hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

সুন্নাত ও বিদয়াত

লেখকঃ মওলানা মুহাম্মাদ আবদুর রহীম (র.)

৩৭
কবর জিয়ারতের নিয়ম
ইমাম নববী লিখেছেনঃ‘যিয়ারতকারীর কর্তব্য কবরস্থানে উপস্থিত হয়ে প্রথমে সালাম করবে এবং কবরস্থ সকলের রূহের প্রতি মাগফিরাত রহমত নাযিল হওয়ার জন্য আল্লাহর নিকট দো’আ করবে।’ এই সালাম ও দো’আ তা-ই হওয়া উচিত, যা হাদীসে বর্ণিত হয়েছে। এছাড়া কুরআনের আয়াত-সূরা বা রাসূল(স) থেকে বর্ণিত দো’আও পাঠ করা যেতে পারে।

ইমাম শাফেয়ী ও তাঁর সব সঙ্গী সাথী মনীষীবৃন্দ সর্বসম্মতভাবে এ নিয়মেরই উল্লেখ করেছেন। ইমাম আবুল হাসান মুহাম্মদ ইবনে মরযুক জাফরানী একজন মুহাক্কিক ফকীহ ছিলেন। তিনি বলেছেনঃ কবরকে হাত দ্বারা জড়িয়ে ধরবেনা, স্পর্শ করবেনা, কবরকে চুমু দেবেনা, কবর জিয়ারতের সুন্নাতী নিয়ম এই।

আবুল হাসান আরো বলেছেনঃ কবর ধরা, স্পর্শ করা ও তাকে চুমু দেয়া-যা বর্তমানকালের সাধারণ মানুষ করছে-নিঃসন্দেহে বিদয়াত, শরীয়তে নিষিদ্ধ, ঘৃণিত। তা পরিহার করা এবং যে তা করে তাকে এ থেকে বিরত রাখা একান্তই কর্তব্য।

আবু মুসা এবং খোরাসানের সুবিজ্ঞ ফিকহবিদরা বলেছেন যে, কবর স্পর্শ করা, চুমু দেয়া খ্রীস্টানদের অভ্যাস। মুসলমানদের জন্য সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। কেননা নির্ভূলভাবে প্রমাণিত হয়েছে যে, কবরের প্রতি কোনোরূপ তা’জীম দেখানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

হাফিজ ইবনে কায়্যিম লিখেছেন, নবী করীম(স)কবর যিয়ারত করতেন, করতেন কবরস্থ লোকদের জন্য দো’আ করার উদ্দেশ্যে, তাদের প্রতি দয়া দেখাবার জন্য ও তাদের জন্য আল্লাহর নিকট ইস্তিগফার করার উদ্দেশ্যে।

অতঃপর লিখেছেনঃ এরূপ যিয়ারত করাকেই রাসূলে করীম(স) তাঁর উম্মতের জন্য সুন্নাত করে পেশ করেছেন এবং এ-ই তাদের জন্য শরীয়তী পন্থা ও নিয়ম করে দিয়েছেন।

কবরস্থানে উপস্থিত হয়ে মুসলমানরা কি বলবে এবং কি করবে, শরীয়তে তারও নির্দেশ রয়েছে। হাফেজ ইবনে কাইয়্যেম লিখেছেনঃ (আরবি)

-মুসলমান যখন কবর যিয়ারত করবে, তখন বলবেঃ আসসালামু আলাইকুম, হে কবরস্থানবাসী মুমিন মুসলমানগণ, আমরাও আল্লাহ চাইলে তোমাদের সাথে মিলিত হবো। এখন তোমাদের জন্য ও আমাদের নিজেদের জন্য আল্লাহর নিকট কল্যাণ ও শান্তি কামনা করছি।

অতঃপর তিনি লিখছেনঃ মুশরিকরা কিন্তু এরূপ করতে অস্বীকার করছে। তারা কবরস্থানে শিরক করে, আল্লাহর সামনে মৃত লোকদের নাম নিয়েই দোহাই দেয়, তাদের অসীলা বানায় ও তাদের নামে কসম করে। মৃত লোকদের নিকট নিজেদের প্রয়োজন পূরণ করার জন্য দো’আ করে, সাহায্য প্রার্থনা করে, তার দিকে তাওয়াজ্জুহ করে। আর এসব করে তারা রাসূলের হেদায়াতের বিরুদ্ধতা করে। কেননা রাসূলের হেদায়াত তো হলো তওহীদ এবং মৃত লোকদের প্রতি দয়া প্রদর্শন। আর মুশরিকদের পন্থা হলো শিরক এবং নিজেদের ও মৃত লোকদের প্রতি যাবতীয় অন্যায় চালিয়ে দেয়া।

আজমীর শরীফে খাজা মঈনউদ্দীন চিশতীর কবরে তাঁকে লক্ষ্য করে যে দো’আ করা হয়, তাতে খাজা বাবাকে ঠিক আল্লাহর আসনেই বসানো হয়(নাউজুবিল্লাহ)।

তাতে বলা হয়ঃ আল্লাহকে মাহবুব কি তুরবত কা তামাচ্ছুক শায়মা সোওদা কী আজমাত কা তামাচ্ছুক, আপনে দরওয়াজা সে নেয়ামত বখশে দিজিয়ে। -এই বিশ্বসংসারের পালনকর্তা আল্লাহর তুমি প্রিয় বান্দা। আল্লাহ তোমার কথা শোনেন। তাই আজ সন্ধ্যা বেলায় তোমার দুটি অবোধ সন্তান তোমার দরবারে হাযির হয়েছে। বাবা তুমি এদের বিদ্যা দাও, বুদ্ধি দাও, অর্থ-যশ-খ্যাতি প্রতিপত্তি দাও।

…… তোমার অপার করুণাধারার মতো এদের জীবনে যেন প্রেম নীতি অনন্তকালের জন্য অটুট থাকে। বাবা আমার। খাজা সাহেব আমার অন্ধের যষ্টির মতো তুমিই এদের একমাত্র ভরসা, তুমিই এদের অন্ধকারের আলো, সব বিপদের একমাত্র সহায়।

তুমি দুনিয়ার বাদশাহ, গরীবের একমাত্র পালনকর্তা, তোমার নামে ডুবে যাওয়া মানুষ ভেসে উঠে, অন্ধকার দুঃখের মহাসাগর হাসতে হাসতে পার হয়।

বলা হয়ঃ কোনো ভয় নেই, কোনো চিন্তা নেই, বাবা আপনাদের খুশী করাবেনই। বাবা বড় স্নেহপরায়ণ। যে ছেলেমেয়েরা এখানে ছুটে আসে বাবা তাদের দুঃখ দেখে সহ্য করতে পারেননা।

………..কাল আবার আসবেন। বাবা খুশী হবেন। (নাউজুবিল্লাহ)।

মৃত ব্যক্তির দাফন কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর মৃতের মাগফিরাত চেয়ে দো’আ করা রাসূলে করীমের আমল থেকে জায়েয বলে প্রমাণিত।

হাদীসে বর্ণিত হয়েছেঃ (আরবি)

-নবী করীম(স) যখন মৃত ব্যক্তির দাফনের কাজ সম্পন্ন করতেন তখন সেখানে দাঁড়িয়ে যেতেন এবং লোকদের বলতেনঃ তোমরা তোমাদের এই ভাইয়ের জন্য মাগফিরাতের দো’আ করো। কবরে সে যেন দৃঢ় প্রতিষ্ঠিত ও স্থির হয়ে থাকতে পারে, সে জন্যে আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করো। কেননা এখন তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

মনে রাখতে হবে, এ হলো দাফন কাজ সম্পন্ন হয়ে যাওয়ার পর দো’আ করা। এ তো সম্পূর্ণ জায়েয। কিন্তু বর্তমানে সাধারণ প্রচলনে দেখা যায়, এ দিকে জানাযার নামায পড়া হলো, আর অমনি কিছু একটা পড়ে দো’আ করার জন্য হাত তোলা হলো। অথচ ইসলামী শরীয়তে এ কাজ মাকরূহ! তৃতীয় শতকের ফকীহ ইমাম আবু বকর ইবনে হামীদ(রহ)বলেনঃ জানাযা নামাযের পরই আলাদা করে দো’আ করা মাকরূহ(তাহরীম)।

শামসুল আয়েম্মা হাওয়ানী ও শায়খুল ইসলাম আল্লামা মগদী বলেনঃ জানাযা নামাযের পরে দো’আর জন্য কেউই দাঁড়াবেনা।

এমনিভাবে ফতোয়ার সিরাজিয়া(১ম খন্ড,১৪পৃ.), জামউর রমুজ(১ম খন্ড,১৭৪পৃ.),বহরুর রায়েক (২য় খন্ড, ১৮৩ পৃ.) প্রভৃতি গ্রন্থে এ কথা লিখিত রয়েছে।

মুল্লা আলী আল কারী বলেনঃ জানাযা নামায পড়া হয়ে যাওয়ার পরই মৃতের জন্য দো’আ করবেনা। কেননা এতে মূল জানাযা নামাযের ওপর অতিরিক্ত কিছু করার মতো হয়।

তাহলে প্রমাণিত হলো যে, যিয়ারতের জন্য গিয়ে কবরস্থ লোকদের কল্যাণের জন্য দো’আ করা ছাড়া মুমিন মুসলমান যিয়ারতকারীর আর কিছু করার নেই, নেই অন্য কোনো কাজ করার মতো, নেই কোনো কথা বলবার মতো। এ দৃষ্টিতে স্পষ্ট বোঝা যায়, কবরস্থানে গিয়ে মুসলমানরা বর্তমানে যা কিছু করছে, তা শুধু বিদয়াতই নয়, শিরকও। অনুরূপভাবে “আল্লাহ তা’আলা সর্বশক্তির উৎস” এই ইয়াকীন ও বিশ্বাস অন্তরে বজায় রেখে কোনো মাখলুকের নিকট বা জীবিত অবস্থায় বা মৃত্যুর পর- কোনো কিছুরই অলৌকিক ধরনের কাজের সাহায্য চাওয়াও আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের দৃষ্টিতে সম্পূর্ণ শিরক এবং মুসলিম সমাজে তার প্রচলন তওহীদী আকীদার বিরুদ্ধে শিরকের বিদয়াত।

কুরআন তিলাওয়াত তো কুরআন হাদীস উভয়ের ভিত্তিতেই অত্যন্ত সওয়াবের কাজ বলে প্রমাণিত। কবরের নিকট বসে কুরআন তিলাওয়াতেও বাহ্যত কোনো দোষ দেখা যায়না। কিন্তু এ পর্যায়ে ফিকাহ এর কিতাবে বলা হয়েছেঃ কবরের নিকট কুরআন পাঠ করার ব্যাপারে ফিকহবিদদের মাঝে মতভেদ রয়েছে। ইমাম শাফেয়ী ও মুহাম্মদ ইবনে হাসান বলেছেন, তা পড়া মুস্তাহাব। এতে মৃত ব্যক্তি কুরআনের সোহবতের বরকত পেতে পারে। কাযী ইয়াজ ও মালিকী মাযহাবের ক্বিরানী উভয়ই তাঁদের সাথে একমত। কিন্তু ইমাম মালিক ও ইমাম আবু হানীফা(রহ) এ কাজকে মাকরূহ মনে করছেন। কেননা এ কাজের সমর্থনে সুন্নাতের কোনো দলীল পাওয়া যায়নি।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন