মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
বিশ্বলোকের সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ। এ সবের ওপর কর্তৃত্বও চলে একমাত্র আল্লাহরই। তিনি ছাড়া এ দুনিয়ায় অপর কারো কিছু করার ক্ষমতা নেই। মানুষ জীবিত থাকা অবস্থায় শুধু ততটুকুই করতে পারে, যা করার অবকাশ রেখেছেন আল্লাহ তা‘আলা। সে অবকাশও অসীম নয়, অস্বাভাবিক কিছু নয়। তবে আল্লাহ যাকে যা করার ক্ষমতা দান করেন, সে তা ততটুকুই করতে পারে যতটুকু করার অনুমতি আল্লাহ দান করেন। এ কারণে বলা যায়, আল্লাহ তাঁর প্রিয় বান্দাদের এ ধরনের কিছু কিছু কাজ করার অনুমতি দেন কখনো কখনো, যে ধরনের কাজকে আমরা ‘অলৌকিক কাজ’ বলে থাকি। এর কতগুলো কাজ এমন যেগুলো নবী রাসূলগণ কর্তৃক অনুষ্ঠিত হয়। এগুলোকেই ইসলামী পরিভাষায় বলে ‘মুজিযা’। নবী রাসূলগণের মুজিযা সত্য। নবীর নব্যুয়তী সত্যতা প্রমাণের জন্য তা হয় অকাট্য দলীল। কিন্তু এ ‘মুজিযা’ অনুষ্ঠিত হয় সৃষ্টির কল্যাণ সাধনের জন্য, কোনো কোনো বিশেষ ফায়দা পৌঁছাবার জন্য এবং তা হয় স্বয়ং আল্লাহর কুদরতে ও ইচ্ছায়, নবী-রাসূলের ইচ্ছায় নয়। তা করার ক্ষমতা নবী-রাসূলের নিজস্ব নয়, কেবল মাত্র আল্লাহরই দেয়া ক্ষমতা।
আল্লাহ তা‘আলা অন্যান্য নবী ও রাসূলগণকে যেমন মুজিযা ও অকাট্য প্রমাণাদি দিয়েছেন তাঁদের নব্যুয়তের অকাট্যতার প্রতিষ্ঠিত করার উদ্দেশ্যে, তেমনি হযরত ঈসা(আ) কেও বহু অস্বাভাবিক কর্মকান্ড ঘটানোর শক্তি দান করেছিলেন। কিন্তু খ্রিস্টানরা সেসব নিদর্শন দেখে মনে করে নিয়েছে যে, এসব করার ক্ষমতা স্বয়ং হযরত ঈসা(আ) এর নিজস্ব এবং এই ক্ষমতা ও শক্তি ঠিক আল্লাহর ক্ষমতা ও শক্তি। এই কারণে সেই মূর্খরা মনে করে নিয়েছে যে-মহান আল্লাহই বুঝি হযরত ঈসার মধ্যে লীন হয়ে গেছেন। এক্ষণে আল্লাহ ও ঈসা অভিন্ন সত্তায় পরিণত, আল্লাহ ঈসা একাকার।(নাউজুবিল্লাহ)। আর এ-ই হচ্ছে খ্রিস্টানদের শিরকী আকীদা গ্রহণের মূলতত্ত্ব।
মুসলমানদের মধ্যে অলী-আল্লাহ নামে পরিচিত ব্যক্তিদের সম্পর্কেও ভক্তির আতিশয্যে- চরম মূর্খতার কারণে- মনে করেছে যে, আল্লাহ বুঝি তাদের মুঠোর মধ্যে এসে গেছেন; কিংবা তারা আল্লাহ হয়ে গেছেন (নাউজুবিল্লাহ) বলেইতো তারা অসাধ্য সাধন করতে ও অস্বাভাবিক-অলৌকিক ঘটনাবলী ঘটাবার ক্ষমতার অধিকারী হয়ে বসেছেন। এও ঠিক শিরকে নিমজ্জিত খ্রিস্টানদের মতো চরম মূর্খতারই পরিণতি। খ্রিস্টানরা যেমন বুঝেনি যে, হযরত ঈসা(আ) এর যা কিছু ক্ষমতা, তা নবী হিসেবেই আল্লাহর দেয়া, তার নিজের কিছুই নয়, তেমনি মুসলমানদের মাঝে এই মূর্খ লোকেরাও বুঝেনা- বুঝতে প্রস্তুতই নয় যে, তারা যাদেরকে অলী-আল্লাহ বলে মনে করে প্রকৃতপক্ষে তারা আল্লাহর অলী নাও হতে পারে। আর হলেও অলৌকিক কিছু করার, আল্লাহর চলমান ও সদা কার্য্কর স্বাভাবিক নিয়ম বিধান দর-বদল করার কোনো ক্ষমতাই তাদের নেই। ওরাও ঠিক এই কারণেই খ্রিস্টানদের মতোই চরম শিরকের মধ্যে ডুবে আছে।
কিন্তু নবী-রাসূল ছাড়া অন্য মানুষের দ্বারা যদি অস্বাভাবিক কর্মকান্ড হয় তবে তা তিন প্রকারের হতে পারে।
এক. তা দ্বারা যদি কোনে দ্বীনী ফায়দা হয়, তবে তা নেক আমলসমূহের মধ্যে গণ্য।
দুই. যদি তা থেকে কোনো বৈধ ব্যাপার ঘটে, তবে তা আল্লাহর দেয়া এক বৈষয়িক নেয়ামত। সে জন্যে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির উচিত আল্লাহর শোকর করা।
তিন. অস্বাভাবিক ঘটনা যদি এমন কিছু ঘটে বা হারামের পর্যায়ে পড়ে যায়, তবে তা হবে আল্লাহর আযাবের কারণ। তার ফলে আল্লাহর অসন্তুষ্টি ফেটে পড়ে।
মনে রাখতে হবে, অস্বাভাবিক ঘটনা যেমন দুনিয়ার নেক বান্দাদের কেন্দ্র করে সংঘটিত হয় তেমনি সংঘটিত হতে পারে অন্যান্য বান্দাদের কেন্দ্র করেও। অতএব তা যেমন দ্বীনের দৃষ্টিতে ভালোও নয়, তেমনি মন্দও নয়। কিন্তু এমনও হয়, যা না ভালো, না মন্দ।
নেক লোকদেরকে কেন্দ্র করলে তেমন কোনো ঘটনা ঘটলে তা যেমন তার নিজের গৌরবের কোনো বিষয় নয়, তেমনি তা-ই নয় তার বুজুর্গীর কোনো প্রমাণ। আর যাকে কেন্দ্র করেই এমন কিছু ঘটবে, তাকেই যে অলৌকিক ক্ষমতার মালিক মনে করতে হবে, মনে করতে হবে তাকে আল্লাহর প্রিয় বান্দা, তার কোনো দলীলই কুরআন হাদীসের খুঁজে পাওয়া যায়না। কুরআনের আয়াতের ভিত্তিতে কে আল্লাহর অলী, কে তাঁর প্রিয় ব্যক্তি, নিম্নোক্ত আয়াত থেকে জানতে পারা যায়। আল্লাহ ইরশাদ করেছেনঃ
–জেনে রেখো, আল্লাহর অলী লোকদের কোনো ভয় নেই, নেই তাদের দুশ্চিন্তার কোনো কারণ। এরা সেই লোক, যারা ঈমান এনেছে এবং তাকওয়া অবলম্বন করেছে। (ইউনূসঃ62-63)
হযরত আবু হুরায়রা(রা) বর্ণনা করেছেন, নবী করীম(স) হাদীসে কুদসী বর্ণনা প্রসঙ্গে আল্লাহর এ কথাটি বলেছেনঃ (আরবি)
-যে লোক আমার অলীর সঙ্গে শত্রুতা করবে, সে আমার সাথে যুদ্ধের ঘোষণা দেয়। বান্দার ওপর আমি যেসব ফরয ধার্য্ করে দিয়েছি কেবল সেগুলো আদায় করেই আমার নৈকট্য লাভ করতে পারে- এ-ই আমার নিকট অধিক প্রিয়। নফল কাজ করেও বান্দা আমার নৈকট্য লাভ করে থাকে। শেষ পর্য্ন্ত আমি তাকে ভালোবাসতে শুরু করি। আর আমি যখন কোনো বান্দাকে ভালোবাসতে শুরু করি, তখন আমি তার সেই কান হয়ে যাই যা দ্বারা সে শুনে, সেই চোখ হয়ে যায় যা দ্বারা দেখে, সেই হাত হয়ে যাই যা দ্বারা সে ধরে, সেই পা হয়ে যাই যা দ্বারা সে চলে। অতএব সে আমার দ্বারাই শুনে, আমার দ্বারাই দেখে, আমার দ্বারাই ধরে, আমার দ্বারাই চলে।
কুরআনের আয়াত এবং হাদীস থেকে প্রমাণিত হলো যে, অলী-আল্লাহ সেই হয় এবং তাঁকেই বলা যায়, যে মুমিন হবে এবং মুত্তাকী হবে। ঈমান ও তাকওয়া হওয়ার মানে পূর্ণ ঈমান এবং নির্ভূল নির্ভেজাল তাকওয়া। আর হাদীস থেকে জানা গেল যে, সে হবে আল্লাহর আরোপিত ফরযসমূহের যথাযথ পালনকারী। কিন্তু সেই সঙ্গে তার যে কারামত হতে হবে এমন কথা না কুরআনে আছে, না হাদীসে। কুরআনের উক্ত আয়াতের পরবর্তী কথায় এই কারামতের কথা নেই। যা আছে তা হলো এইঃ لَهُمُ الْبُشْرَىٰ فِي الْحَيَاةِ الدُّنْيَا وَفِي الْآخِرَةِ ۚ
-তাদের জন্য সুসংবাদ দুনিয়ার জীবনে এবং পরকালের।
بُشْرى বা সুসংবাদ বলতে মূলত বোঝায় এমন খবর যা শুনলে মুখমন্ডলে আনন্দের চিহ্ন ফুটে ওঠে। এ থেকেই হচ্ছে বাশারাত মানে সুসংবাদ। আর যে সংবাদ দিলে এরূপ আনন্দ লাভ হয় তাকেও بُشْرى বলা হয়। আর এর সঠিক তাৎপর্য্ এইঃ তাদের জন্যে সুসংবাদ তারা দুনিয়ায় থাকতেও এবং পরকালে চলে গেলেও। অর্থাৎ নগদ ও বাকী উভয় ধরনই।
আল্লামা আলুসী লিখেছেনঃ বহু সংখ্যক হাদীসের বর্ণনা থেকে প্রমাণিত হয় যে, কুরআনের এ بُشْرى শব্দের অর্থ হচ্ছে দুনিয়ার জীবনে ভাল ও শুভ স্বপ্ন, যা নব্যুয়তের ছিচল্লিশ ভাগের এক ভাগ।
রাসূল(সা) এর নিজের কথা থেকেই এ তাফসীর জানা গেছে অকাট্যভাবে। আর পরকালের ব্যাপারে তা হচ্ছেঃ মুমিনকে মৃত্যুর মুহুর্তে সুসংবাদ দেয়া হবে যে, আল্লাহ তোমাকে এবং তোমাকে যারা তোমার কবর পর্য্ন্ত বহন করে নেবেন, তাদের মাফ করে দিয়েছেন।
আর হযরত আবু হুরায়রা(রা) এর বর্ণনা থেকেও জানা যায়, যার মানে হচ্ছে বেহেশত।
আর আতা থেকে বর্ণিত হয়েছেঃ দুনিয়ায় হচ্ছে এই যে, بُشْرى ফেরেশতারা মৃত্যুর সময় তাদের নিকট রহমত নিয়ে আসবেন। আর পরকালীন হচ্ছে এই যে, بُشْرى তখন ফেরেশতাগণ এ সব মুসলমানের নিকট তাদের সাফল্য ও সম্মান মর্যাদার সুসংবাদ বহন করে নিয়ে আসবেন। তারা তাদের মুখমন্ডলকে উজ্জল দেখতে পাবেন এবং তাদের ডান হাতে তাদের আমলনামা দেয়া হবে, তারা তা পড়বে ইত্যাদি পর্যায়ের সুসংবাদ।
তাহলে অলী-আল্লাহদের যে কোনো কারামত লাভ হবে, যা নিয়ে এখনকার সত্য পীরেরা এবং মিথ্যা পীরেরা দাবি করছে এবং অন্ধ অজ্ঞ মুরীদদের এসব আজগুবী কথাবার্তা বলে সাচ্চা পীর আর ভন্ড পীরের দিকে অধিকতর আকৃষ্ট করে তোলা হচ্ছে।
অলী-আল্লাহদের প্রতি এসব দান বাস্তবিকই আল্লাহর অতি বড় অনুগ্রহ। কিন্তু সে অনুগ্রহ ব্যক্তিগতভাবে তাদের জন্য। কেউ তা লাভ করে থাকলে তার উচিত আল্লাহর শোকর আদায় করা। কিন্তু তার প্রচারণার মারফতে পীর-মুরীদী ব্যবসা চালানোর লিল্লাহিয়াতের কোনো প্রমাণ মিলে কি? আকায়িদের কিতাবে যে কারামতের কথা বলা হয়েছে তা হলো এগুলো। কারামত মানে সম্মান মর্যাদা; আর এগুলোও আল্লাহর পক্ষ হতে দেয়া সম্মান মর্যাদা এবং কুরআন হাদীসের ঘোষণায় প্রমাণিত এসব কারামতকে কোনো মুসলমান অস্বীকার করতে পারেনা। কিন্তু এখানে যে কারামতের কথা বলা হচ্ছে তা এসব নয়। তা হলো কোনো পীর বা অলী আল্লাহ কোনো অঘটন ঘটিয়েছে, কোনো অস্বাভাবিক কাজ করে মুরীদদের তাক লাগিয়ে দিয়েছে, কে শূণ্যে উড়ে গেছে, কে পানির ওপর দিয়ে পায়ে হেঁটে সমুদ্র পার হয়েছে, কে জেলখানায় বন্দী থাকা অবস্থায়ও প্রতিদিন কাবায় গিয়ে নামায পড়েছে, এসব প্রচারণার মানে কি? এসব যে একেবারে ফাঁকা বুলি, কেবল অজ্ঞ মূর্খদের জন্যই তা বলা হয়, তাদের মধ্যেই তা প্রচার করা হয়, এটা যে কোনো সুস্থ বুদ্ধির মানুষই স্বীকার করবেন।
মোটকথা, অলী আল্লাহ হলেই যে তার কারামত বা অলৌকিক ঘটনা ঘটানোর ক্ষমতা থাকতে হবে, কারো ‘কারামত’ থাকলেই যে সে অলী আল্লাহ বলে গণ্য হবে আর কারামত না হলে অলী আল্লাহ মনে করা যাবেনা, সব কথাই ভিত্তিহীন। কুরআন হাদীসের এসব কথার কোনোই দলীল নেই।
মূর্খ পীরেরা ততোধিক মূর্খ মুরীদদের সামনে নিজেদের যে সব কারামত জাহির করে, প্রকাশ করে যেসব অলৌকিক(?) কান্ড কারখানা কিংবা মৃত্যুর পরও তারা অলৌকিকভাবে দুনিয়ার ব্যবস্থাপনার এবং সামাজিক কাজকর্মে কোনোরূপ ‘তাসাররূপ করে বা করতে পারে কিংবা শায়খদের রূহ হাযির হয়, দুনিয়ার অবস্থা জানে বা শুনে ইত্যাদি বলে যে দাবি করা হচ্ছে, সেগুলো সুস্পষ্টভাবে কুফরি বা শিরকী কথাবার্তা ছাড়া আর কি হতে পারে। এ ক্ষমতা স্বয়ং রাসূলকেও দেয়া হয়নি। এ পর্যায়ে কয়েকটি দলীলের উল্লেখ করা যাচ্ছে।
মুল্লা আলী আল কারী লিখেছেনঃ হানাফী ইমামগণ স্পষ্ট ভাষায় বলেছেনঃ নবী করীম(স) গায়েব জানেন-এরূপ আকীদা যে রাখে, সে কাফির। কেননা এরূপ আকীদা আল্লাহর ঘোষণা ‘আল্লাহ ছাড়া আসমান জমিনের কেউ ই গায়েব জানেনা’ এর বিপরীত।( قُل لَّا يَعْلَمُ مَن فِي السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ الْغَيْبَ إِلَّا اللَّهُ ۚ আয়াতের অর্থ হলোঃ যে সব বিষয়ে মানুষের অনুভূতি শক্তি ও বিদ্যাবুদ্ধির বাইরে অবস্থিত গায়েব, তা আসমান-জমিনের গোটা সৃষ্টিলোকের মধ্যে একমাত্র আল্লাহ ছাড়া আর কেউ ই জানেনা। ইমাম ইবনে কাসীর এ আয়াতের তাফসীরে লিখেছেনঃ আল্লাহ তা‘আলা তাঁর রাসূলকে নির্দেশ দিচ্ছেন যে, তিনি সমগ্র সৃষ্টিলোকের শিক্ষাদান প্রসঙ্গে যেন বলে দেন যে, আসমান-জমিনের অধিবাসীদের মধ্যে কেউ-ই গায়েব জানেননা-জানেন কেবলমাত্র আল্লাহ তা‘আলা। অতঃপর লিখেছেনঃ আল্লাহর কথা-‘আল্লাহ ছাড়া’ পূর্ব কথা থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন করে আলাদা করা হয়েছে। তার মানে হলো এই যে, গায়েব আল্লাহ ছাড়া কেউই জানেনা। কেননা এ ব্যাপারে তিনি এক ও একক, এ ব্যাপারে তাঁর কেউই শরীক নেই।)
এমনিভাবে যে লোক বিশ্বাস করবে যে, মৃত লোকেরা দুনিয়ার ব্যাপারে ‘তাসাররুফ’ করে (নিজেদের ইচ্ছেমতো কোনো ঘটনা ঘটানো ও কার্য্ সম্পাদন করে), আল্লাহ ছাড়া এরূপ আকীদা রাখা কুফরী।
বিবাহে যে লোক আল্লাহর রাসূল(স)-কে সাক্ষী বানায়ঃ তাকে হানাফী ফিকাহ এর কিতাবে কাফির বলা হয়েছে। কেননা সে এ কাজ রাসূলে করীমকে ‘আলিমুল গায়েব’ মনে করেই করেছে।
কবরস্থানে যে শিরক বিদয়াত অনুষ্ঠিত হয়, তার বিরুদ্ধে মুজাদ্দেদি আল ফেসানী জিহাদ করেছেন আজীবন। এ পর্যায়ে তিনি যা লিখেছেন, তা এখানে উদ্ধৃত করা হচ্ছেঃ রোগ শোক দূর করার ব্যাপারে মূর্তি দেব-দেবী ও বাতিল মা’বুদের নিকট সাহায্য চাওয়া, যা জাহিল মুসলমানদের মধ্যে রেওয়াজ পেয়ে গেছে-একেবারেই শিরক ও গোমরাহী। নির্মিত ও অনির্মিত পাথরের নিকট নিজেদের প্রয়োজন পূরণের জন্য দো’আ করা মহান আল্লাহকে স্পষ্ট ভাষায় অস্বীকার করার সমান এবং একেবারেই কুফরী। আল্লাহ তা‘আলা কোনো কোনো গোমরাহ লোকদের অবস্থান বর্ণনা প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘তারা নিজের ব্যাপারসমূহকে তাগুতী শক্তির নিকট পেশ করতে ইচ্ছে করে, অথচ আল্লাহ নির্দেশ দিয়েছেন যে, এসব তাগুতী শক্তিকে অস্বীকার করতে হবে। আর শয়তান তাদের বিভ্রান্ত করে গোমরাহীর মধ্যে নিক্ষেপ করতে চায়।
অনেক মেয়েলোক চরম অজ্ঞতাবশত এ ধরনের সাহায্য্ প্রার্থনায় লিপ্ত হয়। কতক অলীক নামের কাছে রোগ শোক ও বিপদাপদ থেকে মুক্তি চায়। তাতে মুশরিকদের রসম-রেওয়াজ জড়িত। খুব কম মেয়েলোকই এই সূক্ষ্ম শিরক হতে রক্ষা পেয়েছে, আর এতদসংক্রান্ত অনুষ্ঠানাদিতে শরিক হয়নি। অবশ্য আল্লাহ যাকে বাঁচিয়েছেন, সেই বেঁচেছে।
বর্তমানকালে অলী-আল্লাহ বলে কথিত লোকদের কবরে যা কিছু ঘটছে, ঘটছে বিশেষ পীরের বিশেষ মুরীদরা জীবিত পীরের দরবারে বা মৃত পীরের কবরে গিয়ে যা কিছু করছে, তার কাছ থেকে রূহানী ফায়েজ হাসিল করছে, বিপদে আপদে সাহায্য প্রার্থনা করছে, তা যে সম্পূর্ণরূপে শিরকী কাজ এবং মুসলিম সমাজে তা যে শিরকের বিদয়াত মুজাদ্দিদে আলফেসানীর কথার পূর্বোক্ত উদ্ধৃতি থেকে তা স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে। অথচ বড়ই আফসোস, তাঁরই পরবর্তীকালে মুরীদ ও তস্য মুরীদরা আজ ঠিক সেই সব কাজই করেছে এবং তা সত্বেও নিজেদের ‘আহলে সুন্নাত আল জামায়াত’ হওয়ার দাবি করছে। মুজাদ্দিদে আলফেসানীর উপরোক্ত যুক্তিপূর্ণ কথার আলোকে এদেরকে ‘আহলে সুন্নাত না বলে বরং বলা যায় আহলে সুন্নাত আল বিদয়াত। মুজাদ্দিদে আলফেসানী(রহ) এ ধরনের কাজকে স্পষ্ট ভাষায় শিরকী কাজ এবং এই লোকদেরকে মুশরিক বলে অভিহিত করেছেন। কেননা একাজ কেবল মুশরিকদের দ্বারাই সম্ভব। মুশরিক লোকেরা এ ধরনের কাজ করে বলেইতো তারা মুশরিক। এ ধরনের কাজ না করলেতো তারা নিশ্চয়ই মুশরিক হতোনা। তাহলে এক শ্রেণীর মুসলিম বা পীর আলিম নামধারী লোকেরা যদি এরূপ কাজ করে, তবে তা কোনো শিরকী কাজ হবেনা এবং তারাই বা আল্লাহর দরবারে ‘মুশরিক’ রূপে নিন্দিত হবেনা কেন? দীর্ঘ আলোচনার শেষ পর্যায়ে এ কালের পীর-মুরীদ ও ‘অলী-আল্লাহ’ বলে কথিত লোকদের স্মরণ করিয়ে দিতে চাই হযরত মুজাদ্দিদে আলফেসানী(রহ) এর নসীহত, যা তিনি করেছিলেন তদানীন্তন বিদয়াতী পীরদের প্রতি-তা হলোঃ
-একালের তাসাউফপন্থীরা যদি ইনসাফ করে এবং ইসলামের দূর্বল অবস্থা ও মিথ্যার ব্যাপক রূপ লক্ষ্য করে তাহলে তাদের উচিত সুন্নাতের বাইরে তাদের পীরদের পায়রুবী না করা। আর মনগড়া বিষয়গুলোকে নিজেদের পীরদের আমল করতে দেখার দোহাই দিয়ে অনুসরণ না করা।
বস্তুত নবী করীম(স) এর অনুসরণ করে চলা নিঃসন্দেহে মুক্তির বাহন, ভালো ও মঙ্গলময় ফলের উৎস। সুন্নাতের বাইরের বিষয়গুলোকে অন্ধভাবে মেনে চলার মধ্যে বিপদের ওপর বিপদ রয়েছে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/289/43
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।