hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

সুন্নাত ও বিদয়াত

লেখকঃ মওলানা মুহাম্মাদ আবদুর রহীম (র.)

১০
বিদয়াতের তাৎপর্য্
এই সুন্নাতের বিপরীত যা তা-ই হচ্ছে বিদয়াত। বিদয়াত কাকে বলে? সাইয়েদ জামালউদ্দীন আল কাসেমী লিখেছেনঃ বিদয়াত বলতে বোঝায় দ্বীন পূর্ণ পরিণত হওয়ার পর দ্বীনের মধ্যে কোনো নতুন জিনিসের উদ্ভব হওয়া। আর তা হচ্ছে এমন সব জিনিস যার অস্তিত্ব নবী করীম(স) এর যুগে বাস্তব কাজ, কথা বা সমর্থন অনুমোদনের আকারেও বর্তমান ছিলনা এবং শরীয়তের নিয়ম বিধানের দৃষ্টিতেও যে বিষয়ে কোনো অনুমতি পাওয়া যায়না। আর অস্বীকৃতিও পাওয়া যায়না।

এ সংজ্ঞার দৃষ্টিতে যার অস্তিত্ব সাহাবায়ে কিরামের যুগের কথা, কাজ বা অনুমতি পর্য়ায়ে কোনো ইজমা হওয়ারও সন্ধান পাওয়া যায়না, তাও বিদয়াত।

কেননা দ্বীনে কোনো নতুন জিনিস উদ্ভব করার অধিকারই কারো থাকতে পারেনা। বস্তুত দ্বীন পূর্ণ হয়ে যাওয়ার পর তাতে কোনো জিনিসের বৃদ্ধি করা বা কোনো নতুন জিনিসকে দ্বীন মনে করে তদনুযায়ী আমল করা-আমল করলে সওয়াব হবে বলে মনে করা এবং আমল না করলে আল্লাহর আজাব হবে বলে ভয় করাই হচ্ছে বিদয়াতের মূল কথা। যে বিষয়েই এরূপ অবস্থা হবে, তা-ই হচ্ছে বিদয়াত। কেননা, এরূপ করা হলে স্পষ্ট মনে হয় যে, তা পূর্ণ নয়, অপূর্ণ এবং তাতে অনেক কিছুরই অভাব ও অপূর্ণতা রয়েছে। আর এই ভাবধারাটা কুরআনের নিম্নোক্ত ঘোষণার সম্পূর্ণ পরিপন্থী।

কুরআন মজীদে দ্বীন ইসলাম সম্পর্কে আল্লাহপাক ঘোষণা করেছেনঃ

(আরবি)

আজকের দিনে তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীনকে পূর্ণ পরিণত করে দিলাম, তোমাদের প্রতি আমাদের নিয়ামতকে সম্যকভাবে সম্পূর্ণ করলাম এবং তোমাদের জন্য ইসলামকে দ্বীন হিসেবে পছন্দ করলাম-মনোনীত করলাম।

এ আয়াত থেকে অকাট্যভাবে প্রমাণিত হয় যে, দ্বীন ইসলাম পরিপূর্ণ। এতে নেই কোনো অসম্পূর্ণতা, কোনো কিছুর অভাব। অতএব তা মানুষের জন্য চিরকালের যাবতীয় দ্বীনি প্রয়োজন পূরণে পূর্ণমাত্রায় সক্ষম এবং এ দ্বীনে বিশ্বাসী ও এর অনুসরণকারীদের কোন প্রয়োজন হবেনা এ দ্বীন ছাড়া অন্য কোনো দিকে তাকাবার, বাইরের কোনো কিছু এতে শামিল করার এবং এর ভিতর থেকে কোনো কিছু গ্রহণ করার। কেননা এতে যেমন মানুষের সব মৌলিক প্রয়োজন পূরণের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে, তেমনি নেই এতে কোনো বাজে-অপ্রয়োজনীয় বা বাহুল্য জিনিস। অতএব না তাতে কোনো জিনিস বৃদ্ধি করা যেতে পারে, না পারা যায় তা থেকে কোনো কিছু বাদ দিতে। এ দুটোই দ্বীনের পরিপূর্ণতার বিপরীত এবং আল্লাহর উপরোক্ত ঘোষণার স্পষ্ট বিরোধী। ইসলামী ইবাদতের ক্ষেত্রে সওয়াবের কাজ বলে এমন সব অনুষ্ঠানের উদ্ভাবন করা, যা নবী করীম(স) ও সাহাবায়ে কিরামের জামানায় চালু হয়নি এবং তা দেখতে যতই চাকচিক্যময় হোকনা কেন তা স্পষ্টত বিদয়াত তা দ্বীন-ইসলামের পরিপূর্ণতার-কুরআনী ঘোষণার সম্পূর্ণ পরিপন্থী। তা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের মনোপুত ছিলনা, পছন্দসই ছিলনা বলেই তা সেকালে চালু করা হয়নি। এ কারণেই ইমাম মালিক বলেছিলেনঃ সেকালে যে কাজ দ্বীনী কাজ বলে ঘোষিত ও নির্দিষ্ট হয়নি, আজও তাকে দ্বীনী কাজ বলে মনে করা যেতে পারেনা।

দ্বীনের ক্ষেত্রে বিদয়াতের প্রচলনে মূল দ্বীনেরই বিকৃত ও নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়ার কারণ নিহিত রয়েছে। ইবাদতের কাজ কর্মে যদি আজ মনগড়া নিয়ম, শর্ত ও অনুষ্ঠানাদিকে বরদাশত করে নেয়া হয়, তাহলে তাতে নতুন নতুন জিনিস এত বেশি শামিল হয়ে যাবে যে, পরে কোনটি আসল এবং নবী করীম(স) প্রবর্তিত আর কোনটি নকল-পরবর্তীকালের লোকদের শামিল করা জিনিস, তা নির্দিষ্ট করাই সম্ভব হবেনা। অতীতকালের নবীর উম্মতদের দ্বারা নবীর উপস্থাপিত দ্বীন বিকৃত ও বিলীন হয়ে যাওয়ারও একমাত্র কারণও এই। তারা নবীর প্রবর্তিত ইবাদতে মনগড়া নতুন জিনিস শামিল করে নিয়েছিল। কিছুকাল পরে আসল দ্বীন কি, তা বুঝবার আর কোনো উপায়ই রইলোনা।

দ্বীনতো আল্লাহর দেয়া আর রাসূলের উপস্থাপিত জিনিস। তাতে যখন কেউ নতুন কিছু শামিল করে, তখন তার অর্থ এই হয় যে, আল্লাহ বা রাসূলে করীম(স) যেন বুঝতেই পারছিলেননা দ্বীন কিরূপ হওয়া উচিত আর এরা এখন বুঝতে পারছে (নাউজুবিল্লাহ)। তাই নিজেদের বুঝমত সব নতুন জিনিস এতে শামিল করে এর ত্রুটি দূর করতে চাইছে এবং অসম্পূর্ণতাকে সম্পূর্ণ করে তুলছে। আর এর ভেতর থেকে কিছু বাদ সাদ দিয়ে একে যুগোপযোগী করে তুলতে চাইছে। এরূপ কিছু করার অধিকার তাকে কে দিলো? আল্লাহ দিয়েছেন? তাঁর রাসূল দিয়েছেন? না কেউ দেয়নি, নিজ ইচ্ছেমতো ই সে তা করছে। ঠিক এ দিকে লক্ষ্য রেখেই হযরত হুযায়ফা ইবনুল ইয়ামান (রা) বলেছেনঃ যে ইবাদাত সাহাবায়ে কিরাম করেননি, সে ইবাদাত তোমরা করোনা। (তাকে ইবাদত বলে মনে করোনা, তাতে সওয়াব হয় বলেও বিশ্বাস করোনা।) কেননা অতীতের লোকেরা পিছনের লোকদের জন্য কিছু বাকী রেখে যাননি যা লোকদের পূরণ করতে হবে। অতএব হে মুসলিম সমাজ, তোমরা আল্লাহর ভয় করো এবং পূর্ববর্তী লোকদের রীতিনীতি গ্রহণ ও অনুসরণ করে চলো।

এমতাবস্থায় ও দ্বীনের মাঝে কিছু বৃদ্ধি করা বা তা থেকে কিছু কমানোর অর্থ শরীয়তের বিধানের অনধিকার চর্চা, অবৈধ হস্তক্ষেপ এবং আল্লাহর ঘোষণার বিরুদ্ধতা আর তাঁর অপমান। এরূপ অনধিকার চর্চা করার ধৃষ্টতা ক্ষমার অযোগ্য।

‘বিদয়াত’ করে এবং তা বরদাশত করে তারা, যারা একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর নিকট আত্মসমর্পণ করতে পারেনি, যারা নিজেদের অনুগত বানাতে পারেনি রাসূলের। বস্তুত বিদয়াতের উৎস হচ্ছে নফসের খাহেশ, স্বেচ্ছাচারিতা, লালসা ও অবাধ্যতা। যারা আল্লাহর ফয়সালা ও রাসূলের পথ প্রদর্শনকে নফশের খাহেশ পূরণের পথে বাধাস্বরূপ মনে করে, তারাই দ্বীনের ভিতর নিজেদের ইচ্ছেমতো হ্রাস-বৃদ্ধি করে। এই হ্রাস-বৃদ্ধির পর যা হয় তাকেই দ্বীনের মর্যাদা দিয়ে বসে। আর যেহেতু এ কাজকেও দ্বীনী কাজই মনে করা হয়, সেজন্য এ কাজের ভুল ও মারাত্মকতা তাদের চোখে ধরা পড়েনা। এ কারণেই বিদয়াতীরা কখনো বিদয়াত হতে তাওবা করার সুযোগ পায়না। এ বিদয়াত এমনই এক মারাত্মক জিনিস, যা শরীয়তের ফরজ ওয়াজিবকে পর্যন্ত বিকৃত করে দেয়। শরীয়তের ফরয ওয়াজিবের প্রতি অন্তরে থাকেনা কোনো মান্যতা গণ্যতার ভাবধারা। শরীয়তের সীমালঙ্ঘন করার অভ্যাস হতে হতে লোকদের স্বাভাবিক প্রকৃতিই বিগড়ে যায় আর মন মগজ এতই বাঁকা হয়ে যায় যে, অতঃপর শরীয়তের সমস্ত সীমা-সরহদ চূর্ণ করে ফেলতেও কোনো দ্বিধা-কোনো কুন্ঠা জাগেনা তাঁদের মনে। শরীয়ত বিরোধী কাজগুলোকে তখন মনে হতে থাকে খুবই উত্তম।

প্রসঙ্গত মনে রাখতে হবে, দ্বীন ইসলামের পরিপূর্ণ ও পূর্ণাঙ্গ বিধান হওয়ার সঠিক তাৎপর্য্য কি? বস্তুত নবী করীম(স)দ্বীন সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয়কে বিস্তারিতভাবে পৌছে দিয়েছেন। আর দুনিয়া সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয়ে দিয়েছেন মোটামুটি বিধান ও ব্যবস্থা। দিয়েছেন কতগুলো মূলনীতি।

বাস্তব ব্যবস্থাপনা দিক দিয়ে ইসলামের শূরা ব্যবস্থা মুসলমানদের রাষ্ট্র নেতাকে শরীয়তের সীমার মধ্যে আনুগত্য দেয়া এবং তারা ইজতিহাদ করে যেসব হুকুম আহকাম বের করবে তা মানা, সহজতা বিধান, কষ্ট বিদূরণ ও প্রয়োজন পূরণের ব্যবস্থা। এগুলো এমন যে, কালের পরিবর্তিত যে কোনো স্তরে এর নিয়ম বিধান সম্পূর্ণ নতুনভাবে মানুষের জীবন ও সমাজ গড়তে পারে। এ পর্যায়ে কয়েকটি হাদীসের ভাষা এখানে উল্লেখযোগ্য। একটি হচ্ছে ইবরাজ ইবনে সারিয়ারা বর্ণিত হাদীসঃ (আরবি)

-রাসূলে করীম(স) একদা আমাদের নিকট গুরুত্বপূর্ণ ওয়াজ করলেন, উপদেশ দিলেন। তার প্রতিক্রিয়া ও প্রভাবে উপস্থিত মানুষের চোখ দিয়ে অশ্রু প্রবাহিত হতে লাগল। লোকদের দিল নরম হয়ে গেল, কেঁপে উঠল। আমরা বললামঃ ইয়া রাসূলুল্লাহ! আপনিতো বিদায় গ্রহণকারীর মতো ওয়াজ করলেন। তাহলে আমাদের প্রতি আপনি কি নির্দেশ দিচ্ছেন? রাসূল(স) বললেনঃ তোমাদেরতো আমি এমন এক আলোকোজ্জ্বল আদর্শের উপর প্রতিষ্ঠিত রেখে যাচ্ছি যার দৃষ্টিতে রাতও দিনের মতোই উদ্ভাসিত। আমার চলে যাওয়ার পর যে-ই এর বিরুদ্ধতা করবে সে-ই ধ্বংস হবে।

এ হাদীসে আলোকোজ্জ্বল আদর্শ বলতে রাসূলের কর্মময় বাস্তব জীবনের আদর্শ, দৃষ্টান্ত ও নির্দেশসমূহকে বোঝানো হয়েছে। আর বস্তুতই তা এমন উজ্জ্বল প্রকট জিনিস যে, তার দৃষ্টিতে মানব জীবনের ঘোরতর সমস্যা সংকুল অন্ধকারেও দিনের আলোকের মতোই পথের দিশা লাভ করা যেতে পারে। অন্ধকার কোথাও এসে পথ রোধ করে দাঁড়াতে পারেনা, জীবনকে অচল ও সমস্যা ভারাক্রান্ত করে তুলতে পারেনা। কেননা নবী করীম(স) বিশ্ব মানবতাকে এমনই এক আলোকোজ্জ্বল পথের দিশা দিয়ে যাবার জন্যই এসেছিলেন দুনিয়ায়। আর তিনি তাঁর এ দায়িত্ব পালন করে গেছেন পূর্ণ মাত্রায়। তাতে থেকে যায়নি কোনোরূপ অসম্পূর্ণতার কালো ছায়া। ইমাম মালিকের এই কথাটিও এ প্রেক্ষিতে পঠিতব্যঃ

যে লোক ইসলামে কোনো বিদয়াত উদ্ভাবন করবে এবং তাকে ভালো ও উত্তম মনে করবে, সে যেন ধারণা করে নিয়েছে যে, নবী(স) রিসালাত ও নবুয়্যতের দায়িত্ব পালন করেননি, খেয়ানত করেছেন। কেননা তিনি যদি তা করেই থাকেন, তাহলে ইসলাম ও সুন্নাত ছাড়া আর তো কোনো কিছুর প্রয়োজন করেনা। সব ভালোই তো তাতে রয়েছে।

ইবরাহীম নখয়ী(রহ)বলেছেনঃ “আল্লাহ তা’আলা তোমাদের এমন কোনো কল্যানই দেননি যা সাহাবায়ে কিরামের নিকট গোপন বা অজ্ঞাত থেকে গেছে। অথচ সাহাবারা তাঁর রাসূলেরই সঙ্গি-সাথী ছিলেন এবং তার মাখলুকাতের মধ্যে সর্বোত্তম লোক ছিলেন।”

ইবরাহীম নখয়ী(রহ)-এর এ কথার তাৎপর্য্ এই যে, দ্বীনের ব্যাপারে অতিরিক্ত বাড়াবাড়ি করা উচিত নয়। সত্যিকারভাবে যে দ্বীন রাসূলের নিকট হতে পাওয়া গেছে, ঠিক তা-ই পালন করে চলা উচিত সকল মুসলমানের। না তাতে কিছু কম করা উচিত, না তাতে কিছু বেশি করা সঙ্গত হতে পারে।

কুরআনের নিম্নোক্ত আয়াতে এই কথাই বলা হয়েলে আহলী কিতাবকে লক্ষ্য করেঃ

يَا أَهْلَ الْكِتَابِ لَا تَغْلُوا فِي دِينِكُمْ وَلَا تَقُولُوا عَلَى اللَّهِ إِلَّا الْحَقَّ ۚ

-হে আহলী কিতাব! তোমরা তোমাদের দ্বীনের ব্যাপারে অতিরিক্ত বাড়াবাড়ি করোনা। আর আল্লাহ সম্পর্কে প্রকৃত হক ছাড়া কোনো কথা বলোনা।

এই ‘আহলী কিতাব’ সম্পর্কে বলা হয়েছেঃ

وَرَهْبَانِيَّةً ابْتَدَعُوهَا مَا كَتَبْنَاهَا عَلَيْهِمْ إِلَّا ابْتِغَاءَ رِضْوَانِ اللَّهِ فَمَا رَعَوْهَا حَقَّ رِعَايَتِهَا [ ٥٧ : ٢٧ ]

-এবং বৈরাগ্যবাদ তারা নিজেরা রচনা করে নিয়েছে, আমরা তাদের জন্য এ নীতি লিখে দিইনি। আমরা তো তাদের জন্য লিখে দিয়েছিলাম আল্লাহর সন্তোষ লাভের জন্য চেষ্টা করাকে কিন্তু তারা এ নিষেধের মর্যাদা পূর্ণ মাত্রায় রক্ষা করেনি।(সূরা হাদীদঃ 27)।

এ আয়াতদ্বয়ের দৃষ্টিতে দ্বীনকে যথাযথভাবে গ্রহণ করাই মুমিনের কর্তব্য। তাতে নিজ থেকে কিছু বাড়িয়ে দেয়া বা কিছু বাদ সাদ দিয়ে কমানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ কাজ। এমনকি আল্লাহর দ্বীনে যেসব জিনিস বা যে কাজের যতটুকু গুরুত্ব দেয়া হয়েছে সে জিনিস ও কাজকে ঠিক ততটুকু গুরুত্ব না দেয়া, কম গুরুত্বকে বেশি গুরুত্ব দেয়া আর বেশি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়কে কম গুরুত্ব দেয়া এ সবই নিতান্ত বাড়াবাড়ি। এমন কোনো জিনিসকে দ্বীনের জিনিস বলে চালিয়ে দেয়া, যা আদৌ দ্বীনের জিনিস নয়-সুস্পষ্টভাবে দুষণীয় কাজ, অপরাধজনক কাজ।

অতএব, কেউ যদি এমন কাজ করে শরীয়তের বা শরীয়তসম্মত কাজ মনে করে, যা আদপেই শরীয়তের কাজ নয়, সে তো দ্বীনের ভিতরে নতুন জিনিসের আমদানী করলো এবং এটাই হচ্ছে বিদয়াত। সে নিজের মুখে সম্পূর্ণ না-হকভাবে আল্লাহ সম্পর্কে কথা বলছে। আল্লাহ যা বলেননি তাকেই আল্লাহর নামে চালিয়ে দিচ্ছে।

হযরত আনাস ইবনে মালিক(র) এর নিকট এক লোক জিজ্ঞেস করলোঃ

আমি ইহরাম বাঁধব কোন জায়গা থেকে? তিনি বললেনঃ যেখান হতে নবী করীম(স) বেঁধেছেন সেখান হতেই বাঁধবে। লোকটি বললো “ আমি যদি সে জায়গার এ দিকে বসে ইহরাম বাঁধি তা হলে কি দোষ হবে? হযরত আনাস (রা) বললেনঃ না তা করবেনা। আমি ভয় করছি তুমি ফিতনায় নিমজ্জিত হয়ে যেতে পার। সেলোক বললোঃ ভালো কাজে কিছুটা বাড়াবাড়ি করাটাও কি ফিতনা হয়ে যাবে?”

তখন আনাস (রা) এ আয়াতটি পাঠ করলেনঃ

فَلْيَحْذَرِ الَّذِينَ يُخَالِفُونَ عَنْ أَمْرِهِ أَن تُصِيبَهُمْ فِتْنَةٌ أَوْ يُصِيبَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ [ ٢٤ :٦]

-যারা রাসূলের আদেশ ও নিয়ম-বিধানের বিরোধিতা করে, তাদের ভয় করা উচিত। ফিতনা তাদেরকে গ্রাস করতে পারে কিংবা পৌছাতে পারে কোনো প্রাণান্তকর আযাব।

বললেনঃ“তুমি এমন একটা কাজকে ‘নেক কাজ’ বলে মনে করছো যাকে রাসূলে করীম(স) নেক কাজ বলে নির্দিষ্ট করে দেননি,-এর চেয়ে বড় ফিতনা আর কি হতে পারে?

এ কথোপকথোন থেকে বিদয়াত হতে একটা স্পষ্ট ধারণা পাওয়া গেল এবং জানা গেল যে ‘নেক কাজ’, ‘সওয়াবের কাজ’ মনে করেও এমন কোনো অতিরিক্ত কাজ করা যেতে পারেনা, যে কাজের কোনো বিধান মূল শরীয়তে নেই।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন