hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

আম্মা পারা

লেখকঃ শাইখ আবদুর রহমান বিন মুবারক আলী

১২
৮৭- সূরা আ‘লা
সূরার নামকরণ :

প্রথম আয়াতে উল্লেখিত اَلْاَعْلٰى (আল আ‘লা) শব্দের আলোকে এ সূরাটির নাম রাখা হয়েছে। এর অর্থ সর্বোচ্চ ও মহান।

নাযিলের সময় :

এ সূরাটি মক্কায় অবতীর্ণ হয়। এর আলোচ্য বিষয় থেকে জানা যায় যে, এটি একেবারে প্রথম দিকে অবতীর্ণ সূরাগুলোর অন্যতম।

সূরার বিষয়বস্তু :

এ ছোট্ট সূরাটিতে তিনটি বিষয়বস্তুর আলোচনা করা হয়েছে। (এক) তাওহীদ। (দুই) রাসূলুল্লাহ ﷺ-কে উপদেশ দান। (তিন) আখেরাত।

তাওহীদের শিক্ষাকে প্রথম আয়াতের একটি বাক্যের মধ্যেই সীমিত করে দেয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, আল্লাহর নামে তাসবীহ পাঠ করো। অর্থাৎ তাঁকে এমন কোন নামে স্মরণ করা যাবে না, যার মধ্যে কোন প্রকার ত্রুটি, অভাব, দোষ, দুর্বলতা বা সৃষ্টির সাথে কোন দিক দিয়ে কোন প্রকার মিল রয়ে গেছে।

তারপর দুটি আয়াতে রাসূলুল্লাহ ﷺ-কে উপদেশ দেয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, যে কুরআন তোমার প্রতি নাযিল হচ্ছে এর প্রতিটি শব্দ কীভাবে তোমার মুখস্থ থাকবে, এ ব্যাপারে তুমি কোন চিন্তা করো না। একে তোমার স্মৃতিপটে সংরক্ষিত করে দেয়া আমার কাজ।

এরপর রাসূলুল্লাহ ﷺ কে বলা হয়েছে, প্রত্যেক ব্যক্তিকে সঠিক পথে পরিচালিত করার দায়িত্ব তোমাকে দেয়া হয়নি। বরং তোমার কাজ হচ্ছে শুধুমাত্র সত্যের প্রচার করা। আর এই প্রচারের সরল পদ্ধতি হচ্ছে, যে ব্যক্তি উপদেশ শুনতে ও তা মেনে নিতে প্রস্তুত থাকে তাকে উপদেশ দাও। আর যে ব্যক্তি তাতে প্রস্তুত নয় তার পেছনে লেগে থাকার প্রয়োজন নেই।

সবশেষে বলা হয়েছে, সাফল্য কেবল তাদের জন্য যারা আকীদা-বিশ্বাস, কর্ম ও চরিত্রে পবিত্রতা ও নিষ্কলুষতা অবলম্বন করবে এবং নিজেদের রবের নাম স্মরণ করে সালাত আদায় করবে। কিন্তু লোকেরা শুধুমাত্র এ দুনিয়ার আরাম-আয়েশ ও আনন্দের চিন্তায় বিভোর হয়ে আছে। অথচ তাদের আখেরাতের চিন্তা করা উচিত। কারণ এ দুনিয়া তো ক্ষণস্থায়ী। অন্যদিকে আখেরাত চিরস্থায়ী। এ সত্যটি কেবল কুরআনেই বর্ণনা করা হয়নি, ইবরাহীম (আঃ) ও মূসা (আঃ) এর সহীফাসমূহেও মানুষকে এই একই সত্যের সন্ধান দেয়া হয়েছিল।

এ সূরার গুরুত্ব :

হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ ﷺ জুমু‘আ ও দুই ঈদের সালাতে সূরা আ‘লা, সূরা গাশিয়াহ পড়তেন। এমনকি কখনো যদি জুমু‘আ ও ঈদের সালাত একই দিনে অনুষ্ঠিত হয়ে যেত তখন তিনি উভয় সালাতে এ দু’সূরাই পড়তেন। (সহীহ মুসলিম, হা/৮৭৮; আবু দাউদ, হা/১১২২)

ইবনে আববাস (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ যখনই এর প্রথম আয়াত পড়তেন তখন বলতেন, ‘‘সুবহানা রাবিবয়াল আ‘লা’’। (আবু দাউদ, হা/৮৮৩)

আয়াত: ১-৯



سَبِّحِ اسْمَ رَبِّكَ الْاَعْلٰى (১) اَلَّذِيْ خَلَقَ فَسَوّٰى (২) وَالَّذِيْ قَدَّرَ فَهَدٰى (৩) وَالَّذِيْۤ اَخْرَجَ الْمَرْعٰى (৪) فَجَعَلَهٗ غُثَآءً اَحْوٰى (৫) سَنُقْرِئُكَ فَلَا تَنْسٰى (৬) اِلَّا مَا شَآءَ اللهُ اِنَّهٗ يَعْلَمُ الْجَهْرَ وَمَا يَخْفٰى (৭) وَنُيَسِّرُكَ لِلْيُسْرٰى (৮) فَذَكِّرْ اِنْ نَّفَعَتِ الذِّكْرٰى (৯)

শাব্দিক অনুবাদ :

(১) سَبِّحْ তুমি পবিত্রতা ঘোষণা করো اِسْمَ رَبِّكَ তোমার প্রতিপালকের নামের اَلْاَعْلٰى সর্বোচ্চ, (২) اَلَّذِيْ যিনি خَلَقَ সৃষ্টি করেছেন فَسَوّٰى অতঃপর সুঠাম করেছেন, (৩) وَالَّذِيْ এবং যিনি قَدَّرَ নিরূপণ করেছেন, فَهَدٰى তারপর হেদায়েত দিয়েছেন, (৪) وَالَّذِيْ এবং যিনি اَخْرَجَ উৎপন্ন করেছেন اَلْمَرْعٰى উদ্ভিদ, (৫) فَجَعَلَهٗ অতঃপর ওটাকে পরিণত করেছেন غُثَآءً আবর্জনাময় اَحْوٰى ধূসর বর্ণের। (৬) سَنُقْرِئُكَ অচিরেই আমি তোমাকে পাঠ করাবো, فَلَا تَنْسٰى ফলে তুমি আর ভুলবে না, (৭) اِلَّا তবে তা ব্যতীত مَا شَآءَ اللهُ আল্লাহ যা ইচ্ছা করবেন, اِنَّهٗ নিশ্চয় তিনি يَعْلَمُ জানেন اَلْجَهْرَ প্রকাশ্য বিষয় وَمَا يَخْفٰى এবং যা গোপন থাকে। (৮) وَنُيَسِّرُكَ আমি তোমার জন্যে সহজ করে দেব لِلْيُسْرٰى সরল পথে চলাকে। (৯) فَذَكِّرْ অতএব উপদেশ দাও اِنْ نَّفَعَتْ যদি উপকারী হয় اَلذِّكْرٰى উপদেশ।

সরল অনুবাদ :

(১) তুমি তোমার সর্বোচ্চ প্রতিপালকের নামের পবিত্রতা ঘোষণা করো,১ (২) যিনি২ সৃষ্টি করেছেন;৩ অতঃপর সুঠাম করেছেন,৪ (৩) এবং যিনি নিরূপণ করেছেন,৫ তারপর হেদায়েত দিয়েছেন,৬ (৪) এবং যিনি উদ্ভিদ উৎপন্ন করেছেন,৭ (৫) অতঃপর ওটাকে পরিণত করেন আবর্জনায়- দূসর বর্ণের। (৬) অচিরেই আমি তোমাকে পাঠ করাব, ফলে তুমি আর ভুলবে না,৮ (৭) তবে আল্লাহ যা ইচ্ছা করেন;৯ তিনি জানেন প্রকাশ্য ও গোপন সম্পর্কে। (৮) আমি তোমার জন্য সরল পথে চলাকে সহজ করে দেব।১০ (৯) অতএব উপদেশ দাও- যদি উপদেশ উপকারী হয়।১১

টীকা :

[১] আল্লাহ তা‘আলা বান্দাদেরকে তাঁর তাসবীহ বা পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করার নির্দেশ দিচ্ছেন। যে পবিত্রতা ঘোষণার মাধ্যমে আল্লাহর যিকর, ইবাদাত, তাঁর মাহাত্ম্যের জন্য বিনয় ও হীন অবস্থা প্রকাশ পায়। আর তাঁর তাসবীহ যেন তাঁর সত্তার মাহাত্ম্য উপযোগী হয়।

[২] এখানে মূলত আল্লাহ তা‘আলার পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণার কারণসমূহ বর্ণনা করা হচ্ছে। এ আয়াত এবং এর পরবর্তী কয়েকটি আয়াতে জগৎ সৃষ্টিতে আল্লাহর অপার রহস্য ও শক্তি সম্পর্কিত কতিপয় কর্মগত গুণাবলি বর্ণিত হয়েছে।

[৩] অর্থাৎ সৃষ্টি করেছেন। একমাত্র আল্লাহ তা‘আলাই তাঁর অসীম কুদরতে কোন পূর্ব-নমুনা ব্যতিরেকে যখন যা ইচ্ছা সৃষ্টি করেন।

[৪] অর্থ সামঞ্জস্যপূর্ণ, মজবুত ও সুন্দর করেছেন। যে জিনিসটিই সৃষ্টি করেছেন তাকে সঠিক ও সুঠাম দেহ দান করেছেন এবং তার মধ্যে ভারসাম্য ও শক্তির অনুপাত সঠিকভাবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।

[৫] অর্থাৎ প্রতিটি বস্তুর তাকদীর নির্ধারণ করেছেন। প্রতিটি জিনিস সে তাকদীরের অনুসরণ করছে।

[৬] অর্থাৎ স্রষ্টা যে কাজের জন্য যাকে সৃষ্টি করেছেন, তাকে সে কাজের পথনির্দেশও দিয়েছেন। সত্যিকারের এ পথনির্দেশে আকাশ ও পৃথিবীর যাবতীয় সৃষ্টিই অন্তর্ভুক্ত আছে। কেননা এক বিশেষ ধরনের বুদ্ধি ও চেতনা আল্লাহ তা‘আলা সবাইকে দিয়েছেন, যদিও তা মানুষের বুদ্ধি ও চেতনা থেকে নিম্নস্তরের। অন্য আয়াতে আছে, ‘‘তিনি বললেন, আমাদের প্রতিপালক তিনি, যিনি প্রত্যেক বস্তুর জন্য তাকদীর নির্ধারণ করেছেন, তারপর পথনির্দেশ করেছেন।’’- (সূরা ত্বাহা- ৫০)

[৭] তিনি চারণভূমির ব্যবস্থা করেছেন। ( غُثَاءٌ শব্দের অর্থ খড়-কুটো, আবর্জনা, যা বন্যার পানির উপর ভাসমান থাকে। اَحْوٰى শব্দের অর্থ গাঢ় সবুজ রং। এ আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা উদ্ভিদ সম্পর্কিত স্বীয় কুদরত ও হেকমত বর্ণনা করেছেন। তিনি ভূমি থেকে সবুজ-শ্যামল ঘাস উৎপন্ন করেছেন। অতঃপর একে শুঁকিয়ে কালো রং-এ পরিণত করেছেন এবং সবুজতা বিলীন করে দিয়েছেন। এতে দুনিয়ার চাকচিক্য যে ক্ষণস্থায়ী সেদিকে ইঙ্গিত করেছেন।

[৮] এ আয়াতে রাসূলুল্লাহ ﷺ কে সুসংবাদ জানানো হচ্ছে যে, তিনি কুরআনের কোন আয়াত বিস্মৃত হবেন না। তার কাছে কিতাবের যে ওহী আল্লাহ পাঠিয়েছেন সেটার হেফাযত তিনি নিজেই করবেন। আল্লাহ তার অন্তরে সেটা গেঁথে দেবেন, ফলে নবী তা ভুলে যাবেন না।

[৯] এই বাক্যটির কয়েকটি অর্থ হতে পারে। (এক) কুরআনের কিছু আয়াত রহিত করার এক পদ্ধতি হচ্ছে প্রথম আদেশের বিপরীতে পরিষ্কার দ্বিতীয় আদেশ নাযিল করা। এর আরেকটি পদ্ধতি হলো সংশ্লিষ্ট আয়াতটিই রাসূলুল্লাহ ﷺ ও সকল মুসলিমের স্মৃতি থেকে মুছে দেয়া। এ সম্পর্কে এক আয়াতে আছে, ‘‘আমি কোন আয়াত রহিত করি অথবা আপনার স্মৃতি থেকে উধাও করে দেই’’- (সূরা বাকারা- ১০৬) (দুই) অথবা আয়াতের উদ্দেশ্য হলো, কখনো সাময়িকভাবে আপনার ভুলে যাওয়া এবং কোন আয়াত বা শব্দ আপনার কোন সময় ভুলে যাওয়া এই ওয়াদার ব্যতিক্রম। যে ব্যাপারে ওয়াদা করা হচ্ছে যে, আপনি স্থায়ীভাবে কুরআনের কোন শব্দ ভুলে যাবেন না।

[১০] অর্থাৎ আল্লাহ তা‘আলা আপনার জন্য সহজ সরল শরীয়ত প্রদান করবেন। যাতে কোন বক্রতা থাকবে না।

[১১] অর্থাৎ যেখানে স্মরণ করিয়ে দিলে কাজে লাগে সেখানে স্মরণ করিয়ে দিবেন। এর দ্বারা জ্ঞান দেয়ার আদব ও নিয়ম নীতি বুঝা যায়। সুতরাং যারা জ্ঞান গ্রহণ করার উপযুক্ত নয়; তাদের কাছে সেটা দিতে নেই। যেমন- আলী (রাঃ) বলেন, তুমি যদি এমন কওমের কাছে কোন কথা বল, যা তাদের বিবেকে ঢুকবে না, তাহলে সেটা তাদের কারো কারো জন্য বিপদের কারণ হবে। তারপর তিনি বললেন, মানুষ যা চিনে তা-ই শুধু তাদেরকে জানাও, তুমি কি চাও যে, লোকেরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের উপর মিথ্যারোপ করুক?

আয়াত : ১০-১৯

سَيَذَّكَّرُ مَنْ يَّخْشٰى (১০) وَيَتَجَنَّبُهَا الْاَشْقٰى (১১) اَلَّذِيْ يَصْلَى النَّارَ الْكُبْرٰى (১২) ثُمَّ لَا يَمُوْتُ فِيْهَا وَلَا يَحْيٰى (১৩) قَدْ اَفْلَحَ مَنْ تَزَكّٰى (১৪) وَذَكَرَ اسْمَ رَبِّه فَصَلّٰى (১৫) بَلْ تُؤْثِرُوْنَ الْحَيَاةَ الدُّنْيَا (১৬) وَالْاٰخِرَةُ خَيْرٌ وَّاَبْقٰى (১৭) اِنَّ هٰذَا لَفِي الصُّحُفِ الْاُوْلٰى (১৮) صُحُفِ اِبْرَاهِيْمَ وَمُوْسٰى (১৯)

শাব্দিক অনুবাদ :

(১০) سَيَذَّكَّرُ অচিরেই উপদেশ গ্রহণ করবে مَنْ يَّخْشٰى যারা ভয় করে। (১১) وَيَتَجَنَّبُهَا আর তাকে উপেক্ষা করবে اَلْاَشْقٰى নিতান্ত হতভাগ্যরা, (১২) اَلَّذِيْ যে يَصْلَى প্রবেশ করবে اَلنَّارَ الْكُبْرٰى বৃহত্তম অগ্নিতে, (১৩) ثُمَّ অতঃপর لَا يَمُوْتُ সে মরবে না فِيْهَا সেখানে এবং وَلَا يَحْيٰى বাঁচবেও না। (১৪) قَدْ اَفْلَحَ নিশ্চয় সে সাফল্য লাভ করে مَنْ تَزَكّٰى যে পবিত্রতা অবলম্বন করে। (১৫) وَذَكَرَ এবং স্মরণ করে اِسْمَ رَبِّه  তার প্রতিপালকের নাম فَصَلّٰى ও সালাত আদায় করে। (১৬) بَلْ কিন্তু تُؤْثِرُوْنَ তোমরা তো অগ্রাধিকার দিয়ে থাকো اَلْحَيَاةَ الدُّنْيَا পার্থিব জীবনকে। (১৭) وَالْاٰخِرَةُ অথচ আখেরাত خَيْرٌ উত্তম وَاَبْقٰى ও চিরস্থায়ী। (১৮) اِنَّ নিশ্চয় هٰذَا এটা আছে لَفِي الصُّحُفِ الْاُوْلٰى পূর্ববর্তী কিতাবসমূহে, (১৯) صُحُفِ কিতাবে اِبْرَاهِيْمَ ইবরাহীম وَمُوْسٰى ও মূসার।

সরল অনুবাদ :

(১০) যারা ভয় করে তারা উপদেশ গ্রহণ করবে।১২ (১১) আর তা উপেক্ষা করবে নিতান্ত হতভাগ্যরাই, (১২) সে বৃহৎ অগ্নিতে প্রবেশ করবে, (১৩) অতঃপর সে সেখানে মরবেও না, বাঁচবেও না।১৩ (১৪) নিশ্চয় সে সাফল্য লাভ করে, যে পবিত্রতা অবলম্বন করে।১৪ (১৫) এবং তার প্রতিপালকের নাম স্মরণ করে ও সালাত কায়েম করে।১৫ (১৬) কিন্তু তোমরা পার্থিব জীবনকে অগ্রাধিকার দিয়ে থাকো। (১৭) অথচ আখেরাত উত্তম১৬ ও চিরস্থায়ী১৭। (১৮) নিশ্চয় এটা পূর্ববর্তী কিতাবসমূহেও রয়েছে, (১৯) (বিশেষত) ইবরাহীম (আঃ) ও মূসা (আঃ)- এর কিতাবসমূহে।১৮

টীকা :

[১২] অর্থাৎ যে ব্যক্তির মনে আল্লাহর ভয় এবং তাঁর সাথে সাক্ষাৎ করতে হবে এমন ধারণা কাজ করে সে অবশ্যই আপনার উপদেশ মনোযোগ সহকারে শুনবে।

[১৩] অর্থাৎ তার মৃত্যু হবে না। যার ফলে আযাব থেকে রেহাই পাবে না। আবার বাঁচার মতো বাঁচবেও না। যার ফলে জীবনের কোন স্বাদও পাবে না।

[১৪] এখানে পরিশুদ্ধ বা পবিত্রতার অর্থ কুফর ও শিরক ত্যাগ করে ঈমান আনা, অসৎ আচার-আচরণ ত্যাগ করে সদাচার অবলম্বন করা এবং অসৎকাজ ত্যাগ করে সৎকাজ করা। আর রাসূলুল্লাহ ﷺ এর কাছে যা নাযিল হয়েছে তার অনুসরণ করা। আয়াতের আরেক অর্থ, ধন-সম্পদের যাকাত প্রদান করা। এখানে تَزَكّٰى শব্দের অর্থ ব্যাপক হতে পারে। ফলে ঈমানগত ও চরিত্রগত পরিশুদ্ধি এবং আর্থিক যাকাত প্রদান সবই এই আয়াতের অন্তর্ভুক্ত বলে বিবেচিত হবে।

[১৫] কেউ কেউ অর্থ করেছেন, তারা তাদের রবের নাম স্মরণ করে এবং সালাত আদায় করে। বাহ্যত এতে ফরয ও নফল সবরকম সালাত অন্তর্ভুক্ত। কোন কোন মুফাসসির বলেন, নাম স্মরণ করা বলতে আল্লাহকে মনে মনে স্মরণ করা এবং মুখে তা উচ্চারণ করাও উদ্দেশ্য হতে পারে। অর্থাৎ আল্লাহকে মনে মনে বা মুখে উচ্চারণ করে স্মরণ করেছে, তারপর সালাত আদায় করেছে। সে শুধু আল্লাহর স্মরণ করেই ক্ষান্ত থাকেনি। বরং নিয়মিত সালাত আদায়ে ব্যাপৃত ছিল।

[১৬] হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন, আখেরাতের তুলনায় দুনিয়া তো শুধু এমন যেন তোমাদের কেউ সমূদ্রে তার আঙ্গুল ডুবিয়েছে। তারপর সে যেন দেখে নেয় সে আঙ্গুল কী নিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছে? (সহীহ মুসলিম, হা/২৮৫৮)

[১৭] অর্থাৎ আখেরাত দু’দিক দিয়ে দুনিয়ার মোকাবিলায় অগ্রাধিকার পাওয়ার যোগ্য। প্রথমত তার সুখ, স্বাচ্ছন্দ্য, আরাম-আয়েশ দুনিয়ার সমস্ত নিয়ামতের চাইতে অনেক বেশি ও অনেক উচ্চ পর্যায়ের। দ্বিতীয়ত দুনিয়া ধ্বংসশীল এবং আখেরাত চিরস্থায়ী।

[১৮] অর্থাৎ এই সূরার সব বিষয়বস্তু অথবা সর্বশেষ বিষয়বস্তু (আখেরাত উৎকৃষ্ট ও চিরস্থায়ী হওয়া) এ কথা পূর্ববর্তী ইবরাহীম ও মূসা (আঃ) এর সহীফাসমূহেও লিখিত আছে।

এ সূরার শিক্ষাসমূহ :

মহান আল্লাহর শান অনুযায়ী তাঁর প্রশংসা করা আবশ্যক।

সবুজ ঘাস যেমন এক সময়ে মরে আবর্জনায় পরিণত হয়ে যায়, ঠিক তেমনি মানুষও এক সময় বার্ধক্য, অতঃপর মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়বে- এটিই চূড়ান্ত সত্য।

শরীয়ত সম্মত পন্থায় আত্মশুদ্ধি অর্জন করা জরুরি।

দুনিয়ার প্রতি লোভ কমিয়ে আখেরাতকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।

নবী ও রাসূলদের দ্বীন এক। তাঁদের কাছে প্রেরিত সকল গ্রন্থই আসমানী।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন