hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলামের উপর ৪০টি অভিযোগ এবং তার প্রমাণ ভিত্তিক জবাব

লেখকঃ ডা. জাকির নায়েক

২৫
প্রশ্ন-২৪. একথা কি ঠিক নয় যে, মুহাম্মদ (সাঃ) কুরআনকে বাইবেল থেকে নকল করেছেন?
উত্তর : অধিকাংশ সমালোচনাকারীরা এ কথা বলে যে, মুহাম্মদ (সাঃ) এ কুরআন নিজে লেখেন নি বরং সকল মানবীয় উৎস থেকে অথবা পূর্বের খোদা প্রদত্ত কিতাব থেকে নকল করেছেন। তারা এ ধরনের অভিযোগ করে। কিছু মুশরিকরা মুহাম্মদ (সাঃ) -এর ওপর এ অভিযোগ আরোপ করে যে, তিনি কুরআনকে মক্কার মুযাফাতে অবস্থানকারী এক রোমীয় ধর্মবিদের নিকট থেকে শিখেছিলেন, যিনি খ্রিস্টান ধর্মের সঙ্গে সম্পর্ক রাখতেন। মুহাম্মদ (সাঃ) বেশিরভাগ তার কাজ-কর্ম দেখতে যেতেন। কুরআনের একটি আয়াতই একথা মিথ্যা প্রমাণিত করার জন্য যথেষ্ট। ১৬ নং সূরা নাহল-এর ১০৩ নং আয়াতে মহান রব ইরশাদ করেন -

অর্থ : হে নবী! আমি ভালো করেই জানি যে, এরা বলে এ কুরআন তো একজন মানুষ এসে এ ব্যক্তিকে পড়িয়ে দিয়ে যায়, যে ব্যক্তিটির দিকে এরা ইঙ্গিত করে এর ভাষা আরবি নয়, আর কুরআন হচ্ছে বিশুদ্ধ আরবি ভাষা। ঐ ব্যক্তি যার নিজ ভাষা কোনো ভিনদেশী। যে আরবি বিশুদ্ধভাবে বলতে পারে না,

যে টোটা ফোটা আরবি বলতে পারে তিনি কীভাবে কুরআনের উৎস হতে পারেন যা বিশুদ্ধ, সুন্দর বর্ণনা, মিষ্ট ভাষা উচ্চতম আরবি ভাষায়। একথা বলা যে, মুহাম্মদ (সাঃ) কোনো বিদেশী থেকে কুরআন শিখেছেন এটা এমন যে, কোনো You জানাওয়ালা এক ব্যক্তি যে বিশুদ্ধভাবে ইংরেজি ভাষাও জানে না সে সেক্সপিয়ারকে লেখা-পড়া শিখিয়েছে। এটাও বলা হয় যে, মুহাম্মদ (সাঃ) খাদীজা রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহা-এর আত্মীয় ওরাকা বিন নওফেল থেকে এটা শিক্ষা লাভ করেছেন।

যেহেতু মুহাম্মদ (সাঃ)-এর সম্পর্ক ইহুদি ও খ্রিস্টান পন্ডিতদের সাথে যথেষ্ট সীমাবদ্ধ ছিল। মুহাম্মদ (সাঃ) যে খ্রিস্টানের সঙ্গে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ যোগাযোগ রাখতেন তিনি একজন প্রবীণ ব্যক্তি ওরাকা বিন নওফেল ছিলেন। যিনি মুহাম্মদ (সাঃ) এর প্রথমা স্ত্রী খাদীজা রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহা-এর চাচাতো ভাই ছিলেন। যদিও তিনি আরবি ভাষাভাষী তবুও তিনি নিজে খ্রিস্টীয় ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন এবং তিনি নতুন ধর্ম সম্পর্কে যথেষ্ট জ্ঞান রাখতেন। মুহাম্মদ (সাঃ) এর সাথে তাঁর দুবার সাক্ষাৎ ঘটে। প্রথম বার যখন ওরাকা বাইতুল্লায় ইবাদত করছিলেন, তখন তিনি মুহাব্বতের টানে মুহাম্মদ (সাঃ) এর কপালে চুম্বন খেয়েছিলেন। দ্বিতীয় বার যখন মুহাম্মদ (সাঃ) এর ওপর অহী অবতীর্ণ হওয়ার পরে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যান।

এর তিন বছর পর ওরাকার ইন্তিকাল ঘটে। অথচ কুরআনের অবতরণ প্রায় তেইশ বছর পর্যন্ত চলতে থাকে। এজন্য একথা বলা যায় যে, ওরাকা বিন নওফেল ওহীর কারণ সম্পূর্ণ হাস্যকর এবং মূল্যহীন। একথা সম্পূর্ণ সঠিক যে, মুহাম্মদ (সাঃ) এর সাথে ইহুদি ও খ্রিস্টানদের তর্ক-বিতর্ক হয়েছে কিন্তু এসব তো ওহী অবতীর্ণ হওয়ার তেরো বছরেরও অধিক পরে মদিনায় হয়েছে।

একথা বলা যায় যে, ইহুদি এবং খ্রিস্টানরা কুরআনের উৎস সম্পর্কে সম্পূর্ণ ভুল এবং বিরক্তকর অভিযোগ এসেছে এজন্য যে, মুহাম্মদ (সাঃ) ঐ সব বিতর্কে একজন শিক্ষক ও মুবাল্লিগের ভূমিকায় অংশগ্রহণ করতেন এবং তাদেরকে ইসলামের দিকে দাওয়াত দিতেন। তাদের বলতেন তাওহীদের জন্য তোমরা দ্বীনের দিকে ফিরে এসো। তাদের মধ্যে যথেষ্ট ইহুদি-খ্রিস্টান পরবর্তীতে ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন। এ পর্যন্ত সর্বতোভাবে ঐতিহাসিক সত্য এটাই যে, নবুওয়তের ঘোষণার আগে মুহাম্মদ (সাঃ) মাত্র তিনবার মক্কার বাইরে সফরে গিয়েছিলেন। নয় বছর বয়সে তিনি মদিনায় নিজ মাতার ঘর যাকে তখন ইয়াসরিব বলা হতো সেখানে গিয়েছিলেন। নয় বছর থেকে বারো বছর বয়সের মধ্যকালীন নিজ চাচা আবু তালিবের সঙ্গে

ব্যবসার উদ্দেশ্যে সিরিয়া সফর করেন। খাদীজা রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহা এর ব্যবসায়িক মালপত্র নিয়ে ২৫ বছর বয়সে সিরিয়া যান।

এ তিনটি সফরে ইহুদি-খ্রিস্টানদের সঙ্গে সাধারণ প্রকারের কথা-বার্তা ও সাক্ষাৎ হয়েছে। এর মাধ্যমে কুরআনের অস্তিত্বে যে কথা বলে আসলে এর মতো ভিত্তিহীন এবং অসম্ভব চিন্তা আর কী আছে। মুহাম্মদ (সাঃ) ইহুদি এবং খ্রিস্টানদের কাছ থেকে কখনোই কুরআন শেখেন নি। মুহাম্মদ (সাঃ) এর পূর্ণ জীবন একটি খোলা কিতাবের মতো এবং প্রকৃত ঘটনা এই যে, মুহাম্মদ (সাঃ) কে নিজ ঘরে পরবাসীর স্থান দেয়া হয়েছে। আল্লাহ তাআলা ৪৯ নং সূরা হুজুরাত এর ৪ ও ৫ নং আয়াতে বলেন

অর্থ : নিশ্চয়ই যারা আপনাকে কক্ষের পেছন থেকে ডাকে তাদের অধিকাংশই অনুধাবন করে না। যদি আপনি স্বেচ্ছায় বের হওয়া পর্যন্ত তারা ধৈর্যধারণ করতে তাহলে তাদের জন্য ভালো হতো। আল্লাহ ক্ষমাশীল ও দয়াময়। যদি মুহাম্মদ (সাঃ) ঐ লোকদের সঙ্গে মিলতেন কাফিরদের মতে যারা মুহাম্মদ (সাঃ) কে শেখাতেন, অহীর যে ধারা তাতে একথা বেশিদিন গোপন থাকতো না। কুরাইশদের অনেক স্বনামধন্য সরদার যারা মুহাম্মদ (সাঃ) কে অনুসরণ করে, ইসলাম কবুল করেছিলেন। তাদের মেধা এতোই তীক্ষ্ণ ও প্রখর ছিল যে, মুহাম্মদ (সাঃ) যে অহী পেশ করতেন তার মধ্যে যদি সন্দেহের অবকাশ থাকত, তাহলে সহজেই তারা চিনে ফেলতে পারতেন এবং এতে কোনো সামান্য সময়ের ব্যাপার ছিল না।

রাসূল -এর দাওয়াত ও আন্দোলন ২৩ বছর পর্যন্ত চলতে থাকে। এ দীর্ঘ সময়ের মধ্যে কারোরই সামান্য সময়ের জন্য সন্দেহ জাগে নি। রাসূল -এর এ দাওয়াতের বিরোধীরা সবসময় তার পেছনে লেগেছিল যে, মুহাম্মদ (সাঃ) কে মিথ্যা প্রমাণিত করবে কিন্তু তারা এ ব্যাপারে একটি সাক্ষ্যও পেশ করতে পারে নি যে, তিনি বিশেষ ইহুদি বা খ্রিস্টানদের সাথে গোপন সাক্ষাতে মিলিত হয়েছেন। এ কথারও ধারণা করা যায় না যে, কোনো ব্যক্তি একথা মেনে নিবে যে, সে কুরআনের মতো একটি গ্রন্থ বানাবে অথচ তার কৃতিত্ব নিজে নিবেন না। এজন্য যুক্তি এবং ঐতিহাসিকভাবে একথা মানা যায় না যে, কুরআন মানবসৃষ্ট। একথা বলা যে, মুহাম্মদ (সাঃ) নিজে কুরআন লিখেছেন অথবা অন্য কোনো উৎস থেকে নকল করেছেন। একথা ঐতিহাসিকভাবে এজন্য ভুল যে, মুহাম্মদ (সাঃ) একাডেমিক লেখা-পড়া জানতেন না। আল্লাহ সুবহানাহু স্বয়ং কুরআনে এ কথার সত্যায়ন করেছেন ২৯ নং সূরা আনকাবুতের ৪৮ নং আয়াতে

অর্থ : আপনি ইতিপূর্বে কোনো কিতাব পড়েন নি, আপনি নিজ হাতে লিপিবদ্ধও করেনি যে, বাতিলপন্থীরা সন্দেহ পোষণ করবে। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা একথা জানতেন যে, বহু লোক কুরআনের সত্যতা সম্পর্কে সন্দেহ করবে এবং তাকে মুহাম্মদ (সাঃ) এর সাথে সম্পৃক্ত করবে। এজন্য আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা তাঁর সার্বক্ষণিক প্রজ্ঞা দ্বারা এক নিরক্ষরকে তার সর্বশেষ নবী করে পাঠালেন যাতে বাতিল পূজারীদের মুহাম্মদ (সাঃ) এর ওপর সন্দেহের আদৌ কোনো অবকাশ না থাকে।

মুহাম্মদ (সাঃ) এর বিরোধীদের একথা বলা যায় না যে, তিনি অন্য উৎস থেকে কুরআনের বিষয় অর্জন করে একে সুন্দর আরবিতে রূপান্তর করে নিয়েছেন, মনে হয় একথার মধ্যে কিছু বিশেষত্ব বা তাৎপর্য হালকা রয়েছে। কিন্তু এ ধরনের আপত্তি এই অবিশ্বাসী ও সন্দেহ পোষণকারীদের ওপর উল্টে দেয়া হয়েছে। মহান রব ৭ নং সূরা আরাফ-এর ১৫৭ নং আয়াতে এ কথার সত্যায়ন করে বর্ণনা করেন

অর্থ : যারা এই বার্তাবাহক উম্মী নবীর অনুসরণ করে চলে, যার উল্লেখ তাদের (কিতাব) তাওরাত ও ইঞ্জিলেও তারা দেখতে পায়। উম্মী নবীর আগমনের বার্তা বাইবেলের ইয়াসইয়াহ পুস্তকের ২৯ নং অধ্যায়ের ১২ নং শ্লোকে উল্লেখ আছে : পুনরায় ঐ কিতাব তাকে দিব যিনি লেখা-পড়া জানেন না, তাকে বলা হবে পড়ো, তিনি বলবেন, আমি লেখা-পড়া জানি না। কুরআন শরীফে কমপক্ষে চার স্থানে এ কথার সত্যায়ন করা হয়েছে যে, মুহাম্মদ (সাঃ)

একাডেমিক লেখা-পড়া জানতেন না। এর উল্লেখ ৭ নং সূরা আরাফের ১৫৮ নং আয়াত, ৬২ নং সূরা জুমুয়ার ৬ নং আয়াতে বলা হয়েছে। মুহাম্মদ (সাঃ) এর সময়ে আরবিতে বাইবেল ছিল না। আহাদনামা আতীকের সর্বপ্রথম যে আরবি অনুবাদ তা পাদরি R. Saadeas Gaon ৯০০ খ্রিস্টাব্দে করেছেন। এ কাজ মুহাম্মদ (সাঃ)

এর ইন্তিকালের ২৫০ বছর পরের যখন নিউ টেস্টামেন্টের সর্বপ্রথম আরবি অনুবাদ আরপানিয়াস (Erpenius) রাসূল -এর বিদায়ের প্রায় এক হাজার বছর পর ১৬১৬ খ্রি. করেছেন। কুরআন এবং বাইবেলের একটি এমন বক্তব্যও নেই যা

দ্বারা বুঝা যায় যে, বাইবেল থেকে কুরআন নকল করা হয়েছে। মূলত এটা এ কথা প্রমাণ যে, এই উভয় কোন তৃতীয় শক্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত। সকল আসমানী সহীফার উৎস স্থল একটি সত্তা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা যিনি সকল সৃষ্টির প্রভু। ইহুদি ও খ্রিস্টানদের কিতাব এবং তার পূর্ববর্তী আসমানী ছহীফাগুলোতে মনুষ্য হস্তক্ষেপের কারণে কিছু অংশ তা থেকে সংরক্ষিত আছে এবং তা বেশিরভাগ ধর্মের সাথে মিল আছে। একথাও সঠিক যে, কুরআন এবং বাইবেলের মধ্যে কিছু বিষয়ের মিল আছে, কিন্তু এ ভিত্তিতে মুহাম্মদ (সাঃ) এর ওপর এ অভিযোগ আরোপের কোনো সুযোগ নেই যে, তিনি বাইবেল থেকে কিছু নকল করেছিলেন। অথবা এখান থেকে গ্রহণ করে কুরআনের বিন্যাস সাধন করেছেন।

যদি এ অভিযোগ সত্য হয় তাহলে এ অভিযোগ ইহুদি ও খ্রিস্টানদের ওপরও ফিরে আসে এবং ভুলের ওপর এ দাবিও করা যায় যে, ঈসা মসীহ আলাইহি সাল্লাম সত্য নবী ছিলেন না এবং তিনি ওল্ড টেস্টামেন্ট থেকে নকল করেছিলেন। কুরআন এবং বাইবেলে পাওয়া একটা কথাই সঠিক যে, মূলত এর উৎস এক, তাহলে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা।

এটা তাওহীদের পয়গামের ধারাবাহিকতা, এ সত্ত্বেও একথা বলার সুযোগ নেই যে, পরবর্তী নবিগণ পূর্ববর্তী নবিগণ থেকে নকল করেছেন। যদি কোনো ছাত্র পরীক্ষায় নকল করে তাহলে নিশ্চয়ই সে নিজ শিক্ষকের নিকট একথা লিখবে না যে, আমি আপনার কাছে বসে অমুক ছাত্রের কাছ থেকে নকল করেছি। যেহেতু মুহাম্মদ এ তাঁর পূর্ববর্তী সকল নবীর সম্মান ও তাদের বর্ণনা করেছেন এবং কুরআনেও একথা বলা হয়েছে যে, বিভিন্ন নবী ও রাসূলগণের ওপর আল্লাহ তাআলা ছহীফা নাযিল করেছেন।

আল্লাহ তাআলা কুরআনে প্রধান চার কিতাবের উল্লেখ করেছেন এবং মুসলমানগণ এ সব কিতাবের ওপর ঈমান রাখে। এগুলো হলোতাওরাত : মুসা আলাইহি সাল্লাম-এর ওপর অবতীর্ণ হয় যা তক্তার আকৃতিতে। যাবুর : দাউদ আলাইহি সাল্লাম-এর ওপর অবতীর্ণ হয়। ইঞ্জিল : ঈসা আলাইহি সাল্লাম -এর ওপর অবতীর্ণ হয়। কুরআন : সর্বশেষ কিতাব যা সর্বশেষ নবী মুহাম্মদ এর ওপর অবতীর্ণ হয়। সকল নবী এবং আল্লাহ প্রদত্ত সকল আসমানি কিতাবের ওপর ঈমান আনা প্রত্যেকটি মুসলমানের ওপর আবশ্যক।

কিন্তু বিদ্যমান বাইবেলের ওল্ড টেস্টামেন্টের পাঁচ কিতাবকে মুসা আলাইহি সাল্লাম-এর দিকে সম্পৃক্ত করা হয় এবং Psalms অথবা মামীর দাউদ আলাইহি সাল্লাম এর প্রতি সম্পৃক্ত করা হয়, এছাড়াও ওল্ড টেস্টামেন্টে এর চার ইঞ্জিল ও তাওরাত, যাবুরও ইঞ্জিল নয় যার উল্লেখ কুরআনে কারীমে করা হয়েছে। আজকের বাইবেলে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলার বাণী কিছু থাকতে

পারে। তবে নিশ্চিতরূপেই তা মূল অবস্থায় নেই। এটা সার্বিকভাবে নেই এবং এর মধ্যে নবীদের ওপর অবতীর্ণ হওয়া বাণীও নেই। কুরআন সব নবীর ওপর এক ধারার নির্ধারণ করে দিয়েছে এবং একথা বলে যে, এদের নবুওয়াতের একই উদ্দেশ্য ছিল এবং একই মৌলিক বাণী ছিল। এ ভিত্তির ওপর কুরআন এ কথাকে প্রমাণ করে যে, বড় বড় ধর্মের মৌলিক শিক্ষা পরস্পর বিরোধী নয়, যদিও নবীদের কালের অনেক পার্থক্য পাওয়া যায়। এর কারণ এই যে, এদের সকলের উৎস একই এবং তিনি আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা যিনি সকল জিনিসের ওপর ক্ষমতাবান। এজন্য কুরআন এটা বলে যে, বিভিন্ন ধর্মের মধ্যে যে পার্থক্য পাওয়া যায়, তার দায়িত্ব নবীদের ওপর বর্তায় না, বরং তার দায়িত্ব তাদের অনুসারীদের ওপর বর্তায়, যারা শিখিয়ে দেয়া এক অংশ ভুলে গিয়েছেলেন, এছাড়াও তারা আল্লাহর কিতাবে ভুল ধারণার সৃষ্টি করেছিল এবং এর মধ্যে পরিবর্তন সাধন করেছিল।

অতএব একথা কুরআন সম্পর্কে বলা যাবে না যে, এটা এমন কিতাব যা মূসা, ঈসা এবং অন্যান্য নবীর শিক্ষার মোকাবিলায় অবতীর্ণ হয়। এর বিপরীত এই কিতাব পূর্ববর্তী নবীদের পয়গামকে জোরদার ও সত্যায়ন করে এবং তাকে পরিপূর্ণ করে এবং তাকে পূর্ণতায় পৌছায় যা নিজ উম্মত দ্বারা করিয়েছেন। কুরআনের নাম ‘ফুরকান'। যার অর্থ সত্য-মিথ্যার মধ্যে প্রভেদ সৃষ্টিকারী দাড়ি বা মাপকাঠি। কুরআনের ভিত্তির ওপর আমরা এটা জানতে পারি পূর্বের আসমানী কিতাবগুলোর মধ্যে কোন কোন অংশ আল্লাহ তাআলার বাণী।

কুরআন এবং বাইবেলের ওপর অধ্যয়নের পর আপনারা এমন অনেক বিষয় পাবেন যাতে উভয়ের মধ্যে মিল দেখা যাবে। কিন্তু আপনি যখন এগুলোকে যাচাই করবেন তখন বুঝা যাবে যে তার মধ্যে যথেষ্ট পার্থক্য রয়েছে। শুধু ঐতিহাসিক দৃষ্টিকোণ থেকে এমন কোনো ব্যক্তির পক্ষে যিনি খ্রিস্টান ও ইসলাম এর কোনো শিক্ষার ওপর গভীর জ্ঞান রাখেন না, সেক্ষেত্রে ফয়সালা করা শক্ত সমস্যা হবে উভয় কিতাবের মধ্যে সঠিক কোনটা। হা আপনি যদি উভয়ের গ্রহণের বৈজ্ঞানিক জ্ঞানের পর পরখ করেন তবে আপনার কাছে পরিষ্কার হয়ে যাবে যে, মূল কোনটা। কয়েকটি উদাহরণ আপনার সামনে সত্যকে প্রকাশ করে দিবে। বাইবেলের সৃষ্টি কিতাবের প্রথম অধ্যায়ে একথা লেখা আছে যে, পৃথিবী সৃষ্টিতে ছয় দিন লেগেছে এবং প্রত্যেক দিন চব্বিশ ঘণ্টার ছিল। কুরআনেও একথা বলা হয়েছে যে, পৃথিবী ছয় দিনে (1)-এ সৃষ্টি করা হয়েছে, কিন্তু কুরআন অনুযায়ী এ

যুগ (বারো বছর) এর ওপর শামিল এবং অন্য কথায় এর দ্বারা এক ধারা বা এক দাওরা/চক্র অথবা এক যুগ। যা যথেষ্ট দীর্ঘকাল। যখন আল কুরআন বলে এ পৃথিবী ছয় দিনে সৃষ্টি হয়েছে এর দ্বারা উদ্দেশ্য আসমানসমূহ এবং জমিনকে ছয়টি দীর্ঘ চক্কর বা যুগে সৃষ্টি করা হয়েছে। বিজ্ঞানীদের একথার ওপর কোন অভিযোগ নেই। সৃষ্টি জগৎ তৈরিতে বহু বছর লাগে এবং একথা বাইবেলের চিন্তার বিপরীত। যাতে বলা হয়েছে সৃষ্টিজগত মাত্র ছয় দিনে তৈরি হয়েছে বা অস্তিত্বে এসেছে যে দিন মাত্র ২৪ ঘন্টায়। বাইবেলের সৃষ্টি কিতাবে একথা লেখা আছে যে, আলো, দিন এবং রাত সৃষ্টি জগতের প্রথম দিনে তৈরি করেছেন।

আল্লাহ সবার আগে জমিন ও আসমান সৃষ্টি করেছেন, জমিন বিরান ও শূন্য ছিল, তার উপরে অন্ধকার ছিল এবং আল্লাহর রূহ পানির ওপর ছিল এবং আল্লাহ বললেন, আলো হয়ে যাও এবং আলো হয়ে যায় এবং আল্লাহ দেখলেন আলো সুন্দর হয়েছে এবং আল্লাহ আলোকে অন্ধকার থেকে পৃথক করলেন, আল্লাহ আলোকে দিন ও অন্ধকারকে রাত করলেন, সন্ধ্যা হলো এবং ভোর হলো এরূপে প্রথম দিন শুরু হলো। আধুনিক বিজ্ঞান এ কথা বলে যে, সৃষ্টি জগতের ঘূর্ণনের যে আলো যা তারকাগুলোর মধ্যে এক প্রকারের পেচাননা প্রকারের আলোকের কারণে ছিল।

যেহেতু বাইবেল বলে যে, সূর্য, চাঁদ এবং তারকাগুলোর জন্ম চতুর্থ দিনে হয়। আল্লাহ দুটি বড় বড় আলোদানকারী সৃষ্টি করেন। এক হলো বড় যে দিনের ওপর হুকুম চালায়, অন্য হলো ছোট যে রাতের ওপর হুকুম চালায় এবং তিনি তারকাগুলোকে সৃষ্টি করেন এবং এদের আসমানের ওপর রাখেন, যাতে এগুলো জমিনের ওপর আলো ফেলতে পারে। রাত ও দিনের ওপর হুকুম চালায় এবং আলোকে অন্ধকার থেকে পৃথক করে এবং আল্লাহ দেখলেন যে সুন্দর সকাল শুরু হলো এবং সন্ধ্যা হলো, ভোর হলো এভাবে চতুর্থ দিন হলো।

এটা যুক্তি বিরোধী যে, আলো দানকারী সূর্য তিন দিন পর সৃষ্টি হলো এবং দিন রাতের ধারাবাহিকতা যা সূর্যের আলোর কারণে হয়, প্রথমে দিন সৃষ্টি করলেন আরো এই যে, দিনের অঙ্গ অর্থাৎ ভোর ও সন্ধ্যার ধারাবাহিকতা সূর্যের পূর্বে জমিনের ঘূর্ণনের পরে সম্ভব, কিন্তু বাইবেলের বক্তব্য অনুযায়ী সূর্যের সৃষ্টির তিন দিন পূর্বে ভোর ও সন্ধ্যার সৃষ্টি হয়েছিল। অপরদিকে আল-কুরআনে সৃষ্টি জগতের সৃষ্টির মধ্যে কোনো অবৈজ্ঞানিক কালের বিন্যাসের বর্ণনা নেই। এজন্য একথা বলা হয় যে, মুহাম্মদ (সাঃ) এ বিষয়ে বাইবেল থেকে কিছু নকল করেছিলেন, বরং এ ধরনের অযৌক্তিক, আশ্চর্য ও দূর সম্পর্কের বক্তব্য প্রদান করা সম্পূর্ণ ভুল ও হাস্যকর।

বাইবেল একথা বলে যে, সূর্য ও চন্দ্র উভয়ে আলো বের করে, যেমন সৃষ্টি কিতাবের পরের বরাতে একথা প্রমাণিত এবং সেখানে বড় আলো দানকারী ও ছোট আলো দানকারী হিসেবে বলা হয়েছে। কিন্তু আধুনিক বিজ্ঞান অনুযায়ী চাদের নিজের কোন আলো নেই। সে শুধু সূর্যের আলোকে প্রতিফলিত করে। একথা আল কুরআনে সত্য বলে প্রমাণ করে।

যে চাঁদ (মুনীর) অর্থ আলোকে প্রতিবিম্বকারী এবং সে যে আলো দেয় তা প্রতিবিম্ব দ্বারা আসে। এটা বুঝা তো অনেক দূরের কথা যে, মুহাম্মদ (সাঃ) বাইবেলের এ বিজ্ঞানের ভুলকে সংশোধন করে কুরআনের ইবারতে অন্তর্ভুক্ত করেছেন। বাইবেলের সৃষ্টি কিতাবের ১ অধ্যায়ের ১১ থেকে ১৩ নং শ্লোকে রয়েছে যে, সবজি, খবীস, বীজ বহনকারী গাছ এবং ফলদায়ক বৃক্ষ তৃতীয় দিনে সৃষ্টি হয়েছিল এবং ঐ অধ্যায়ে ১৪ থেকে ১৯ নং শ্লোকে বলা হয়েছে যে, সূর্যকে চতুর্থ দিনে সৃষ্টি করা হয়েছিল। বিজ্ঞানের নীতি অনুযায়ী এটা কীভাবে সম্ভব যে, সূর্যের উত্তাপ ব্যতীত গাছপালা জন্ম লাভ করল? বাইবেলে যেভাবে বলা হয়েছে। অভিযোগ উত্থাপনকারী অমুসলিমদের কথা অনুযায়ী যদি মুহাম্মদ (সাঃ) বাস্তবে কুরআনের লেখক হতেন এবং তিনি যদি বাইবেল থেকে কিছু বিষয় নকল করতেন তাহলে এটা কীভাবে সম্ভব হলো যে, তিনি অবৈজ্ঞানিক অংশ বাদ দিলেন?

এবং কুরআনে এমন কোনো কথাই নেই যা বিজ্ঞানের সত্য বিরোধী। বাইবেলে বর্ণনা করা হয়েছে যে, ঈসা আলাইহি সাল্লাম থেকে ইবরাহীম আলাইহি সাল্লাম পর্যন্ত যেসব এ জমিনের প্রথম মানব আদম আলাইহি সাল্লাম পর্যন্ত বর্ণনাকৃত বংশধারা অনুযায়ী আদম আলাইহি সাল্লাম আজ থেকে ৫৮০০ বছর পূর্বে পৃথিবীতে প্রেরিত হয়েছিলেন। তাঁর এবং ইবরাহীম আলাইহি সাল্লাম এর মাঝে ১৯৪৮ বছরের পার্থক্য। ইবরাহীম এবং ঈসা আলাইহি সাল্লাম এর মাঝে প্রায় ১৮০০ বছরের ব্যবধান এবং ঈসা আলাইহি সাল্লাম থেকে আজ পর্যন্ত ২০০০ বছরের ব্যবধান।

এ সময়ের রাজ ইহুদি ক্যালেন্ডারও প্রায় ৫৮০০ বছরের পুরাতন যার শুরু সৃষ্টির শুরু থেকে। পুরাতন চিহ্ন এবং Anthropology-এর ভিত্তির ওপর বলা হয় যে, প্রথম মানব যখন পৃথিবীতে পা রাখেন তিনি আজ থেকে দশ হাজার বছর পূর্বে জন্ম নিয়েছিলেন। আল কুরআন মোতাবেকও যিনি পৃথিবীতে প্রথম পা রাখেন আদম আলাইহি সাল্লাম-ও (তখন এসেছিলেন) কিন্তু বাইবেলের বিপরীত এতে কোনো তারিখ বর্ণনা করা হয় নি এবং একথা বর্ণনা করে না যে, তিনি পৃথিবীতে কত দৈর্ঘ্য পর্যন্ত ছিলেন।

বাইবেলের বর্ণিত বিষয়াবলি বৈজ্ঞানিক বিষয়াবলির সম্পূর্ণ বিপরীত। বাইবেলের সৃষ্টি কিতাবের ৬, ৭ ও ৮ অধ্যায়ে বলা হয়েছে যে, নূহ আলাইহি সাল্লাম-এর প্লাবন বিশ্বব্যাপী ছিল যা জমিনে থাকা সকল জীবন্ত জিনিসকে শেষ করে দিয়েছিল, তারা ব্যতীত যারা নূহ আলাইহি সাল্লাম-এর কিশতিতে বা নৌকায় আরোহণ করেছিলেন। তা মানুষ বা প্রাণী যাই হোক না কেন পা বিশিষ্ট প্রাণী বা পা বিশিষ্ট পাখি, সব খতম হয়ে গিয়েছিল, শুধু নূহ আলাইহি সাল্লাম-এর আরোহীরা জীবিত থাকে। বাইবেলের বর্ণনা মোতাবেক এ ইঙ্গিত পাওয়া যায় যে, এ ঘটনা আদম আলাইহি সাল্লাম-এর জন্মের ১৬৫৬ সাল পরে অথবা ইবরাহীম আলাইহি সাল্লাম-এর জন্মের ২৯২ বছর পূর্বে যখন নূহ আলাইহি সাল্লাম-এর বয়স

২০০ বছর ছিল। অর্থাৎ এ প্লাবন ঈসা আলাইহি সাল্লাম-এর ২১ অথবা ২২ শতক পূর্বে হয়েছিল। বাইবেলের বর্ণিত ঘটনা অতীত ঐতিহ্যের ওপর ভিত্তি করে বৈজ্ঞানিক সাক্ষ্য প্রমাণের বিপরীত। যাতে এ কথা প্রমাণিত যে, এ সকল শতকে মিশরের ১১তম রাজবংশ ও ব্যাবিলনের ২য় রাজবংশ, কোনরূপ বাধা-বিঘ্ন ছাড়াই চলছিল। এ ধরনের প্লাবন সেখানে হয় নি। বাইবেলে বর্ণিত বিশ্বব্যাপী প্লাবনের তথ্যের বিপরীতে কুরআনে নূহ আলাইহি সাল্লাম-এর প্লাবনের ব্যাপারে যে ঘটনা বলা হয়েছে তা বৈজ্ঞানিক তথ্য ও প্রত্নতত্ত্বের বিপরীত নয়। ১. আল কুরআন এ ঘটনার ব্যাপারে কোন নির্দিষ্ট তারিখ বা বছর উল্লেখ করে নি। ২. আল কুরআনের বর্ণনা অনুযায়ী এ প্লাবন বিশ্বব্যাপী ছিল না। যার দরুন সকল

প্রকারের প্রাণ শেষ হয়ে গিয়েছিল। এ জন্য একথা বলা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক যে, এ প্লাবনের ঘটনা মুহাম্মদ (সাঃ) বাইবেল থেকে গ্রহণ করেছিলেন এবং এ

ঘটনাকে কুরআনে বর্ণনা করার সময় ভুলগুলোও সংশোধন করে নিয়েছিলেন। আল কুরআন এবং বাইবেলে মূসা আলাইহি সাল্লাম এবং ফিরাউনের যে ঘটনাবলি বর্ণনা করা হয়েছে। প্রথমের সাথে দ্বিতীয়টির বহু মিল রয়েছে। উভয় কিতাবের এ কথা পর্যন্ত মিল রয়েছে যে, ফিরআউন মূসা আলাইহি সাল্লাম-এর পেছনে অনুসরণ করে এবং মূসা আলাইহি সাল্লাম এরপর রাস্তা পার হবার চেষ্টা করার সময় ডুবে যায় এবং মূসা আলাইহি সাল্লাম বনী ইসরাঈল লোকদের সাথে পার হয়ে যান। আল-কুরআনের ১০ নং সূরা ইউনূসের ৯২ নং আয়াতে এ ব্যাপারে বলা হয়েছে যে

অর্থ : আজ আমি শুধু তোমার লাশকেই বাঁচিয়ে রাখবো যাতে তুমি (লাশ) তোমার পরবর্তীদের জন্য শিক্ষণীয় হয়ে থাকতে পারো। ড. মরিস বুকাইলির পরিপূর্ণ বিশ্লেষণের পর একথা প্রমাণ করেছেন যে, ফিরআউন দ্বিতীয় রামসীস এজন্য প্রসিদ্ধ ছিলেন, সে বাইবেল অনুযায়ী বনী ইসরাঈলের ওপর জুলুম করেছে, কিন্তু মূলত সে ঐ সময় খতম হয়ে যায় যখন মূসা আলাইহি সাল্লাম মাদইয়ানে আশ্রয় নেন।

দ্বিতীয় রামসীসের পুত্র মুনফাহের স্থলাভিষিক্ত হয় এবং সে ইহুদিদের মিসর থেকে বের হওয়ার সময় বাহীরা কলমে ডুবে যায়। ১৮৯৮ খ্রি. মিসরের ওয়াদী মুলুকে মুনফাতাহের লাশের প্রদর্শনী হয়। ১৯৭৫ সালে ডা. মরিস বুকাইলি সকল বিজ্ঞবানদের সঙ্গে মিলে এর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার অনুমতি প্রাপ্ত হন। এর যে ফলাফল তিনি লাভ করেন তা থেকে প্রমাণিত হয় যে, মুনফাতাহ ডোবা অথবা কঠিন আঘাতে মৃত্যুবরণ করে, যা তার ওপরে মৃত্যুর কিছু আগে ঘটে। এজন্য এটা কুরআনের আয়াতের অনেক বড় অবদান যে, আমি শিক্ষার

জন্য তার লাশকে রক্ষা করব। ফিরআউনের লাশ পাওয়ায় প্রমাণিত হয়, যে লাশ আজ মিসরের জাদুঘর কায়রোতে আছে। এ কুরআনের আয়াত ড. মরিস বুকাইলিকে, যিনি তখন খ্রিস্টান ছিলেন, কুরআন অধ্যয়ন করতে বাধ্য করে। পরবর্তীতে তিনি বাইবেল, কুরআন বিজ্ঞান’ এ শিরোনামে কিতাব লেখেন এবং এ কথাকে স্বীকার করেন যে, কুরআন আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো কিতাব নয়। ড. বুকাইলি পরবর্তীতে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন। এ সকল দলিল এ কথাকে প্রমাণ করার জন্য যথেষ্ট যে, কুরআন বাইবেল থেকে নকল করা হয় নি। বরং কুরআন তো ফুরকান' অর্থাৎ এ দাঁড়িপাল্লা যা দ্বারা হক ও বাতিলের মধ্যে পার্থক্য করা যাবে। এ দ্বারা এ উপকারিতা অর্জন করা যাবে যে, বাইবেলে কোনো কোন অংশ আল্লাহর বাণী তা চিহ্নিত করা যাবে। কুরআন স্বয়ং একথার সাক্ষ্য দিচ্ছে। ৩২ নং সূরা সাজদা ১ থেকে ৩ নং আয়াতে

অর্থ : আলিফ-লাম-মীম। সৃষ্টিকুলের মালিক আল্লাহ তাআলার কাছ থেকেই এই কিতাবের অবতরণ, এতে বিন্দুমাত্র সন্দেহ নেই। তারা কি একথা বলতে চায় যে, এ কিতাব সে ব্যক্তি রচনা করে নিয়েছে (না) বরং এ হচ্ছে তোমার প্রভুর নিকট থেকে সত্য (অবতারিত) যাতে এর দ্বারা তুমি এক জাতিকে ভীতি প্রদর্শন কর যাদের প্রতি তোমার পূর্বে কোনো ভীতি প্রদর্শনকারী আসে নি। আশা করা যায় তারা হেদায়েত লাভ করতে পারবে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন