hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলামের উপর ৪০টি অভিযোগ এবং তার প্রমাণ ভিত্তিক জবাব

লেখকঃ ডা. জাকির নায়েক

২২
প্রশ্ন-২১. মুসলমানগণ আয়াতের মানসুখ হওয়ার ওপর বিশ্বাস রাখে। অর্থাৎ তাদের বিশ্বাস এই যে, কুরআনের কিছু প্রাথমিক আয়াত পরবর্তীতে অবতীর্ণ হওয়া আয়াতের দ্বারা মানসুখ (রহিত) করা হয়েছিল। এর দ্বারা কি এটা বুঝায় না যে, আল্লাহ (নাউযুবিল্লাহ) তাআলা ভুল করেছিলেন, পরবর্তীতে সেটা শুধরে নিয়েছেন?
উত্তর : আল-কুরআনের এ কথাকে এ আয়াতে বর্ণনা করা হয়েছে। যা ২ নং সূরা বাকারার ১০৬ নং আয়াতে। মহান রব ইরশাদ করেন

অর্থ : কিছু আয়াত যাকে আমি রহিত করি, একে আমি ভুলিয়ে দিই, তার স্থলে তার চেয়ে উত্তম অথবা তার সমমানের আয়াত নিয়ে আসি। আপনি কি জানেন না যে, আল্লাহ সকল কিছুর ওপর ক্ষমতাবান। আরবি শব্দ ‘আয়াত’ শব্দের অর্থ চিহ্ন, নিদর্শন, অথবা বাক্য এবং এর দ্বারা অহীও উদ্দেশ্য নেয়া হয়। এ আয়াতের তাশরী’ ও ‘পথ’ দ্বারা কী বুঝায়। প্রথমত, হলো এ সকল আয়াত যা রহিত হয়ে গেছে এর দ্বারা উদ্দেশ্য ঐ সকল অহী যা কুরআনের পূর্বে অবতীর্ণ হয়েছে। যেমন : তাওরাত, যাবুর এবং ইঞ্জিল-এর মূল আকৃতি যার পরিবর্তে অহী নাযিল করা হয়েছে।

এ আয়াতের উদ্দেশ্য হলো অতীতের অহীগুলো সম্পূর্ণ বাতিল হয়ে যায় নি বরং এর চেয়ে উত্তম কালাম তার পরিবর্তে দেয়া হয়েছে এবং এর দ্বারা একথা প্রতিষ্ঠিত হয় যে, তাওরাত, যাবুর এবং ইঞ্জিলের পরিবর্তে কুরআনে আজীম এসে গেছে। দ্বিতীয়ত, যদি আমরা এ আয়াতের আরবি শব্দ ‘আয়াত দ্বারা কুরআনের আয়াত বুঝি এবং পূর্ববর্তী কিতাবগুলোর অহী না বুঝানো হয়।

তাহলে এর এই অর্থ হবে যে, কুরআনের কোনো আয়াত ততক্ষণ পর্যন্ত মানসুখ হয় নি যতক্ষণ পর্যন্ত আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা তদুস্থলে তার চেয়ে উত্তম বা অনুরূপ আয়াত দ্বারা পরিবর্তন করেননি। এর দ্বারা একথা বলা যায় যে, কুরআনের কিছু আয়াত যা প্রথমে অবতীর্ণ হয়েছিল তা পরবর্তীতে অবতীর্ণ শক্ত আয়াত দ্বারা পরিবর্তন করা হয়েছিল। আমি এ উভয় পদ্ধতির সাথে একমত। কিছু মুসলিম এবং অমুসলিম দ্বিতীয় পদ্ধতির সাথে

এ ভুল উদ্দেশ্য বের করে যে, কুরআনের কিছু প্রাথমিক আয়াত মানসুখ করা হয়েছিল যা আজ আমাদের ওপর প্রয়োগ হতো না। এজন্য পরবর্তীতে অবতীর্ণ নাসিখ (রহিতকারী) আয়াতগুলোকে সে স্থানে নেয়া হয়েছে। এ দলের এ দৃষ্টিভঙ্গিও আছে যে, এ আয়াতগুলো পরস্পর বিপরীত। আমরা এর উত্তরও দিব। কিছু মুশরিক এ অভিযোগ করতো যে, মুহাম্মদ (সাঃ) কুরআন নিজে তৈরি করেছেন। আল্লাহ তাআলা এ আরব মুশরিকদের ১৭ নং সূরা বনী ইসরাঈলের ৮৮ নং আয়াতে চ্যালেঞ্জ দিয়েছেন

অর্থ : বলুন! যদি সকল জ্বীন ও ইনসান এ কুরআনের সমতুল্য কোনো কিতাব বানিয়ে আনার জন্য একত্র হয়, তাতেও তারা এ রূপ করে আনতে সক্ষম হবে না, যদি তারা পরস্পরের সাহায্যকারীও হয়। এরপর চ্যালেঞ্জকে আরো হালকা করে পেশ করা হয়েছে ১১ নং সূরা হুদ-এর ১৩ নং আয়াতে

অর্থ : তারা কি বলে মুহাম্মদ (সাঃ) কুরআন নিজে রচনা করে নিয়ে এসেছে। আপনি বলুন! তোমরা স্বরচিত মাত্র ১০টি সূরা তৈরি করে নিয়ে আসো, আর আল্লাহ ছাড়া যে সাহায্যকারী পাও তাকে ডাকো, যদি তোমরা সত্যবাদী হয়ে থাকো। আল্লাহ এ পরীক্ষা আরো সহজ করে ১০ নং সূরা ইউনূসের ৩৮ নং আয়াতে বলেছেন

অর্থ : তারা কি বলে, ইনি (মুহাম্মদ) এটি রচনা করে নিয়ে এসেছেন। আপনি বলুন, তোমরা এমন মাত্র ১টি সূরা রচনা করে নিয়ে আসে এবং আল্লাহ ছাড়া আর যে সাহায্যকারী পাও তাকে ডাক যদি তোমরা সত্যবাদী হয়ে থাকো। এরপর সবচেয়ে সহজ চ্যালেঞ্জ দিয়েছেন সূরা বাকারার ২৩ ও ২৪ নং আয়াতে

অর্থ : আমার বান্দার প্রতি আমি যে কিতাব নাযিল করেছি তার সত্যতার ব্যাপারে যদি তোমাদের কোনো সন্দেহ থাকে তাহলে যাও, সেই একটি সূরার মতো সূরা রচনা করে নিয়ে এসো। আল্লাহ ছাড়া তোমাদের যেসব বন্ধু-বান্ধব রয়েছে তাদেরকেও ডাকো, যদি তোমরা সত্যবাদী হও। যদি তোমরা না পারো আসলে কখনোই তোমরা তা পারবে না, তাহলে তোমরা ভয় কর সেই জাহান্নামকে যার ইন্ধন হচ্ছে মানুষ এবং পাথর, যা নির্ধারণ করা হয়েছে অস্বীকারকারীদের জন্য। এভাবে আল্লাহ তাআলা নিজ চ্যালেঞ্জকে খুবই সহজ করে দিয়েছেন। এরপর নাযিল হওয়া আয়াতের দ্বারা প্রথমে তো মুশরিকদের এ চ্যালেঞ্জ করা হয়েছিল যে, উহা ঐ কুরআন যার মতো কোনো কিতাব তৈরি করে দেখাও।

এরপর বলা হলো এর মাত্র দশটি সূরার অনুরূপ রচনা করে দেখাও এবং সর্বশেষ এ চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে যে, কুরআনের সূরাগুলোর যেকোনো একটির মতো রচনা করে দেখাও। এর অর্থ এটা কখনো সম্ভব নয়। সূরা বাকারার ২৩ ও ২৪ নং আয়াত প্রথম তিন আয়াতের বিপরীত এবং বিপরীত বলা হয় এমন দু’জিনিসের একত্রে উল্লেখ করা যা একত্রে থাকা সম্ভব নয়, এক সঙ্গে অস্তিত্বে আসা সম্ভব নয়। কুরআনে করীমের প্রথম অবতীর্ণ আয়াত যেগুলোকে মানসুখ' বলা হয় ঐগুলো। আল্লাহর কালামের অংশ এবং ঐগুলোতে বর্ণিত বিধানগুলো আজো সত্য। যেমন কুরআনের এ চ্যালেঞ্জ যে, রচনা করে নিয়ে এসো কুরআনের মতো একখানা গ্রন্থ, অথবা তার মাত্র ১০টি সূরার অনুরূপ সংস্করণ, অথবা মাত্র একটি ক্ষুদ্রতম সূরার অনুরূপ একটি সূরা।

এ চ্যালেঞ্জগুলো আজো বহাল আছে। পরবর্তী চ্যালেঞ্জ পূর্ববতী চ্যালেঞ্জের মোকাবিলায় সহজ, তবে বৈপরিত্য নেই। যদি শেষের চ্যালেঞ্জের জবাব দেবার যোগ্যতা না থাকে তাহলে বাকি চ্যালেঞ্জগুলোর জবাব দেবার তো কোনো প্রশ্নই ওঠে না। ধরুন, আমি এক ব্যাপারে বললাম, সে এমন মেধাহীন যে, স্কুলে মেট্রিক পাস করার যোগ্যতাও নেই। এরপর আমি এটা বলব যে, সে পঞ্চম শ্ৰেণীও পাস করবে না। এরপর আমি এটাও বলব যে সে, তো প্রথম শ্রেণী পাস করবে না। সর্বশেষ আমি একথাও বলব যে সে কে.জি.তেও পাস করতে পারবে না।

যেহেতু স্কুলে ভর্তি হওয়ার জন্য কে. জি, অর্থাৎ কিন্ডারগার্টেন পাস করা জরুরি। অন্য ভাষায় আমি একথা বলব যে, এ ব্যক্তি এমন মেধাহীন যে, সে কে,

জিও পাস করবে না। আমার চার পদ্ধতির কথা অন্য কথার বিপরীত নয়। যদি কোনো ছাত্র কে.জি. পাস না করে তবে সে প্রথম, পঞ্চম অথবা দশম শ্রেণি কীভাবে পাস করবে? এর তো প্রশ্নই আসবে না। এ সকল আয়াতের অধিক দৃষ্টান্ত ঐ সকল আয়াত দ্বারা দেয়া যায় যা নেশার নিষিদ্ধতার ব্যাপারে পর্যায়ক্রমে অবতীর্ণ হয়েছে। এ ধারাবাহিকতার প্রথম আয়াত ২ নং সূরা বাকারার, ২১৯ নং আয়াত

অর্থ : তারা আপনাকে মদ ও জুয়ার বিষয়ে প্রশ্ন করছে। বলুন, উভয়ের মধ্যে বিরাট গুনাহ ও মানুষের জন্য উপকারিতা রয়েছে। উভয়ের উপকারিতার চেয়ে গুনাহ অনেক বেশি। মাদক এবং অন্যান্য জিনিস সম্পর্কে পরবর্তী আয়াত ৪ নং সূরা নিসার ৪৩ নং আয়াতে মহান রব বলেন

অর্থ : হে ঈমানদার লোকেরা, তোমরা কখনো নেশাগ্রস্ত হয়ে নামাজের কাছে যেও না।

যতক্ষণ পর্যন্ত তোমরা যা কিছু বলো তা ঠিক ঠিক বুঝতে পারো। নেশাদ্রব্য সম্পর্কে সর্বশেষ অবতীর্ণ আয়াত ৫ নং সূরা মায়িদা, আয়াত নং ৯০ এ বলা হয়েছে

অর্থ : হে ঈমানদার লোকেরা! মদ, জুয়া, পূজার বেদী ও ভাগ্য নির্ণায়ক শর হচ্ছে ঘৃণিত শয়তানের কাজ। তোমরা তা সম্পূর্ণরূপে বর্জন কর। আশা করা যায় যে, তোমরা সফলকাম হবে। আল-কুরআন সাড়ে বাইশ বছর পর্যন্ত অবতীর্ণ হয় আর সমাজের প্রচুর সংশোধনী ধীরে ধীরে সংঘটিত হয়েছে। এজন্য যে, নতুন বিধানের ওপর লোকদের আমল করতে সুবিধা হয়, কেননা কোনো সমাজে এক সাথে পরিবর্তন বিরোধিতা ও বাড়াবাড়ির কারণ হয়।

মাদকদ্রব্যের অবৈধতা তিনটি স্তরে সংঘটিত হয়েছে। এ ব্যাপারে প্রথম অহীতে শুধু বলা হয়েছে, মাদকদ্রব্যের ব্যবহার বড় অপরাধ এবং তার মধ্যে কিছু উপকারিতাও রয়েছে তবে তার অপরাধই বেশি। এরপরের অহীতে নেশাগ্রস্ত অবস্থায় সালাত আদায় করতে নিষেধ করা হয়েছে। এ আয়াতে এ কথাও পরিষ্কার হলো যে, কাউকে মুসলমান হতে হলে, কিছু নেশাদ্রব্য তার জন্য নিষিদ্ধ এজন্য যে, মুসলমানের ওপর পাঁচ ওয়াক্ত সালাত ফরজ কর হয়েছে। এ আয়াতে এ কথা নেই যে, রাতে যদি কেউ সালাত না আদায় করে তাহলে নেশা করতে পারবে। এর অর্থ সে চাইলে নেশা করতেও পারে, না চাইলে নাও করতে পারে। এর পরে কুরআন শরীফে কোনো প্রকারের শিক্ষণীয় বিষয়ের চাপ নেই।

যদি এ আয়াতে এ কথা বলা হতো যে, যখন নামাজ না পড়বে তখন মদপান করবে, তাহলে এটা সরাসরি বৈপরীত্য হতো। মহান রাব্বল আলামীন বড়ই মাপা বাক্য ব্যবহার করেন। সর্বশেষ ৫ নং সূরা মায়িদার ৯০ নং আয়াতে সব সময়ের জন্য মাদক নিষিদ্ধ হয়ে যায়। এ দ্বারা এটা পরিষ্কার হয়ে যায় যে, এ আয়াতগুলো পরস্পর বিরোধী নয়। যদি এগুলোর মধ্যে বৈপরিত্য হতো তাহলে একই সঙ্গে এ সকলের ওপর আমল করা সম্ভব হতো না। সকল মুসলমানকে এ তাকীদ করা হয়েছে যে, সে আল-কুরআনের সকল আয়াতের ওপর বিশ্বাস স্থাপন করবে।

এ জন্য যখন সে সূরা মায়িদার ৯০ নং আয়াতের ওপর আমল করবে তখন সকল আয়াতের ওপর আমল করা হয়ে যাবে। ধরুন, আমি বললাম যে, আমি লজ এঞ্জেল্‌স-এ নেই, এরপর আমি বললাম যে, আমি ক্যালিফোর্নিয়াতেও নেই। সর্বশেষ বললাম যে, আমি ইউনাইটেড স্টেট অভ আমেরিকাতে নেই। একথা দ্বারা এটা বুঝায় না যে, এ তিন বক্তব্য পরস্পর বিরোধী। যেহেতু প্রত্যেক পরবর্তী কথা পূর্ববর্তী বক্তব্যের কার

বক্তব্যের ব্যাখ্যা বা অতিরিক্ত তথ্য প্রদান করে। অতএব যদি বলা হয় যে, আমি ইউনাইটেড স্টেটস অভ আমেরিকাতে নেই একথা নিজেই নিজেই প্রকাশ করে যে, আমি লজ এঞ্জেলস-এও নেই, ক্যালিফোর্নিয়াতেও নেই, এরূপভাবে যখন মদের পরিপূর্ণ নিষেধাজ্ঞা এসে গেল তখন নেশাগ্রস্ত অবস্থায় সালাত আদায়ের নিষেধাজ্ঞা এবং বড় গুনাহ থেকেও আত্মরক্ষা একবারেই হয়ে গেল।

আয়াতের মানসুখ হওয়ার দৃষ্টিভঙ্গি থেকে এ ফলাফল বের হলো যে, কুরআনে বৈপরীত্য নেই এজন্য যে, এক সময়ে কুরআনের সকল আয়াতের ওপর আমল করা সম্ভব নয়, যদি এর মধ্যে বৈপরীত্য হয় তাহলে এ আল্লাহর কালাম হতে পারে না। মহান রব ৫ নং পারা ৪ নং সূরা নিসার ৮২ নং আয়াতে ইরশাদ করেন

অর্থ : এরা কি কুরআন নিয়ে চিন্তা গবেষণা করে না? এ গ্রন্থ যদি আল্লাহ তাআলা ছাড়া অন্য কারো কাছ থেকে আসতো, তাহলে তাতে অবশ্যই তারা অনেক গরমিল দেখতে পেতো।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন