মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
সূরাটির প্রথম আয়াতে উল্লেখিত زِلْزَالَهَا শব্দ থেকে এ সূরার নাম সূরা যিলযাল রাখা হয়েছে। এর অর্থ প্রকম্পিত হওয়া।
নাযিলের সময়কাল :
এটি মক্কায় প্রাথমিক যুগে এমন সময় নাযিল হয়, যখন অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত ও হৃদয়গ্রাহী পদ্ধতিতে ইসলামের বুনিয়াদী আকিদা-বিশ্বাস মানুষের সামনে পেশ করা হচ্ছিল।
সূরার বিষয়বস্তু :
এর বিষয়বস্তু হচ্ছে মৃত্যুর পরবর্তী জীবন এবং সেখানে দুনিয়ায় করা সমস্ত কাজের হিসেব মানুষের সামনে এসে যাওয়া। সর্বপ্রথম তিনটি ছোট ছোট বাক্যে বলা হয়েছে, মৃত্যুর পর মানুষের দ্বিতীয় জীবনের সূত্রপাত কিভাবে হবে এবং মানুষের জন্য তা হবে কেমন বিস্ময়কর। তারপর দুটি বাক্যে বলা হয়েছে, মানুষ এই পৃথিবীর বুকে অবস্থান করে নিশ্চিন্তে সব রকমের কাজ করে গেছে। সে কোনদিন কল্পনাও করতে পারেনি যে, এই নিষ্প্রাণ জিনিস কোনদিন তার কাজকর্মের পক্ষে-বিপক্ষে সাক্ষ্য দেবে। আল্লাহর হুকুমে সেদিন সে কথা বলতে থাকবে। প্রত্যেকটি লোকের ব্যাপারে সে বলবে, কোন সময় কোথায় সে কী কাজ করেছিল। তারপর বলা হয়েছে, সেদিন পৃথিবীর বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষ নিজেদের কবর থেকে বের হয়ে দলে দলে আসতে থাকবে। তাদের কর্মকান্ড তাদেরকে দেখানো হবে। এমন পূর্ণাঙ্গ ও বিস্তারিতভাবে এই কর্মকান্ড পেশ করা হবে যে, সামান্য বালুকণা পরিমাণ নেকী বা পাপও সামনে এসে যাবে।
(১) اِذَا যখন زُلْزِلَتْ প্রকম্পিত হবে اَلْاَرْضُ পৃথিবী زِلْزَالَهَا তাঁর কম্পনে। (২) وَاَخْرَجَتْ এবং বের করে দেবে اَلْاَرْضُ পৃথিবী اَثْقَالَهَا তাঁর বোঝা। (৩) وَقَالَ এবং বলবে اَلْاِنْسَانُ মানুষ مَا لَهَا এর কী হল? (৪) يَوْمَئِذٍ সেদিন تُحَدِّثُ সে বর্ণনা করবে اَخْبَارَهَا তার বৃত্তান্ত। (৫) بِاَنَّ কারণ رَبَّكَ আপনার পালনকর্তা اَوْحٰى আদেশ করবেন لَهَا তাকে। (৬) يَوْمَئِذٍ সেদিন يَصْدُرُ প্রকাশ পাবে اَلنَّاسُ মানুষ اَشْتَاتًا বিভিন্ন দলে, لِيُرَوْا যাতে তাদেরকে দেখানো হয় اَعْمَالَهُمْ তাদের কৃতকর্ম। (৭) فَمَنْ অতঃপর যে ব্যক্তি يَعْمَلْ কাজ করবে مِثْقَالَ ذَرَّةٍ অণু পরিমাণ خَيْرًا সৎ (কাজ) يَرَهٗ সে তা দেখতে পাবে। (৮) وَمَنْ এবং যে ব্যক্তি يَعْمَلْ কাজ করবে مِثْقَالَ ذَرَّةٍ অণু পরিমাণ شَرًّا অসৎ (কাজ) يَرَهٗ সে তা দেখতে পাবে।
সরল অনুবাদ :
(১) যখন জমিন তাঁর কম্পনে ভীষণভাবে প্রকম্পিত হবে,১ (২) যখন সে তাঁর বোঝা বের করে দেবে২ (৩) এবং মানুষ বলবে, এর কী হল?৩ (৪) সেদিন সে তার বৃত্তান্ত বর্ণনা করবে,৪ (৫) কারণ, আপনার প্রতিপালক তাকে আদেশ করবেন। (৬) সেদিন মানুষ ভিন্ন ভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে বের হবে,৫ যাতে তাদেরকে তাদের কৃতকর্মসমূহ দেখানো যায়।৬ (৭) অতঃপর কেউ অণু পরিমাণ সৎকর্ম করলে তা দেখতে পাবে,৭ (৮) আর কেউ অণু পরিমাণ অসৎকর্ম করলে তাও দেখতে পাবে।৮
[২] এর কয়েকটি অর্থ হতে পারে। (এক) মরা মানুষ মাটির বুকে যেখানে যে অবস্থায় যে আকৃতিতে আছে দ্বিতীয় ফুঁৎকারের পরে তাদের সবাইকে বের করে সে বাইরে ফেলে দেবে এবং যাবতীয় মৃতকে বের করে হাশরের মাঠের দিকে চালিত করবে। মানুষের শরীরের ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা অংশগুলো এক জায়গায় জমা হয়ে নতুন করে আবার সেই একই আকৃতি সহকারে জীবিত হয়ে উঠবে যেমন সে তার প্রথম জীবনের অবস্থায় ছিল। (দুই) এর দ্বিতীয় অর্থ হচ্ছে, কেবলমাত্র মৃত মানুষদেরকে সে বাইরে নিক্ষেপ করে ক্ষান্ত হবে না; বরং তাদের প্রথম জীবনের সমস্ত কথা ও কাজ এবং যাবতীয় আচার-আচরণের রেকর্ড ও সাক্ষ্য-প্রমাণের যে স্তূপ তার গর্ভে চাপা পড়ে আছে সেগুলোকেও বের করে বাইরে ফেলে দেবে। পরবর্তী বাক্যটিতে এ কথারই প্রকাশ ঘটেছে। তাতে বলা হয়েছে, জমিন তার উপর যা কিছু ঘটেছে তা বর্ণনা করবে। (তিন) কোন কোন মুফাসসির এর তৃতীয় একটি অর্থও বর্ণনা করেছেন। সেটি হচ্ছে সোনা, রূপা, হীরা, মনি-মুক্তা এবং অন্যান্য যেসব মূল্যবান সম্পদ ভূগর্ভে সঞ্চিত রয়েছে সেগুলোর বিশাল বিশাল স্তূপও সেদিন জমিন উগলে দেবে। তখন যে ব্যক্তি ধন-সম্পদের জন্য কাউকে হত্যা করেছিল, সে তা দেখে বলবে, এর জন্যই কি আমি এত বড় অপরাধ করেছিলাম? অতঃপর কেউ এসব স্বর্ণখন্ডের প্রতি ভ্রুক্ষেপও করবে না।
(সহীহ মুসলিম, হা/১০১৩)
[৩] মানুষ অর্থ প্রত্যেকটি মানুষ হতে পারে। কারণ পুনরায় জীবন লাভ করে চেতনা ফিরে পাবার সাথে সাথেই প্রত্যেক ব্যক্তির প্রথম প্রতিক্রিয়া এটিই হবে যে, এসব কী হচ্ছে? এটা যে হাশরের দিন এ কথা সে পরে বুঝতে পারবে। আবার মানুষ অর্থ আখেরাত অস্বীকারকারী মানুষও হতে পারে। কারণ যে বিষয়কে অসম্ভব মনে করতো তা তার সামনে ঘটে যেতে থাকবে এবং সে এসব দেখে অবাক ও পেরেশান হবে। তবে ঈমানদারদের মনে এ ধরনের বিস্ময় ও পেরেশানি থাকবে না।
[৪] এর এক অর্থ, জমিন তার থেকে যা যা বের করে দিল (সম্পদরাজি) তা জানিয়ে দিবে। এর আরেকটি অর্থ জমিন তার মধ্যে কৃত ভাল-মন্দ যাবতীয় কর্মকান্ডের হিসাব দাখিল করবে।
জমিনের উপর যা কিছু ঘটে গেছে তার সবকিছু সে কিয়ামতের দিন বলে দেবে, জমিন সম্পর্কে এ কথাটি প্রাচীন যুগে মানুষকে অবাক করে দিয়ে থাকবে, এতে সন্দেহ নেই। কারণ তারা মনে করে থাকবে, জমিন আবার কেমন করে কথা বলবে? কিন্তু আজ পদার্থবিদ্যা সংক্রান্ত নতুন নতুন জ্ঞান-গবেষণা, আবিষ্কার-উদ্ভাবন, লাউড স্পীকার, রেডিও, টেলিভিশন, টেপরেকর্ডার ও ইলেকট্রনিক ইত্যাদি যন্ত্রপাতি আবিষ্কারের এ যুগে জমিন তার নিজের অবস্থা ও নিজের উপর ঘটে যাওয়া ঘটনাবলী কিভাবে বর্ণনা করবে এ কথা অনুধাবন করা মোটেই কঠিন নয়। মানুষ তার মুখ থেকে যা কিছু উচ্চারণ করে তার পূর্ণ অবয়ব বাতাসে, রেডিও তরঙ্গে, ঘরের দেয়ালে, মেঝে এবং কোন পথে, ময়দানে বা ক্ষেতে কোন কথা বলে থাকলে সেখানকার প্রতিটি অণু-কণিকায় তা গেঁথে আছে। আল্লাহ যখনি চাইবেন এ কথাগুলোকে এসব জিনিসের মাধ্যমে তখনই হুবহু ঠিক তেমিনভাবে শুনিয়ে দিতে পারবেন যেভাবে সেগুলো একদিন মানুষের মুখ থেকে উচ্চারিত হয়েছিল। সে সময় মানুষ নিজের কানেই নিজের এই আওয়াজ শুনে নেবে। তার পরিচিত জনেরাও তার এই আওয়াজ চিনে নেবে এবং তারা একে তারই কণ্ঠধ্বনি ও বাকভঙ্গীমা বলে শনাক্ত করবে। তারপর মানুষ জমিনের যেখানেই যে অবস্থায় যে কোন কাজ করেছে তার প্রতিটি নড়াচড়া ও অঙ্গভঙ্গির প্রতিচ্ছবি তার চারপাশের সমস্ত বস্তুতে পড়েছে এবং সেগুলোর মধ্যে সেসব চিত্রায়িত হয়ে রয়েছে। একেবারে নিকষ কালো আধারের বুকে সে কোন কাজ করে থাকলেও আল্লাহর সার্বভৌম কর্তৃত্বের অধীন এমন সব রশ্মি রয়েছে যেগুলোর কাছে আলো-আধার সমান, তারা সকল অবস্থায় তার ছবি তুলতে পারে। এসব ছবি কিয়ামতের দিন একটি ফিল্মের মতো মানুষের সামনে এসে যাবে এবং সারা জীবন সে কোথায় কী করেছে তা তাকে দেখিয়ে দেবে।
[৫] এর অর্থ, সেদিন মানুষ হাশরের মাঠ থেকে তাদের আমল অনুযায়ী ভিন্ন ভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে যাবে; তাদের কেউ জান্নাতে যাবে, কেউ যাবে জাহান্নামে। এর দ্বিতীয় অর্থ হতে পারে, বিগত হাজার হাজার বছরে সমস্ত মানুষ যে যেখানে মরেছিল সেখান থেকে অর্থাৎ পৃথিবীর বিভিন্ন স্থান থেকে দলে দলে আসতে থাকবে। (সূরা নাবা : ১৮)
[৬] অর্থাৎ তাদের আমল তাদেরকে দেখানো হবে। প্রত্যেকে দুনিয়ায় কী কাজ করে এসেছে তা তাকে বলা হবে। কুরআন মাজীদের বিভিন্ন স্থানে এ কথা সুস্পষ্টভাবে বলা হয়েছে যে, কাফির, মুমিন, সৎকর্মশীল ও ফাসেক, আল্লাহর হুকুমের অনুগত ও নাফরমান সবাইকে অবশ্যই তাদের আমলনামা দেয়া হবে। (সূরা হাক্কাহ : ১৯,২৫; সূরা ইনশিকাক : ৭-১০)
[৭] এ আয়াতে خَيْرٌ বলে শরীয়তসম্মত সৎকর্ম বুঝানো হয়েছে, যা ঈমানের সাথে সম্পাদিত হয়ে থাকে। কেননা ঈমান ব্যতীত কোন সৎকর্মই আল্লাহর কাছে সৎকর্ম নয়। কুফর অবস্থায় কৃত সৎকর্ম আখেরাতে ধর্তব্য হবে না- যদিও দুনিয়াতে তার প্রতিদান দেয়া হয়।
[৮] প্রত্যেকটি সামান্যতম ও নগণ্যতম সৎকাজেরও একটি ওজন ও মূল্য রয়েছে এবং অনুরূপ অবস্থা অসৎকাজেরও। অসৎকাজ যত ছোটই হোক না কেন অবশ্যই তার হিসাব হবে এবং তা কোনক্রমেই উপেক্ষা করার মতো নয়। তাই কোন ছোট সৎকাজকে ছোট মনে করে ত্যাগ করা উচিত নয়। অনুরূপভাবে কোন ছোট ও নগণ্য অসৎকাজও না করা উচিত; কারণ এই ধরনের অনেকগুলো ছোট গোনাহ একত্র হয়ে একটি বিরাট গোনাহের স্তূপ জমে উঠতে পারে। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচার চেষ্টা করো, তা এক টুকরো খেজুর দান করা বা একটি ভালো কথা বলার বিনিময়েই হোক না কেন (সহীহ বুখারী, হা/৬৫৪০) । রাসূলুল্লাহ ﷺ আরো বলেন, সাবধান! ছোট গোনাহসমূহ থেকে নিজেকে রক্ষা করো। কারণ সেগুলো সব মানুষের উপর একত্র হয়ে তাকে ধ্বংস করে দেবে।
(মুসনাদে আহমাদ : ১/৪০২)
এ সূরার শিক্ষাসমূহ :
কিয়ামতের পূর্বে ভয়াবহ ভূমিকম্প হবে, যার ফলে জমিন থেকে সকল মৃত মানুষ ও ধন সম্পদ বের হয়ে আসবে।
কিয়ামতের দিন মানুষ দলে দলে বিভক্ত হয়ে যাবে।
কিয়ামতের দিন আল্লাহ তা‘আলার নির্দেশে জমিন মানুষের কৃতকর্মের ব্যাপারে সাক্ষ্য প্রদান করবে।
কিয়ামতের দিন মানুষের সমস্ত কৃতকর্ম প্রকাশ পেয়ে যাবে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/319/24
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।