hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

আম্মা পারা

লেখকঃ শাইখ আবদুর রহমান বিন মুবারক আলী

৩৬
১১১- সূরা লাহাব
সূরার নামকরণ :

সূরাটির প্রথম আয়াতে উল্লেখিত لَهَبٌ (লাহাব) শব্দকে এ সূরার নাম হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। এই সূরাটিকে সূরা তাববাত বলেও আখ্যায়িত করা হয়। এর অর্থ লেলিহান আগুন।

নাযিলের সময়কাল :

এর মক্কী হওয়ার ব্যাপারে তাফসীরকারদের মধ্যে কোন মতবিরোধ নেই। রাসূলুল্লাহ ﷺ ও তাঁর ইসলাম দাওয়াতের বিরুদ্ধে আবু লাহাবের যে ভূমিকা এখানে দেখা গেছে তা থেকে আন্দাজ করা যেতে পারে যে, সূরাটি এমন সময় নাযিল হয়ে থাকবে যখন রাসূলুল্লাহ ﷺ এর সাথে শত্রুতা চরম আকার ধারণ করেছিল।

পটভূমি :

কুরআনে মাত্র এ একটি জায়গাতেই ইসলামের শত্রুদের কারো নাম নিয়ে তার নিন্দা করা হয়েছে। প্রাচীন যুগে যেহেতু সারা আরব দেশের সব জায়গায় অশান্তি, বিশৃঙ্খলা, লুটতরাজ ও রাজনৈতিক অরাজকতা বিরাজ করছিল, এজন্য আরবীয় সমাজের নৈতিক মূল্যবোধের মধ্যে আত্মীয়-স্বজনদের সাথে সদ্ব্যবহার ছিল অত্যন্ত গুরুত্বের অধিকারী। রাসূলুল্লাহ ﷺ যখন ইসলামের দাওয়াত নিয়ে এগিয়ে এলেন তখন আরবের এ প্রাচীন ঐতিহ্যের প্রভাবে কুরাইশ গোত্রের অন্যান্য পরিবার ও তার সরদাররা তাঁর কঠোর বিরোধিতা করলেও বনী হাশেম ও বনী মুত্তালিব কেবল তাঁর বিরোধিতা থেকে বিরত থাকেনি; বরং প্রকাশ্যে তাঁকে সমর্থন দিয়ে এসেছে। অথচ তাদের অধিকাংশই তাঁর নবুওয়াতের প্রতি ঈমান আনেনি।

জাহেলী যুগেও আরবের লোকেরা এ নৈতিক আদর্শকে অত্যন্ত মর্যাদার চোখে দেখতো। অথচ শুধুমাত্র একজন লোক ইসলামের প্রতি বিদ্বেষ ও শত্রুতায় অন্ধ হয়ে এ আদর্শ ও মূলনীতি লংঘন করে। সে ছিল আবু লাহাব ইবনে আবদুল মুত্তালিব, রাসূলুল্লাহ ﷺ এর চাচা। রাসূলুল্লাহ ﷺ এর পিতা এবং এ আবু লাহাব ছিল একই পিতার সন্তান। আরবে চাচাকে বাপের মতই মনে করা হতো। বিশেষ করে যখন ভাতিজার বাপের ইন্তিকাল হয়ে গিয়েছিল তখন আরবীয় সমাজের রীতি অনুযায়ী চাচার কাছে আশা করা হয়েছিল, সে ভাতিজাকে নিজের ছেলের মতো ভালোবাসবে। কিন্তু এ ব্যক্তি কুফরী প্রেমে ডুবে গিয়ে এ সমস্ত আরবীয় ঐতিহ্যকে পদদলিত করেছিল।

মক্কায় আবু লাহাব ছিল রাসূলুল্লাহ ﷺ এর নিকটতম প্রতিবেশী ছিল। উভয়ের ঘরের মাঝখানে ছিল একটি প্রাচীর। এ ছাড়াও হাকাম ইবনে আস, উকবা ইবনে আবু মুঈত, আদী ইবনে হামরাও তাঁর প্রতিবেশি ছিল। এরা বাড়িতেও রাসূলুল্লাহ ﷺ কে নিশ্চিন্তে থাকতে দিত না। তিনি যখন সালাত আদায় করতেন, এরা তখন উপর থেকে ছাগলের নাড়িভূড়ি তাঁর গায়ে নিক্ষেপ করতো। কখনো তাঁর বাড়ির আঙিনায় রান্নাবান্নার হাঁড়ির মধ্যে ময়লা ছুড়ে দিতো। রাসূলুল্লাহ ﷺ বাইরে এসে তাদেরকে বলতেন, হে বনী আবদে মান্নাফ! এ কেমন প্রতিবেশীসূলভ আচরণ?

আবু লাহাবের স্ত্রী উম্মে জামীল (আবু সুফিয়ানের বোন) প্রতি রাতে রাসূলুল্লাহ ﷺ এর ঘরের দরজার সামনে কাঁটা, গাছের ডাল-পালা ছড়িয়ে রেখে দিতো। এটা ছিল তার প্রতিদিনের স্থায়ী আচরণ। যাতে রাসূলুল্লাহ ﷺ বা তাঁর শিশু-সন্তানরা বাইরে বের হলে তাদের পায়ে কাঁটা বিধে যায়।

সে যে কেমন জঘন্য মানসিকতার অধিকারী ছিল তার পরিচয় একটি ঘটনা থেকেই পাওয়া যায়। রাসূলুললাহ ﷺ এর ছেলে আবুল কাসেমের ইন্তিকালের পর তাঁর দ্বিতীয় ছেলে আবদুল্লাহরও ইন্তিকাল হয়। এ অবস্থায় আবু লাহাব তার ভাতিজার শোকে শরীক না হয়ে বরং আনন্দে আত্মহারা হয়ে দৌঁড়ে কুরাইশ সরদারদের কাছে যায়। সে তাদেরকে জানায়, শোনো! আজ মুহাম্মাদের নাম নিশানা মুছে গেছে।

রাসূলুল্লাহ ﷺ যেখানে যেখানে ইসলামের দাওয়াত দিতে যেতেন আবু লাহাবও তাঁর পেছনে পেছনে সেখানে গিয়ে পৌঁছতো এবং লোকদেরকে তাঁর কথা শোনার কাজে বাধা দিতো। ইবনে আববাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন وَأَنْذِرْ عَشِيرَتَكَ الأَقْرَبِينَ অর্থাৎ তুমি তোমার একান্ত নিকটাত্মীয়দেরকে সতর্ক করে দাও- (সূরা শুয়ারা- ২১৪) এ আয়াতটি নাযিল হল, তখন রাসূলুল্লাহ ﷺ বের হয়ে সাফা পর্বতে উঠলেন। অতঃপর يَا صَبَاحَاهْ (ভোর বেলার বিপদ সাবধান) বলে উচ্চৈঃস্বরে ডাক দিলেন। তখন তারা সকলেই তাঁর নিকট গিয়ে একত্রিত হল। তিনি বললেন, আমি যদি তোমাদেরকে সংবাদ দেই যে, এ পর্বতের পেছনে একটি অশ্বারোহী সৈন্যদল তোমাদের উপর আক্রমণ করার জন্য প্রস্তুত হয়ে আছে, তাহলে কি তোমরা আমার কথা বিশ্বাস করবে? জবাবে সবাই বলল, আপনার উপর মিথ্যারোপ করার ব্যাপারে আমাদের অভিজ্ঞতা নেই। তখন তিনি বললেন, ‘‘আমি তোমাদেরকে আসন্ন কঠিন শাস্তির ব্যাপারে সতর্ক করছি।’’ (সূরাহ সাবা- ৩৪/৪৬)

এ কথা শুনে আবু লাহাব বলল, তোমার ধ্বংস হোক। তুমি কি আমাদেরকে এজন্যই একত্রিত করেছ? অতঃপর রাসূলুল্লাহ ﷺ দাঁড়ালেন। তারপর নাযিল হল : تَبَّتْ يَدَا أَبِي لَهَبٍ وَتَبَّ (ধ্বংস হোক আবু লাহাবের হস্তদ্বয় এবং ধ্বংস হোক সে নিজেও)। (সহীহ বুখারী, হা/৪৯৭১-৭২; সহীহ মুসলিম, হা/২০৮)

মক্কার বাইরের আরবের যেসব লোকেরা হজ্জের জন্য আসতো অথবা বিভিন্ন স্থনে যেসব বাজার বসতো সেখানে যারা জমায়েত হতো, তাদের সামনে যখন রাসূলুল্লাহ ﷺ এর নিজের চাচা তাঁর পিছনে ঘুরে ঘুরে তাঁর বিরোধিতা করতো, তখন বাইরের লোকদের উপর এর ব্যাপক প্রভাব পড়তো। কারণ আরবের প্রচলিত ঐতিহ্য অনুসারে কোন চাচা বিনা কারণে অন্যদের সামনে তার নিজের ভাতিজাকে গালিগালাজ করবে, তার গায়ে পাথর মারবে এবং তার প্রতি দোষারোপ করবে এটা কল্পনাতীত ছিল। তাই তারা আবু লাহাবের কথায় প্রভাবিত হয়ে রাসূলুল্লাহ ﷺ এর ব্যাপারে সন্দেহের মধ্যে পড়ে যেতো। কিন্তু এ সূরাটি নাযিল হওয়ার পর যখন আবু লাহাব রাগে অন্ধ হয়ে আবোল-তাবোল বকতে লাগলো তখন লোকেরা বুঝতে পারলো যে, রাসূলুল্লাহ ﷺ এর বিরোধিতার ব্যাপারে তার কোন কথা গ্রহণযোগ্য নয়। কারণ সে নিজের ভাতিজার শত্রুতায় অন্ধ হয়ে গেছে।

আয়াত : ১-৫



تَبَّتْ يَدَاۤ اَبِيْ لَهَبٍ وَّتَبَّ (১) مَاۤ اَغْنٰى عَنْهُ مَالُهٗ وَمَا كَسَبَ (২) سَيَصْلٰى نَارًا ذَاتَ لَهَبٍ (৩) وَامْرَاَتُهٗ حَمَّالَةَ الْحَطَبِ (৪) فِيْ جِيْدِهَا حَبْلٌ مِّنْ مَّسَدٍ (৫)

শাব্দিক অনুবাদ :

(১) تَبَّتْ ধ্বংস হয়ে যাক يَدَا দু’হাতই اَبِيْ لَهَبٍ আবূ লাহাবের وَّتَبَّ ধ্বংস হয়ে যাক (সে নিজেও); (২) مَاۤ اَغْنٰى কোন কাজে আসেনি عَنْهُ তার জন্য مَالُهٗ তার ধন-সম্পদ وَمَا كَسَبَ এবং সে যা উপার্জন করেছে তা; (৩) سَيَصْلٰى অচিরেই সে নিক্ষিপ্ত হবে نَارًا আগুনে ذَاتَ لَهَبٍ লেলিহান শিখা বিশিষ্ট। (৪) وَامْرَاَتُهٗ এবং (ধ্বংস হোক) তার স্ত্রীও حَمَّالَةَ বহনকারিণী اَلْحَطَبِ জ্বালানি কাঠ। (৫) فِيْ جِيْدِهَا তার গলায় থাকবে حَبْلٌ রশি مِنْ مَّسَدٍ খেজুর পাতার পাকানো।

সরল অনুবাদ :

(১) আবূ লাহাবের১ দু’হাতই২ ধ্বংস হয়ে যাক; ধ্বংস হয়ে যাক সে নিজেও; (২) তার ধন-সম্পদ ও আয়-উপার্জন৩ তার কোন কাজে আসবে না; (৩) অচিরেই সে লেলিহান শিখা বিশিষ্ট আগুনে প্রবেশ করবে।৪ (৪) সাথে থাকবে জ্বালানি কাঠের বোঝা বহনকারিণী৫ তার স্ত্রীও।৬ (৫) (অবস্থা দেখে মনে হবে) তার গলায়৭ যেন খেজুর পাতার পাকানো শক্ত কোন রশি৮ জড়িয়ে আছে।

টীকা :

[১] আবু লাহাবের আসল নাম ছিল আবদুল উযযা। সে ছিল আবদুল মুত্তালিবের অন্যতম সন্তান। রাসূলুল্লাহ ﷺ এর চাচা। গৌরবর্ণের কারণে তার ডাক নাম হয়ে যায় আবু লাহাব। কারণ লাহাব বলা হয় আগুনের লেলিহান শিখাকে। লেলিহান শিখার রং হচ্ছে গৌরবর্ণ। সে অনুসারে আবু লাহাব অর্থ গৌরবর্ণবিশিষ্ট। পবিত্র কুরআনে তার আসল নাম বর্জন করা হয়েছে; কেননা সেটা মুশরিকসূলভ নাম। এছাড়া আবু লাহাব ডাক নামের মধ্যে জাহান্নামের সাথে বেশ মিলও রয়েছে। কারণ জাহান্নামের অগ্নির লেলিহান শিখা তাকে পাকড়াও করবে। সে রাসূলুল্লাহ ﷺ এর কট্টর শত্রু ও ইসলামের ঘোর বিরোধী ছিল।

[২] يَدٌ শব্দের অর্থ হাত। মানুষের সব কাজে হাতের প্রভাবই বেশি, তাই কোন ব্যক্তি সত্তাকে হাত বলেই ব্যক্ত করে দেয়া হয়; تَبَّتْ يَدَاۤ اَبِيْ لَهَبٍ وَّتَبَّ এর অর্থ কোন তাফসীরকার করেছেন, ভেঙ্গে যাক আবু লাহাবের হাত এবং সে ধ্বংস হয়ে যাক অথবা সে ধ্বংস হয়ে গেছে। কোন কোন তাফসীরকার বলেন, এটা আবু লাহাবের প্রতি একটি ভবিষ্যদ্বাণী। এখানে ভবিষ্যতে যে ঘটনাটি ঘটবে তাকে অতীত কালের অর্থ প্রকাশক শব্দের সাহায্যে বর্ণনা করা হয়েছে। এর মানে, তার হওয়াটা যেন এত বেশি নিশ্চিত যেমন তা হয়ে গেছে। আর এ সূরায় কয়েক বছর আগে যা বর্ণনা করা হয়েছিল, শেষ পর্যন্ত তাই সত্য হলো। এখানে হাত ভেঙ্গে যাওয়ার মানে শুধু শরীরের একটি অঙ্গ ভেঙ্গে যাওয়াই নয়। বরং পুরোপুরি ও চূড়ান্তভাবে ব্যর্থ হয়ে যাওয়াই এর উদ্দেশ্য। এ সূরাটি নাযিল হওয়ার মাত্র সাত আট বছর পরেই বদরের যুদ্ধ অনুষ্ঠিত হয়। এ যুদ্ধে কুরাইশদের অধিকাংশ বড় বড় সরদার নিহত হয়। তারা সবাই ইসলামের প্রতি শত্রুতার ক্ষেত্রে আবু লাহাবের সহযোগী ছিল। এ পরাজয়ের খবর মক্কায় পৌঁছার পর সে এত বেশি মর্মাহত হয় যে, এরপর সে সাত দিনের বেশি জীবিত থাকতে পারেনি। যে দ্বীনের অগ্রগতির পথ রোধ করার জন্য সে তার সর্বশক্তি নিয়োগ করেছিল, তার সন্তানদের সেই দ্বীন গ্রহণ করার মধ্য দিয়ে তার আরো বেশি ও পূর্ণ পরাজয় সম্পন্ন হয়। সর্বপ্রথম তার মেয়ে দাররা হিজরত করে মক্কা থেকে মদীনায় চলে যান এবং ইসলাম গ্রহণ করেন। আর মক্কা বিজয়ের পর তার দুই ছেলে উতবা ও মু‘আত্তাব রাসূলুল্লাহ ﷺ এর সামনে হাযির হয়ে ইসলাম গ্রহণ করেন এবং তার হাতে বাইআত করেন। (রুহুল মাআনী)

[৩] كَسَبٌ এর অর্থ ধন-সম্পদ দ্বারা অর্জিত মুনাফা। এর অর্থ সন্তান-সন্ততিও হতে পারে। কেননা সন্তান-সন্ততিকেও মানুষের উপার্জন বলা হয়। আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন, মানুষ যা খায়, তন্মধ্যে তার উপার্জিত বস্তুই সর্বাধিক হালাল ও পবিত্র; আর তার সন্তান-সন্ততিও তার উপার্জিত বস্তুর মধ্যে দাখিল (নাসায়ী : ৪৪৪৯; আবু দাউদ, হা/৩৫২৮)। অর্থাৎ সন্তানের উপার্জন খাওয়াও নিজের উপার্জন খাওয়ারই নামান্তর। এ কারণে কয়েকজন তাফসীরবিদ এ স্থলে كَسَبٌ এর অর্থ করেছেন সন্তান-সন্ততি। আল্লাহ তা‘আলা আবু লাহাবকে যেমন দিয়েছিলেন অগাধ ধন-সম্পদ, যেমনি দিয়েছিলেন অনেক সন্তান-সন্ততি। অকৃজ্ঞতার কারণে এ দুটি বস্তুই তার গর্ব, অহমিকা ও শাস্তির কারণ হয়ে যায়।

[৪] অর্থাৎ কিয়ামতে অথবা মৃত্যুর পর কবরেই সে এক লেলিহান অগ্নিতে প্রবেশ করবে। তার নামের সাথে মিল রেখে অগ্নির বিশেষণ ذَاتَ لَهَبٍ বলার মধ্যে বিশেষ অলংকার রয়েছে।

[৫] আবু লাহাবের স্ত্রীর নাম ছিল আরওয়া। সে ছিল আবু সুফিয়ানের বোন ও হরব ইবনে উমাইয়্যার কন্যা। তাকে উম্মে জামীল বলা হত। আবু লাহাবের ন্যায় তার স্ত্রীও রাসূলুল্লাহ ﷺ এর প্রতি বিদ্বেষী ছিল। সে এ ব্যাপারে তার স্বামীকে সাহায্য করত। আয়াতে ব্যক্ত করা হয়েছে যে, এই হতভাগিনীও তার স্বামীর সাথে জাহান্নামে প্রবেশ করবে।

[৬] حَمَّالَةَ الْحَطَبِ এর শাব্দিক অর্থ শুষ্ককাঠ বহনকারী। আরবের বাকপদ্ধতিতে পশ্চাতে নিন্দাকারীকে খড়ি-বাহক বলা হত। শুষ্ককাঠ একত্রিত করে যেমন কেউ অগ্নি সংযোগের ব্যবস্থা করে, পরোক্ষ নিন্দাকার্যটিও তেমনি। এর মাধ্যমে সে ব্যক্তিবর্গ ও পরিবারের মধ্যে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। রাসূলুল্লাহ ﷺ ও সাহাবায়ে কিরামকে কষ্ট দেয়ার জন্য আবু লাহাব পত্নী পরোক্ষ নিন্দাকার্যের সাথেও জড়িত ছিল। অধিকাংশ তাফসীরবিদ এখানে এ তাফসীরই করেছেন। অপরপক্ষে কোন কোন তাফসীরবিদ একে আক্ষরিক অর্থেই রেখেছেন যে, এই নারী বন থেকে কণ্টকযুক্ত লাকড়ি চয়ন করে আনত এবং রাসূলুল্লাহ ﷺ কে কষ্ট দেয়ার জন্য তার পথে বিছিয়ে রাখত।

[৭] তার গলার জন্য ‘জীদ’ শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। আরবী ভাষায় গলাকে জীদ বলা হয়। সাঈদ ইবনুল মুসাইয়েব বলেন, সে একটি অতি মূল্যবান হার গলায় পরতো এবং বলতো, লাত ও উযযার কসম, এ হার বিক্রি করে আমি এর মূল্য বাবদ পাওয়া সমস্ত অর্থ মুহাম্মাদের বিরুদ্ধে শত্রুতামূলক কাজ করার জন্য ব্যয় করব। এ কারণে জীদ শব্দটি এখানে ব্যবহার করা হয়েছে ব্যাঙ্গার্থে। অর্থাৎ এ অলংকার পরিহিত সুসজ্জিত গলায়, যেখানে পরিহিত হার নিয়ে সে গর্ব করে বেড়ায়, কিয়ামতের দিন সেখানে রশি বাঁধা হবে।

[৮] বলা হয়েছে, তার গলায় বাঁধা রশিটি মাসাদ ধরনের। মাসাদ এর অর্থ নির্ণয়ে কয়েকটি মত রয়েছে। তার একটি হচ্ছে, খুব মজবুত করে পাকানো রশিকে মাসাদ বলা হয়। দ্বিতীয় বক্তব্য হচ্ছে, খেজুর গাছের (ডালের) ছাল/আঁশ থেকে তৈরি শক্ত পাকানো খসখসে রশি মাসাদ নামে পরিচিত। মুজাহিদ (রহ.) বলেন, এর অর্থ লোহার তারের পাকানো রশি বা লোহার বেড়ি। কোন কোন মুফাসসির বলেন, তার গলায় আগুনের রশি পরানো হবে। তা তাকে তুলে আগুনের প্রান্তে উঠাবে আবার তাকে এ গর্তদেশে নিক্ষেপ করবে। এভাবে তার শাস্তি চলতে থাকবে।

এ সূরার শিক্ষাসমূহ :

ইসলাম ও মুসলিমদের সাথে দুশমনি করার পরিণাম হলো উভয় জগতে নিজের ধ্বংস ডেকে আনা।

মাল আর সন্তান কোন কাজে আসবে না- যদি এসব আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের কাজে ব্যবহার না করা হয়।

পাপ কাজে যারা একে অন্যের সহযোগী হয় কিয়ামতের দিন তাদের সকলকে একত্র করে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।

শিরক ও কুফরী থাকলে নিকটাত্মীয় কোন কাজে আসবে না।

যারাই এ পৃথিবীতে ইসলামের বিরোধিতা করেছে, তারা কেউই এ দুনিয়া থেকে সম্মানে বিদায় নিতে পারেনি। ভবিষ্যতেও কেউ পারবে না, আর পরকালের শাস্তি তো আছেই।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন