hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

সুন্নাত ও বিদয়াত

লেখকঃ মওলানা মুহাম্মাদ আবদুর রহীম (র.)

৪২
ইস্তিমদাদে রূহানী
কবর যিয়ারত সম্পর্কে উপরোক্ত বিস্তারিত আলোচনা পাঠ করার পর কারো মনেই সন্দেহ থাকতে পারেনা যে, কবরস্থানে গিয়ে তাদের জন্য দো’আ করা ছাড়া আর কোনো কাজ করা। কবরস্থ লোকদের নিকট নিজেদের কোনো মনোবেদনা জানাতে চেষ্টা করা, কোনো প্রয়োজন পূরণের জন্য তাদের সাহায্য প্রার্থনা করা কিংবা তাদের কাছ হতে রূহানী ফায়েয হাসিল করতে চেষ্টা করা সম্পূর্ণ শিরক। মূলত এ সেই কাজ, যা মূলত মুশরিকরা করে তাদের মনগড়া দেব-দেবী ও মাবুদদের নিকট। এ পর্যায়ে তাফসীর জামেউত তাফসীর এর সূরা ফাতির এর তাফসীর থেকে একটা ঘটনা উল্লেখ করা একান্তই জরুরী। ঘটনাটি হযরত শাহ ইসহাক দেহলভী ইমাম আবু হানীফা(রহ) থেকে বর্ণনা করেছেন।

ঘটনাটি এরূপঃ ইমাম আবু হানীফা দেখলেন, এক ব্যক্তি নেক লোকদের কবরস্থানে উপস্থিত হয়ে সালাম করছে, তাদের সম্বোধন করে বলছেঃ হে কবরবাসীরা! তোমাদের কি কোনো খবর আছে? তোমাদের আছে কোনো ক্ষমতা? আমি তো তোমাদের কাছে কয়েক মাস ধরে আসছি, তোমাদের ডাকাডাকি করছি। তোমাদের নিকট আমার জন্য কোনো প্রার্থনা ছিলনা, ছিল শুধু দো’আর প্রার্থনা। কিন্তু তোমরা কি কিছু টের পেয়েছ, না একেবারে গাফিল হয়ে পড়ছো?

এ কথা ইমাম আবু হানীফা(রহ) শুনতে পেলেন। তিনি লোকটিকে ডেকে জিজ্ঞেস করলেনঃ কবরস্থ লোকেরা কি তোমার ডাকের কোনো জবাব দিল? লোকটি বললঃ না, কোনো জবাবই পাইনি। তখন ইমাম আবু হানীফা(রহ) বললেনঃ বড় দুঃখ, বড় লজ্জার বিষয়! তোমার দুটো হাতই ধ্বংস হয়ে যাক। তুমি এমন সব দেহকে লক্ষ্য করে কথা বলছো যারা কোনো জবাবই দিতে পারেনা, যাদের কোনো কিছুই করার ক্ষমতা নেই, (এমন কি) কোনো আওয়াজও তারা শুনতে পায়না। অতঃপর তিনি পড়লেন সূরা ফাতির এর 22 নং আয়াত।–তুমি শোনাতে পারবেনা তাদের, যারা কবরে রয়েছে।

ইমাম আবু হানীফার(রহ) এই উক্তি প্রমাণ করে যে, তিনি এই মত পোষণ করতেন যে, অলী ও নেক লোকদের কবরে গিয়ে তাদের সম্বোধন করে কথা বলা বা কিছুর জন্য প্রার্থনা করা সম্পূর্ণ নাজায়েয। দ্বিতীয়-মৃত ব্যক্তি শুনেওনা, জবাবও দিতে পারেনা। ভক্তদেরকে বিপদ থেকে উদ্ধার করা, নিঃসন্তানকে সন্তান দান করা বা চাকুরী-ব্যবসা ইত্যাদিতে উন্নতি দান করার কোনো সাধ্যই তাদের নেই- থাকতে পারেনা। ইমামা আবু হানীফা(রহ) এর এই মতে কুরআনের ঘোষণার যথার্থ প্রতিফলন ঘটেছে। ইয়াহুদি খ্রীস্টান মুশরিকার হযরত ঈসা, হযরত উজাইর ও ফেরেশতাদের ডাকতো। তাদের নিকট সাহায্য চাইতো বিপদ হতে উদ্ধার পাওয়ার জন্য। এই প্রেক্ষিতেই আল্লাহ তা’আলা ঘোষণা করলেনঃ (আরবি)

-না, ওরা তোমাদের বিপদ দূর করতে এবং তোমাদের জন্য আসা বিপদকে অন্য দিকে সরিয়ে দিতে কস্মিনকালেও পারবেনা।

এই পর্যায়ে কুরআন মজীদের একটি আয়াত বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেছেনঃ

وَمَنْ أَضَلُّ مِمَّن يَدْعُو مِن دُونِ اللَّهِ مَن لَّا يَسْتَجِيبُ لَهُ إِلَىٰ يَوْمِ الْقِيَامَةِ وَهُمْ عَن دُعَائِهِمْ غَافِلُونَ [ ٤٦ :٥]

– যে লোক আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে ডাকবে সে কিয়ামত পর্য্ন্তও তার ডাকের জবাব দিবেনা, তার চাইতে অধিক গুমরাহ আর কে হতে পারে? ওরা তো তাদের দো’আ সম্পর্কে সম্পূর্ণ অনবহিত। (আহকাফঃ5)

এ পর্যায়ে সঠিক মাসআলা জানার জন্য সর্বপ্রথম দেখতে হবে কুরআন মজীদে স্বয়ং নবী করীম(স) এর কি মর্যাদা ঘোষিত হয়েছে। নবী করীমের যে মর্যাদা কুরআনে ঘোষিত হয়েছে- এ পর্যায়ে আকীদা ঠিক রাখার জন্য সুন্নাতের সঠিক জ্ঞান অর্জনের জন্য- তাই হবে ভিত্তি। কুরআনের পাঠক মাত্রই জানেন, কুরআন মজীদে স্বয়ং রাসূলের জবানীতে তাঁর নিজের মর্যাদা নানা স্থানে ঘোষিত হয়েছে। এ পর্যায়ের একটি আয়াত হচ্ছে এইঃ

قُل لَّا أَمْلِكُ لِنَفْسِي نَفْعًا وَلَا ضَرًّا إِلَّا مَا شَاءَ اللَّهُ ۚ وَلَوْ كُنتُ أَعْلَمُ الْغَيْبَ لَاسْتَكْثَرْتُ مِنَ الْخَيْرِ وَمَا مَسَّنِيَ السُّوءُ ۚ إِنْ أَنَا إِلَّا نَذِيرٌ وَبَشِيرٌ لِّقَوْمٍ يُؤْمِنُونَ [٧: ١٨٨ ]

-বলো হে নবী! আমি আমার নিজের জন্য কোনো কল্যাণের ওপর কর্তৃত্বশালী নই, না কোনো ক্ষতির ওপর। তবে শুধু তা-ই এর বাইরে, যা আল্লাহ চাইবেন। আর আমি যদি গায়েব জানতাম, তাহলে আমি নিশ্চয়ই অনেক বেশি বেশি কল্যাণ লাভ করে নিতাম এবং আমাকে কোনো দুঃখ বা কষ্টই স্পর্শ করতে পারতোনা। আমি তো শুধু ভয় প্রদর্শনকারী, শুধু সংবাদদাতা ঈমানদার লোকদের জন্য।(আল আরাফঃ188)

এ আয়াতের ব্যাখ্যায় আল্লামা আলুসী লিখেছেনঃ এ আয়াত থেকে বোঝা গেল যে, নবী করীম(স) সে গায়েবের জ্ঞান জানেননা, যা ফায়দা লাভ ও ক্ষতির প্রতিরোধের জন্য অনুকূল। কেননা তার সাথে এবং দ্বীনী হুকুম আহকাম ও শরীয়তের বিধানের সাথে কোনো সম্পর্ক নেই। এ জন্যে এ ধরনের গায়েবী জ্ঞান নবী করীম(স) জানেননা। আর এ জ্ঞান না জানা তাঁর নব্যুয়তের মহান মর্যাদার পক্ষে কিছুমাত্র ক্ষতিকর বা দোষের নয়।

এ পর্যায়ে গায়েবী ইলম যে রাসূলের নেই, তা একটি বাস্তব ঘটনা থেকেও প্রমাণিত হয়। হযরত আয়েশা(রা) বলেনঃ লোকেরা খেজুর গাছের স্ত্রী ও পুরুষের মধ্যে মিলন ঘটাত। নবী করীম(স) বলেনঃ এ কাজ যদি তোমরা না কর তবে ভালোই হয়। কিন্তু পরবর্তী ফসল কালে তারা এ কাজ না করার দরুণ খেজুরের ফসল ভালো হলোনা। এ কথা শুনে নবী করীম(স) বললেনঃ ‘তোমাদের এসব বৈষয়িক ব্যাপার তোমরাই ভালো জানো।’ অপর বর্ণনায় কথাটি এভাবে বলা হয়েছেঃ ‘দেখ, ব্যাপার যদি তোমাদের বৈষয়িক সংক্রান্ত হয়, তবে তা তোমাদের ব্যাপার। আর যদি দ্বীন সংক্রান্ত হয়, তাহলে তা আমার আওতাভুক্ত।’

হানাফী মাযহাব সমর্থিত আকীদায় স্পষ্ট বলা হয়েছে যে, নবী করীম(স) গায়েব জানতেন-এরূপ আকীদা যদি কেউ পোষণ করে, তবে সে হবে স্পষ্ট কাফির। কেননা এরূপ আকীদা কুরআনের(পূর্বোক্ত এবং) এ আয়াতের সম্পূর্ণ পরিপন্থী। আয়াতটি হলোঃ

قُل لَّا يَعْلَمُ مَن فِي السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ الْغَيْبَ إِلَّا اللَّهُ ۚ

–বলো, আসমান-জমিনের কেউ-ই গায়েব জানেনা এক আল্লাহ ছাড়া।

অর্থাৎ যা কিছু মানুষের অনুভূতি আর জ্ঞানের আওতার মধ্যের ব্যাপার নয় তা আসমান-জমিনের সমস্ত সৃষ্টিলোকের মধ্যে আল্লাহ ছাড়া আর কেউ-ই জানেনা, জানতে পারেনা।

হযরত আয়েশা(রা) বলেনঃ (আরবি)

-যে লোক ধারণা করবে যে, মুহাম্মদ(স) লোকদের সে সব বৈষয়িক বিষয়ে জানেন বা খবর দেন, যা কাল ঘটবে, তবে সে আল্লাহর প্রতি একটি অতি বড় মিথ্যা আরোপ করে দিলো।

গায়েব জানা সম্পর্কিত এ সব অকাট্য ও সুস্পষ্ট দলীলসমূহের ভিত্তিতে বলা যায়, নবী করীম(স)-ই যখন গায়েব জানতেননা, তখন কোনো পীর-অলী-দরবেশ এর পক্ষে গায়েব জানার কোনো প্রশ্নই উঠতে পারেনা। যদি কেউ তা মনে করে, তবে তা হবে আকীদার ক্ষেত্রে এক মহা শিরক, কুরআন ও হাদীসের স্পষ্ট ঘোষণাবলীর সম্পূর্ণ খেলাফ এবং সুন্নাতী আকীদার বিপরীত এক সুস্পষ্ট বিদয়াত।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন