অন্যের তুলনায় বেশি প্রাচুর্য লাভ করার কথা নিয়ে পরস্পরের মোকাবেলায় বড়াই করে বেড়ানো।

[৩] এখানে বলা হয়েছে, যতক্ষণ না তোমরা কবরস্থান যিয়ারত কর। এখানে যিয়ারত করার অর্থ মরে গিয়ে কবরে পৌঁছানো। কাতাদাহ বলেন, তারা বলত, আমরা অমুক বংশের লোক, আমরা অমুক গোত্রের চেয়ে বেশি, আমাদের সংখ্যা অনেক। এভাবে বলতেই থাকল অথচ তারা কমতে কমতে সবাই কবরবাসী হয়ে গেল। অতএব আয়াতের মর্মার্থ এই যে, বলা হয়েছে, যারা ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততির ভালোবাসায় এমনভাবে মত্ত হয়ে পড়ে যে, নিজের পরিণাম চিন্তা করার ফুরসতই পায় না। আব্দুল্লাহ ইবনে শিখখির (রাঃ) বলেন, আমি একদিন রাসূলুল্লাহ ﷺ এর নিকট পৌঁছে দেখলাম তিনি اَلْهَاكُمُ التَّكَاثُرُ তিলাওয়াত করে বলেছিলেন, ‘‘মানুষ বলে আমার ধন! আমার ধন! অথচ তোমার অংশ তো ততটুকুই যতটুকু তুমি খেয়ে শেষ করে ফেল, অথবা পরিধান করে ছিন্ন করে দাও, অথবা সাদাকা করে সম্মুখে পাঠিয়ে দাও। এছাড়া যা আছে তা তোমার হাত থেকে চলে যাবে- তুমি অপরের জন্য তা ছেড়ে যাবে। (সহীহ মুসলিম, হা/২৯৫৮)

অন্য হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন, আদম সন্তানের যদি স্বর্ণে পরিপূর্ণ একটি উপত্যকা থাকে, তবে সে (তাতে সন্তুষ্ট হবে না; বরং) দুটি উপত্যকা কামনা করবে। তার মুখ তো (কবরের) মাটি ব্যতীত অন্য কিছু দ্বারা ভর্তি করা সম্ভব নয়। যে আল্লাহর দিকে নিজেকে তৈরি করে, আল্লাহ তার তওবা কবুল করেন। (সহীহ বুখারী, হা/৬৪৩৯; ৬৪৪০)

[৫] এখানে لَو বা ‘যদি’ শব্দের জবাব উহ্য রয়েছে। অর্থাৎ তোমরা যদি কিয়ামতের হিসাব-নিকাশে নিশ্চিত বিশ্বাসী হতে, তবে কখনও প্রাচুর্যের বড়াই করতে না এবং উদাসীন হতে না।

[৬] উপরে বলা হয়েছে, عَيْنَ الْيَقِيْنِ এর অর্থ সে প্রত্যয়, যা সরাসরি দেখা থেকে অর্জিত হয়।

[৭] অর্থাৎ তোমরা সবাই কিয়ামতের দিন আল্লাহ প্রদত্ত নিয়ামত সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে যে, সেগুলোর শোকর আদায় করছ কি না, সেগুলোতে আল্লাহর হক আদায় করেছ কি না; নাকি পাপকাজে ব্যয় করেছ? এতে সকল প্রকার নিয়ামত এসে যায়। অন্য আয়াতে এভাবে বলা হয়েছে, ‘‘কান, চোখ, হৃদয়- এদের প্রত্যেকটি সম্পর্কে কৈফিয়ত তলব করা হবে। (সূরা ইসরা : ৩৬) এতে মানুষের শ্রবণশক্তি, দৃষ্টিশক্তি ও হৃদয় সম্পর্কিত লাখো নিয়ামত অন্তর্ভুক্ত হয়ে যায়, যেগুলো সে প্রতি মুহূর্তে ব্যবহার করে। বিভিন্ন হাদীসেও নিয়ামত সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হওয়ার কথা স্পষ্টভাবে এসেছে। যেমন- রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন, দুটি নিয়ামত আছে, যাতে অধিকাংশ মানুষই ঠক খায়। তার একটি হলো, স্বাস্থ্য অপরটি হচ্ছে অবসর সময়। (সহীহ বুখারী, হা/৬৪১২)

এ সূরার শিক্ষাসমূহ :

কবরের আযাব সত্য; অপরাধীদেরকে অবশ্যই এই আযাবের সম্মুখীন হতে হবে।

কবরের জগতে অপরাধীরা তাদের পরবর্তী আবাসস্থল জাহান্নামকে সরাসরি দেখতে পাবে।

কবরে যাওয়ার পর এতদ্ববিষয়ে অস্বীকারকারীদের সমস্ত ভ্রান্ত মতবাদ সুস্পষ্ট হয়ে যাবে।

ধন-সম্পদের প্রাচুর্য লাভ করাটা আল্লাহ তা‘আলা একটি বড় ধরনের নিয়ামত এবং পরীক্ষাস্বরূপ; কিয়ামতের দিন এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

প্রাচুর্যের লালসায় বিভোর হয়ে থাকাটা মানুষের সাধারণ বৈশিষ্ট্য; তবে এর থেকে বিরত থাকা জরুরি।

প্রাচুর্যের লালসা মানুষকে আল্লাহর অবাধ্যতামূলক অনেক কর্মে লিপ্ত করে রাখে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন