hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলামের উপর ৪০টি অভিযোগ এবং তার প্রমাণ ভিত্তিক জবাব

লেখকঃ ডা. জাকির নায়েক

১৩
প্রশ্ন-১২. পশু হত্যা অত্যাচারী কাজ তবে মুসলমানরা গোশত ভক্ষণ করে কেন অর্থাৎ পশু হত্যা করে কেন?
উত্তর : ভেজিটেরীন অর্থাৎ সবজি ভক্ষণ সারা পৃথিবীতে এক প্রকার আন্দোলনে রূপলাভ করেছে। কিছু লোক একে প্রাণীদের অধিকারের সাথে মিলায় এবং যথেষ্ট বড় সংখ্যক লোক গোশত এবং অন্য যাবতীয় অবৃক্ষীয় জিনিসকে খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করাকে প্রাণী অধিকারের বিপরীত বুঝে থাকেন। ইসলাম এসব প্রাণীর সঙ্গে উত্তম আচরণের নির্দেশ দান করে। এর সাথে ইসলামের একথাও আছে যে, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা পৃথিবীর বুকে সবজি এবং প্রাণী মানুষের কল্যাণের জন্য সৃষ্টি করেছেন।

তবে এ সীমা মানুষের জন্য রয়েছে যে, সে সকল কিছু নির্দিষ্ট পন্থায় ইনসাফের সাথে আল্লাহ তাআলার নিয়ামত ও আমানতকে বুঝে ব্যবহার করবে। আসুন আমরা এর দ্বিতীয় পন্থায় বুঝার চেষ্টা করি। একজন মুসলমান সবজি খেয়েও একজন উত্তম মুসলমান হতে পারেন। তার জন্য জরুরি নয় যে, সে গোশত ভক্ষণ করবে। কুরআনের আলোকে মুসলমানদের গোশত খাবার অনুমতি আছে। আল-কুরআনের ১৪ পারার ১৬ নং সূরার ৫ নং আয়াতে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন

অর্থ : তিনি চতুষ্পদ জন্তু সৃষ্টি করেছেন, তোমাদের জন্য ওতে শীতবস্ত্রের উপকরণসহ আরো অনেক ধরনের উপকার রয়েছে। তাদের কিছু অংশকে তোমরা আহারও করে থাকো। আরো আছে ১৮ পারার ২৩ নং সূরা মমিনুন-এর ২১ নং আয়াতে মহান রব ইরশাদ করেন

অর্থ : তোমাদের জন্য এই চতুষ্পদ জন্তুর মধ্যে শিক্ষণীয় বিষয় আছে তার পেটের মধ্যে যা কিছু আছে তার মধ্য থেকে তোমাদের (দুধ) পান করাই। তোমাদের জন্যে তাতে আরো অনেক উপকারিতা রয়েছে- তার গোশতও তোমরা খাও। অতৃণী খাবার (আমিষ জাতীয় খাবার) যেমন : ডিম, মাছ এবং গোশতের মধ্যে উত্তম পরিমাণে প্রোটিন রয়েছে। এর মধ্যে পূর্ণাঙ্গ প্রোটিন অর্থাৎ অতি প্রয়োজনীয় ৮ প্রকারের আময়েনভেস্ট আছে। যা আমাদের দেহ তৈরি করতে পারে না তা এখান থেকে অর্জন করতে হয়। গোশতের মধ্যে ফাওলাদ, ভিটামিন বি-ওয়ান এবং নিয়াসিন (Niacin)ও আছে। এছাড়াও যদি আপনি সবজি ভক্ষণকারী প্রাণী যেমন : গাভী, ভেড়া, বকরী ইত্যাদির দাঁত দেখেন তাহলে এদের আপনি দেখে হয়রান হবেন।

এ সকল প্রাণীর দাঁত চ্যাপ্টা যা সবজিজাতীয় খাবারের জন্য উত্তম এবং আপনি যদি গোশত ভক্ষণকারী প্রাণীদের দেখেন, যেমন : চিতাবাঘ, সিংহ, কুকুর ইত্যাদি, এদের দাঁত সুচালো যা গোশত ভক্ষণের জন্য উত্তম। যদি আপনি মানুষের দাঁত দেখেন তা ধারালো ও চ্যাপ্টা এ দু রকমের হয়। এজন্য এদের দাত গোশত ও সবজি উভয় প্রকার খাবার গ্রহণের মতো করে করা হয়েছে। অর্থাৎ এরা সব জিনিস খেতে পারবে। এখানে এ প্রশ্ন ওঠানো যেতে পারে যে, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা মানুষকে যদি সবজি ভোগী বানাবেন তাহলে এ সুচালো দাঁতগুলো কেন দিলেন? একথা অবশ্যই যে, তিনি জানতেন মানুষের দুই প্রকার খাবারের আবশ্যক রয়েছে। প্রাণীদের হজম প্রক্রিয়া শুধু পাতাযুক্ত খাবার হজম করে থাকে এবং মাংশাসী প্রাণীর হজম প্রক্রিয়া গোশতকে হজম করতে পারে। কিন্তু মানুষের হজম প্রক্রিয়া সবজি এবং গোশত এ উভয় প্রকার খাদ্য হজম করে থাকে।

যদি আল্লাহ চাইতেন আমরা শুধু সবজিভোজী হবো,তাহলে কেন আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা উভয় প্রকারের হজম প্রক্রিয়া দিলেন? অনেক হিন্দু এমন আছেন যারা সবজি ভক্ষণের ওপর অটুট থাকেন। তাদের ধারণা এই যে, আমিষ জাতীয় খাদ্য যেমন গোশত ইত্যাদি ভক্ষণ তাদের ধর্ম বিরোধী হবে। কিন্তু হিন্দুদের ধর্মীয় গ্রন্থে তাদের ধর্মের অনুসারীদের গোশতের অনুমতি প্রদান করে।

এগুলোর মধ্যে লেখা আছে যে, হিন্দু মুনি ঋষীরা গোশত ভক্ষণ করতেন। হিন্দুদের ধর্ম গ্রন্থ মনু স্মৃতির ৫ম অধ্যায়ের ২৩তম লাইনে বলা হয়েছেযে ব্যক্তি এ সকল প্রাণীর গোশত ভক্ষণ করে, যার গোশত ইচ্ছা এর মধ্যে কোনো খারাবি নেই। যদিও সে প্রতিদিন এরূপ করে, কেননা আল্লাহ কিছু জিনিস খাওয়ার জন্য তৈরি করেছেন, আর কিছুকে ঐ জিনিস খাওয়ার জন্যও সৃষ্টি করেছেন।

এরূপভাবে মনু স্মৃতির ৫ম অধ্যায় এর ৩৯ ও ৪০ লাইনে এটাও লেখা রয়েছে আল্লাহ কুরবানীর জানোয়ারগুলো স্বয়ং কুরবানীর জন্য সৃষ্টি করেছেন। সুতরাং কুরবানীর জন্য তাদের হত্যা করা, হত্যা করা (ধ্বংস করা) নয়। মহাভারত অনুশাসন প্রভা অধ্যায় নং ৮৮-তে ধর্মরাজ যুধিষ্ঠির ও পিতিম-এর মধ্যে কথোপকথনের উল্লেখ আছে যে, শরধার নিয়মে পেতরীকে কোনো খোরাক উপঢৌকন করা উচিত। যাতে এর কারণে নরদের শান্তি মিলে। যুধিষ্ঠির বলেনহে মহাশক্তি! আমি আমার বাপ-দাদাদের জন্য কী জিনিস দিতে পারি যা কখনো শেষ না হয়, সেটা কোন জিনিস যা সবসময় থাকে, সেটা কোনো জিনিস যা অমর হয়ে যায়।

ভীষণ উত্তর দিল, হে যুধিষ্ঠির শোন! উহা কোন জিনিস যেগুলো শরধা জান্তার নিকট এ ধরনের নিয়মের জন্য উপযোগী। হে মহারাজ! তার মধ্যে বীজ, চাল, যব, মাশকলাই, পানি এবং এ জাতীয় ফল হলো এমন বস্তু থাকবে। মাছ দিলে তাদের আত্মা দু'মাস পর্যন্ত শান্তিতে থাকবে, ভেড়ার গোশতে তিন মাস, খরগোশের গোশতে চার মাস, বকরীর গোশতে পাচ মাস, শূকরের গোশতে ছয় মাস, পাখিদের গোশতে সাত মাস, ডোরাকাটা হরিণের গোশতে আট মাস, কৃষ্ণসার হরিণের গোশতে নয় মাস, গাভীর গোশতে দশ মাস, মহিষের গোশতে এগারো মাস, নীল গাভীর গোশতে এক বছর। ঘি মেশানো পেঁয়াজও সে গ্রহণ করে। ধর্মীয় নাম (বড় মহিষ) এর গোশতে বারো মাস পর্যন্ত। গণ্ডারের গোশত যা চান্দ্র মাসের হিসেবে পরোক্ষ বর্ষার ওপর দেয়া হয় তা কখনো শেষ হবে না।

ক্লাসিক বুটি, কাঞ্চনের ফুল, পৈতা এবং লাল ছাগলের গোশতও দেয়া যাবে, তবে তাও কখনো শেষ হবে না। এজন্য এটা সম্পূর্ণ স্বাভাবিক কথা যে, যদি আপনি আপনার পূর্ব পুরুষদের আত্মার শান্তি করতে চান তাহলে লাল ছাগলের গোশত এ সুযোগে পেশ করুন। হিন্দুদের ধর্মীয় গ্রন্থে গোশত ভক্ষণ করতে নিষেধ করা হয় নি।

অনেক হিন্দু শুধু সবজি ও ডাল ইত্যাদি খায়। অপর ধর্মের প্রভাব থেকে গ্রহণ করেছেন, যার মধ্যে সর্বপ্রথম হলো জৈন মত। কিছু কিছু ধর্ম সবজি এবং ডালকে পরিপূর্ণ খাবার হিসেবে এজন্য গ্রহণ করেছেন যে, তা প্রাণী হত্যার বিপরীত ধর্ম। যদি কেউ প্রাণী হত্যা ব্যতীত জীবিত থাকতে পারে, তাহলে আমিই হব প্রথম সেই ব্যক্তি। কিন্তু এরূপ সম্ভব নয়। অতীতে লোকদের ধারণা এই ছিল যে, বৃক্ষ জীবনহীন। কিন্তু আজ এটা এক গ্রহণযোগ্য ও বিশ্বব্যাপী মত যে, বৃক্ষেরও জীবন আছে।

আজ এ ধরনের লোকদের কথাও হালকা হয়ে গেছে যারা সবজি ভক্ষণ করে এবং জীব হত্যা করে না, এজন্য যে, বৃক্ষ ও সবজি কাটা ও জীব হত্যা করা। একটি প্রমাণ এরূপ দেয়া হয় যে, বৃক্ষের অনুভূতি নেই। এজন্য বৃক্ষও সবজি কাটা প্রাণী হত্যার চেয়ে কম অপরাধ। কিন্তু আজ বিজ্ঞান আমাদের একথা বলে দিচ্ছে যে, বৃক্ষও কষ্ট অনুভব করে। তবে হ্যা তাদের চিৎকার ও কান্নার আওয়াজ মানুষ শুনতে পায় না।

মানব কর্ণ এদের আওয়াজ শুনতে পায় না। কারণ মানব কর্ণের শ্রুতি শক্তি ২০ ডিবি থেকে ২০ হাজার ডিবি পর্যন্ত। বৃক্ষের ডিবি এর বাইরে। যদি কোনো আওয়াজ এর চেয়ে কম হয় অথবা বেশি, তাহলে মানুষের কান তা শুনতে সক্ষম নয়। কুকুর ৪০ হাজার ডিবি পর্যন্ত আওয়াজ শুনতে পায়। যে শব্দের ডিবি ১০ হাজারের ওপরে এবং ৪০ হাজারের কম তা শুধু কুকুরই শুনতে পায়। মানুষ শোনে না। কুকুর নিজের মালিকের বাঁশির আওয়াজ শোনে এবং তার নিকট চলে আসে। একজন আমেরিকার বিজ্ঞানী গবেষণার পর এমন এক যন্ত্র আবিষ্কার করেছেন যে, যা দ্বারা

বৃক্ষের চিৎকারও এভাবে পরিবর্তন করতে পারে যে, মানুষ তা শুনতে পায়। এর দ্বারা এতে তৎক্ষণাৎ বার্তা পৌঁছে যায় যে, কখন বৃক্ষ পানির জন্য চিৎকার করছে। আধুনিক গবেষণায় এটাও প্রমাণিত হয়েছে যে, বৃক্ষ খুশি ও কষ্ট অনুভব করে এবং চলতেও পারে। একজন বিজ্ঞবান সবজিভোজীর সঙ্গে আমার বিতর্ক হলো। তিনি বললেন, আমি জানি বৃক্ষের জীবন আছে এবং কষ্টও অনুভব করে, কিন্তু বৃক্ষ প্রাণীর চেয়ে দুটি অনুভূতি কম রাখে, এজন্য বৃক্ষ হত্যা প্রাণী হত্যার চেয়ে কম অপরাধ। কিন্তু সাধারণ সমাজকে জিজ্ঞেস করি, ধরুন! আপনার একজন ভাই যে জন্ম থেকে বোবা ও বধির এবং তার দুটি অনুভূতি অন্য লোকের চেয়ে কম এবং যখন সে বড় হলো কেউ তাকে হত্যা করল। আপনি কি বিচারককে বলবেন যে, আপনি হন্তারককে শাস্তি কম দিন কারণ সে দু অনুভূতি কমকে হত্যা করেছে। না, বরং আপনি বিচারককে বলবেন যে, একে অধিক শাস্তি দিন কারণ আমার ভাই নির্দোষ ছিল। আল-কুরআনের ২ নং সূরা বাকারার ১৬৮ নং আয়াতে মহান রব ইরশাদ করেন

অর্থ : তোমরা খাও জমিনের বুকে যা হালাল ও পবিত্র তা থেকে। যদি দুনিয়ার সকল লোক নিরামিষভোজী হতো, তাহলে দুনিয়ায় প্রাণীর সংখ্যা সীমা ছাড়া বেশি হয়ে যেতো। কেননা এদের জন্ম ও বৃদ্ধি খুব দ্রুত হয়। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা বিজ্ঞতার সাথে নিজ সৃষ্টির মধ্যে এক বিশেষ ভারসাম্য রক্ষা করেছেন এবং এর মধ্যে কোনো হয়রান হবার কারণ নেই যে, তিনি আমাদেরকে প্রাণী ভক্ষণের অনুমতি প্রদান করেছেন। আমি তাকে খারাপ মনে করি না যিনি নিরামিষভোজী। পক্ষান্তরে যিনি আমিষ ভক্ষণ করতে প্রাণী হত্যা করেন তাকেও জালিম বা নির্দয় বলা যাবে না।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন