hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

আম্মা পারা

লেখকঃ শাইখ আবদুর রহমান বিন মুবারক আলী

১৩
৮৮- সূরা গাশিয়াহ
সূরার নামকরণ :

প্রথম আয়াতে উল্লেখিত اَلْغَاشِيَةُ (আল-গাশিয়াহ) শব্দের আলোকে এ সূরাটির নাম আল-গাশিয়াহ রাখা হয়েছে। এর অর্থ আচ্ছন্নকারী।

নাযিলের সময়কাল :

এ সূরাটি সমগ্র বিষয়বস্তু এ কথা প্রমাণ করে যে, এটিও প্রথম দিকে অবতীর্ণ সূরাগুলোর অন্তর্ভুক্ত। কিন্তু এটি এমন সময় নাযিল হয়, যখন রাসূলুল্লাহ ﷺ সাধারণের মধ্যে ব্যাপকভাবে ইসলাম প্রচারের কাজ শুরু করেন এবং মক্কার লোকেরা তাঁর দাওয়াত শুনে তার প্রতি উপেক্ষা প্রদর্শন করতে থাকে।

সূরার বিষয়বস্তু :

ইসলাম প্রচারের প্রথম দিকে রাসূলুল্লাহ ﷺ প্রধানত দুটি কথা লোকদেরকে বুঝাবার মধ্যেই তার দাওয়াত সীমাবদ্ধ রাখেন। একটি তাওহীদ ও দ্বিতীয়টি আখেরাত। আর মক্কাবাসীরা এই দুটি কথা মেনে নিতে অস্বীকার করতে থাকে। এখানে সবার আগে গাফলতির জীবনে ডুবে থাকা লোকদেরকে চমকে দেবার জন্য হঠাৎ তাদের সামনে প্রশ্ন রাখা হয়েছে, তোমরা কি সে সময়ের কোন খবর রাখো, যখন সারা দুনিয়ার উপর ছেয়ে যাবার মতো একটি বিপদ অবতীর্ণ হবে? এরপর সাথে সাথেই এর বিস্তারিত বর্ণনা দেয়া শুরু হয়েছে। বলা হয়েছে, সে সময় সমস্ত মানুষ দুটি ভিন্ন ভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে দুটি ভিন্ন পরিণামের সম্মুখীন হবে। একদল জাহান্নামে যাবে। দ্বিতীয় দলটি উন্নত ও উচ্চ মর্যাদার জান্নাতে যাবে।

এভাবে লোকদেরকে চমকে দেবার পর হঠাৎ প্রশ্ন করা হয়, যারা কুরআনের তাওহীদী শিক্ষা ও আখেরাতের খবর শুনে নাক সিটকায় তারা কি নিজেদের চোখের সামনে প্রতি মুহূর্তে যেসব ঘটনা ঘটে যাচ্ছে সেগুলো দেখে না? আরবের দিগন্ত বিস্তৃত সাহারায় যেসব উটের উপর তাদের সমগ্র জীবন যাপন প্রণালী নির্ভরশীল তারা কীভাবে ঠিক মরু জীবনের উপযোগী বৈশিষ্ট ও গুণাবলী সম্পন্ন পশু হিসেবে গড়ে উঠেছে, এ কথা কি তারা একটুও চিন্তা করে না? পথে সফর করার সময় তারা আকাশ, পাহাড় বা বিশাল পৃথিবী দেখে না। এই তিনটি জিনিস সম্পর্কেই তারা চিন্তা করে না কেন? যে আল্লাহর এসব কিছু সৃষ্টি করার ক্ষমতা ছিল, সেই আল্লাহ কিয়ামত সংঘটিত করার ক্ষমতাও রাখেন, মানুষদের পুনর্বার সৃষ্টি করার ক্ষমতাও রাখেন।

এরপর কাফিরদের দিক থেকে ফিরে নবী ﷺ-কে সম্বোধন করা হয়েছে। তাঁকে বলা হয়েছে, এরা না মানতে চাইলে না মানুক, তোমাকে তো এদের উপর বল প্রয়োগকারী হিসেবে নিযুক্ত করা হয়নি। তুমি জোর করে এদের থেকে স্বীকৃতি আদায় করতে পারো না। তোমার কাজ উপদেশ দেয়া। কাজেই তুমি উপদেশ দিয়ে যেতে থাকো। সবশেষে তাদের অবশ্যই আমার কাছেই আসতে হবে। সে সময় আমি তাদের কাছ থেকে পুরো হিসেব নিয়ে নেব।

আয়াত : ১-১৬



هَلْ اَتَاكَ حَدِيْثُ الْغَاشِيَةِ (১) وُجُوْهٌ يَّوْمَئِذٍ خَاشِعَةٌ (২) عَامِلَةٌ نَّاصِبَةٌ (৩) تَصْلٰى نَارًا حَامِيَةً (৪) تُسْقٰى مِنْ عَيْنٍ اٰنِيَةٍ (৫) لَيْسَ لَهُمْ طَعَامٌ اِلَّا مِنْ ضَرِيْعٍ (৬) لَا يُسْمِنُ وَلَا يُغْنِيْ مِنْ جُوْعٍ (৭) وُجُوْهٌ يَّوْمَئِذٍ نَّاعِمَةٌ (৮) لِسَعْيِهَا رَاضِيَةٌ (৯) فِيْ جَنَّةٍ عَالِيَةٍ (১০) لَا تَسْمَعُ فِيْهَا لَاغِيَةً (১১) فِيْهَا عَيْنٌ جَارِيَةٌ (১২) فِيْهَا سُرُرٌ مَّرْفُوْعَةٌ (১৩) وَاَكْوَابٌ مَّوْضُوْعَةٌ (১৪) وَنَمَارِقُ مَصْفُوْفَةٌ (১৫) وَزَرَابِيُّ مَبْثُوْثَةٌ (১৬)

শাব্দিক অনুবাদ :

(১) هَلْ اَتَاكَ তোমার কাছে কি এসেছে حَدِيْثُ সংবাদ اَلْغَاشِيَةِ আচ্ছন্নকারীর? (২) وُجُوْهٌ কতক মুখমন্ডল হবে يَوْمَئِذٍ সেদিন خَاشِعَةٌ ভীত-সন্ত্রস্ত; (৩) عَامِلَةٌ কঠোর শ্রমরত نَاصِبَةٌ বিপর্যস্ত; (৪) تَصْلٰى তারা প্রবেশ করবে نَارًا আগুনে حَامِيَةً জ্বলন্ত; (৫) تُسْقٰى তাদেরকে পান করানো হবে مِنْ عَيْنٍ اٰنِيَةٍ উত্তপ্ত ঝর্ণা হতে; (৬) لَيْسَ নেই لَهُمْ তাদের জন্যে طَعَامٌ কোন খাদ্য اِلَّا ব্যতীত مِنْ ضَرِيْعٍ বিষাক্ত কাঁটাযুক্ত শুকনো খড় (৭) لَا يُسْمِنُ তা তাদেরকে পুষ্ট করবে না وَلَا يُغْنِيْ এবং মেটাবে না مِنْ جُوْعٍ ক্ষুধা। (৮) وُجُوْهٌ কতক মুখমন্ডল হবে يَوْمَئِذٍ সেদিন نَاعِمَةٌ আনন্দোজ্জ্বল, (৯) لِسَعْيِهَا নিজেদের প্রচেষ্টায় رَاضِيَةٌ সন্তুষ্ট হবে। (১০) فِيْ جَنَّةٍ জান্নাতে অবস্থান করবে عَالِيَةٍ সুউচ্চ। (১১) لَا تَسْمَعُ তারা শুনবে না فِيْهَا সেখানে لَاغِيَةً কোন অবান্তর বাক্য। (১২) فِيْهَا সেখানে আছে عَيْنٌ ঝরণা-সমূহ جَارِيَةٌ প্রবাহমান, (১৩) فِيْهَا তন্মধ্যে রয়েছে سُرُرٌ আসনসমূহ مَرْفُوْعَةٌ সমুচ্চ (১৪) وَاَكْوَابٌ এবং পান পাত্রসমূহ مَوْضُوْعَةٌ সুরক্ষিত (১৫) وَنَمَارِقُ এবং বালিশসমূহ مَصْفُوْفَةٌ সারি সারি; (১৬) وَزَرَابِيُّ এবং গালিচাসমূহ مَبْثُوْثَةٌ সম্প্রসারিত।

সরল অনুবাদ :

(১) তোমার কাছে কি আচ্ছন্নকারীর (কিয়ামতের) সংবাদ এসেছে? (২) সেদিন অনেক চেহারা ভীত-সন্ত্রস্ত হবে;১ (৩) কঠোর শ্রমরত ও বিপর্যস্ত;২ (৪) তারা প্রবেশ করবে জ্বলন্ত আগুনে;৩ (৫) তাদেরকে উত্তপ্ত ঝর্ণা হতে (পানি) পান করানো হবে; (৬) তাদের জন্য থাকবে না বিষাক্ত কাটাযুক্ত শুকনো খড় ব্যতীত কোন খাদ্য;৪ (৭) তা তাদেরকে পুষ্ট করবে না এবং তাদের ক্ষুধাও মেটাবে না। (৮) সেদিন অনেক মুখমন্ডল আনন্দোজ্জ্বল হবে, (৯) নিজেদের কর্মে সন্তুষ্ট হবে।৫ (১০) তারা উচ্চ মর্যাদার জান্নাতে অবস্থান করবে। (১১) সেখানে তারা অবান্তর বাক্য শুনবে না।৬ (১২) সেখানে আছে প্রবাহমান ঝরণাসমূহ, (১৩) তন্মধ্যে রয়েছে সমুচ্চ৭ আসনসমূহ (১৪) এবং সুরক্ষিত পান পাত্রসমূহ (১৫) ও সারি সারি বালিশসমূহ; (১৬) এবং সম্প্রসারিত গালিচাসমূহ।

টীকা :

[১] গাশিয়াহ বলে কিয়ামতকে বুঝানো হয়েছে। এটি কিয়ামতেরই একটি নাম। এর আক্ষরিক অনুবাদ হচ্ছে আচ্ছন্নকারী। অর্থাৎ যে বিপদটা সারা সৃষ্টিকুলকে আচ্ছন্ন করে ফেলবে। কিয়ামতে মুমিন ও কাফির আলাদা আলাদা বিভক্ত দু’দল হবে এবং মুখমন্ডল দ্বারা পৃথকভাবে পরিচিত হবে। এই আয়াতে কাফিরদের মুখমন্ডলের এক অবস্থা এই বর্ণিত হয়েছে যে, তা خَاشِعَةٌ অর্থাৎ হেয় হবে।

[২] দ্বিতীয় ও তৃতীয় অবস্থা হবে عَامِلَةٌ نَّاصِبَةٌ বাকপদ্ধতিতে অবিরাম কর্মের কারণে পরিশ্রান্ত ব্যক্তিকে عَامِلَةٌ এবং ক্লান্ত ও ক্লিষ্ট ব্যক্তিকে বলা হয় نَاصِبَةٌ । কোন কোন মুফাসসিরের মতে, কাফিরদের এ দুরাবস্থা দুনিয়াতেই হবে। কেননা অনেক কাফির দুনিয়াতে মুশরিকসুলভ ইবাদত এবং বাতিল পন্থায় অধ্যবসায় ও সাধনা করে থাকে। তারা আন্তরিকতা সহকারে আল্লাহ তা‘আলারই সন্তুষ্টির জন্য দুনিয়াতে ইবাদাত ও সাধনা করে থাকে এবং এতে অসাধারণ পরিশ্রম স্বীকার করে। কিন্তু এসব ইবাদাত মুশরিকসুলভ ও বাতিল পন্থায় হওয়ার কারণে আল্লাহর কাছে সওয়াব ও পুরস্কার লাভের যোগ্য হয় না। অতএব তাদের মুখমন্ডল দুনিয়াতেও ক্লান্ত-পরিশ্রান্ত রইল এবং আখেরাতে তাদেরকে লাঞ্ছনা ও অপমান আচ্ছন্ন করে রাখবে। খলীফা ওমর ফারুক (রাঃ) যখন শাম সফর করেন, তখন জনৈক নাসারা বৃদ্ধ পাদ্রী তাঁর কাছ দিয়ে যেতে দেখলেন। সে তাঁর ধর্মীয় ইবাদাত সাধনা ও মোজাহাদায় এত বেশি আত্মনিয়োগ করেছিল যে, অতিরিক্ত পরিশ্রমের কারণে চেহারা বিকৃত এবং দেহ শুঁকিয়ে কাঠ হয়ে গিয়েছিল। খলীফা তাকে দেখে অশ্রু সংবরণ করতে পারলেন না। ক্রন্দনের কারণ জিজ্ঞেসিত হলে তিনি বললেন, এই বৃদ্ধার করুণ অবস্থা দেখে আমি ক্রন্দন করতে বাধ্য হয়েছি। বেচারী স্বীয় লক্ষ্য অর্জনের জন্য জীবনভর পরিশ্রম ও সাধনা করেছে; কিন্তু সে তার লক্ষ্য অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারেনি। তারপর তিনি এ আয়াত তিলাওয়াত করলেন।

হাসান বসরী ও সাঈদ ইবনে জুবাইর (রহ.) বলেন, তারা যেহেতু দুনিয়াতে আল্লাহর জন্য কোন নেক আমল করেনি, সেহেতু সেখানে তারা জাহান্নামে কঠিন খাটুনি ও কষ্ট করবে। ফলে কষ্ট ও ক্লান্তি উভয়টিরই সম্মুখীন হবে।

[৩] حَامِيَةً শব্দের অর্থ গরম উত্তপ্ত। অগ্নি স্বভাবতই উত্তপ্ত। এর সাথে উত্তপ্ত বিশেষণ যুক্ত করা এ কথা বলার জন্য যে, এই অগ্নির উত্তাপ দুনিয়ার অগ্নির ন্যায় কোন সময় কম অথবা নিঃশেষ হয় না; বরং এটা চিরন্তন উত্তপ্ত। সে আগুন তাদেরকে সবদিক থেকে ঘিরে ধরবে।

[৪] ضَرِيْعٌ শব্দের অর্থ করা হয়েছে, কাটাযুক্ত গুল্ম। অর্থাৎ জাহান্নামীরা কোন খাদ্য পাবে না কেবল এক প্রকার কাটাবিশিষ্ট ঘাস ছাড়া। দুর্গন্ধযুক্ত বিষাক্ত কাটার কারণে জন্তু-জানোয়ারও এর ধারে কাছে যায় না। ইবনে আববাস (রাঃ) বলেন, ضَرِيْعٌ হচ্ছে জাহানণামের একটি গাছ- যা খেয়ে কেউ মোটা তাজা হবে না এবং এতে ক্ষুধা থেকেও মুক্তি পাওয়া যাবে না।

[৫] অর্থাৎ দুনিয়ায় তারা যেসব প্রচেষ্টা চালিয়ে ও কাজ করে এসেছে আখেরাতে তার চমৎকার ফল দেখে তারা আনন্দিত হবে।

৬] অর্থাৎ জান্নাতে জান্নাতীরা কোনো অসার কথাবার্তা শুনতে পাবে না। মিথ্যা, কুফরী কথাবার্তা, গালিগালাজ, অপবাদ ও পীড়াদায়ক কথাবার্তা সবই এর অন্তর্ভুক্ত।

[৭] এ উন্নত অবস্থা সার্বিক দিকেই হবে। এ সমস্ত শয্যা অবস্থান, মর্যাদা ও স্থান সবদিক থেকেই উন্নত। সাধারণত মানুষ এ ধরনের শয্যা পছন্দ করে থাকে। আল্লাহর বন্ধুরা যখন এ সমস্ত শয্যায় বসতে চাইবে, তখনি সেগুলো তাদের জন্য নিচু হয়ে আসবে।

আয়াত : ১৭-২৬

اَفَلَا يَنْظُرُوْنَ اِلَى الْاِبِلِ كَيْفَ خُلِقَتْ (১৭) وَاِلَى السَّمَآءِ كَيْفَ رُفِعَتْ (১৮) وَاِلَى الْجِبَالِ كَيْفَ نُصِبَتْ (১৯) وَاِلَى الْاَرْضِ كَيْفَ سُطِحَتْ (২০) فَذَكِّرْ اِنَّمَاۤ اَنْتَ مُذَكِّرٌ (২১) لَسْتَ عَلَيْهِمْ بِمُصَيْطِرٍ (২২) اِلَّا مَنْ تَوَلّٰى وَكَفَرَ (২৩) فَيُعَذِّبُهُ اللهُ الْعَذَابَ الْاَكْبَرَ (২৪) اِنَّ اِلَيْنَاۤ اِيَابَهُمْ (২৫) ثُمَّ اِنَّ عَلَيْنَا حِسَابَهُمْ (২৬)

শাব্দিক অনুবাদ :

(১৭) اَفَلَا يَنْظُرُوْنَ তবে কি তারা লক্ষ্য করে না اِلَى الْاِبِلِ উটের দিকে كَيْفَ কিভাবে خُلِقَتْ তাকে সৃষ্টি করা হয়েছে? (১৮) وَاِلَى السَّمَآءِ এবং আকাশের দিকে كَيْفَ কিভাবে رُفِعَتْ ওটাকে সমুচ্চ করা হয়েছে? (১৯) وَاِلَى الْجِبَالِ এবং পর্বতমালার দিকে كَيْفَ কিভাবে نُصِبَتْ ওটাকে বসানো হয়েছে? (২০) وَاِلَى الْاَرْضِ এবং জমিনের দিকে كَيْفَ কিভাবে سُطِحَتْ ওটাকে সমতল করা হয়েছে? (২১) فَذَكِّرْ অতএব তুমি উপদেশ দিতে থাকো, اِنَّمَا اَنْتَ নিশ্চয় তুমি مُذَكِّرٌ একজন উপদেশ দাতা। (২২) لَسْتَ তুমি নও عَلَيْهِمْ তাদের উপর بِمُصَيْطِرٍ যিম্মাদার। (২৩) اِلَّا তবে مَنْ যে ব্যক্তি تَوَلّٰى মুখ ফিরিয়ে নেয় وَكَفَرَ ও কুফরী করে (২৪) فَيُعَذِّبُهُ اللهُ আল্লাহ তাকে আযাব দেবেন اَلْعَذَابَ الْاَكْبَرَ কঠোর আযাব। (২৫) اِنَّ নিশ্চয় اِلَيْنَا আমারই নিকট اِيَابَهُمْ তাদের প্রত্যাবর্তন। (২৬) ثُمَّ অতঃপর اِنَّ নিশ্চয় عَلَيْنَا আমার উপরই حِسَابَهُمْ তাদের হিসাব-নিকাশ।

সরল অনুবাদ :

(১৭) তবে কি তারা উষ্ট্রপালের দিকে লক্ষ্য করে না যে, কীভাবে এদের সৃষ্টি করা হয়েছে? (১৮) এবং আকাশের দিকে (লক্ষ্য করে না) যে, কীভাবে ওটাকে সমুচ্চ করা হয়েছে? (১৯) এবং পর্বতমালার দিকে (লক্ষ্য করে না) যে, কীভাবে ওটাকে বসানো হয়েছে? (২০) এবং ভূ-তলের দিকে (লক্ষ্য করে না) যে, কীভাবে ওটাকে সমতল করা হয়েছে?৮ (২১) অতএব তুমি উপদেশ দিতে থাকো, তুমি তো একজন উপদেশদাতা মাত্র।৯ (২২) তুমি তাদের যিম্মাদার নও। (২৩) তবে যে ব্যক্তি মুখ ফিরিয়ে নেবে এবং কুফরী করবে, (২৪) আল্লাহ তাকে কঠোর শাস্তি প্রদান করবেন। (২৫) নিশ্চয় আমারই নিকট তাদের প্রত্যাবর্তন। (২৬) অতঃপর তাদের হিসাব-নিকাশ (নেয়ার দায়িত্ব) আমার উপরই।

টীকা :

[৮] কিয়ামতের অবস্থা এবং মুমিন ও কাফেরের প্রতিদান এবং শাস্তি বর্ণনা করার পর কিয়ামতে অবিশ্বাসী হঠকারীদের পথ প্রদর্শনের জন্য আল্লাহ তা‘আলা তাঁর কুদরতের কয়েকটি নিদর্শন সম্পর্কে চিন্তাভাবনা করার কথা বলেছেন। আল্লাহর কুদরতের নিদর্শন আকাশ ও পৃথিবীতে অসংখ্য। এখানে মরুচারী আরবদের অবস্থার সাথে সামঞ্জস্যশীল চারটি নিদর্শনের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। আরবরা উটে সওয়ার হয়ে দূর-দূরান্তে সফর করে। তখন তাদের সর্বাধিক নিকটে থাকে উট, উপরে আকাশ, নিচে ভূপৃষ্ঠ এবং অগ্র-পশ্চাতে সারি সারি পর্বতমালা। এই চারটি বস্তু সম্পর্কেই তাদেরকে চিন্তা-ভাবনা করার আদেশ দেয়া হয়েছে।

[৯] এখানে রাসূলুল্লাহ ﷺ এর সান্ত্বনার জন্য বলা হয়েছে, আপনার বর্ণিত ন্যায়সঙ্গত যুক্তি মানতে যদি কোন ব্যক্তি প্রস্তুত না হয়, তাহলে মানা না মানা তার ইচ্ছা। আপনি তাদের শাসক নন যে, তাদেরকে মুমিন করতেই হবে। আপনার কাজ শুধু প্রচার করা ও উপদেশ দেয়া। লোকদেরকে ভুল ও সঠিক এবং সত্য ও মিথ্যার পার্থক্য জানিয়ে দেয়া। তাদেরকে ভুল পথে চলার পরিণতি সম্পর্কে সতর্ক করা। কাজেই এ দায়িত্ব আপনি পালন করে যেতে থাকুন। এতটুকু করেই আপনি নিশ্চিন্ত থাকুন। তাদের হিসাব-নিকাশ, শাস্তি ও প্রতিদান আমার কাজ।

এ সূরার শিক্ষাসমূহ :

কিয়ামত নিশ্চয় সংঘটিত হবে এবং প্রতিফল দিবস কায়েম হবে।

কিয়ামতের অপর নাম আল-গাশিয়াহ বা আচ্ছাদনকারী।

আল্লাহর পথে আহবানকারীর দায়িত্ব পথ দেখিয়ে দেয়া।

মানুষের প্রত্যাবর্তন মহান আল্লাহর দিকে, তিনিই সকলের হিসাব নেবেন।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন