মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
ইসলামী আধ্যাত্মবাদের মূল উৎস যদিও শুরুতে কুরআন ও সুন্নাতই ছিল; কিন্তু উত্তরকালে বিস্তারিত ও খুঁটিনাটি ব্যাপারে গিয়ে তা তাসাউফের নাম ধারণ করে এবং তার আদর্শ ও লক্ষ্য কুরআন সুন্নাতের আদর্শ ও লক্ষ্য থেকে সম্পূর্ণ পৃথক হয়ে যায়। দু’টোর তুলনামূলক অধ্যয়নে একথা স্পষ্ট হয়ে উঠে যে, তাসাউফের আদর্শের ক্ষেত্রে এসে ইসলামের কোনো কোনো মৌল আদর্শ ও লক্ষ্য ম্লান এবং উপেক্ষিত হয়ে পড়েছে, আর কোনো কোনো খুঁটিনাটি বিষয় মাত্রাতিরিক্ত গুরুত্ব লাভ করেছে। কোনো কোনো ভাবধারা তাসাউফে এসে অধিক তীব্র ও প্রকট এবং কোনো কোনোটি অপেক্ষাকৃত দূর্বল ও কম গুরুত্বপূর্ণ হয়ে গেছে। কোনো কোনো ইসলামী ধারণা তাসাউফের ক্ষেত্রে এসে সম্পূর্ণ নতুন অর্থ ধারণ করেছে। আর কোনো কোনোটির অর্থ ও তাৎপর্যে আংশিক পরিবর্তন সূচিত হয়েছে। আবার ইসলামের অনেকগুলো জরুরী দিককে তাসাউফ সম্পূর্ণ উপেক্ষাই করেছে এবং কোনো কোনো দিক দিয়ে বাইরের অনেক জিনিসই শামিল হয়ে পড়েছে তাসাউফের মধ্যে।
এখানে এসব বিষয় বিস্তারিত আলোচনা করার অবকাশ না থাকলেও সংক্ষেপে বিষয়টি ব্যাখ্যা দেয়ার চেষ্টা করছি-যেন কেউ ধারণা না করে বসেন যে, তাসাউফের প্রতি শত্রুতা পোষণের কারণেই এসব কথা বলা হচ্ছে। কেননা তা আদৌ সত্য নয়। এখানে কয়েকটি দৃষ্টান্ত পেশ করা হচ্ছে।
ইসলামের প্রাথমিক পর্যায়ে ‘আমল’ ব্যাপক অর্থে ব্যবহৃত হতো। কিন্তু তাসাউফে এসে তার ক্ষেত্র হয়ে যায় একেবারে সংকীর্ণ, সীমাবদ্ধ। মানুষের সামাজিক জীবন, সামাজিক ব্যবস্থা, প্রয়োজন জটিলতার সুষ্ঠ ও কার্য্কর সমাধান বের করা ইসলামের লক্ষ্য; কিন্তু এসব জিনিসের প্রতি তাসাউফপন্থীদের কোনো আগ্রহ ও কৌতুহলই নেই। এসব জিনিস তাদের তৎপরতার সম্পূর্ণ বাইরে অবস্থিত। ইসলামের প্রাথমিককালে ‘ফিকির’, ‘জযবা’ ও ‘আমল’- এ তিনটির মাঝে পরস্পর গভীর সম্পর্ক ও পূর্ণ ভারসাম্য রক্ষিত ছিল; কিন্তু তাসাউফপন্থীরা আবেগ ও কলবী-কাইফীয়াতের উপর এত বেশি গুরুত্ব আরোপ করে যে, তদ্দরুণ আমল - বিশেষ করে চিন্তা বা ফিকির এর গুরুত্ব কম হয়ে গেছে বা আদৌ থাকেণি। আল্লাহর ভালোবাসা দ্বীন ইসলামের মৌল ভাবধারা। ইসলামের প্রাথমিক যুগে এ ভালবাসা ‘আমল’ থেকে বিচ্ছিন্ন ও আলাদা কোনো জিনিস ছিলনা, তেমন কিছু হওয়ারও স্বীকৃতি পায়নি কোনো দিন বরং আল্লাহর ভালোবাসা ছিল এমন এক প্রাণ উদ্দীপক ভাবধারা, যা সেসব আমলের মধ্যেই প্রবাহিত ও সঞ্চারিত হয়েছিল, যা জমিনের বুকে আল্লাহর খলীফা হওয়ার কারণে বাস্তবায়িত করা মানুষের পক্ষে অপরিহার্য্ ছিল। কিন্তু পরবর্তীকালে তাসাউফপন্থীদের আদর্শ ও লক্ষ্য আমল-এর ক্ষেত্রে কেবল সংকীর্ণই হয়ে যায়নি, ‘আমলে’র সাথে ‘মুহাব্বাত’ জোরদার করনের জন্য তাসাউফপন্থীরা নানা উপায় অবলম্বন করেছে। যেমনঃ গানের আসর এবং সঙ্গীত চর্চা ইত্যাদির দ্বারা ঈমান মজবুত হয় বলে মনে করা হয়েছে। কিন্তু প্রাথমিক যুকে ‘আল্লাহর মুহাব্বত’ মানুষের দ্বারা এই কাজ করিয়েছিল-তাসাউফপন্থীরা এর প্রমাণ দিতে পারবে কি?
‘যিকির’ কেও এখানে সংকীর্ণ অর্থে ব্যবহার করা হয়েছে। মাথা নিচু করে বসে মুখে ‘আল্লাহ’ ‘আল্লাহ’ কিংবা ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ কলেমা নিম্নস্বরে বা উচ্চস্বরে উচ্চারণ করাকেই যিকির বলে ধরে নেয়া হচ্ছে এবং তা করলেই আল্লাহর যিকির করার কর্তব্য আদায় হয়ে গেল বলে ধারণা করা হচ্ছে। কিন্তু এ যে কতো সংকীর্ণ ধারণা এবং ইসলামী আদর্শের একটি মৌল বিষয়কে বিকৃত করা, তাতে কোনোই সন্দেহ নেই। কুরআন মজীদে আল্লাহর যিকির করার স্পষ্ট নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সূরা আল বাকারায় বলা হয়েছেঃ
– তোমরা আমায় স্মরণ করো, আমিও তোমাদের স্মরণ করবো, তোমরা আমার শোকর করো, আমার অকৃতজ্ঞতা করো না।
আল্লামা রাগেব ইফসানী ‘যিকির’ শব্দের অর্থ লিখেছেনঃ
যিকির হচ্ছে মনের এমন একটা অবস্থা যা দ্বারা মানুষ যে জ্ঞান সংরক্ষণ করতে চায় তা করা তার পক্ষে সম্ভব হয়। ইয়াদ রাখা বা স্মরণে রাখা বা সংরক্ষণ যেমন, এ-ও তেমনি।
অপর অর্থে বলা হয়েছে ‘যিকির’ অর্থ মনে কোনো জিনিসের উপস্থিতি। তিনি আরও লিখেছেন-‘যিকির’ দু’ভাবে সম্ভব-একটি অন্তরের যিকির, অপরটি মুখের যিকির। তার ভুলে যাওয়া কথা স্মরণ করা ও ভুলে না গিয়ে স্মরণে রাখা, সবসময় স্মৃতিপটে জাগ্রত রাখা, সংরক্ষণ করা, এই উভয় অবস্থায়ই যিকির শব্দটি প্রযোজ্য।
আল্লামা কুরতবী লিখেছেনঃ কোনো জিনিস সম্পর্কে দিলের সদা সচেতন ও অবহিত হওয়া, সে বিষয়ে মনের জাগৃতি।
আর আয়াতটির তরজমা করেছেনঃ
তোমরা আমার আনুগত্য করে আমাকে স্মরণে রাখো। তাহলে আমি তোমাদের স্মরণ রাখবো সওয়াব দিয়ে, গুনাহ মাফ করে।
অন্য কথায় যিকির হচ্ছে আল্লাহকে স্মরণ রেখে তাঁর ইবাদত করা, আনুগত্য ও হুকুম পালন করা মনের আগ্রহ সহকারে।
–প্রকৃত মুমিন তারাই, আল্লাহর উল্লেখ বা স্মরণ হলেই যাদের দিল কেঁপে উঠে।
এ আয়াতের তাফসীরে ইমাম ইবনে কাসীর লিখেছেনঃ অতএব হে মুমিনেরা-আল্লাহর নির্ধারিত ফরযসমূহ যথাযথভাবে পালন করো।
পরে এ তাফসীরকার লিখেছেনঃ মুমিনের-আল্লাহর যিকির হলেই যার দিল কেঁপে উঠে-কর্তব্য হচ্ছে সে আল্লাহকে ভয় করবে এবং তার আদেশসমূহ পালন করবে ও নিষেধসমূহ তরক করে চলবে।
এ আলোচনা থেকে স্পষ্ট হয়ে উঠে যে, আল্লাহর যিকির করতে বলার অর্থ আল্লাহর ইবাদত করা, সর্বক্ষণ তাঁকে মেনে চলা, তাঁকেই নিজের একমাত্র মা’বুদ মনে করা এবং নিজেকে মনে করা একমাত্র তাঁরই দাস এবং এ বিষয়ে কখনোই গাফিল হয়ে না যাওয়া, সব সময়ই আল্লাহকে স্মরণ রাখা, কোনো সময়ই তাঁকে ভুলে না যাওয়া।
তাছাড়া কুরআনের ঘোষণা অনুযায়ী ‘যিকির’ ই একমাত্র করণীয় কাজ নয়। সেই সঙ্গে ‘ফিকির’ ও অপরিহার্য্। এই যিকির ও ফিকির-উভয়ের গুরুত্ব ও সার্বক্ষণিকতা বোঝাতে গিয়ে আল্লাহ বলেছেনঃ
-যারাই আল্লাহর যিকির করে দাঁড়ানো, বসা ও পার্শ্ব নির্ভর শয়ন অবস্থায় এবং নভোমন্ডল ও পৃথিবী সৃষ্টির বিষয়ে চিন্তা ভাবনা গবেষণা করে (বস্তুত তারাই বুদ্ধিমান লোক।)
(আল ইমরানঃ১৯১)
আয়াতটিতে আল্লাহর যিকির করতে বলা হয়েছে বসা, দাঁড়ানো ও শয়ন অবস্থায় অর্থাৎ সর্বাবস্থায়। কেননা এই তিনটি অবস্থার মধ্যে যে কোনো একটি অবস্থায়ই মানুষ থাকে। কোনো সময়ই এই তিনটির একটি ভিন্ন অন্য কোনো অবস্থায়ই তার হয়না, হয় সে বসে আছে, নয় দাঁড়িয়ে আছে কিংবা শুয়ে আছে। অতএব সর্বাবস্থায়ই আল্লাহর যিকির করতে হবে। অর্থাৎ স্মরণে রাখতে হবে, কোনো অবস্থায়ই আল্লাহকে ভুলে যাওয়া চলবেনা।
দ্বিতীয়ত, আয়াতটিতে শুধু যিকির এ কথাই বলা হয়নি, সেই সঙ্গে ফিকির এর কথাও বলা হয়েছে। আর ইমাম রাগেব এর ভাষায় ফিকির বলতে বোঝায়ঃ কোনো বিষয়ে জানবার জন্য নিয়োজিত শক্তি। বলা হয়েছে এ শব্দটির আসল অর্থ-বিষয়াদি ঘর্ষণ করা তার নিগুঢ় তত্ত্ব ও গভীর সত্য জানবার উদ্দেশ্য।
এক কথায় নিছকই যিকির আল্লাহর কাম্য নয়, বুদ্ধিমান লোকেরও কর্ম নয়। সেই সঙ্গে ফিকিরও আবশ্যক। ফিকিরবিহীন যিকির নির্বোধ লোকদের কাজ। আর ‘যিকির’ বিহীন ‘ফিকির’ হচ্ছে নাস্তিক ও আল্লাহদ্রোহী লোকদের কাজ।
কিন্তু আজকালকার ‘তাসাউফে’ শুধু যিকির আছে, ‘ফিকির’ নেই। যিকির এর সঙ্গে ফিকির করলে প্রচলিত ভাষায় তা আর তাসাউফ হলোনা। কোনো পীরের মুরীদ তা করতে চাইলে তার মুরীদগিরীই চলে যাবে, শুধু তাই নয়, এ যিকিরকেও তথায় খুবই ভালো অর্থে গ্রহণ করা হয়েছে ও নির্দিষ্ট সময়ে চোখ বন্ধ করে মুখে ‘আল্লাহ’ ‘আল্লাহ’ করার মধ্যেই সীমাবদ্ধ করে দেয়া হয়েছে, চলে সেই নির্দিষ্ট সময়ের বাইরে অন্যান্য সময়েও। এবং সেই বিশাল প্রক্রিয়ার বাইরে জীবনের বিশাল ক্ষেত্রে কোথাও তাদের জীবনে আল্লাহর যিকির এর কোনো লক্ষণ দেখা যায়না। ‘যিকির’ এর এই প্রক্রিয়া ও সময় নির্ধারণ ইসলামের এক মারাত্মক বিদয়াত। এই ‘বিদয়াত’ ইসলামকে সর্বাত্মক বিপ্লবী আদর্শ হতে না দিয়ে একটা যোগ সাধনার বৈরাগ্য ধর্মে পরিণত করে রেখেছে।
মৌখিক যিকিরও যিকির বটে যদি তার সাথে অন্তরের যিকির যুক্ত হয়। তাই ইমাম কুরতবী লিখেছেনঃ মৌখিক যিকিরকেও যিকির বলা হয়েছে, কেননা তা অন্তরের যিকির এর নিদর্শন।
অর্থাৎ অন্তরের যিকিরের যিকিরই মৌলিক যিকির এর রূপ লাভ করে। কিন্তু তাসাউফে তো সম্পূর্ণ ভিন্ন ধরনের যিকির প্রবর্তিত। সেখানে অন্তরের যিকির এর কোনো স্থান নেই। অন্তরের যিকির এর যে লক্ষ্য, তা এখানে সম্পূর্ণ উপেক্ষিত। এখানে মৌখিক যিকিরই প্রধানত মুখ্য। তার আঘাতে কলব সাফ করা ও ছয় লতীফা জারি করাই যে যিকির এর মূল উদ্দেশ্য। তাই বলা হয় সে যিকির কুরআনের বলা যিকির হতে সম্পূর্ণ ভিন্নতর জিনিস। যার কোনো দলীল কুরআন হাদীসে নেই। লতীফাও একটি বিদয়াতী ধারণা মাত্র। কুরআন হাদীসে তা স্বীকৃত নয়, তা থেকে পাওয়া যায়নি।
অপর একটি আয়াতে বলা হয়েছেঃ (আরবি)
-হে ঈমানদার লোকেরা! তোমরা আল্লাহকে খুব বেশি বেশি স্মরণ করো।
আল্লামা কুরতবী এর তাফসীরে লিখেছেনঃ আয়াতটিতে যে যিকির করার নির্দেশ, তার অর্থ দিল দিয়ে এমনভাবে যিকির করা, যা সর্বাবস্থায় ও স্থায়ীভাবে রক্ষা করা সম্ভব হবে। কোনো সময়ই তা হারিয়ে ফেলবেনা বা ভুলে যাবেনা।
-আল্লাহর দিকে উথ্থিত হয় সব পাক পবিত্র কথাবার্তা। আর নেক আমলই তাকে উথ্থিত করে। (আল ফাতিরঃ১০)
অর্থাৎ ভালো ভালো ও পবিত্র কথা-তওহীদ বিশ্বাস, আল্লাহর যিকির, কুরআন তিলাওয়াত ইত্যাদি সবই আল্লাহর নিকট পৌঁছায়, তবে তা পোঁছিয়ে দেয় নেক আমল। নেক আমলবিহীন শুধু কথা, শুধু যিকির বা তওহীদ বিশ্বাস অর্থহীন। তা আল্লাহর নিকট কবুল হবেনা।
এই কারণে, হাদীসে যিকির এর বহু ফযীলত বর্ণিত হয়েছে বটে; কিন্তু সেই সঙ্গে তার বাস্তব রূপ কি হলে তা আল্লাহর যিকির হয় বা আল্লাহর যিকির এর বাস্তব পন্থা কি, তা স্পষ্ট ভাষায় বলে দেয়া হয়েছে।
নবী করীম(স) বলেছেনঃ (আরবি)
-যে লোক আল্লাহর আনুগত্য করলো, সেই আল্লাহর যিকির করলো, যদিও তার(নফল) নামায রোযা ও কল্যাণময় কাজ খুব কমই হলো।
অর্থাৎ আল্লাহর যিকির এর সঠিক বাস্তবরূপ হচ্ছে আল্লাহর আনুগত্য করা, তাঁর হুকুম আহকাম পালন করা। কেননা আল্লাহর হুকুম পালন করলে আল্লাহর যিকির স্বতঃই হয়ে যায়। কেননা আল্লাহ স্মরণে না থাকলে আল্লাহর হুকুম পালন সম্ভব হতে পারেনা। অতএব আল্লাহর ‘যিকির’ বিশেষ একটা ধরনে ও নির্দিষ্ট সময় ও সংখ্যার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখাই হচ্ছে বিদয়াত। তাসাউফে তথা পীর মুরীদীতে এই বিদয়াতই মূল উপজীব্য। এরূপ যিকির এর অনুষ্ঠান করেই পীরেরা বোকা লোকদের ভেড়া বানিয়ে রাখে এবং হাদীয়া-তোহফা আকারে ঘোষণা করে। বস্তুত যিকির এর এই ধরন হিন্দু বৈরাগ্যবাদী ও বৈষ্ঞবদের মধ্যেই প্রচলিত। পীরদের এই পদ্ধতিটি হিন্দু বৈরাগ্যবাদী হতে গৃহীত হয়েছে বললে কিছুমাত্র অত্যুক্তি করা হবেনা।
বৈরাগ্যবাদের বিরুদ্ধে কুরআন মজীদ চিরকালই সোচ্চার। নবী করীম(স) সারা জীবনের সাধনা দিয়ে এর বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলেছেন, মানুষের বৈরাগ্যবাদী ঝোঁক ও প্রবণতাকে দূর করেছেন। কিন্তু তাসাউফ এ জিনিসটিকে শক্তিশালী করে তুলেছে, তাসাউফের প্রধান হোতাদের মধ্যে বৈষয়িক স্বাদ আস্বাদন ও সামাজিক সম্পর্ক সম্বন্ধের ক্ষেত্রে এক প্রবল নেতিবাচক ভাবধারা বর্তমানে দেখতে পাওয়া যায়। অথচ ইসলামের প্রাথমিক পর্যায়ে এ জিনিস ছিলনা। রাসূলের জামানায় সাহাবীদের মাঝে এমন ভাবধারা কখনো দেখা দিলে নবী করীম(স) কঠোর ভাষায় তার প্রতিবাদ করেছেন। কুরআন হাদীসে ‘তাজকিয়া’র ব্যাপারে যিকির ই ইলাহী-আল্লাহর যিকির এর উপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছিল। কিন্তু ইসলামের দৃষ্টিতে তা-ই একমাত্র উপায় ছিলনা। যিকিরে ইলাহীর সঙ্গে সঙ্গে আরো অনেক উপায় ও উপকরণ ছিল, যা মুসলমানদের তাজকীয়ায়ে নফস হাসিলের উদ্দেশ্যে প্রয়োগ করা হতো। এ পর্যায়ে ‘জিহাদ ফী সাবীলিল্লাহ’-র কথা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। বস্তুত ‘তাজকীয়ায়ে নফস’ সবর, তাওয়াক্কুল, আল্লাহর নিকট আত্মসমর্প্ণ, আল্লাহর ব্যবস্থায় রাজি হওয়া প্রভৃতি অতি উঁচুদরের মহান গুণাবলী অর্জনের জন্য জিহাদের গুরুত্ব সর্বাধিক। কুরআন ও হাদীসে তাকে এ মর্যাদাই দেয়া হয়েছে।(বিশেষভাবে কুরআন মজীদের সূরা আল-বাকার ১৫২, ১৫৩ ও ১৫৪ আয়াত এবং সূরা আহযাব এর ২২ ও ২৩ আয়াত দ্রষ্টব্য)। কিন্তু তাসাউফপন্থীগণ জিহাদ পরিহার করেছে, জিহাদের প্রাণান্তকর ময়দান ত্যাগ করেছে, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব শয়তান লোকদের হাতে ছেড়ে দিয়ে খানকার নিরাপদ আশ্রয়ে যিকিরে ইলাহী ও মুরাকাবা মুশাহাদায় মশগুল হয়ে রয়েছে। আর এ কাজকেই তাজকীয়ায়ে নফসের একমাত্র উপায় রূপে নিজেরাও গ্রহণ করেছে, অন্যান্য মানুষকেও তা করতে দাওয়াত দিয়েছে। এরই ফলে যিকির এর নতুন নতুন পন্থা ও পদ্ধতি উদ্ভাবিত হয়েছে।
মুরাকাবা-মুশাহাদার সম্পূর্ণ নতুন পরিভাষা ও অভিনব পন্থা ও পদ্ধতি আবিষ্কৃত হয়েছে, যার কোনো নাম নিশানা রাসূলে করীম(স) ও সাহাবায়ে কিরামের আমলে ছিলনা।
তাসাউফপন্থীদের মুজাহিদা নফসের খায়েশের বিরুদ্ধে এক প্রবল ও নিরবিচ্ছিন্ন যুদ্ধবিশেষ। কিন্তু আল্লাহর দুশমনদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার সাথে এর দূরতম সম্পর্কও নেই। তাসাউফপন্ধীরা এ পর্যায়ে একটি হাদীসকে দলীল হিসেবে পেশ করে। তা হচ্ছেঃ (আরবি)
-আমরা ছোট জিহাদ থেকে বড় জিহাদে ফিরে এলাম। লোকেরা জিজ্ঞেস করলোঃ বড় জিহাদ কি? বললেনঃ দিল বা নফসের সাথে জিহাদ করা।
এ কথাটিকে রাসূলের কথা বা হাদীস হিসেবেই প্রচার করা হয়। আর এর ওপর নির্ভর করে তাসাউফপন্থীরা প্রথমে দ্বীনের শত্রুদের সাথে যুদ্ধ বা তাদের মোকাবিলা করার তুলনায় নিজের নফসের সাথে মুজাহিদা করাকে উত্তম ও বড় জিহাদরূপে গ্রহণ করে। পরে এটাকেই একমাত্র কাজরূপে নির্ধারণ করে নেয়। আর দ্বীনের শত্রুদের সাথে জিহাদ করাকে দুনিয়াদারী বা রাজনীতি ইত্যাদি বলে সম্পূর্ণ বর্জন করে। কিন্তু আসলে এ একটা মস্ত বড় ধোঁকা। উপরোক্ত কথাটি সম্পর্কে হাদীস বিশারদ ও বুখারী শরীফের ব্যাখ্যাকার ইমাম ইবনে হাযার আসকালানী বলেছেন-ওটা হাদীস নয়। বরং খুবই প্রসিদ্ধ একটি কথা, লোকদের মুখে মুখে উচ্চারিত। কিন্তু আসলে ওটি ইবরাহীম ইবনে আইলার কথা, রাসূলের হাদীস নয়।
উক্ত কথাটি বায়হাকী ও খতীব বাগদাদী কর্তৃক উদ্ধৃত হয়েছে বটে; কিন্তু তা অত্যন্ত দূর্বল সনদের। তাই এর উপর ভিত্তি করে ইসলামের এত বড় একটা বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা যায়না। এ কারণে আল্লাহর দুশমনদের মোকাবিলায় যুদ্ধ ও সংগ্রামে দৃঢ়তা মজবুতী ও অচল অটল হয়ে থাকার যে সবর কুরআন মজীদে যার উচ্চ মর্যাদা ঘোষিত হয়েছে তাসাউফপন্থীদের নিকট এর কোনোই গুরুত্ব নেই। ‘তাওয়াক্কুল’ ও অন্যান্য দ্বীনী ফযীলতপূর্ণ কাজ-কর্মের অবস্থা তা-ই ঘটেছে।
জীবনের লক্ষ্য ও আদর্শের ক্ষেত্রে তাসাউফপন্থীরা যে পরিবর্তন সূচিত করেছেন তা কি করে জায়েয হতে পারে? এ একটি কঠিন প্রশ্ন তাঁদের তরফ থেকে এর জবাব দিতে চেষ্টা করা হয়েছে বটে; কিন্তু সে জবাব কুরআন ও সুন্নাহর দৃষ্টিতে অগ্রাহ্য এবং অর্থহীন। তাঁরা নিজেদের আমলে বৈধতা প্রমাণের উদ্দেশ্যে ‘ইস্তিখাব’ ও ‘ইখতিয়ার’-‘ছাঁটাই বাচাই ও গ্রহণের’ নীতি অবলম্বন করেছেন। যেমন নবী করীমের সহস্র লক্ষ্য সাহাবীদের মধ্য থেকে কেবলমাত্র সুফ্ফাবাসী সাহাবীদেরকে নিজেদের আদর্শরূপে গ্রহণ করেছেন। কেননা তাঁদের জীবনের সাথে তারা তাদের সামগ্রিক আদর্শের মিল দেখতে পেয়েছিল। আর অন্যান্য সাহাবীদের জীবনের সেসব খুঁটিনাটি দিকগুলোই উজ্জ্বল করে তুলে ধরেছেন যেগুলো থেকে তাদের মনে ভাবধারার সমর্থন পাওয়া যায়। হযরত জুনাইদকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিলঃ ‘তাসাউফ’ কি? তিনি বললেন ‘তাসাউফ’ এর ভিত্তি আটটি জিনিসের ওপর স্থাপিত। এ আটটি জিনিস স্বতন্ত্রভাবে আটজন নবী পয়গম্বরের জীবনে স্পষ্ট প্রতিভাত। তা হলোঃ হযরত ইবরাহীমের বদান্যতা, দানশীলতা, মেহমানদারী, হযরত ঈসমাইলের আল্লাহ সন্তুষ্টি অর্জনের চেষ্টা ও আত্মসমর্পণ, হযরত ইয়াকুবের সবর, হযরত যাকারিয়ার ইশারাত, হযরত ইয়াহিয়ার অপরিচিত, হযরত ঈসার দেশ সফর, হযরত মূসার খিরকা পরিধান এবং হযরত মুহাম্মদ(স) এর ফাকর-দারিদ্র্য।
সহজেই বুঝতে পারা যায়, এক-একজন নবীর বিরাট বিশাল ও সম্পূর্ণ জীবনের বিপুল গুণরাশির মধ্যে আলাদা করে একটি মাত্র গুণকেই ‘আদর্শ’ রূপে গ্রহণ করা হয়েছে, যদিও তা করার অনুমতি আল্লাহ ও তাঁর রাসূল দেননি। আল্লাহ তা‘আলা তো সম্পূর্ণ ও সামগ্রিকভাবেই হযরত মুহাম্মদ(স) কে আদর্শরূপে গ্রহণ করার-তার একটি মাত্র গুণ নয়-সবগুলো গুণই ধারণ করার নির্দেশ দিয়েছেন।
-তোমাদের জন্য আল্লাহর রাসূলের সত্তায় অতীব উত্তম অনুসরণযোগ্য আদর্শ রয়েছে।(আল আহযাবঃ21)
আর রাসূলে করীম(স) নিজেই ঘোষণা করেছেনঃ (আরবি)
-আমি যে দ্বীন নিয়ে এসেছি তোমাদের মন ও মানসিকতা যতক্ষণে তার সম্পূর্ণ অধীন না হবে, ততক্ষণে তোমাদের কেউ-ই ঈমানদার হতে পারবেনা।
তার অর্থ রাসূলের একটি কথা বা একটি নীতিই নয়, তাঁর নিকট হতে পাওয়া সম্পূর্ণ দ্বীন-পুরোপুরি আদর্শই গ্রহণ করতে হবে।
‘খুলাফায়ে রাশেদুন’ এর ক্ষেত্রেও তাঁদের এই নীতিই অনুসৃত হয়েছে। তারা তাদের জীবনের জুহদ, সাখাওয়াত ও রিয়াজত পর্যায়ে ভাবধারা সমূহকেই গুরুত্ব দিয়ে থাকে, তাদের জিহাদী কার্য্ক্রম ও কর্মতৎপরতাকে এরা সম্পূর্ণ ভুলে যেতে চেয়েছে। অথচ তাঁদের সমগ্র জীবনই অতিবাহিত হয়েছে বাতিল শক্তির সাথে লড়াই সংগ্রাম, ইসলামী সমাজ সংগঠন ও রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা সাধনা, সমাজে শরীয়তের আইন জারি ও কার্য্কর করা, ইনসাফ কায়েম করা ও আল্লাহর দুশমনদের মস্তক চূর্ণ করার কাজের মধ্য দিয়ে। কিন্তু বর্তমান তাসাউফপন্থীদের নিকট তাঁদের এসব মহান গুণের কোনোই গুরুত্ব নেই। এরই ফলে মুসলিম সমাজ আজ বৈরাগ্যবাদের স্রোতে ভেসে গিয়ে জীবনের বৈশিষ্ট্য ও প্রাণ-মনের শক্তি প্রতিভা হারিয়ে ফেলেছে, হয়েছে সর্বহারা।
ইলমে শরীয়ত ও ইলমে মারিফাত দুটি আলাদা জিনিস হওয়ার দাবির সমর্থনে একটি হাদীসও পেশ করা হয়। হাদীসটি মিশকাত শরীফে এভাবে উদ্বৃত হয়েছেঃ (আরবি)
-হাসান বসরী থেকে বর্ণিত, তিনি বলেছেনঃ ইলম দু’প্রকার। একটি ইলম কলবের অভ্যন্তরে প্রতিফলিত। আর এ-ই হচ্ছে সত্যিকার কল্যাণকর ইলম। আর একটি ইলম শুধু মুখে মুখে বলা। আর তা-ই হচ্ছে মানুষের উপর আল্লাহর অকাট্য দলীল।
কিন্তু এটা এ পর্যায়ের কোনো দলীলই হতে পারেনা। কেননা একেতা এটা রাসূলের কথা নয়, কথা নয় কোনো সাহাবীর। এটি হচ্ছে হাসান বসরীর কথা এবং তিনি তাবেয়ী মাত্র।
দ্বিতীয়ত, এখানে যে ইলমের কথা বলা হচ্ছে, তা আসলে দুটি স্বতন্ত্র ইলম নয়। একটি ইলমেরই দুটি দিক-বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ। এর একটি অপরটি থেকে বিচ্ছিন্ন নয়। যেটিকে মুখে ইলম বলা হয়েছে, তা-ই হলো কুরআন ও সুন্নাতের ইলম; তা মুখে পড়ে শিখতে হয়। আর এই পড়ার যে প্রতিফলন ঘটে অন্তরের ওপর, তা-ই হলো ‘ইলমুন ফিল কালব’-দিলের ইলম। কাজেই এই দুয়ের মাঝে কোনো দ্বৈততা নেই এবং তা ভিন্ন ভিন্ন উপায়ে হাসিল করা যায়না; বরং একই কুরআন হাদীস থেকেই তা শিখতে হবে। প্রদীপ জ্বালালে তা একটি হয় আগুন ও অপরটি সেই আগুনেরই আলো ও তাপ। এই আলোর তাপকে কি আগুন থেকে আলাদা করা যায়? এ-ও তেমনি। আবু তালীব মক্কী উপরোক্ত কথাটির ব্যাখ্যায় বলেছেনঃ
-এ দুটিই মৌলিক ইলম। একটি অপরটি ছাড়া নয় যেমন ঈমান ও ইসলাম। আর এ দু’টো পরস্পর ওতপ্রোতভাবে জড়িত, ঠিক যেমন দেহ ও মন। একটি অপরটি হতে বিচ্ছিন্ন হতে পারেনা।
‘ইলমে বাতেন’ বা ‘বাতেনীইলম বলেও কোনো জিনিস ইসলামে স্বীকৃত নয়। যদিও এ ইলম এর অস্তিত্ব প্রমাণের জন্য আর একটি হাদীস ‘মুসাললাল’ বর্ণনা করা হয়।
তা এরূপঃ হাসান বসরী(রা) হতে বর্ণিত, তিনি হযরত হুযায়ফা(রা) হতে বর্ণনা করেছেনঃ হযরত হুযায়ফা বলেনঃ আমি নবী করীম(স) কে জিজ্ঞেস করলাম-ইলমে বাতেন কি? রাসূল(স) বললেন-আমি এ বিষয়ে জীবরাঈলকে জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেন; আল্লাহ বলেছেনঃ ইলমে বাতেন হলো আমার ও আমার বন্ধু প্রিয়জন, আমার অলী ও আমার খাঁটি দোস্তদার লোকদের মধ্যবর্তী এক বিশেষ জিনিস, আমি তা তাদের কলবের ভিতরে আমানত রেখে দিই, তা আমার কোনো নিকটবর্তী ফেরেশতাও জানতে পারেনা, জানতে পারেনা কোনো নবী-রাসূলও।
কিন্তু হায় আফসোস! এটা কোনো হাদীসই নয়। ফাতহুল বারীর গ্রন্থকার ইমাম ইবনুল হাযার আসকালানী এটাকে হাদীস বলে মানতে রাজি হননি।
তিনি বলেছেনঃ এ কথাটি মনগড়াভাবে রচিত, রাসূল(স) এর কথা নয়। হাসান বসরী হযরত হুযায়ফার সন্ধান লাভ করেননি। তাঁর নিকট হতে হাদীস বর্ণনা করার কোনো সুযোগই তাঁর হয়নি।
কাজেই এখানে হযরত হুযাইফা(রা) হতে হাদীসটি হাসান বসরী বর্ণনা করেছেন বলে যা বলা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। এ থেকে স্পষ্ট বোঝা যায়, নবী করীম(স) ও পরবর্তী ইসলামের স্বর্ণযুগের অনেক পরে ‘ইলমে বাতেন’ নামে পীর মুরীদী ব্যবসা এসব মিথ্যা কথাবার্তা ব্যাপক রচনা ও হাদীস নামে প্রচার করা হয়েছে। আসলে এ হলো বাতেনীয়া ফিরকার আকীদা। তারাই শরীয়তকে বাতেনী ও জাহেরী এ দু’ভাগে ভাগ করেছে। আর বাতেনীয়া ফিরকা সুন্নাত আল জামায়াতের মধ্যে গণ্য নয়। এ এক বাতিল ফিরকা। তারা নব্যুয়ত ও শরীয়তকে মানতোনা। সব হারাম জিনিসকে তারা হালাল মনে করতো।
বস্তুত কুরআন সুন্নাত থেকে বিচ্ছিন্ন এ মারিফাত মানুষকে ইসলামের তওহীদী ঈমান থেকে সরিয়ে নিয়ে বেদান্তবাদী শিরক এর মহাপংকে ডুবিয়ে দেয়। আর তা-ই ঘটেছে বর্তমানকালের অনেক পীরবাদী ও তথাকথিত তাসাউফপন্থীদের জীবন। অতএব ইসলামে এ তাসাউফের কোনো স্থান থাকতে পারেনা।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/289/29
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।