hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

আম্মা পারা

লেখকঃ শাইখ আবদুর রহমান বিন মুবারক আলী

২৬
১০১- সূরা কারি’আহ
সূরার নামকরণ :

সূরাটির প্রথম শব্দ اَلْقَارِعَةُ (আল কারি‘আহ)-কে এর নাম হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। এর অর্থ করাঘাতকারী। এখানে মহাপ্রলয়ের ভয়ঙ্কর অবস্থা উদ্দেশ্য।

নাযিলের সময়কাল :

এ সূরা মক্কী হওয়ার ব্যাপারে সবাই একমত। এটি মক্কায় প্রথম যুগে অবতীর্ণ হয়।

সূরার বিষয়বস্তু :

এর বিষয়বস্তু হচ্ছে কিয়ামত ও আখেরাত। সর্বপ্রথম লোকদেরকে একটি মহাদুর্ঘটনা বলে আতংকিত করে দেয়া হয়েছে। কী সেই মহাদুর্ঘটনা? তুমি কী জানো সেই মহা দুর্ঘটনাটি কী? এভাবে শ্রোতাদেরকে একটি ভয়াবহ ঘটনা অনুষ্ঠিত হওয়ার খবর শোনার জন্য প্রস্তুত করার পর দুটি বাক্যে তাদের সামনে কিয়ামতের নকশা এঁকে দেয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, সেদিন লোকেরা আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে এমনভাবে চারদিকে দৌড়াদৌড়ি করতে থাকবে যেমন প্রদীপের আলোর চারদিকে পতঙ্গরা নির্লিপ্তভাবে ছুটাছুটি করতে থাকে। পাহাড়গুলো সমূলে উৎপাটিত হয়ে স্থানচ্যূত হবে। তাদের বাঁধন থাকবে না। তারা তখন হয়ে যাবে ধূনা পশমের মতো। তারপর বলা হয়েছে, আখেরাতে লোকদের কাজের হিসেব নিকেশ করার জন্য যখন আল্লাহর আদালত কায়েম হবে তখন কার সৎকাজ তার অসৎকাজের চাইতে ওজনে ভারী এবং কার সৎকাজ হালকা- এরই ভিত্তিতে সেখানে ফায়সালা অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম ধরনের লোকেরা আরাম ও সুখের জীবন লাভ করে আনন্দিত হবে। আর দ্বিতীয় ধরনের লোকদেরকে এমন গভীর গর্তের মধ্যে ফেলে দেয়া হবে, যেগুলো থাকবে শুধু আগুনে ভরা।

আয়াত : ১-১১



اَلْقَارِعَةُ (১) مَا الْقَارِعَةُ (২) وَمَاۤ اَدْرَاكَ مَا الْقَارِعَةُ (৩) يَوْمَ يَكُوْنُ النَّاسُ كَالْفَرَاشِ الْمَبْثُوْثِ (৪) وَتَكُوْنُ الْجِبَالُ كَالْعِهْنِ الْمَنْفُوْشِ (৫) فَاَمَّا مَنْ ثَقُلَتْ مَوَازِيْنُهٗ (৬) فَهُوَ فِيْ عِيْشَةٍ رَّاضِيَةٍ (৭) وَاَمَّا مَنْ خَفَّتْ مَوَازِيْنُهٗ (৮) فَاُمُّهٗ هَاوِيَةٌ (৯) وَمَاۤ اَدْرَاكَ مَا هِيَهْ (১০) نَارٌ حَامِيَةٌ (১১)

শাব্দিক অনুবাদ :

(১) اَلْقَارِعَةُ করাঘাতকারী, (২) مَا الْقَارِعَةُ করাঘাতকারী কী? (৩) وَمَاۤ اَدْرَاكَ তুমি কি জান مَا الْقَارِعَةُ করাঘাতকারী কী? (৪) يَوْمَ যেদিন يَكُوْنُ হবে اَلنَّاسُ মানুষ كَالْفَرَاشِ পতঙ্গের মতো اَلْمَبْثُوْثِ বিক্ষিপ্ত (৫) وَتَكُوْنُ الْجِبَالُ এবং পর্বতসমূহ হবে كَالْعِهْنِ রঙীন পশমের মতো اَلْمَنْفُوْشِ ধূনিত। (৬) فَاَمَّا তখন مَنْ যার ثَقُلَتْ ভারী হবে مَوَازِيْنُهٗ (নেকীর) পাল্লা, (৭) فَهُوَ সে তো থাকবে فِيْ عِيْشَةٍ رَّاضِيَةٍ সন্তোষজনক জীবনে (৮) وَاَمَّا আর مَنْ যার خَفَّتْ হালকা হবে مَوَازِيْنُهٗ পাল্লা, (৯) فَاُمُّهٗ তার ঠিকানা হবে هَاوِيَةٌ হাবিয়া। (১০) وَمَاۤ اَدْرَاكَ তুমি কি জান مَا هِيَهْ তা কী? (১১) نَارٌ حَامِيَةٌ প্রজ্বলিত অগ্নি।

সরল অনুবাদ :

(১) করাঘাতকারী,১ (২) করাঘাতকারী কী? (৩) আপনি কি জানেন, করাঘাতকারী কী? (৪) যেদিন মানুষ বিক্ষিপ্ত পতঙ্গের মতো হয়ে যাবে।২ (৫) এবং পর্বতগুলো হবে ধূনিত রঙীন পশমের মতো।৩ (৬) অতএব যার পাল্লা৪ ভারী হবে,৫ (৭) সে সুখী জীবন-যাপন করবে। (৮) আর যার পাল্লা হালকা হবে,৬ (৯) তার ঠিকানা হবে হাবিয়া।৭ (১০) আপনি জানেন, সেটা কী? (১১) (সেটা হলো) প্রজ্বলিত অগ্নি।৮

টীকা:

[১] এখানে মূল শব্দ হচ্ছে ‘কারিআহ’; এর শাব্দিক অর্থ হচ্ছে, মহাবিপদ। ‘কারা‘আ’ মানে কোন জিনিসকে কোন জিনিসের উপর এমন জোরে মারা, যার ফলে তা থেকে প্রচন্ড আওয়াজ হয়। এই শাব্দিক অর্থের সাথে সামঞ্জস্য রেখে ভয়াবহ দুর্ঘটনা ও বিপদের ক্ষেত্রে কারিআহ শব্দ বলা হয়ে থাকে। এখানে আল কারিআহ শব্দটি কিয়ামতের জন্য ব্যবহার করা হয়েছে।

[২] সেদিনের অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে মানুষ তাদের বিক্ষিপ্ততা, আনা-গোনা ইত্যাদিতে উদ্ভ্রান্তের মতো থাকবে। মনে হবে যেন তারা বিক্ষিপ্ত পঙ্গপাল। আগুন জ্বালানোর পর পোকা-মাকড় যেমন সবদিক থেকে হন্য হয়ে আগুনের দিকে ছুটে আসে, সেদিন মানুষ তেমনিভাবে হাশরের মাঠের দিকে ছুটে আসবে।

[৩] অর্থাৎ তখন মহাদুর্ঘটনা ঘটে যাবে আর এর ফলে সারা দুনিয়ার ব্যবস্থাপনা ছিন্নভিন্ন হয়ে যাবে, লোকেরা আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে এদিক ওদিক দৌড়াদৌড়ি করতে থাকবে। পাহাড়গুলো ধূনা পশমের মতো হবে- যা হালকা বাতাসে উড়ে যাবে।

[৪] এ সূরায় আমলের ওজন ও তার হালকা এবং ভারী হওয়ার প্রেক্ষিতে জাহান্নাম অথবা জান্নাত লাভের বিষয় আলোচিত হয়েছে। মূলে মাওয়াযীন শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। শব্দটি বহুবচন। এর কারণ হয় মীযানগুলো কয়েকটি হবে; অথবা যে আমলগুলো ওজন করা হবে, সেগুলো বিভিন্ন প্রকারের হবে। কিয়ামতের দিন মানুষের আমল ওজন করা হবে- গণনা হবে না। আমলের ওজন ইখলাস তথা আন্তরিকতা ও সুন্নতের সাথে সামঞ্জস্যের কারণে বেড়ে যায়। যার আমল আন্তরিকতাপূর্ণ ও সুন্নতের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ, সংখ্যায় কম হলেও তার আমলের ওজন বেশি হবে। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি সংখ্যায় সালাত, সাওম, দান-সাদাকা, হজ্জ-ওমরা অনেক করে, কিন্তু আন্তরিকতা ও সুন্নাতের সাথে সামঞ্জস্য কম, তাদের আমলের ওজন কম হবে।

[৫] বলা হয়েছে, যার পাল্লাসমূহ ভারী হবে সে থাকবে সন্তোষজনক জীবনে। পাল্লাভারী হওয়ার অর্থ সৎকর্মের পাল্লা অসৎকর্ম থেকে ভারী হওয়া।

[৬] অর্থাৎ যাদের অসৎকর্মের পাল্লা থেকে ভারী হবে।

[৭] اُمٌّ শব্দের অর্থ স্থান বা ঠিকানাও হয়। তাছাড়া আয়াতের আরেক অর্থ হলো, সে জাহান্নামের আগুনে অধোমুখে মাথার মগজসহ পতিত হবে। তাছাড়া যদি اُمٌّ শব্দটির মূল অর্থ গ্রহণ করা হয় তাহলে এর অর্থ হবে, মা। সে হিসেবে আয়াতের অর্থ হচ্ছে, তার মা হবে জাহান্নাম। মায়ের কোলে যেমন শিশুর অবস্থান হয়, তেমনি জাহান্নামবাসীদের জন্য জাহান্নাম ছাড়া আর কোন অবস্থান হবে না। আয়াতে উল্লেখিত ‘হাভিয়াহ’ শব্দটি জাহান্নামের একটি নাম। এর অর্থ হচ্ছে উঁচু জায়গা থেকে নীচুতে পড়ে যাওয়া। আর যে গভীর গর্তে কোন জিনিস পড়ে যায় তাকে হাভিয়াহ বলে। জাহান্নামকে হাভিয়াহ বলার কারণ হচ্ছে, জাহান্নাম হবে অত্যন্ত গভীর এবং জাহান্নামবাসীদেরকে তার মধ্যে উপর থেকে নিক্ষেপ করা হবে।

[৮] এখানে حَامِيَةٌ বলে বুঝানো হয়েছে, আগুনটি হবে অত্যন্ত উত্তপ্ত ও লেলিহান। হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন, আদম সন্তান যে আগুন ব্যবহার করে সেটি জাহান্নামের আগুনের সত্তর ভাগের একভাগ উত্তপ্ততা সম্পন্ন। সাহাবায়ে কেরাম বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! এটাই তো শাস্তির জন্য যথেষ্ট। তিনি বললেন, জাহান্নামের আগুন তার থেকে ঊনসত্তর গুণ বেশি উত্তপ্ত।

(সহীহ বুখারী, হা/৩২৬৫)

এ সূরার শিক্ষাসমূহ :

কিয়ামতের দিন মানুষকে পুনরুত্থান করা হবে এবং সেদিন তাদেরকে তাদের কর্মের যথাযথ প্রতিদান দেয়া হবে।

কিয়ামত সংঘটিত হওয়ার প্রারম্ভে পৃথিবীতে পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ ধারণ করবে।

কিয়ামতের দিন আমল ওজন করার জন্য দাঁড়িপাল্লা প্রতিষ্ঠিত করা হবে। অতঃপর যার আমলের ওজন ভারি হবে সে জানণাতে যাবে এবং যার আমলের ওজন হালকা হবে সে জাহান্নামে যাবে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন