মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
সূরাটির প্রথম আয়াতের প্রথম শব্দ اَلتِّيْنُ (আত-তীন)-কে এর নাম হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। এটি একটি ফলের নাম।
নাযিলের সময়কাল :
এটি মক্কায় অবতীর্ণ প্রথম দিকের সূরা।
সূরার বিষয়বস্তু :
এর বিষয়বস্তু হচ্ছে পুরস্কার ও শাস্তির স্বীকৃতি। এই উদ্দেশ্যে সর্বপ্রথম মহান মর্যাদাশীল নবীগণের আত্মপ্রকাশের স্থানসমূহের কসম খেয়ে বলা হয়েছে। মানুষকে এমন উত্তম কাঠামোয় সৃষ্টি করা হয়েছে, যার ফলে তার মধ্যে নবুওয়াতের মতো সর্বাধিক উন্নত পদমর্যাদা সম্পন্ন লোক জন্ম নিয়েছে। আর এই নবুওয়াতের চাইতে উঁচু পদমর্যাদা আল্লাহর অন্য কোন সৃষ্টি লাভ করেনি।
সর্বোত্তম কাঠামোয় সৃষ্টি করার পরও যখন মানুষ নিজের দৈহিক ও মানসিক শক্তিগুলোকে দুষ্কৃতির পথে ব্যবহার করে তখন আল্লাহ তাকে উপযুক্ত প্রতিদান হিসেবে জাহান্নামকে তার আবাসস্থল বানিয়ে দেন।
দ্বিতীয় ধরনের মানুষ ঈমান ও সৎকাজের পথ অবলম্বন করে এই পতন থেকে রক্ষা পায়। তাদেরকে সর্বোত্তম কাঠামোয় সৃষ্টি করার অপরিহার্য দাবী যে উন্নত স্থান সে স্থানেই তারা প্রতিষ্ঠিত থাকে। মানব জাতির মধ্যে এই দুই ধরনের লোকের অস্তিত্ব এমন একটি বাস্তব সত্য, যাকে কোনক্রমেই অস্বীকার করা যেতে পারে না। কারণ মানুষের সমাজে সব জায়গায় সবসময় এটি দেখা যাচ্ছে।
সবশেষে বলা হয়েছে, মানুষের মধ্যে যখন এই দুটি আলাদা আলাদা এবং পরস্পর থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন ধরনের মানুষ পাওয়া যায়, তখন কাজের প্রতিদানের ব্যাপারটি কেমন করে একই হয়। তাহলে এর অর্থ এই দাঁড়ায় যে, আল্লাহর রাজত্বে কোন ইনসাফ নেই। অথচ শাসককে ইনসাফ অবশ্যই করতে হবে। এ ক্ষেত্রে আল্লাহ যিনি সকল শাসকের বড় শাসক তিনি ইনসাফ করবেন না, এ কথা কী করে কল্পনা করা যেতে পারে।
বারা ইবনে আযিব (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ একবার সফরে দু’রাকাআতের যে কোন রাকাআতে সূরা তীন পাঠ করলেন। আমি তার মতো সুন্দর স্বর ও পড়া আর কোন দিন শুনিনি। (সহীহ বুখারী, হা/৭৬৭)
(১) وَالتِّيْنِ শপথ তীনের وَالزَّيْتُوْنِ ও যায়তুনের, (২) وَطُوْرِ এবং তূর পর্বতের سِيْنِيْنَ সিনাই প্রান্তরস্থ, (৩) وَهٰذَا এবং এই اَلْبَلَدِ الْاَمِيْنِ নিরাপদ নগরীর। (৪) لَقَدْ خَلَقْنَا আমি সৃষ্টি করেছি اَلْاِنْسَانَ মানুষকে فِيْۤ اَحْسَنِ تَقْوِيْمٍ সুন্দরতর অবয়বে (৫) ثُمَّ অতঃপর رَدَدْنَاهُ তাকে ফিরিয়ে দিয়েছি اَسْفَلَ হীনতমরূপে سَافِلِيْنَ হিনতাগ্রস্ত ব্যক্তিদের থেকেও (৬) اِلَّا তবে اَلَّذِيْنَ যারা اٰمَنُوْا বিশ্বাস স্থাপন করেছে وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ ও সৎকর্ম করেছে, فَلَهُمْ তাদের জন্যে রয়েছে اَجْرٌ পুরস্কার غَيْرُ مَمْنُوْنٍ অশেষ। (৭) فَمَا يُكَذِّبُكَ অতঃপর কেন তুমি অবিশ্বাস করছ بَعْدُ এরপরও بِالدِّيْنِ কিয়ামতকে? (৮) اَلَيْسَ اللهُ আল্লাহ্ কি নন بِاَحْكَمِ শ্রেষ্ঠ বিচারক اَلْحَاكِمِيْنَ বিচারকদের মধ্যে?
সরল অনুবাদ :
(১) শপথ তীন ও যায়তুনের,১ (২) শপথ সিনাই প্রান্তরস্থ তূর পর্বতের,২ (৩) শপথ এই নিরাপদ নগরীর।৩ (৪) নিশ্চয় আমি মানুষকে সুন্দরতর অবয়বে সৃষ্টি করেছি।৪ (৫) অতঃপর তাকে ফিরিয়ে নেই হীনতম রূপে- হীনতাগ্রস্ত লোকদের থেকে।৫ (৬) কিন্তু যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে ও সৎকর্ম করেছে, তাদের জন্যে রয়েছে অশেষ পুরস্কার।৬ (৭) সুতরাং এরপরও কিসে আপনাকে কর্মফল দিবস সম্পর্কে অবিশ্বাসী করে তুলে?৭ (৮) আল্লাহ্ কি বিচারকদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ বিচারক নন?৮
টীকা :
[১] তীন হচ্ছে গোল হালকা কালচে বর্ণের এক রকম মিষ্টি ফল- যা লোকেরা খায়। আর যায়তুন বলতেও ঐ যায়তুনই বুঝানো হয়েছে, যা থেকে তেল বের হয়। কোন কোন মুফাসসির বলেন, তীন ও যায়তুন শব্দের অর্থ এই ফল দুটি উৎপাদনের সমগ্র এলাকা হতে পারে। এটি হচ্ছে সিরিয়া ও ফিলিস্তীন এলাকা। কারণ সে যুগের আরবে তীন ও যায়তুন উৎপাদনের জন্য এ দুটি এলাকাই পরিচিত ছিল। ইবনে তাইমিয়া ও ইবনুল কাইয়্যিম (রহ.) এই ব্যাখ্যা অবলম্বন করেছেন।
[২] তূরে সীনীন এর অর্থ, সীনীন অঞ্চলের তূর পর্বত। এ পাহাড়ে আল্লাহ তা‘আলা মূসা (আঃ) এর সাথে কথা বলেছিলেন। এ পাহাড় সীনীন উপত্যকায় অবস্থিত, যার অপর নাম সাইনা।
[৩] এ সূরায় কয়েকটি বস্তুর শপথ করা হয়েছে। (এক) তীন অর্থাৎ আঞ্জির বা ডুমুর এবং যায়তুন। (দুই) সিনাই প্রান্তরস্থ তূর পর্বত। (তিন) নিরাপদ শহর তথা মক্কা মোকাররামা। এই বিশেষ শপথের কারণ এই হতে পারে যে, তূর পর্বত ও মক্কা নগরীর ন্যায় ডুমুর ও যায়তুন বৃক্ষও বিপুল উপকারী বস্তু। অথবা এটাও সম্ভবপর যে, এখানে তীন ও যায়তুন উল্লেখ করে সে স্থানকে বুঝানো হয়েছে, যেখানে এ বৃক্ষ প্রচুর পরিমাণে উৎপন্ন হয়। আর সে স্থান হচ্ছে সিরিয়া ও ফিলিস্তিন অঞ্চল, যা অগণিত রাসূলগণের আবাসভূমি। বিশেষ করে তা ঈসা (আঃ) এর নবুওয়াত প্রাপ্তির স্থান। আর তূর পর্বত মূসা (আঃ) এর আল্লাহর সাথে বাক্যালাপের স্থান। সীনীন অথবা সাইনা- তূর পর্বতের অবস্থানস্থলের নাম। পরবর্তীতে উল্লেখ করা নিরাপদ শহর হল পবিত্র মক্কা; যা শেষ নবী ﷺ এর জন্মস্থান ও নবুওয়াতপ্রাপ্তির স্থান।
[৪] কসম এ কথাটির উপরই করা হয়েছে। বলা হয়েছে, মানুষকে সর্বোত্তম কাঠামোয় সৃষ্টি করা হয়েছে। এ কথার মানে হচ্ছে এই যে, তাকে এমন উন্নত পর্যায়ের দৈহিক সৌষ্ঠব দান করা হয়েছে, যা অন্য কোন প্রাণীকে দেয়া হয়নি। আয়াতে বর্ণিত تَقْوِيْمٌ এর অর্থ কোন কিছুর অবয়বকে যেরূপ করা উচিত, সে রকমভাবে পরিপূর্ণ আকারে গঠন করা। আল্লাহ তা‘আলা মানুষকে দৈহিক অবয়ব এবং আকার-আকৃতি ও আচার-ব্যবহার অন্যান্য সব প্রাণী অপেক্ষা সুন্দরতম করেছেন। আকার আকৃতির বাইরেও আল্লাহ তা‘আলা তাকে জ্ঞানী, শক্তিবান, বক্তা, শ্রোতা, কুশলী এবং প্রজ্ঞাবান করেছেন।
[৫] মুফাসসিরগণ সাধারণত এর দুটি অর্থ বর্ণনা করেছেন। (এক) আমি তাকে যৌবনের পর বার্ধক্যের এমন এক অবস্থার দিকে ফিরিয়ে দিয়েছি, যেখানে সে কিছু চিন্তা করার, বুঝার ও কাজ করার যোগ্যতা হারিয়ে ফেলে; ছোট শিশুর মতো হয়ে যায়। (দুই) আয়াতের দ্বিতীয় অর্থ হচ্ছে, আমি তাকে জাহান্নামের সর্বনিম্ন পর্যায়ের দিকে ফিরিয়ে দিয়েছি। সর্বোত্তম কাঠামোয় সৃষ্টি করার পর যখন মানুষ নিজের দৈহিক ও মানসিক শক্তিগুলোকে দুষ্কৃতির পথে ব্যবহার করে তখন আল্লাহ তাকে উপযুক্ত প্রতিদান হিসেবে জাহান্নামকে তার আবাসস্থল বানিয়ে দেন।
[৬] এ আয়াতে মুমিন সৎকর্মশীলগণ এর ব্যতিক্রম বলে উল্লেখ করা হয়েছে। বার্ধক্যজনিত বেকারত্ব ও কর্ম হ্রাস পাওয়া সত্ত্বেও তাদের আমলনামায় সেসব কর্ম লিখিত হয়, যা তারা শক্তিমান অবস্থায় করত। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন, কোন মুসলিম অসুস্থ হয়ে পড়লে অথবা মুসাফির হলে আল্লাহ তা‘আলা আমল লেখক ফেরেশতাগণকে আদেশ দেন, সুস্থ অবস্থায় সে যেসব সৎকর্ম করত সেগুলো তার আমলনামায় লিপিবদ্ধ করতে থাকো। (সহীহ বুখারী, হা/২৯৯৬) তাদেরকে জাহান্নামের হীনতম ও পর্যায়ে পৌঁছানো হবে না; বরং তারা জান্নাতে এমন পুরস্কার পাবে, যার ধারাবাহিকতা কোনদিন শেষ হবে না, যে পুরষ্কারের কোন কমতিও হবে না।
[৭] এতে কিয়ামতে অবিশ্বাসীদেরকে হুশিয়ার করা হয়েছে যে, আল্লাহর কুদরতের দৃশ্য দেখার পরও তোমাদের জন্য আখেরাত ও কিয়ামতকে মিথ্যা মনে করার কী অবকাশ থাকতে পারে? তোমাদেরকে আল্লাহ তা‘আলা সুন্দর করে সৃষ্টি করেছেন, তারপরও কেন তোমরা তা অস্বীকার করবে? দুষ্কৃতিকারীরা কি এ কথা মনে করেছে, আমি তাদেরকে সেসব লোকের মতো করে দেব, যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে এবং তাদের উভয়ের জীবন ও মৃত্যু এক রকম হবে? খুবই খারাপ সিদ্ধান্ত, যা তারা করছে। (সূরা জাসিয়াহ : ২১)
[৮] আল্লাহ তা‘আলা কি সব বিচারকের মহাবিচারক নন? তিনি কি সকল শাসকবর্গের মধ্যে সর্বোত্তম শাসক নন? এই ন্যায় বিচারের অতি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হল প্রত্যেক অপরাধীকে তার শাস্তি ও প্রত্যেক সৎকর্মীকে তার উপযুক্ত পুরস্কার প্রদান করা।
এ সূরার শিক্ষাসমূহ :
তীন ও যায়তুন- এ দুটি অনেক উপকারি ফল।
পৃথিবীর অন্যান্য শহর থেকে মক্কার মর্যাদা অনেক বেশি।
মানুষকে উত্তম অবয়বে সৃষ্টি করাটাও আল্লাহ তা‘আলার একটি বিশেষ অনুগ্রহ।
আল্লাহকে সর্বশ্রেষ্ঠ বিচারক হিসেবে বিশ্বাস স্থাপন করা আবশ্যক।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/319/20
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।