hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

সুন্নাত ও বিদয়াত

লেখকঃ মওলানা মুহাম্মাদ আবদুর রহীম (র.)

১৩
বিদয়াত সম্পর্কে হাদীসের ভাষ্য
একটি দীর্ঘ হাদীসের শেষাংশে ‘সুন্নাত’ পালনের তাগিদ করার পর বিদয়াত সম্পর্কে হুঁশিয়ার করে রাসূলে করীম(স) ইরশাদ করেছেনঃ

(আরবি)

তোমরা নিজেদের দ্বীনে নিত্য নব-উদ্ভূত বিষয়াদি থেকে দূরে সরিয়ে রাখবে। কেননা দ্বীনে প্রত্যেক নব উদ্ভাবিত জিনিসই বিদয়াত এবং সব বিদয়াতই চরম গোমরাহীর মূল। (আহমাদ)

এ হাদীসের শব্দ ‘মুহদাসাতুল উমুর’ এর ব্যাখ্যায় আল্লামা আহমাদুল বান্না লিখেছেনঃ মুহদাসাতুল উমুর বোঝায় এমন জিনিস ও বিষয়াদি যা কুরআন, সুন্নাহ ও ইজমা-কোনো দিক দিয়েই শরীয়তের বিধিবদ্ধ নয়। আর এ-ই হচ্ছে বিদয়াত।

হযরত আয়েশা(রা) বর্ণিত পূর্বোক্ত হাদীসটি মুসলিম শরীফ গ্রন্থে উদ্বৃত হয়েছে এ ভাষায়ঃ যে লোক এমন আমল করলো, যার অনুকূল ও সমর্থনে আমারউপস্থাপিত শরীয়ত নয়(অর্থাৎ যা শরীয়ত মোতাবিক নয়)সে আমল অবশ্য প্রত্যাহারযোগ্য।

ইমাম শাতেবী এ হাদীসটি সম্পর্কে বলেছেনঃ বিশেষজ্ঞদের মতে এ হাদীসটি ইসলামের এক-তৃতীয়াংশ মর্যাদার অধিকারী। কেননা এ হাদীসে নবী করীম(স) এর উপস্থাপিত বিধানের বিরোধিতার সব কয়টি দিকই একত্রিতভাবে উদ্ধৃত হয়েছে, আর এর মোকাবিলায় সমায় হয়ে দাঁড়ায় সে জিনিস, যা বিদয়াত বা নাফরমানীর বিষয়।

হযরত উমর ফারুক ও হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা) বলেছেনঃ তোমরা. হে মুসলিম জনতা! অনেক কিছুই নতুন উদ্ভাবন করবে। আর তোমাদের জন্যও উদ্ভাবন করা হবে দ্বীন ইসলামের অনেক নতুন জিনিস। জেনে রাখো, সব নব উদ্ভাবিত জিনিসই সুস্পষ্ট গোমরাহী। আর সব গোমরাহীরই চূড়ান্ত পরিণতি জাহান্নাম।

নবী করীম(স) ইরশাদ করেছেনঃ

(আরবি)

-তোমরা শুধু রাসূলের দেয়া আদর্শকে অনুসরণ করে চলো এবং কোনোক্রমেই বিদয়াত করোনা।

এক ভাষণে তিনি বলেছিলেনঃ

(আরবি)

-জেনে রাখো, সর্বোত্তম বাণী হচ্ছে আল্লাহর কিতাব। আর সর্বোত্তম কর্মবিধান হচ্ছে মুহাম্মদ(স) এর উপস্থাপিত জীবন-পন্থা। পক্ষান্তরে নিকৃষ্টতম জিনিস হচ্ছে নবোদ্ভাবিত মতাদর্শ আর প্রত্যেক নবোদ্ভাবিত মতাদর্শ-ই সুস্পষ্ট গোমরাহী।

এ হাদীসের ‘মুহদাসাত’ শব্দের ব্যাখ্যায় আল্লামা মোল্লা আল কারী লিখেছেনঃ ‘মুহদাসাত’ বলতে বোঝায় সে সব বিদয়াত যা আকীদা, কথাবার্তা এবং আমলের ক্ষেত্রে নতুন উদ্ভাবিত হয়।

ইমাম মালিক(র) বলেছেনঃ রাসূলে করীম(স) এবং তারপরে মুসলমানদের দায়িত্বসম্পন্ন ব্যক্তিগণ সুন্নাতকে নির্ধারণ করে গেছেন। এখন তাকে আঁকড়ে ধরে এবং অনুসরণ করে চললেই আল্লাহরই কিতাবের সত্যতা বিধান করা হবে, আল্লাহর আনুগত্য করে চলার দায়িত্ব পূর্ণতাপ্রাপ্ত হবে। এ সুন্নাতই হলো আল্লাহর দ্বীনের স্বপক্ষে এক অতি বড় শক্তি বিশেষ। এ সুন্নাতকে পরিবর্তন করে বা বদলে দিয়ে তার স্থানে অন্য কিছু চালু করারা অধিকার কারোই নেই এবং তার বিপরীত কোনো জিনিসের প্রতি দৃষ্টি দেয়াও যেতে পারেনা। বরং যে লোক এ সুন্নাত অনুযায়ী আমল করবে সেই হবে হেদায়াতপ্রাপ্ত। যে এর সাহায্যে শক্তি অর্জন করতে চাইবে সেই হবে সাহায্যপ্রাপ্ত, কিন্তু যে লোক এর বিরুদ্ধতা করবে, সে মুসলমানদের অনুসৃত আদর্শকেই হারিয়ে ফেলবে। এসব লোক নিজেরা যেদিকে ফিরবে আল্লাহও তাদের সে দিকেই ফিরিয়ে দিবেন। আর তাদের জাহান্নামে পৌছে দিবেন। কিন্তু জাহান্নাম বড়ই নিকৃষ্ট জায়গা।

নবী করীম(স) এর অনুসৃত কর্মনীতিই সুন্নাত। তাও সুন্নাত, যা তাঁর পরবর্তীকালের ইসলামী সমাজের পরিচালকগণ খুলাফায়ে রাশেদীন প্রবর্তন করেছেন। তাঁরা তো তাই প্রবর্তন করেছেন, যা রাসূলে করীম(স)করতে বলেছেন-পথ দেখিয়েছেন। রাসূলের দেখানো আদর্শের তাঁরা বিরোধিতা করেননি, তাঁরা কোনো নতুন জিনিসের উদ্ভাবনও করেননি দ্বীন ইসলামে। এরাই হচ্ছেন খোলাফায়ে রাশেদীন।

এ পর্যায়ে ইমাম শাতেবী লিখেছেনঃ রাসূলে করীম(স) এর পরে মুসলিম সমাজের দায়িত্বশীল লোকেরা(খুলাফায়ে রাশেদীন) যে সুন্নাত-বাস্তব কর্মপন্থা নির্ধারণ করেছেন, তা-ও অবশ্যই অনুসরণীয় সুন্নাতরূপে গ্রহণীয়। তা কোনো বিদয়াত হতে পারেনা, নেই তাতে তাতে কোনো বিদয়াত, যদিও কুরআন ও হাদীস হতে তা স্পষ্টভাবে জানা যায়না। কেননা নবী করীম(স) বিশেষভাবে এ সুন্নাতেরও উল্লেখ করেছেন।

হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ(রা) কুরআন ও সুন্নাতের যথার্থ দক্ষতার অধিকারী ছিলেন। খোদ নবী করীম(স-ই ও তার সাক্ষ্য দিয়েছেন।

হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ(রা) বিশ্বাস করতেন যে, শিরক তাওহীদের পরিপন্থী(Negation)আর বিদয়াত সুন্নাতের বিপরীত। শিরক লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু- কালেমার এই প্রথম অংশের অস্বীকৃতি। আর বিদয়াত হচ্ছে মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ কালেমার এই শেষাংশের বিপরীত আর অন্তর থেকে তার অস্বীকৃতি। মুজাদ্দেদী আলফেসানী(রহ)এই তত্ত্বের খুবই সুন্দর করে ব্যাখ্যা করেছেন। তাঁর কথা হলো শিরক ও বিদয়াত সুন্নাতের নির্মূলকারী। এ কারণে উভয়েরই পরিণতি জাহান্নামের আগুন ছাড়া আর কিছু হতে পারেনা।

এ কথা মুজাদ্দিদ সাহেব নিজ থেকে বলেননি। মুসনাদে আহমাদ এ গজীব ইবনুল হারিস শিমালির বর্ণনায় উদ্বৃত হয়েছেঃ জনগণ যে বিদয়াতের উদ্ভাবন করে, তারই মতো একটা সুন্নাত সেখান হতে বিলুপ্ত হয়ে যায়। অতএব বিদয়াত উদ্ভাবন না করে সুন্নাত আঁকড়ে ধরাই উত্তম।

মুসনাদে দারেমী হাদীস গ্রন্থে হযরত হিসনের উক্তি উদ্বৃত হয়েছেঃ

জনগণ তাদের দ্বীনের মধ্যে যে বিদয়াতই চালু করে আল্লাহ তা’আলা তাদের নিকট হতে অনুরূপ একটি সুন্নাত তুলে নিয়ে যান। পরে কিয়ামত পর্যন্ত তা আর ফিরিয়ে আনেননা।

যে কাজটি সম্পর্কে আমাদের মনে ধারণা জন্মিবে যে, তা করলে আল্লাহ তা’আলা খুশি হবেন, আল্লাহ কিংবা রাসূলের নিকট প্রিয় বান্দা বলে গণ্য হবো অথবা আমাদের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পেয়ে যাবে কিংবা এই কাজটির দ্বারা আমাদের সন্তান সন্তনির রিজিকের পরিমাণ অতিপ্রাকিৃতিক উপায়ে বৃদ্ধি পেয়ে যাবে অথবা তাতে বরকত হবে বা সে কাজের বরকতে আমাদের বিপদ-আপদ অতিপ্রাকৃতিকভাবে দূর হয়ে যাবে। এই ধরণের সব কথাই ‘দ্বীনি’ বলে পরিচিত; কিন্তু এর সমর্থনে যদি শরীয়তের প্রমাণ না থাকে বা বড় বড় সাহাবীগণ নিজেদের জীবদ্দশায় তা না করে থাকেন, তাহলে তা বিদয়াত হবে। অনুরূপভাবে কোনো জায়েজ কাজ যদি শরীয়তের দিক হতে একাধিক পন্থায় পালন করার অনুমতি থাকে; কিন্তু তন্মধ্যে একটিমাত্র পন্থাকে সে জন্যে আমরা যদি সুনির্দিষ্ট করে নিই এবং বিশ্বাস করি যে, কেবল সেই পন্থায়ই তা করলে সওয়াব হবে, তাহলে তা-ও বিদয়াত হবে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন