মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
এ পর্যায়ে আর একটি বড় প্রশ্ন হলো এই যে, পীর-মুরীদীর ক্ষেত্রে এই যে, ‘গদিনশীন পীর’ হওয়ার প্রখা চালু রয়েছে ইসলামী শরীয়তে এর কোনো ভিত্তি আছে কি? কোনো মতে একজন লোক যদি একবার পীর নামে খ্যাত হতে পারলো, অমনি তাঁর বড় পুত্র অবশ্যই তাঁর গদীনশীন হবে। কিন্তু পীরের গদী কোনটি, যার ওপর বড় সাহেব ‘নশীন’ হন? পীর কি জমিদার যে, তার মৃত্যুর পর তার বড় পুত্র বাবার স্থলে জমিদার হয়ে বসবে? পীর-মুরীদী কি কোনো রাজা প্রজার ব্যাপার-পীর সাহেব রাজা বাদশাহ এবং মুরীদরা তার প্রজা, আর সে রাজার অন্তর্ধানের পর অমনি তার বড় পুত্র সিংহাসনে আসীন হয়ে বসবে? না পীর কোনো বড় দোকানদার যে, তার মরে যাওয়ার পরে সে দোকানদারের গদীর মালিক হয়ে বসবে তার বড় ছেলে? …এর কোনটি? এর মধ্যে যা-ই হোক, এর কোনোটির সাথে যে ইসলামের বিন্দুমাত্র সম্পর্ক্ নেই, তা তো স্পষ্ট কথা। ইসলামে নেই কোনো জমিদারী. বাদশাহী; নেই দ্বীন নিয়ে এখানে কোনো দোকানদারী ব্যবসা চালাবার অবকাশ।
শুধু তা্-ই নয়, কেউ পীর বলে খ্যাত হলে অমনি তার ছেলেরা ‘শাহ’ বলে অভিহিত হতে শুরু করে। ‘শাহ’ মানে বাদশাহ। পীরের ছেলেকে ‘শাহ’ বা ‘বাদশাহ’ বলার এই মানে হতে পারে যে, পীর সাহেব নিজে একজন বাদশাহ; আর তার ছেলেরা খুঁদে বাদশাহ-বাদশাহজাদা। বুড়ো বাদশাহর চলে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এর ছেলেদের মধ্যে যে বড়, সে অমনি পীর-গদীনশীন হয়ে বসবে, আর অমনি তার পুত্রেরা পূর্বানুরূপ শাহ উপাধিতে ভূষিত হতে শুরু করবে। এই চিরন্তন নিয়ম আবহমান কাল হতে চলে আসছে, এর ব্যতিক্রম দেখা যায়নি কখনো, কোনো ক্ষেত্রেই।
এ থেকে স্পষ্ট বুঝতে পারা যায় যে, পীর মুরীদী প্রথাটাই একটা জাহিলিয়াতের প্রথা। অন্তত এ কথাটাতো পরিষ্কার যে, এটা প্রচলিত হয়েছে এমন এক যুগে, যখন সমাজ ও রাষ্ট্রে প্রচন্ড বাদশাহী প্রথা প্রতিষ্ঠিত ছিল। সামাজিক রাজনৈতিক ক্ষেত্রে এ সর্বাত্মক ব্যবস্থার প্রভাব নিতান্ত ধর্মীয় ক্ষেত্রেও এমন প্রচন্ড হয়ে পড়েছিল যে, ধর্মীয় নেতৃত্বকেও অনুরূপ এক বাদশাহী মনে করা হয়েছে। বাদশাহীর ন্যায় ‘বাদশাহের ছেলে বাদশাহ হবে’ এই নীতি অনুযায়ী ‘পীরের ছেলেও পীর হবে’ এ ধারণাও বদ্ধমূল করে নেয়া হয়েছে।
বাদশাহর ছেলেকে বলা হয়-শাহজাদা-এ ঠিক শাব্দিক অর্থেই সঠিক প্রয়োগ(ইংরেজীতে বলা হয় Prince), পীরের ছেলেকেও তাই শাহ বলা হতে লাগলো-কৃত্রিম অর্থে। কেননা পীরও আসলে বাদশাহ নয়। আর তার ছেলেও নয় বাদশাহজাদা। এখানে মজার ব্যাপার এই যে, পীরের ছেলেরাই সবকিছু, তারাই শাহ নামে অভিহিত হয়, তাদের মধ্যে যে বড় সেই হয় গদীনশীন। কিন্তু বেচারী মেয়েদের কোনো অধিকার স্বীকৃত নয়, না মেয়েদের সন্তানের কোনো অধিকার সেখানে স্বীকৃত। সব কিছুই চলে পীরের ছেলে পীর, তার ছেলে পীর এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত ধারায়। এই ধারা কখনো পীরের কন্যাদের দিকে প্রবাহিত হয়না। ঠিক বাদশাহী সিস্টেমও তাই। সেখানে গদী-তথা রাজতখতের ওপর একমাত্র অধিকার ছেলেদের, সব ছেলে নয়, কেবল মাত্র বড় ছেলের আর তার বংশধরদের। মুসলমানদের মাঝে যে বাদশাহী সিস্টেম রয়েছে, তাতে অনেক সময় দেখা যায় বড় ছেলে বাদশাহ হয়ে গেলে ছোট ভাই বা অন্য কেউ-‘অলী আহমদ’ হয়। তার মানে এ বাদশাহর পর তার ছেলে নয়, তার ভাই-ই হবে গদীনশীন। কিন্তু পীর মুরীদীর ক্ষেত্রে এ বাদশাহী সিস্টেম এতদূর বিকৃতরূপ লাভ করেছে যে. এখানে বড় ছেলেই সব। বড় ছেলে একবার গদীনশীন হয়ে বসতে পারলে সে-ই হর্তা কর্তা বিধাতা। সে পিতার কেবল গদী-ই দখল করেনা, পিতার মুরীদরা সব তার মুরীদে পরিণত হয়ে যায় আপনা আপনিভাবে। যেমন জমিদার বা রাজার প্রজারা আপনা আপনি তার ছেলেরও প্রজা হয়ে যায়। আর বিত্ত সম্পত্তি কিছু থাকলে তারও একমাত্র ভোগদখলকারী হয় এই বড় সাহেব, যিনি গদীনশীন হয়ে বসেন। ছোট ভাই কেউ থাকলে তারা হয় চরম অসহায়, উপেক্ষিত, বঞ্চিত এবং পিতার বিশাল মুরীদ মহল হতে বিতাড়িত।
কিন্তু প্রশ্ন এই যে, এসব কথা কি ধর্মীয়? হতে পারে ব্রাক্ষ্মণ্য ধর্মের এ-ই নীতি। সেখানে ব্রাক্ষ্মণের বড় পুত্র অবশ্যই ব্রাক্ষ্মণ হবে, আর সে আপনা আপনি পেয়ে যাবে পিতার জযমানদের। এতদিন তারা ছিল বুড়ো ব্রাক্ষ্মণের জযমান আর এখন হবে তারা এই ব্রাক্ষ্মণ-পুত্র- ব্রাক্ষ্মণের জযমান। তবে কি এই ব্রাক্ষ্মণপ্রথা হরফে হরফে মুসলিম সমাজেও চালু হয়ে গেছে।
এ সম্পর্কে কারোরই এক বিন্দু সন্দেহও থাকতে পারেনা যে, এ প্রথার সাথে ইসলামের কোনোই সম্পর্ক নেই। এ প্রথা কিছুমাত্র ইসলামী নয়। ইসলামে গদীনশীন হওয়ার কোনো অবকাশ নেই, নেই শাহ হওয়ার কোনো সুযোগ। ছোট ভাই এবং বোনদের অধিকার হরণ করে একাই সব কিছু গ্রাস করে নেয়ার এ ব্যবস্থা ইসলামে আদৌ সমর্থিত হতে পারেনা।
ইসলাম আমরা পেয়েছি হযরত মুহাম্মদ(স) এর নিকট থেকে। তিনি ইসলামকে শুধু মৌখিক নসীহতের মাধ্যমেই পেশ করেননি, তিনি তাঁর বাস্তব জীবন দিয়ে ইসলামের পূর্ণাঙ্গ আদর্শকে বাস্তবায়িত ও সমাজে প্রতিফলিত করে গেছেন। তিনি তেইশ বছরের সাধনা ও সংগ্রামের ফলে কায়েম করে গেছেন এক বিরাট রাষ্ট্র। কিন্তু তাঁর ইন্তিকালের পর তাঁর বংশে চললোনা নব্যুয়তের ধারা, না হলো কেউ গদীনশীন নবী। তিনি যে রাষ্ট্র কায়েম করে গেলেন, তাতেও কায়েম করা হলোনা তাঁর বংশের লোকদের কর্তৃত্ব। বরং মুসলমানেরা স্বাধীনভাবে নিজেদের মধ্য থেকে ইসলামের বিধান অনুযায়ী সর্বাধিক মুত্তাকী ব্যক্তিকে খলীফা নির্বাচিত করে নিলেন। সে খলীফা না হলো তাঁর প্রিয়তমা কন্যা ফাতিমা, না তাঁর জামাতা, না তাঁর প্রাণাধিক প্রিয় নাতি দৌহিত্ররা। নব্যুয়তের ধারাও চললোনা তাঁর বংশে। এমনি তাঁর সম্মানিত জামাতাদেরও কেউ এ সূত্রে রাসূল পরবর্তী খলীফা হলেননা। উত্তরকালে তাঁদের কেউ খলীফা হলেও তা রাসূলের জামাতা হওয়ার কারণে নয়, তা হয়েছেন তদানীন্তন সমাজের তাঁদের নৈতিক অবস্থান ও যোগ্যতার বৈশিষ্ট্যের কারণে। এ-ই ইসলামী ব্যবস্থা। এখানে বংশানুক্রমিকতা সম্পূর্ণ অচল। এ পীর মুরীদী রাসূলে করীম(স) থেকেই যদি চলে এসে থাকে-যেমন দাবি করা হচ্ছে, তাহলে এখানে গদীনশীন, ‘শাহ’ হওয়ার প্রথা এল কোথ্থেকে? রাসূলের জীবনে ও তাঁর কায়েম করা সমাজে তো এর নাম নিশানাও দেখা যায়না। খুলাফায়ে রাশেদুন এর সময়েও ছিলনা খলীফার ছেলে খলীফা হয়ে বসার প্রথা। বরং তাঁরা প্রত্যেকেই এ বংশানুক্রমিকতার প্রতিবাদ করেছেন। কোনো খলীফার ছেলেই খলীফা হতে পারেনি-না হযরত আবু বকরের, না উমর ফারূকের, না উসমান জিন্নুরাইনের, না আলী হায়দার(রা) এর। তাহলে প্রমাণিত হলো যে, এ প্রথা রাসূল(স) এর নিকট হতে গ্রহণ করা হয়নি। অতএব তা সুন্নাত নয়, তা স্পষ্ট বিদয়াত। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় এ বিদয়াতী প্রথায় গদীপ্রাপ্ত লোকেরাই সমাজে নিজেদেরকে পেশ করেছে সুন্নাতের বড় পায়রবী করনেওয়ালা- সুন্নাতের বড় ধারক বাহকরূপে। তার দৃষ্টিতে তিনি ছাড়া আর কেউই নাকি হক পথে নেই। অথচ সম্পূর্ণ ‘বিদয়াতী’ সিস্টেমে ‘গদীনশীন’ হয়ে নিজেকে ‘আহলে সুন্নাত’ হিসাবে পেশ করা এবং সুন্নাতের বড় অনুসারী হওয়ার দাবি করা বিদয়াত, বিদয়াতের নির্লজ্জ দৃষ্টতা ছাড়া আর কিছু নয়।
এখানেই শেষ নয়, এ গদীনশিন যদি জনমতের ভিত্তিতে ও উপযুক্ততার কারণে হতো, তাহলেও তার কোনো না কোনো দৃষ্টান্ত সলফে সালেহীনে হয়ত বা পাওয়া যেত। কিন্তু এখানে কোনো জনমতের স্থান নেই, যোগ্যতা অযোগ্যতার বিচার নেই। ব্যস বড় ছেলে হওয়াই গদী পাওয়ার অধিকারী হওয়ার জন্য বড় দলীল। এর ফলে এ গদীনশিন হয়ে গেছে এক ন্যক্কারজনক ব্রাক্ষ্মণ্যবাদ। পীরের মৃত্যুর পর তাঁর মুরীদান খলীফার মাঝে সবচেয়ে মুত্তাকী কোন লোক সত্যি পরবর্তী পীর হওয়ার সর্বাধিক উপযুক্ত, সে বিচার করা হয়না এখানে এবং সুন্নাত তরীকা মতো সবচেয়ে বেশি মুত্তাকী ও যোগ্য ব্যক্তিকে গদীনশিন করার কোনো প্রবণতাই এখানে পরিলক্ষিত হয়না। সে রকম লোককে নিজেদের মধ্যেও তালাশ করে বের করা হয়না। এখানে স্থায়ীভাবে ধরে নেয়া হয়-স্বয়ং পীর সাহেব ও জানেন, জানে মুরীদরা, জানে সাধারণ মানুষ যে হুযুরের বড় ছেলেই হবে পরবর্তী পীর, গদীনশিন। সে ছেলে লেখাপড়া কিছু জানুক আর না-ই জানুক, নৈতিক চরিত্র তার যতই খারাপ হোক, জ্ঞান বুদ্ধিতে সে যতই বুদ্ধু হোক, সেই হবে পরবর্তী পীর। আর মরহুম পীরের মতোই যোগ্যতাসম্পন্ন লোক সে দরবারে অন্য কেউ থাকলেও তাকে সেখানে কোনো স্থান দেয়া হবেনা। শুধু তা-ই নয়, সে যোগ্য ও অধিক মুত্তাকী ব্যক্তিকেও বরং মুরীদ হতে হবে সে অযোগ্য অ-আলীম-মানে জাহিল, চরিত্রহীন ও বুদ্ধু গদীনশিন পীরের। নতুবা সে দরবারে তার কোনো স্থান হবেনা, সেখানে থেকে অনতিবিলম্বে বিতাড়িত হতে হবে।
এ যে তথাকথিত জমিদারতন্ত্র, রাজতন্ত্র, আর ব্রাক্ষ্মণ্যবাদ প্রভৃতি জাহিলিয়াতের সব পদ্ধতিকেও ছাড়িয়ে গেছে। এর সাথে ইসলামের সুন্নাতের দূরতম সম্পর্কও থাকতে পারে কি?
কোনোরূপ সম্পর্ক থাকতে পারেনা। শুধু তা-ই নয়, এই পীর ও তার মুরীদরা- এ পীরের সমর্থকরা-হাদীয়া তোহফা ও টাকা পয়সা যারা দেয়, তারা সকলেই রাসূল(স) এর ঘোষণা অনুযায়ী আল্লাহর নিকট অভিশপ্ত। হযরত আলী(রা) বর্ণিত হাদীসে রাসূলে করীম(স) এর চারটি কথার তৃতীয় কথা হচ্ছেঃ (আরবি)
-আল্লাহ তা‘আলা অভিশপ্ত করেছেন সেই ব্যক্তিকে যে বিদয়াতকারীকে বা বিদয়াতপন্থীকে আশ্রয় দিয়েছে, সম্মান করেছে ও সাহায্য সহযোগিতা দিয়েছে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/289/33
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।