hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

আম্মা পারা

লেখকঃ শাইখ আবদুর রহমান বিন মুবারক আলী

১৫
৯০- সূরা বালাদ
সূরার নামকরণ :

সূরাটির প্রথম আয়াতের أَلْبَلَدُ (আল-বালাদ) শব্দের আলোকে এর নাম রাখা হয়েছে সূরা বালাদ। এর অর্থ শহর, দেশ।

নাযিলের সময়কাল :

এ সূরাটি এমন এক সময় নাযিল হয়েছিল, যখন মক্কার কাফিররা নবী ﷺ এর বিরোধিতায় উঠেপড়ে লেগেছিল এবং তাঁর উপর সব রকমের জুলুম নিপীড়ন চালাচ্ছিল।

সূরার বিষয়বস্তু :

এর বিষয়বস্তু হচ্ছে, দুনিয়ায় মানুষের সঠিক অবস্থান, মর্যাদা ও ভূমিকা বুঝিয়ে দেয়া। মানুষকে এ কথা জানিয়ে দেয়া যে, আল্লাহ মানুষের জন্য সৌভাগ্যের ও দুর্ভাগ্যের উভয় পথই খুলে রেখেছেন, সেগুলো দেখার ও সেগুলোর উপর দিয়ে চলার যাবতীয় উপকরণও তাদেরকে সরবরাহ করেছেন। এখন মানুষ সৌভাগ্যের পথে চলে শুভ পরিণতি লাভ করবে নাকি দুর্ভাগ্যের পথে চলে অশুভ পরিণতির মুখোমুখি হবে, এটি তার নিজের প্রচেষ্টা ও পরিশ্রমের উপর নির্ভর করে।

এই দুনিয়াটা মানুষের জন্য কোন আরাম আয়েশের জায়গা নয়। এখানে ভোগ-বিলাসে মত্ত হয়ে আনন্দ উল্লাস করার জন্য তাকে সৃষ্টি করা হয়নি। বরং এখানে কষ্টের মধ্যেই তার জন্ম হয়েছে।

এরপর যারা এ ভুল ধারণা করে যে, মানুষই এখানেই সবকিছু, তার উপর কোন উচ্চতর ক্ষমতা নেই যে, তার কাজের যথাযথ হিসেব নেবে, তাদের এই ভুল ধারণা দূর করে দেয়া হয়েছে।

তারপর মানুষের বহু জাহেলী নৈতিক চিন্তাধারার মধ্য থেকে এটিকে দৃষ্টান্তস্বরূপ গ্রহণ করে দুনিয়ায় সে অহঙ্কার ও শ্রেষ্ঠত্বের যেসব ভুল মানদন্ডের প্রচলন করে রেখেছে তা তুলে ধরা হয়েছে।

এরপর মহান আল্লাহ বলেছেন, আমি মানুষকে জ্ঞানের বিভিন্ন উপকরণ এবং চিন্তা ও উপলব্ধির যোগ্যতা দিয়ে তার সামনে ভালো ও মন্দ দুটি পথই উন্মুক্ত করে দিয়েছি। একটি পথ মানুষকে নৈতিক অধঃপতনের দিকে নিয়ে যায়। এ পথে চলার জন্য কোন কষ্ট স্বীকার করতে হয় না। দ্বিতীয় পথটি মানুষকে নৈতিক উন্নতির দিকে নিয়ে যায়। এটি একটি দুর্গম গিরিপথের মতো।

আয়াত : ১-১০



لَاۤ اُقْسِمُ بِهٰذَا الْبَلَدِ (১) وَاَنْتَ حِلٌّ ۢبِهٰذَا الْبَلَدِ (২) وَوَالِدٍ وَّمَا وَلَدَ (৩) لَقَدْ خَلَقْنَا الْاِنْسَانَ فِيْ كَبَدٍ (৪) اَيَحْسَبُ اَنْ لَّنْ يَّقْدِرَ عَلَيْهِ اَحَدٌ (৫) يَقُوْلُ اَهْلَكْتُ مَالًا لُّبَدًا (৬) اَيَحْسَبُ اَنْ لَّمْ يَرَهٗۤ اَحَدٌ (৭) اَلَمْ نَجْعَلْ لَّهٗ عَيْنَيْنِ (৮) وَلِسَانًا وَّشَفَتَيْنِ (৯) وَهَدَيْنَاهُ النَّجْدَيْنِ (১০)

শাব্দিক অনুবাদ :

(১) لَا না - اُقْسِمُ আমি শপথ করছি بِهٰذَا এই اَلْبَلَدِ নগরীর, (২) وَاَنْتَ আর তুমি حِلٌّ হালালকারী بِهٰذَا এই اَلْبَلَدِ নগরীর। (৩) وَوَالِدٍ শপথ পিতার وَمَا وَلَدَ আর যা সে জন্ম দিয়েছে তার। (৪) لَقَدْ خَلَقْنَا অবশ্যই আমি সৃষ্টি করেছি اَلْاِنْسَانَ মানুষকে فِيْ كَبَدٍ কষ্টের মধ্যে। (৫) اَيَحْسَبُ সে কি মনে করে اَنْ যে, لَنْ يَّقْدِرَ কখনো ক্ষমতাবান হবে না عَلَيْهِ তার উপর اَحَدٌ কেউ? (৬) يَقُوْلُ সে বলে اَهْلَكْتُ আমি নষ্ট করেছি مَالًا সম্পদ لُبَدًا অনেক। (৭) اَيَحْسَبُ সে কি ধারণা করে اَنْ যে, لَمْ يَرَهٗ তাকে দেখছে না اَحَدٌ কেউই? (৮) اَلَمْ نَجْعَلْ আমি কি বানাইনি لَهٗ তার জন্যে عَيْنَيْنِ দু’টি চোখ? (৯) وَلِسَانًا আর একটি জি‎হবা وَشَفَتَيْنِ ও দু‘টি ঠোট? (১০) وَهَدَيْنَاهُ এবং আমি তাকে দেখিয়েছি اَلنَّجْدَيْنِ দু’টি পথ।

সরল অনুবাদ :

(১) না,১ আমি শপথ করছি এই (মক্কা) নগরীর,২ (২) আর তুমি এই নগরীর হালালকারী।৩ (৩) শপথ পিতার এবং যা সে জন্ম দিয়েছে তার।৪ (৪) অবশ্যই আমি মানুষকে সৃষ্টি করেছি কষ্টের মধ্যে।৫ (৫) সে কি মনে করে যে, কখনো তার উপর কেউ ক্ষমতাবান হবে না? (৬) সে বলে, আমি অনেক ধন-সম্পদ নষ্ট করেছি।৬ (৭) সে কি ধারণা করে যে, তাকে কেউই দেখছে না? (৮) আমি কি তার জন্য দু’টি চোখ বানাইনি? (৯) আর একটি জিহবা ও দুটি ঠোঁট? (১০) আর আমি তাকে দেখিয়েছি৭ দু’টি পথ৮।

টীকা :

[১] এ সূরার প্রথমেই বলা হয়েছে لَا ; কিন্তু এখানে لَا শব্দটি কি অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে এ ব্যাপারে দুটি মত রয়েছে। এখানে لَا শব্দটি অতিরিক্ত এবং আরবী বাকপদ্ধতিতে এর অতিরিক্ত ব্যবহার সুবিদিত। তবে বিশুদ্ধ উক্তি এই যে, প্রতিপক্ষের ভ্রান্ত ধারণা খন্ডন করার জন্য এই لَا শব্দটি শপথ বাক্যের শুরুতে ব্যবহৃত হয়। উদ্দেশ্য এই যে, এটা কেবল আপনার ধারণা নয়; বরং আমি শপথ সহকারে যা বলছি, তাই বাস্তব সত্য।

[২] اَلْبَلَدُ বা নগরী বলে এখানে মক্কা নগরীকে বুঝানো হয়েছে। সূরা তীনে এমনিভাবে মক্কা নগরীর শপথ করা হয়েছে এবং সেই সাথে أَمِيْنٌ বিশেষণও উল্লেখ করা হয়েছে।

[৩] حِلٌّ শব্দের দুটি অর্থ হতে পারে। এটা حُلُوْلٌ থেকে উদ্ভূত। অর্থ কোন কিছুতে অবস্থান নেয়া, থাকা ও অবতরণ করা। সে হিসেবে আয়াতের মর্মার্থ এই যে, মক্কা নগরী নিজেও সম্মানিত ও পবিত্র, বিশেষত আপনিও এ নগরীতে বসবাস করেন। বসবাসকারীর শ্রেষ্ঠত্বের দরুন বাসস্থানের শ্রেষ্ঠত্ব বেড়ে যায়। কাজেই আপনার বসবাসের কারণে এ নগরীর মাহাত্ম ও সম্মান দ্বিগুণ হয়ে গেছে। অপর অর্থ এই যে, আপনার জন্য হারামে কাফিরদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা হালাল করে দেয়া হবে। বস্তুত মক্কা বিজয়ের সময় একদিনের জন্যই তাই করা হয়েছিল। আনাস ইবনে মালিক (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ মক্কা বিজয়ের দিন মাথায় শিরস্ত্রাণ পরিধান করে মক্কায় প্রবেশ করলেন। তারপর যখন তিনি তা খুললেন, এক লোক এসে তাকে বলল যে, ইবনে খাত্তাল কাবার পর্দা ধরে আছে। তিনি বললেন, তাকে হত্যা কর। কারণ, পূর্ব থেকেই রাসূল ﷺ তার মৃত্যুদন্ডের ঘোষণা দিয়েছিলেন।

(সহীহ বুখারী, হা/১৮৪৬; সহীহ মুসলিম, হা/৪৫০)

[৪] যেহেতু বাপ ও তার ঔরসে জন্ম গ্রহণকারী সন্তানদের ব্যাপারে ব্যাপক অর্থবোধক শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে এবং সামনের দিকে মানুষের কথা বলা হয়েছে, তাই বাপ মানে আদম (আঃ)-ই হতে পারেন। আর তাঁর ঔরসে জন্মগ্রহণকারী সন্তান বলতে দুনিয়ার সব মানুষকে বুঝানো হয়েছে। এভাবে এতে আদম ও দুনিয়ার আদি থেকে অন্ত পর্যন্ত সব বনী আদমের শপথ করা হয়েছে।

[৫] كَبَدٌ এর শাব্দিক অর্থ শ্রম ও কষ্ট। অর্থাৎ মানুষ সৃষ্টিগতভাবে আজীবন শ্রম ও কষ্টের মধ্যে থাকে। (ইবনে কাসীর; ফাতহুল কাদীর)

[৬] সে বলে, আমি প্রচুর ধন-সম্পদ উড়িয়ে দিয়েছি। এই শব্দগুলোই প্রকাশ করে, বক্তা তার ধনসম্পদের প্রাচুর্যে কী পরিমাণ গর্বিত। যে বিপুল পরিমাণ ধনসম্পদ সে খরচ করেছে নিজের সামগ্রিক সম্পদের তুলনায় তার কাছে তার পরিমাণ এত সামান্য ছিল যে, তা উড়িয়ে বা ফুঁকিয়ে দেবার কোন পরোয়াই সে করেনি। আর এই সম্পদ সে কোন কাজে উড়িয়েছে? কোন প্রকৃত নেকীর কাজে নয়, যেমন সামনের আয়াতগুলো থেকে প্রকাশিত হচ্ছে। বরং এই সম্পদ সে উড়িয়েছে নিজের ধনাঢ্যতার প্রদর্শনী এবং নিজের অহঙ্কার ও শ্রেষ্ঠত্ব প্রকাশ করার জন্য।

[৭] অর্থাৎ ভাল ও মন্দ দুটি পথের দিশাই আল্লাহ তা‘আলা তাঁর বান্দাকে দিয়েছেন। শুধুমাত্র বুদ্ধি ও চিন্তার শক্তি দান করে তাকে নিজের পথ নিজে খুঁজে নেবার জন্য ছেড়ে দেননি। বরং তাকে পথ দেখিয়ে দিয়েছেন। তার সামনে ভালো ও মন্দ এবং নেকী ও গোনাহের দুটি পথ সুস্পষ্ট করে তুলে ধরেছেন। ভালোভাবে চিন্তা-ভাবনা করে তার মধ্য হতে নিজ দায়িত্বে যে পথটি ইচ্ছা সে গ্রহণ করতে পারে। কুরআনের অন্যত্র বলা হয়েছে। ‘‘আমি তাকে পথ দেখিয়ে দিয়েছি, চাইলে সে শোকরকারী হতে পারে বা কুফরকারীও হতে পারে। (সূরা দাহর : ২-৩)

[৮] نَجْدَيْنِ শব্দটি نَجْدٌ এর দ্বিবচন। এর শাব্দিক অর্থ ঊর্ধ্বগামী পথ। এখানে প্রকাশ্য পথ বুঝানো হয়েছে। এ পথ দুটির একটি হচ্ছে সৌভাগ্য ও সাফল্যের পথ এবং অপরটি হচ্ছে অনিষ্ট ও ধ্বংসের পথ। এ পথ দুটির একটি গেছে উপরের দিকে। কিন্তু সেখানে যেতে হলে খুব কষ্ট ও পরিশ্রম করতে হয়। সে পথটি বড়ই দুর্গম। সে পথে যেতে হলে মানুষকে নিজের প্রবৃত্তি ও তার আকাঙ্ক্ষা এবং শয়তানের প্ররোচনার সাথে লড়াই করে এগিয়ে যেতে হয়। আর দ্বিতীয় পথটি বড়ই সহজ। এটি খাদের মধ্যে নেমে গেছে। এই পথ দিয়ে নীচের দিকে নেমে যাবার জন্য কোন পরিশ্রমের প্রয়োজন হয় না। মানুষ আপনা আপনি গড়িয়ে যেতে থাকে।

আয়াত : ১১-২০

فَلَا اقْتَحَمَ الْعَقَبَةَ (১১) وَمَاۤ اَدْرَاكَ مَا الْعَقَبَةُ (১২) فَكُّ رَقَبَةٍ (১৩) اَوْ اِطْعَامٌ فِيْ يَوْمٍ ذِيْ مَسْغَبَةٍ (১৪) يَتِيْمًا ذَا مَقْرَبَةٍ (১৫) اَوْ مِسْكِيْنًا ذَا مَتْرَبَةٍ (১৬) ثُمَّ كَانَ مِنَ الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا وَتَوَاصَوْا بِالصَّبْرِ وَتَوَاصَوْا بِالْمَرْحَمَةِ (১৭) اُولٰٓئِكَ اَصْحَابُ الْمَيْمَنَةِ (১৮) وَالَّذِيْنَ كَفَرُوْا بِاٰيَاتِنَا هُمْ اَصْحَابُ الْمَشْاَمَةِ (১৯) عَلَيْهِمْ نَارٌ مُّؤْصَدَةٌ (২০)

শাব্দিক অনুবাদ :

(১১) فَلَا اقْتَحَمَ কিন্তু সেতো অতিক্রম করেনি اَلْعَقَبَةَ বন্ধুর গিরিপথটি। (১২) وَمَاۤ اَدْرَاكَ তুমি কি জান যে, مَا الْعَقَبَةُ বন্ধুর গিরিপথটি কী? (১৩) فَكُّ মুক্ত করা رَقَبَةٍ দাসকে; (১৪) اَوْ অথবা اِطْعَامٌ খাদ্যদান فِيْ يَوْمٍ ذِيْ مَسْغَبَةٍ দুর্ভিক্ষের দিনে; (১৫) يَتِيْمًا কোন এতীম, ذَا مَقْرَبَةٍ আত্মীয়কে, (১৬) اَوْ অথবা مِسْكِيْنًا দরিদ্রকে ذَا مَتْرَبَةٍ ধূলায় লুণ্ঠিত, (১৭) ثُمَّ তারপর كَانَ হওয়া مِنَ الَّذِيْنَ তাদের অন্তর্ভুক্ত যারা اٰمَنُوْا ঈমান এনেছে وَتَوَاصَوْا এবং পরস্পরকে উপদেশ দেয় بِالصَّبْرِ ধৈর্যধারণের وَتَوَاصَوْا আর পরস্পরকে উপদেশ দেয় بِالْمَرْحَمَةِ করুণার; (১৮) اُولٰٓئِكَ এরাই اَصْحَابُ الْمَيْمَنَةِ ডান হাতওয়ালা। (১৯) وَالَّذِيْنَ আর যারা كَفَرُوْا অস্বীকার করেছে بِاٰيَاتِنَا আমার নিদর্শনসমূহ, هُمْ তারাই اَصْحَابُ الْمَشْاَمَةِ বাম হাতওয়ালা। (২০) عَلَيْهِمْ তাদের উপরই (ছেয়ে) থাকবে نَارٌ অগ্নি مُؤْصَدَةٌ অবরুদ্ধ।

সরল অনুবাদ :

(১১) কিন্তু সে তো বন্ধুর গিরিপথে৯ প্রবেশ করলো না। (১২) তুমি কি জান যে, বন্ধুর গিরিপথটি কী? (১৩) এটা হচ্ছে, কোন দাসকে মুক্ত করা;১০ (১৪) অথবা দুর্ভিক্ষের দিনে খাদ্য দান করা;১১ (১৫) কোন এতীম আত্মীয়-স্বজনকে,১২ (১৬) অথবা ধূলায় লুণ্ঠিত নিঃস্ব মিসকীনকে, (১৭) তারপর তাদের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হওয়া, যারা ঈমান এনেছে এবং যারা পরস্পরকে উপদেশ দেয় ধৈর্য্যধারণের ও দয়া করুণার;১৩ (১৮) এরাই ডান হাতওয়ালা। (১৯) আর যারা আমার নিদর্শনসমূহ অস্বীকার করেছে, তারাই বাম হাতওয়ালা। (২০) তাদের উপরই ছেয়ে থাকবে অবরুদ্ধ অগ্নি।

টীকা :

[৯] عَقَبَةٌ বলা হয় পাহাড়ের বিরাট প্রস্তরখন্ডকে এবং দুটি পাহাড়ের মধ্যবর্তী গিরিপথকে।

[১০] এসব সৎকর্মের মধ্যে প্রথমে দাসমুক্ত করার কথা বলা হয়েছে। এটা খুবই বড় ইবাদাত। বিভিন্ন হাদীসে এর অনেক সওয়াবের কথা উল্লেখ আছে। এক হাদীসে রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন, ‘‘যে কেউ কোন দাসকে মুক্ত করবে, সেটা তার জন্য জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তিপণ হিসেবে বিবেচিত হবে।’’।

(মুসনাদে আহমাদ : ৪/১৪৭, ১৫০)

[১১] দ্বিতীয় সৎকর্ম হচ্ছে ক্ষুধার্তকে অন্নদান। যে কাউকে অন্নদান করলে তা সওয়াবের কাজ হয়ে যায়। তাই বলা হয়েছে, বিশেষভাবে যদি আত্মীয় এতীমকে অন্ন দান করা হয়, তবে তাতে দ্বিগুণ সওয়াব হয়। (এক) ক্ষুধার্তের ক্ষুধা দূর করার সওয়াব এবং (দুই) আত্মীয়দের সাথে সম্পর্ক বজায় রাখা ও তার হক আদায় করার সওয়াব।

[১২] এ ধরনের এতীমের হক সবচেয়ে বেশি। একদিকে সে এতীম, দ্বিতীয়ত সে তার নিকটাত্মীয়। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন, ‘‘মিসকীনকে দান করা নিঃসন্দেহে একটি দান। কিন্তু আত্মীয়দের দান করা দুটি সওয়াব। একটি দানের ও অপরটি আত্মীয়তার সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করার। (মুসনাদে আহমাদ : ৪/৪১৪; তিরমিযী, হা/৬৫৩)

[১৩] এ আয়াতে ঈমানের পর মুমিনের এই কর্তব্য ব্যক্ত করা হয়েছে যে, সে অন্যান্য মুসলিম ভাইকে সবর ও অনুকম্পার উপদেশ দেবে। সবরের অর্থ নিজেকে মন্দ কাজ থেকে বাঁচিয়ে রাখা এবং সৎকর্ম সম্পাদন করা। مَرْحَمَةٌ এর অর্থ অপরের প্রতি দয়ার্দ্র হওয়া। অপরের কষ্টকে নিজের কষ্ট মনে করে তাকে কষ্টদান ও যুলুম করা থেকে বিরত হওয়া। নবী ﷺ নিজের উম্মতের মধ্যে এই রহম ও করুণাবৃত্তিটির মতো উন্নত নৈতিক বৃত্তিটিকেই সবচেয়ে বেশি প্রসারিত করতে চেয়েছেন। হাদীসে এসেছে, ‘‘যে মানুষের প্রতি রহমত করে না আল্লাহ তার প্রতি রহমত করেন না।’’ (সহীহ বুখারী, হা/৭৩৭৬; সহীহ মুসলিম, হা/৩১৯)

এ সূরার শিক্ষাসমূহ :

দুনিয়া পরিশ্রমের স্থান; এখানে নেক আমল করেই মানুষ জান্নাতে প্রবেশ করবে।

আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের বিরুদ্ধে অর্থ ব্যয় বড়ই ন্যাক্কারজনক কাজ।

এতীম ও অসহায়দের পাশে সাধ্যমতো দাঁড়ানো সকলের নৈতিক দায়িত্ব।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন